অপরাজিত দুই দলের লড়াইয়ে কে হাসরে শেষ হাসি

বার্বাডোজের ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত। উভয় দলই পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে এবং অপরাজিত থেকেই ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। তাই বলা যায়—শিরোপার লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচ দেখতে তাই তো চাতক পাখির মতো ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখ এখন এই ম্যাচের ওপর। আজ রাত সাড়ে ৮টায় বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচটি।

নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন প্রোটিয়ারা। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে শিরোপা জয়ের পর পরবর্তী সাত আসরে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারেননি ভারতীয়রা। যদিও এবারের আসরের শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে আয়োজক দেশে পা রাখেন রোহিত-কোহলিরা। এখন পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত ভারতীয়রা। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর গত পরশু সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি জায়গা করে নেয় স্বপ্নের ফাইনালে। এর আগে সবশেষ ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ইংলিশদের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেন ২০০৭ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

অন্যদিকে ভারতের মতো অপরাজিত থেকে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে প্রথম পর্বের প্রতিটি ম্যাচেই শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়ারা। যদিও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে জায়গা করে নেন শেষ আটে। তবে আগের আসরগুলোর দিকে চোখ বুলালে দেখা যায়—পুরো টুর্নামেন্ট দাপট দেখালেও সেমিফাইনালে এলে যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে থাকেন প্রোটিয়ারা। যার কারণে উপহাস করে তাদের ক্রিকেটের ‘চোকার্স’ ও বলা হয়।

এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচ বার ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট দুই বার সেমিফাইনাল খেললে একবারও খেলতে পারেননি ফাইনালে। তবে সেই দক্ষিণ আফ্রিকাই এবারের আসরের উড়তে থাকা আফগানদের সেমিতে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম বারের মতো কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দলটি। তাই তো ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে মরিয়া প্রোটিয়া।

এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরো আসর জুড়ে ছিল বৃষ্টির দাপট। সুপার এইট ও সেমিফাইনালের মতো ম্যাচেও ছিল এর চোখ রাঙানি। অনেক ম্যাচ তো শুরুও হয়েছে দেরিতে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রিজার্ভ ডে না রাখায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিকে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত-ইংল্যান্ডের ম্যাচও পড়েছিল বৃষ্টি বাধায়। সেসব কথা মাথায় রেখেই ফাইনালে রিজার্ভ ডে রেখেছে আইসিসি।

বেরসিক বৃষ্টির কারণে যদি আজ ম্যাচ মাঠে না গড়ায়, তাহলে আগামীকাল রবিবার রিজার্ভ ডেতে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। যদিও শনিবার দেড় ঘণ্টা সময় রাখা হচ্ছে। বৃষ্টিতে ম্যাচ শুরু করা না গেলে বা ম্যাচ শুরু পর বৃষ্টি হলে এরপর আরও ৯০ মিনিট সময় থাকছে। অন্যান্য ম্যাচে ফলের ক্ষেত্রে অন্তত ১০ ওভার মাঠে গড়াতে হবে। তা-ও সম্ভব না হলে ম্যাচ যাবে রিজার্ভ ডেতে। আর যদি আজ ম্যাচ মাঝপথে থামে, রিজার্ভ ডে-তে সেখান থেকেই খেলা শুরু হবে। তবে বৃষ্টির কারণে শনি ও রবিবার খেলা না গড়ায় তাহলে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে ট্রাইকো কম্পোষ্ট

কৃষি নির্ভশীল ও সবজিখ্যাত জেলা মেহেরপুরের কৃষি জমিতে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জৈব সার ট্রাইকো কম্প্ষ্টো। অতিমাত্রায় রাসায়নিক সারে নষ্ট হচ্ছে আবাদি জমির উর্বর শক্তি, জনপ্রিয় হচ্ছে ট্রাইকো কম্পোষ্ট।

জেলার কৃষকরা রাসয়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সার ট্র্ইাকো কম্পোষ্ট ব্যবহারে একদিকে যেমন ফসল উৎপাদন খরচ কমছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে ফসলের উৎপাদন । মেহেরপুরের কৃষিকে আরও সমৃদ্ধি করতে কৃষকদের নানা প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে উপকরন বিতরণের মাধ্যমে ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদনে সহায়তা করছে বেসরকারি সংস্থা পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি পিএসকেএস। ট্রাইকো কম্পোষ্ট উৎপাদনে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন।

