কোটচাঁদপুরে বিবাদমান জমি থেকে গাছ কাটা ও সীমানা প্রাচীর নির্মানের অভিযোগ 

আইন অমান্য করে বিবাদমান জমি থেকে গাছ কাটা ও সীমানা প্রাচীর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে। তিনি কোটচাঁদপুরের দয়ারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি নিয়ে জিডি করে আদালতে পাঠানো হবে,অনুমতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বললেন,থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল- মামন।

ভুক্তভোগী জালাল উদ্দীন বলেন,বিবাদী হাসানুজ্জামান আমার অজান্তে বোন আলোমতির কাছ থেকে দুইশতক জমি কিনে রেজিষ্ট্রি করে নেন। এরপর ঘটনা আমি জানার পর আইন মোতাবেক হক সেবা করি। আদালত হক সেবার রায় আমার পক্ষে দেন। সে মোতাবেক আমি ওই জমিতে টয়লেট নির্মান করছিলাম। তারা কাজ বন্ধ করে দেন।

এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আফিল করেন। ওই আফিলের রায় এখনও পর্যন্ত কোন পক্ষই পাননি। এরমধ্যে হাসানুজ্জামান সহ ৪০/৪৫ জন এসে ওই বিবাদমান জমিতে থাকা গাছ কেটে দিয়েছেন। নির্মান করেছেন স্থাপনা।

বিষয়টি বিবাদি হাসানুজ্জামান বলেন, ভাই আমার নিজের জমি। আমি জালাল উদ্দীনের বোনের কাছ থেকে জমিটি কিনে ছিলাম। পরে তারা জমিটি হক সেবা করেন। সেই মামলা চলমান রয়েছে। এখনও কোন কিছু হয়নি।

তিনি বলেন, জমিিট এতদিন পড়েছিল। দখল করি নাই। তারা আমার জমির উপর বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। এ জন্য সম্প্রতি জমিটি দখলে নেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ ছাড়া আমার কাছে ওই জমির দলিল, নামপত্তন সব কাগজ আছে। তারা মামলায় জমি পেলে,তখন আমি ওনাদের ছেড়ে দিব। মামলা চলমান অবস্থায় সীমানা প্রাচীর করতে পারেন কি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,কেন পারবো না অবশ্যই পারি। আমার জমির গাছ আমি কেটেছি।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল- মামুন বলেন, আইন অমান্য করে গাছ কাটা ও প্রাচীর নির্মান করার ঘটনায় থানায় একটা জিডি হয়েছে। জিডিটি আদালতের অনুমতি প্রাপ্তির জন্য পাঠানো হবে। অনুমতি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।




মিরপুরে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কেঁচো সার উৎপাদন প্রদর্শনীর মাঠ দিবস

জমির সেই হারানো শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে হলে জৈব সার ব্যবহার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মতিয়র রহমান।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কেঁচো সার উৎপাদন প্রদর্শনীর মাঠ দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার মিরপুরে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, অতীতে ইচ্ছামতো রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরা শক্তি প্রায় পুরোটাই হারিয়ে যেতে বসেছে। জমির অম্লতা এমনভাবে বেড়েছে যে জমিতে ফসলই উৎপাদন এক রকম কঠিন হয়ে পড়েছে। আবাদি জমির প্রাণ ফিরিয়ে আনতে জৈব সার উৎপাদন এবং প্রয়োগে সচেষ্ট হতে হবে কৃষকদের পাশাপাশি সমাজের সব স্তরের মানুষকে। এ সার মাটিকে রাখতে পারে সতেজ, ফিরিয়ে দিতে পারে আগের সেই প্রাণ। শুধু তাই নয়, এই জৈব সার উৎপাদনে কৃষকদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাঁড়ারা গ্রামে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আলীমুল রেজা সুমনের বাড়ির আঙ্গিনায় এ মাঠ দিবস পালিত হয়।

যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রযুক্তি বিষয়ক কেঁচো সার উৎপাদন প্রদর্শনীর মাঠ দিবসে বাস্তবায়ন করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সাইদুলের সভাপতিত্বে এবং মিরপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম রাজিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে চাষিদের কেঁচো সার উৎপাদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মাহিরুল ইসলাম, বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন, কৃষকের বন্ধু এসএম জামাল ও তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আলীমুল রেজা সুমন প্রমুখ।

মাঠ দিবসে বক্তারা বলেন, মাটির পুষ্টিমাণ বৃদ্ধি, মাটির পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো, ভূমিক্ষয় রোধ, মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও মাটির রাসায়নিক বিক্রিয়ার মান নিরপেক্ষ রাখতে সহায়তা করে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। কেঁচো সারের উপাদানের মধ্যে রয়েছে নাইট্রোজেন শতকরা এক ভাগ, ফসফরাস এক ভাগ, পটাশিয়াম এক ভাগ, জৈব কার্বন ১৮ ভাগ ও পানি রয়েছে ১৫ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত। কেঁচো কম্পোস্ট তৈরির জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে প্রথমে গর্ত তৈরি করে রিং স্থাপনের পর নিচে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে নিতে হবে। এরপর গর্তে ছোট ছোট কাটা ঘাস, আমের পাতা, হাস মুরগির বিষ্টা, পচা গোবর দিয়ে ২০০টি কেঁচো প্রয়োগ করতে হবে। রিংয়ের উপরিভাগে পাটের ভেজানো বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ৩ দিন পর ২১ দিন পর্যন্ত ৫০-৬০ ভাগ আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য হালকা পানি ছিটাতে হবে। ২৮ -৩২ দিনের মাথায় কেঁচো সার সংগ্রহ করার উপযোগী হয়। ২ ঘন্টা রোদে শুকানোর পর বাজারজাত করাসহ মাঠের ধান, আলু, শাকসবজি, ফুলের টবে বা ছাদ কৃষিতে এ সার ব্যবহার করা যায় বলে জানান।

