মেহেরপুরে অটো ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী আহত

মেহেরপুর সদর উপজেলার বামনপাড়া বড় মসজিদের সামনে অটো ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী মোঃ রিপ্ত গুরুতর ভাবে আহত হয়েছে।

আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটের সময় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহত মোঃ রিপ্ত (১৭) বামনপাড়া গ্রামের স্বপন মীরের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায় মোটরসাইকেল আরোহী মোঃ রিপ্ত বামনপাড়া বড় মসজিদের সামনে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে  বিপরীত দিক থেকে আসা অটোর সাথে ধাক্কা মেরে ছিটকে রাস্তাতে পড়ে যায় এসময় মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। আমরা স্থানীয়রা ও আঘাতপ্রাপ্ত রিপ্তর আত্মীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।




চুয়াডাঙ্গায় দুটি আসনে ৪র্থ বারের মতো নৌকা প্রতীক জয়ী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ৪র্থ বারের মতো নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ৪র্থ হাজী আলী আজগর টগর নৌকা প্রতিক নিয়ে জয়লাভ করেছেন গতকাল রবিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে রাত সাড়ে দশটার সময় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।

গতকাল রবিবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চলে চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম । ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসন চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত এবং চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা মিলে ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসন। এই আসনে ৪র্থ বারের মতো বেসরকারি ভাবে নৌকা প্রতিকে জয়লাভ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।

এ সময় নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ঈগল প্রতিক থেকে ২৩ হাজার ৪ শত ৯৮ জনের ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন। নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ভোট পেয়েছেন ৯৬ হাজার ২ শত ৬৬ জনের ভোট।

তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ঈগল প্রতিকে ৭২ হাজার ৭ শত ৬৮ জনের ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ফ্রিজ প্রতিকে এম এ রাজ্জাক খান রাজ ভোট পেয়েছেন ৫৯ হাজার ১ শত ৮০ জনের ভোট । স্বতন্ত্র প্রার্থী এম শহিদুর রহমান ট্রাক প্রতিকে ৯ শত ৫৮জনের ভোট পেয়েছেন। এনপিপি’র (ন্যাশনার পিপলস্ পার্টি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতিকে পেয়েছেন ৫ শত ৪০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনিত প্রার্থী জাতীয় পার্টির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. সোহরাব হোসেন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ৫ শত ৭১ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৫ হাজার ৫ শত ৩৪টি।সাংসদীয় ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৯ শতাংশ।

অন্যদিকে সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসন দামুড়হুদা উপজেলা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ৪র্থ বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকায় প্রার্থী হাজী আলী আজগার টগর নৌকা প্রতিকে ১ লাখ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের থেকে ৪৬ হাজার ২ শত ২৫ জনের ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। এ সময় নৌকা প্রতিকে হাজী আলী আজগর টগর ভোট পেয়েছেন ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হাশেম রেজা ট্রাক প্রতীক ভোট পেয়েছেন ৬০ হাজার ৮ শত ৩৪ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢেঁকি প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭ শত ৫১ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিম ঈগল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৬ শত ৫১ ভোট।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল মল্লিক ফ্রিজ প্রতিকে পেয়েছেন ৮ শত ২৯ জনের ভোট। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মনোনিত প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও দেওয়ান মোঃ ইয়াছিন উল্লাহ মশাল প্রতীক পেয়েছেন ২ শত ১১ জনের ভোট। জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোঃ আব্দুল লতিফ খান গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২ শত ৭১ জনের ভোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতীক পেয়েছেন ৪ শত ৩০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনিত প্রার্থী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ৭ শত ৭৮ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৭ হাজার ৬ শত ৬৯টি।সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৬ শতাংশ।

উল্লেখ যে, চুয়াডাঙ্গায় দু’টি সংসদীয় আসনে ভোটকেন্দ্র ছিলো ৩৫৪টি। যার মধ্যে ২০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪৯টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো। কিন্তু কোন প্রকার অপ্রতিকার কর্মকাণ্ড ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট দেয় সাধারণ নাগরিক।
জেলার দু’টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৮ জন। নির্বাচনী এলাকা ৭৯ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৮৭ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্রে সংখ্যা ১৮১টি। নির্বাচনী এলাকা ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা উপজেলা, জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৯২ জন। মোট ভোটকেন্দ্রে সংখ্যা ১৭৩টি।




তৃতীয় বারের মত এমপি হলেন ফরহাদ হোসেন

মেহেরপুর-১ (সদর ও মুজিবনগর) আসনে ৩য় বারের মত আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। নৌকা প্রতিক নিয়ে ৯৪৩০৩ ভোট পেয়ে বে-সরকারি ভাবে বিজয়ী হন তিনি।

আজ রবিবার রাত আটটার দিকে বেসরকারি ভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষনা করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসান বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।

ফরহাদ হোসেনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান ট্রাক প্রতিক নিয়ে ৫৭৬৯২ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।

সকাল ৮ থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে বিরতীহিন ভাবে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলে এই ভোট গ্রহন। মেহেরপুর ১ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৭ জন।

এদিকে, বিজয়ের উল্লাসে ফেটে পড়েছে ফরহাদ হোসেনের সমর্থকরা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যা থেকেই ভিড় জমাই হোসেনের বাসভবনের সামনে। ফলাফল ঘোষণার পরে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন তাকে।

এর আগে ২০১৪ সালে এবং ২০১৮ সালে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে তিনি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।




কুষ্টিয়া-২ ইনুকে হারিয়ে এমপি হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফীন

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকার প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে বড় ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন। কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। আর হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। প্রায় ২৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন কামারুল আরেফিন।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত জাসদ থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে এসে মহাজোট থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। এরপর ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ২০১৮ সালে বিএনপি-জামায়াতকে কোণঠাসা করে জয়ী হন বড় ব্যবধানে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইনু ২ লাখ ৮০ হাজার ৬৩৬ ভোট। তবে এবার এসে তার ভোটের সংখ্যা মাত্র ৯২ হাজার। এর আগে ৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত ভোটের হিসেব করলে দেখা যায় ৩০ হাজারের সামান্য বেশি ভোট পেয়েছিলেন তিনি।

এদিকে গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নানা কারনে দ্বন্দ্ব প্রকট হয় ইনুসহ জাসদের। যার ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়েন। ইনুকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন।

কামারুল আরেফিন ৮০’র দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে। এরপর যুবলীগের রাজনীতি শুরু করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন। পরে হামলা-মামলায় টিকতে না পেরে পালিয়ে যান এলাকা ছেড়ে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় ফিরে আসেন। এরপর ২০১১ সালে সদরপুর ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিপুল ভোটে। পরে কাউন্সিলে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের পর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হন। এরপর ২০১৮ সালে এসেও একই পদে জয়ী হন তিনি।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মিরপুর ও ভেড়ামারায় তার জনপ্রিয়তা আছে কর্মিদের মাঝে। দেশ সেরা উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন কামারুল। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইনুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। নানা প্রতিকুলতার পরও তাকে মাঠ থেকে সরাতে পারেনি ইনু। বিরোধিতার পরও ভোটের মাঠে ম্যাজিক দেখিয়ে ইনুকে ঘায়েল করেছেন জয়ী হয়েছেন।

জয়ী হওয়ার পর দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে আসেন।

জয়ী হয়ে কামারুল আরেফিন বলেন, ‘আমি জনতার নেতা। সব ছেড়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম। জনগন ভোট দিয়ে আমার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছে। আমি শুকরিয়া জানাই আল্লাহর দরবারে। মিরপুর-ভেড়ামারাবাসীর এ দেনা আমি কখনো শোধ করতে পারব না। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাব।’

এদিকে ইনুর পরাজয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

এদিকে ৩৩ বছর পর এমপি পেল মিরপুরবাসী। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন আব্দুর রউফ চৌধুরী। এরপর ভেড়ামারা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছে বারবার। তার আগে ১৯৮৬ সালে জামায়াতের আব্দুল ওয়াহেদ এমপি হন প্রথমবারের মতো।




দর্শনায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন : ১ জনের কারাদণ্ড ও ৬ জনের জরিমানা 

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় নির্বাচন চলাকালীন কেন্দ্রের মধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আরিফুল ইসলাম লাল্টু (৪০) নামের একজনকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের জেল প্রদান করেছে।

আজ রোববার দুপুর ৩ টার দিকে দর্শনা সরকারী কলেজে ভোট কেন্দ্রের এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় তাকে চুয়াডাঙ্গা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানাযায়, গতকাল রোববার দুপুর ৩ টার দিকে দর্শনা সরকারী কলেজ ভোট কেন্দ্রে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আরিফুল ইসলাম লাল্টু নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। এসময় তাকে ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদন্ড প্রদান ও অর্থ জরিমানা অন্যথায় কারাদন্ডের রায় প্রদান করা হয়।

কারাদন্ড প্রাপ্ত ব্যাক্তি দর্শনা পৌর এলাকার থানাপাড়া মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে আরিফুল ইসলাম লাল্টু। তাকে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে সন্ধেহজনক ঘোরাঘুরি ও আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্পিতা আক্তার ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছে।

এসব উপস্থিত ছিলেন দর্শনা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচন এলাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বসরী দামুড়হুদা সড়কে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় সড়ক আইনে ৬ জনকে আচরণ বিধি লঙ্ঘন ও অবৈধ্য মোটরযান চালানোর অপরাধে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।




ঝিনাইদহের ৩টিতে আওয়ামী লীগ ১ টিতে স্বতন্ত্র বিজয়ী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ ৪টি আসনের ৩টিতে আওয়ামী লীগের নৌকা এবং ১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীক বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছে।

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল হাই এমপি নৌকা প্রতীকে ৯৫হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন , তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নজরুল ইসলাম দুলাল স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৯হাজার ৭২৮ ভোট।

ঝিনাইদহ-২( ঝিনাইদহ-হরিণাকুণ্ডু) আসনে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে ১লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত তাহজীব আলম সিদ্দিকী এমপি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১লাখ ১৫হাজার ১৫ ভোট।

