কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: এহেতেশাম রেজা বলেছেন,পহেলা বৈশাখই হচ্ছে বাঙালির জীবনে সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক আবহমান উৎসব।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ পুরনো জীর্ণকে ঝেড়ে ফেলে আমাদের যাপিত জীবনে নতুন সম্ভাবনা ও নতুন প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলতেই শুধু নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে একাকার হওয়ার প্রেরণাও জোগায়। তাই পহেলা বৈশাখই হচ্ছে বাঙালির জীবনে সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক আবহমান উৎসব।
আজ রবিবার সকালে পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কালেক্টরেট চত্বরের বনবীথিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাঙালির জীবনে প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের প্রথম দিনটি আবহমান কাল থেকেই আমাদের সত্তায়, চেতনায় ও অনুভবের জগতে এক গভীরতর মধুর সম্পর্ক নিয়ে বিরাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলা নববর্ষ আগে শুধুমাত্র গ্রাম কেন্দ্রীক ছিল। এখন তা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আগে নববর্ষ শুধুমাত্রে হালখাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সারা দেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এই উৎসবটি পালন করছে। এখন তা শহর কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এএইচ এম আবদুর রকিব , অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আক্তার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব রফিকুল আলম টুকু, কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা: আকুল উদ্দিন, চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের পরিচালক এস এম কাদেরী শাকিল, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, প্রবীণ সাংবাদিক আবদুর রশীদ চৌধুরী সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য এক মঙ্গল শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ করে।
পরে জেলা শিশু একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
এছাড়াও সুর্যদয়ের সাথে সাথে মোমবাতি প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভায় বর্ষবরণ উদযাপন করা হয়। এরপর পৌরসভার বটতলায় সকালের গান, আলোচনা সভা ও গ্রামীণ মেলার উদ্বোধন করেন পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী।
সকাল থেকেই বৈশাখী সাজে হাজারো মানুষের ভিড়, আনন্দোচ্ছ্বাস আর কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। বেলা বাড়তেই গান, নাচ, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে জমে ওঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কুষ্টিয়া জিয়া শিশু পার্ক, কামরুল ইসলাম সিদ্দিক শিশু পার্ক, রেনউইক বাঁধ, গড়াই নদীর বাঁধ এলাকায় যেন তরুণ-তরুনীসহ হাজারো মানুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে।