মেহেরপুরে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে ট্রাক প্রতীকের জনসমুদ্র

মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এমপি  প্রফেসর আবদুল মান্নানের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে মেহেরপুর কোর্ট মোড়ে থেকে র‍্যালিটি বের হয়ে মেহেরপুর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কাথুলি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয় এবং পরে সেখানে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

র‍্যালি উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর আবদুল মান্নান।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. মিয়াজান আলী, মেহেরপুর জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান (ছোট), বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি প্রফেসর হাসানুজ্জামান মালেক, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোখলেসুর রহমান খোকন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক এম এ এস ইমন, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশান, মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আ খ ম হারুন ইমতিয়াজ বিন জুয়েল, মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী,সদর থানা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, মেহেরপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সদর থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, মেহেরপুর পৌর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শহিদুজ্জামান সুইট, মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মেহেরপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল রানা, মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান মফিজ, মেহেরপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটন, বুড়িপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম রেজা, মেহেরপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ সহ আওয়ামী লীগ, মেহেরপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাভলী ইয়াসমিন, মেহেরপুর মহিলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রেহেনা মান্নান, সপুরা খাতুন সহ মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




যা আছে মাহির নির্বাচনি ইশতেহারে

নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন রাজশাহী-১ আসন (গোদাগাড়ী-তানোর) থেকে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করা চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। ১৭ দফা উন্নয়নের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন এই অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারে তিনি ইশতেহার ঘোষণা করেন।

মাহির ১৭ দফা ইশতেহারে যা যা রয়েছে-

১. সকল শ্রেণি-পেশা, ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে সকলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।

২. গোদাগাড়ী-তানোরে রাজশাহী অঞ্চলের মধ্যে প্রথম বৃহৎ আকারে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ঘরে ঘরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

৩. গোদাগাড়ী-তানোর কৃষিপ্রধান একটি অঞ্চল। এই অঞ্চলের মানুষ প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও সঠিক সংরক্ষণের অভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, সবজি ও ফল সংরক্ষণে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা এবং কৃষিপণ্য রপ্তানিমুখী করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৪. কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ সরবরাহের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এর সুবিধা প্রত্যেক কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে।

৫. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করা হবে।

৬. ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা।

৭. গোদাগাড়ী-তানোরে শতভাগ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা।

৮. নারীর ক্ষমতায়নে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ।

৯. স্কুল-কলেজ-মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গঠনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। গোদাগাড়ী-তানোরে দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বৃহৎ আকারে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ।

১০. তরুণ ও নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে ও প্রশিক্ষণ প্রদানপূর্বক আউটসোর্সিং, আত্মকর্মসংস্থান, ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিপূর্বক বিভিন্ন পন্থায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারি/বেসরকারি উদ্যোগে আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান।

১১. অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়নপূর্বক প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ সকল যোগাযোগ অবকাঠামো সংস্কার, মেরামত ও নির্মাণের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা।

১২. কার্যকর নদী ব্যবস্থাপনা ও খননের মাধ্যমে নৌ-রুট চালু করা।

১৩. গোদাগাড়ী-তানোরের বিভিন্ন স্থানে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করা ও শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা।

১৪. মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।

১৫. গোদাগাড়ী-তানোরের অন্তর্গত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিসহ সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রয়োজন অনুযায়ী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, চিকিৎসক নিয়োগ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, টেকনোলজিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার গুণগত পরিবর্তন।

১৬. কৃষি সেচের সহজলভ্য করণের লক্ষ্যে গভীর নলকূপ স্থাপনসহ সেচ সমস্যা সমাধানে সেচ ব্যবস্থায় ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়ন।

১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-বাণিজ্য বন্ধ করা হবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহি। এই আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আবারও দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। ওমর ফারুক চৌধুরী ও মাহিয়া মাহি ছাড়াও তার আসনে আরও ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন




