চুয়াডাঙ্গায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

চুয়াডাঙ্গায় নির্মাণাধীন একটি সাততলা ভবন থেকে পড়ে ইয়াসিন আলি (২৬) নামের এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই শ্রমিক। রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে শহরের মুক্তিপাড়ায় নির্মাণকাজ করার সময় এঘটনা ঘটে।

নিহত ইয়াসিন আলি চাপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা এলাকার কুরবান আলীর ছেলে। আহতরা হলেন, নওগাঁ জেলার পানিহারা গ্রামের বিপদ রবি দাসের ছেলে উত্তম কুমার দাস (২৭) ও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমুরদিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২৪)। আহত দুজনের মধ্যে উত্তম কুমারকে চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলি বলেন, ছাদ থেকে পড়ে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছে আমরা খবর পেয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গে আমাদের টিম সেখানে কাজ করা শুরু করেছে ইতিমধ্যে। এখনো পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কোন মামলা বা অভিযোগ আসেনি।




শীতে শিশুর সুস্থতার জন্য বাড়তি যত্ন

সারা দেশেই হঠাৎ করে শীত জেঁকে বসেছে। শীতে আবহাওয়া শুষ্ক ও ধুলাবালি থাকার কারণেই মূলত শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টা অভিভাবকদের একটু বেশি সচেতন থাকতে হয়। তবে এ সময়টাতে শিশুদের বিশেষ পরিচর্যা নিলে শীতেও শিশুরা সুস্থ থাকবে।

হালকা গরম পানি
শিশুদের ক্ষেত্রে হালকা কুসুম গরম পানি পান করানো উচিত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা, হাত-মুখ ধোঁয়া, খাওয়াসহ শিশুদের নানা কাজে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে। শীতে শিশুকে গোসলের সময় শরীরের কাছাকাছি তাপমাত্রার হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। তবে নবজাতক কিংবা ঠাণ্ডার সমস্যা আছে এমন শিশুর ক্ষেত্রে গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে।

উষ্ণ পোশাক
শিশুদের উলের পোশাক পরিয়ে রাখা উচিত। তবে চিকিৎসকের মতে, শিশুদের সরাসরি উলের পোশাক পরানো ঠিক নয়। সুতি কাপড় পরিয়ে তার ওপর উলের পোশাক পরানো উচিত। এতে উলের ক্ষুদ্র লোমে শিশুদের অ্যালার্জি হতে পারে। সুতি কাপড় পরিয়ে তার ওপর উলের পোশাক পরানো উচিত এবং পোশাকটি যেন নরম কাপড়ের হয়। শিশুদের রাতে ঘুমানোর আগে হালকা ফুল হাতা গেঞ্জি পরিয়ে রাখুন এবং সকালে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ও বিকালের দিকটাতে হালকা শীতের পোশাক পরিয়ে রাখতে পারেন।

খাবার
শীতে শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ঘন ঘন পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। যেমন ডিমের কুসুম, সবজির স্যুপ এবং ফলের রস, বিশেষ করে গাজর, বিট, টমেটো শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতে পারেন। শিশুরা এ সময় যেন কোনো ধরনের ঠাণ্ডা খাবার না খায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

ত্বকের যত্ন
শিশুদের ত্বক বড়দের থেকে অনেক বেশি সেনসিটিভ। তাই তাদের ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। শিশুর মুখে ও সারা শরীরে বেবি লোশন, বেবি অয়েল, গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করুন।

সূত্র: ইত্তেফাক




হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে মিথ্যাচার

গত বছরের অক্টোবরে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করায় এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে। মামলাটি করেছে গাইবান্ধা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শেখ রোহিত হাসান রিন্টু। রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ড. আব্দুল মজিদ মামলাটি আমলে নিয়ে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত আসামী গ্রেফতার হয়নি।

