শিরোপা জয়ে এগিয়ে মোহামেডান

প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে জয় পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। গতকাল মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের একমাত্র খেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ঊষা ক্রীড়া চক্রকে ৬-৫ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে সাদা-কালোরা।

মোহামেডানের মালয়েশিয়ান রিক্রুট ফাইজাল বিন সারির হ্যাটট্রিকে এ জয় তুলে নেয় তারা। এছাড়া জয়ী দলের আল নাহিয়ান শুভ, দ্বীন ইসলাম ইমন ও আরেক মালয়েশিয়ান ফিতরি বিন সারি একটি করে গোল করেন। ঊষার ভারতীয় রিক্রুট ইশরাত ইকতিদার জোড়া গোল এবং আরশাদ হোসেন, রাজু আহমেদ তপু এবং ভারতের মোহাম্মাদ শারিক একটি করে গোল করেন।

এদিকে এই জয়ে শিরোপা জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে রইল মোহামেডান। ১৪ খেলায় ৩৫ পয়েন্ট দলটির। সমান সংখ্যক ম্যাচে ঊষার পয়েন্ট ২৮। দু’দলের আর একটি করে ম্যাচ বাকি। মোহামেডানের এখন দরকার আর একটি জয়। সেই ম্যাচটি আগামী ১৯ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে। ঐ ম্যাচে মোহামেডান জিতলেই যেমন চ্যাম্পিয়ন।
সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে ডাক্তার আবু তাহের সিদ্দিকের অপচিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা

ডাক্তার আবু তাহের সিদ্দিক। একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। অস্ত্রপাচার করার কোনো অভিজ্ঞতা ও বৈধতা না থাকলেও তার ক্লিনিকে সবধরনের সিজারিয়ন অপারেশন করে থাকেন তিনি।অবৈধভাবে রোগীর অপারেশনের মত জটিল একটি কাজ করলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়না কখনো। ফলে এলাকার শত শত রোগী মৃত্যু অথবা চিরদিনের জন্য পঙ্গু হচ্ছেন তার অপচিকিৎসায়। চিকিৎসাসেবার নামে এই চিকিৎসক ক্লিনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেবার পরিবর্তে অর্থের পেছনে ছুটছেন তিনি। সরকারি হাসপাতাল থেকে দালালদের মাধ্যমে রোগী ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সরেজমিনের দেখা গেছে, পুরনো ও নিম্নমানের যন্ত্রপাতি, অদক্ষ সেবিকা, টেকনিশিয়ান ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকলেও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে মেহেরপুরে তাহের ক্লিনিক-১ ও গাংনী উপজেলা শহরে তাহের ক্লিনিক-২ নামে ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে।

অভিযোগ উঠেছে, ক্লিনিক স্থাপনের কোনো আইন না মেনেই সিভিল সার্জনকে ‘ম্যানেজ’ করে এই দুটি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে ডা. আবু তাহের শুধুমাত্র মেডিকেল অফিসার হলেও ক্লিনিকে বসে সব ধরনের অপারেশন করে থাকেন। যদিও একজন এনেসথেসিয়া চিকিৎসক দিয়ে অপারেশনের আগে অজ্ঞান করার কথা। কিন্তু ডা. আবু তাহের সিদ্দিক এনেসথেসিয়ার কাজটিও নিজে করে থাকেন।

ক্লিনিকে সেবিকাদের ডিপ্লোমাধারী সনদ থাকার কথা থাকলেও ওই ক্লিনিকের সেবিকা নেই। ক্লিনিকে লক্কড়-ঝক্কড় ১০০ এমএল এক্স-রে মেশিন দিয়ে চলছে এক্স-রের কাজ। এক্স-রে টেকনিশানও অদক্ষ লোক। টেকনিশিয়ান আহম্মেদ হুসাইনের কোনো একাডেমিক সনদ না থাকলেও বহাল তবিয়তেই নামমাত্র বেতনে অনেকদিন ধরে চাকরি করে আসছেন।