পিএসকেএস এর কৃষি অফিসার মো: জুয়েল বিশ্বাস জানান, মাটির জৈব অংশে বসবাসকারী কোটি কোটি অনুজীবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অনুজীব ট্রাইকোডার্মা। এটি মাটিবাহিত একটি উপকারী ছত্রাক যা মাটিতে বসবাসকারী উদ্ভিদেও ক্ষতিকর জীবানু যেমন অন্যান্য ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটোড ইত্যাদিকে মেরে ফেলে। এইউপকারী পরজীবী প্রকৃতির সব পঁচনশীল বস্তুকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলে। এই ট্রাইকোডার্মা ও তার সাথে গবর ও পঁচনশীল বস্তুুর সাথে মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ট্রাইকো কম্পোষ্ট জৈব্য সার।

ট্রাইকো কম্পোষ্ট উৎপাদনকারি গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান,জমিতে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সারের ব্যবহারের ফলে জমিতে আর ভাল ফসল হচ্ছিলনা। বাড়িতে পরিত্যাক্ত জমি না থাকায় জৈব সারের বড়ই অভাব। আবাদে ভাল ফলন না পেয়ে লোকসান গুনতে হয়েছে।পরে স্থানীয় এনজিও পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির কৃষি অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী পচনশীল বস্তুু,খড়,ও গবরের সাথে ট্রাইকোডার্মা পাউডার দিয়ে ট্রাইকো কম্পোষ্ট জৈব সার প্রস্তত করি এবং জমিতে দিয়ে এখন ভাল ফসলের ভাল ফলন হচ্ছে। আমি মোট ১০টি চৌবাচ্চার মাধ্যমে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরী করছি। আমার আবাদি জমিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে এখন ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করছি। আমার জমিতে দিয়েও উদ্বৃত্ত কম্পোষ্ট অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করে প্রতি বছর অন্তত লক্ষাধিক টাকা লাভ করছি। আমি আরও বড় পরিসরে ট্রাইকো কম্পোষ্ট উৎপাদন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ট্রাইকো কম্পোষ্ট উৎপাদনে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি আমাকে নগদ অর্থ,ট্রাইকোডার্মা পাউডার বিনামুল্যে প্রদান করেছে এবং কারিগরি সহায়তা দিয়ে আমাকে সার্বক্ষণিক সহযোগীতা দিচ্ছে।

গাংনীর গাড়াডোব গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম,আব্দুল গণি ও ফজলুল হক বলেন, আমাদের আবাদি জমিতে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও অতিমাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমির উর্বরশক্তি একেবারেই নষ্ট হয়ে পড়েছে। জমিকে যতই পরিচর্যা করি তাতে ভাল ফলন পাচ্ছিলাম না। পরে আমাদের ভুর বুঝতে পেরে গত বছর থেকে ট্রাইকো কম্পোষ্ট জৈব সার নিজে র্তৈরী করে তা জমিতে প্রয়োগ করে ভাল উপকার পাচ্ছি। আমাদের সব আবাদি জমিতে এক সময় বছরে দুটি ফসল ফলানো যেত। এখন ওই জমিতে বছরে তিন থেকে চারবার ফসল ফলায়। এতে রাসায়নিক সার অতিমাত্রায় ব্যবহার করে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে গিছে। ফলে ফসলে ফলন বিপর্সয় ঘটছে। আমরাও ট্রাইকো কম্পোষ্ট তৈরী করে এখন নিজের জমিতে জৈব্য সার হিসেবে ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করে ভার ফলন পাচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের খাছ থেকে অন্য কৃষকরাও তা কিনে নিয়ে তাদের জমিতে প্রয়োগ কওে উপকৃত হচ্ছে। এক বস্তা ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার বিক্রি করছি ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায়। প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকার ট্রাইকো কেম্পাষ্ট বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।

