গাংনীতে শিশুকে সাপের ছোবল, নীবিড় পর্যবেক্ষনে চলছে চিকিৎসা
পুকুরে গোসল করতে গিয়ে মুজাহিদ হোসেন (১২) নামের এক শিশুকে সাঁপে কেটেছে। মুজাহিদ হোসেন গাংনী উপজেলার ধানখোলা গোরস্থানপাড়া এলাকার তুহিনের ছেলে। সে ধানখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার সুপ্রভা রানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে এটি রাসেল ভাইপার বা বিষাক্ত কোনো সাপ নয় বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক। মুজাহিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে নিবীড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা চলছে।
মুজাহিদ হোসেন জানান, আজ শনিবার (২২ জুন) বিকেল ৪ টার দিকে স্থানীয় একটি পুকুরে গোসল করে ডাঙ্গায় উঠার সময় একটি সাপ ছুটে এসে বাম হাতের কব্জীতে কামড় দেয়। সাথে সাথে সাপটিকে ঝাড়া দিয়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি সাথে সাথে জানালে তার বাবা তুহিন হোসেন দ্রুত গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুপ্রভা রানী বলেন, ৩ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠণ করে সাপে কাটা শিশুটিকে নিবীড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তার রক্ত পরীক্থাসহ অন্যান্য মেডিকেল টেষ্ট করানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সে ভর্তি রয়েছে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক মাসুদুর রহমান বলেন, মানুষকে বিষাক্ত সাপে কাটলে তার তিনটি সিনটম দেখা যাবে। এক নম্বর হলো সাপে কাটলে বিষ প্রথমে তার মাথার নার্ভের মধ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে। ফলে রোগীর ঘাড়ি ভেঙ্গো যেতে পারে। দ্বিতীয়ত হলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাপে কাটা রোগীর রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে ও তিন নম্বর হলো রোগীর দংশিত স্থান থেকে পচন শুরু হতে পারে। তাই সাপে কাটা রোগীকে ঝাঁড়-ফুক বা ওঝা না দেখিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বা জেলা সদরের হাসপাতালে নিতে হবে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার আদিলা আজহার আরশি বলেন, এই সময়ে সাধারণত সাপের উপদ্রুপ বাড়ে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বাড়ির আশে পাশে ঝোপ-ঝাঁড় পরিস্কার করার পাশাপাশি ঘরের মধ্যে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া বাড়ির আশে পাশে ব্লিচিং পাওডার, কার্বোলিক এ্যাসিড বা সাপ তাড়ানো অন্যান্য উপকরণ ছিটিয়ে দিতে হবে। যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত তারা কৃষি ক্ষেতে যাওয়ার সময় হাতে লাঠি নিতে হবে। তবে, মনে রাখতে হবে সব সাপ কিন্তু বিষধর নয়। কিছু সাপ আছে আমাদের প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ফসলের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। তাই সাপ মারা থেকেও বিরত থাকতে হবে। এছাড়া সাপ থেকে আতংকিত না হয়ে সামাজিকভাবে সচেতন হতে হবে।