কুষ্টিয়ায় পাসপোর্ট করতে এসে গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা যুবক

কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মোঃ সবুজ নামে নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তথ্য গোপন করে পাসপোর্ট করার চেষ্টার অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

জানা যায়, কুষ্টিয়া পৌলসভার ১৬ নং ওয়ার্ড (ঢাকা ঝালুপাড়া) ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে আসা মোঃ সবুজ নামে এক রোহিঙ্গাকে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত মোঃ সবুজ, তার পিতার নাম মোঃ খেদের আলী ও মাতা মরিয়ম বেগম লিখেছেন এবং সেইসাথে কুষ্টিয়ার পৌর ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু জাহিদ সঞ্জুর সুপারিশক্রমে পৌরসভা থেকে নাগরিক সনদ প্রদান হয়।

কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বুধবার সোয়া ১টার দিকে সবুজ আবেদন পত্র জমা দেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে নিজের ভোটার আইডি কার্ড, নাগরিক সনদ দাখিল করেন। পরে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকতা হাসান আলীর আবেদনকারীকে সন্দেহ হয়। এরপরই তদন্তের মাধ্যমে সনাক্ত করে তাত্ক্ষণিক রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।




মেহেরপুরে নাশকতার অভিযোগে ২ জামায়াত নেতা আটক

নাশকতা মামলায় মেহেরপুরে জামায়াত ইসলামের পৌর শাখার দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোরে মেহেরপুর সদর উপজেলার কোলা গ্রামের কড়াইতলা নামক স্থানে জামায়েত ইসলামের ঝটিকা মিছিল করে ফেরার পথে শহরের কোর্ট মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মেহেরপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মির্জা আজমের ছেলে ও পৌর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান (৫০) ও মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের বড় মসজিদ পাড়ার ইসলাম শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩২)।

জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে। আদালতে সোপর্দ করার মাধ্যমে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।




নির্বাচনের আগে ফেসবুকের মিথ্যাচার কী বন্ধ হবে?

কয়েকটি উদাহরণ দেবো। সবগুলোই গত ২৮শে অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের সরকার বিরোধী আন্দোলন ঘিরে। ২৮ শে অক্টোবরের দুই দিন আগে বিএনপির নামে একটি বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে “আপনারা যারা ঢাকায় আসবেন পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসবেন” বিজ্ঞপ্তিটি কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমেও প্রচার হলো। ২৮শে অক্টোবরের পর বিএনপি’র মিডিয়া সেল এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বলা হয়, আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক স্বীকৃত বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারও সম্প্রতি ২৮শে অক্টোবর ঘিরে কী পরিমাণ গুজব ছড়ানো হয়েছিল এর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে । সেখানেও পরিবার থেকে বিদায় নেয়ার গুজবটি প্রথম দিকেই আছে। এর আগে ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়, যাতে দেখা যাচ্ছিল একটি ট্রেন উপচেপড়া যাত্রীসমেত চলছে। বলা হয়- বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে মানুষের ঢাকায় আসছে। রিউমর স্ক্যানার বলছে , ২০২২ সালের অক্টোবরে বিএনপির খুলনার সমাবেশে জনগণের যোগদানের ছবি হিসাবে এই ভিডিওটিই প্রচার হয়েছিল। এটি আসলে ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমা শেষে মুসল্লিদের বাড়ি ফেরার দৃশ্য।

২৭ অক্টোবর সকালে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষর করা প্রেস বিজ্ঞপ্তির আদেলে একটি ছবি ছড়ায়। যেখানে বলা হয়- ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে ঢাকায় পূর্বঘোষিত শান্তি সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশের জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অনুরোধ করা হয়। পরে বিপ্লব বড়ুয়া নিজেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন যে বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া৷ ঢাকার সমাবেশ স্থগিত হয়নি।

২৭ অক্টোবর রাতে ইউটিউবের একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করা হয়, পুলিশের বেড়ি ভেঙে রাতের শাপলা চত্বর দখলে নিলো জামায়াত- শিবিরের নেতা কর্মীরা। পরে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটি যাচাই করে দেখতে পায়, এটি সাম্প্রতিক কোনো দৃশ্য নয়। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিলের একটি ভিডিও। কিন্তু যতক্ষণে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ হয়, ততক্ষণে প্রায় ১২ লাখেরও বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখেছে। এরকম শত শত মিথ্যা তথ্য ছড়ায় ২৮ অক্টোবর ঘিরে। এর বেশিরভাগই ছিল সরকারবিরোধী এবং সহিংসতার জন্যে উস্কানীমূলক।

এখানে তো মাত্র কয়েকটা উদাহরণ দেয়া হলো। এরই মধ্যে সেদিনের সবগুজব সত্য হয়ে মানুষের সামনে আসছে। এখন এনিয়ে হাসাহাসি হচ্ছে। যে কেউ গুগলের কল্যাণে একটা একটা করে সেসব ঘটনা দেখে নিতে পারেন। আজ ঘটনার ২০দিন পর আমরা সেই ভুল তথ্য বিশ্লেষণে বসছি। আজ আমরা হাসছি, অথচ ওই দিনের কথা মনে করেন, কী ভয়বহ আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গেছে! আমার ব্যক্তিগত মত, ওই ভয়াবহ দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে পাওয়া বেশিরভাগ তথ্যই ভুল। যারা মাঠে ছিলেন তারাও ভুল তথ্যের ওপর ভর করে ছিলেন। কেউ সহিংসতা করছিলেন, কেউ সহিংসতার স্বীকার হচ্ছিলেন। পাঠক একবার ভাবুন, এখন যত বিশ্লেষণই করি, ওই দিন নিহত দুইজনকে আমরা ফেরত পাবো?

আসলে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিটাই এমন। একদল মিথ্যাবাদী ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতি সবসময় উৎতপ্ত করছেন। “সবসময়” শব্দটি আমি আসলে ইচ্ছে করেই ব্যবহার করছি। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মিথ্যা বিষয়টি আমাদের জীবন যাপনের সঙ্গে মিশে গেছে। অনেকেই হয়তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইতিবাচক দিক সামনে আনতে চাইবেন। আমিও চাই, কিন্তু পারি না। কারণ এই দেখুন, রিউমর স্কানারই ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ইন্টারনেটে প্রচারিত ১০৮২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ৭৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত। এই আট মাসে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ টি ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে।

সংসদ নির্বাচন নিয়ে ৭৪টি ভুল তথ্য প্রচারই আমার এই লেখার উদ্দেশ্য। পাঠক খেয়াল করুন ওই সংস্থাটি
২০২২ সালে ১৪০০টি ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদন দেয়। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ছিল ৮২টি, ফেব্রুয়ারিতে ৯০টি, মার্চে ১১৯টি, এপ্রিলে ৯০টি, মে মাসে ৭২টি, জুন মাসে ১৩০টি, জুলাইয়ে ১০৫টি, আগস্টে ১৫০টি, সেপ্টেম্বরে ১৩৩টি, অক্টোবরে ১৩০টি, নভেম্বরে ১৪২টি এবং ডিসেম্বর মাসে ১৫৭টি প্রতিবেদন। আমি লেখায় একটি প্রতিষ্ঠানের কথাই উল্লেখ করছি। আমার জানা মতে, সরকারি বেসরকারি আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্ট চেক করে। কিন্তু রিউমর স্কানার প্রকাশ করে। যাই হোক অন্যরা তালিকা প্রকাশ করলে ভুল তথ্য প্রচারের তালিকাটা হয়তো দীর্ঘ হতো।

যদিও ভুলের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ আমার লক্ষ্য নয়। গুজব যে কত নিয়মিত সেটা পরিস্কার করা। এর পর আমার প্রশ্ন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কী একটিও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা যাবে? নির্বাচনের মত সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে কী ২৮ শে নভেম্বরের মত অবস্থা করা যাবে? কিম্বা ২৮ নভেম্বরের মত পরিস্থিতির আশঙ্কা সত্বেও কী সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? ধরা যাক সহিংসতা হলো না। কিন্তু গুজববাজরা এরকমই অ্যাকটিভ থাকলো। তাতে কী নির্বাচনে কোন ভদ্রলোক তার কাঙ্ক্ষিত ফলটি পাবেন?

