ফিট থাকলেই কমবে মানসিক চাপ

মানসিক চাপ ও শারীরিক সুস্থতা দুটি বিষয় একে অন্যের সাথে জড়িত। যদি একটা মানুষ মানসিক অতিরিক্ত চাপে থাকে তার প্রভাব সবার আগে শরীরে পড়বে এবং শরীরের বাসা বাঁধবে নানান রকমের সমস্যা, তৈরি হবে নানান ধরনের অসুস্থতা।

মানসিক চাপ কমাতে কিংবা মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শরীরকে ফিট রাখতে হবে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য। সেজন্য করনীয় হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা,পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার ধাবার খাওয়া এবং এর পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা তা হলো দৈনিক কিছু ব্যায়াম করা। যা শারীরিকভাবে ফিট রাখার পাশাপাশি মানসিকভাবে ফিট রাখবে এবং শরীরের কিংবা মনের হাজারো ক্লান্তি দূর করবে।

মানসিক চাপ আমাদের দৈনন্দিনের সঙ্গী। কিন্তু সেই সঙ্গীকে মেনে নিলে হবে না। এই চাপের সাথে আপোষ করলে চলবে না। এই মানসিক চাপ মোকাবেলায় কিছু শারীরিক ব্যায়াম প্রয়োজন সেগুলোই উল্লেখ করা হলো:

মানসিক চাপ কমাতে দৌড়ান
অন্যান্য ব্যায়ামের পাশাপাশি দৌড়ানো অন্যতম একটি ব্যায়াম। দৌড়ানোর সাথে অন্য কিছু কোন তুলনা হয় না। প্রতিদিন যদি কোন ব্যক্তি ১০-১৫ মিনিট দৌড়াতে পারে সে অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা ও অসুস্থতা এড়াতে পারবে। পেশিগুলোর সঠিক সঞ্চালনের জন্য নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, দৌড় হলো মানসিক চাপ কমাবার অন্যতম মহৌষধ। এমনকি ভালো ফলাফল না পেলেও নিয়মিত দৌড়ানো আপনাকে অতিরিক্ত কাজের সময়ে খিটখিটে মেজাজ থেকে দূরে রাখবে। এটা এমনই ধরনের ব্যায়াম যেটা প্রয়োজনমতো সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা জাগ্রত করে। এবং অহেতুক দুশ্চিন্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেয়। মানসিক চাপ দূর করে নিজের কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই।

কাজের ফাঁকে বিশ্রাম
অফিসে কিংবা বাসায় যেখানেই কাজ করুন না কেন কাজের ফাঁকে বিরতি নেই কিছুক্ষণ বিশ্রাম করুন একটু হাঁটাচলা করতে পারেন। হয়তোবা ফোনে কথা বলার সময় টানা চেয়ারে না বসে থেকে একটু হাঁটাচলা করুন দুপুরে লাঞ্চ করার পর সরাসরি চেয়ারে না বসে থেকে একটু হাঁটা চলা করুণ। মাঝেমধ্যে অফিসে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা বিরতি নিন। চেয়ারে বসে আড়মোড়া কাটুন। মাথার পেছনে হাত রেখে পা সোজা করে কাঁধের পেশিগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করুন। এতে কাঁধের পেশিগুলোতে আরাম অনুভূত হবে। দেখবেন মুহূর্তেই বিরক্তিভাব দূর হয়ে আরাম অনুভব করবেন। দীর্ঘসময়ে বসে থাকলে কাঁধের ও পিঠের পেশিগুলো অসাড় হয়ে যায়। ফলে বিরক্তিভাব চলে আসে। তাই হাঁটাহাঁটি করা ও ব্যায়াম করা ফ্রেশনেস ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট সাহায্য করবে।

মানসিক চাপ কমাতে সূর্যের আলো
শারীরিক এবং মানসিক দুই সুস্থতার জন্যই সূর্যের আলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যেসব দেশের সূর্য দেখা দেয় না সে সব দেশের মানুষের মধ্যে মারাত্মক পরিমাণে হতাশা বিরাজ করে। শরীর সচল থাকলে এন্ডোরফিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমিয়ে অবস্থার উন্নতি করে। সূর্যের আলোয় থাকলে মস্তিষ্কে বাড়ে সেরেটোনিনের মাত্রা, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ঘর বন্ধ কিংবা গুমোট অথবা যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো প্রবেশ করে না সেই সব জায়গায় একটু এড়িয়ে চলাই ভালো।

মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম
যোগ ব্যায়াম করলে মন স্থির হয় আর মন স্থির থাকলে মানসিক চাপ অনেক অংশেই কমে যায়। শরীর ও মনের অতি উপকারী যোগব্যায়াম এটা কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না যে, যোগব্যায়াম সত্যিকার অর্থেই দেহ এবং মনের জন্য যথেষ্ট উপকারী। যোগব্যায়াম শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর ও মনের যোগসূত্র স্থাপন করে থাকে। তাই এখনি মাদুর বা পাটি বিছিয়ে লেগে পড়ুন যোগব্যায়ামে এবং দূর করুন আপনার অহেতুক উদ্বেগ ও হতাশাগুলো দূরে রাখে।

প্রিয় কিছুর সাথে সময় কাটান
মানসিক চাপ দূর করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে প্রিয় কিছুর সাথে সময় কাটানো বা প্রতিদিন এমন কোন কাজ করা যেটি আসলে আপনি ভালোবেসে। যেমন অনেকে বই পড়তে ভালোবাসে সে প্রতিদিন কিছুটা সময় বই পড়তে পারে। কেউ গান শুনতে ভালোবাসে সে দিনের কিছুটা সময় গান শুনতে পারে। পরিবারের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করা, বাগানে গিয়ে গাছে জল দেওয়া এই ধরনের কাজগুলো করলে মানসিক চাপ অনেক অংশেই কেটে যায়।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে সবজি বাজারে স্বস্তি ফিরেছে

শীতের আগামনীতে কৃষিনির্ভর মেহেরপুরে স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। সপ্তাহ ব্যবধানে শিম, বেগুন, করলা, মুলা ও পালং শাকের মতো অনেক সবজির দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে। শুধু এগুলো নয়, অধিকাংশ সবজি দামই কেজিতে কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে বাজারে সবজির আমদানি বেশি হওয়ায় কমেছে সবজির দাম।

তবে চাষিদের কপালে আশঙ্কার ছাপ সুস্পষ্ট। তারা বলছেন, শীত পড়াতে সবজি উৎপাদন বেড়ে গেছে সত্যি, কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে ঢাকায় সবজি পাঠাতে না পেরে কম দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে লোকশান গুনতে হবে তাদের।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বছরের সবসময়ই সবজির দাম বেশি থাকলেও শীত আসলে সবজির দাম নাগালের মধ্য আসে।

জেলার ঐতিহ্যবাহী বামন্দী বাজারের সবজি বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী, চাষি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে শুক্রবার বামন্দী সবজি বাজারে ব্যাপক পরিমাণে সবজি আমদানি হয়েছে। শীতকালীন সবজিতে সবজি বাজার ভর্তি হয়ে গেছে।

ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মুখে হাসি থাকলেও এ সময় চাষিদের মুখ ছিল কিছুটা মলিন। তারা জানান, গত সপ্তাহে যেখানে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৬০ টাকায়, শুক্রবার তা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমেছে। বেগুন ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আজ তা ১৫ থেকে ২০ টাকা; পটল ছিল ৫০ টাকা, আজ তা চলছে ১৫ থেকে ২০ টাকা; মুলা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আজ তা ১৫ থেকে ২০ টাকা; পালং শাক ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আজ তা ২০ টাকা এবং প্রতি কেজি লালশাক বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা করে, আজ তা চলছে ১৮ টাকা করে।

সবজি বিক্রেতা তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমি চাষিদের কাছ থেকে ৪০ টাকা করে বেগুন কিনে বিক্রি করেছি ৫০ টাকায়; আজ কিনেছি ১৫ টাকা করে, বিক্রি করছি ২০ টাকা করে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে আজ ক্রেতাদের চাহিদাও অনেক বেশি।’

আরেক সবজি বিক্রতা আরিফুল বলেন, ‘বাজারে আজ অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ১৫ টাকা করে কম। কারণ বাজারে আজ প্রচুর সবজির আমদানি হয়েছে। ফলে দাম কমে গেছে। আর যখন যেমন দামে সবজি কিনি, তখন তেমন দামে বিক্রি করি। বাজারে মূলত সবজি দাম বাড়ে উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে।’

সবজি ক্রেতা শিহাবুল আলম বলেন, ‘আমি আজ থেকে ১৫ দিন আগে আধা কেজি শিম কিনেছি ১০০ টাকায়, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কিনেছি ৬০ টাকা, আর আজ এক কেজি শিম কিনছি ৩৫ টাকা করে। তার মানে অর্ধেক দামে। আজ বাজারে শীতকালীন প্রায় সব সবজিই উঠেছে।’