ঝিনাইদহ-৩( মহেশপুর- কোটচাঁদপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সালাহ উদ্দীন মিয়াজী নৌকা প্রতীকে ৮৩ হাজার ১৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আজম চঞ্চল ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৯০৯ ভোট।

এছাড়া ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ- সদরের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুল আজিম আনার নৌকা প্রতীকে ৯৬ হাজার ৫০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের আব্দুর রশীদ খান পেয়েছেন ৫৭ হাজার ১০০ ভোট।




মেহেরপুর-২ আসনে ডাক্তার নাজমুল হক সাগর এমপি নির্বাচিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর- ২ (গাংনী) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডাক্তার এএসএম নাজমুল হক সাগর (নৌকা প্রতীক) ৭২ হাজার ৭২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি মকবুল হোসেন ( ট্রাক প্রতীকে) পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৯৩ ভোট।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রীতম সাহা আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বেশি পেয়েছেন ২৩ হাজার ১৩৫ ভোট।

এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২লাখ ৫৫ হাজার ৯২৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৪৯৩ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৪ জন এবং হিজড়া ভোটার ২ জন।




মেহেরপুরের দুটি আসনেই নৌকা বিজয়ী

সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। মেহেরপুরের দুটি আসনে দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিলো। নির্বাচনে মেহেরপুর ১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং মেহেরপুর ২ আসনে ডা: আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর বিজয়ী হয়েছেন। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী।

মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুরন-১ আসনে ফরহাদ হোসেন বিজয়ী হয়েছেন ৩৬৬২১ ভোটে। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৮২ ভোট। এ আসনটিতে মোট ৩ লাখ ৩৭ জন ভোটার রয়েছেন। ভোট প্রদানের হার ৫২.৫৪ ভাগ।

শুধুমাত্র গাংনী উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর বিজয়ী হয়েছেন ২৩ হাজার ১৩৫ ভোটে। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭২ হাজার ৭২৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন ট্রাক প্রতীকে ৪৯ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়েছেন। এ আসনটিতে মোট ২ লাখথ ৫৫ হাজার ৯২৯ ভোট। ভোট প্রদানের হার ৪৮ ভাগ।

মেহেরপুর ১ আসনে মোট প্রার্থী ছিলেন ছয় জন এবং মেহেরপুর ২ আসনের প্রার্থী সাত জন। তবে আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দীতা হয়। অন্য দলের প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।

সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভোটাররা।




ঝিনাইদহের ৪ টি সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা

ঝিনাইদহের ৪টি সংসদীয় আসনে শান্তিপুর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৮ টায় জেলার ৪ টি সংসদীয় আসনের ৬ উপজেলার ৫৮৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকাল থেকে তীব্র শীত উপেক্ষা ভোট দিতে আসছেন নানা বয়সী নারী-পুরষ। ভোটকেন্দ্রগুলোর বাইরেও যেন উৎসব চলছে। নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো ৪ টি আসনের প্রতিটি কেন্দ্রেই বেলার বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়ছে।

এদিকে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ১৯ ইষ্ট বেঙ্গল ব্যাটালিয়নের ১৫ প্লাটুন, বিজিবি ৯ প্লাটুন, আনসার ব্যাটালিয়ন ৭ হাজার ২০ জন, পুলিশ ১ হাজার ৬ শ’৪ জন মোতায়েন করাসহ ও র‌্যাবের ৮টি ভ্রাম্যামাণ টিম দায়িত্বে রয়েছে।

এছাড়া ২৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভ্রাম্যমাণ স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করে করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম ।

এবারের নির্বাচনে ৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ২৬ জন প্রার্থী। নির্বাচনে ৫৮৫টি ভোটকেন্দ্রে ১৫ লাখ ১ হাজার ৪’শ ৮০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৬৭০ জন, নারী ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ জন ও হিজড়া ভোটার রয়েছে ১২ জন।




জনগণের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল: হানিফ

জনগণের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ভোটের যে ফলাফল হবে মেনে নেবে আওয়ামী লীগ। জনগণের রায়ের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে সকাল সোয়া ৮টায় ভোট দেয়ার পর কুষ্টিয়া-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব-উল আলম হানিফ এ কথা বলেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে অনেকেই এজেন্ট হতে চান না, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এজেন্ট খুঁজে না পেয়ে সেই দোষ আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।

বিএনপি সম্পর্কে তিনি বলেন, এরা সন্ত্রাসী জঙ্গি দলে পরিণত হয়েছে। তাদের প্রতি জনগণের ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় ৪টি সংসদীয় আসনে ৫৭৮টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ চলছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো: এহেতেশাম রেজা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য করতে জেলায় ১২ প্লাটুন সেনা, ৯ প্লাটুন বিজিবি, ৩৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ জন বিচারক দায়িত্ব পালন করবেন। ৫৭৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৪৬টি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৮ জন পুলিশ ও আনসার মোতায়েন রয়েছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেছেন, পুলিশ- র‌্যাবের পেট্রোল, মোবাইল, স্ট্রাইকিং ও স্ট্যান্ডবাই ফোর্স কাজ করছে। ৪ দিন ধরে আমদের কেন্দ্রভিত্তিক পেট্রোল চলছে। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই।