দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ৪র্থ বারের মতো নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ৪র্থ হাজী আলী আজগর টগর নৌকা প্রতিক নিয়ে জয়লাভ করেছেন গতকাল রবিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে রাত সাড়ে দশটার সময় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
গতকাল রবিবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চলে চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম । ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসন চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত এবং চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা মিলে ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসন। এই আসনে ৪র্থ বারের মতো বেসরকারি ভাবে নৌকা প্রতিকে জয়লাভ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
এ সময় নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ঈগল প্রতিক থেকে ২৩ হাজার ৪ শত ৯৮ জনের ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন। নৌকা প্রতিকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ভোট পেয়েছেন ৯৬ হাজার ২ শত ৬৬ জনের ভোট।
তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ঈগল প্রতিকে ৭২ হাজার ৭ শত ৬৮ জনের ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ফ্রিজ প্রতিকে এম এ রাজ্জাক খান রাজ ভোট পেয়েছেন ৫৯ হাজার ১ শত ৮০ জনের ভোট । স্বতন্ত্র প্রার্থী এম শহিদুর রহমান ট্রাক প্রতিকে ৯ শত ৫৮জনের ভোট পেয়েছেন। এনপিপি’র (ন্যাশনার পিপলস্ পার্টি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতিকে পেয়েছেন ৫ শত ৪০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনিত প্রার্থী জাতীয় পার্টির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. সোহরাব হোসেন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ৫ শত ৭১ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৫ হাজার ৫ শত ৩৪টি।সাংসদীয় ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসন দামুড়হুদা উপজেলা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ৪র্থ বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকায় প্রার্থী হাজী আলী আজগার টগর নৌকা প্রতিকে ১ লাখ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের থেকে ৪৬ হাজার ২ শত ২৫ জনের ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। এ সময় নৌকা প্রতিকে হাজী আলী আজগর টগর ভোট পেয়েছেন ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হাশেম রেজা ট্রাক প্রতীক ভোট পেয়েছেন ৬০ হাজার ৮ শত ৩৪ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢেঁকি প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭ শত ৫১ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিম ঈগল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৬ শত ৫১ ভোট।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল মল্লিক ফ্রিজ প্রতিকে পেয়েছেন ৮ শত ২৯ জনের ভোট। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মনোনিত প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও দেওয়ান মোঃ ইয়াছিন উল্লাহ মশাল প্রতীক পেয়েছেন ২ শত ১১ জনের ভোট। জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোঃ আব্দুল লতিফ খান গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২ শত ৭১ জনের ভোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোঃ ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতীক পেয়েছেন ৪ শত ৩০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনিত প্রার্থী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতিকে ভোট পেয়েছেন ৭ শত ৭৮ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৭ হাজার ৬ শত ৬৯টি।সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৬ শতাংশ।
উল্লেখ যে, চুয়াডাঙ্গায় দু’টি সংসদীয় আসনে ভোটকেন্দ্র ছিলো ৩৫৪টি। যার মধ্যে ২০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪৯টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো। কিন্তু কোন প্রকার অপ্রতিকার কর্মকাণ্ড ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট দেয় সাধারণ নাগরিক।
জেলার দু’টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৮ জন। নির্বাচনী এলাকা ৭৯ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৮৭ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্রে সংখ্যা ১৮১টি। নির্বাচনী এলাকা ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা উপজেলা, জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৯২ জন। মোট ভোটকেন্দ্রে সংখ্যা ১৭৩টি।