ক্রেতা উজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি রাজ মিস্ত্রির কাজ করি। সকাল থেকে বিকেল পযর্ন্ত কাজ করে প্রতিদিন ৬ শ’ টাকা রোজগার করি। বাজারে এসে দুই একটা সবজি ছাড়া কেনার ক্ষমতা থাকে না। আজ এসে ২ শ’ টাকার বাজার করেছি, তাতেই বাজারের ব্যাগ ভর্তি হয়ে গেছে। আজ বেগুন, শিম, মুলা, পটল, বাধাকপিসহ আরও কয়েকটি সবজি কিনেছি। এমন বাজারদর থাকলে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুব ভালো হয়।’
সবজি চাষি মধু বলেন, ‘আজ বেগুন পাইকারি বিক্রি করলাম ১২ থেকে ১৫ টাকা করে। বতর্মানে সার, বিষ, শ্রমিকসহ সব জিনিসের দাম বেশি। এখন সবজি চাষে আগের থেকে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। আজ যে দামে সবজি বিক্রি করলাম এমন চলতে থাকলে লোকশান গুনতে হবে।’

আরেক সবজি চাষি একরামুল বলেন, ‘গত সপ্তাহেও সবজির দাম বেশ ভালো ছিল। অথচ আজ তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি বিক্রি করতে যাচ্ছি, তারা সবজির দাম কম বলছে। অথচ ঢাকার পার্টি বাজারে আসলেও তারা এখন এ সবজিই বেশি দামে কিনতে চাইবে। হরতাল অবরোধের কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা না আসায় এমনটি ঘটেছে।’




মেহেরপুরের ডাঃ ফরহাদ হোসেন পাভেল এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইএমও ডাঃ ফরহাদ হোসেন পাভেল এখন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী

মেডিকেল কলেজের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হলেও কারোর সাথে কথা বলতে পারছেন না বলে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মেহেরপুর ২৫০ সয্যা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার ডা: ফরহাদ হোসেন পাভেল যশোরের চৌগাছা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলামের ছেলে। গত ১৩ নভেম্বর তিনি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার (৮ ঘন্টা- ডিউটি) ছিলেন। তবে কর্তব্যরত সময়ে অন্য মেডিকেল অফিসারের সাথে ডিউটি সমন্বয় করে কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি গত ১৫ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে কর্তৃপক্ষ ডাঃ পাভেলের নিকট আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করে। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে ডাঃ পাভেল নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক মেহেরপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও তার সন্ধান পাওয়াতে সেসময় মেহেরপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয়নি।

সে সময় এই বিষয়ে মেহেরপুর প্রতিদিন ও দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদককে মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘বিষয়টা মিসিং বলা ভুল হচ্ছে। উনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি সম্পর্কে বলা যাবে।’

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য একই চিকিৎসক বিগত ২১ জন একই হাসপাতালের আউটসোর্সিং এ নিয়োগপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার সজলের হাতে লাঞ্ছিত হয়। সজল মেহেরপুর পৌর এলাকার বোস পাড়ার সাবান আলির ছেলে। এ ঘটনায় সে সময়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছিল।




জীবননগর থানা পুলিশের অভিযান গাজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

জীবননগর থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে গতকাল শুক্রবার বিকালে মনোহরপুর মাঠ থেকে ৩ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী কামাল হোসেনকে আটক করে পুলিশ।

জীবননগর থানা সুত্রে জানা গেছে, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এস.এম. জাবীদ হাসানের নেতৃত্বে এসআই জামাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা কালে গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের শাফায়েত হোসেনের বেগুন ক্ষেতের সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে মাধবখালী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী কামাল হোসেন (৩৭)কে ৩ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করেন পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।




ছিটমহলবাসীর মুক্তি ও কূটনৈতিক সাফল্য

“সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়”- সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭২ সালে প্রণীত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের পররাষ্ট্রনীতিতে লিপিবদ্ধ এ অনুচ্ছেদকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণপূর্বক দেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখে প্রতিবেশী ও অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা অত্যন্ত বিচক্ষনতার পরিচয় দিয়েছেন এবং এর আলোকে প্রায় সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক কূটনৈতিক সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সকল ক্ষেত্রে সাফল্যের ঝুলি ভরা থাকলেও ছিটমহল সমস্যার সমাধানের সফলতা মানবিক কারনে এক অনবদ্য দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবে। ছিটমহল সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। শব্দটির সূচনা মূলত ১৯৪৭ সালে সিরিল রেডক্লিফের মানচিত্র বিভাজন থেকেই। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়নের গুরুত্ব, মর্মার্থ বুঝতে হলে এ সম্পর্কিত দীর্ঘ ইতিহাস আমাদের জানতে হবে।

