ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পারাপারের সময় ৩১ জন আটক

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা কালে ৩১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করেছে মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর সদস্যরা। আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী-১৯ জন, পুরুষ-০৭ জন এবং শিশু রয়েছে ৫ জন।

বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত ২৭ অক্টোবর রাত ৬টা হতে ১১টার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৮ জন এবং ২৮ অক্টোবর রাত ৩টা হতে পরদিন দুপুর ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের মধ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ২৩ জনসহ সর্বমোট ৩১ জন বাংলাদেশী নাগরিক মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর, মাটিলা, কুমিল্লাপাড়া, পলিয়ানপুর, বাঘাডাংগা এবং জীবননগর উপজেলার বেনীপুর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়। মহেশপুর এবং জীবননগর সীমান্ত দিয়ে কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশ হতে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছে এমন সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন বরিশাল, নড়াইল, রাজবাড়ী, চুয়াডাংগা, ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, রংপুর ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়াও ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ২ জন নারীকে আটকের পর আন্ত সীমান্ত মানব পাচার প্রতিরোধ বিষয়োক আইন ও ভিকটিম চিহ্নিতকরন সংস্থা, জাস্টিস এন্ড কেয়ার, যশোর এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য চলতি অক্টোবর ২০২৪ মাসে এ পর্যন্ত সর্বমোট ২৫৫ জন সদস্যকে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের সময় মহেশপুর ও জীবননগর সীমান্ত এলাকা হতে আটক করে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহেশপুর (৫৮বিজিবি) ব্যাটালিয়নের পরিচালক শাহ মোঃ আজিজুস শহীদ।




ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টুর ইন্তেকাল

বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, শহিদুজ্জামান বেল্টু ইন্তকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না এলাহী রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাত পোনে ১২ টার দিকে নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শহিদুজ্জামান বেল্টুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড. এম এ মজিদ।

পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, শহীদুজ্জামান বেল্টু ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হাসনহাটি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। পরে বেল্টু এরশাদ সরকারের সময়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। এরশাদের পতনের পর তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন এবং ১৯৯১ সালের নির্বাচনের অংশ নিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০০১ সাল পর্যন্ত পর পর চারটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বেল্টু সংসদ সদস্য থাকাকালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি, জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার স্কুল, কলেজ, ব্রীজ ও গুরুত্বপর্ন রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়ন করেন।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদ জানান, শহীদুজ্জামান বেল্টুর প্রথম জানাযা আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে এবং দুপুর ২টায় কালীগঞ্জ সরকারি ভুষন স্কুল মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ এশা বাদ তার গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা হাসনহাটি গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বিএনপি নেতা শহীদুজ্জামান বেল্টুর মৃত্যুতে তার নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ জেলাতে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুর খবর পেয়ে নেতাকর্মীরা দলে দলে ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান পাড়াস্থ বেল্টুর নিজ বাসভবনে জড়ো হয়। এদিকে বিএনপি নেতা বেল্টুর মৃত্যুতে বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল এ্যড. আসাদুজ্জামান, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার সময় ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল মাঠে প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। আর বাদ এশা তার গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা হাসনহাটি গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে জানা গেছে।




মেহেরপুরে অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনার 

মেহেরপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন -২০০৯ অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক আয়োজিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ।

এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন-  জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহমেদ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রনি আলম নুর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ, নিরাপদ খাদ্য অফিসার রিয়াজ মাহমুদ, সাংবাদিক রফিকুল আলম প্রমুখ।

সেমিনারে বক্তারা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন -২০০৯ অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে বলেন- আমরা প্রত্যেকেই ভোক্তা। আমি একজন ক্রেতাকে যেমন ঠকাচ্ছি, তেমনি অন্যজনও  আমাকে অনুরূপ ভাবে ঠকাচ্ছেন। এই অসৎ উদ্দেশ্য থেকে আমাদের সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।




বাংলাদেশে ৬ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ‘ইমো’