এসময় ইউনিয়নের সব ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, ছাত্রলীগ নেতা রাজিব, রাব্বি, ফিরোজ, আরাফাতসহ শতাধিক কৃষক/কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।




১০০ জনকে নিয়োগ দেবে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটিতে শোরুম ম্যানেজার অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

শোরুম ম্যানেজার।

পদসংখ্যা

সর্বমোট ১০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

প্রার্থীকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই)/স্নাতকোত্তর পাস হতে হবে। প্রার্থীর ধরন: পুরুষ। বয়স: ৩০-৪০ বছর।

কর্মস্থল

বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে।

বেতন

৩৫,০০০-৪০,০০০ টাকা

আবেদনের প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা বিডিজবস অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ

১৫ মে, ২০২৪

সূত্র : বিডিজবস




যারা মুজিবনগর দিবস মানেনা, তারা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন রাস্ট্রকেও মানেনা–কাজী জাফরুল্লাহ

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, মুজিবনগর সরকার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। যারা ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসকে মানেনা, তারা মুক্তিযুদ্ধ ও এই স্বাধীন রাস্ট্রকেও মানেনা। তারা আজও পাকিস্থানের দোষর হিসেবে কাজ করে।

আজ ১৭ এপিল দুপুরে মুজিবনগর আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত মুজিবনগর দিবসের বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফরুল্লাহ আরও বলেন, এই দেশ যতদিন থাকবে আওয়ামীলীগ ততদিন এই মুজিবনগর দিবস পালন করবে। আগামীতে মুজিবনগর দিবসটি আরও আড়ম্বরভাবে উথযাপন করা হবে। এক সময়কার বৈদ্যনাথতলাকে মুজিবনগর নামকরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেটি বঙ্গবন্ধুরই অবদান। মেহেরপুর জেলার মানুষ এই দিবসটিকে কৃতজ্ঞতার সাথেই স্বরণ করে আসছে।

তিনি আরও বলেন, দু:খজনক হলেও সত্য আগে দেশব্যাপি ১৭ এপ্রিল দিবসটি উৎযাপন করা হতো সেভাবে এখন উৎযাপন করা হয়না। আগামীতে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলাতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন ছড়িয়ে দিতে হবে। যাতে করে নতুন প্রজন্ম ও দেশের সকল মানুষ স্বাধীনতার পরবর্তি প্রথম সরকারকে স্বরণ করে রাখে।

প্রধান বক্তা আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সব ধরনের শক্তি যুগিয়েছিল। পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিলো, তাদেরই মদদে বিগত দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তারা বানচাল করার চেষ্টা করেছে। ৭১ সালের সেই পরাজিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরাজিত শক্তির মদদে ও উস্কানিতে তারা এতদিন এটা করেছিল। আজকে এটা পরিস্কার হয়েছে। এটা স্বীকার করে ’মির্যা ফকরুল’ বলেছেন আমরা আর বিদেশীদের উপর নির্ভর করতে চাইনা।

তিনি বলেন, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭০ সালে যেমনি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে এখনো সেভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।

মন্ত্রী আরও বলেন, ৭০ এর নির্বাচনে এদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার দল আওয়ামীলীগকে ম্যান্ডেড দিয়েছিল। সেই মেন্ডেডে তিনি এককভাবে বাঙ্গালী জাতীর নেতা পরিণত হয়েছিলেন। তারপরেও পাকিস্থানী সামরিক জান্তা বাঙ্গালীদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। তার বাঙ্গালীর নেতৃত্ব স্বীকার করতে চাইনি। ক্ষমতা হস্তান্তর না করে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হই। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনামতে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। ১৭ এপ্রিল এই ঐতিহাসিক স্থানে বিপ্লবী সরকার মুজিবনগরকে প্রথম রাজধানী হিসেবে তার কার্যক্রম শুরু করে।

তাই ঐতিহাসিক এই মুজিবনগর স্মৃতিকেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক মানের এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সূতিকাগার হিসেবে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। অচিরেই এই কার্যক্রম শুরু হবে। যাতে সারা বিশ্ববাসি ও দেশের অগনিত জনগণ এখানে এসে সেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে। জানতে পারে ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস।

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন, বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন এমপি।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম এমপি।
বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডাক্তার সৈয়দা জাকিয়া নুর (লিলি) এমপি, পারভীন জামান কল্পনা এমপি, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক, মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ডাক্তার এএসএম নাজমুল হক সাগরসহ জাতীয় ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি।

এর আগে জাতীয় নেতৃবৃন্দ মুজিবনগর স্মৃতিশৌধে পুস্পা মাল্য অর্পন করেন। এছাড়া অতিথিদের গর্ড অব অনার প্রদান করেন পুলিশ, আনছার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, গার্লস গাইড সদস্যরা । সকাল ১০ টায় গীতিনাট্য “জল, মাটি ও মানুষ” উপস্থাপন করা হয়।

সকাল ৯ টার দিকে ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক মোজাম্মেল হক সর্বপ্রথম মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন।

এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে জেলা শাখার পক্ষে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফারহাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসান, জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক, মেহেরপুর জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্প মাল্য অর্পণ করা হয়।

মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ চত্বরে শেখ হাসিনা মঞ্চের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জাতীয় সংগীতের সুরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিসিম হোসেন রিমি দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় সেখানে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, আনসার ব্যাটালিয়ান, মেহেররপুর সরকারি কলেজ ও মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএনসিসি, মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং মেহেরপুর সরকারি শিশু পরিবারের সদস্যরা মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। প্রধান অতিথি সালাম গ্রহণ করেন। মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল করিম প্যারেড পরিচালনা করেন।




চুয়াডাঙ্গায় সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, যাত্রীদের ৪ ঘন্টা দূর্ভোগ

চুয়াডাঙ্গায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় প্রচন্ড গরম যাত্রীদের ৪ ঘন্টা চরম দূর্ভােগ পােহাতে হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে প্রায় ২ কিলামিটার দুর বুধবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি পৌছালে সেখানই ইঞ্জিনটি বিকল হয়ে যায়। টানা ৪ ঘন্টা পর এদিন বেলা ১২ টার দিকে খুলনা থেকে ইঞ্জিন নিয়ে এসে ট্রেনটি নিয়ে যাওয়া হয়। এ এসময় ফাঁকা জায়গায় প্রচন্ড গরমে যাত্রীরা দূর্ভােগে পড়েছিল।

ট্রেনের লােকা মাস্টার জাহিদুল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে ইঞ্জিনে শক্তি না পাওয়ায় সেটা বিকল হয়ে পড়ে। এতে সাময়িক সময় ইঞ্জিন বন্ধ কর রাখা হয়। ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টিে জানােনা হয়েছে। খুলনা থেকে বিকল্প ট্রেন ইঞ্জিন আসা মাত্র ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।

চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান জানান, ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় যাত্রীদর সাময়িক দূর্ভােগ হয়েছে।। তব,অন্যান্য ট্রন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছ। খুলনা থেকে ট্রেন ইঞ্জিন আসার পর ট্রনটি ছেড়ে গেছে।




ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন

মেহেরপুরে নানা আয়োজনের ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের আসার আগেই অনুষ্ঠান শুরু ও জনসভায় লোকসমাগম কম থাকায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

আজ বুধবার সকালে সূর্যোদয়েরর সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিবসের কর্মসূচি হয়।

সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগর আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এমপি, আফজাল হোসেন, সদস্য গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, ফরহাদ হোসেন এমপি, মুন্নুজান সুফিয়ান, এম এ খালেক, এস এম নাজমুল হক সাগর এমপি।

জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ অনুষ্ঠানের পর থেকেই বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি রুপলাভ করে।

সভাপতির বক্তব্যে আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাসিম বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রশ্নে যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। এই হোক মুজিবনগর দিবসের শপথ।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিক মানের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণন করা হয়েছে। যাতে করে মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা অচিরেই এই স্মৃতিকেন্দ্র গড়ে তুলবো।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেন, কোন মেজরের হুইসেলে আমাদের স্বাধীনতা আসেনি। জিয়া ক্ষমতায় আসার পর কুখ্যাত রাজাকারদের রাজনীতি করার অধিকার নিম্ছিত করে। দালালি াআইন বাতিল করে। পাকিস্তানি এজেন্টদের বিতারিত করে এদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলারদশ গবড় তুলবো ইনশাআল্লাহ।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, আমার ও সিমিনের এই দিনটিতে অন্যরকম অনুভুতির সৃষ্টি হয়। আমাদের বাবারা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অত্যন্ত সাহসিকতার সহিত মুজিবনগরে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন।

কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ স্থলে পৌছানোর আগেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে অনুষ্ঠান শুরু করেন। পরে গার্ড অব অনার প্রদান ও জাতীয় পতাকা উত্তোলণ শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে পৌছালে একটি বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। জরনসভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সমন্বয় না করার কারণে এমনটি হয়েছে। এ ধরণের একটি অনুষ্ঠানের সমন্বয় না করা অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে, যেটা করা ঠিক হয়নি।

এদিকে, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানের জনসভায় জনশুণ্য দেখা গেছে। যেখানে প্রতিবছর মুজিবনগর দিবস লোকারণ্য হলেও এবার তেমন লোকজন দেখা যায়নি। অধিকাংশ চেয়ার ফাঁকা ছিল।

তরিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, এবারের মুজিবনগর দিবসেই কেবল মানুষ দেখতি পাচ্ছি না। যা আছে সবই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে ঘেরা।




আইফোনে পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার হামলা!