১৭৫৭-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছর চলে ইংরেজদের দ্:ুশাসন-শোষণ। এসবের বিরূদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন, লড়াই-সংগ্রামের পর ভারতীয় উপমহাদেশকে স্বাধীনতা দেয়ার জন্য ১৯৪৭ সালের ১৫ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে “ইন্ডিয়ান্স ইন্ডিপেন্ডন্স অ্যাক্ট-১৯৪৭” পাস হয়। এ প্রেক্ষিতে ভারতবর্ষে নিযুক্ত শেষ ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের সময়ে বাংলা ও পাঞ্জাবের সীমারেখা নির্ধারণের পরিকল্পনা করেন। তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নিমিত্তে সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠন করেন এবং ব্রিটিশ আইনজীবী সিরিল রেডক্লিফকে এই কমিশনের প্রধান করেন।

এ প্রেক্ষিতে সিরিল রেডক্লিফ ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই লন্ডন থেকে ভারতে আসেন। তিনি মাত্র ৬ সপ্তাহ কাজ করে ১৩ আগস্ট সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন এবং ১৬ আগস্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় সীমানার মানচিত্র। কিন্তু রেডক্লিফের অদূরদর্শীতা, কমিশনের সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তা, স্থানীয় জমিদারদের লোভ এবং তৎকালীন কংগ্রেস, মুসলীম লীগ ও হিন্দু মহাসভার খামখেয়ালিপনায় সীমানা নির্ধারণের কাজটি সঠিকভাবে করা হয়নি। ফলে এক দেশের ভূখন্ডে থেকে যায় আরেক দেশের জনগণ। সীমান্ত অঞ্চলে শুরু হয় “নিজভূমে পরবাসী” পরিচয়ে ছিটমহলবাসীর বসবাস।

ছিটমহল হচ্ছে মূলত এক দেশের ভিতর অন্য দেশের ভূখন্ড। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সর্বমোট ১৬২ টি ছিটমহল রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহল ছিল ১১১ টি; ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের ছিটমহল ছিল ৫১ টি যার মোট জমির পরিমান হচ্ছে যথাক্রমে ১৭,১৬০ ও ৭,১১০ একর। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ভারত-পাকিস্তান সীমানা নির্ধারণের সময় অনাকাঙ্খিতভাবে সৃষ্ট উভয় দেশের মালিকানাধীন এই ছিটমহলগুলোকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে রাখা হয় রাষ্ট্রের সার্বভৌম সীমার বাইরে। ফলস্বরূপ মালিকানা সংক্রান্ত সংঘর্ষে ছিটমহলের মানুষদের তৈরি হয় পরিচয়- সংকট। তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। এক রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে আশ্রিত অন্য রাষ্ট্রের মালিকানাধীন নিরপরাধ জনগন কার্যত হয়ে পড়েন রাষ্ট্রহীন মানুষ!

২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের ভিতর ভারতের এবং ভারতের ভিতর বাংলাদেশের ছিটমহলগুলোতে যথাক্রমে ৩৭,৩৩৪ এবং ১৪,২১৫ জন লোক বাস করে। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রায় অর্ধলক্ষাধিক ছিটমহলবাসির দৈনিক আয় ছিল মাত্র ১৭ টাকা। মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ, ভোটাধিকার, কর্মসংস্থান এর সুযোগ-সুবিধা থেকে প্রায় বঞ্চিত ছিলেন তারা। ছিটের ছেলে-মেয়েরা যতই মেধাবী হোক না কেন, তারা আসল বাবা-মার পরিচয়ে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি কিংবা মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করতে পারত না। কারণ, উক্ত বিদ্যালয় বা পরীক্ষা-বোর্ডের দেশে পরীক্ষার্থী ও তাদের মা-বাবা ভিনদেশী। তাই ছিটের মেধাবি শিক্ষার্থীকে বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে মিথ্যা পিতৃপরিচয় জোগাড় করতে হতো।

শুধু তাই নয়, সন্তানসম্ভবা বধূ নিকটতম হাসপাতালে গেলে ভর্তি নিত না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা বধূরা কি হাসপাতালে যেত না? অবশ্যই যেত। কিন্তু যাওয়ার সে পথ সুগম ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি হতে দেশহীন দেশের গৃহবধূকে অপরিচিত কোন পর পুরুষের বউয়ের পরিচয়ে ভর্তি হতে হত। যে পুরুষ মানুষটি হাসপাতালের দেশের স্বীকৃত নাগরিক।