সম্প্রতি কুড়িগ্রামে জাতীয় পার্টির প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কটুক্তিমুলক বক্তব্য দেন। তবে সেক্ষেত্রে কোন মামলা হয়নি। এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে কুড়িগ্রাম জেলা যুবলীগ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীকে কটুক্তি করেছেন পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ আ’লীগ নৌকা মার্কার প্রার্থীর উপজেলা শাখার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম রনো। তার প্রতিবাদে গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আ’লীগের শ্রম উপকমিটির সদস্য কামরান শহীদ প্রিন্স মহব্বত তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এক্ষেত্রেও কোন মামলা হয়নি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের ২০২৪ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ সরকার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সরকারের সমালোচনা করার জন্য মানুষকে গ্রেপ্তার করে ভিন্নমত দমন করেছে এবং সাধারণ নির্বাচনের আগে বিরোধী দলীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়ন ও সহিংসতার মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের অঙ্গীকারকে ক্ষুন্ন করেছে। সরকার বরাবরই বাক স্বাধীনতাকে সমর্থন করেছে। কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মামলা করেনি। মামলা হয়েছে ব্যক্তিপর্যায়ে। দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি কোন ওয়েবসাইট কিংবা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণু করে বা বিভ্রান্তি ছড়ায় কিংবা একই উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা মিথ্যা জানা থাকা সত্ত্বেও কোনো তথ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে সেটি অপরাধ। দেশের আইন অনুযায়ী যে কেউ মামলা করতে পারে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা সরকার টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসে। এই নির্বাচনের ওপরে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়ায় আস্থা না থাকার কারণে প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছিল। অথচ বিএনপি এবং তাদের সহযোগী কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে। বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কোন সুযোগ নেই। সেটি পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন আছে। এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া আর তাতে একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা থাকায় সংবিধান লঙ্ঘন করা হতো। এছাড়া পশ্চিমা কয়েকটি দেশ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও নতুন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং বিভিন্ন দেশ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলেছে। তাই হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই দাবিও মিথ্যা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। যা একেবারেই বানোয়াট। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। আর সেটি রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজেদের মধ্যেই। অনেক গণমাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন এসেছে। অনেক আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সরবরাহ করার জন্য অস্ত্রের কারখানাও ওই এলাকায় গড়ে তোলা হয়। স্থানীয় নাগরিকরা বরং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে ওই এলাকায় আতংকে আছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবীর চৌধুরী জানান, আমরাই এখন আতঙ্কে থাকি। রোহিঙ্গারা আসার পর এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা চুরি, ডাকাতি, খুন, অপহরণ, মাদকসহ নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত। এলাকার অনেক মানুষকে তারা অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে। আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি জানিয়েছি। আপাতত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি।

আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, ২০১৭ সালের আগেও ক্যাম্পের আশেপাশের এলাকায় মাদকের এত বিস্তার ছিল না। রোহিঙ্গারা আসার পর মাদকের বিস্তার বেড়েছে। আর এই মাদকের কারণে অস্ত্রের ব্যবহারও বাড়ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সীমান্তের এত কাছে যে, অপরাধীরা কোনোভাবে সীমান্ত পার হলেই এদের ক্যাম্পে চলে আসে। আর কোন সন্ত্রাসী যদি ওই ক্যাম্পে একবার ঢুকে পড়ে তাহলে তাকে ধরা বেশ কঠিন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচনের আগে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ৮ হাজারেরও বেশি নেতা ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে, যেন তাদেরকে প্রতিযোগিতায় অক্ষম করা যায় এবং বিরোধী নেতাদের অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা যায়- সে চেষ্টা করা হয়। এটি আরেকটি মিথ্যাচার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের। শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যেও অনেকেই জামিনে বাইরে আছেন।

বাংলাদেশী মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের মতে, নিরাপত্তাবাহিনী ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ টিরও বেশি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগের উদ্বেগজনক বৃদ্ধিও লক্ষ্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন নামক একটি সশস্ত্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসার পর জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটি আরেকটি মিথ্যাচার। বাংলাদেশে ‘জোর করে গুমের’ শিকার ৭৬ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। কিন্তু এই তালিকা প্রশ্নবিদ্ধ করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতাকে। তালিকায় থাকা ৭৬ জনের মধ্যে অনেকে বাংলাদেশে বসবাস করছে যার প্রমাণ মিলেছে। আবার অনেক তালিকাভুক্ত পলাতক আসামির নাম রয়েছে এখানে। যার কারণে যেই এনজিওগুলোর ওপর নির্ভর করে জাতিসংঘের প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, সেই এনজিওসহ প্রশ্ন উঠছে খোদ জাতিসংঘের তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছেন জাতিসংঘের তালিকা নিয়ে। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ তাহলে তদন্ত করে না কেন? ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছেন, এ রকম অভিযোগ অনেকে অনেক কিছু দেয় কিন্তু তার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। কোনো নাম দিতে পারে না, কোনো কিছুই দিতে পারে না।

