দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর শিরোপা লড়াই আজ

এই টুর্নামেন্টের সব শেষ আসরে গেল বছর অনুষ্ঠিত হওয়া ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-১ গোলে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় রিয়াল মাদ্রিদের। তবে এবার আর হারতে চাইছে না রিয়াল। প্রতিশোধ নিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্য তাদের। আর এই লক্ষ্যে খেলোয়াড়দের আরও মনোযোগী করতে ক্লাবটির সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন এই ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারাতে পারলেই খেলোয়াড়দের বিশেষ পুরস্কার দেবেন তিনি।

মধ্যপ্রাচের দেশ সৌদি আরবে আজ রাত বাংলাদেশ সময় ১টায় কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ক্লাব ফুটবলের এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্ত-এর খবর অনুযায়ী, এই ম্যাচটি জিততে পারলে প্রত্যেক খেলোয়াড় পাবেন দেড় লাখ ইউরো। মোট ৪০ লাখ ইউরো খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাবেন কোচিং স্টাফের সদস্যরাও। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য স্প্যানিশ ফেডারেশন থেকে প্রাপ্য অর্থের অর্ধেক-ই বোনাস।

এর আগে এই মাঠে গত বুধবার প্রথম সেমি-ফাইনালে ৮ গোলের ম্যাচে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ওসাসুনাকে ২-০ গোলে হারায় জাভির শিষ্যরা।

যদিও বর্তমান বিশ্বের দুই সেরা ফুটবলার আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি এবং পর্তুগালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ইউরোপ ছেড়ে বর্তমান অবস্থান করছে পৃথিবীর দুই মেরুতে। এই দুই তারকা না থাকায় ইউরোপ ফুটবল কিছুটা হলেও হারিয়েছে নিজেদের জৌলুস। তারপরও এল ক্লাসিকো দেখতে মুখিয়ে থাকে বিশ্বের কোটি ফুটবল ভক্ত। এর আগে ১৯৪০ সালে প্রথম বারের মতো মাঠে গড়াই এই টুর্নামেন্ট।

স্প্যানিশ সুপার কাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল বার্সেলোনা। এখন পর্যন্ত মোট ১৪ বার শিরোপা জিতেছে জাভির শিষ্যরা। অন্যদিকে বার্সেলোনা থেকে মাত্র দুটি শিরোপা পিছিয়ে ১২টি শিরোপা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে ক্লাবটি। তাই এই ম্যাচে বার্সেলোনাকে হারিয়ে গেল আসরের প্রতিশোধ এবং শিরোপার ব্যবধানে আরও কমাতে চায় রিয়াল মাদ্রিদ।

এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনার সমর্থকদের জন্য খুশির খবর হতে পারে পেদ্রির আবারও মাঠে ফেরার বিষয়টি। যদিও এই বিষয়ে ক্লাবটির ম্যানেজার স্পট করে কিছু না বললেও তার কথায় পেদ্রির মাঠে ফেরার বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেমিফাইনালে ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যাচের পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পেদ্রির ফেরার বিষয়ে বার্সা কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, সে (পেদ্রি) ভালো আছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং সে প্রস্তুত।’

সূত্র: ইত্তেফাক




হিমেল হাওয়া কনকনে শীতে বিপর্যস্ত মেহেরপুর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫

মেহেরপুর জেলা এক সপ্তাহ যাবৎ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার কারণে মাত্র কয়েক হাত দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠাণ্ডা ও ঝিরিঝিরি বাতাসে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও কাবু হয়ে পড়েছে।

শিশু এবং বয়স্ক মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় এ মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দৃষ্টিসীমা ৬০০ মিটার ও বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ ভাগ ।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে দেখা গেছে, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দিকাশিসহ শীতজনিত নানা রোগে মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে কর্তব্যরত ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (ইএমও) ডা. সউদ কবির মালিক বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে মোট ১৪১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে ঠান্ডা জ্বর নিয়ে এসেছিলেন ১৪ জন, ৪০ জন এসেছিলেন ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রাথমিক উপসর্গ নিয়ে।’

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুস সাত্তার কালবেলাকে বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ২৪১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।

অন্যান্য রোগীর চাপ কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার রোগী বাড়ছে। গত ৪ দিনে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ নিয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৭ জন। আর সর্বশেষ ২৪ ঘন্টাতে এই সংখ্যা ২০ জন।




চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড় হারাচ্ছে ঐতিহ্য থাকছে না গুড় ও পাটালির আসল স্বাদ