মার্কিন তথা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপল ৯২টি দেশে তাদের কিছু ইউজারদের হুমকির বিজ্ঞপ্তির একটি নতুন রাউন্ড পাঠিয়েছে, তাদের সতর্ক করেছে যে তাদের আইফোন সম্ভাব্যভাবে ‘ভাড়াটে স্পাইওয়্যার’ দ্বারা আক্রমণ করা হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি এনএসও গ্রুপের বিতর্কিত পেগাসাস ম্যালওয়্যার।

‘সতর্কতা: অ্যাপল আপনার আইফোনের বিরুদ্ধে একটি টার্গেটেড ভাড়াটে স্পাইওয়্যার আক্রমণ শনাক্ত করেছে,’ হুমকি বিজ্ঞপ্তির বিষয় লাইন পড়ে, যার একটি অনুলিপি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ছেপেছে।

‘অ্যাপল শনাক্ত করেছে যে আপনি একটি ভাড়াটে স্পাইওয়্যার হামলার টার্গেট হচ্ছেন যা আপনার অ্যাপল আইডি -xxx-এর সঙ্গে যুক্ত আইফোনের সঙ্গে দূরবর্তীভাবে আপস করার চেষ্টা করছে। আপনি কে বা আপনি যা করেন তার কারণে এই হামলাটি সম্ভবত আপনাকে বিশেষভাবে লক্ষ্য করে। যদিও এই ধরনের হামলা শনাক্ত করার সময় নিখুঁত নিশ্চয়তা অর্জন করা কখনোই সম্ভব নয়, অ্যাপলের এই সতর্কতার প্রতি উচ্চ আস্থা রয়েছে-দয়া করে এটিকে গুরুত্ব সহকারে নিন,’ ইমেল বিজ্ঞপ্তিতে এমনও বলা হয়েছে।

‘ভাড়াটে স্পাইওয়্যার হামলা, যেমন এনএসও গ্রুপ থেকে পেগাসাস ব্যবহার করে, নিয়মিত সাইবার অপরাধমূলক কার্যকলাপ বা ভোক্তা ম্যালওয়্যারের তুলনায় ব্যতিক্রমীভাবে বিরল এবং ব্যাপকভাবে আরো পরিশীলিত। এই আক্রমণগুলির জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ হয়েছে এবং স্বতন্ত্রভাবে খুব অল্পসংখ্যক লোকের বিরুদ্ধে মোতায়েন করা হয়েছে, তবে লক্ষ্যবস্তু চলমান এবং বিশ্বব্যাপী রয়েছে,’ সংস্থাটি ইউজারদের তাদের প্রাপ্ত সমস্ত লিংকগুলির বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে এবং অপ্রত্যাশিত বা অজানা প্রেরকদের কাছ থেকে কোনো লিংক বা সংযুক্তি না খুলতেও সতর্ক করেছে।

কোম্পানি অবশ্য বলেছে যে কী কারণে হুমকির বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে সে সম্পর্কে আরো তথ্য দিতে অক্ষম, কারণ এটি ভাড়াটে স্পাইওয়্যার হামলাকারীদের ভবিষ্যতে শনাক্তকরণ এড়াতে তাদের আচরণ মানিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে।

ভাড়াটে স্পাইওয়্যার আক্রমণের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হওয়া ইউজারদের জন্য টিপস অন্তর্ভুক্ত করতে অ্যাপল তার সাপোর্ট পেজও আপডেট করেছে। অ্যাপল হুমকি বিজ্ঞপ্তিগুলি এমন ইউজারদের জানাতে এবং সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা ভাড়াটে স্পাইওয়্যার হামলার দ্বারা পৃথকভাবে টার্গেট হতে পারে, সম্ভবত তারা কারা বা তারা কী করে। কিছু সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদদের ফোন ট্যাপ করার জন্য সফটওয়্যারটির কথিত বেআইনি ব্যবহারের মিডিয়া রিপোর্টের পরে পেগাসাস বিতর্ক প্রকাশ্যে আসে। পরবর্তীকালে এই অভিযোগের তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন দাখিল করা হয়।

আগস্ট ২০২২-এ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কমিটি ফোনে স্পাইওয়্যার ব্যবহার করার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ খুঁজে পায়নি যেটি এটির দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছে কিন্তু উল্লেখ করেছে যে কেন্দ্রীয় সরকার প্যানেলের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি।

সূত্র: ইত্তেফাক




শিরোপা জয়ে এগিয়ে মোহামেডান

প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে জয় পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। গতকাল মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের একমাত্র খেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ঊষা ক্রীড়া চক্রকে ৬-৫ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে সাদা-কালোরা।

মোহামেডানের মালয়েশিয়ান রিক্রুট ফাইজাল বিন সারির হ্যাটট্রিকে এ জয় তুলে নেয় তারা। এছাড়া জয়ী দলের আল নাহিয়ান শুভ, দ্বীন ইসলাম ইমন ও আরেক মালয়েশিয়ান ফিতরি বিন সারি একটি করে গোল করেন। ঊষার ভারতীয় রিক্রুট ইশরাত ইকতিদার জোড়া গোল এবং আরশাদ হোসেন, রাজু আহমেদ তপু এবং ভারতের মোহাম্মাদ শারিক একটি করে গোল করেন।