‘অনেক সময় দেখা যায়, বলা হচ্ছে অমুক লোক নাই কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। সে ঠিকই জীবিত আছে। আবার কেউ অনেক সময় নিজেরাই পালায়। অনেক সময় ধার-কর্য করে নিজেরাই লুকিয়ে পড়ে; সে ধরনের ঘটনাও আছে। প্রত্যেকটা কিন্তু খোঁজ করে বের করা হচ্ছে,’ বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে এতগুলো নাম দেওয়া হলো, তার মধ্যে কয়েকটা ঘটনাই পাওয়া গেছে সত্য। সেগুলোর সম্পর্কে ঠিকই রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আর রিপোর্ট দেওয়া হলো না কেন নিজেরা তারা তদন্ত করে দেখুক। নিজেরা তদন্ত করে না কেন, সেটাই তো আমার প্রশ্ন। সেটা করুক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানি, নজরদারি এবং আটক করা হচ্ছে। অথচ শুধুমাত্র মিথ্যা তথ্য প্রচার করার জন্য মানবাধিকার কর্মী আদিলুর এবং নাসিরউদ্দিন এলানকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালতেও প্রমান হয়েছে। আর তাতে আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। যদিও রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করে এখন জামিনে বাইরে আছেন আদিলুর এবং এলান।




সাত সকালে কলকাতায় রণবীর ও করণ জোহর

সাত সকালে কলকাতায় হাজির ‘অ্যানিমেল’ কিং রণবীর কাপুর। আর তার সঙ্গে নির্মাতা-প্রযোজক করণ জোহর।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার খুব ভোরে রণবীর যখন কলকাতা বিমানবন্দরে নামলেন তখন রণবীরের পরনে সাদা ফুল-স্লিভ শার্ট, হাফ কালো জ্যাকেট আর কালো প্যান্ট।

আর চোখে ছিল রোদ চশমা, মাথায় টুপি। অন্যদিকে, করণ জোহর অবশ্য রণবীরের মতো হাফ জ্যাকেট নয়, ফুল জ্যাকেট চাপিয়েই শহরে পা ফেললেন।

ভক্তদের বাড়িয়ে দেওয়া ডায়েরির পাতায় একের পর এক সই করে চললেন ‘কাপুর’ পুত্র। তারপর একটু এগোতেই অনেকেই ফোন হাতে সেলফি তুলতে পৌঁছে যান। এসময় বিন্দুমাত্র বিরক্ত হতে দেখা যায়নি তাকে। তবে দ্রুত অটোগ্রাফ দিয়ে আবারও হাঁটা দিলেন। রণবীরকে নিরাপত্তা দিতে এগিয়ে এলেন নিরাপত্তারক্ষীরা।

কিন্তু হঠাৎ কাকভোরে কলকাতা শহরে তারা এসেছেন কেন? এমন প্রশ্ন ঘুরছিলো চারপাশে।

কারণ, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের বাইরে তো বলিউডের দেখা খুব একটা মেলে না কলকাতায়। তাও আবার বলিউড কাঁপানো লেটেস্ট নায়কের পদধূলি! অভিনেতা-প্রযোজক মিলে কি তবে কলকাতায় কোনও ছবির পরিকল্পনা করছেন? নাকি কোনও ছবির শুটিং? জানতে কৌতূহলী সকলেই।

ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ৯১০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে রণবীরের ‘অ্যানিমেল’। এই ছবির মধ্যে দিয়েই ববি দেওল আবার বলিউডের মহাসড়কে উঠেছেন। এছাড়াও রণবীর-রাশমিকার রসায়নও ছিলো আলোচনা করার মতো।




ঝিনাইদহে রেল লাইন ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবীতে মানববন্ধন

ঝিনাইদহে রেল লাইন, মেডিকেল কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। রোববার (১৪জানুয়ারি) সকালে শহরের পায়রা চত্বরে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে ঝিনাইদহ জেলা রেল লাইন, মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন কমিটি।

এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। ঘন্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচীতে ভাষা সৈনিক নন্দ দুলাল সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আনিচুর রহমান খোকা, ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আলী হাসান ফরিদ, সরকারি নুরুন্নাহারা মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ এন এম শাহজালাল, উই এর পরিচালক শরিফা খাতুন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা রেল লাইন, মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান পিন্টু, মুফতী রাসেল উদ্দিন, মাওলানা রুহুল আমিনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তারা বলেন, পার্শবর্তী জেলা মাগুরা, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় রেল লাইন থাকলেও ঝিনাইদহ জেলা শহরের সাথে রেল লাইনের কোন সংযোগ নেই। তাই মাগুরা থেকে ঝিনাইদহ জেলা শহর হয়ে চুয়াডাঙ্গা বা কুষ্টিয়ায় রেল লাইন সংযোগের দাবী জানান তারা।




ঝিনাইদহে বরুণ হত্যার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান

ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগ কর্মী বরুন ঘোষ হত্যার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করেছে তার সহপাঠিরা।  আজ রোববার (১৪জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে তার সহপাঠি ঝিনাইদহ এসএসসি ৯৪’ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীসহ তার স্বজনরা বক্তব্য রাখেন। সেসময় বক্তব্য রাখেন ৯৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও নিহত বরুন ঘোষের সহপাঠি তানভীর আহমেদ রনী, মীর ফজলে এলাহী শিমুল, এনামুল হক এনাম, আওয়াল হোসেন, কাজল চক্রবর্তী, ছন্দা মালতি, দিবা খন্দকার প্রমুখ। বক্তারা বরুন ঘোষ হত্যার মুল কারণ উদঘাটন ও এর সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী জানান। পরে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন তারা।

উল্লেখ, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শহরের হামদহ এলাকার নিজ বাড়ী থেকে চা থেকে মাঝিপাড়ায় যায় ওই এলাকার বরুন ঘোষ। মহাসড়কে পৌঁছালে একদল দুবৃর্ত্ত তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।




গুগল ড্রাইভের ডাটা রিকভারি টুলস

গুগল ড্রাইভে অনেকেই প্রয়োজনীয় সব ডেটা ফাইল সংরক্ষণ করেন। তবে অনেক সময় ভুলে ডেটা ডিলিট হয়ে গেলে বেশ ঝামেলায় পড়তে পারেন অনেকে। এজন্য গুগল ৮৫.০.১৩.০ সংস্করণের সঙ্গে ডেস্কটপ অ্যাপের জন্য ড্রাইভ আপডেট করেছে, যা শুধু সিঙ্ক সমস্যা সমাধান করে না বরং একটি নতুন ফাইল পুনরুদ্ধার করার উপায়ও দেয়।

ডেস্কটপে ড্রাইভের ফাইল রিকভারি টুলস নতুন বিল্ট-ইন টুল, যা ব্যবহারকারীদের গুগল ড্রাইভের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ স্ক্যান চালাতে এবং আগের সংস্করণে সিঙ্ক সমস্যার কারণে হারিয়ে যাওয়া ফাইলগুলোসহ কোনো কারণে হারিয়ে যাওয়া ফাইলগুলো পুনরুদ্ধার করতে দেয়।

ফিচারটি ড্রাইভ স্ক্যান করে এবং ব্যাকআপ থেকে হারিয়ে যাওয়া ফাইলগুলো পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করে এবং সেগুলোকে ব্যাকআপ থেকে রিকোভারি নামক একটি পৃথক ফোল্ডারে পুনরুদ্ধার করে।

