বাদিয়াপাড়া-মহাব্বতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাদিয়াপাড়া মহব্বতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ও সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।

এসকল অভিযোগ তুলে গ্রামবাসী গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ পত্র দুটি মেহেরপুর প্রতিদিনেও পৌছানো হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন এবং সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ যৌথভাবে ৫ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেন। নিয়োগের নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোট ৩২ লক্ষ টাকা আদায় করা হয় উন্নয়ন ফান্ডের নামে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কামরুন্নাহারের কাছে থেকে ১২ লাখ, নাইট গার্ড ওসমানের কাছে থেকে ১০ লাখ, মালি জাবির থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে প্রধান শিক্ষক নিজ বোনের ছেলের নিয়োগের বিনিময়ে ১৫ কাঠা জমি নিজের নামে লিখে নেন এবং সভাপতি তার নিজের ছেলেকে পিয়ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, স্কুলের নামে থাকা ১১টি দোকান থেকে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হলেও গত ১৫ বছরের কোনো হিসাব প্রদান করা হয়নি। এ বিষয়ে জবাবদিহি চাইলে প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি একে অপরকে দায় দিয়ে গড়িমসি করছেন। গ্রামবাসীরা অভিযোগের বিষয়ে দুদক ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে এসকল অনিয়মনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।

তবে প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মুকুল মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, শুনেছি আমার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেছে। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো ভুয়া তথ্য। বর্তমান এডহক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ হওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ তোলা হয়েছে।




মেহেরপুরে গত ৬ মাসে সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন, আহত অর্ধশত

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের বনবিভাগের সামনে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক সরকারি প্রকৌশলী ও এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, মেহেরপুর গাংনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. এ কে এম মাহফুজুর রহমান (৪৭) এবং মেহেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্র মো. আকমল হোসেন (২০)। মাহফুজ গহরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আকমল শেখপাড়া গ্রামের মাবু মিরের ছেলে। এনিয়ে গত ৬ মাসে মেহেরপুরে বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

গতকালের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান অফিসের উদ্দেশ্যে গাংনীর দিকে যাচ্ছিলেন। অপরদিকে কলেজ শিক্ষার্থী আকমল হোসেন গাংনীর দিক থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। ঘটনার সময় জেলা বনবিভাগের সামনে পৌছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজনই গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মাহফুজের মোটরসাইকেলের নম্বর ছিল ঢাকা মেট্রো-হ ৩৬-৫৪২৯ এবং আকমলের মোটরসাইকেলের নম্বর মেহেরপুর হ-১৩-৫১৯৪। তাদের দুজনের মোটরসাইকেলেই হেলমেট ছিল কিন্তু হেলমেট পরিহিত ছিল না বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে, মেহেরপুরে গত ডিসেম্বর থেকে জুন পর‌্যন্ত সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু, শিক্ষার্থী, নারী, প্রবাসফেরত যুবক, কলেজ ছাত্র এবং বৃদ্ধও রয়েছেন। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, ট্রাক, ভ্যান ও বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের সংঘর্ষ ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঘটনা।

গত ১০ জুন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদিতে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে সৌরভ নামের এক যুবক নিহত হন, আহত হন একই পরিবারের ৪ জন সদস্যসহ মোট ৫ জন। ৫ জুন গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবুল কাশেম (৬২) নিহত হন। ৪ জুন মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ছাগল ব্যবসায়ী নজিম উদ্দিন (৬৪) নিহত হন, আহত হন আরও ৪ জন। ৩ জুন মুজিবনগরে ট্রলি ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে ৪ শিশু শিক্ষার্থী আহত হয়। ১০ মে গাংনীতে রাস্তা পার হতে গিয়ে আড়াই বছরের শিশু তাছনিয়া খাতুন নিহত হয়। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের শুকুরকান্দিতে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ৩ জন নিহত, ৩ নারী আহত হন। ৯ এপ্রিল গাংনীতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বৃদ্ধ সামসুল হক (৬৫) নিহত হন। ৩১ মার্চ মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রাইভেটকার, ভ্যান ও মোটরসাইকেলের ত্রি-মুখি সংঘর্ষে এক ব্যাংক কর্মকর্তা, এক শিশু ও আরও একজন নিহত হন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের হাসান মোল্লার ছেলে ও এনআরবিসি ব্যাংকের রূপনগর শাখার অফিসার আক্তারুজ্জামান ওরফে শোভন, সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে আল ইমরান এবং গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের ভ্যানচালক আলী হাসানের শিশু পুত্র জুবায়ের হাসান। ২৭ মার্চ সদর উপজেলার আশরাফপুরে মোশাররফ হোসেন (৬০) সড়কে প্রাণ হারান। ২২ মার্চ কুঠি ভাটপাড়ায় শ্যালো ইঞ্জিন আলগামনের সাথে ধাক্কায় প্রবাস ফেরত সাগর মিয়া (২৪) নিহত হন। ৪ ফেব্রুয়ারি আমঝুপিতে ট্রাকের ধাক্কায় লাল্টু হোসেন (৩২) নিহত, মিনারুল ইসলাম গুরুতর আহত।

