মেহেরপুর জেলা রেজিস্ট্রার: বছরে উপরি আয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা !

রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি-পর্ব ১
মেহেরপুরের তিন উপজেলার সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিল সম্পাদন ও নকল দলিলে জেলা রেজিস্ট্রার (ডিআর) সাইফুল ইসলামের বছরে বাড়তি আয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। জেলা রেজিস্ট্রারের হয়ে এসকল টাকা সংগ্রহ করেন তার অফিসের টিসি সহকারী খায়রুল ইসলাম । অতিরিক্ত এ টাকা না দিলেই অফিসের স্টাফ ও দলিল লেখকদের উপর চালান হয়রানির খড়গ।

দলিল সম্পাদন থেকেই শুধু না, কাজীদের লাইসেন্স নবায়ন, দলিল লেখকদের লাইসেন্স নবায়ন, স্টাফদের বদলি বাণিজ্য, নকলনবিশ থেকে অফিস স্টাফ চাকরি স্থায়ীকরণ ও উপজেলা অফিস নিরাীক্ষাতেও নেন মোটা অংকের টাকা। তার কথা মত কাজ না করলে দেওয়া হয় বদলির হুমকিও। এছাড়াও মাসের অধিকাংশ দিন তিনি অফিস করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। অফিসে পরিদর্শনে গিয়ে না পেলে জানানো হয় তিনি ছুটিতে আছেন।

মেহেরপুর জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুল ইসলামসহ দেড় শতাধিক জেলা রেজিস্ট্রার, সাব রেজিস্ট্রার, নকলনবিশদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। চলতি মাসের প্রথম দিকে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলাম দুদকের মামলা কারাগারে যাওয়ার পর দুর্নীতিগ্রস্থ জেলা রেজিস্ট্রার, সাব রেজিস্ট্রার ও নকলনবিশদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এসকল কর্মকর্তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার ব্যতিক্রম নন মেহেরপুরের জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুল ইসলামও।
সম্প্রতি জেলা রেজিস্টারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা তিনি অফিসে নেই। তার অফিসের টিসি সহকারী খাইরুল ইসলাম একটি চিঠি দেখিয়ে জানান ডিআর শ্রান্তি বিনোদনের ১৫দিনের ছুটিতে আছেন। তবে, কয়েক মাস আগেও তিনি শ্রান্তি বিনোদনের ছুটি কাটিয়েছেন বলে এক কর্মকর্তা জানান।

জেলা রেজিস্টার অফিসের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী সাব রেজিস্টার অফিসে নতুন দলিল সম্পাদন হয়েছে ২০ হাজার ২৪৫টি। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১৮৮৯, ফেব্রুয়ারিতে ১৪১৯, মার্চে ২১৭০, এপ্রিলে ৯৯৬, মে মাসে ২২৫০, জুনে ১৮৩৮, জুলাইয়ে ১৮৮৯, আগস্টে ১৯৭৬, সেপ্টেম্বরে ১৫৪৬, অক্টোবরে ১৪৬৯, নভেম্বরে ১৪২২, ডিসেম্বরে ১৩৮১টি দলিল সম্পাদিত হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওই তিন সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নতুন দলিল সম্পাদন হয়েছে ৬ হাজার ৩৮৫ টাকা। যার মধ্যে জানুয়ারিতে ১৮৪০, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৭৯, মার্চে ১৮৩৪ ও এপ্রিলে ১২৩২টি দলিল সম্পাদন হয়েছে। সে হিসেবে গড়ে এবছরও ২০ হাজার দলিল সম্পাদন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

চলতি বছর এ দলিল সম্পাদন করতে জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুলকে ইসলাম দলিল প্রতি দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। এই টাকা দলিল লেখকের মাধ্যমে গাংনী সাব রেজিস্ট্রার অফিসের এক স্টাফ হয়ে চলে যায় জেলা অফিসের টিসি সহকারী জেলা রেজিস্ট্রারের মনোনিত খাইরুল ইসলামের হাতে। তবে বিশ^স্তসূত্রে জানা গেছে, জেলা রেজিস্ট্রার এই টাকার মধ্যে কিছু অংশ তার অধিনস্ত স্টাফদের মাঝে বিতরণও করেন। দলিল লেখকরা জানান, ২০২৩ সালে তিনি দলিল প্রতি ১০০ টাকা করে নিলেও ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিনি দলিল প্রতি ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন। আর এ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারী ও দলিল লেখকদের উপর নেমে আসে নানা নির্যাতন হয়রানির খড়গ।