জামিন পেলেন ঝিনাইদহ ১ আসনের নৌকার প্রার্থী

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়েরকৃত ২ টি মামলায় জামিন পেয়েছেন ঝিনাইদহ ১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাই এমপি।

বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের বিচারক বৈজয়ন্ত বিশ্বাসের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করা হয়।

একই মামলার অপর দুই আসামী শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম ও সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন।
এর আগে বুধবার তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় এমপি আব্দুল হাই, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম ও চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

গত ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তায়জুল ইসলাম বাদী হয়ে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামীপক্ষের আইনজীবি শামসুজ্জামান তুহিন বলেন, আমার মক্কেলদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিলো। আদালতে তা উপস্থাপন করার পর বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।




ঝিনাইদহ-২ আসনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রচারণা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ঝিনাইদহের ৪ টি আসনে নির্বাচনী প্রচারণা ততই বাড়ছে। ঝিনাইদহ-২ আসনে লাঙ্গল প্রতিকে ভোট চাইলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মাতা শেফালি রহমান, শাশুড়ী শাহীন আরা হক ও স্ত্রী এ্যাডভোকেট নাসরিন সুলতানা লিজা। আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণা জোরেসোরেই চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে ঝিনাইদহ-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত মাহফুজুর রহমান এর মাতা, শাশুড়ী ও তার স্ত্রী লিজা হরিণাকুন্ডু উপজেলা শহরের হল বাজার এলাকায় নারী ভোটারদের সাথে গণসংযোগ করেন। সেসময় ভোটারদের মাঝে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দেন। আগামী ৭ জানুয়ারি লাঙ্গল প্রতিকে ভোট প্রার্থনা করেন। এছাড়াও তিনি দিনভর হরিণাকুন্ডু উপজেলার শিতলী, চারাতলা, ভালকী, কাপাশহাটিয়ার নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে গণসংযোগ করেন। রাতে ঝিনাইদহ শহরের পৌর এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে গণসংযোগ করবেন বলে জানান তিনি।




স্টাম্পিং ও কনকাশন বদলির নিয়মে পরিবর্তন আনলো আইসিসি

ক্রিকেটের দুইটি নিয়মে পরিবর্তন এনেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। পরিবর্তন হওয়া তিন নিয়মের কারণে কড়াকড়ির মুখে ফেলে দিতে পারে ফিল্ডিং করা দলকে। ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কনকাশন নিয়মে আনা হয়েছে এই পরিবর্তনগুলো।

স্টাম্পিং আউটের আবেদনে ক্যাচ আউট হয়েছে কি না, সেই পরীক্ষা করা হবে না। ক্যাচের জন্য ফিল্ডিং করা দলকে আলাদা করে রিভিউ নিতে হবে। একইভাবে কোনো বোলার ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়লেও, তার পরিবর্তে নামা ক্রিকেটারের বল করার ক্ষেত্রে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আর মাঠে চোটের চিকিৎসার জন্য কোনো দল সর্বোচ্চ ৪ মিনিট সময় পাবে বলেও নতুন এই নিয়মে জানানো হয়।

ক্রিকেটভিত্তিক গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এবার থেকে স্টাম্পিং আউটের আবেদন করলে ব্যাটার স্টাম্পিং আউট হয়েছেন কি না সেটিই শুধু দেখা হবে। উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচের আবেদন করলে দ্বিতীয়বারের জন্য রিভিউ নিতে হবে ফিল্ডিং করা দলকে।

কনকাশন নিয়মেও পরিবর্তন এনেছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ক্রিকেটারকে যদি কনকাশন বদলি হিসেবে খেলাতে হয়, তাহলে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ক্রিকেটারের বোলিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে তিনিও বল করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে এটাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে কোনো ক্রিকেটার চোট পেলে মাঠে ৪ মিনিটের বেশি চিকিৎসা নিতে পারবেন না।