শিশুর জন্মের পর হাসপাতাল থেকে যে কার্ড দেওয়া হত, তাতে সদ্যোজাত শিশুটির বাবা হিসাবে সেই পুরুষটির নামই থাকত। সন্তানপ্রসবা নারীর স্বামীর পরিচয় কিংবা পরীক্ষার্থীর অভিভাবকের পরিচয় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি হত। কোন মেয়েকে অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করলে, সে অভিযোগ নিকটতম পুলিশফাঁড়িতে নিত না। কারণ, দেশবিহীন ছিটের মেয়েকে ফাঁড়ির দেশ ঐ দেশের নাগরিক বলে মানত না। এমনকি, সীমান্তের প্রহরীদের কাছে নির্মমভাবে নির্যাতিত হওয়াও বাদ যায়নি ছিটমহলবাসীদের (৮ এপ্রিল ২০১৯, আনন্দবাজার পত্রিকা)। কতই আমানবিক, অভিশপ্ত ছিল তাদের জীবন যা ভাবলেই গা শিউরে উঠে।

প্রকৃতপক্ষে, ছিটমহলবাসী রাষ্ট্রের নির্বুদ্ধিতার ফল ভোগ করত বিনা দোষে। তাদের ছোট্ট অসহায় জীবনের উপর যেকোন মুহূর্তে ধেয়ে আসত চরম বিপর্যয়। তাই নাগরিকত্ব ও পতাকা-প্রতীকহীন এই মানুষগুলির কত শত আশা-আকাঙ্ক্ষা, হতাশা, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিষ্পেষণ, নিপীড়ন, মানবেতর জীবন- এসবকে নিত্যসঙ্গী করে ছিটমহলের জীবনপ্রবাহ বহমান ছিল দীর্ঘ ৬৮ বছর। এত কষ্টে ছিটমহলবাসী দীনাতিপাত করলেও তাদের নিয়ে কেউ ভাবেনি। সকলেই জমি চেয়েছিল, কিন্তু কেউ চায়নি এই অসহায় মানুষদের কষ্টের অবসান।

ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত কোন আইন পাশ হলে স্বাভাবিকভাবেই ভারতের অংশটুকু বাংলাদেশ ব্যবহারের অধিকার পেয়ে যাবে এবং পাশাপাশি ভারতও বাংলাদেশের অংশটুকু পেয়ে যাবে। এখানেই বাধে বিপত্তি। কারন ছিটমহল বিনিময় চুক্তি পাশ হলে বাংলাদেশ ভরতের চেয়ে প্রায় ১০,০০০ একর জমি বেশি পাবে। যদিও ছিটমহল বিনিময় চুক্তির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল ছিটমহলবাসীর নাগরিক পরিচয় ও স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু দু:খজনকভাবে জমির হিসাব এখানে মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ানোয় রাষ্ট্রপ্রধানরা সর্বদা চুপ থেকেছেন। কিন্তু চুপ থাকতে পারেননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সুযোগ্য তনয়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই তো ১৯৭৪ সালে ভারত সফরকালীন বঙ্গবন্ধু ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দুই দেশের বিরাজমান সীমান্ত সংকট নিয়ে কথা বলেন। সেখানে তিনি রেডক্লিফের কার্যক্রমকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে ছিটমহলবাসীদের দূর্বিষহ জীবন-চিত্র তুলে ধরেন।

১৯৭৪ সালের ১৬ মে দুজনের মাঝে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ‘৭৪ এর মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি’ নামে পরিচিত। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ৩য় সংশোধনী জাতীয় সংসদে ( ২৩ নভেম্বর, ১৯৭৪) বাংলাদেশ সরকার মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি পাশ করলেও ভারত সরকার পাশ করেনি। দূর্ভাগ্যবশত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দুই রাষ্ট্রের আর কোন সরকার প্রধানই ছিটমহল সমস্যা সমাধানে তেমন আন্তরিক ছিলেন না। তাই ‘৭৪ এর চুক্তির পর ছিটমহলবাসীর মনে যে কিঞ্চিৎ আশার আলো ফুটে উঠেছিল, অংকুরেই তা বিনষ্ট হয়ে যায়।

মানবতার মা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর চুক্তিটি বাস্তবায়নের প্রতি জোর দেন। এ ব্যাপারে ভারত সরকারের সাথে কয়েক দফায় আলোচনা করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় এ সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা শুরু করেন।

২০১১ সালের হাসিনা- মনমোহন প্রটোকল স্বাক্ষর তার স্পষ্ট প্রমাণ। সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার ২০১৩ সালে এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি সংসদ সদস্যেদের বিরোধিতায় পাশ করা সম্ভব হয়নি তখন।