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলাসহ পুরো এলাকায় বইছে হিমেল হাওয়া। গত এক সপ্তাহে জেলায় বেশ কয়েকদিন রেকর্ড করা হয়েছে দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা। দিনের বেলায় মিষ্টি রোদের উপস্থিতি থাকলেও রাতে পড়ছে তীব্র শীত। শীত মৌসুমের শুরু থেকেই দামুড়হুদার গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এবার খেজুড় গুড় তৈরির জন্য অনুকুল আবহাওয়া ও গুড়ের বাজারদর ভাল থাকায় গাছিদের মুখে ফুটে উঠেছে রসালো হাসি। বাড়ি বাড়ি চলছে খেজুর গুড়ের তৈরি আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পিঠা-পুলির উৎসব। প্রতি বছরই শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে সকাল হলেই খেজুর রস, পিঠা ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে পুরো এলাকা। শীতের সকালে খেজুরের ঠান্ডা রস পান করা যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না।

আর খেজুর রসের পিঠা পায়েস যে কেমন মজাদার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পিঠা, পায়েস, তৈরির ধুম পড়ে গেছে। প্রতিদিনই কোন না কোন বাড়িতে চলছে খেজুরের রস ও গুড়ের তৈরি নানারকম খাবারের আয়োজন।

শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে পিঠে মিষ্টি রোদ লাগিয়ে খেজুরের গরম গরম ঝোলা গুড় দিয়ে রুটি খাওয়ার ভিন্ন স্বাদ। একবার খেলে তার স্বাদ মুখে লেগে থাকে অনেকদিন পর্যন্ত।খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি। নতুন ধানের মুড়ি আর পাটালি খুবই মুখোরোচক খাবার।খেজুরের নলেন গুড় ছাড়া শীতকালিন পিঠা-পায়েস এর উৎসবের কথা ভাবাই যায় না। আগেকার দিনে শীত মৌসুমে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষের সকালের নাস্তা হতো নতুন ধানের চিড়া, ঘরে পাতা দই আর খেজুরগুড় দিয়ে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নানারকম খাবারের ভিড়ে সেসব আজ শুধুই স্মৃতি।

সূত্রে জানা গেছে, এক সময় দামুড়হুদা উপজেলাসহ জেলার আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার সব অঞ্চলই খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। দেশের বিভিন্ন জেলায় এই খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এ এলাকার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে বিভিন্ন যানবাহনযোগে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ খেজুর গুড় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালান হতো।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পুর্বে জীবননগর বাজারের খেজুর গুড় চালান হতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চল, কলকাতাসহ বিভিন্ন শহরে। ওই সময় ভারতের রানাঘাট ও মাজদিয়া হাটের ব্যাপারীরা এসে দামুড়হুদা সদর, কার্পাসডাঙ্গা, জীবননগরসহ পার্শ¦বর্তী এলাকা থেকে গুড় কিনে গরু ও ঘোড়ার গাড়িতে বোঝাই করে নিয়ে যেত তাদের নিজ এলাকায়।

উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের গাছি রহমত আলি বলেন, আমি প্রায় ২০-২৫ বছর যাবৎ খেজুর রস সংগ্রহ ও খেজুর গুড় তৈরি করে আসছি। আগে এ কাজে ভালই লাভ হতো। গুড় তৈরির কাজ করে এখন আর আগের মতো লাভ হয় না। কারণ, আগে এলাকার সব মাঠে ও গ্রামের আনাচে কানাচে খেজুর গাছ ছিল। একসাথে অনেক গাছ কাটা যেত। এখন এলাকায় খেজুর গাছ অনেক কমে গেছে।

অন্যান্য কাজের ফাঁকে একাজ করতে হয়। প্রতি বছর ভাটায় ইট ও টালি পোড়াতে বিপুলসংখ্যক খেজুর গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। যে হারে বড় বড় খেজুর গাছ কাটা পড়ছে তাতে কয়েক বছর পরে আর রসের জন্য বড় গাছ পাওয়া যাবে না। ছোট গাছে রস তেমন একটা হয় না। রসের স্বাদও নেই। আর ছোট গাছ থেকে রস পাড়তে সুবিধা হয় তাই এসব গাছে চোরের উপদ্রব বেশি।বর্তমানে যে হারে গাছ কাটা হচ্ছে সেই তুলনায় লাগানো হচ্ছে না। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গুড়ের উৎপাদনও কমে গেছে।

বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৪০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা। আর প্রতি কেজি খেজুর গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। বাজারে চিনির চেয়ে খেজুর গুড়ের দাম বেশি হওয়ায় এক শ্রেণির মুনাফালভী অসাধু গাছিরা খেজুর গুড় তৈরির সময় তাতে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় ও পাটালি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে।

এসব চিনি ভেজাল দেওয়া গুড় ও পাটালিতে আসল স্বাদ থাকছে না। ফলে ভেজাল গুড় কিনে ক্রেতারা প্রতারিত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেইসাথে মানুষও ভুলতে বসেছে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ। ভেজাল খেজুর গুড় তৈরি করে হাতেগোনা কিছু অসাধু গাছি লাভবান হলেও ভেজালের কারণে এলাকার খেজুর গুড় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আর অভিজ্ঞ লোক ছাড়া ভেজাল ও আসল খেজুর গুড় সহজে চেনারও উপায় নেই। তাই ভেজালের কারনে মানুষ খেজুর গুড় খাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।

কয়েক বছর যাবৎ গুড়ে ভেজাল দেওয়া ও সেই সাথে আসল গুড়ের উৎপাদন কমে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব।তাই ভেজাল গুড় উৎপাদনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভোক্তাসাধারণ। তবে এত প্রতিকূলতার মাঝেও এখনও অনেক পুরাতন গাছিরা অন্যান্য কাজের সাথে ভাল খেজুর গুড় তৈরি করে এর ঐতিহ্য ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

খেজুর গাছ আমাদের রস ও গুড় দেওয়া ছাড়াও ছায়াদান, জ্বালানি সরবরাহসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে নানাভাবে উপকার করে থাকে। তাই এ গাছ থেকে সুমিষ্ট রস গুড় পেতে, আমাদের জীবনের প্রয়োজনে পরিবেশ বাঁচাতে ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে আমাদের উচিত নির্বিচারে খেজুর গাছ কাটা বন্ধ করা ও সেই সাথে আরও বেশি বেশি করে খেজুর গাছ রোপণ করা।




চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রামে জমিসহ বাড়ি কিনে বিপাকে মহাসিন

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামে জমিসহ বাড়ি কিনে বিপাকে পড়েছে দর্শনার মিজান নামের এক ব্যবসায়ী। এ বাড়িকে কেন্দ্র করে বিক্রেতার পরিবারের সাথে ঝামেলায় থানা পুলিশে অভিযোগের পর আদালতে করে নোটিস।

মিজানুরের অভিযোগে জানাযায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের মোল্লা পাড়ার মৃত আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে মিলন উদ্দীন মোল্লার নিকট হতে গত ৭ মাস পূর্বে ০৫৬৮ একর জমি ও একটি গোডাউন ভবন সহ পাকা বাড়ি ক্রয় করেন দর্শনা শ্যামপুর গ্রামের দাউদ হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান। এ ক্রয়কৃত জমিসহ বাড়ি দখলে নিয়ে বাড়ি বসবাস শুরু করেন মিজান। তার ক্রয়কৃত জমি ও গোডাউন সহ বাড়িটি ক্রয়ের কিছুু দিনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের পুরাতন হাউলী গ্রামের ফকির মোহাম্মদের

ছেলে মহসিন আলীর নিকট বিক্রি করে দেয়। এ বিক্রিকৃত বাড়ির ক্রেতা মহসিন আলীকে বিক্রেতা মিজানুর রহমান বুঝিয়ে দিতে গেলে পূর্বের বিক্রেতা মিলন উদ্দীন মোল্লার পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে বিরোধ সৃস্টি হয়। এ বিরোধের জেরে স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ ও দর্শনা থানা পুুলিশ পর্যন্ত গড়াই। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা আদালতে ফৌজদারীর কার্যবিধি আদেশ জারী করে একটি নোটিশ করে মহসিন বিবাদীদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগকারী মিজানুর রহমান আরো জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানাধীন নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের মোল্লা পাড়ার মৃত আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে মিলন উদ্দীন মোল্লার কাছ থেকে ওয়ারিশ সুত্রে প্রপ্য হয়ে তার নিজ নামে খারিজ করে ৮.২৪ এবং খাজনা দেওয়া গোডাউন-বাড়ি সহ জমি ক্রয়ে সহমত প্রকাশ করে মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমান খরিদ করে মিজান যার জমির পরিমান. ০৫৬৮ খরিদ করে।মিজান ১৪/০৬/২৩ যার দলিল নং ৪৮৭৭ এবং ভোগ দখল করে কনষ্টোকশনের কাজ করে। মিজান পুনরায় বাড়ি ও গোডাউন বিক্রি করতে চাইলে মহাসিন কেনার সহমত পোষন করে। পুনরায় মিজান মহাসিনের কাছে বাড়ি ও গোডাউনসহ জমির পরিমান .০৫৬৮ একর বিক্রি করে।এরপর মহাসিন খারিজ খাজনা নামপত্বন ও খাজনা পরিশোধ করে মিজানের নিকট থেকে জমিসহ বাড়ি ও গোডাউন বুঝে নেন।

পরবর্তীতে দোস্ত গ্রামের মোল্লা পাড়ার মৃত্য আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে রাজু আহম্মেদ ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন, বড় ভাই আব্দুল জলিল মোল্লা ও তার স্ত্রী রেহেনা পারভীন , ও রাজুর মা আরফান নেছা মহাসিনের ক্রয় কৃত জমি ও বাড়িতে তালা লাগায়।

এতে মহাসিন কোন উপায়ন্ত না পেয়ে দর্শনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ ঘটনায় দর্শনা থানায় বসে সালিস বৈঠক। বৈঠকে পুলিশ রাজুদের দোষ প্রমানিত হয় এবং স্বীকার করে তালা খুলে দেওয়ার কথা বলে। পুনরায় তালা না খুললে গ্রামের মন্ডল মাতবর সালিস বৈঠক করে তালা খুলে দেয়। এর পর মহাসিন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করার অবস্থায় আবার রাজু গং তাদের তালা বদ্ধ করে রেখে দেয়। এবং বিভিন্ন ভাবে প্রান নাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।এ ঘটনায় মহাসিন হিজলগাড়ি ক্যাম্প পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তালা খুলে তাদের উদ্ধার করে।পুনরায় আবার তালা লাগায়।

গত ৪ জানুয়ারি হিজলগাড়ি পুলিশ ক্যাম্পে সালিস বৈঠক বসে। সালিস বৈঠকে তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে তালা খুলে মহাসিনের কাছে হস্তান্তর করে। পরে গত ৯ জানুয়ারী সন্ধায় ঘরের গেটে ঝামেলা থাকার কারনে মিস্ত্রী নিয়ে ঘরের কাজ করে। পুনরায় আবার রাজু গং তালা মারে ঘরে। মহাসিন ক্রয় করে মিজানের নিকট থেকে এবং ঘটানাটি মিজনকে জানালে মিজান ঐ জমিতে যায়। জমিতে তালা খুলতে গেলে মার গালিগালাজ ও শ্বাসরুদ্ধ করে এবং প্রাননাশের হুমকি দেয় এবং মেয়ে ছেলে মিলে এমন কি ঝাটা পিটা করে। যা ভিডিও ধারন করা আছে এবং মহাসিন ও মিজানের কাছে থাকা দেড় লক্ষ টাকা ২ টা স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় দর্শনা থানায় অভিযোগ করে।

এ বিষয়ে জমি ক্রেতা মহাসিন আলী চুয়াডাঙ্গা আদালতে মৃত আব্দুল কাদের মোল্লার ছেলে রাজু আহম্মেদ, আব্দুল জলিল মোল্লা, রাজু আহম্মদের স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন, আব্দুল জলিল মোল্লার স্ত্রী রেহেনা পারভীনের বিরুদ্ধে ফৌজদারীর কার্যবিধি আদেশ জারী করে একটি নোটিশ করেছে। এ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ তাই প্রশাসনের উপর হস্তক্ষেপ কামনা করছে সুধি মহল।




দর্শনায় চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল ৬ ঘন্টার মাথায় উদ্ধার, গ্রেফতার ১

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ঘরের গ্রীলের তালা কেটে সংঘবদ্ধ চোরচক্র মটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা।ঘটনার সাথে সাথে দর্শনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

অভিযোগের ৬ ঘন্টার মাথায় ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানাধীন লাঙ্গলবাধ গ্রামস্থ অবদা সংলগ্ন জনৈক রফিকুল শেখ এর চায়ের দোকানের পার্শ্বে কাচা রাস্তার উপর হতে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ।