এছাড়া ২০২৩ সালে সার্টিফাইড নকল সরবরাহ করা হয়েছে ১৪৭৯২টি এবং ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সার্টিফাইড নকল সরবরাহ করা হয়েছে ৪৮৩৪টি। অভিযোগ রয়েছে প্রতিটি নকল সরবরাহের জন্য জেলা মহাফেজখানা থেকে তাকে ২৫০ টাকা করে নিয়ে থাকেন।

গাংনী সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দলিল লেখক জানান, গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা রেজিস্ট্রারের খাতে দলিল প্রতি ১০০ টাকা করে দিতে হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সাল থেকে তিনি খায়রুলের মাধ্যমে ২০০ টাকা করে আদায় করছেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই নানা অডিট, পরিদর্শনের ভয় দেখান ।

মেহেরপুর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও মুজিবনগর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কয়েকজন দলিল লেখকের সাথে কথা বলা হলেও তারাও পরিচয় দিয়ে কথা বলতে রাজী হননা কর্মকর্তাদের ভয়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারাও বলেন, গত বছর দলিল প্রতি ১০০ টাকা করে নিলেও এবছর ২০০ টাকা করে জোর করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে জমি ক্রেতাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

জেলা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে গাংনী সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে মাঝে মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলিল লেখকরা। এনিয়ে গত কয়েকমাসে কয়েকদফা মিটিং হয়েছে বলেও জানা গেছে।

গাংনী সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডিআর অফিসের খাইরুল ইসলাম চাপ দিয়ে ডিআর স্যারের জন্য দলিল প্রতি ২০০ টাকা করে তুলে দিতে বলেন, না দিলে অন্যত্র বদলি করার হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, আমরা ছোট চাকরি করি, স্যারদের কথামত আমাদের চলতে হয়, এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।

দলিল লেখকরা আরও অভিযোগ করেন, অফিসের স্টাফ খায়রুলের আচরণ দেখে মনে হয় সে নিজেই ডিআর (জেলা রেজিস্ট্রার)।

গাংনী সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন পিন্টু বলেন, ডিআর স্যারের কথা বলতে পারবো না তবে ওই অফিসের কিছু লোক নাম করতে চাচ্ছিনা বলে খাইরুল ইসলাম দলিল প্রতি ২০০ টাকা করে আদায় করার জন্য চাপ দেন। মহুরিরা অস্বীকৃতি জানালে অডিটের নামে হয়রানি শুরু করে। যেমন আগামী কাল (সোমবার) অডিট করবে বলে মৌখিক জানিয়েছে। এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার জন্য মহুরিরা বাধ্য হয়ে ওই টাকা দেন।

জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের টিসি সহকারী খায়রুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার কোন টাকা নেন না। তিনিও এ ধরণের কর্মকাণ্ড করেন না।

এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার নামে কোন অফিস থেকে কোন ধরণের টাকা তোলার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। খাইরুল যদি এটা করে থাকে আমি খাইরুলকে সাইজ করবো। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়গুলোকে তিনি অস্বীকার করেন। তবে অফিসে কম থাকেন বিষয়টি আংশিক স্বীকার করেছেন।

শ্রান্তি বিনোদনের ছুটির বিষয়ে ডিআর সাইফুল ইসলাম বলেন, এর আগে আবেদন করেছিলাম, ফাণ্ডে টাকা ছিলো না। ফাণ্ডে টাকা আসায় এ মাসে ছুটি কাটালাম।

তবে সহকারী মহাপরিদর্শক নিবন্ধন সালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভভ হয়নি।

উল্লেখ্য, জেলা রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম ২০২০ সালের ৯ জুন মেহেরপুরে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই এ নিয়মে সাব রেজিস্ট্রার অফিসগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন। (চলবে)…




শপথ নিলেন ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি নায়েব আলী জোয়ার্দার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী জোয়াদ্দার শপথ নিয়েছেন।

আজ ররিবার জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ গ্রহন কক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ শেষে রীতি অনুযায়ী এমপি নায়েব আলী শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

শপথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম। এসময় চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ ইকবালুর রহিম, হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু, হুইপ সানজিদা খানম এবং ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই গত ১৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি। আগামী ৫ জুন ওই আসনে উপনির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ১৮ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিনে ভোটে অংশ নেওয়া তিন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল ও খেলাফত আন্দোলনের আব্দুল আলি নিজামি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। পরে নায়েব আলী জোয়াদ্দারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