তাৎক্ষণিক বার্তা আদান প্রদানের মাধ্যম ‘ইমো’ বাংলাদেশ থেকে ব্যবহৃত প্রায় ৬ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কমিউনিটি গাইডলাইন না মানায় মোট ৬ লাখ ২৮ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়।

স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ইমোর অব্যাহত প্রতিশ্রুতির জায়গা থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। অক্টোবরে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস চলাকালে, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কমিউনিটির মাঝে আস্থা নির্মাণ ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে ইমো।

এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ক্ষতিকর কনটেন্ট পোস্ট করার মাধ্যমে কমিউনিটিতে প্রভাব ফেলতে পারে এরকম বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড এড়াতে ব্যবহারকারীদের রিপোর্ট করা ৯০ হাজার কেস চিহ্নিত করে ইমো। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো ধরনের ব্যতিক্রম ছাড়া, সব ব্যবহারকারীর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য একটি পরিবেশ গড়ে তুলতেই ইমোর কমিউনিটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সচ্ছতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখা নিশ্চিত করতে সব ব্যবহারকারী ও কনটেন্ট নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রে একইভাবে এই গাইডলাইন প্রয়োগ করা হয়। একটি নিরাপদ ও বন্ধুত্বপূর্ণ কমিউনিটি নিশ্চিত করতে প্ল্যাটফর্মটি সবসময়ই আরও বেশি প্রাসঙ্গিক ফিচার নিয়ে আসছে এবং ধারাবাহিকভাবে অ্যাপ্লিকেশন আপগ্রেড করছে।

সূত্র: কালবেলা




শতকোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন মিলু

একটা সময় ছিলেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে পর্যদুস্ত হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। জড়িয়ে পড়েন চোরা কারবারে। আর আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এসে। বনে যান আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। এখন তিনি কয়েক শত কোটি টাকার সম্পদের অধিকারী। এলাকাবাসীর মতে নামে ও বেনামে এসব সম্পদ করেছেন তিনি।

গল্পটি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার যতারপুর গ্রামের স্বাধীনতা বিরোধী ও তালিকাভুক্ত রাজাকার আমিনুল ইসলামের পুত্র আমাম হোসেন মিলুর। তিনি মুজিবনগর উপজেলার অপসারিত চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি মহাজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।

গণঅভ্যুত্থানের পরও বিগত ১৬ বছরে প্রদর্শন করা দৌর্দাণ্ড দাপটের বিন্দুমাত্র কমেনি তার পরিবারের সদস্যদের।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পরবর্তী সময়ে একাধিক মামলার এজহারভূক্ত আসামি হলেও মিলুকে আটক করতে তার বাড়িতে এখন পর্যন্ত পুলিশ বা যৌথ বাহিনীর কোন সদস্য পদার্পণ করেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ মিলুর আত্মীয়দের মধ্যে জেলা বিএনপি’র কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকর্মী থাকাতে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরেও তার ক্ষমতার কোনো ঘাটতি ঘটেনি। মিলুর ছোট ভাই শিলুর বেয়াই রতনপুর গ্রামের পলাশ স্থানীয় বিএনপি’র একজন প্রভাবশালী নেতা। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিএনপি কর্মী ও তার সাবেক ব্যবসায়িক পার্টনার টুলু বিশ্বাস সহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী বিএনপি নেতাকর্মীর ছত্রছায়ায় থেকে এখনো ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, কোর্টে বিভিন্ন মামলা হলেও সেগুলো এখনো এফআইআর ভুক্ত হয়নি। আর মুজিবনগর থানাতে আমাম হোসেন মিলু বা তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কেউ কোন মামলা করেনি। এজন্যই তাকে গ্রেফতারের কোন অভিযান চালানো হয়নি।

গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ক্ষমতার দাপটে সাধারণ মানুষ সহ আপন চাচাদের জমি দখল করেছেন। তার দুই চাচা দুদু বিশ্বাস ও নুরুল বিশ্বাসের জমি জোরপূর্বক দখল করে মিলু ও তার ছোট ভাই শিলু বিশাল বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করছেন। এখনো পর্যন্ত সেই বসতবাড়ির জমি তার চাচাদের নামেই রেজিস্ট্রিকৃত বলে জানিয়েছেন তাদের কয়েকজন প্রতিবেশী।