২৭ জানুয়ারি, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামায়াত নেতা শেখ মোমিনুল ইসলাম (৫৫)। ৮ জানুয়ারি গাংনীতে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত হন স্কুল ছাত্র তাইমুজ্জামান (৯), কলেজ ছাত্র সিয়াম হোসেন (১৮) ও আব্দুল্লাহেল বাকী (১৮)। ১ ডিসেম্বর, তেঁতুলবাড়িয়ায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুলছাত্র সজিব হোসেন (১৬) প্রাণ হারান।

এই ছয় মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ জন শিশু ও শিক্ষার্থী রয়েছেন। স্কুলে যাওয়ার পথে, রাস্তা পার হতে গিয়ে বা ভ্যানে থাকাকালীন তাদের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪ জন প্রবাস ফেরত যুবকও রয়েছেন, যারা ছুটি কাটাতে দেশে এসে প্রাণ হারিয়েছেন।




‘ভবিষ্যতে ক্ষমতা পেলে ফিলিস্তিনের মত হবে’ হুমকি সম্বলিত চিরকুট ও বোমা সাদৃশ বস্তু উদ্ধার

মেহেরপুরে গ্রাম বিএনপির অফিসের সামনে থেকে ‘ভবিষ্যতে ক্ষমতা পেলে ফিলিস্তিনের মত হবে’ হুমকি সম্বলিত চিরকুট ও বোমা সাদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ জুন) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টার দিকে মটমোড়া ইউনিয়নের নওদা মটমোড়া গ্রাম বিএনপির অফিসের সামনে থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের (বাবলু গ্রুপের) দলীয় কার্যালয়ের সামনে সকালে দুটি সন্দেহজনক বস্তু পড়ে থাকতে দেখে তারা দ্রুত গাংনী থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে গাংনী থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ককটেল সদৃশ্য বস্তু দুটি ও একটি চিরকুট উদ্ধার করে।

চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘গ্রামের ছেলে হিসেবে এতদিন ভালোই ছিলাম, কিন্তু তোদের মত কিছু কিছু লোক আমাদের ভালো থাকতে দিচ্ছে না। (শেখ হাসিনা) পালিয়ে গিয়েছে তো কি হয়েছে।

আমরা জায়গার মাল জাগাতেই বসে আছি, ২০১৮ সালে হালকা দিয়েছি। ভবিষ্যতে ক্ষমতা পেলে ফিলিস্তিনের মত হবে’

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরায়েল বলেন, “স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইটি বিস্ফোরক সদৃশ্য বস্তু ও একটি চিরকুট উদ্ধার করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।”

তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত বস্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হবে। পাশাপাশি কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খুঁজে বের করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি গাংনীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলীয় কোন্দল ও হামলার ঘটনার পর এমন ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।




গাংনীতে বোমা ফাটিয়ে গণডাকাতি, আতঙ্কে এলাকাবাসী

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ধানখোলা রাস্তায় বোমা ফাটিয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল গণডাকাতি চালিয়েছে। এ সময় তারা তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পথচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল লুট করে নেয়। বুধবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ভুক্তভোগীরা জানান, গাংনী উপজেলার গোহাটপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম ও কাষ্টদহ গ্রামের মো. শিশির ধানখোলা গ্রামে যাচ্ছিলেন। পথে একটি ইটভাটার কাছে পৌঁছালে কালো কাপড়ে মুখঢাকা দুইজন ডাকাত পিস্তল হাতে লেজার লাইট দেখিয়ে তাদের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে নগদ টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়।