নবনির্বাচিত এমপি নায়েব আলী জোয়ারদার শৈলকুপা ও ঝিনাইদহে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

শৈলকুপার কৃতি সন্তান নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর সর্বকনিষ্ঠ গেরিলা যোদ্ধা হিসাবে পরিচিত।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, কেসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এজিএস, ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সহ আওয়ামী লীগের নানান সাংগঠনিক পদে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। বর্তমানে নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য।

আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ এই নেতা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সহ শৈলকুপার ১৪ নং দুধসর ইউনিয়ন থেকে ৩বার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।




আলমডাঙ্গায় মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন, প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন

মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করার প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন আলমডাঙ্গার ডাউকি গ্রামের হাসিবুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে তিনি আজ রবিবার দুপুরে আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাসিবুল ইসলাম উল্লেখ করেন, তার প্রাক্তন স্ত্রী তার অকর্ম ধামাচাপা দিতেই মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। প্রকৃত ঘটনা হলো গত ১ মাস আগে তাকে তিনি তালাক দিয়েছেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ তার প্রাক্তন স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে তার দুলাভাইয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও কোন কথা না শুনে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতে থাকে।

গত ১৩ এপ্রিল পাঁচ দিনের জন্য তার পিতার বাড়ি বেড়ানোর কথা বলে কৌশলে আমার দেওয়া সাড়ে ৪ ভরি সোনার গহনাসহ শিশু সন্তানকে নিয়ে চলে যায়। কয়েকদিন পর তাকে বাড়ি ফিরে আসার কথা বললে সে জানায়,ছেলেকে একটি স্কুলে ভর্তি করেছে তাই আর ফিরে আসবে না। পারলে তালাক দিয়ে দিতে। পরে শ্বশুরের সাথে কথা বললে তিনি আমার কলেজপাড়ার বাড়িসহ জমি লিখে দিতে বলেন। এসব না মেনে আমি বাধ্য হয়ে তাকে কোর্টের মাধ্যমে তালাক নামা পাঠিয়েছি।

তিনি উল্লেখ করেন,তার নামে যে মিথ্যা যৌতুকের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ আমি ১৪ বছর বিয়ে করেছি । ১০ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। এতোদিন যৌতুকের দাবী করিনি, এখন তার দোষ গোপন করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ চাপানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এছাড়াও মহিলা অধিদপ্তরের অফিস সহকারি হোসনে আরা পারভীন হাসু ও আমাকে নিয়ে যে কাল্পনিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। যা ভিত্তিহীন। তিনি আমার মায়ের বয়সি বড় বোনের মত। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি।

এমতাবস্থায় কোন বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে প্রকৃত ঘটনা সামনে আনার জন্য আহবান জানান তিনি।




মেহেরপুর শহরে প্রকাশ্যে দিবালোকে ব্যবসায়ীর গোডাউন ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

মেহেরপুর শহরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাড়ি দখল ও প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের বীজ লুটপাট করার অভিযোগে এনে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সওদাগর নামের এক ব্যক্তি।

ঘটনাটি মেহেরপুর শহরের ফৌজদারি পাড়া এলাকায় ঘটেছে।

সওদাগরের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, জনৈক আনোয়ারা খাতুনের কাছ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে সাড়ে তিন কাটা জমি রেজিস্ট্রি ও দেড় কাঠা জমি বাইনা নামা সূত্রে কিনে সেখানে গোডাউন নির্মাণ করে কফিসহ অন্যান্য সব্জী বীজের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন সব্জী বীজ সেখানে মজুদ করা হয়েছে।

গত ২৩ মে রাত আনুমানিক ৯.৪০ মিনিটের দিকে শহরের ক্যাশবপাড়া এলাকার মোসির ছেলে শহিদুল ইসলাম (৫০), মুখার্জিপাড়া এলাকার মুনতাজ আলীর ছেলে সুজন আলী (৪০), মো: জীবন (৩৫), শুভ (৩২). ফৌজদারিপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে রুবেল (৪০) তার স্ত্রী দুলালী (৩৫), রবির ছেলে ডালিম (৪০), জলিলের ছেলে রকি (৩৫), ক্যাশবপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী ছবি খাতুন (৪৫)সহ প্রায় ১০/১২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রকাশ্যে দিবালোকে সন্ত্রী কায়দায় গোডাউনে হামলা করে। গোডাউনের তালা ভেঙ্গে তারা প্রায় এক কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা মূল্যের কফিসহ অন্যান্য সব্জী বীজ লুট করে। এছাড়া প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের অন্যান্য বীজ বিনষ্ট করে। পরে খবর পেয়ে গোডাউনের সামনে যেতেই লুটপাটের এসব চোখে পড়ে বিবাদী সওদাগর আলীর।