মিলু তার অপর চাচা মটর বিশ্বাসের পুকুর ও বাগান সহ ১০ বিঘা জমি জবর দখল করে ভোগ করছেন। নিজ গ্রাম যতারপুর ও পিরোজপুর গ্রামে আমাম হোসেন মিলু অনেকের বসতবাড়ি ও জায়গা জমি দখল তখন নিয়ে ভোগ দখল করছেন বলেও নিশ্চিত করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী। বর্তমানে তার মেহেরপুর শহরে বাড়ি রয়েছে মল্লিক পাড়া ও বাসস্ট্যান্ড পাড়াতে, মল্লিক পাড়াতে কয়েক বিঘা জমিও কিনেছেন সম্প্রতি। শহরের বেড়পাড়ায় তিন বিঘা আয়তনের একটা পুকুর কিনেছেন যৌথভাবে মিলু,শিলু ও বাধন। এছাড়াও সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের আগে নিজেকে ভারতীয় প্রার্থী বলে বিতর্কিত হওয়া প্রফেসর আব্দুল মান্নানের মেহেরপুর শহরে অবস্থিত জমি কিনে নেন মিলু ও শিলু। আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় মিলু ও তার ছোট ভাই শিলু এবং ভাতিজা বাধন মেহেরপুর জেলাতেই কয়েকশত কোটি টাকার সম্পদ করেছেন।
ওয়ান ইলেভেন পরবর্তীতে ২০০৯ সালে জয়নাল আবেদীন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ঘনিষ্ঠতা করেন তার সাথে। এখান থেকেই তার ক্ষমতার দাপটের শুরু। ঠিকাদারী ও টেন্ডারবাজিতে মেতে উঠতে শুরু করেন এই সময়। পরবর্তীতে ফরহাদ হোসেন দোদুল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তার সঙ্গে আতাত করেন মিলু। আর ফরহাদ হোসেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে মিলু ফরহাদের স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তার সুপারিশে ভাতিজা বাধনকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বানান। এরপর চাচা ভাতিজা দুজন মিলে ফরহাদ পত্নী মোনালিসার সান্নিধ্যে থেকে মেহেরপুরে ক্যাসিনো ব্যবসার নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন। জেলার প্রায় শতাধিক ক্যাসিনো ব্যবসায়ী তাদের ছত্রছায়ায় চলে আসে। নিয়মিত পেতে থাকেন মাসোহারা। এ সময় আমাম হোসেন মিলু ও তার ভাতিজা ছাত্রলীগ সভাপতি বাঁধন ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েকটি এজেন্ট চ্যানেল বাগিয়ে নেন। প্রথমদিকের ক্যাসিনো কাণ্ডের সহযোগী সাইদুর ও খাদেমুল হত্যাকাণ্ডে মিলু মাস্টারমাইন্ড বলে এলাকায় জোর প্রচার রয়েছে। এদের মধ্যে সাইদুর ছিলেন সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসার ব্যক্তিগত সহকারী, আর খাদিমুল ছিলেন সিটি ব্যাংকের এজেন্ট এবং মেহেরপুরের অন্যতম প্রধান ক্যাসিনো ব্যবসায়ী মুর্শিদ আলম লিপুর ভগ্নিপতি।

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে বড় মেয়ে হীরাকে ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকে উচ্চপদে চাকরি নিয়ে দিয়েছেন। আর ২৫ লাখ টাকা ডোনেশন দিয়ে মেজ মেয়ে ডিনাকে ভর্তি করেছেন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ। মিলু তার মেজ ভাই মুকুলের ছেলে নাহিদ মুজাহিদ বাচ্চুকে মহাজনপুর কলেজে কম্পিউটার প্রশিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। গ্রামের সাধারণ কৃষকদের সেচের পানি সরবরাহের জন্য ৫০ লাখ টাকা সরকারি ব্যায়ে নির্মিত ডিপ টিউবয়েলটিও বাগিয়ে নেন বাচ্চুর নামে। এই ডিপ টিউবওয়েল থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষ কোন সুবিধা পান না। এটা শুধু মিলু, শিলু, মুকুল ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ব্যবহৃত হয়। ২০১৬ সালে মিলুর অপর ভাই শিলু তার ছেলে বাঁধন ও বড় ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য হন।

ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যেয়ে মহাজনপুর ইউনিয়নে পরপর ৩ বার এবং সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

সরকারিভাবে মেহেরপুরের ভৈরব নদ খনন করা হলে সে সময় খননকৃত মাটি বিক্রয় করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার নামে। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও চড় থাপ্পড় মারার অভিযোগ থাকলেও তিনি থেকে গেছেন আইনের উর্ধ্বে। ২০১৮ সাল থেকে দুদক আমাম হোসেন মিলুর বিরুদ্ধে একটি মামলা করলেও সেটির কোন ফলাফল হয়নি। এছাড়াও মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতার অভিযোগে টিসিবির গম আত্মসাৎ করতে যেয়ে ফেঁসে যান তিনি। বিষয়টি নিয়ে এখনো আদালতে মামলা চলমান।

৯০ এর দশকে মিলুর পিতার মৃত্যুর পর তিনি পৈত্রিক সূত্রে মাত্র পাঁচ বিঘা কৃষি জমি পেয়েছিলেন। সমসাময়িক সময়েই তিনি চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে যায়। সেসময়ের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থী দলের কুখ্যাত নেতা রুহুল, সবুজ এবং লাল্টুর সাথে তার ছিলো চরম সখ্যতা। ১৯৯৬ সালের দিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরমপন্থী দমনে অত্যন্ত তৎপর হয়ে ওঠে, ঠিক সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে কোন চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করলে তাকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্ত করে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিলে সেই সুযোগকে কাজে লাগান আমাম হোসেন মিলু। গোপালপুর গ্রামের টুলু বিশ্বাসের সাথে পার্টনারে ভূষিমালের ব্যবসা শুরু করেন। প্রায় একই সময় ৯৭ সাল থেকে শুরু করে ২০০০ পর্যন্ত যতারপুর গ্রামের হায়াত সরকারের ছেলে মন্টে সরকারকে সাথে নিয়ে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে স্ক্রাপের ব্যবসা করতেন। এ সময় তার ব্যবসায়িক পার্টনার হয়ে ওঠে ভারতীয় নাগরিক মুকুল সাহা ও তার দল। স্ক্র্যাপ ও ট্রাক এর চেসিস আনা নেওয়ার পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন চোরাকারবারে। ২০০৬ সালে ট্রাকের চেসিস চোরা চালানের সময় ভারতীয় এক ট্রাক মালিককে হত্যা ও ট্রাক চোরাচালানের দায়ে ভারতে কয়েক মাস জেলও খাটেন মিলু। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় মিলু এবং মুকুল সাহা ও অপর দুই সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ভারতীয় আদালত। তবে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলা চলককালীন সময়ে তিন মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন আমাম হোসেন মিলু।

আমাম হোসেন মিলু ১৯৯৭ সালে তার খালু এবং মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মাস্টারের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০৬ সালে যতাপুর গ্রামের জহির রায়হান ও বাবলু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম এজহারভূক্ত ভুক্ত আসামি ছিলেন এই মিলু। হত্যা মামলা দুটিতে গ্রেফতার হয়ে ৩ মাস কারাবরণের পর জামিনে বের হয়ে আসেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামলার থেকে নিজের নাম সরিয়ে নেন।

অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই সত্য আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরবর্তী সময়েও মিলু তার নিজগ্রাম যতারপুরের গোরস্থান সহ রাস্তর গাছপালা কেটে লুটপাট ও বিক্রি করলেও তার বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কোন ব্যবস্থা।
তবে, সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে থাকায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।