এরপরেও দমে যান নি অদম্য শেখ হাসিনা। অত্যন্ত বিচক্ষনতার সহিত ঠান্ডা মাথায় প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যে বিজেপির তীব্র বিরোধিতার কারনে ২০১৩ সালে এ বিল পাশ হয়নি, সেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি ২০১৪ সালে ভারতে সরকার গঠন করলেও আশাহত হননি আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান। বরং দ্বিগুন উদ্যম নিয়ে দারুন কুটনৈতিক দক্ষতায় এ সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে মোদিকে রাজি করান। এরই ধারাবাহিকতায় বিজিবি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার সীমান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষে ৭ মে ২০১৫ সালে ভারতীয় সংসদের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার স্থল সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত বিল ৩৩১-০ ভোটের ব্যবধানে সংবিধানের ১০০ তম সংশোধনীর মাধ্যমে পাশ হয়। এ চুক্তি কার্যকর হয় ৩১ জুলাই’ ২০১৫ সালের মধ্য রাত থেকে। এই চুক্তির মাহাত্ম বলে শেষ করা যাবে না। কেননা, এই চুক্তির মাধ্যমে ৩০২ বছর ধরে চলমান সীমান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় এবং ছিটমহলে বসবাসকারী প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ ফিরে পায় নাগরিকত্ব।

৬৮ বছরের বন্দীজীবনের অবসান হয়, অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন পিছনে ফেলে ফিরে পায় আলোকিত জীবন। চুক্তি পরবর্তী বাংলাদেশের অংশের ছিটমহলের মানুষের মৌলিক ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপুল অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করেন। নির্মান করেন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল। থাকার জন্য গৃহ নির্মান করে দেন। মোদ্দাকথা, মানবেতর ও বদ্ধ জীবন থেকে এই মানুষগুলিকে মুক্তি দিয়ে নাগরিক মর্যাদা প্রদানপূর্বক সকল অধিকার নিশ্চিতের এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন মমতাময়ী শেখ হাসিনা। তাঁর এ মহান উদ্যোগ সমহিমায় স্মরিত হবে যুগ থেকে যুগান্তরে, কাল থেকে কালান্তরে। তাঁকে ছিটমহলবাসি কৃতজ্ঞতায় রাখবেন আজীবন।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।




চুয়াডাঙ্গা নবাগত পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানের যোগদান

চুয়াডাঙ্গা জেলার নবাগত পুলিশ সুপার হিসেবে আর এম ফয়জুর রহমান, পিপিএম-সেবা যোগদান করেছেন। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। নবাগত পুলিশ সুপার বাংলাদেশ পুলিশে ২৭তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে গত ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে যোগদান করেন।

তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএসএস (লোকপ্রশাসন), যুক্তরাজ্যে ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স হতে মাইগ্রেশন স্ট্যাডিজ এ মাস্টার্স, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

নবাগত পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান পিপিএম- সেবা নবাগত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন এর স্থলাভিষিক্ত হলেন। সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার নৌ পুলিশে পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি হয়েছেন। নবাগত পুলিশ সুপার বিকাল সাড়ে চারটার সময় জেলা পুলিশ চুয়াডাঙ্গার চৌকস টিম পুলিশ সুপারের কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে সালামী প্রদান করেন। পরবর্তীতে সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার নবাগত পুলিশ সুপারকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গার দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

নবাগত পুলিশ সুপার তার চাকুরিকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং সর্বশেষ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি) তে সুনাম ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কাঙ্ক্ষিত ও জনবান্ধন চুয়াডাঙ্গা গড়তে নবাগত পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, পিপিএম-সেবা জেলার সকল রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেছেন। ইতোমধ্যেই জেলা পুলিশ, চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ সুপার কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শুভেচ্ছাক্ষণে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ নাজিম উদ্দিন আল আজাদ পিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, সকল অফিসার ইনচার্জগণ, ডিআইও-১, আরআই, টিআই সহ জেলা পুলিশের সকল পদমর্যাদার অফিসার-ফোর্সগণ।




চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর পদধ্বনি অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাপ্তাহিক সাহিত্য আসরের ১৫১৩ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় শহীদ আলাউল হলে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাপ্তাহিক পদধ্বনি অনুষ্ঠিত হয় ।

১৫১৩ তম এ আসরে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নজমুল হেলাল। স্বরচিত লেখা পাঠ করেন গোলাম কবীর মুকুল, আবু নাসিফ খলিল, হুমায়ুন কবীর, বনলতা,শহিদুল ইসলাম,নটরাজ হারুন অর রশিদ, বেঙ্গলী,হোসেন মোহাম্মদ ফারুক, নুরুজ্জামান,কাজল গুরু,আহাদ আলী মোল্লা, এম এ মামুন, কবি নজমুল হেলাল প্রমুখ।ইংরেজি সাহিত্যের উপর বিশদভাবে আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহয়োগী অধ্যাপক খোন্দকার রোকনুজ্জামান।