পিএসকেএস এর নির্বাহী পরিচালক মুহা: মোশাররফ হোসেন বলেন, সমন্বিত কৃষি কর্মসুচীর আওতায় গাংনী উপজেলার বিভিন্ন কৃষকদের রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব ট্রাইকো কম্পোষ্ট জমিতে প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অনেকেই ট্রাইকো কম্পোষ্ট উৎপাদনে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন। সেই সাথে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগীতায় কৃষকদের আর্থিক সহায়তা ও বিনামূল্যে ট্রাইকোডার্মা পাউডার দেয়া হয়েছে। উপজেলার শতশত চাষি এখন এই ট্রাইকো কম্পোষ্ট জৈব সার উৎপাদন করে জমিতে ব্যবহার করে ভাল ফসল ফলাচ্ছেন। এবং অন্যান্য কৃষকদের কাছে এ সার বিক্রি করে আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ মো: ইমরান হোসেন বলেন, মেহেরপুর জেলার প্রতিটি জমিই সব ফসল চাষের উপযোগী। এখানকার জমিতে কৃষকরা সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে থাকেন। দ্রত সময়ে ফলন পেতে চাষিরা জমিতে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করে জমিকে অকেজো কওে তুলেছে। সেই চাষিরাই তাদের ভুল বুঝতে পেরে বিভিন্ন জৈব সার যেমন কেঁচো কম্পোষ্ট,গোবর কম্পোষ্ট ও ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার ব্যবহার শুরু করেছেন। অনেকেই এ সার উৎপাদন কওে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভিাগের পক্ষ থেকে জমিতে জৈব সার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।




একদিকে চলছে নির্মাণ, অন্যদিকে ১০ মিনিটের বৃষ্টিতে ভাঙছে রাস্তা

৬৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের মাত্র ১০ মিনিটের বৃষ্টিতেই চেংগাড়া থেকে চোখতোলা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার অন্তত ১৫ টি স্পটে ভেঙ্গে গেছে।

ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহিরুল লিমিটেডের লোকজন তড়িঘড়ি করে গোজামিল দিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া স্পর্টগুলো মাটি ভরাট করেছে।

তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সড়কের কাজ চলমান। যেখানে যে অবস্থায় থাকুক না কেনো নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেওয়া হবে। শিডিউল মেনেই সড়ক নির্মাণ করা চলছে।

নিমার্ণাধীন এ সড়কটি শুরু থেকেই নানা অনিয়ম ও নিম্নমাণের বালু ও খোয়াসহ অন্যান্য উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয়রা। তার প্রমাণ গতকালের এই ১০ মিনিটের বৃষ্টিতেই পিচ ঢালাই রাস্তাটির দুইপাশ দিয়ে ভাঙতে শুরু করেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, এজিং ভেঙে হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন দেড় কিলোমিটার সড়ক। এতে করে নষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ। সড়কের বিভিন্ন অংশের এজিং ভেঙে পাশের জমিতে চলে গেছে। ফাটল দেখা দিয়েছে সড়কের বিভিন্ন স্থানে। সামান্য বৃষ্টিতেই কোনও কোনও স্থানে কার্পেটিং উঠে এজিং ভেঙে গেছে। কাজে নিম্ন মানের ইট, খোয়া, পাথর, বালু ব্যবহার করার কারণে সড়কের কয়েকটি কয়েকটি স্থানে উঁচু নিচু হয়ে দেবে গেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

এছাড়াও পাকা সড়কের দুই পাশে কমপক্ষে ৩ ফুট মাটি থাকার কথা। অথচ অধিকাংশ সড়কেই এই নিয়ম মানা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একটি ট্রাক রাস্তার পাশে দাঁড়াতের রাস্তা বসে গিয়ে ট্রাকটি রাস্তার পার্শবর্তি খাদে উল্টে যায়।

তিনি বলেন, সড়কটি একদিকে নির্মাণ চলছে। আবার অপর দিক থেকে ভেঙ্গেও যাচ্ছে। মুলত নিম্নমানের কাজের কারনেই ভেঙ্গে গেছে বলে অভিমত দেন এই ব্যক্তি।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলেন, নির্মাণ করছে সড়ক অথচ এখনই ভেঙ্গে গেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষের উচিত ঠিকাদারের কাজের মান যাছাই করা। এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা ঠিক নয়।