জানাযায় আজ ১৩ জানুয়ারি শনিবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা চোরেরা দর্শনা পৌরসভার বাসষ্ট্যান্ড সিএন্ডবিপাড়া গ্রামস্থ বাদীর বসত বাড়ীর বারান্দা হতে একটি কালো রংয়ের এফ জেড মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় দর্শনা থানার বাসষ্ট্যান্ড সি এন্ডবি পাড়ার শওকত আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন সোহাগ (৪০) দর্শনা থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করে।অভিযোগ দায়েরের সাথে সাথে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) মোঃ শামিম রেজা সঙ্গীয় ফোর্সসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং স্থানীয় সোর্সর মাধ্যমে সংবাদ প্রাপ্তি হয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান পরিচালনা করে দুপুর ৩ টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানাধীন লাঙ্গলবাধ গ্রামের অবদা সংলগ্ন জনৈক রফিকুল শেখ এর চায়ের দোকানের পার্শ্বে কাচা রাস্তার উপর হতে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।সেই সাথে মোটরসাইকেল চোরচক্রের মৃল হোতা সেলিম মন্ডলকে (৩৭) গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত সেলিম রাজবাড়ী জেলার কালুখালী থানার চর নারায়নপুর গ্রামের ইসলাম মন্ডলের ছেলে। আজ তার বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।




ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে যান্ত্রিক ত্রুটিতে চিনি উৎপাদন ব্যাহত

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম ভারিশিল্প মোবারকগঞ্জ সুগার মিল ২০২৩-২৪ ম্ড়াাই উদ্বোধনের পর প্রায় অর্ধেক সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বন্ধ ছিল। ফলে চলতি মাড়াই মৌসুমে কাঙ্খিত চিনি উৎপাদন ব্যহত হবে বলে আশঙ্কা মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের।

গত ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে মিলের ডোঙ্গায় আখ ফেলে উদ্বোধন করেন বিএসএফআইসি এর প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম। মাত্র একদিন পর শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় বয়লারে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বন্ধ হয়ে যায়। দির্ঘ ১৬ ঘন্টা পর পরের দিন রোববার বিকাল ৫ আবার মাড়াই শুরু করার ১৩ ঘন্টা পর আবারো যান্ত্রিক ত্রুটিতে মাড়াই বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এদিন মিলের যন্ত্র বিভাগের শ্রমিক কর্মচারীদের চেষ্টায় ৮ ঘন্টা পর শুরু করে। ফলে মাড়াই শুরুর মাত্র ৪ দিনে ২৪ ঘন্টাই বন্ধ থাকে মিলটি। এভাবে চলতি মৌসুমের ২৩ দিনে প্রায় অর্ধেকটা সময়ই বন্ধ ছিল মিলটি মাড়াই। যদিও মিলের রেকর্ড বলছে ২৩ কার্যদিবসে বন্ধ ছিল ১০৪ ঘন্টা।

চলতি মৌসুমে ৬০ লাখ টাকার বাজেট ধরে পুনমেরামতের কাজ করা হয়। এদিকে মিলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিল শুরুর আগেই ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বাজেট ধরে যন্ত্রপাতি পুনমেরামতের কাজ করা হয়। কিন্তু মোটা অংকের এ পরিমাণ টাকার পুনমেরামত কোন কাজে আসেনি।

চলতি মাড়াই মৌসুমে ৪০ দিনে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে মাড়াই শুরু করে। চিনি আহরণের গড় ধরা হয় ৬ শতাংশ। কিন্তু ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মিলের চিনি আহরণের গড় ছিল ৪.২ শতাংশ। এদিন পর্যন্ত ২৩ কার্যদিবসে মিলটি চিনি উৎপাদন করে ১৪ হাজার ৪০৪ বস্তা। একই পরিমাণ রিকভারিতে গত বছর ওই সময়ে ২৫ থেকে ২৭ হাজার বস্তা চিনি উৎপাদন করেছিল। কিন্তু চলতি মৌসুমে যান্ত্রিক ত্রুটির কানেন চিনি উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেখা গেছে। যদিও মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন, চিনি উৎপাদন নির্ভর করে মাড়াইয়ের উপর। যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে মাড়াই কম হয়েছে ফলে চিনিও কম হবে এটা স্বাভাবিক। তবে ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটির করণ হিসাবে বলছেন, মিলের পুরাতন যন্ত্রপাতি হওয়ায় এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

এদিকে মিলের দ্বায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর মাড়াই শুরুর আগে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বাজেট ধরে পুরাতন যন্ত্রাংশ পরিবর্তন ও মেরামতের কাজ করা হয়। তবে, এ পরিমাণ বাজেট ব্যয় করা হলেও তা কাজে আসেনি বলে জানালেন শ্রমিকরা। অন্যদিকে মিলের এ টাকা খরচ করা হলে সব কিছু করা হয়েছে গোপনে।