এবছর আগস্ট মাসের প্রথমদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অপপ্রচার রোধে ফেসবুকের সহায়তা চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সঙ্গে একটা বৈঠকও হয় ইসির। সে সময় ইসি থেকে বলা হয়েছিল, সংসদ নির্বাচনের আগে ভুল তথ্য বা মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধে সহায়তা করতে চায় ফেসবুক। তফসিল ঘোষণার পর তারা ইসির সঙ্গে কাজ করবে। বৈঠকে ছিলেন ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার বাংলাদেশ বিষয়ক হেড অব পাবলিক পলিসি রুজান সারওয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। তারা জানায়, অপপ্রচার, ঘৃণামূলক মন্তব্য এবং সাম্প্রদায়িকতা লঙ্ঘন হয়, এমন ধরনের কনটেন্ট মুছে সহযোগিতা করা যেতে পারে।

আমার ব্যক্তিগত মত, ফেসবুকের টিম যেটুকু করতে চেয়েছে এটুকু করলেই অনেক বড় কাজ করা হবে। কারণ আমরা আসলেই গুজবে ভাসছি। গণমাধ্যমগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে। গুজববাজদের মত করে চলতে না চাওয়ায় তারাও ভয়াবহ গুজবের স্বীকার। ২৮শে অক্টোবর সরকার বিরোধীদের হাতে অকারণে মার খেয়েছে ২৮ জন সাংবাদিক। একদিকে তাদের নাম ব্যবহার গুজব ছড়ানো হচ্ছে, আরেকদিকে রাস্তায় সরকারবিরোধীদের রোষে পড়ছে। এই মুহূর্তে গুজবের মুখে সাংবাদিক, গুজবের মুখে রাজনীতিক। কেউ কাউকে রক্ষা করতে পারছে না।

কিন্তু নির্বাচনের তফসিল হয়ে গেছে, এখনও গুজবের ফেসবুকের কোন কাজ শুরু করার নাম গন্ধ পাচ্ছি না। নির্বাচন কমিশন বিটে কাজ করেন, এমন কয়েক জন রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও কিছু বলতে পারেন না। আমি নেতিবাচক হতে চাই না। হয়তো অপপ্রচার রোধে শিগগির কাজ শুরু করবে ফেসবুক। বিষয়টি হয়তো এখনও জনায়নি ইসি। কাজ করার কথা যেহেতু বলেছেন, করবেন নিশ্চয়ই। কিন্তু আরেক শক্তিশালী সামাজিক মাধ্যম ইউটিউব। তাদের সঙ্গে এমন কোন বৈঠকের খবরও কিন্তু পাইনি। তাদেরকেও নির্বাচনের আগে আমাদের অপপ্রচার রোধে যুক্ত করা দরকার।

লেখক: গণমাধ্যম কর্মী




গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

গাংনী মহিলা ডিগ্রী কলেজে ২০২৩ সালের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ  বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় মহিলা ডিগ্রী কলেজ মাঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পতাকা উত্তোলন ও বর্ণাঢ্য র‍্যালির মধ্য দিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সুচনা করা হয়।

প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে ছিল ব্যাডমিন্টন, চকলেট দৌড়, বর্শা নিক্ষেপ, সুই ‌সুতা পড়ানো, লৌহ গোলক নিক্ষেপ, চাকতি নিক্ষেপ, মার্বেল দৌড় এবং কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য হাড়িভাঙ্গা ও পিলো পাসিং।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাংনী মহিলার ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সহকারি অধ্যাপক মনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এম এ এস ইমন।

ক্রিড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ২৬ নভেম্বর রবিবারে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।




যুগপৎ আন্দোলনে নয়, ১০০ আসনে লড়বে যুক্তফ্রন্ট

বিএনপির সঙ্গে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকা কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বাধীন নতুন জোট ‘যুক্তফ্রন্ট’ নির্বাচনে যাওয়ায় ঘোষণা দিয়েছে। তিন দল নিয়ে গড়া এই জোটে আরও রাজনৈতিক দল যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও যুক্তফ্রন্টের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন এই জোট ‘যুক্তফ্রন্ট’ আত্মপ্রকাশ করে। এ জোটে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।