নিয়ম অনুযায়ী এলাকার বাইরে থেকে মাটি এনে রাস্তার দুই পাশ ভরাট করার শর্ত থাকলেও তা অগ্রাহ্য হয়েছে সেটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার পাশে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তার পাশে মাটি ভরাট করেছে। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই রাস্তার পাশে দেওয়া ওই মাটি ধসে রাস্তা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

সড়কটিতে রয়েছে কয়েকটি কালভার্ট। কালভার্ট নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, খোয়া আর ঢাকার লোকাল পূর্বাচল রড। স্থানীয়রা এ বিষয়টিতে বাধা দিলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকিতে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ফলে নবনির্মিত এসব কালভার্ট জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে অভিযোগ করছেন এ সড়কে চলাচলকারীরা।
এদিকে গাংনীর আখ সেন্টার এলাকা থেকে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় পৌণে চার কিলোমিটার রাস্তা ফোর লেনের আওতায় রয়েছে। রাস্তা ফোর লেন হলেও গাংনী ও বাঁশবাড়িয়ার মাঝখানে ঝিনিরপুলটি একেবারেই সরু অবস্থায় রয়েছে। যেখানে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকার মানুষ। এছাড়া আলমদিনা মাদ্রাসার সামনের কালভার্টটি মাঝখানে আগের অবস্থানে রেখেই দুই পাশে প্রস্ততকরণ করা হয়েছে। কালভার্টটির মাঝখানের সেই মান্ধাতা আমলে নির্মিত অবস্থায়ই রাখা হয়েছে।

এদিকে গাংনী বিদ্যুত উপকেন্দ্রের কাছে ও চেংগাড়া বাজারের কাছের দুটি কালভার্ট ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করা হয়নি। শত বছরের এসব কালভার্টগুলোতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া চোখতোলার অদুরে নির্মিত একটি কালভার্ট, জোড়পুকুরিয়া—তেরাইলের মাঝখানের একটি কালভার্ট, অলিনগরের মাঠের মাঝখানের একটি কালভার্ট, বাওট ভূটি দোকানের অদুরে নির্মিত কালভার্ট, শুকুরকান্দি—বাওটের মাঝখানের কালভার্টগুলো প্রসস্তকরণ করা হলেও রাস্তার উপরে রয়েছে কালভার্টের দু পাশের রেলিং।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেরপুর—কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ সংস্কার প্রকল্পের আওতায় ২৯ কিলোমিটার তিন ভাগে ২৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে গাংনীর তেরাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে খলিশাকুন্ডি ব্রিজের পূর্বপাশ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার একটি প্যাকেজ। এই প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও মেসার্স রিমি নির্মাণ সংস্থা। এ প্যাকেজটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বামন্দী বাজারের অদূরে অস্থায়ী কার্যালয় ও ফিল্ড স্থাপন করেছে।

সেখানে প্রকাশ্যে নিম্নমানের ইট ভেঙে বানানো হয়েছে খোয়া। এই খোয়া ও নিম্নমানের বালু দিয়েই সম্প্রসারিত অংশের ডব্লিউবিএম সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাতদিন সমানভাবে ও সঠিকভাবে কমপেকশন করা হয়নি মর্মে এলাকার লোকজন বারবার বলার পরেও তাতে কর্ণপাত করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজের পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের অভিযোগ, সঠিকভাবে কমপেকশন না হলে ও নিম্নমানের দ্রব্য ব্যবহার হলে রাস্তার স্থায়িত্ব কমে যাবে।

এদিকে, মেহেরপুর থেকে তেরাইল বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজ পর্যন্ত রাস্তার ঠিকাদার মেসার্স জহিরুল লি:। অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে কালো পাথর দেওয়ার ক্ষেত্রে দেওয়া হচ্ছে সাদা পাথর। ডাব্লু বিএম ১ নং ইটের খোয়া ব্যবহার করা কথা সেখানে করা হয়েছে আমা ইটের খোয়া। এছাড়া বালি ও পাথরের সংমিশ্রন এক এক দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেওয়া হয়েছে পাথর ও বালি এক চার বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ কাজে বাংলাদেশী পিচ ব্যবহারের স্থানে করা হয়েছে ইরানি পিচ।

জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় চলমান সবচেয়ে বড় প্রকল্প এটি। অভিযোগ উঠেছে, কাজ হচ্ছে যাচ্ছেতাইভাবে। নিম্নমানের ইট, বালুর ব্যবহার হচ্ছে প্রকল্পের কাজ দেখভালে যান না দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা। এতে স্থানীয় সচেতন অনেকেই কাজ দেখে ক্ষোভে ফুঁসছেন।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে এখনও কাজ বুঝিয়ে দেয়নি। তবে ঠিকাদার রাস্তার পাশে পর্যাপ্ত মাটি না দেওয়ায় দুইপাশ ভেঙে গেছে।

তিনি আরও জানান, রাস্তা হ্যান্ডওভারের তিন বছর পর্যন্ত রাস্তার সব দায়ভার ঠিকাদারের। তারা রাস্তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




জীবননগরের মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব দুর্বৃত্তদের কোপে আহত 

জীবননগর উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আঃহান্নানের পর মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খানকে একই স্টাইলে কুপিয়েছে দুর্বত্তরা। স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করেন। এ সময় হাসপাতালে কমরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে রেফার্ড করেন।

আজ শুক্রবার রাত ৮টার দিকে জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আলার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ বলেন, চেয়ারম্যান প্রতিদিন সন্ধার সময় আলার মোড়ে চা খেতে আসেন শুক্রবার ঠিক একসময় চা খেতে এসেছিলেন রাত ৮টার দিকে তিনি বাড়িতে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বত্তরা চলন্ত অবস্থায় চেয়ারম্যানের পিঠে কোপ মেরে পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় কিছু লোকজন চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কতৃব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোরে রেফার্ড করেছেন।

জীবননগর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ওমর ফারুক বলেন,মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পিঠে কোপ মেরেছে তিনার পেশার বেশি ও এ্যাজমার সমস্যার কারনে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর রেফাড করা হয়েছে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.এম জাবীদ হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের পিঠে একটি ধারাল অস্ত্রের আঘাত করেছে দুর্বত্তরা।তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা যশোরে রেফার্ড করেছে । এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পায়নি তবে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।




মেহেরপুরে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

মেহেরপুরের ৫ নাম্বার ওয়ার্ড চক্রপাড়ায় ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন।

আজ শুক্রবার (২৮ জুন ) বিকেলে পৌর এলাকার চক্রপাড়ায় দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধনের আগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড আব্দুস সালাম।

প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটনের সঞ্চালনায় এসময় কাউন্সিলর আল মামুন, মুশতাক আহমেদ, আব্দুর রহিম, শারমিন আক্তার, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আল-আমিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান জানায়, মেহেরপুরের পৌর এলাকার ৫ নাম্বার ওয়ার্ডে চক্রপাড়ায় ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে।




চুয়াডাঙ্গার পাকা গ্রামে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে নারীর আত্মহত্যা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাঁকা গ্রামে সাথী আক্তার (৩০) নামে এক নারী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আজ শুক্রবার (২৮ জুন) গ্রামের উত্তর পাড়ায় বেলা ১২ টার সময় এ ঘটনাটি ঘটে। সাথী খাতুন পাঁকা গ্রামের শহিদুল সরদারের মেয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি,সাথী খাতুন ছিলেন স্বামী পরিত্যাক্তা। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে সে কয়েক বছর ধরে পিতার বাড়িতে অবস্থান করছিল। এরপর তিনি হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। মানসিক ভারসাম্যহীন হাওয়ার কারণে সে প্রায় সময় একা একা বিভিন্ন জায়গায় চলে যেত। তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার জন্য চিকিৎসাও চলমান ছিল। এক পর্যায়ে শুক্রবার (২৮ জুন) বেলা ১২টার দিকে তার শোবার ঘরে বাঁশের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম.জাবীদ হাসান জানান, আত্মহত্যার খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এছাড়াও নিহতের পরিবারের পক্ষ হতে কোন অভিযোগ না থাকায় জীবননগর থানা পুলিশের পক্ষ হতে লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
#