অদক্ষ প্যাথলজি টেকনিশিয়ান দিয়ে বিভিন্ন টেস্ট করে থাকেন।

এদিকে, ডা. আবু তাহেরের ভুল অপারেশনের শিকার হয়ে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এছাড়া অনেকে এখন পঙ্গু জীবনযাপন করছেন।

মেহেরপুরে তাহের ক্লিনিকের এই দুটি শাখাতে একের পর এক রোগীর মৃত্যু ঘটনা ঘটলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ভুল অপারেশনে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন রুগীর মৃত্যু হলেও অজ্ঞাত কারণে বারবারই পার পেয়ে যাচ্ছে ডাক্তার আবু তাহের। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকেই দায়ি করছে ভুক্তভুগী পরিবারের সদস্যরা।

তাহের ক্লিনিক গাংনী ২ শাখায় ভুল চিকিৎসায় গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের আখতারুল ইসলামের স্ত্রী সাইফুন্নেসা(২৫) মারা গেছে।

গত শনিবার প্রসব বেদনা নিয়ে ডা. আবু তাহের সিদ্দিক এর শরণাপন্ন হয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করেন সাইফুন্নেসা(২৫)। আজ মঙ্গলবার {১৬ এপ্রিল} সকাল ৮টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

সাইফুন নেছার ভাইয়ের ছেলে ফিরোজ জানান, অপারেশনের পর থেকেই আমার ফুপুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে গাংনী থেকে দ্রুত মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকে নিয়ে যান ডা. আবু তাহের সিদ্দীক। পরে মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকে ৫ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরেও রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। তড়িঘড়ি করে পরিবারের লোকজনকে ম্যানেজ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অপারেশন করার পর রোগীর মৃত্যু হয়।

তাহের ক্লিনিক ২ এর ম্যানেজার মামুনুর রশিদ জানান, ডা. আবু তাহের সিদ্দীকী নিজেই এনেসথেসিয়া ও সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন।

এ বিষয়ে ডা. আবু তাহের সিদ্দিক জানান, সিজারিয়ান অপারেশন ভুল ছিল না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

মেহেরপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মহি উদ্দিন জানান, ঘটনাটি শোনার পর গাংনী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন প্রকার তথ্য দেননি আসলে কি কারন দেননি এটা আমার জানা নেই।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, ২০১২ সালে গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের জাকারিয়া হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন নামে একজন প্রসূতি মাকে অপারেশন করে সন্তান হওয়ার পর নাড়ি সেলাই না করেই পেট সেলাই করে দেন ডাক্তার আবু তাহের। ১ ঘণ্টা পর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে তাকে দ্বিতীয়বার পেটের সেলাই খুলে নতুন করে সেলাই দিয়ে দেন। এর পর পরই রাজিয়া খাতুন মারা যান।

একই বছরে গাংনীর চৌগাছা গ্রামের মৃত আলম হোসেনের স্ত্রী রিজিয়া খাতুন তার পেটে সমস্যা দেখা দেওযায় তাহের ক্লিনিকে ভর্তি হন। তার পেটে অ্যাপ্যান্ডিসাইটস হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়ে তার অপারেশন করেন ডা. আবু তাহের।

কিন্তু ডা. তাহেরের অর্থলোভের কারণে অ্যাপ্যান্ডিসাইটস না হলেও তাকে অপারেশন করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন ক্লিনিকে গেলে ডাক্তার আবু তাহের ক্ষমা চেয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন।

২০১৯ সালে গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে এবং একই উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন তাহের ক্লিনিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন।এনেসথেসিয়া ছাড়াই ডাক্তার আবু তাকে সিজার করেন। ওই দিন সকাল বেলা ১২ টার দিকে সিজার করে সন্তান প্রসব করার পর রাত ৮ টার দিকে প্রচন্ড রক্ত ক্ষরনে মারা যান রিমা খাতুন।

২০১৫ সালে গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের হাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি তাহের ক্লিনিকের মেহেরপুর শাখায় অস্ত্রপচারের পরপরই মৃত্যু হয়।