চিরায়ত সাহিত্য থেকে অভিনয় করেন শহিদুল রনি।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক সুমন ইকবাল।




গণতন্ত্র ও উন্নয়ন পারস্পারিক সম্পর্কযুক্ত

জনগণের উন্নয়ন অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মানুষের অধিকার নিশ্চিতকরণের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের এ অগ্রযাত্রাকে সুসংহত করেছে। এটি অব্যাহত রাখতে সকলে এগিয়ে আসতে হবে।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‘উন্নয়ন ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সরকার মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের পাশাপাশি বৈশ্বিক সহযোগিতা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই সভার আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন ‘এডুকেশন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)’।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘রাজনৈতিক মতের প্রতি পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধই গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র। সামরিক শাসন ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে পুর্নবাসনের মত রাজনৈতিক ঘটনা এই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে নষ্ট করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিনষ্ট করতে চাওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের উপর আঘাতের ঘটনা আমরা অতীতে দেখেছি। এই সকল সংকটই সকল দ্বন্দ্বের উৎপত্তি ঘটিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ কথা অনস্বীকার্য যে, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন দুটি একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী একটি সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই সময়ে এসে নতুন করে সংলাপ নিয়ে যে আলোচনা চলছে তার প্রস্তাব তিনি আগেই দিয়ে ছিলেন।’

সভায় সভাপতিত্বে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও এডুকেশন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।

আব্রাহাম লিংকনের গণতন্ত্র ভাবনার উল্লেখ করে আলোচনায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান বলেন, ‘আব্রাহাম লিংকন এমন বলেছেন- কোন রাষ্ট্রে সব জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করলে, সেই রাষ্ট্রে গণতন্ত্র বিরাজমান বলে বিবেচনা করা যায়। প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের কল্যাণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তা কারও অজানা নয়। তার অর্থনৈতিক সাফল্যমণ্ডিত পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর রিপোর্টেও এসেছে।’

বাংলাদেশের সরকার মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের পাশাপাশি বৈশ্বিক সহযোগিতা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘কর্মসংস্থান, যোগাযোগে উন্নতি এবং আত্মনির্ভরতা অর্জনের সুফল বাংলাদেশের মানুষ ভোগ করছে। গণতান্ত্রিক চর্চা সুষ্ঠু থাকলে মানুষ এসব সুফল ভোগ করে।’

ইআরডিএফবি-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সভার আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও ইআরডিএফবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল কবীর, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার প্রমুখ।




শিক্ষা প্রসারে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও অর্জন

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। উপযুক্ত শিক্ষা মানুষের মেধা বিকশিত করার মাধ্যমে তাকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। তাই দেশে দেশে শিক্ষা সচেতন মানুষ শিক্ষার অধিকার আদায়ে সক্রিয়। এই সত্যটি উপলব্ধি করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ সৃষ্টির পূর্ব থেকেই শিক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলনে তিনি কার্যকরী সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় শিক্ষায় পুঁজি বিনিয়োগ, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করা, দারিদ্র্যের কারণে মেধাবী শিক্ষর্থীরা যেন উচ্চশিক্ষা বিমুখ না হয় এরকম সুস্পষ্ট কিছু প্রস্তাব রেখেছিলেন।

পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর পরই শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও পাকিস্তানি ধারা পরিত্যাগ করে বাঙালি জাতির বিকাশের উপযোগী একটি সুস্থ ধারার শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া একটি দেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন। এজন্য শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং যুগোপযোগী কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করার লক্ষ্যে প্রথিতযশা বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই শিক্ষা কমিশন গঠন এবং এর মাধ্যমে একটি প্রগতিশীল শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন।

বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন, মাদ্রাসা এডুকেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৭২ এবং প্রাইমারি এডুকেশন অ্যাক্ট ১৯৭৪ নামে দুটি আইন প্রণয়ন করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি মাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষা, কারিগরি সব ক্ষেত্রেই আধুনিক ও মানসম্পন্ন শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

১৯৭৩ সালে উচ্চশিক্ষা প্রসারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন পেশা ও বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকারই প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে ৭% বরাদ্দ বেশি রেখেছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন শিক্ষা দিয়েই দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করে জাতিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে ২য় বারের মতো ক্ষমতায় এসে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর নিমিত্তে আধুনিক সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের শিক্ষা কমিশনের আলোকে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণে অভিন্ন পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, শিশুদের মধ্যে গণতন্ত্র ও নেতৃত্বের বিকাশ ঘটানোর তাগিদে ২০১০ সাল থেকে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিলো। এর ফলে শিক্ষায় শিশুর অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে এবং বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার পর্যায়ক্রমে কমে ৪৭.২৫% থেকে ১৩.৯৫% এ নেমে আসে।

