জাতীয় দলের পাইপলাইন মজবুত করতে বেশ মনোযোগী বিসিবি। কাজ করছে লম্বা সময় ধরেই। সেই ধারাবাহিকতায় দলের বাইরে থাকা ও বয়সভিত্তিক খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে হাই পারফরম্যান্স দল। আগামী শনিবার এই দলটি অস্ট্রেলিয়া যাবে তিন ফরম্যাটের একটি লম্বা সফরে। এই সফরে দুইটি চার দিনের ম্যাচ, তিনটি এক দিনের ম্যাচ ও ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে এইচপি দল।
চার দিনের ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান শাহীনস (এ দল), ওয়ানডে খেলবে নর্দার্ন টেরিটরির বিপক্ষে এবং টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান শাহীনস ও বিগ ব্যাশের একাধিক দল। যেখানে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল বাদেই ছয়টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেললে ম্যাচ আরও দুইটি বাড়বে। আর দেশ ছাড়ার আগে গতকাল এ সফর নিয়ে মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিল হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের প্রধান নাঈমুর রহমান দুর্জয়।
নিজেদের আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় ক্রিকেট বোর্ড থেকে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ তৈরি করতে চাই প্রত্যেকটা লেভেল থেকে। তারই একটা ধারাবাহিকতায় অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে এই সফরটি ঠিক করেছি। যেখানে নর্দান টেরিটোরি আমাদের হোস্ট করছে। সেখানে আমরা দুইটি চার দিনের ম্যাচ, তিনটা ওয়ানডে ম্যাচ এবং পরবর্তীকালে বিগ ব্যাশের পাঁচটি দলসহ আয়োজিত একটি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করব। সঙ্গে পাকিস্তানের ‘এ’ দলও থাকবে।’
এ সময় উদীয়মান ও ছন্দ হারানো খেলোয়াড়দের জন্য এ সফরটা বেশ বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন এইচপি প্রধান। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য একটা বড় সুযোগ। এখানে কিছু জাতীয় দলের যারা খেলছে, সেখানকার খেলোয়াড় নেওয়া হয়েছে। কারণ, ২০২৭ এ আমাদের যে অস্ট্রেলিয়া সফর আছে, ঐ খেলাটাও কিন্তু ডারউইনে হবে। তাদেরও একটা প্রস্তুতি। কারণ, অনেক সময় আমরা দেখি আমাদের নতুন খেলোয়াড় বা একেবারে প্রথমবার খেলতে গিয়ে একটা অচেনা পরিবেশে অভিষেক হচ্ছে। তো সে জিনিসগুলো যেন না হয়, তার কারণে কিন্তু আমরা এইচপির প্রোগ্রামে প্রত্যেক বছরই একটা সফর থাকে, কিন্তু এটা নতুন একটা ইনক্লুশন এবং আমরা তাদের জানিয়েছি যে, আমরা ভবিষ্যতেও এটা চালিয়ে যেতে চাই, এ সিরিজটা। আসলে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা। সেটাকে কাজে লাগিয়ে খেলোয়াড়রা তাদের ভবিষ্যতের জন্য দেশকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য তৈরি করবে, সেটাই আমরা আশা করি।’
এদিকে বয়সভিত্তিক দলে অনেক দিন ধরেই দেশের ক্রিকেটে ভালো হচ্ছে, তাদের হাত ধরে ২০২০-এ বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি গেল বছর এশিয়া কাপও এসেছে দেশে শুধু তা-ই নয়, প্রতিটি টুর্নামেন্টেই বয়সভিত্তিক দল শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়ে আসছে। তবে তা ধরে রাখতে পারে না আর জাতীয় দলে আসার পরই হারিয়ে যায়। অনেক সময় এ জন্য দায়ী করা হয় বিসিবিকে। তবে জাতীয় দলে প্রবেশের আগে এমন সফর থাকলে খেলোয়াড়দের ঝরে পড়ার হার কমবে বলে মনে করেন দুর্জয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দুইটা দিকই আছে। আমাদের যেমন, বোর্ডের পক্ষ থেকে আমাদের বয়সভিত্তিক পর্যায় পার হয়ে আসার পর কিন্তু এখন আরও দুইটা-তিনটা প্রোগ্রাম আমরা যুক্ত করেনি যে, তারা যেন নিয়মিত এই প্রক্রিয়ার ভেতর থাকে। খেলোয়াড়দের ঝরে পড়া বা ওপরের লেভেলে কন্টিনিউ করতে না পারা। এটা কিন্তু আসলে দুই পক্ষের ব্যাপার। খেলোয়াড়দের যেরকম সামর্থ্য বা ইনজুরি সমস্যা হয়ে যায়, সেটা কিন্তু ভিন্ন ইস্যু। কিন্তু আমরা চাচ্ছি যে, আমাদের প্রক্রিয়াটা ঠিকঠাক হোক, আমাদের সুযোগ-সুবিধা বোর্ডের তরফ থেকে বৃদ্ধি করা এবং খেলার ভেতর থাকার যে সুযোগ সেটা আমরা ধরে রাখতে চাই। এজন্যই বললাম, এ সুযোগগুলো কাজে লাগানোর দায়িত্ব খেলোয়াড়দের, আমরা শুধু তৈরি করে দিতে পারব। কিন্তু সেটা কাজে লাগিয়ে নিজেকে পরের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বা পরের ধাপে নেওয়া এই ফোকাস ধরে রাখা তাদের দায়িত্ব।’