তারা জানান, এসময় আশপাশে থাকা ৮/১০ জন পথচারীকেও পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে গিয়ে ডাকাত দল সবার টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়। তাদের সঙ্গে থাকা আরও ৫-৬ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র ও ওয়াকিটকি নিয়ে দূর থেকে পাহারা দিচ্ছিল। ডাকাতি শেষে তারা তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে।

ঘটনার খবর পেয়ে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনি ইসরাইল পুলিশের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে তিনি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “ডাকাতদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।




দামুড়হুদায় ফল উৎসব মেলা ও কৃষি উপকরণের উদ্বোধন

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে ফল উৎসব মেলা ও কৃষি উপকরণের শুভ উদ্বোধন করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র। আজ বুধবার বেলা ১২ টার দিকে কৃষি অফিসের আয়োজনে ফল উৎসব মেলা ও কৃষি উপকরণের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় দেশীয় বিভিন্ন জাতের ফল দিয়ে সাজানো ইনস্টলটি ঘুরে দেখেন ও কৃষি উপকরণ ধানের বীজ ও নারিকেলের, তালের চারা কৃষকদের হাতে তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার, সমাজ সেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হক, প্রকৌশলী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুজোহা পলাশ, মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল সাবাহ, একাডেমি মাধ্যমিক স্কুল সুপার ভাইজার রাফিজুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অভিজিৎ কুমার বিশ্বাসসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও আমন্ত্রণিত অতিথিবৃন্দ।




চুয়াডাঙ্গায় বিসিক শিল্প নগরীর প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত উদ্বুদ্ধকরণ সভা

চুয়াডাঙ্গায় বিসিক শিল্প নগরীর প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার বিকাল তিনটার সময় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) জেলা কার্যালয় চুয়াডাঙ্গার উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন চুয়াডাঙ্গার সার্বিক সহযোগিতায় বিসিক শিল্পনগরীর প্লট বরাদ্দ প্রদান সংক্রান্ত একটি উদ্বুদ্ধকরণ সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শারমিন আক্তার। সভায় বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

এ সভার মূল লক্ষ্য ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলার সম্ভাবনাময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদেরকে বিসিক শিল্পনগরীতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা এবং শিল্প বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিসিক চুয়াডাঙ্গার উপব্যবস্থাপক এ বি এম আনিসুজ্জামান।

এছাড়াও সভায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ, স্থানীয় ব্যবসায়ীবৃন্দ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সভায় অংশগ্রহণকারীগণ বিসিক শিল্পনগরীর ভূমি ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সুবিধা, অর্থায়নের সুযোগ এবং উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। অংশগ্রহণকারীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং জেলা পর্যায়ে শিল্পোন্নয়নে বিসিকের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান।




চুয়াডাঙ্গায় ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার পৃথক দুটি ধর্ষণ মামলায় নাজমুল হক ও আব্দুল খালেক নামের দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিতরা হলেন– জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর বানপুর গ্রামের আব্দুল খালেক (৫৫) এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী গ্রামের নাজমুল হক (৩৩)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৮ জুন মিনাজপুর বানপুর গ্রামের ৬ বছর বয়সী এক শিশু মেয়েকে ধর্ষণ করেন আব্দুল খালেক। ওই ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে ৯ জুন জীবননগর থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। জীবননগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন তদন্ত শেষে ওই বছর ৩০ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আব্দুল খালেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

অপরদিকে, ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার বাড়াদী গ্রামের মীরপাড়ার এক বাড়িতে ঢুকে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন আসামি নাজমুল হক। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। পরে ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খসরু আলম তদন্ত শেষে আসামি নাজমুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি নাজমুল হককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাহজাহান মুকুল জানান, পৃথক দুটি রায়ে ভুক্তভোগীর পরিবার সন্তুষ্ট। ধর্ষণের ঘটনায় দুটি রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সমাজের অপরাধ প্রবণতা এই রায়ের পর কমবে বলে রাষ্ট্রপক্ষ মনে করে।




মেহেরপুরের শ্যামপুরে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ

মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড শ্যামপুর হঠাৎ পাড়ায় কয়েকশো বছরের সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ স্থানীয় ফারুক হোসেন ও রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে। রাস্তার দু’পার্শ্বে পাকা বাড়ি নির্মাণ করায় রাস্তাটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামের কৃষকরা মাঠের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না।