সংবাদ সম্মেলেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, আমরা মাঠে দাবি আদায়ে সফল না হয়ে, বিকল্প পন্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অবদান নিতে চাই। আশা করছি, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’
তিনি বলেন, ‘ আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে যাব। নির্বাচন জয়ী হলে আমরা বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকতে চাইব। বিরোধী দলে থেকে আমরা জনগণের জন্য কাজ করব। জোটের পক্ষ থেকে আমাদের ১০০ আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেটা কম-বেশি হবে।’

বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবেশ নেই’– উল্লেখ মুহাম্মদ ইবরাহিম আরও বলেন, ‘এরকম পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচনে আসতে পারি। সরকারের কাছে আবেদন, সরকার যেন সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের চেষ্টা করে।’ এই মুহূর্তে সংলাপের পরিবেশ তৈরিতে সব পক্ষ যেন পদক্ষেপ নেয় তারও আহবান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।




অধ্যক্ষের যোগসাজশে বিধি লঙ্ঘনকারী দুই শিক্ষক স্বপদে বহাল

সরকারি নীতিমালা অমান্য করে দুই শিক্ষক চাকরি করে যাচ্ছেন মানিক ডিএস আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসায়। একজন হচ্ছেন জেলা জামায়াতের আমির ও মাদ্রাসার মৌলভী শিক্ষক তাজউদ্দিন খান, যিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মেহেরপুর জেলা জামায়াতের দায়িত্ব পালন করছে। অপরজন লাইব্রেরিয়ান খালিদ হাসান, জাল সনদে চাকরি করছেন। জাল সনদ ধরা পড়ার পরেও এক বছর বহাল তবিয়তে চাকরি করেছেন, বর্তমানে বিদেশে থেকেও চাকরি করছেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

মৌলবি শিক্ষক তাজউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একাধিক মামলা সহ মোট নয়টি মামলা চলমান। প্রতি মাসে শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত থেকে কোর্টে হাজিরা দিন ১৫ থেকে ১৬ দিন। গত বছরের ৭ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত কারাগারে হাজত বাসের কারণে ওই দুই মাস অনুপস্থিত থাকলেও তাকে বরখাস্ত করা হয়নি, এমনকি বেতনও কাটা হয়নি।

এদিকে, জাল সনদ দিয়ে চাকরি বিষয়টি প্রমাণিত হলে বেতন না পেলেও মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় যেতেন খালিদ হাসান। পরে চলে যান বিদেশে। তবুও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচ্যুত করতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে মোটা অঙেÍর অর্থের বিনিয়ময়ে তিনি ওই চাকরিটি পেয়েছিলেন, তাই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তাকে চাকরিচ্যুৎ করতে পারেননি। জাল সনদে চাকরি পাওয়া খালিদ হাসান মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর ডিএস আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসার লাইব্রেরীয়ান পদে যোগদান করেছিলেন ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। খালিদ হাসান মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মাদ্রাসায় লাইব্রেরিয়া পদে নিয়োগ পেয়ে পরদিন তিনি মাদ্রাসায় যোগদান করেন। যোগদানের পর বেতনের জন্য মাদ্রাসা বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেছিলে। সেখানে তার সনদ যাচাই ব্ছাাই করে তারা জাল বলে সনাক্ত করেন। এর পর থেকে তিনি মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় যেতেন। মাস দুয়েক আগে তিনি মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন বলে জানা গেছে।
দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচুৎ করেনি এমনকি তাকে বরখাস্তও করেননি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের কয়েকজন জানান অধ্যক্ষ ও পূর্বের ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে খালিদ হাসানের নিয়োগ হওয়াতে বর্তমান কমিটি তাকে চাকরিচুৎ করছে না।