সওদাগর বলেছেন, জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই প্রতিপক্ষরা আমার গোডাউন লুট করেছে। তিনি অভিযোগে আরো বলেছেন, এসময় তাদের বাঁধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। এছাড়া এই বিষয়ে আইনে গেলেও আমাকে খুন জখম করবে বলে হুমকি দিয়েছে তারা।

তিনি গোডাউন ভাংচুর ও লুটপাটের বিচার দাবী করেছেন প্রশাসনের কাছে। বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুর শহরে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। মেহেরপুর সদর থানা থেকে সামান্য দুরে প্রায় ঘন্টাব্যাপি প্রকাশ্যে দিবালোকে এ ধরনের ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেননি বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ কনি মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, “অভিযোগ হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নেই”। তিনি আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই ফোনটি কেটে দেন।




হরিণাকুণ্ডুর দৌলতপুর ইউনিয়নে উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (২০২৪-২০২৫) অর্থ বছরের জন্য উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রবিবার (২৬মে) ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ-এর সভাপতিত্বে বাজেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাজেট সভায় উন্মুক্ত বাজেট পেশ করেন ইউপি সচিব নির্মল কুমার বিশ্বাস।

এ বাজেটে রাজস্ব খাতে ৩৭,৯২.২৬০/= টাকা ও উন্নয়ন খাতে ২,০৫,৬৪,০০০/=টাকাসহ সর্বমোট ২,৪৩,৫৬.২৬০/=(দুই কোটি তেতাল্লিশ লাখ ছাপান্ন হাজার দুইশত ষাট) টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান, আক্তারুল আলম, হামিদ আলী, আশরাফুল আলম, বিজন পারভেজ, গমির উদ্দীন, মুকুল মন্ডল, এলাহী মন্ডল, আলমগীর মহিলা সদস্য রুমা খাতুন, মর্জিনা, শেফালী খাতুনসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বাজেট ঘোষণার পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।




মুজিবনগরে বসতবাড়ি পুড়ে যাওয়া পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন

মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের পুরাতন বিজিবি ক্যাম্প পাড়ার হতদরিদ্র স্বামী পরিত্যাক্ত জমেলা খাতুনের বসতভিটা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গতকাল শনিবার রাতটা নয়টার দিকে বিদ্যুতের সংযোগের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় দোচালা টিনের ঘরটি। খবর পেয়ে মুজিবনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই আগুনে তিলে তিলে গড়ে তোলা পরিবারটির কাঁথা কম্বল, জামা কাপড়, ফ্রিজ টিভি, হাড়ি পাতিল সহ ব্যবহারের সমস্ত জিনিসপত্র পুড়ে ছায় হয়ে গেছে পুড়ে গেছে ঘরে রাখা নগদ ১০ হাজার টাকাও। অগ্নিকাণ্ডে অসহায় পরিবারটির দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে জানান স্থানীয়রা। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জমেলা খাতুনের স্বামী দীর্ঘদিন হল তাকে ছেড়ে চলে গেছে।একমাত্র ছেলে তুফানকে নিয়ে কোন রকম জীবন যাপন করে আসছেন তিনি। ছেলে তুফান রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা আয় করে তা দিয়ে চলে জমেলা খাতুন ছেলে তুফান এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে এই পাঁচ জনের সংসার।
আকস্মিক এই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে পরিবারটির স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ। নেই পরিধানের কাপড়ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জামেলা খাতুন ও তার ছেলে তুফান। তাদের এই বিপদের দিনে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজ রবিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান তিনি তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদানকৃত দুই বাইন ঢেউটিন এবং নগদ অর্থ প্রদান করেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের যেহেতু ঘর নাই পুড়ে গেছে তাই প্রাথমিক অবস্থায় দুই বাইন টিন ও ছয় হাজার টাকা আপনাদেরকে প্রদান করা হলো। এটা দিয়ে আপাতত ঘর তৈরি করে বসবাস করেন। আপনাদের জন্য আরও সহযোগিতা আমরা করব। আপনাদের কোন কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। উপজেলা প্রশাসন সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মাশরুবা আলম এবং উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক তহমিনা খাতুন।