গাংনীতে নিখোঁজ বোনের খোঁজ নিতে গিয়ে দুই ভাই নির্যাতিত

কোলের দুই শিশুসহ নিখোঁজ বোনের খোঁজ নিতে গিয়ে বন জামাই ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন করে  তালা দিয়ে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে দুলাভাইয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ৯৯৯ কল পেয়ে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম তালা ভেঙ্গে দুইজনকে উদ্ধার করেন। বর্তমানে তারা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আজ শুক্রবার (২৮ জুন) বেলা ১২ টার সময় ঘটনাটি ঘটেছে গাংনী উপজেলার মহিষাখোলা গ্রামের ঈদগাহ পাড়া এলাকায়।

এঘটনায় রবিউল ইসলামের স্ত্রী রহিমা খাতুন, তার মেয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া বৈশাখি খাতুন ও কোলের শিশু রজণী খাতুন (৫) নিখোঁজ রয়েছেন।

আহতরা হলেন, গাংনী উপজেলার জালশুকা গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে জহুলরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার মহিষাখোলা গ্রামের সামছুল আলমের ছেলে গরু ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম প্রায় ১২ বছর আগে জালশুকা গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে রহিমা খাতুনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রহিমা খাতুনের উপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন স্বামী রবিউল ইসলাম। পান থেকে চুন খসতেই রহিমা খাতুনের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। গতকাল দুপুর থেকে রহিমা খাতুনকে দফায় দফায় মারধরে করে আসছিলেন স্বামী রবিউল ইসলাম।

হঠাৎ আজ শুক্রবার সকালে রবিউল ইসলাম তার শশুর বাড়ি জালশুকা গ্রামে স্ত্রীকে খুজতে যান। শশুর বাড়ির লোকজনকে জানান, ভোররাত থেকে আমি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে খুজে পাচ্ছিনা। কথাগুলো বলেই সে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে বেলা ১১ টার দিকে আবারও শশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর খোঁজ করতে থাকেন। পরে জহুরুল ইসলাম ও আশরাফুল ইসলাম বোন ও কোলের দুই শিশুকে খুজতে রবিউল ইসলামের বাড়িতে আসেন। এসময় রবিউল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন আশরাফুল ও জহুরুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে রবিউল ইসলাম ও তাদের লোকজন আশরাফুল ইসলাম ও জহুরুল ইসলামকে মারধর করে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে আটকিয়ে রাখেন। বিষয়টি ভুক্তভোগীরা পুলিশের ৯৯৯ কল দিলে গাংনী থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। এঘটনায় এখনো কেউ মামলা দেইনি। মামলা দিলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তাজুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইজনকে উদ্ধার করেন। পরে তাদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক সীমা বিশ্বাস জানান, আহতদের শরীরে মারের দাগ রয়েছে। জহুরুল ইসলামের পায়ে ধারাল অস্ত্রের মারের ক্ষত রয়েছে। তাকে এক্সরে করতে বলা হয়েছে।




দামুড়হুদায় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু

দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ছোটদুধপাতিলা রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ছোটদুধপাতিলা রেলগেটে পৌঁছালে এই দূর্ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তি হলো দর্শনা থানা এলাকার ডিহি কৃষ্ণপুর ডাক্তার পারার ঝন্টু আলীর ছেলে আলামিন হোসেন (২৯)।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার ছোটদুধপাতিলা গ্রামের রেলগেটে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন এসে পৌঁছালে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আলামিন হোসেন রাস্তা পার হতে গেলে ট্রেনের সাথে সজরে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ ও দর্শনা রেল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে দর্শনা রেলওয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান দর্শনা রেলওয়ে পুলিশ।




মেহেরপুরে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ

মেহেরপুরে জনশুমারি ও গৃহ গণনা ২০২২ এর জেলা রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। একই সাথে বিবিএস প্রকাশিত প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহ গণনা ২০২২ শীর্ষক পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুস্তকটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

জেলাভিত্তিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মেহেরপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ তিন লাখ চার হাজার ৯৩ জন এবং নারী ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৩৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৬ জন। জেলাতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৫১ জন লোক বসবাস করে। শহরাঞ্চলে জেলার মোট জনসংখ্যার ২২.৩৫ শতাংশ লোক বসবাস করে। জেলাতে মোট বস্তিবাসীর সংখ্যা ৫৭৩ জন এরমধ্যে পুরুষ ২৬৭ জন এবং নারী ৩০৬ জন। জেলাতে কোন ভাসমান জনগোষ্ঠী নেই।