শ্রমিকরা বলছেন, আগে এসব কাজের জন্য ওপেন টেন্ডার করা হলেও এখন তা হয় না। তাদের অভিযোগ মিল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বড় অংকের এ পরিমাণ টাকা শ্রমিক নেতা ও কর্মকর্তারা নামসর্বশ^ কাজ করে বাকিটা আত্মসাৎ করেছেন।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম মিলের যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি জানিয়ে বলেন, মিলের মাড়াই শুরুর আগেই সকল ত্রুটিপুর্নযন্ত্র পরিবর্তণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। চলতি মৌসুমে ৬০ লাখ টাকার বাজেট ধরে পুনমেরামতের কাজ করা হয়। তারপরও ত্রুটিটা এবার একটু বেশি হচ্ছে। যে কারনে মাড়াই কম হয়েছে, ফলে চিনি উৎপাদনও কম হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টেন্ডারের বিষয়ে বলেন, সব টেন্ডার ওপেন হয়। তবে অফিসিয়াল যে নিয়ম আছে তা মেনেই সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে, মিলের মাড়াই স্বাভাবিক করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

গত ২০২২-২৩ মাড়াই মৌসেুম মিলটি আখের অভাবে মাত্র ২৮ দিনে শেষ করে। ওই মৌসুমে কৃষকরা মাঠে আখ রোপন না করায় মিলের রেকর্ডে সবথেকে কম সময় উৎপাদনে ছিল মিলটি। এ সময়ে মিলটি ৩৫ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১ হাজার ৭৪৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করেছিল। ওই বছর আখের মন ছিল ১৮০ টাক্।া যদিও মিলে রেকর্ড বলছে এর আগে প্রতি মৌসুমে মিল এলাকার কৃষকরা ৮ থেকে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আখচাষ করতো। নানা প্রতিকূল পরিবেশ এবং অল্প সময়ে ফুল ফলসহ বিভিন্ন লাভজনক ফসল চাষ হওয়ায় কমে যাচ্ছে আখচাষ। তবে চলতি মৌসুমে আখের দাম বৃদ্ধি করায় কৃষকরা আবার আখচাষে ফিরছে বলে জানান কৃষকরা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০৭.৯৩ একর নিজস্ব জমির উপর নেদারল্যান্ড সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এরমধ্যে ২০.৬২ একর জমিতে কারখানা, ৩৮.২২ একর জমিতে কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক কলোনী, ২৩.৯৮ একর পুকুর এবং ১০৭ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ইক্ষু খামার। এছাড়া ১৮.১২ একর জমিতে জুড়ে রয়েছে সাবজোন অফিস ও আখ ক্রয় কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠাকালীন মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে ৬০ কর্মদিবস আখ মাড়াই চলে। লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় ১৯৬৭-১৯৬৮ মাড়াই মৌসুম থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন শুরু করে। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা ছাড়াও যশোরের দু’টি উপজেলা নিয়ে গঠিত মিলে আটটি জোনের আওতায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ রয়েছে সাড়ে তিন লাখ একর। আখ ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৪৮টি।




কোটচাঁদপুরে কনকনে শীতে বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত কৃষকরা

শৈত্য প্রবাহের মৃদু বাতাস আর কনকনে শীতে মানুষ যখন জড়োসড়ো। ঠিক সে সময় বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন, লেবাররা। এ চিত্র কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার – কুশনার মাঠে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা।

জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলায় ৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। এ উপজেলার প্রধান ফসল ধান। বেশ কয়েক দিন ধরে শুরু হয়েছে এ বছর বোরো ধান রোপন কার্যক্রম। তবে থমকে যাচ্ছে শৈত্য প্রবাহের মৃদু বাতাস,আর কনকনে শীত। এতে করে জগোসড়ো হয়ে যাচ্ছে মানুষ।

এরপরও প্রকৃতির এমন আচারনকে উপেক্ষা করে, কোটচাঁদপুর উপজেলায় সর্বত্র চলছে বোরো ধান রোপনের কাজ। গত শুক্রবার সকালে কোটচাঁদপুরের তালসার কুশনা মাঠে দেখা যায় বোরা ধান রোপনের এমন দৃশ্য।

এ প্রসঙ্গে ধানের জমিত কাজ করা লেবার লিটন হোসেন,সুলতান হোসেন,আশাদুল ইসলাম বলেন, আমরা তাহাজ্জেল হোসেনের নেতৃত্বে কাজ করি। আজ এখানে ১৭ জন লেবার কাজ করছি।