মানিকনগর ডিএস আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, পূর্বের কমিটি তাকে নিয়োগ দেওয়ায় বর্তমান কমিটি তার নিয়োগ বাতিল করার ঝামেলা নিচ্ছে না। অধ্যক্ষ বলেন, বিষয়টি তারা মানবিকভাবে দেখছেন। ইতিপূর্বে কারাগারে আটক থাকার কারণে তাকে দুইবার সাময়িত বরখাস্ত করা হয়েছিল। গত বছর তিনি দুই মাস আটক থাকলেও সে সময় তাকে বরখাস্ত করা হয়নি বলে স্বীকার করেননি। কেন করা হয়নি প্রশ্নের উত্তরে তিনি চুপ ছিলেন।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা বলেন, ‘মোটা অংকের টাকার লেনদেনে খালিদ হাসানের নিয়োগের কথাটি আমি শুনেছি। তবে ঘটনাটি আগের কমিটির সময়ে ঘটাতে বিষয়টি সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ ওয়াকিবহল নয়। বর্তমানে খালিদ হাসান দেশে নেই, তার চাকরি বহাল আছে কিনা সেটা আমার সঠিক জানা নেই। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি আমি জানাবো। ‘

মৌলভী তাজউদ্দিন খানের ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম তোতা বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাকে সাসপেন্ড করা হবে। তবে গত বছর যখন তিনি আটক হয়েছিলেন তখন তাকে সাসপেন্ড করা হয়নি। আমি ম্যানেজিং কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েকদিন আগে, এখনো এক বছর পূর্ণ হয়নি।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে জেলা শিক্ষা অফিসার আব্বাস উদ্দিনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।




হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে চবিতে শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চলমান হরতাল-অবরোধ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিদেশিদের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। বুধবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পন্থা নির্বাচন। কিন্তু যারা হরতাল-অবরোধের নামে দেশের ভেতর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তারা মনে করে, তাদের এই অপ-তৎপরতার মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এরকমভাবে দেশ ও দেশের জনগণের ক্ষতি সাধন করে কখনও ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না। তাই আমরা তাদেরকে আহ্বান করছি এরকম ধ্বংসাত্মক কাজ বন্ধ করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণকে গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতৃত্ব প্রদান করতে সহায়তা করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, আমাদের গণতন্ত্রে বিদেশিরা নগ্ন হস্তক্ষেপ। এভাবে হস্তক্ষেপ করে বাংলাদের গণতান্ত্রিক পন্থা নস্যাৎ করতে পারবে না। আমরা তাই জনগণের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বজায় রাখুন।’

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকবে, রাষ্ট্র পরিচালনার এটি ক্ষেত্রে দরকার। আমাদের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি ক্ষেত্রে আপত্তি, যে দলই হোক না কেন, তাদের আন্দোলন কর্মসূচির জন্য বৈধ পন্থা অবলম্বন করুন যাতে দেশ ও জনগণের ক্ষতি না হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে, রাস্তার পাশে রাখা গাড়ি, গ্যারেজের ভেতরে গিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটাচ্ছে। এসব নৈরাজ্য ও ধ্বংস কখনও আমাদের কাম্য না। তাই আজকের মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এসব ধ্বংসাত্মক কাজের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এসব ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতির সদস্য ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।

মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘হরতাল অবরোধের ১৪তম দিনে এসে আমরা আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আজকে আমরা বাধ্য হয়েছি এখানে দাঁড়াতে। বর্তমান নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা বলতে চাই, সরকার পরিবর্তন হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে। জনগণ যাকে চাইবে তারা হবে নির্বাচিত। এই হরতাল, অবরোধ, ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে দিনমজুর, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’ এভাবে হরতাল অবরোধ, অগ্নিসংযোগ বন্ধ করে দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে সরকার নির্বাচনে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানান তারা।




নির্বাচনের আগে বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা নির্বাচনের পুরোটা সময় বাংলাদেশে থাকবে।

নির্বাচন কমিশনকে এ সংক্রান্ত চিঠিও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)।

এনডিআই ও আইআরআই জানিয়েছে, বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে চারজন বিশেষজ্ঞ এবং একজন সমন্বয়কারী পাঠানো হবে। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ কাজ করবেন। তারা নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগে ঢাকা পৌঁছাবেন।

এনডিআইয়ের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কর্মসূচির পরিচালক জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমারের যৌথ স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা।

