গাংনীর বাজার স্থানান্তর না হওয়ায় থমকে আছে গাংনী পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ কাজ। মার্কেট নির্মাণ না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ক্রেতা সাধারণ।
এ নির্মাণ কাজ বাঁধাগগ্রস্থ করতে কৌশলগত ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে। গাংনী বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারনের দীর্ঘদিনের দাবী যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে দ্রত সমাধান করে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরুর দাবী পৌরবাসীর। পৗর কর্তৃপক্ষ বলছে, হাটটি অন্য কাথাও স্থানান্তর করা না হলে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানাগেছে, ১৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে গাংনী পৌর সুপার মার্কেট। এ নির্মাণ কাজ বাঁধাগ্রস্থ করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন গাংনী পৌরকর্তৃপক্ষ।
এ কাজের প্রমাণ মিলেছে গাংনী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রের একমাত্র সাপ্তাহিক হাট ফুটবল মাঠে স্থানান্তরে বাঁধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে। এলাকার স্বার্থে ফুটবল মাঠ সংস্কারে পৌর কর্তৃপক্ষের অবদান থাকলেও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান ঠিক উল্টো। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, হাটটি অন্য কোথাও স্থানান্তর না করা পর্যন্ত পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পৌর মেয়র আহমেদ আলী জানায়, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বাচ্ছন্দে যাতে ব্যবসা করতে পারে সে জন্য পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ব্যায় ধরা হয় ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। কাজের মেয়াদ কাল প্রায় দুই বছর। এ সময়ে ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী স্থান নির্ধারণ করা হয়।
তহবাজারটিতে স্থানীয় কাচা বাজারে স্থানান্তর করা হয়। সাপ্তাহিক দুটি হাট ফুটবল মাঠে বসানোর জন্য এলাকাতে মাইকিং করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার থেকে হাট বসানোর কথা ছিল। সে কাজে বাঁধসাধে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও গাংনী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষক শফি কামাল পলাশ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে হাটটি না বসানোর দাবী জানানো হয়। এখানে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করা হয়নি।
একটি সুত্র বলছে, পৌর মেয়র আহম্মেদ আলীর সাথে রাজনৈতিক মনোদ্বন্দ্ব রয়েছে মোশারফ হোসেনের। একসময় একই বৃত্তে থাকলেও বেশ কিছুদিন যাবত দুজন দু’মেরুতে অবস্থান নেন। এটি প্রকট আকার ধারণ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে। নৌকা প্রার্থী নাজমুল হক সাগরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন মেয়র আহম্মেদ আলী। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেনের পক্ষ নেন মোশারফ হোসেন ও শফি কামাল পলাশ।
কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, পৌর মার্কেটটি নির্মিত হলে ব্যবসায়ীরা সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারবেন। অথচ সাপ্তাহিক হাটটি স্থানান্তর করা না গেলে মার্কেটটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। আবার হাটের জন্য অস্থায়ী স্থান নির্ধারণ না করা হলে ব্যবসায়িরা বিপাকে পড়বেন। তারা এখানে ব্যবসা না করতে পারলেও অন্যস্থানে জায়গা করে নিবেন। ফলে হাটটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ইজারদার ও ব্যবসায়ীগন।
জানা গেছে, গাংনী ফুটবল মাঠের জমি গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একার নয়। ব্যাক্তি মালিকানাধিন বসত ভিটা ছাড়াও স্থানীয় তহশীল অফিসের জমি রয়েছে। কিন্তু মাঠটি নিজেদের বলে দাবী করে জনগনের স্বার্থের কথা না ভেবে অস্থায়ী হাট বসানোয় বাঁধা দেয়া হচ্ছে।
গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী আরও জানান, ফুটবল মাঠে হাটটি বসানোর কথা ছিল। সেটি বাধা দিচ্ছেন গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
যেহেতু জায়গাটি তাদের তারা পৌরসভাকে বলতে পারতো কিন্তু তা না করে সংবাদ সম্মেলন করে নোংরা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়া সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবে বাধাগ্রস্থ করছে। হাটটি কাঁচা বাজার ও র্যাব ক্যাম্প মধ্যবর্তী রাস্তার পাশে বসবে। ইতোমধ্যে মসজিদ কমিটির লোকজনের সাথে কথা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ওখানে সাপ্তাহিক হাট বসানো হবে ও মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।