তারা বলেন,আমরাও তো মানুষ। আমাদের ও শীত লাগে। শীতে জড়োসড়ো হই। তারপরও কাজ তো করতে হবে।

লেবারা বলেন,কাক ডাকা ভোরে আসি। এরপর জমি থেকে চারা উঠিয়ে, তা জমিতে রোপন করে থাকি। আজ আমরা ৮ বিঘা জমিতে চারা রোপন করেছি। যাতে করে এক জনের ৭/৮ শ টাকা করে আয় হবে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চাষিরা চাষ করে থাকেন,হান্ড্রেড,বিরি-৫০, বিনা ২৫ জাতের ধান। এ বছর যোগ হয়েছে ধানের নতুন জাত হান্ড্রেড বঙ্গবন্ধু জাতের ধান।

গেল বছর এ উপজেলায় ৬ হাজার ১ শ ৫০ হেক্টর জমিতে ধান হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১ শ ৮৯ হেক্টর জমি। যা গেল বছরের তুলনায় ৩৯ হেক্টর জমি বেশি চাষ হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরনের আশা প্রকাশ করেছেন,কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান।

তিনি বলেন,এ বছরও চাষিদের মধ্যে কৃষি প্রনোদনা হিসেবে স্যার ও বীজ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ছিল ৫ কেজি করে হাইব্রিড ধানের বীজ ও ২০ কেজি সার। এ সব দেয়া হয় ৬ শ চাষির মধ্যে। আর ১৮ শ চাষির মধ্যে দেয়া হয়,৫ কেজি উফশি ধানের বীজ ও সম পরিমাণ সার।

এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১ শ ৮৯ হেক্টর জমি। যা গেল বছরের তুলনায় ৩৯ হেক্টর বেশি। স্যারের দাম ও সরবরাহ নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তিনি বলেন,স্যারের কোন ঘাটতি নাই। চাষিরা তাদের চাহিদা মোতাবেক সার পাবেন। আর দাম নিয়ে কোন অভিযোগ জানা নাই। তবে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।




আলমডাঙ্গায় সেতু নির্মাণের দাবি থাকা সত্ত্বেও ৫০ বছরে সুফল মেলেনি

একটি সেতুর অপেক্ষায় কয়েক দশক পার করেছেন মনাকষা-এলাহীনগরসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ। এখন সাঁকোই ভরসা তাঁদের। নিজেদের বানানো সেই সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তাঁরা। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয় তাঁদের।

স্থানীয়রা জানান, বিগত ১৯৭২ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের খাল খনন করা হয় উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের মনাকষা ও এলাহীনগর গ্রামের মধ্য দিয়ে। এর ফলে পাশাপাশি অবস্থানরত দুটি গ্রাম আলাদা হয়ে যায়। সেই সময় মনাকষা গ্রামে তিন রাস্তার মোড়ে সাপ্তাহিক কাঁচাবাজার থাকায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি থাকা সত্ত্বেও ৫০ বছরে সুফল মেলেনি। ফলে মনাকষা, এলাহীনগর, হাড়গাড়ী, সুকচা ও বাজিতপুরসহ আশপাশের অনেক অঞ্চলের মানুষের কাছে আধা কিলোমিটার যাতায়াতের রাস্তা এখন হয়ে গেছে ২-৩ কিলোমিটার। সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। তাদের ৫ মিনিটের রাস্তা পারি দিতে লাগে আধা ঘণ্টারও বেশি। তবে দূরত্বের চেয়ে বেশি সমস্যা নির্জন মাঠের নিরাপত্তাহীনতা। ফলে অনেক অভিভাবক তাঁদের মেয়ের পড়া বন্ধ করে দিয়ে বাল্যবিয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে হাড়গাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জান্নাতুন নাহার অ্যানির সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার মেয়ে পাইকপাড়া জন-কল্যাণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। একটি সেতুর অভাবে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে পায়ে হেটে তাকে স্কুলে যেতে হয়। পথে অনেক বখাটে ছেলেরা উত্যক্ত করে। সেকারণে বাড়ির কাজ শেষে মেয়েকে নিয়ে ছুটতে হয় স্কুলের পথে।

এলাহীনগর গ্রামের এক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী সোনিয়া আর্ফিন তন্নী বলেন, বর্ষার সময় স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হলেও ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পাড় হয়ে যেতে হয়। বৃষ্টির দিনে সড়কে কাদাঁ-মাটিতে জামাকাপড় নোংরা হয়ে যায়। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।