মৃত হাফিজুর রহমানের মেয়ে নিলুফা খাতুন জানান, অস্ত্রপচার শেষে আমার বাবাকে বেডে নিয়ে আসে। এর পরপরই তার মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে দ্রুত নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স যোগে লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ক্লিনিক মালিক ডা. আবু তাহের।

২০১৩ সালে গাংনী তাহের ক্লিনিক ২ এ মায়া খাতুন (৩৩) পিত্তথলিতে পাথর অপারেশনের পর তার মৃত্যু হয়। মায়া পিতা রেজাউল হক জানান, ডাক্তার আবু তাহেরের ভুল অপারেশনের কারনে তার মেয়ে মায়ার মৃত্যু হয়।

২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাহের ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার বলি হন মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের মৃত হারান হাল সানার ছেলে আব্দুল খালেক (৫০)। ঐ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও ক্ষুদ্ধ জনতা ক্লিনিক ভাংচুর করে । এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পারিভন খাতুন অভিযোগ করে বলেছিলেন, ডা. তাহের নিজেই অজ্ঞান করা ইনজেকশন দিয়ে তার বাবাকে মেরে ফেলেছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার ফরিদুল ইসলাম হৃদয়ের স্ত্রী জেসমিন খাতুনের একদিনের নবজাতক এক শিশুর তাহের ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক আবু তাহের অপারেশন করে মলদ্বারের পথ তৈরি করতে গিয়ে শিশুর প্রসাবের নালি কেটে ফেলেন। ফলে নবজাতকের স্বাভাবিক মূত্রনালী দিয়ে যে প্রসাব হচ্ছিলো, সেটা মলদ্বার দিয়ে হচ্ছিল। ভুল অপারেশনের কারণে মলদ্বারেও মারাত্মক ইনফেকশন হয়ে শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন নবজাতককে দেখে ঢাকা পিজি হাসপাতালে রেফার করেন।




নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু কবে?

“রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে? সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে? তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি। রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?” ফররুখ আহমেদের পাঞ্জেরি কবিতার পঙতিমালার মত অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে “মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মুতি কমপ্লেক্স” প্রকল্প নিয়ে।

নতুন করে চারশ নয় কোটি নয় লক্ষ টাকা বরাদ্দের আন্তর্জাতিক মানের ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ নামে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রস্তাবিত প্রকল্প সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে মুজিবনগরের চিত্র। মুজিবনগরকে দেখেই পুরো মুক্তিযুদ্ধের চিত্রপট পর্যটকের চোখের সামনে ভেসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওবেয়সাইট থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২০মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখান থেকে কিছু সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। সে সংশোধনীতে এখনো আটকে রয়েছে প্রকল্পটি। অথচ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাল লেখা রয়েছে ১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথের স্মৃতিবিজড়িত স্থান মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রথম সরকারের শপথের মধ্যে দিয়ে যার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র, ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যর স্বাধীনতা সড়ক বাস্তবায়ন হয়েছে। যে সড়ক দিয়ে যাত্রী পারাপার ও পণ্য আমদানী রপ্তানীর জন্য গেজেট প্রকাশ হয়েছে স্থলবন্দরের।

নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্কাল্পচার গার্ডেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার মেমোরিয়াল মুর‌্যাল ও শপথ গ্রহণের গ্রাউণ্ড, শেখ হাসিনা মঞ্চ, প্যানোরমা ও অ্যাম্পি থিয়েটার, হিস্টোরি ওয়াক, ৩ তলা বিশিষ্ট অ্যাডমিন ব্লক, ২ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ব্লক, ৪তলা বিশিষ্ট ট্রেণিং সেন্টার, ৪তলা বিশিষ্ট অফিসার্স ও স্টাফ কোয়ার্টার, সুইমিং পুল, ফুড জিয়স্ক ও রেস্ট রুম, রেন্টাল সপ, ওয়াচ টাওয়ার, ভিভিআইপি ও ভিআইপি পার্কিং, সাধারণ পার্কিং, মাছ ধরার ডেক, রোপ ওয়ে, ২তলা বিশিষ্ট বোট ক্লাব, সুপেয় পানির ডিসপেনসার, ব্যাংক প্রটেকশনসহ লেক, ব্রীজ, কনটোর্স, আইসল্যাণ্ড, ওয়াচ ওয়ে, চালকদের আবাসন, শিশু পরিবার ও ডরমেটরি, ২তলা বিশিষ্ট স্কুল, টেনিস কাম বাস্কেটবল কোর্ট, প্লে গ্রাউণ্ড, লেজার শো ওয়াটার শিল্ড।
আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে নতুন ৫৬.০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সবমিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রটি ১২৭ একরে রুপ নেবে। জমি অধিগ্রহণসহ নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৪১০ কোটি টাকা। প্রয়োজনে প্রকল্পের অর্থের বাড়ানো হবে এমনটা জানা গেছে।

প্রায় দুই যুগ আগে ৭২ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রায় তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে বৈদ্যনাথতলায় নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র। তবে নির্মিত বেশ কিছু স্থাপনায় ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশ মানচিত্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। মানচিত্রে পুরো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন চিত্র ফুটে উঠলেও মুজিবনগরের শপথ নেওয়ার কোন চিত্র সেখানে স্থান পায়নি। গার্ড অব অনারের ভাস্কর্যে ১২ জন আনসার সদস্যর বিপরীতে দেখানো হয়েছে ৮ জনকে। মানচিত্রে সেক্টর ভিত্তিক কমাণ্ডারদের ভাস্কর্যও নেই।

মানচিত্রের বাইরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্যসহ অন্যান্য ভাস্কর্যগুলো এতটাই নিম্ম মানের যা মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে। অনেকগুলোর ভেতরের রডের বদলে চিকন তার দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে শিলাবৃষ্টি বা ঝড় হলে সেগুলো ভেঙে যায়। কয়েকদফা সেগুলো পুনরায় রিপিয়ারিং করাও হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে রিপিয়ারিংসহ পালিশ করে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়।

আন্তর্জাতিক মানের করে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান, ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা সমৃদ্ধ তথ্য ও নিদর্শন দেশবাসী ও তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং বিদেশীদের কাছে মূর্ত করে তুলতে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মান করা হয়েছে । অথচ উদ্বোধনের আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়াতে পর্যটকরা আহত হচ্ছেন।

মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে কাজ শুরু করে মাঝে প্রকল্প কাটাছেড়া করা হয়। ফলে কাজটি শেষ হয় ২০১১ সালে। অতিনিম্নমানের কাজ হবার কারণেই ভাষ্কর্যগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকল্পর অন্যান্য কাজ এখনও অসমাপ্ত আছে।

আমবাগান পরিচর্যার জন্য অপেক্ষা
ঐতিহাসিক আম্রকাননে বর্তমানে ১১০০টি গাছ বেঁচে রয়েছে। পরিচর্যার অভাবে ইতোমধ্যে শতাধিক গাছ মারা গিয়েছে। ফলে বাগানটি ক্রমশই শ্রীহীন হয়ে উঠছে। জীবিত ১১০০টি গাছের পরিচর্যার জন্য মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত গাছ বাঁচানোর প্রকল্পের বরাদ্দ ছাড় হলে কাজ শুরু করা হবে নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: শামিম হাসান।

স্বাধীনতা সড়ক
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদিতে ভারতের কলকাতা থেকে যে মেঠোপথ ধরে জাতীয় চার নেতাসহ দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা এসেছিলেন সেই মেঠপথটিকে স্বাধীনতার অর্ধশত বছর উৎযাপন উপলক্ষে বর্তমান সরকার ‘স্বাধীনতা সড়ক’ নামে নামকরণ করেছেন। ওই মেঠপথটির বাংলাদেশের অংশ ৫০০ মিটার সড়ক ১ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ইতিমধ্যে পাকাও করা হয়ে গেছে। ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এ সড়কের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