সূত্র: ইত্তেফাক




কোটি টাকা বরাদ্দের কাজ, শুরুতেই অনিয়ম

মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড় থেকে নতুন বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দে এইচবিবি নির্মাণের শুরুতেই নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই কাজের প্রকল্পই গ্রহণ করা হয়েছে লুটপাটের জন্য এ অভিযোগ স্থানীয়দের। মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলী সাব্বির ও ঠিকাদার আব্দুস সালাম বাঁধণের যোগসাজশে অনিয়ম করে এ প্রকল্প শেষ করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড় থেকে চুয়াডাঙ্গা সড়কে দুই পাশে এক হাজার ৯৫০ মিটার এইচবিবি করণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ঠিকাদারের দায়িত্ব পেয়েছেন মের্সাস আমিনুলহক এন্টার প্রাইজ। তবে কাজটি করছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন। প্রকল্পে ১২ লাখ ১২ হাজার ৯৭৫ টাকা মাটি, ১২ লাখ ৪ হাজার ৩৬৫ টাকা বালি এবং এক নম্বর ইট বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ১৬৮ টাকা। সবমিলিয়ে ৯৭ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬৫ টাকা।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সড়কে ডান পাশের ৯৫০ মিটার এইববিবি করণের কাজ প্রায় শেষের পথে। গড়ে ৮ফুট চওড়া হওয়ার কথা থাকলে পুরো প্রকল্পের অধিকাংশ স্থানে ৪ থেকে ৬ ফুট চওড়া পাওয়া গেছে। ১২ লাখ টাকার মাটি ধরা হলেও সড়কের ডান পাশের কাজ প্রায় শেষ হলেও সেখানে এক টাকারও মাটি দেওয়া হয়নি। রোলিং করে ভালো ভাবে সাব গ্রেড করা হয়নি। এমনকি চাহিদামত পানি দিয়ে কিউরিংও করা হয়নি, ফলে যেটুক কাজ হয়েছে অধিকাংশ স্থান দেবে গিয়েছে। দরপত্রে এক নম্বর ইট ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও নিম্মমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৬ ইঞ্চি গভির করে খনন করে ৬ ইঞ্চি বালি দিয়ে ভরাট করার কথা দরপত্রে থাকলেও অধিকাংশ স্থানে কম গভির করে খনন করা হয়েছে।

সড়কে কর্মরত নির্মাণ শ্রমিক মিলন মিয়া জানান, “এখানে মাটি কেটে যা পাওয়া গেছে সেই মাটি দিয়েই পুরণ করা হয়েছে। নতুন করে কোন মাটি দেওয়া হয়নি”।

মেহেরপুর পশু হাটের মাংস ব্যবসায়ী রতন আলী বলেন, রাস্তার কাজ একেবারেই ভালো হয়নি। আগের রাস্তায় ভালো ছিল । এখন যে রাস্তা হয়েছে সেটা দুদিনে নষ্ট হয়ে যাবে।

অপর এক মাংস ব্যবসায়ী লালন বলেন, “এখানে মাত্র একদিনের রাস্তার কাজ শেষ করেছে ঠিকাদার। ইট বিছানোর পর কিউরিং করা হয়নি। মাত্র এক ট্রাক বালি এনে সমস্ত রাস্তায় ছিটানো হয়েছে। আপনারা গরু হাটের সামনে গেলে দেখতে পাবেন রাস্তায় বিছানো সকল ইট দেবে গেছে”।

এছাড়াও স্থানীয় ফার্নিচার ব্যবসায়ী হৃদয়, জাহিদ ও কাজিম প্রতিবেদকের কাছে এসে রাস্তার কাজ নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট রাসেল হোসেন বলেন, “আমার বাড়ি এই রাস্তার পাশেই। কাজ চলার সময় আমি কয়েকবার বাঁধা দিয়েছি, সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য। এখন পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে কেউ প্রতিবাদ করতে চায় না। সবাই ভাবে সরকারি টাকা যা হচ্ছে হোক। এই রাস্তা কোন জায়গায় আট ফিট, কোন জায়গায় ছয় ফিট আবার কোথাও বা তিন ফিট খোড়া হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তা দেবে গেছে। সরকার উন্নয়নের জন্য টাকা দিচ্ছে কিন্তু এভাবেই অপচয় করা হচ্ছে”।