পাইকপাড়া জনকল্যাণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো, রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাস্তা খারাপের কারণে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে চায় না। আবার আসতেও বিলম্ব হয়। তবে সবচেয়ে ভয়ের বিষয় ওই রাস্তায় ঝোপজঙ্গল রয়েছে। বখাটেরা প্রায়ই মেয়েদের বিরক্ত করে। আমি গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সমস্যার সাময়িক সমাধান দিতেই একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু এটা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে একটা সেতু এপার- ওপার মানুষের মাঝে দারুণ সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে। দিতে পারে সব সমস্যার সমাধান।’
কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক মিকার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আপাতত বাঁশের সাঁকো বানানো হয়েছে। তবে সেটাও ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ বাচ্চা ও বৃদ্ধদের জন্য সাঁকো পারাপার ঝুঁকির। আমাদের একটা সেতু খুবই দরকার।’

চুয়াডাঙ্গা প্রধান প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, আপাতত আমাদের কোন বাজেট নাই। তবে ব্রিজ অথবা ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো। তিনি আরো বলেন, সেতু মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ আমরা যে বরাদ্দ পেয়ে থাকি, তা দিয়ে এ রকম বড় সেতু তৈরি করা সম্ভব নয়।




আলমডাঙ্গায় নারী ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলার অভিযোগ

আলমডাঙ্গার শ্যামপুর গ্রামের এক নারী ইউপি সদস্যের বাড়িতে নির্বাচন পরবর্ত্তী হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোকসানা খাতুন নামের ওই নারী ইউপি সদস্য এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমারি ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ৯ জন ইউপি সদস্য বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনি প্রচার প্রচারণা করেন। নির্বাচনে শ্যামপুর গ্রামের মহিলা ইউপি সদস্য রোকসানাসহ কয়েকজন এম.এ রাজ্জাক খান রাজের ফ্রিজ প্রতিকের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এদিকে নির্বাচনের পর নৌকার সমর্থকরা নৌকার প্রতিকের বিপক্ষে ভোট করায় তর্কাতর্কিসহ তাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে তারা গত শুক্রবার রাতে ওই নারীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় নারী ইউপি সদস্য রোকসানা খাতুন ও তার স্বামী রাশিদুল ব্যক্তিগত কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত মোটরসাইকেলের উপর থেকেও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করে। এতে রোকসানা খাতুন ও রাশিদুল আহত হয়। এছাড়া নারী সদস্য ও তার স্বামীকে অভিযুক্তরা মোবাইলে ও বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি প্রদান অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে উপজেলার কুমারি ইউনিয়নের গোপিবল্লভপুর গ্রামের মৃত গোপালের ছেলে টুটুল (৪৫), মৃত রমজান মন্ডলের ছেলে রহমত আলী (৪০), মৃত আজিবর রহমানের ছেলে সোহেল (৪০), মৃত খোদা বক্সের ছেলে জাহাঙ্গীর (৪৬)সহ আরও ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।




মুজিবনগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

মুজিবনগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে আনন্দবাস গ্রামের আহত সাবেক ইউপি সদস্য ফেরদৌস আলী মেনতা।
আজ শনিবার দুপুরে মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস বাজারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফেরদৌস আলী মেনতা তার বক্তব্যে বলেন, মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেন বিজয় লাভের পর আমরা স্থানীয় নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের সাথে নিয়ে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু করি।আনন্দ মিছিলটি স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের সমর্থক মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে পৌঁছালে সেখানে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে অবস্থান নেয়ে তাদের কর্মীরা। আমরা মিছিলটি শান্তিপূর্ণ ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলি। মিছিলের অধিকাংশ লোকজন চলে যাওয়ার পর জিয়া বিশ্বাস আমাকে ডেকে আমার গলা চেপে ধরে এসময় জয়নাল নামের একজন হাতুড়ি ও রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। জিয়া বিশ্বাস ও তার ছেলে আমাকে কিলঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে চলে যাওয়ার পর তাদের ঘরের ছাদের উপর থেকে মিছিলে অংশ নেওয়া আমাদের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে বৃষ্টির মত ইট পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ ফায়ার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় মিছিলে অংশ নেয়া অসংখ্য কর্মী জখম হয়। এখনও আমাদের লোকজন চিকিৎসাধীন আছে। পরিকল্পিত ভাবে এই সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন‍্যদের মধ‍্যে উপস্হিত ছিলেন, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা, বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মধু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব আইয়ুব হোসেনসহ আনন্দবাস গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।