কোভিড-১৯ চলাকালীন পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এনে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ধারবাহিকতা বজায় রেখেছেন। প্রায় প্রতিটি স্কুলে আইসিটি ল্যাব চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে কম্পিউটার কোর্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনার লক্ষ্যে শিক্ষকদের আইসিটি ও পেডাগজি সমন্বয়ের প্রশিক্ষণ, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

২১ শতকের নানবিধ চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তার টেকসই ও কার্যকর সমাধান এবং সম্ভাবনার পূর্ণ সুফল গ্রহণের জন্য অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা, ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন দূরদর্শী, সংবেদনশীল, অভিযোজন-সক্ষম, মানবিক এবং যোগ্য বিশ্ব-নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে ।

দেশব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দক্ষ ও সৃষ্টিশীল মানব শক্তি তৈরিতে সর্বশক্তি নিয়োগ, উচ্চশিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য হাইয়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেনসমেন্ট প্রজেক্ট গ্রহণ, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। শুধু সাধরণ বা প্রযুক্তি শিক্ষা নয় শেখ হাসিনার সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে মাদ্রাসা কাঠামোতে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শাখা চালু করেছে। স্থাপিত হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। দাওরা হাদিসকে মাস্টার্স সমমান প্রদান করে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসারে বর্তমান সরকার তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থার সরকারি স্বীকৃতি কার্যকর করেছেন। অথচ ইতোপূর্বে কোনো সরকারকেই কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি তেমন গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি।

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর পরিবারসহ নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও শিক্ষা বিস্তারে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেনি। অধিকন্তু তৎকালীন বিএনপি সরকার ১৯৮১ সালে সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বেসরকারিকরণ করার উদ্যোগ গ্রহন করে। যদিও শিক্ষকদের জোরদার আন্দোলনের ফলে বিএনপি সরকার তাদের দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অন্যদিকে ২০০৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের আন্দোলনে অনেক শিক্ষককে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়। কাজেই সবদিক বিবেচনায় একথা বলা যায় যে, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রযাত্রা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও প্রসারে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদান অনস্বীকার্য।

লেখক: চেয়ারম্যান, শিক্ষা বিভাগ ও ডিন, শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।




আলমডাঙ্গায় বণিক সমিতির নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ

আলমডাঙ্গার বণিক সমিতির নবনির্বাচিত কার্যকারী পরিষদের শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিজয়ীদের দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বণিক সমিতির কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সমিতির উপদেষ্টা পরিষদ।

অনুষ্ঠানে বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিঞা মিলনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব হাসান কাদির গনু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি হাজী শমসের মল্লিক, সাবেক সভাপতি হাজী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম পকু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ঘেঁটু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী, নবনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম রহমান সিঞ্জুল।
অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে উপস্থাপনা করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। এসময় বিদায়ী কার্যকারী কমিটির সদস্যদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।

দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন হারদি এমএস জোহা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক একেএম ফারুক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক সহ-সভাপতি এনামুল হক, মোহাম্মদ আলী, হারদি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান ডাবলু, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজী রফিকুল আলম, শরিফুল ইসলাম, খবির উদ্দিন মার্কেটের মালিক রানা আহমেদ। এপর্বে নবনির্বাচিত কার্যকারী কমিটির শপথ পাঠ করান আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র হাসান কাদির গনু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র হাসান কাদির গনু বলেন,বণিক সমিতির ব্যবসায়ীদের এক সর্ব বৃহৎ সংগঠন। এ সংগঠনের নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানায়। ধন্যবাদ জানাই যারা বিগত কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরকেও। আপনারা উভয়ে মিলে মিশে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করবেন। আমার একটা পরামর্শ থাকবে,সমিতির সদস্যদের সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন।

শপথ গ্রহণ করেন- বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিঞা মিলন , সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল- মামুন, সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান, হাজী রফিকুল আলম, সহ-সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম , জাহাঙ্গীর আলম, কোষাধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া, সাংগাঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম লিটন , ক্রীড়া সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ধর্মীয় সম্পাদক রেজাউল করিম কাবিল, দপ্তর সম্পাদক শফিউল হাসান মিলন, এছাড়া নির্বাহী সদস্য পদে খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজম, আঃ ওহাব কাবলু, জসিম উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, ফারুক হোসেন, রেজাউল হক তোতা, রতন আলী, সাইদুল ইসলাম, খন্দঃ সজিব, সিরাজুল ইসলাম।