অবসরের পরেই অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ ম্যাথু ওয়েড

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক ব্যাটার ম্যাথু ওয়েড। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) অবসরের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে সহকারী কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার।

আগামী মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে কাজ করবেন ওয়েড। অবসরের ঘোষণা দিয়ে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার বলেন, ‘সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরেই আমার মনে হয়েছে, সম্ভবত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখানেই শেষ। গত ছয় মাসে জর্জ বেইলি ও অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কোচিংয়ে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই কোচিংয়ের কথাটা মাথায় ছিল। ভাগ্যক্রমে ভালো সুযোগই পেয়ে গেলাম। আমি খুব রোমাঞ্চিত এ নিয়ে।’

২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩৬টি টেস্ট, ৯৭টি ওয়ানডে ও ৯২টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ওয়েড। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতাতেও বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুর ছহিউদ্দিন কলেজে সভাপতি নিয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধন

মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের (সাবেক পৌর কলেজ) গভর্ণিং বডির সভাপতি পদে হোটেল আটলান্টিকা মামলার আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন আরন্যকে নিয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক ও ছাত্র সমাজ।

আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে শহরের ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সামনে এ মানববন্ধন  অনুষ্ঠিত হয়।

মেহেরপুর সচেতন নাগরিক ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি মোঃ দবির উদ্দিনের নেতৃত্বে মানববন্ধনে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলমগীর খাঁন ছাতু।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, যুগ্ম সম্পাদক ও ছহিউদ্দিন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফয়েজ মোহাম্মদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হক, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাহিদ মাহাবুব সানি সহ ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুরে সবজির দাম নিম্মমুখী, বেড়েছে আলু-পেঁয়াজের দাম

মেহেরপুরে কিছুদিন আগেও সবজির দাম ছিল লাগামহীন। চাহিদা মতো সবজি কিনতে পারতেন না ক্রেতারা। বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। তবে এখন স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। দাম কমায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্য মতো সবজি কিনতে পেরে খুশি।

সপ্তাহন্তে কমেছে মরিচ, রসুন ও আদার দাম। কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী আলু ও পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মেহেরপুরের বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

গতকাল সোমবার সকালে মেহেরপুর বড় বাজারের আড়ৎ ও কাচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুন, আলু ও শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কমেছে দাম। গত এক সপ্তাহ ধরে সব সবজির দাম বিগত অর্ধেকে নেমে এসেছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি বাজারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে শাকসবজি বিক্রি করছেন তারা।
বাজারে আলুর কেজি ৫৩ থেকে ৫৭ টাকা। পেঁয়াজ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৪৮ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি বেগুন এখন ৬০ টাকা কেজি, লাউ কেজিতে ৫০ টাকা, কলা ৬০ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি ও গাজর প্রতি কেজি ২ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া মুলা কেজিতে ৪০ টাকা, পালং শাক ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, লাল শাক ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, টমেটো ২ শত টাকা এবং লেবু হালিতে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে নতুন করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৮ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২ শত টাকায়। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৩ শত টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫ শত টাকা কেজি দরে। সপ্তাহন্তে মুরগির দাম কমেছে ২০-৩০ টাকা।

স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মাংসের বাজার। মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা। এক থেকে ঢেড় কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছের দাম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। রুই মাছ ছোট সাইজের বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, গ্লাস কাপ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩ শত টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া, বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২ শত টাকা কেজি দরে।

বাজারভেদে গরুর মাংস কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৭৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে।

কাঁচা বাজারের বাজার করতে আসা মল্লিক নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেকদিন পর বাজার করতে এসে আজকে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। সকল পন্যের দাম অনেকটা সহনীয়।

আরেক ক্রেতা মোঃ আনোয়ার বলেন, কিছুদিন আগেও ১ হাজার টাকা নিয়ে সবজি বাজারে ঢুকলে চাহিদা মতো সবজি কিনতে পারিনি। এখন সব সবজির দাম কিছুটা কমেছে, ইচ্ছে মতো সবজি কিনতে পারছি।