তবে ঠিকাদার আব্দুস সালাম বাঁধনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এসএমএস দেওয়া হলে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমার কাজ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি, যদি কোন ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে সেই দায় আমার, আমি কাজটি সিডিউল মোতাবেক সম্পূর্ণ করে বিল সাবমিট করব”।

প্রকল্পটির দায়িত্ব রয়েছেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাব্বির হোসেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, “কাজ এখনো শেষ হয়নি। সিডিউল মোতাবেক কাজ দেখে নেওয়া হচ্ছে। যেখানে দেবে যাচ্ছে সেখানে পুণরায় ঠিক করিয়ে নেওয়া হবে”।

মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “কাজ চলমান রয়েছে। কাজ বুঝে নেওয়ার আগে সিড্উিল অনুযায়ী কাজ বুঝে নেওয়া হবে। মাটির বিষয়ে তিনি বলেন, মাটি না দিলে ঠিকাদারকে মাটির বিল দেওয়া হবে না”।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুষ্টিয়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, “অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি দেখবো”।




চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইন্সট্রাক্টর মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষাণার্থীদের কাছ থেকে পাশ করিয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের ফেল করানোর ভীতি দেখিয়ে জনপ্রতি ২ হাজার ৫ শ টাকা করে নিয়েছেন তিনি।

ঘটনাটি একটি স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর জানাজানি হয়। এর আগে সোমবার রাতে ওই সংবাদকর্মীর অফিসে গিয়ে সংবাদ বন্ধের জন্য ঘুষ দিতে চাইলে সংবাদকর্মী না নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে মঙ্গলবার তাকে হুমকি দেন মনিরুজ্জামান। সংবাদ প্রকাশের পর মনিরুজ্জামান কূল কিনারা না পেয়ে অল্প কয়েকজন অকৃতকার্য প্রশিক্ষণার্থীকে ফুসলিয়ে ঝটিকা মানববন্ধন করেছেন। তবে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ বলছেন, ইতোপূর্বেও তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ছিল। বিষয়টিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান প্রথমে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও পরে বিষয়টিই অস্বীকার করছেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিভিন্ন ট্রেডে নিয়মিত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ঝঊওচ) এর আওতায় চুয়াডাঙ্গা টিটিসিতে অন্যান্য প্রশিক্ষণের সাথে মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইনটেন্যান্স প্রশিক্ষণও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেইপ প্রকল্পের আওতায় এই প্রশিক্ষণের বেশ কয়েকটি ব্যাচ প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। সেইপ প্রকল্পের চুক্তিভিত্তিক ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর হিসেবে চুয়াডাঙ্গা টিটিসির সামনেই ভিমরুল্লাহ গ্রামের মো. মনিরুজ্জামান ড্রাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন।

তবে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে চুয়াডাঙ্গা টিটিসিতে তিনি নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেছেন। নিয়ম—কানুনের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো আসা—যাওয়া করেন। তার ভাই তরিকুল ইসলাম লাবলু এই ট্রেডের সহকারী প্রশিক্ষক। দুই ভাই মিলে অনেকটাই ইচ্ছামতো নিয়মের বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তবে প্রশিক্ষণ প্রদানে যেমন ফাঁকি দেন, তার থেকে বেশি নির্ধারিত ড্রাইভিং পরীক্ষার সময়ে তাদের আচরণ বদলায়। প্রশিক্ষণার্থীদের ফেল করানোর নানা রকম হুমকি—ধমকি দিয়ে প্রতি ব্যাচেই তারা নেন মোটা অংকের টাকা। জনপ্রতি আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা বা তার বেশিও নেওয়ার অভিযোগ আছে।

চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, স্কিলস্ ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম এর আওতায় চুয়াডাঙ্গা টিটিসিতে সকাল—বিকেল মিলে মোট চারটি ব্যাচের ৯০ জন প্রশিক্ষণার্থীর পরীক্ষা ছিলো মঙ্গলবার। চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ—এর মাধ্যমে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে পরিক্ষায় অংশ নেওয়া টিটিসির ৮৫ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ৫৯জনই পরিক্ষাতে ফেল করেছেন।

প্রশিক্ষণার্থীদের অভিযোগ, প্রশিক্ষণের বাকি সব ক্লাস ঠিকঠাক হলেও ব্যবহারিক ক্লাসে প্রশিক্ষকরা সময় দেন খুবই কম। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময় থেকেই তারা প্রশিক্ষণার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে নানা ভীতি দেখান। টাকা না দিলে কেউ পাশ করে না, যে টাকা দেবে না, তার দায়িত্ব তার নিজের। এই ধরনের নানা কথায় চাপে রাখেন প্রশিক্ষণার্থীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, ‘শুরু থেকেই মনির স্যার ও তরিকুল স্যার আমাদের কাছে টাকা দাবি করে আসছেন। টাকা না দিলে ফেল করব, তারা আমাদের দায়িত্ব নিবে না, এমনটাই বলা হয়ে থাকে। মনির স্যার তো কখনো কখনো বলে থাকেন, যে টাকা দিবা না, সে পাশও করবা না। প্রশিক্ষণ নিয়ে লাভ নেই। বাড়ি যাও।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, ‘আমার বাড়ি জীবননগর উপজেলায়। আমার আব্বু একজন প্রতিবন্ধী। খুব কষ্টে আমাদের সংসার চলে। যাতায়াত ভাতা দেওয়ায় আমি সেইপ প্রকল্পের এই প্রশিক্ষণে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু দূর থেকে আসা যাওয়ার নানা সমস্যা থাকায় আমি যাতায়াত ভাতার কথা ভেবে চুয়াডাঙ্গায় ম্যাসে উঠেছি। তবে ড্রাইভিং প্রশিক্ষক মনির স্যারের আচরণে আমি খুব টেনশনে ছিলাম। প্রথম থেকেই তিনি পাশ করার জন্য টাকা দাবি করেছিলেন। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়ে আমি স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম, আমার টাকাটা যেন না নেওয়া হয়। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তোমার কোর্স করতে হবে না। তুমি পাশ করবা না। তোমার দায়িত্ব আমার না। শেষ পর্যন্ত আমি অনেক কষ্টে আড়াই হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।’

এদিকে, টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান ও তার ভাই একই ট্রেডের সহকারী প্রশিক্ষক তরিকুল ইসলাম লাবলুর বিরুদ্ধে এর আগের প্রতিটি ব্যাচের প্রশিক্ষাণার্থীদের থেকেও মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যারা দেয়নি, তাদের পাশ করানো হয়নি বলেও জানিয়েছেন পূর্বের ব্যাচের একাধিক প্রশিক্ষণার্থী। এ বিষয়ে স্থানীয় একটি পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করার পর প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা ফেরত দিয়েছেন টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান।

অপরদিকে স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান। ওই পত্রিকা অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে মনিরুজ্জামানের দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থেকে ঘুষ দেওয়ার ভিডিও দেখা যাচ্ছে। তবে ওই সংবাদকর্মী দীর্ঘক্ষণ তাকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করলেও তিনি ওই অফিসেই দাড়িয়ে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ওই সংবাদকর্মী হাত জোড় টাকা না নিয়ে টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামানকে ফেরত পাঠান। ভিডিও ফুটেজে বিষয়টি স্পষ্ট প্রতীয়মান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে অভিযোগ অনেকটাই স্বীকার করে বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের ড্রাইভিংয়ে পাশ করানোর জন্য নিঃস্বার্থ কিছু টাকা নিলেও আমি তা ফেরত দিয়ে দেব।’