দুই যুগ আগে স্থাপিত মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বর্তমানে যা আছে:
১১টি মন্ত্রনালয়ের প্রায় ৩’শ কোটি টাকা বরাদ্দে গড়ে উঠেছে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র । এর মধ্যে পর্যটক মোটেল, শপিংমল, শিশু পরিবার, ডাকঘর, হেলিপ্যাড, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ছয় দফা ভিত্তিক মনোরম গোলাপ বাগান, অত্যাধুনিক মসজিদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাদুঘর। এখন পর্যন্ত এসব কোন স্থাপনাই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি। অথচ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপের কাজ শেষ হয়েছে অন্তত ১০ বছর আগে। সবশেষে সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে বড় মিলনায়তন নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।
তবে এখনো প্রশাসনিক প্লাজা, অ্যাপ্রোচ রোড, বিদ্যুৎ, জেনারেটর ক্রয় (১০০-কেভিএ), মানচিত্রে স্টেজে কাঠের কাজ, সিঁড়িতে এসএস রেলিং, জলছাদ র‌্যাম্প ও এসপিএমসিবি পাওয়ার সকেট, আন্ডার গ্রাউন্ড সার্ভিস লাইন কাজ আজও শেষ হয়নি।

মেহেরপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে যাদুঘর সংস্কার, রাস্তা সংস্কার, রঙ করা সহ কমেপ্লক্স চত্ত্বর পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরে সংস্কার কাজ করা হয়েছে।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: শামীম হাসান বলেন, নতুন যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে তার মিটিং হবে বিকালে। প্রকল্পটি কোন পর্যায়ে আছে মিটিং শেষে জানা যাবে। তবে মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে জেলা প্রশাসন সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগের মুজিবনগর দিবস নিয়ে বলেছিলেন, নতুন করে প্রস্তাবিত মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রাথমিকভাবে ৪১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রেডি করেছে। আমরা চাচ্ছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি একনেকে পাশ করানোর জন্য।

যেভাবে ১৭ এপ্রিল:
অনেক জীবন এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল তার আসল বাস্তবতা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ বাঙালী জাতির আন্দোলনের কারণ সম্পর্কে সেই ১৮৮৫ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অনেক ঘটনায় উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশীদের স্বপ্ন চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর আম বাগানে। যেখানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিল। সেখানে সেই মহতী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এবং বিশিষ্ট বাজনীতিবিদগণ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে একটি রেডিও সেন্টার স্থাপন করে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠান সারাদেশে সম্প্রচার করা হয়েছিল এবং মুজিবনগর সেদিন পেয়েছিল ঐতিহাসিক মর্যাদা।
১০ এপ্রিল ১৯৭১ এক ঘোষনার মাধ্যমে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল যা মুজিবনগর থেকে ইস্যু করা হয়েছিল । এখানে উল্লেখ্য এই ঘোষনা বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্বের ঘোষনাকে দৃড়ীকরন করে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রথম প্রবাসী সরকারের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ।

সে সময় পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী মেহেরপুরকে করতলে নিলেও পৌঁছুতে পারেনি বৈদ্যনাথতলায়। তদানীন্তন মেহেরপুর মহাকুমার বাগোয়ান ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী বৈদ্যনাথতলা। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সমস্ত সময়টুকু এ জায়গাটি ছিল নির্বিঘ্ন। বি্িরটশ শাসনামলে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুর ছিল মহাকুমা শহর । সে সুবাদে কলকাতার সাথে এই বৈদ্যনাথতলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ব্যাবস্থা ছিল। সরকার গঠনের পর মুজিবনগরকে অন্তর্র্বতীকলিন রাজধানী ঘোষনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি স্বাধীতার ফরমান জারি করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করা হয়েছিল। ওই সময় ও শপথ গ্রহণের স্থানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে বৈদ্যনাথতলা নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় মুজিবনগর। তখন থেকে ১৭ এপ্রিলকে বলা হয় মুজিবনগর দিবস। এবং সেই থেকেই এই দিনটি মুজিবনগর দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। মুজিবনগর সরকার দেশকে ৬টি জোনাল কাউন্সিলে ভাগ করেছিল যা জনগনের সমস্যার দেখভাল করত। সে সময় মুজিবনগর হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের প্রেরণার উৎস এবং জাতির ভাবমূর্তি অক্ষ্ন্নু রাখতে যথাসম্ভব যাকিছু করার ছিল তাই করেছিল। মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন আমাদের মুক্তি সংগ্রামে এবং ইতিহাসে এক মাইল ফলক। যা বিশ্বকে সাহায্য করেছিল আমাদের মুক্তিয্দ্ধুকে সমর্থন করতে। পরবর্তীতে ৯মাস যুদ্ধ শেষে চুড়ান্তভাবে স্বীকৃত পেয়েছিল একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে।

