মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বাঁশবাড়িয়া থেকে জোড়পুকুরিয়া পর্যন্ত এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীর তদারকিতে চরম গাফিলতির কারনে রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। ফলে জনদূর্ভোগ এখন চরম মাত্রায় পৌছেছে।
রাস্তা নির্মাণ কাজে প্রায় ছয় মাস পানি ব্যবহার না করার কারনে গাংনী উপজেলা শহর এখন ধুলোর শহরে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জহিরুল ইসলাম ও মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। এদিকে সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে রাস্তাটিতে যাতায়াত বেড়েছে বহুগুণ।
জানা গেছে মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলীর গাফলতিতে ঠিকাদার রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন।
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্থকরণ ও সংস্কার কাজ চলছে নানা অনিয়ম, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও ধীরগতিতে।
দীর্ঘদিন রাস্তাটি ফেলে রাখার ফলে রাস্তার উভয় পাশের বালি এখন ধুলোতে পরিণত হয়েছে।
রাস্তাটির গাংনী অংশের গাঁড়াডোব থেকে তেরাইল পর্যন্ত রাস্তার মাঝে মাঝে উপড়ে ফেলায় জনদুর্ভোগ আরো বেড়েছে। অনেক আগে পাথর-বিটুমিনের আস্তরণ দেওয়া শুরু করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা শুরু করেনি ঠিকাদার। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ সড়কটি অযাচিত খোড়াখুড়ি করে রেখে দেওয়ায় পথচারিদের পেতে হচ্ছে দিগুন দুর্ভোগ।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) তত্ত্ববধানে মেহেরপুরের মের্সাস জহিরুল লিমিটেড এ সড়কের তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে। মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে গাংনী উপজেলার তেরাইল কলেজ পর্যন্ত এ তিনটি প্যাকেজের কাজ পেয়েছেন জহিরুল লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরাজীর্ণ গাঁড়াডোব, বাশবাড়ীয়া গাংনী পৌর শহর, মালশাদহ, চেংগাড়া, চোখতোলা, জোড়পুকুরিয়া ও তেরাইল।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী শাহীন মিয়াকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।
সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সবচেয়ে বেশি জরাজীর্ণ অংশের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতি তা হচ্ছেনা।
মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী পর্যন্ত চলমান এ সংস্কার কাজের মেহেরপুর জেলার অংশ প্রায় ৩০ কিলোমিটার। যার মধ্যে তিনটি প্যাকেজের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে গত বছরে। কাজের গুণগত মান অত্যন্ত নিম্নমানের বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গাঁড়াডোব থেকে বাঁশবাড়ীয়া পর্যন্ত অংশের কিছু কিছু স্থানে কাজের প্রথমে বিদ্যমান কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়। সেখানে বেজ টাইপ ওয়ান হিসেবে পাথর আর বালুর মিশ্রণ দিয়ে রুলার করার কথা থাকলেও পুরোদমে তা শুরু হয়নি। ফলে বেজ কোর্সের কাজ হিসেবে বিটুমিন ও পাথর দেওয়াও হচ্ছেনা।
এদিকে রাস্তা সংস্কার কাজ দ্রুতগতিতে না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে পথচারীদের ও জানবাহনের চালকদের মাঝে। ছোট বড় কয়েকটি যানবাহন চালক এ প্রসঙ্গে বলেন, সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চালাতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দে ভরা ছিলো তারউপর এখন রাস্তাটি উপড়ে ফেলা হয়েছে। যে কারনে সড়কটিতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ঝরছে প্রাণ আর পঙ্গি হচ্ছে অনেকেই।
মেহেরপুর কলেজ মোড় থেকে আলমপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা ফোরলেনে উত্তীর্ণ হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিদ্যমান প্রকল্পে কলেজ মোড় থেকে গাংনীর দিকে প্রায় এক কিলোমিটার ফোরলেন ছিল। এছাড়াও গাংনী শহরে প্রায় চার কিলোমিটার এবং বামন্দী বাজারে প্রায় এক কিলোমিটার ফোরলেন রয়েছে। পরবর্তীতে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সদর উপজেলার পুরো অংশ ফোরলেনের অনুমোদন হয়েছে বলে জানা গেছে।