অপরদিকে, ঘুষ দিতে ব্যার্থ হয়ে টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান অকৃতকার্য কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থীকে সাথে নিয়ে নিজে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ছোট্ট একটি মানববন্ধন করার চেষ্টা করেন। ওই মানববন্ধনে টিটিসির ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মো. মনিরুজ্জামান টিটিসির অধ্যক্ষের কথায় এসছেন বলে জানালেও টিটিসির অধ্যক্ষ মানববন্ধনের বিষয়টি সম্পূর্ণ জানেন না বলে জানিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মো. মুছাব্বেরুজ্জামান বলেন, আমি মানববন্ধনের বিষয়ে কিছু জানিনা। যদি আমার নাম কেউ করে থাকে, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। টিটিসির অধ্যক্ষ আরও বলেন,‘মনিরুজ্জামান সাহেবের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আমি আগেও পেয়েছি। এবার বিস্তারিত জানার পর বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব। প্রয়োজনে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমার ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী ক্যাম্প করায় ১৩ তারিখ পর্য’ন্ত বন্ধ। তবে অফিস খুললেই এ বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নেবো।

তিনি আরও জানান, ‘গত তিন দিন আগে সেইপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এটি এই চুক্তির সর্বশেষ ব্যাচ। মো. মনিরুজ্জামান ও তার ভাই দুজনেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত। তাদের চুক্তির মেয়াদও এই ব্যাচের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি আইনগত পদক্ষেপ নেব। এটি আমার প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।’ মঙ্গলবারের পরিক্ষায় কতজন পাশ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৮৫জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ২৬ জন পাশ করেছে।

তবে সাবেক ও বর্তমান প্রশিক্ষণার্থীদের দাবি, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার। তারা এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।




২২ প্রিজাইডিং কর্মকতার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আপত্তি

মেহেরপুর এক আসনের ২২ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি উক্ত প্রিজারডিং অফিসারদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী ফলাফল কে প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

গত ২১ ডিসেম্বর প্রফেসর আব্দুল মান্নান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মেহেরপুর বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত কোন উত্তর না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নান। উল্লেখিত প্রিজাইডিং অফিসারগণ বিভিন্ন সময় তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন প্রফেসর আব্দুল মান্নান।

অভিযোগপত্রে আপত্তি জানানো প্রিজাইডিং অফিসাররা হলেন, মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বাংলার ইন্সট্রাক্টর মৌসুমী ঢালী, মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জামাল উদ্দীন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, সড়ক ও জনপথের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো: মিজানুর রহমান, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মোঃ তামিম মাহমুদ প্রান্ত ও মোঃ মেহেদী হাসান, মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আব্দুল মান্নান ও মোহাঃ আলিমুজ্জামান, পিরোজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইদুজ্জামান, মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: ওয়াজেদ আলী, মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী রেজা, মেহেরপুর সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান, আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন, যাদুখালী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা সাঈদ কামাল, সহকারী অধ্যাপক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, এআরবি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক মোঃ এমদাদুল হক, গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল গাফফার, পূবালী ব্যাংক মেহেরপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ও অপারেশন ম্যানেজার মোঃ জসীমউদ্দীন, মেহেরপুর সদর উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার শেখ মোঃ মেহেদী হাসান, পূবালী ব্যাংক মেহেরপুর শাখার সিনিয়র অফিসার মোঃ নাজমুল হোসাইন,এলজিইডির সরকারি প্রকৌশলী সিদ্ধার্থ কুমার কুন্ডু, মহাজনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম, দারিয়াপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ আনারুল ইসলাম ও দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশ্সাক ও রিটার্নিং কর্মকতার ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।