এবারের কর্মসূচী
ভোরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। পরে ৯টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গার্ড অব অনার প্রদান। সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে জাতীয় ও স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে। অতিথি হিসেবে থাকবেন উপদেষ্টামণ্ডলির সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপিসহ আশেপাশের জেলার সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জেলা প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।




দামুড়হুদা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি গঠন

দামুড়হুদা উপজেলা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ দামুড়হুদা শাখার আহবায়ক কমিটি অনুমোদিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার পূজা উদযাপন পরিষদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা ১৭ সদস্য বিশিষ্ট দামুডহুদা উপজেলা কমিটিকে অনুমোদন প্রদান করেন।

পূজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ দামুড়হুদা উপজেলার শাখার আহবায়ক হিসেবে বাসুদের হালদার ও সদস্য সচিব হিসেবে পলাশ কুমার দে কে সহ ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা কমিটিতে পাঠানো অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রশান্ত অধিকারী সদস্য সচিব কিশোর কুমার কুন্ডু এ-কমিটিতে অনুমোদন প্রদান করেন, দামুড়হুদা উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের নবগঠিত আহবায়ক কমিটির পক্ষ হতে চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির আহবায়ক প্রশান্ত অধিকারী ও সদস্য সচিব কিশোর কুমার কুন্ডু সহ কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে




আলমডাঙ্গায় যাত্রীবাহী বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

আলমডাঙ্গায় যাত্রীবাহী বাস-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে আলামিন হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কে নিগার সিদ্দিক ডিগ্রী কলেজের সসন্নিকটে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আলামিন জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ এলাকার মৃত মিন্টু ইসলামের ছেলে এবং তিনি ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি ইউপি সদস্য ছিলেন। আহত অবস্থায় তাঁকে পরিবারের সদস্যরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা জানান, আলামিন মোটরসাইকেল যোগে মুন্সিগঞ্জের নিগার সিদ্দিক কলেজ এলাকার (এডিবি) ব্রিকসে যাচ্ছিলেন। এসময় ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে সামনে থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাসের ধাক্কায় তিনি ছিটকে পড়েন। পরে ওই বাসের চাকার নিচে পড়ে পা পিষ্ট হয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নেয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরিবারের সদস্যরা উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলামিনের মৃত্যু হয় ।

এ বিষয়ে জানতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) শেখ গনি মিয়া জানান, মুন্সিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কুষ্টিয়ায় মৃত্যু হবার কারণে সেখানেই সুরতহাল রিপোর্ট সংগ্রহ করবে। সংবাদটি লেখাপর্যন্ত কোন অপমৃত্যু মামলা হয়নি বলে জানান ওসি শেখ গণি মিয়া।




দর্শনা রেললাইনের পাশ থেকে রক্তাক্ত মর*দেহ উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় রেললাইনের পাশ থেকে দিলীপ কুমার হালদার (২৮) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে দর্শনা হল্ট রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে রেললাইনের পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।

দিলীপ কুমার হালদার মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের কার্তিক হালদারের ছেলে।