এই ফিচারটি ব্যবহার করার উপায়

.নিজেদের ডিভাইসে ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ওপেন ড্রাইভ চালু করতে হবে। এটি সাধারণত নিজেদের ইনস্টল করা প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশনের তালিকায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
.নিজেদের স্ক্রিনের শীর্ষে মেন্যু বার (ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য) বা নিচের ডানদিকের কোণে (উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য) সিস্টেম ট্রায় শনাক্ত করতে হবে। সিস্টেম ট্রায় হলো যেখানে অ্যাপ্লিকেশন এবং ইউটিলিটিগুলো চালানোর জন্য আইকনগুলো সাধারণত পাওয়া যায়।
.মেন্যু বার বা সিস্টেম ট্রায় ডেস্কটপের জন্য ড্রাইভ আইকন খুঁজতে হবে। একটি মেনু খুলতে বা অ্যাপ্লিকেশন সম্পর্কিত অতিরিক্ত বিকল্পগুলো প্রদর্শন করতে এটিতে ক্লিক করতে হবে।
.নিজেদের কি-বোর্ডে শিফট বাটনে ক্লিক করে চেপে ধরে রাখতে হবে।
.শিফট বাটনে চেপে ধরে রাখার সময়, ড্রাইভ ফর ডেস্কটপ মেনুতে ‘সেটিংস’ বিকল্পে ক্লিক করতে হবে। এই কি সমন্বয়টি অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে অতিরিক্ত বা উন্নত সেটিংস আনলক করতে পারে।
.একটি সাবমেনু বা সেটিংস উইন্ডো উপস্থিত হওয়া উচিত। এরপর ‘রিকোভারি ফ্রম ব্যাকাপস’ অপশন সার্চ করতে হবে এবং সিলেক্ট করতে হবে। এই বৈশিষ্ট্যটি পূর্বে সংরক্ষিত ব্যাকআপগুলো থেকে ফাইল বা ডাটা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
.একবার ব্যবহারকারীরা ‘রিকোভারি ফ্রম ব্যাকাপস’ বিকল্পটি সিলেক্ট করলে, রিকোভারি বৈশিষ্ট্যটিতে অ্যাক্সেস পাবেন। উপলব্ধ ব্যাকআপগুলোর মাধ্যমে নেভিগেট করতে এবং প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট ফাইল বা ডাটা পুনরুদ্ধার করতে অন-স্ক্রিন নির্দেশাবলী বা প্রম্পটগুলো অনুসরণ করতে হবে।

তথ্যসূত্র: গুগল হেল্পসাইট




দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর শিরোপা লড়াই আজ

এই টুর্নামেন্টের সব শেষ আসরে গেল বছর অনুষ্ঠিত হওয়া ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-১ গোলে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় রিয়াল মাদ্রিদের। তবে এবার আর হারতে চাইছে না রিয়াল। প্রতিশোধ নিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্য তাদের। আর এই লক্ষ্যে খেলোয়াড়দের আরও মনোযোগী করতে ক্লাবটির সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন এই ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারাতে পারলেই খেলোয়াড়দের বিশেষ পুরস্কার দেবেন তিনি।

মধ্যপ্রাচের দেশ সৌদি আরবে আজ রাত বাংলাদেশ সময় ১টায় কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ক্লাব ফুটবলের এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত-এর খবর অনুযায়ী, এই ম্যাচটি জিততে পারলে প্রত্যেক খেলোয়াড় পাবেন দেড় লাখ ইউরো। মোট ৪০ লাখ ইউরো খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাবেন কোচিং স্টাফের সদস্যরাও। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য স্প্যানিশ ফেডারেশন থেকে প্রাপ্য অর্থের অর্ধেক-ই বোনাস।

এর আগে এই মাঠে গত বুধবার প্রথম সেমি-ফাইনালে ৮ গোলের ম্যাচে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ওসাসুনাকে ২-০ গোলে হারায় জাভির শিষ্যরা।

যদিও বর্তমান বিশ্বের দুই সেরা ফুটবলার আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি এবং পর্তুগালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ইউরোপ ছেড়ে বর্তমান অবস্থান করছে পৃথিবীর দুই মেরুতে। এই দুই তারকা না থাকায় ইউরোপ ফুটবল কিছুটা হলেও হারিয়েছে নিজেদের জৌলুস। তারপরও এল ক্লাসিকো দেখতে মুখিয়ে থাকে বিশ্বের কোটি ফুটবল ভক্ত। এর আগে ১৯৪০ সালে প্রথম বারের মতো মাঠে গড়াই এই টুর্নামেন্ট।

স্প্যানিশ সুপার কাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল বার্সেলোনা। এখন পর্যন্ত মোট ১৪ বার শিরোপা জিতেছে জাভির শিষ্যরা। অন্যদিকে বার্সেলোনা থেকে মাত্র দুটি শিরোপা পিছিয়ে ১২টি শিরোপা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে ক্লাবটি। তাই এই ম্যাচে বার্সেলোনাকে হারিয়ে গেল আসরের প্রতিশোধ এবং শিরোপার ব্যবধানে আরও কমাতে চায় রিয়াল মাদ্রিদ।

এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনার সমর্থকদের জন্য খুশির খবর হতে পারে পেদ্রির আবারও মাঠে ফেরার বিষয়টি। যদিও এই বিষয়ে ক্লাবটির ম্যানেজার স্পট করে কিছু না বললেও তার কথায় পেদ্রির মাঠে ফেরার বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেমিফাইনালে ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যাচের পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পেদ্রির ফেরার বিষয়ে বার্সা কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, সে (পেদ্রি) ভালো আছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং সে প্রস্তুত।’

সূত্র: ইত্তেফাক




হিমেল হাওয়া কনকনে শীতে বিপর্যস্ত মেহেরপুর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫

মেহেরপুর জেলা এক সপ্তাহ যাবৎ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার কারণে মাত্র কয়েক হাত দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠাণ্ডা ও ঝিরিঝিরি বাতাসে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও কাবু হয়ে পড়েছে।

শিশু এবং বয়স্ক মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় এ মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দৃষ্টিসীমা ৬০০ মিটার ও বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ ভাগ ।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে দেখা গেছে, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দিকাশিসহ শীতজনিত নানা রোগে মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে কর্তব্যরত ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. সউদ কবির মালিক বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে মোট ১৪১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে ঠান্ডা জ্বর নিয়ে এসেছিলেন ১৪ জন, ৪০ জন এসেছিলেন ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে।’

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুস সাত্তার কালবেলাকে বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ২৪১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।

অন্যান্য রোগীর চাপ কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে। গত ৪ দিনে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ নিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৭ জন। আর সর্বশেষ ২৪ ঘন্টাতে এই সংখ্যা ২০ জন।




চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড় হারাচ্ছে ঐতিহ্য থাকছে না গুড় ও পাটালির আসল স্বাদ

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলাসহ পুরো এলাকায় বইছে হিমেল হাওয়া। গত এক সপ্তাহে জেলায় বেশ কয়েকদিন রেকর্ড করা হয়েছে দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা। দিনের বেলায় মিষ্টি রোদের উপস্থিতি থাকলেও রাতে পড়ছে তীব্র শীত। শীত মৌসুমের শুরু থেকেই দামুড়হুদার গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এবার খেজুড় গুড় তৈরির জন্য অনুকুল আবহাওয়া ও গুড়ের বাজারদর ভাল থাকায় গাছিদের মুখে ফুটে উঠেছে রসালো হাসি। বাড়ি বাড়ি চলছে খেজুর গুড়ের তৈরি আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পিঠা-পুলির উৎসব। প্রতি বছরই শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে সকাল হলেই খেজুর রস, পিঠা ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে পুরো এলাকা। শীতের সকালে খেজুরের ঠান্ডা রস পান করা যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না।

আর খেজুর রসের পিঠা পায়েস যে কেমন মজাদার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পিঠা, পায়েস, তৈরির ধুম পড়ে গেছে। প্রতিদিনই কোন না কোন বাড়িতে চলছে খেজুরের রস ও গুড়ের তৈরি নানারকম খাবারের আয়োজন।

শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে পিঠে মিষ্টি রোদ লাগিয়ে খেজুরের গরম গরম ঝোলা গুড় দিয়ে রুটি খাওয়ার ভিন্ন স্বাদ। একবার খেলে তার স্বাদ মুখে লেগে থাকে অনেকদিন পর্যন্ত।খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি। নতুন ধানের মুড়ি আর পাটালি খুবই মুখোরোচক খাবার।খেজুরের নলেন গুড় ছাড়া শীতকালিন পিঠা-পায়েস এর উৎসবের কথা ভাবাই যায় না। আগেকার দিনে শীত মৌসুমে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষের সকালের নাস্তা হতো নতুন ধানের চিড়া, ঘরে পাতা দই আর খেজুরগুড় দিয়ে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নানারকম খাবারের ভিড়ে সেসব আজ শুধুই স্মৃতি।