দামুড়হুদায় স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিমের পথসভা

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিমের নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর হাই স্কুল মাঠে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী নূর হাকিমের ঈগল মার্কার জুড়ানপুর ইউনিয়ন নির্বাচনী কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী জাতীয় দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বাংলাদেশ সংসদপত্র পরিষদের মহাসচিব নূর হাকিম। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ এ জনসভায় অংশ নিয়ে গণ জমায়েতের সৃষ্টি করে।

জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ড. জাহাঙ্গীর আলম এসময় তিনি বলেন আপনারা আর কত অবহেলিত থাকবেন? ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জনগণের।

আগামী ৭ জানুয়ারি আপনারা আপনাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করুন, ন্যায় ইনসাফ, শান্তি, শিক্ষা ও আধুনিক জেলা গঠনে ঈগল মার্কায় ভোট দিন। আমাদের প্রার্থী একজন সং নির্ভীক ও ধর্ম পরায়ন ব্যক্তি, সুতরাং আগামী ৭ জানুয়ারি ঈগল মার্কায় ভোট দিয়ে যোগ্য প্রার্থী নূর হাকিম কে জয়যুক্ত করুন।

প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিম বলেন, আজকের জনসমাবেশ দেখে আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমি ও আমার পরিবার মুগ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই জনপদের অবহেলিত মানুষ শিক্ষা স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের রাষ্ট্রীয় সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট করার নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে এলাকার জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতারা জনগণের ভোটে জাতীয় সংসদে আসতে পারেন ও জনগণের সেবা করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীন রাষ্ট্রকে স্মার্ট রাষ্ট্র তৈরি করার এ প্রত্যয় আজ ও আগামীর প্রজন্মের জন্য এই প্রত্যয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলাকে স্মার্ট ও আধুনিক জেলায় রূপান্তর করতে হলে প্রয়োজন বিশ্বমানের একটি হাসপাতাল। এলাকার কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যর পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন কৃষির আধুনিকীকরণ ও একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করন। পাশাপাশি বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজন সময় উপযোগী শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা। যা আমি আমার নির্বাচনের ইশতেহারে রেখেছি। আমি আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমত ও আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাদের সমর্থন ও ভোটে জয়যুক্ত হয়ে এই এলাকার অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে থাকবো এবং সেবার মহিমায় সকলকে নিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী জেলায় রূপান্তর করবো। এই কারণে শেষ বারের মতো আপনাদের দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছি এবং আমার প্রতীক ঈগল মার্কায় ভোট প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি।

এসব বিভিন্ন ইউনিয়ন ওয়ার্ড ও গ্রাম থেকে আসা আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্র লীগের নেতাকর্মী ও ঈগল প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।




লাইসেন্স নবায়ন করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে কোটচাঁদপুরের দলিল লেখক সমিতি

লাইসেন্স নবায়ন করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে কোটচাঁদপুরের দলিল লেখক সমিতি। বন্ধ করেছেন দলিল লেখা। এতে করে বে-কায়দায় পড়েছেন জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা মানুষেরা।

গতকাল বুধবার থেকে এ আন্দোলন করছেন তারা। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, দলিল লেখক প্রভাষ কুমার নন্দি। যার লাইসেন্স নাম্বার ১৫৫/১৭। এ লাইসেন্সে সে মহেশপুরে দলিল লেখক হিসেবে দলিল লিখতেন। হঠাৎ মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন সে ।

এরপর গেল ২০২২ সালের দিকে প্রভাষ লাইসেন্সটি স্থানান্তরের জন্য জেলা অফিসে আবেদন করেন। পরে তা যাচাই-বাছাই হয়ে কোটচাঁদপুর অফিসে দলিল লেখার অনুমতি প্রদান করেন সংশ্লিষ্ট অফিস। এ বছর লাইসেন্স নবায়নের জন্য জেলা অফিসে আবেদন করেন প্রভাষ কুমার নন্দি।