এদিকে এই জয়ে শিরোপা জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে রইল মোহামেডান। ১৪ খেলায় ৩৫ পয়েন্ট দলটির। সমান সংখ্যক ম্যাচে ঊষার পয়েন্ট ২৮। দু’দলের আর একটি করে ম্যাচ বাকি। মোহামেডানের এখন দরকার আর একটি জয়। সেই ম্যাচটি আগামী ১৯ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে। ঐ ম্যাচে মোহামেডান জিতলেই যেমন চ্যাম্পিয়ন।
সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে ডাক্তার আবু তাহের সিদ্দিকের অপচিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা

ডাক্তার আবু তাহের সিদ্দিক। একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। অস্ত্রপাচার করার কোনো অভিজ্ঞতা ও বৈধতা না থাকলেও তার ক্লিনিকে সবধরনের সিজারিয়ন অপারেশন করে থাকেন তিনি।অবৈধভাবে রোগীর অপারেশনের মত জটিল একটি কাজ করলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়না কখনো। ফলে এলাকার শত শত রোগী মৃত্যু অথবা চিরদিনের জন্য পঙ্গু হচ্ছেন তার অপচিকিৎসায়। চিকিৎসাসেবার নামে এই চিকিৎসক ক্লিনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেবার পরিবর্তে অর্থের পেছনে ছুটছেন তিনি। সরকারি হাসপাতাল থেকে দালালদের মাধ্যমে রোগী ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সরেজমিনের দেখা গেছে, পুরনো ও নিম্নমানের যন্ত্রপাতি, অদক্ষ সেবিকা, টেকনিশিয়ান ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকলেও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে মেহেরপুরে তাহের ক্লিনিক-১ ও গাংনী উপজেলা শহরে তাহের ক্লিনিক-২ নামে ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে।

অভিযোগ উঠেছে, ক্লিনিক স্থাপনের কোনো আইন না মেনেই সিভিল সার্জনকে ‘ম্যানেজ’ করে এই দুটি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে ডা. আবু তাহের শুধুমাত্র মেডিকেল অফিসার হলেও ক্লিনিকে বসে সব ধরনের অপারেশন করে থাকেন। যদিও একজন এনেসথেসিয়া চিকিৎসক দিয়ে অপারেশনের আগে অজ্ঞান করার কথা। কিন্তু ডা. আবু তাহের সিদ্দিক এনেসথেসিয়ার কাজটিও নিজে করে থাকেন।

ক্লিনিকে সেবিকাদের ডিপ্লোমাধারী সনদ থাকার কথা থাকলেও ওই ক্লিনিকের সেবিকা নেই। ক্লিনিকে লক্কড়-ঝক্কড় ১০০ এমএল এক্স-রে মেশিন দিয়ে চলছে এক্স-রের কাজ। এক্স-রে টেকনিশানও অদক্ষ লোক। টেকনিশিয়ান আহম্মেদ হুসাইনের কোনো একাডেমিক সনদ না থাকলেও বহাল তবিয়তেই নামমাত্র বেতনে অনেকদিন ধরে চাকরি করে আসছেন।

অদক্ষ প্যাথলজি টেকনিশিয়ান দিয়ে বিভিন্ন টেস্ট করে থাকেন।

এদিকে, ডা. আবু তাহেরের ভুল অপারেশনের শিকার হয়ে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এছাড়া অনেকে এখন পঙ্গু জীবনযাপন করছেন।

মেহেরপুরে তাহের ক্লিনিকের এই দুটি শাখাতে একের পর এক রোগীর মৃত্যু ঘটনা ঘটলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ভুল অপারেশনে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন রুগীর মৃত্যু হলেও অজ্ঞাত কারণে বারবারই পার পেয়ে যাচ্ছে ডাক্তার আবু তাহের। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকেই দায়ি করছে ভুক্তভুগী পরিবারের সদস্যরা।

তাহের ক্লিনিক গাংনী ২ শাখায় ভুল চিকিৎসায় গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের আখতারুল ইসলামের স্ত্রী সাইফুন্নেসা(২৫) মারা গেছে।

গত শনিবার প্রসব বেদনা নিয়ে ডা. আবু তাহের সিদ্দিক এর শরণাপন্ন হয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করেন সাইফুন্নেসা(২৫)। আজ মঙ্গলবার {১৬ এপ্রিল} সকাল ৮টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

সাইফুন নেছার ভাইয়ের ছেলে ফিরোজ জানান, অপারেশনের পর থেকেই আমার ফুপুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে গাংনী থেকে দ্রুত মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকে নিয়ে যান ডা. আবু তাহের সিদ্দীক। পরে মেহেরপুর তাহের ক্লিনিকে ৫ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরেও রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। তড়িঘড়ি করে পরিবারের লোকজনকে ম্যানেজ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অপারেশন করার পর রোগীর মৃত্যু হয়।

