পেলে-নেইমারের ক্লাব সান্তোসের প্রথম অবনমন
ফোর্তালেজার বিপক্ষে সান্তোসের ম্যাচের একটি মুহূর্ত। হেরে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেছে সান্তোসছবি: সান্তোসের এক্স অ্যাকাউন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নেইমারের পোস্টটি দেখে আন্দাজ করে নেওয়া যায়, ব্রাজিলিয়ান তারকার মন ভালো নেই। মুখে হাসি নেই।
সেটা শুধু চোট পেয়ে মাঠের বাইরে থাকার জন্য নয়, গতকাল রাতে নেইমারের মন খারাপ হওয়ার মতো আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। ব্রাজিলের শীর্ষ লিগ ‘সিরি আ’তে নিজেদের শেষ ম্যাচে ফোর্তালেজার কাছে ২-১ গোলে হেরে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেছে সান্তোস।
নেইমার এ ক্লাব থেকেই উঠে এসেছিলেন ফুটবলের পাদপ্রদীপের আলোয়। তিনবার বিশ্বকাপজয়ী প্রয়াত কিংবদন্তি পেলেও তারকা হয়ে উঠেছেন এই সান্তোস থেকে। সেই পেলের মৃত্যুর এক বছর পূর্ণ হওয়ার কিছুদিন আগে অবনমন ঘটল সান্তোসের। গত বছর ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান পেলে।
কিংবদন্তির প্রস্থানের এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সান্তোসের অবনমনে নেইমারের মন একটু খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নেইমার তাই লিখেছেন, ‘সান্তোস সব সময় সান্তোসই থাকবে। আমরা আবারও হাসব।’
তবে সান্তোস সমর্থকদের মুখে আপাতত হাসি নেই। ‘সিরি বি’তে অবনমন নিশ্চিত হওয়ার পর সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরোর বাইরে রাস্তায় বেশ কিছু গাড়িতে আগুন দেন সমর্থকেরা। ক্লাবের ১১১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অবনমনে বুকের ভেতর জ্বলতে থাকা আগুনটা সমর্থকেরা নেভাতে পারেননি।
ব্রাজিলের শীর্ষ লিগ থেকে কখনো অবনমনের শিকার না হওয়া ক্লাবগুলোর তালিকা থেকে সান্তোসের নাম কাটা পড়ার পর এখন বাকি রইল শুধু ফ্লামেঙ্গো ও সাও পাওলো। টানা ৫ ম্যাচ জয়শূন্য থাকায় ২০ দলের লিগে ১৭তম স্থানে নেমে গিয়ে অবনমন মেনে নিতে হয় সান্তোসকে।
একই দিন ক্রুজেইরোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে সিরি আ-তে টানা দ্বিতীয় শিরোপা নিশ্চিত করেছে পালমেইরাস। মৌসুমে নিজের ১১তম গোল করে পালমেইরাসকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড এনদ্রিক।
রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে দলে টেনে নেওয়া মোটামুটি নিশ্চিত করেই রেখেছে। আগামী বছর জুলাইয়ে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করার পর তাঁর সঙ্গে পেশাদার চুক্তি করবে রিয়াল। জয়ের পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘লোকে বলছে, এটা আমি জিতেছি।
কিন্তু আমি একাই এটা জিততে পারতাম না। বছরের শুরুতে লোকের কথায় কান দিয়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। পরে বুঝেছি, এটা করা ঠিক হয়নি। অর্থাৎ আমি একটু হলেও পরিণত হয়েছি।’
সান্তোসকে বৈশ্বিক খ্যাতি এনে দিয়েছিলেন পেলে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বৈশ্বিক সফরে নাম কামানোর পাশাপাশি সে সময় ১০বার রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ৬বার ব্রাজিলিয়ান লিগ জিতেছে ক্লাবটি। ১৯৬২ ও ১৯৬৩ সালে জিতেছে দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নস লিগ নামে খ্যাত কোপা লিবার্তোদোরেস।
এই দুই বছরে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার সেরা ক্লাবগুলোকে নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপও জিতেছে সান্তোস। ব্রাজিলিয়ান সিরি আ-তে সান্তোস সব মিলিয়ে ৮বারের চ্যাম্পিয়ন। তিনবার জিতেছে কোপা লিবার্তোদোরেস।