সবজি ব্যবসায়ী ইসমাইল বলেন, পেঁয়াজ ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। বাজারে সবজির সরবরাহ হয়েছে। ফলে দাম কমে গেছে। আমরা বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বিক্রি করি, আর কম দামে কিনলে কম দামেই বিক্রয় করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, কেজি প্রতি শিম ১০০, বেগুন ৬০, কলা ৬০, ফুলকপি ৬০, মুলা ৪০, পালং শাক ৬০ টাকাসহ সব সবজির দাম কমেছে। বাজারে শীতকালীন প্রায় সব সবজিই উঠেছে। সবজি বাজার এখন ক্রেতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক।




মেহেরপুরে জেলা জামায়েতের সাবেক আমির ছমির উদ্দিনের ইন্তেকাল

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না এলাহী রাজিউন)।

আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল পৌণে ১১ টার দিকে  মারা যান তিনি।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের ছেলে ডেন্টিস্ট তারিক মোহাম্মদ তাওয়াবুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ২৫ অক্টোবর তিনি আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন। গতকাল ২৮ অক্টোবর দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত “ঐতিহাসিক পল্টন ট্রাজেডি দিবস” উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর মায়ের কবর জিয়ারত শেষে বাড়িতে এসে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে মেহেরপুর ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুকালে তার ৪ ছেলে ৪ মেয়ে, স্ত্রী আত্মীয় স্বজন, রাজনৈতিক সহকর্মী বন্ধু বান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকুরী করতেন। চাকুরী শেষে তিনি দীর্ঘদিন কুয়েত ছিলেন।

পরে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর নির্বাচিত হন।

পরে তিনি দীর্ঘদিন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের সূরা সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ২০০৬ সালের পর মেহেরপুর সামসুজ্জোহা পার্কে প্রকাশ্যে পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন স্বীকার হন।

তাঁর বড় ছেলে মেহেরপুর জেলা জামায়াতের তৎকালিন সেক্রেটারী ও জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় ইসলামি ব্যাংকের কাছ থেকে পুলিশ আটক করেন।

ওইদিন গত রাতে বন্দর গ্রামের শ্বসানঘাট এলাকায় কথিত ক্রস ফায়ারের নামে হত্যা করে। তারপরপরই আলহাজ্ব ছমির উদ্দীন তার আমেরিকা প্রবাসী মেঝো ছেলের কাছে চলে যান।

তারপর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন আওয়ামীলীগ সরকার। এছাড়া শহরের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর বাড়িটি।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের মায়ের মৃত্যুর সময় দেশে আসলে মায়ের জানাযা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বেশ কিছুদিন হাজত বাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও আমেরিকাতে চলে যান তিনি।

আলহাজ্ব ছমির উদ্দীনের আকষ্মিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন  মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজ উদ্দীন খান, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, আলমগীর খান ছাতুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠণের নেতৃবৃন্দ।

পারিবারিক ভাবে জানা গেছে, আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেহেরপুর সরকারী কলেজ মাঠে জানাজা শেষে পৌর কবর স্থানে দাফন করা হবে।




গাংনীতে গাঁজাসহ নারী আটক

গাংনীতে ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ রোজিনা খাতুন (৩৫) নামের এক নারীকে আটক করেছে গাংনী থানা পুলিশ।

আটক রোজিনা খাতুন গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের সীমান্তবর্তি বর্ডারপাড়া এলাকার মজনু আলীর স্ত্রী।
গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শিমুল বিল্লাহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রোজিনা খাতুনকে আটক করে।

এসআই শিমুল বিল্লাহ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। রোজিনাকে আটকের পর তাঁর স্বীকারোক্তী মোতাবেক ঘর থেকে ১০০ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়।

এদিকে এলাকাবাসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রোজিনা খাতুন তার ছেলেসহ মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। পুলিশী অভিযানের কথা টের পেয়ে ছেলে পালিয়ে গেছে।

এঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।