তাহের ক্লিনিক ২ এর ম্যানেজার মামুনুর রশিদ জানান, ডা. আবু তাহের সিদ্দীকী নিজেই এনেসথেসিয়া ও সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন।

এ বিষয়ে ডা. আবু তাহের সিদ্দিক জানান, সিজারিয়ান অপারেশন ভুল ছিল না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

মেহেরপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মহি উদ্দিন জানান, ঘটনাটি শোনার পর গাংনী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন প্রকার তথ্য দেননি আসলে কি কারন দেননি এটা আমার জানা নেই।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, ২০১২ সালে গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের জাকারিয়া হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন নামে একজন প্রসূতি মাকে অপারেশন করে সন্তান হওয়ার পর নাড়ি সেলাই না করেই পেট সেলাই করে দেন ডাক্তার আবু তাহের। ১ ঘণ্টা পর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে তাকে দ্বিতীয়বার পেটের সেলাই খুলে নতুন করে সেলাই দিয়ে দেন। এর পর পরই রাজিয়া খাতুন মারা যান।

একই বছরে গাংনীর চৌগাছা গ্রামের মৃত আলম হোসেনের স্ত্রী রিজিয়া খাতুন তার পেটে সমস্যা দেখা দেওযায় তাহের ক্লিনিকে ভর্তি হন। তার পেটে অ্যাপ্যান্ডিসাইটস হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়ে তার অপারেশন করেন ডা. আবু তাহের।

কিন্তু ডা. তাহেরের অর্থলোভের কারণে অ্যাপ্যান্ডিসাইটস না হলেও তাকে অপারেশন করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন ক্লিনিকে গেলে ডাক্তার আবু তাহের ক্ষমা চেয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন।

২০১৯ সালে গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে এবং একই উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন তাহের ক্লিনিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন।এনেসথেসিয়া ছাড়াই ডাক্তার আবু তাকে সিজার করেন। ওই দিন সকাল বেলা ১২ টার দিকে সিজার করে সন্তান প্রসব করার পর রাত ৮ টার দিকে প্রচন্ড রক্ত ক্ষরনে মারা যান রিমা খাতুন।

২০১৫ সালে গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের হাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি তাহের ক্লিনিকের মেহেরপুর শাখায় অস্ত্রপচারের পরপরই মৃত্যু হয়।

মৃত হাফিজুর রহমানের মেয়ে নিলুফা খাতুন জানান, অস্ত্রপচার শেষে আমার বাবাকে বেডে নিয়ে আসে। এর পরপরই তার মৃত্যু হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে দ্রুত নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স যোগে লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ক্লিনিক মালিক ডা. আবু তাহের।

২০১৩ সালে গাংনী তাহের ক্লিনিক ২ এ মায়া খাতুন (৩৩) পিত্তথলিতে পাথর অপারেশনের পর তার মৃত্যু হয়। মায়া পিতা রেজাউল হক জানান, ডাক্তার আবু তাহেরের ভুল অপারেশনের কারনে তার মেয়ে মায়ার মৃত্যু হয়।

২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাহের ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার বলি হন মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের মৃত হারান হাল সানার ছেলে আব্দুল খালেক (৫০)। ঐ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও ক্ষুদ্ধ জনতা ক্লিনিক ভাংচুর করে । এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পারিভন খাতুন অভিযোগ করে বলেছিলেন, ডা. তাহের নিজেই অজ্ঞান করা ইনজেকশন দিয়ে তার বাবাকে মেরে ফেলেছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার ফরিদুল ইসলাম হৃদয়ের স্ত্রী জেসমিন খাতুনের একদিনের নবজাতক এক শিশুর তাহের ক্লিনিকের মালিক ও চিকিৎসক আবু তাহের অপারেশন করে মলদ্বারের পথ তৈরি করতে গিয়ে শিশুর প্রসাবের নালি কেটে ফেলেন। ফলে নবজাতকের স্বাভাবিক মূত্রনালী দিয়ে যে প্রসাব হচ্ছিলো, সেটা মলদ্বার দিয়ে হচ্ছিল। ভুল অপারেশনের কারণে মলদ্বারেও মারাত্মক ইনফেকশন হয়ে শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন। পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন নবজাতককে দেখে ঢাকা পিজি হাসপাতালে রেফার করেন।




নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু কবে?

“রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে? সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে? তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি। রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?” ফররুখ আহমেদের পাঞ্জেরি কবিতার পঙতিমালার মত অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে “মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মুতি কমপ্লেক্স” প্রকল্প নিয়ে।

নতুন করে চারশ নয় কোটি নয় লক্ষ টাকা বরাদ্দের আন্তর্জাতিক মানের ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ নামে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রস্তাবিত প্রকল্প সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে মুজিবনগরের চিত্র। মুজিবনগরকে দেখেই পুরো মুক্তিযুদ্ধের চিত্রপট পর্যটকের চোখের সামনে ভেসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওবেয়সাইট থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২০মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখান থেকে কিছু সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। সে সংশোধনীতে এখনো আটকে রয়েছে প্রকল্পটি। অথচ প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাল লেখা রয়েছে ১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথের স্মৃতিবিজড়িত স্থান মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রথম সরকারের শপথের মধ্যে দিয়ে যার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র, ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যর স্বাধীনতা সড়ক বাস্তবায়ন হয়েছে। যে সড়ক দিয়ে যাত্রী পারাপার ও পণ্য আমদানী রপ্তানীর জন্য গেজেট প্রকাশ হয়েছে স্থলবন্দরের।

নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্কাল্পচার গার্ডেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার মেমোরিয়াল মুর‌্যাল ও শপথ গ্রহণের গ্রাউণ্ড, শেখ হাসিনা মঞ্চ, প্যানোরমা ও অ্যাম্পি থিয়েটার, হিস্টোরি ওয়াক, ৩ তলা বিশিষ্ট অ্যাডমিন ব্লক, ২ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ব্লক, ৪তলা বিশিষ্ট ট্রেণিং সেন্টার, ৪তলা বিশিষ্ট অফিসার্স ও স্টাফ কোয়ার্টার, সুইমিং পুল, ফুড জিয়স্ক ও রেস্ট রুম, রেন্টাল সপ, ওয়াচ টাওয়ার, ভিভিআইপি ও ভিআইপি পার্কিং, সাধারণ পার্কিং, মাছ ধরার ডেক, রোপ ওয়ে, ২তলা বিশিষ্ট বোট ক্লাব, সুপেয় পানির ডিসপেনসার, ব্যাংক প্রটেকশনসহ লেক, ব্রীজ, কনটোর্স, আইসল্যাণ্ড, ওয়াচ ওয়ে, চালকদের আবাসন, শিশু পরিবার ও ডরমেটরি, ২তলা বিশিষ্ট স্কুল, টেনিস কাম বাস্কেটবল কোর্ট, প্লে গ্রাউণ্ড, লেজার শো ওয়াটার শিল্ড।
আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে নতুন ৫৬.০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সবমিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রটি ১২৭ একরে রুপ নেবে। জমি অধিগ্রহণসহ নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৪১০ কোটি টাকা। প্রয়োজনে প্রকল্পের অর্থের বাড়ানো হবে এমনটা জানা গেছে।

প্রায় দুই যুগ আগে ৭২ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রায় তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে বৈদ্যনাথতলায় নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র। তবে নির্মিত বেশ কিছু স্থাপনায় ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশ মানচিত্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। মানচিত্রে পুরো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন চিত্র ফুটে উঠলেও মুজিবনগরের শপথ নেওয়ার কোন চিত্র সেখানে স্থান পায়নি। গার্ড অব অনারের ভাস্কর্যে ১২ জন আনসার সদস্যর বিপরীতে দেখানো হয়েছে ৮ জনকে। মানচিত্রে সেক্টর ভিত্তিক কমাণ্ডারদের ভাস্কর্যও নেই।

মানচিত্রের বাইরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্যসহ অন্যান্য ভাস্কর্যগুলো এতটাই নিম্ম মানের যা মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে। অনেকগুলোর ভেতরের রডের বদলে চিকন তার দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে শিলাবৃষ্টি বা ঝড় হলে সেগুলো ভেঙে যায়। কয়েকদফা সেগুলো পুনরায় রিপিয়ারিং করাও হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে রিপিয়ারিংসহ পালিশ করে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়।

আন্তর্জাতিক মানের করে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান, ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা সমৃদ্ধ তথ্য ও নিদর্শন দেশবাসী ও তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং বিদেশীদের কাছে মূর্ত করে তুলতে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মান করা হয়েছে । অথচ উদ্বোধনের আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়াতে পর্যটকরা আহত হচ্ছেন।

মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে কাজ শুরু করে মাঝে প্রকল্প কাটাছেড়া করা হয়। ফলে কাজটি শেষ হয় ২০১১ সালে। অতিনিম্নমানের কাজ হবার কারণেই ভাষ্কর্যগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকল্পর অন্যান্য কাজ এখনও অসমাপ্ত আছে।

আমবাগান পরিচর্যার জন্য অপেক্ষা
ঐতিহাসিক আম্রকাননে বর্তমানে ১১০০টি গাছ বেঁচে রয়েছে। পরিচর্যার অভাবে ইতোমধ্যে শতাধিক গাছ মারা গিয়েছে। ফলে বাগানটি ক্রমশই শ্রীহীন হয়ে উঠছে। জীবিত ১১০০টি গাছের পরিচর্যার জন্য মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত গাছ বাঁচানোর প্রকল্পের বরাদ্দ ছাড় হলে কাজ শুরু করা হবে নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: শামিম হাসান।

স্বাধীনতা সড়ক
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদিতে ভারতের কলকাতা থেকে যে মেঠোপথ ধরে জাতীয় চার নেতাসহ দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা এসেছিলেন সেই মেঠপথটিকে স্বাধীনতার অর্ধশত বছর উৎযাপন উপলক্ষে বর্তমান সরকার ‘স্বাধীনতা সড়ক’ নামে নামকরণ করেছেন। ওই মেঠপথটির বাংলাদেশের অংশ ৫০০ মিটার সড়ক ১ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ইতিমধ্যে পাকাও করা হয়ে গেছে। ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এ সড়কের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