কুষ্টিয়ার শ্রেষ্ঠ ওসির পুরষ্কার পেলেন শেখ সোহেল রানা

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নির্বাচিত হয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা।

আসামী গ্রেফতার, ওয়ারেন্ট নিস্পত্তি, মাদক উদ্ধার, মামলা নিস্পত্তি এবং থানা এলাকার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় তাকে এ পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।

শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হওয়ার পর অভিব্যাক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, এ পুরষ্কার আমার আগামীতে কাজের গতি বাড়িয়ে দিলো। এতে আমার দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেল।

কুষ্টিয়ার ৭ সাতটি থানার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের দুয়ারে আইনি সেবা পৌঁছে দেওয়াসহ আসামি গ্রেফতার ও সামগ্রিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

রবিবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশের মাসিক কল্যান সভায় তার হাতে পদক তুলে দেন পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, বিপিএএ, বিপিএম, পিপিএম(বার) (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টরা।

জেলা পুলিশের শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হওয়ায় কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, যে মানদণ্ডে আমাকে পুরস্কৃত করা হলো তাতে আমার কর্মক্ষেত্রে ও সাধারণ মানুষের দুয়ারে আইনি সেবা পৌঁছে দেওয়ার দায়বদ্ধতা বেড়ে গেল।




ঝিনাইদহে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণহীন গুদামের ওষুধ যাচ্ছে অপারেশন থিয়েটারে

ঝিনাইদহে সম্প্রতি অপারেশনের পরে রোগী মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করতে গিয়ে অনেকগুলো বিষয় সামনে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের ডাক্তার ও সেবিকাদের অবহেলা, অপারেশনের আগে রোগীর শারীরিক অবস্থা যাচাই না করে অপারেশন করা, এ্যানেস্থেসিয়ার সঠিক প্রয়োগ না করা, সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষিত নয় এমন ওষুধের ব্যবহার ও অপারেশনের সময় মানহীন ওষুধ ব্যবহারের বিষয়গুলিই সামনে এসেছে।

সম্প্রতি ঝিনাইদহে পাইকারী ওষুধ বিক্রেতাদের এক রকমের দৌরাত্ম্য সৃষ্টি হয়েছে। ওষুধ প্রশাসনের সঠিক তত্ত্বাবধান ও সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেশি লাভের আশায় অপারেশনের টেবিলে যাচ্ছে হোল সেলারদের মানহীন ওষুধ। শুধু অপারেশনের টেবিলেই নয় হোল সেলারদের কাছ থেকে কেনা মানহীন এই ওষুধ যেকোন রোগীর জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে। জেলার ফার্মেসি মালিক সমিতির সদস্যরা ড্রাগ লাইসেন্স না নিয়ে হোল সেলারদের দৌরাত্ম্য বিষয়ে জেলার ওষুধ প্রশাসনকেই দায়ী করছেন। তবে এবছর বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত নয় এমন দোকানের ওষুধ ব্যবহারের কার্যকারিতা বলে মনে করেন ফার্মেসি মালিকরা।

সম্প্রতি ঝিনাইদহের বেসরকারি ক্লিনিক ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতাল লিমিটেড’এ এ্যাপেন্ডি সাইডের অপারেশনের পর সুচনা জান্নাত (১৫) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সুচনার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এই মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা রোগীর শারীরিক অবস্থাকে দায়ী বলেছেন। কিন্তু রোগীর স্বজনদের দাবি বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত মাত্রায় এ্যানেস্থসিয়া ব্যবহারের ফলে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে খিচুনি ওঠাসহ অবস্থা খারাপ হলে ঢাকায় নেওয়া হয় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শুধু ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালই নয়, হাসান ক্লিনিক, শামীমা ক্লিনিক, প্রিন্স হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও রাবেয়া ক্লিনিকসহ কালীগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি ক্লিনিকে অপারেশনের পর রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে জেলা বিএমএ শাখার নেতৃবৃন্দ হোল সেলে বিক্রি করা ওষুধকেই রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী বলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঢাকার মিটফোর্ড মার্কেট, কুমিল্লার শাসনচর, খুলনার হেরাজ মার্কেট ও চট্টগ্রামের হাজারী মার্কেটে হোলসেল ওষুধ বিক্রি করা হয়। সেখান থেকে তুলনামূলক অনেক কম মূলে ব্রোকাররা ওষুধ কিনে এনে লোকাল মার্কেটে বিক্রি করে। এসব হোলসেল বিক্রেতারা ওষুধ সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করেন না। যেকারণে ওষুধের কার্যকারিতা হারায়। এছাড়া অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা ওষুদের মেয়াদ টেম্পারিং করে সেই ওষুধ বিক্রি করে। জানাগেছে, দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো কয়েকটি রেটে বাজারে ওষুধ বিক্রি করে। সেগুলো হলো, ক্লিনিক্যাল রেট, ইন্সটিটিউট রেট, সরকারি রেট, ডক্টর কাম কেমিস্ট্রি রেট, বোনাস রেট, ফ্লাট রেট, হোলসেল রেট ও রিটেইলার রেট। বেশির ভাগ কোম্পানি রিটেইলার বা ফার্মেসিগুলোকে ১২-১৩% কমিশন দেয়। ওষুধের দামের সাথে কোম্পানিগুলো ১৭.৪% ভ্যাট কেটে রাখে। সেখানে ফার্মেসি মালিকরা হোল সেলারদের কাছ থেকে ওষুধ নিলে কমিশন বেশি পায় এবং ১৭.৪% ভ্যাট দেওয়া লাগে না। যেকারণে তারা বেশি লাভের আশায় হোল সেলারদের কাছ থেকেই ওষুধ কিনে বিক্রি করে। ওষুধ প্রশাসনের নিয়মানুযায়ী পাকা মেমো সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, রয়েছে সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখার কথা।

