মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসনে (সদর ও মুজিবনগর) চলছে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণের মচ্ছব। প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচনী অফিস ও তোরণ নির্মাণ করছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ও অনুসারীরা। মোবাইল কোর্ট থাকছে নির্বিকার। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলছেন আমরা সকলকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করছি আচরনবিধি অমান্য না করার জন্য, তবে এখনই কোন অ্যাকশনে যাচ্ছে না।
গত বুধবার ৬ নভেম্বর মুজিবনগরের তারানগর গ্রামে চাষী ক্লাবের পাশে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারণা অফিস উদ্বোধন করেন মাদক কেলেঙ্কারিতে সদ্য বহিষ্কৃত মুজিবনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাকিব ও আরিফ মাস্টার। অফিসের সামনে নৌকা প্রতীকের তোরণ নির্মাণ করে লাইটিং করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে শেখ সাকিবের বক্তব্য নিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সময়ে তার মোবাইলে অসংখ্যবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ইতোপূর্বে মেহেরপুর সদর উপজেলার বামন পাড়া মোড়ে প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রতীকের তোরণ নির্মাণ ও জোরপূর্বক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সভা করানোর অভিযোগ ওঠে। বিস্তারিত বিষয়টি একটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
মেহেরপুর ১ সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার নির্বাচনকালীন মোবাইল কোর্টের দায়িত্বে থাকা সদর এসিল্যান্ডের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেওয়া হলেও তিনি নির্বিকার রয়েছেন। জেলা রিটারনিং কর্মকর্তার কাছেও আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি নিজেও আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগ থেকেই দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিছু অনুপ্রবেশকারী ভুঁই ফোড় নব্য আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নির্লিপ্ততায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে অহেতুক বিতর্কিত করা হচ্ছে। জানিনা এটা বর্তমান সরকারকে বিতর্কিত করার কোন ঘৃণ্য পরিকল্পনার অংশ কিনা।’
নির্ধারিত সময়ের আগেই নৌকার নির্বাচনী প্রচারণা অফিস এবং তোরণ নির্মাণের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, ‘আমার বাড়ি গাংনী উপজেলায়। আমি মেহেরপুরের সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে পারবো না। আপনি বরং দলীয় সভাপতি কে ফোন দেন। ‘
জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ ওয়ালিউল্লাহ’কে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করার জন্য। একটি পরিপত্রের কারণে কিছুটা অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। আমরা নিজেরাই এখন স্পষ্ট হতে পারছি না, কি করা যাবে না আর কি করা যাবে। আপনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে বিষয়টা নিয়ে কথা বলেন। উনি ব্যাপারটি স্পষ্ট করতে পারবেন।’
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার শামীম হাসান বলেন, ‘কোন প্রার্থী বা তার সমর্থক ১৮ তারিখের আগে কোন ভাবেই নির্বাচনী অফিস বা তোরোণ নির্মাণ করতে পারবে না। এটা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের ঘটনার কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। ‘