দুই যুগ আগে স্থাপিত মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বর্তমানে যা আছে:
১১টি মন্ত্রনালয়ের প্রায় ৩’শ কোটি টাকা বরাদ্দে গড়ে উঠেছে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র । এর মধ্যে পর্যটক মোটেল, শপিংমল, শিশু পরিবার, ডাকঘর, হেলিপ্যাড, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ছয় দফা ভিত্তিক মনোরম গোলাপ বাগান, অত্যাধুনিক মসজিদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাদুঘর। এখন পর্যন্ত এসব কোন স্থাপনাই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি। অথচ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপের কাজ শেষ হয়েছে অন্তত ১০ বছর আগে। সবশেষে সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে বড় মিলনায়তন নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।
তবে এখনো প্রশাসনিক প্লাজা, অ্যাপ্রোচ রোড, বিদ্যুৎ, জেনারেটর ক্রয় (১০০-কেভিএ), মানচিত্রে স্টেজে কাঠের কাজ, সিঁড়িতে এসএস রেলিং, জলছাদ র‌্যাম্প ও এসপিএমসিবি পাওয়ার সকেট, আন্ডার গ্রাউন্ড সার্ভিস লাইন কাজ আজও শেষ হয়নি।

মেহেরপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে যাদুঘর সংস্কার, রাস্তা সংস্কার, রঙ করা সহ কমেপ্লক্স চত্ত্বর পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরে সংস্কার কাজ করা হয়েছে।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: শামীম হাসান বলেন, নতুন যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে তার মিটিং হবে বিকালে। প্রকল্পটি কোন পর্যায়ে আছে মিটিং শেষে জানা যাবে। তবে মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে জেলা প্রশাসন সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগের মুজিবনগর দিবস নিয়ে বলেছিলেন, নতুন করে প্রস্তাবিত মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রাথমিকভাবে ৪১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রেডি করেছে। আমরা চাচ্ছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি একনেকে পাশ করানোর জন্য।

যেভাবে ১৭ এপ্রিল:
অনেক জীবন এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল তার আসল বাস্তবতা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ বাঙালী জাতির আন্দোলনের কারণ সম্পর্কে সেই ১৮৮৫ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অনেক ঘটনায় উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশীদের স্বপ্ন চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর আম বাগানে। যেখানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিল। সেখানে সেই মহতী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এবং বিশিষ্ট বাজনীতিবিদগণ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে একটি রেডিও সেন্টার স্থাপন করে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠান সারাদেশে সম্প্রচার করা হয়েছিল এবং মুজিবনগর সেদিন পেয়েছিল ঐতিহাসিক মর্যাদা।
১০ এপ্রিল ১৯৭১ এক ঘোষনার মাধ্যমে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল যা মুজিবনগর থেকে ইস্যু করা হয়েছিল । এখানে উল্লেখ্য এই ঘোষনা বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্বের ঘোষনাকে দৃড়ীকরন করে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রথম প্রবাসী সরকারের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ।

সে সময় পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী মেহেরপুরকে করতলে নিলেও পৌঁছুতে পারেনি বৈদ্যনাথতলায়। তদানীন্তন মেহেরপুর মহাকুমার বাগোয়ান ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী বৈদ্যনাথতলা। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সমস্ত সময়টুকু এ জায়গাটি ছিল নির্বিঘ্ন। বি্িরটশ শাসনামলে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুর ছিল মহাকুমা শহর । সে সুবাদে কলকাতার সাথে এই বৈদ্যনাথতলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ব্যাবস্থা ছিল। সরকার গঠনের পর মুজিবনগরকে অন্তর্র্বতীকলিন রাজধানী ঘোষনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি স্বাধীতার ফরমান জারি করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করা হয়েছিল। ওই সময় ও শপথ গ্রহণের স্থানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে বৈদ্যনাথতলা নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় মুজিবনগর। তখন থেকে ১৭ এপ্রিলকে বলা হয় মুজিবনগর দিবস। এবং সেই থেকেই এই দিনটি মুজিবনগর দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। মুজিবনগর সরকার দেশকে ৬টি জোনাল কাউন্সিলে ভাগ করেছিল যা জনগনের সমস্যার দেখভাল করত। সে সময় মুজিবনগর হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের প্রেরণার উৎস এবং জাতির ভাবমূর্তি অক্ষ্ন্নু রাখতে যথাসম্ভব যাকিছু করার ছিল তাই করেছিল। মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন আমাদের মুক্তি সংগ্রামে এবং ইতিহাসে এক মাইল ফলক। যা বিশ্বকে সাহায্য করেছিল আমাদের মুক্তিয্দ্ধুকে সমর্থন করতে। পরবর্তীতে ৯মাস যুদ্ধ শেষে চুড়ান্তভাবে স্বীকৃত পেয়েছিল একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে।

এবারের কর্মসূচী
ভোরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। পরে ৯টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গার্ড অব অনার প্রদান। সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে জাতীয় ও স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে। অতিথি হিসেবে থাকবেন উপদেষ্টামণ্ডলির সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপিসহ আশেপাশের জেলার সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জেলা প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।