সূত্র বলছে জেলার বেশিরভাগ ক্লিনিকগুলোতে হোল সেলারদের কাছথেকে সার্জিক্যাল ওষুধ কিনে সেগুলো অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহার করে থাকে। যেসব রোগীর সাথে অপারেশন থিয়েটারের ওষুধের চুক্তি থাকে সেই সব অপারেশনের ক্ষেত্রে হোল সেলারদের কাছথেকে কেনা কম দামের ও মানহীন ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত ৩০ থেকে ৩২ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ওষুধ সংরক্ষণ করতে হয় তবে ওষুধের প্রকারের ওপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা তাপমাত্রায় সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু হোলসেলাররা সাধারণ পরিবহনে ওষুধ পরিবহন করে সেগুলো সাধারণ গুদামে সংরক্ষণ করে বিক্রি করে। এদিকে জানাগেছে, কয়েক প্রকারের এ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। যেমন স্প্রে, লোকাল, স্পাইনাল কর্ড ইনজেকশন ও জেনারেল এ্যানেস্থেসিয়া। জেনারেল এ্যানেস্থেসিয়া আবার দুই প্রকার। ইনজেকশন ও মাস্ক।

ঝিনাইদহে মাস্ক এ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহারের একটি মাত্র মেশিন আছে ডাক্তার রেজা সেকেন্দারের। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন, বয়স, রোগীর শারীরিক সক্ষমতা ও রোগের ধরণের ওপর ভিত্তি করে এ্যানেস্থেসিয়ার মাত্রা নিধারণ করা হয়ে থাকে ডিভাইসের মাধ্যমে। সেখানে ভুল গণনা হলে রোগীর মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে।