সূত্রে জানা গেছে, এক সময় দামুড়হুদা উপজেলাসহ জেলার আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার সব অঞ্চলই খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। দেশের বিভিন্ন জেলায় এই খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এ এলাকার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে বিভিন্ন যানবাহনযোগে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ খেজুর গুড় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালান হতো।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পুর্বে জীবননগর বাজারের খেজুর গুড় চালান হতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চল, কলকাতাসহ বিভিন্ন শহরে। ওই সময় ভারতের রানাঘাট ও মাজদিয়া হাটের ব্যাপারীরা এসে দামুড়হুদা সদর, কার্পাসডাঙ্গা, জীবননগরসহ পার্শ¦বর্তী এলাকা থেকে গুড় কিনে গরু ও ঘোড়ার গাড়িতে বোঝাই করে নিয়ে যেত তাদের নিজ এলাকায়।

উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের গাছি রহমত আলি বলেন, আমি প্রায় ২০-২৫ বছর যাবৎ খেজুর রস সংগ্রহ ও খেজুর গুড় তৈরি করে আসছি। আগে এ কাজে ভালই লাভ হতো। গুড় তৈরির কাজ করে এখন আর আগের মতো লাভ হয় না। কারণ, আগে এলাকার সব মাঠে ও গ্রামের আনাচে কানাচে খেজুর গাছ ছিল। একসাথে অনেক গাছ কাটা যেত। এখন এলাকায় খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে।

অন্যান্য কাজের ফাঁকে একাজ করতে হয়। প্রতি বছর ভাটায় ইট ও টালি পোড়াতে বিপুলসংখ্যক খেজুর গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। যে হারে বড় বড় খেজুর গাছ কাটা পড়ছে তাতে কয়েক বছর পরে আর রসের জন্য বড় গাছ পাওয়া যাবে না। ছোট গাছে রস তেমন একটা হয় না। রসের স্বাদও নেই। আর ছোট গাছ থেকে রস পাড়তে সুবিধা হয় তাই এসব গাছে চোরের উপদ্রব বেশি।বর্তমানে যে হারে গাছ কাটা হচ্ছে সেই তুলনায় লাগানো হচ্ছে না। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গুড়ের উৎপাদনও কমে গেছে।

বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা। আর প্রতি কেজি খেজুর গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। বাজারে চিনির চেয়ে খেজুর গুড়ের দাম বেশি হওয়ায় এক শ্রেণির মুনাফালভী অসাধু গাছিরা খেজুর গুড় তৈরির সময় তাতে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় ও পাটালি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে।

এসব চিনি ভেজাল দেওয়া গুড় ও পাটালিতে আসল স্বাদ থাকছে না। ফলে ভেজাল গুড় কিনে ক্রেতারা প্রতারিত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেইসাথে মানুষও ভুলতে বসেছে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ। ভেজাল খেজুর গুড় তৈরি করে হাতেগোনা কিছু অসাধু গাছি লাভবান হলেও ভেজালের কারণে এলাকার খেজুর গুড় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আর অভিজ্ঞ লোক ছাড়া ভেজাল ও আসল খেজুর গুড় সহজে চেনারও উপায় নেই। তাই ভেজালের কারনে মানুষ খেজুর গুড় খাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।

কয়েক বছর যাবৎ গুড়ে ভেজাল দেওয়া ও সেই সাথে আসল গুড়ের উৎপাদন কমে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।তাই ভেজাল গুড় উৎপাদনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভোক্তাসাধারণ। তবে এত প্রতিকূলতার মাঝেও এখনও অনেক পুরাতন গাছিরা অন্যান্য কাজের সাথে ভাল খেজুর গুড় তৈরি করে এর ঐতিহ্য ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

খেজুর গাছ আমাদের রস ও গুড় দেওয়া ছাড়াও ছায়াদান, জ্বালানি সরবরাহসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে নানাভাবে উপকার করে থাকে। তাই এ গাছ থেকে সুমিষ্ট রস গুড় পেতে, আমাদের জীবনের প্রয়োজনে পরিবেশ বাঁচাতে ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে আমাদের উচিত নির্বিচারে খেজুর গাছ কাটা বন্ধ করা ও সেই সাথে আরও বেশি বেশি করে খেজুর গাছ রোপণ করা।