বিষয়টি বুধবার সকালে জানতে পারেন সমিতির সদস্যরা। এরপর সমিতির নেতৃবৃন্দরা যান সাব-রেজিষ্ট্রি কর্মকর্তার নিকট। বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল বলেন,সে পঙ্গু মানুষ হওয়ায় গেল এক বছর মানবিক ভাবে সহায়তা করে ছিলাম। তাঁর লাইসেন্স যেখানে সে ওইখানে গিয়ে কাজ করুক। তাতে আমাদের আপত্তি নাই।

সে মহেশপুরের দলিল লেখক হয়ে, এখানে লাইসেন্স নবায়ন করে কাজ করবে,সেটা হতে পারে না। যতদিন এ সমস্যার সমাধান না হবে আমরা ততদিন দলিল লেখা বন্ধ রাখবো।

জমি রেজিষ্ট্র করতে আসা ভুক্তভোগি মুনসুর আলী বলেন,সকালে এসেছি জমি রেজিষ্ট্রি করতে। তারা কাগজ পত্র টাকা পয়সা নেওয়ার পর এখন বলছে জমি রেজিষ্ট্রি হবে না। তবে কি কারনে হবে না,তা আমাদের বলছে না। এতে করে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।

ফাজিলপুর গ্রামের জমি ক্রেতা হোসেন আলী বলেন,রেজিষ্ট্রি করার সব প্রস্তুতি শেষ করে, এখন বলছে রেজিষ্ট্রি হবে না। কারন জানতে চাইলও তারা আমাদের বলছে না। আমরা এখন চরম বিপাকে পড়েছি।

দলিল লেখক প্রভাষ কুমার নন্দি বলেন,আমার লাইসেন্স নাম্বার ১৫৫/২০১৭। এ লাইসেন্সে আমি মহেশপুরে দলিল লেখতাম। দূর্ঘনায় আমি এক পা হারিয়ে যায়। আমি পঙ্গুত্ব বরণ করি। এরপর আমি লাইসেন্স স্থানান্তর করার জন্য,জেলা কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করেছিলাম।

সে অনুযায়ী লাইসেন্সটি ওই বছরই পরিবর্তন হয়ে আসে। সে থেকে আমি কোটচাঁদপুর অফিসের আওতায় বৈধ্য লেখক। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছন। ইতোমধ্যে ওই লেখকরা আমার বিরুদ্ধে একটা মামলাও করেছেন।

কোটচাঁদপুর সাব-রেজিস্টার অফিসের সাব-রেজিস্টার (অতিরিক্ত) মেহেদী আল ইসলাম বলেন, প্রভাষ কুমার নন্দীর লাইসেন্সের অভিযোগে নিয়ে দলিল লেখকরা দলিল লেখা বন্ধ করে দিয়েছেন শুনেছি। তারা বিষয়টি নিয়ে আমার কাছেও এসেছিল। অভিযোগ জানিয়েছেন।

তবে এটা বদলি বা পরিবর্তনের দায়িত্ব আমার না। আমার কাজ বছর শেষে যাদের লাইসেন্স আছে, তাদের লাইসেন্স রিনু করার সহায়তা করা। তাদের কাগজপত্র দেখে শুনে, জেলায় পাঠিয়ে দেয়া। জেলা কর্মকর্তা তা যাচাই-বাছাই করেন।

এরপর কার লাইসেন্স কোথায় যাবে। কোনটা থাকবে, কোনটা বাতিল হবে তা সেটা তিনি নির্ধারন করা। এখানে আমার কোন কাজ নাই।

তিনি বলেন, এরপরও আমি এখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি। আমার কাজ জমি রেজিষ্ট্রি করা। এর জন্য উভয় পক্ষকে ডেকে বসবো। মেটানো সম্ভব হলে তা করবো।

এতে করে জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা মানুষেরা হয়রানি হচ্ছে কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,তা একটু হচ্ছে। তবে আজ এখনো কোন জমি রেজিষ্ট্রির জন্য জমা পড়েনি। তবে শুনেছি ১০ টি দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য প্রস্তুত হয়েছে।