ঝিনাইদহ জেলা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিকুল করিম সোম বলেন, ব্রোকারদের কাছ থেকে ওষুধ নিতে আমরা সকল ফার্মেসি মালিকদের নিষেধ করি। হোলসেল মার্কেটের ওষুধের মানের কোন নিশ্চয়তা নেই। আবার সঠিক মাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণও করা হয় না। কাজেই সেই ওষুধ ব্যবহার করলে রোগীর ক্ষতি হতে পারে। অনেক ফার্মেসি মালিকের দোকানে তাপমাত্রা সংরক্ষণের সক্ষমতা নেই। বিশেষ করে গ্রামের দোকানগুলোতে। তবে সার্জিক্যাল ওষুধ বিক্রির দোকানগুলোতে অবশ্যই সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকা উচিৎ। হোল সেল ওষুধ বিক্রেতাদের জন্য ওষুধ বিক্রেতাদের অনেক বদনাম হচ্ছে। ওষুধ প্রশাসনের এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সামনে মিলন সার্জিক্যাল এন্ড মেডিসিন যার প্রোপাইটার মো: মিলন, ড্রিম সার্জিক্যাল এন্ড মেডিসিন যার প্রোপাইটার মো: নাজমুল হাসান টিটন, মিডি রিলায়েন্স যার প্রোপাইটার মুন্তাসির রহমান পারভেজ (এই ফার্মেসীর ড্রাগ লাইসেন্স নেই), ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালের সামনে মুন্সি সার্জিক্যাল এন্ড মেডিসিন যার প্রোপাইটার মোঃ শাহিনুর রহমান শাহিন, সরকারি কেসি কলেজ মার্কেটের দেশ ফার্মা যার প্রোপাইটার সুসান্ত কুমার কনক, শামীমা ক্লিনিক নিচে এর সুলতানা ফার্মেসি যার প্রোপাইটার শফিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু সড়কে মিতালী ফার্মেসি যার প্রোপাইটার রিয়াদ হোসেন, হামদহ মোল্লাপাড়ায় ইমরান ফার্মেসি ও ঝিনেদা মিটফোর্ড ফার্মেসির মালিক ইমরান হোসেন। এছাড়া খালেদা সার্জিক্যাল, মার্জিয়া ফার্মা, সার্জিক্যাল পয়েন্ট এন্ড মেডিসিন শপ সহ শহরের আনাচে কানাচে অনেক পাইকারি ওষুধের দোকান গড়ে উঠেছে। যাদের অনেকেরই ড্রাগ লাইসেন্স ও ওষুধ সংরক্ষণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। বৈধ উপায়ে ব্যবসা করা কয়েকজন ফার্মেসি মালিক জানান, সরকারের ভ্যাট ফাঁকি দিতে ও বেশি লাভ করতে অনেকেই হোলসেলারদের কাছ থেকে ওষুধ নেয়। যার কোন পাকা মেমো নেই। কিন্তু ওষুধ প্রশাসনের কোন তদারকি নেই। তারা মাসিক ভাবে এসব ফার্মেসি মালিক ও হোল সেলারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে। অনেক ওষুধের দোকান ওষুধ প্রশাসনের নীতি না মানলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এছাড়াও লাইসেন্স প্রাপ্তী ও নবায়নের সময়ও ওষুধ তত্ত্ববধায়কের কার্যালয়ে ঘুষ প্রদান করতে হয়।

ঝিনাইদহ ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুম মনিরা বলেন, পাইকারী ওষুধ বিক্রি করে এমন দোকানের তালিকা দেন আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। আমরা বিভিন্ন ক্লিনিকে মৃত্যুর ঘটনায় মেডিসিন পরীক্ষা করেছি। প্রায় সবগুলো কেচে এ্যানেস্থেসিয়ার সমস্যা পায়নি। অনেক সময় ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলার কারণে রোগীর মৃত্যু ঘটে। এ্যানেস্থেসিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা ক্লিনিকগুলোতে অপারেশনের সময় এ্যানেস্থেসিয়া রাখার বাধ্যবাধকতার নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু ক্লিনিকগুলো সেই নিয়ম মানে না। সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের চিঠি দিয়েছে। আমরা খুব দ্রুত এটি নিশ্চিৎ করতে মাঠে নামবো। এক ফার্মেসি মালিক জানিয়েছেন, ওষুধ প্রশাসন কর্তৃক নিষিদ্ধ ওষুধও রোগীর ব্যবস্থা পত্রে লিখছেন ডাক্তাররা। এতে করে অনেক ফার্মেসি অননুমোদিত ওষুধও রাখছেন। তিনি বলেন, একই গ্রুপের ওষুধ এক কোম্পানি দাম ৩০ টাকা আবার আরেক কোম্পানি দাম ৩ টাকা। দুই ওষুধের মানই এক, দুই ওষুধের অনুমোদনই ওষুধ প্রশাসন দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের কি করার আছে। ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ও ভেজাল ওষুধ ঠেকাতে দরকার নিয়মিত জোর তদারিক।

ফার্মাসিটিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম মিলন বলেন, ঝিনাইদহে যে সমস্ত পাইকারি মেডিসিনের দোকান আছে তারা মূলত ঝিনাইদহে কর্মরত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মেডিসিন খুব একটা ক্রয় করেন না। যেগুলো মিটফোর্ডে পাওয়া যায় না সেইগুলোই আমাদের কাছ থেকে ইনভাইসের মাধ্যমে ক্রয় করে থাকেন। বেশি লাভের আশায় ঢাকার মিটফোর্ড মার্কেট ও অন্যান্য বিভিন্ন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে ঔষুধ ক্রয় করে থাকেন এই সমস্ত অসাধু বেশি মুনাফা লোভি ব্যবসায়ীরা। মূলত ভেজাল ও নকল ঔষধ লোকাল মার্কেটে ছড়িয়ে যায় এই সমস্ত পাইকারি মেডিসিন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দেখভাল করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।