জনসংখ্যার উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে গাংনী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ২২ হাজার ৭০১, মেহেরপুর সদর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০৩ জন এবং মুজিবনগর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৫ হাজার ৭৫২ জন।

ধর্মভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায় জেলায় মোট মুসলিম ধর্মের অনুসারী ৬ লাখ ৯০ হাজার ৩৪৯ জন, হিন্দু ধর্মাবলির সংখ্যা মোট ৮ হাজার ৪৯৭ জন, খ্রিস্টান আছেন ৬ ৪৭৮ জন, বৌদ্ধ ধর্মীয় জনসংখ্যা ১৬ জন এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারী মোট ১৬ জন। জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি হাজারে ৬৫ জন।

প্রতিবেদন বলছে, মেহেরপুর জেলায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা সংখ্যা ৯৬ হাজার৫৫২ জন এবং মোট ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭২৫ জন পুরুষ বিবাহিত। ৩ হাজার ৭৭৫ জন বিপত্নীক , ২০ হাজার ৪০০ জন তালাকপ্রাপ্ত।

অপরদিকে জেলায় মোট অবিবাহিত নারীর সংখ্যা ৫৮ হাজার ৭৩ জন, মোট ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৯২ জন নারী বিবাহিত। বিধবা নারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৫০১ জন এবং তালাকপ্রাপ্ত নারীর মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৭০০ জন।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, জেলাতে মোট সাক্ষরতার হার ৬৮.১৪ শতাংশ। ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোট ৬৩.৭৬ শতাংশ মানুষের নিজ ব্যবহারের মোবাইল ফোন রয়েছে। অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে উল্লিখিত বয়সসীমায় ৩৫.৩৮ শতাংশ।

মোড়ক উন্মোচনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: শামীম হাসান। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানভীর হাসান রুমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাঃ আব্দুস সালাম আব্দুস সালাম এবং মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক মোঃ বসির উদ্দীন। এ সময় সেখানে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী কাদের মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ এবং জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ বছির উদ্দিন বলেন, ‘এবারই প্রথম ডিজিটাল ভাবে জনশুমারি ও গৃহ গণনা সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা বর্তমানে যে সময়ে বাস করছি, সেখানে মুহূর্তেই তথ্য ও উপাত্ত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে, জনশুমারির ফলাফলে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে সেটা আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে চুড়ান্ত করা হবে।’




মেহেরপুরে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন ক্যাম্প

মক্কা চক্ষু হাসপাতালের উদ্যোগে মেহেরপুর কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলে সপ্তাহব্যাপী চক্ষু ক্যাম্প শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এ চক্ষু ক্যাম্পের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থা “আল বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় মক্সা চক্ষু ক্যাম্প আয়োজিত এ চক্ষু ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা প্রদান করা ও ৫০০ (পাঁচশত) রোগীর ছানি অপারেশন করা হবে।
প্রাথমিক বাছাই পর্বে ৫০০ (পাঁচশত) রোগীকে ছানি অপারেশন ও লেন্স স্থাপনের জন্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত রোগীদের অপারেশন, ঔষধ, চিকিৎসাকালীন থাকা—খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করবে সংস্থাটি। ১৩জন ডাক্তারের সমন্বয়ে মোট ১০০জনের মেডিকেল টিম রোগীদের চক্ষু পরীক্ষা, পরামর্শপত্র, ঔষধ ও চশমা বিনামূল্যে প্রদান করছেন। আল—বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন পরিচালিত ঢাকার আল—নূর চক্ষু হাসপাতাল ও মক্কা চক্ষু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এ চক্ষু ক্যাম্পে চিকিৎসা প্রদানে নিয়োজিত আছেন।

আল—বাসার ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সেক্টরের মহাপরিচালক ড. আহমেদ তাহের আল—মিম্বারির সার্বিক দিকনির্দেশনায় বাস্তবায়িত এ চক্ষু ক্যাম্প পরিচালনায় ছিলেন ক্যাম্প ম্যানেজার, ওবায়েদ উদ জামান।