গ্রামবাসীরা জানান, শ্যামপুর হঠাৎ পাড়ায় একটি ২০/২৫ ফিট সরকারি রাস্তা হিসেবে গ্রামবাসীরা ব্যবহার করতো প্রায় শত বছর ধরে। ওই রাস্তায় পার্শে রুহুল আমীন ও ফারুক হোসেন শ্যামপুরের জনৈক এক ব্যাক্তির কাছ থেকে ৫ শতাংশ করে জমি ক্রয় করেন। তবে জমি জরিপ না করেই ক্ষমতার দাপটে জনগণের একমাত্র রাস্তার অধিকাংশ জমি দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন ফারুক হোসেন। ফারুক হোসেনের দেখাদেখি রুহুল আমিনও বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এত রাস্তায় ব্যবহ্রত বেশির ভাগ জমি দখল হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে গ্রামে দফায় দফায় শালিশ বৈঠক হলেও জমির দখল ছাড়তে রাজি নন ফারুক হোসেন ও রুহুল আমীন।

সরকারি রাস্তার জমি উদ্ধারে স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেন। কিন্তুু ক্ষমতার দাপটে ইউনিয়ন পরিষদের নোটিশ অমান্য করেন রুহুল আমীন ও ফারুক হোসেন।

পরে আবারও ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেন আবুল কালাম আজাদ। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সার্ভিয়ার ও গ্রাম পুলিশ দিয়ে জমি জরিপের ব্যবস্থা করেন। সে মোতাবেক আজ বুধবার সকালে জমি জরিপ করেন সার্ভিয়ার। সে সময় গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বৃদ্ধ রমজান আলী বলেন, আমাদের বাপ দাদাদের আমলের রাস্তা এটি। গ্রামের সব মানুষ মাঠের ফসল তোলা ও চলাচল করে। অথচ রুহুল ও ফারুক রাস্তার জমি অর্ধেক দখল করে নেয়। আবুল কালাম আজাদ জানান, গ্রামের শহিদুল, জামিরুল, বাবু ও লিখন জমি দখল করেছে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমি শংকিত।
ফারক হোসেন বলেন, আমরা যখন বাড়ি নির্মাণ বা প্রাচীর নির্মাণ করেছি তখন মাপা হয়নি। অনুমানের ওপর করেছি। এখন দেখছি রাস্তার জমি। তবে সরকারি জমি হলে আমি তা ছেড়ে দেবো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য (সাবেক) ফাহিমা খাতুন জানান, রাস্তাটি শত বছরের পুরাতন। অথচ দখল হয়ে যাচ্ছে। জনস্বার্থে বেদখল হওয়া রাস্তা উদ্ধার হওয়া প্রয়োজন।

মেহেরপুর সদর থানার ওসি জানান, এমন কোনো বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




মেহেরপুরে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত

মেহেরপুরে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিনটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি,আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে বুধবার সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোজাফ্ফর খান।

“প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়” প্রতিপাদ্যকে ঘিরে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক এস. এম. আশরাফুল হাবীব, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইনজামামুল হক, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ইসমাইল হোসেন, সামাজিক বন কর্মকর্তা এইচ.টি. হামিম হায়দার, ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি মনিরুল হুদা, সুবাহ সামাজিক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মইন-উল-আলম এবং সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি শামিমা আখতার।

এর আগে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাজওয়ার আকরামের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরি মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এসে শেষ হয়।




দামুড়হুদায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দামুড়হুদায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে “প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়” এই স্লোগানকে সামনে রেখে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালি শেষে পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হক, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুজোহা পলাশ, মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল সাবাহ, একাডেমি মাধ্যমিক স্কুলের সুপারভাইজার রাফিজুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।

আলোচনা সভায় বক্তারা বিশ্ব পরিবেশ দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, পরিবেশ সুস্থ না থাকলে আমরা কেউ সুস্থ থাকতে পারব না। বর্তমানে প্লাস্টিক দূষণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় আমাদের চারপাশের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। ক্ষুদ্র বা মাইক্রো প্লাস্টিক কণাগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ক্যানসার, স্ট্রোক, কিডনি ড্যামেজসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি করছে।

তারা আরও বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্য অবশ্যই নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে এবং তা রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ইটভাটা বন্ধ না করলে একদিকে উর্বর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ইটভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই নিয়ম মেনে ইটভাটা পরিচালনা করতে হবে। কীটনাশক ব্যবহারেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয়।

তারা ইলেকট্রনিক বর্জ্যও নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তা রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারের উপযোগী করে পরিবেশ রক্ষার আহ্বান জানান।