দর্শনা রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে অনুমানিক রাত ১টার দিকে ট্রেনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে দর্শনা থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।




মেহেরপুরে পৌঁছেছেন মুজিবনগর দিবসের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী 

১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের বিশাল জনসভার প্রধান অতিথি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মেহেরপুর এসে পৌঁছেছেন।

আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে আ ক ম মোজাম্মেল হক সড়কপথে মেহেরপুর সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছান।

এসময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক শামীম হাসান মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে মেহেরপুর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে ।

এসময় মন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপি, পুলিশ সুপার এসএম নাজমুল হক প্রমুখ।




হিট ওয়েভ সম্পর্কে যে তথ্যগুলো জানা জরুরি

চৈত্রের শেষেই তাপপ্রবাহের কবলে দেশের বিভিন্ন অংশ। ইতোমধ্যে দেশে চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। যা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি।

এমনকি আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে যে, চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে চলতি মাসেই তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও আগেই সতর্ক করা হয়েছে।

এ অবস্থায় প্রয়োজন না থাকলে বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভাল। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতি বছরই বিশ্বে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয় এই হিট স্ট্রোকে। অনেকেই রোদের মধ্য থেকে বাড়িতে ফিরে প্রথমেই ঢকঢক করে ঠাণ্ডা পানি খেয়ে ফেলেন। যা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ এতে যেমন ঠাণ্ডা বসে যায় তেমনই কিন্তু স্ট্রোকের (হিট ওয়েভ) সম্ভাবনাও বেড়ে যায় অনেকখানি।

হিট ওয়েভ বা হিট স্ট্রোক বাঁচতে তাই সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয় মেনে চলার ওপর বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, তার কয়েকটি সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো-

# স্বভাবিক পানি পান করুন, তাও আবার ধীরে ধীরে।
# ঠাণ্ডা পানি পান পরিহার করুন। বরফ/বরফ পানি পুরোপুরিই পরিহার করুন।
# যখন তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াসে পৌঁছে তখন খুব ঠাণ্ডা পানি পান করতে নিষেধ করেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে রক্তনালী হঠাৎই সংকুচিত হয়ে স্ট্রোক হতে পারে।

# যখন বাহিরের তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস অতিক্রম করে তখন ঘরে চলে আসুন বা ছায়ায় অবস্থান করুন। ঠাণ্ডা পানি পান করবেন না। স্বভাবিক তাপের পানি পান করুন বা ঈষৎ গরম পানি এবং ধীরে ধীরে পান করুন।

# ঘরে এসেই হাত-পা-মুখ ধুবেন না। হাত-মুখ ধোয়ার আগে একটু অপেক্ষা করুন। দেহকে ঘরের তাপের সাথে খাপ খাইতে দিন। অন্তত আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন হাত-মুখ ধোয়ার আগে বা গোসলের আগে।

# অল্প অল্প করে বারে বারে স্বাভাবিক পানি পান করুন। জুস বা এ জাতীয় পানীয় পরিহার করুন। স্বাভাবিক শরবত, ডাব বা লবণ পানির শরবত পান করতে পারেন- যদি তা আপনার জন্য অন্য কারণে নিষিদ্ধ না হয়ে থাকে। তবে তাও স্বল্প পরিমাণে।

# প্রচণ্ড গরমে বা যদি আপনি খুবই ক্লান্ত থাকেন তবে ভুলেও বরফ মিশ্রিত পানি বা ফ্রিজের পানি পান করবেন না, যদিও ওই সময় ঠাণ্ডা পানি খুব ভালো লাগে। এটা শরীরে প্রশান্তি ভাব এনে দিলেও হঠাৎই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

সূত্র: যুগান্তর




চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। এপ্রিল মাসে এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। ঈদের পর তাপপ্রবাহের ফলে খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষ তাদের কর্মে ফিরতে পারেনি। অনেকটা কর্মহীন দিন পার করছে তারা।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস,বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৭ শতাংশ। এদিন দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস,সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৩ শতাংশ।

তিনি আরো জানান, এপ্রিল মাস ব্যাপী মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে এ আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভবনা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ভ্যাপসা গরম আবহাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়া সকাল থেকে কাজ ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেনা। রিকসা ও ভ্যান এবং ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালকদের যাত্রী হচ্ছেনা। এছাড়া গরম আবহাওয়ায় কেউ কাজ না করায় দিন হাজিরায় কর্মজীবী বিপাকে পড়েছে।




দামুড়হুদায় টাকার বিনিময়ে ৪ মাদকসেবীকে ছেড়ে দিলেন এ এস আই বিপ্লব

যেখানে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশ মদকের বিষয়ে কোন ছাড় নেই সেখানে দামুড়হুদা মডেল থানার এ এস আই বিপ্লব শাহা এত সাহস পেলো কোথায়। দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর চৌধুরী পাড়ায় কয়একজন মিলে গাঁজা সেবন করছিল।

এমন সময় দামুড়হুদা মডেল থানার এএস আই বিপ্লব সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৪ জনকে আটক করেন। পরে স্থানীয় এক নেতার সহযোগিতায় মোটা অংকের বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন। গত রবিবার রাত ৮ টার দিকে জয়রামপুর চৌধুরী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্র থেকে জানাযায়, দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর চৌধুরী পাড়ার শাহাবুদ্দিনের ছেলে সামাদ,আশাদুলের ছেলে মোস্তফা, মহিউদ্দিনের ছেলে মিলন ও পারকৃষ্টপুর গ্রামের শাওনসহ ৭/৮ জন জয়রামপুর চৌধুরী পাড়ার জৈনেক মহুরার বাগানে বসে গাঁজা সেবন করছিল। এমন সময় দামুড়হুদা মডেল থানার এ এস আই বিপ্লব শাহা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে তাদেকে আটক করেন। পরে তাদেরকে নিয়ে আসা হয় চৌধুরী পাড়ায়। তাদেরকে ধরেছে এমন খবর পেয়ে এলকার দরুদি নেতা পল্লি চিকিৎসক শফি উদ্দীন বসে যায় পুলিশের সাথে দেনদরবারে। জনপ্রকাশে দেনদরবার করে মোটা অংকের বিনিময়ে সামাদের নিকট ৮ হাজার, শাওনের নিকট ৮ হাজার ,মিলনের নিকট ৫ হাজার ও মোস্তফার নিকট ৫ হাজার মোট ২৬ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন দামুড়হুদা মডেল থানার এ এস আই বিপ্লব শাহা। এমন মাদক সেবিদের ছেড়ে দেওয়ার খবর সংগে সংগে ছড়িয়ে পড়ে এলাকার মধ্যে।

এলাকাবাসীর অভিমত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান পিপিএম সেবা মাদকের সাথে আপোষ না করার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে অর্থের লোভে এ এস আই বিপ্লব শাহা তাদের ছেড়ে দিয়ে পুলিশের মানক্ষুণ করেছেন।

এক ভুক্তভোগী মাদকসেবি বলেন, এবার ঈদে আমি বাজার করতে পারিনি শখের বসে একটান গাঁজা সেবন করতে গিয়ে গুনতে হলো হাজার হাজার টাকা।আমার বাবা মা ধার করে টাকা দিয়েছে। এর চেয়ে ভালো হতো আমাকে মারধর করে কোটে চালান দিলে। টাকা তো লাগতো না।

এ এস আই বিপ্লব শাহাকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি ওসি স্যার জানে অতএব ফোনে কথা না বলে সরাসরি কথা বলতে চাই। পরে তিনি আর সরাসরি কথা বলেনি।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর কবির বলেন, আমি এ এস আই বিপ্লব শাহার এ বিষয়ে জিজ্ঞাগা করলে সে অস্বীকার করে। যদি টাকা নিয়ে থাকে তাদেরকে অভিযোগ করতে বলেন।প্রমান মিললে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, আর প্রমান না হলে বিষয়টি খারাপ হবে।