 ঝিনাইদহে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঝিনাইদহে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার (২৬ মে) দুপুরে শহরের ফ্যামেলী জোন কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঝিনাইদহ সদর থানা যুবলীগ।

অনুষ্ঠানে সদর থানা যুবলীগের সদস্য মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগ সদস্য ও সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক শাহ্ মোঃ ইব্রাহিম খলিল রাজা।

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ।

এছাড়াও সদর থানা যুবলীগ সদস্য মাহাদী হাসান নাজমুল, মধুহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম, সাগান্না ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শেখ রুহুল আমীন, কালীচরনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আরিফ মোল্লা, পোড়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক ফিরোজ উদ্দিন, কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান লেন্টু সহ ১৭টি ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

পরে ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই ও ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করেন নেতা-কর্মীরা।




সাজের সময় হাইলাইটারের সঠিক ব্যবহার

সূত্র: ইত্তেফাক

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এখন সবাই ফ্যাশন সচেতন হয়ে উঠেছেন। এখন প্রায় সবাই নিত্যদিনের রুটিনে মেকআপের ব্যবহার করেন। মেকআপের মাঝে পছন্দের তালিকায় হাইলাইটার থাকবেই। হাইলাইটার কারো লুকই বদলে দিতে পারে।

হাইলাইটার কী

হাইলাইটার এমন এক প্রসাধনী যা শরীরের বিভিন্ন অংশ জ্বলজ্বলে করতে সাহায্য করে। হাইলাইটার যেখানে লাগানো হয় সেখানে আলো প্রতিফলিত হয় বলে ওই অংশটুকু জ্বলজ্বলে মনে হয়।

হাইলাইটের চার ফর্মুলা

স্টিক, ক্রিম, লিকুইড ও পাউডার— এই চার ধরনের হাইলাইটার ফর্মুলা হয়। ত্বকের ধরন অনুযায়ী হাইলাইটার ব্যবহার করতে হয়। যদি হাইলাইটার ঠিকঠাক ত্বকের ধরন অনুসারে ব্যবহার না হয় তাহলে ক্ষতি হবে। তাই ত্বক অনুযায়ী হাইলাইটার ব্যবহার করতে হবে। মূলত বিভিন্ন ধরনের ত্বক অনুযায়ী হাইলাইটার ব্যবহার করতে হয়। সেসব এখনই জানাবো আপনাদের।

তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে

এ ধরনের ত্বকে পাউডার ফর্মুলা হাইলাইটার ব্যবহার করতে হয়। এ ধরনের হাইলাইটার ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করে আরও কমনীয় করে। ত্বকের হাই পয়েন্টে ব্রাশ দিয়ে হাইলাইটার ব্যবহার করুন। আবার গালের দুপাশে লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহার করলে তার ওপর পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করতে হয়। তৈলাক্ত ত্বকে মেকআপ সহজে উঠে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই পাউডার হাইলাইটার ব্যবহারের দিকে একটু জোর দিতে হয়। সেটিও ভেবেচিন্তে করা দরকার। এক্ষেত্রে বেশি পাউডার যেন ব্যবহার না হয় তা খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজনে ব্রাশ ব্যবহার করুন। কাজে আসবে।

শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে

এ ধরনের হাইলাইটার ত্বকের আর্দ্রতা ও কমনিয়তা ধরে রাখতে সাহায্য করে। হাইলাইটার ত্বকে সুন্দরভাবে ব্লেন্ড করতে সহযোগিতা করে। লিকুইড হাইলাইটার ফাউন্ডেশন বা ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে পরিমাণ নিয়ে ভাবা জরুরি। এ দিকটা অনেকেই জানেন না। এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে পারলে বরং আপনারই ভালো হবে।

কম্বিনেশন ত্বকের জন্য

কম্বিনেশন ত্বকের জন্য ক্রিম ফর্মুলা হাইলাইটার ব্যবহার করতে হবে। স্টিক হাইলাইটারও ব্যবহার করা যাবে। এতে করে ত্বক স্বাভাবিক দেখা যাবে, খুব বেশি তৈলাক্ত বা শুষ্ক দেখা যাবে না। ক্রিম হাইলাইটার ব্যবহারের জন্য হাতের আঙুলে বা ব্রাশের সাহায্যে প্রথমে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর সেটি সেট করার জন্য এর ওপর পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করে নিন। এতে হাইলাইটার খুব উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠবে। তবে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। যদি তা করতে যান তাহলে আপনার ত্বকের কোনো লাভ হবে না। উল্টো ক্ষত হতে পারে।