এতে আরও জানানো হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা। এই বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা মূল্যায়ন করবেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা, কোনো রাজনৈতিক দলের অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে সহিংসতা, নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, অনলাইনে হয়রানি ও হুমকি ইত্যাদি বিষয় তারা খতিয়ে দেখবেন। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও মূল্যায়ন করবেন তারা।

ভবিষ্যতে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে ওই মিশন প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এ ছাড়া এনডিআই ও আইআরআইয়ের বিশেষজ্ঞরা তাদের মূল্যায়ন জনসমক্ষে প্রকাশের পাশাপাশি ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেবেন।

এর আগে গত অক্টোবর মাসে ঢাকায় এসেছিল এনডিআই ও আইআরআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল। তারা বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে। সে সময় তারা মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ অংশীজনদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করে।




নির্বাচন নিয়ে সংগঠিত হচ্ছে দলগুলো, বিএনপি কিংকর্তব্যবিমূঢ়

আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠিত হচ্ছে বিরোধীদলগুলো। তবে বড় বিরোধীদল বিএনপি এখনও নিজেদের সংগঠিত করতে পারেনি। তৃণমূলের নেতারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও শীর্ষনেতৃত্ব থেকে নির্দশনা না আসায় তারা ঘোষণা দিতে পারছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ৫বছরের ভাগ্য নির্ধারণে যদি বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তবে তার কর্মী সমর্থকদের কী জবাব দেবে?

রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। দলীয় প্রতীক হিসেবে পেয়েছে নোঙর। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। যদিও তাদের তৎপরতা নিয়ে বিএনপি জামায়াত থেকে কিছু বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও দলটির নেতারা বলছেন, কারও ইন্ধনে নয়, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হতেই নির্বাচনে যাবে বিএনএম।

এদিকে, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার (২২ নভেম্বর)। আত্মপ্রকাশের দিনে দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। নতুন জোটে থাকা দলগুলো হলো– বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাত ঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল প্রতীক)। সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। সম্ভাবনা আছে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কয়েকটা দিন বিলম্ব হতে পারে, নাও হতে পারে। যদি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন বিলম্ব হয়, তাহলে বাকি তারিখগুলোও আনুপাতিকহারে বৃদ্ধি পাবে। আমাদের জোট যুক্তফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেবো। এর জন্য আমরা একটি বড় ঝুঁকি নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড়-ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’

এর আগে বিএনপির সাবেক দুই নেতাকে সামনে রেখে ২০২১ সালে ৭ জুলাই গঠিত হয় বিএনএম। দলটির আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুর রহমান। বর্তমানে তিনি কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে আছেন। কারা যুক্ত হলো বলতে গিয়ে বিএনএম-এর মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান বলছেন, শুধু বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগের জেলা–উপজেলা পর্যায়ের অনেক জনপ্রিয় নেতাসহ দেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ও সমাজে পরিচিতি রয়েছে এমন অনেকেই বিএনএমের আসতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যাদের আমাদের দলের নীতির সঙ্গে মিল রয়েছে, সৎ, সাহসী, নির্ভিক, দুর্নীতিমুক্ত, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা রয়েছে তাদেরই আমরা দলে রাখছি। দলছুট বা বাগাতে পারি বিষয়টা এরকম না। তবে এটা সত্য বিএনপি থেকে আপাতত বেশি আসছে এবং সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আসছে।’

বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘নির্বাচনের ট্রেনে উঠুন, আর না হয় কলার ভেলায় চড়ে সাগরে ভেসে যাবেন।’ বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর ‘৭৫ বা ‘৮২ বা ১/১১-এর মতো ভূতের সরকার, সামরিক সরকার হবে না। ওই আশায় বসে না থেকে নির্বাচনি ট্রেনে উঠে পড়ুন। দেশকে সাংবিধানিক ধারায় চলতে সাহায্য করুন।’




অর্থনীতির তিন বিপদে কপাল পুড়তে পারে বাইডেনের

নিজের দেশের অর্থনীতিই সামাল দিতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। যুক্তরাষ্ট্রকে ধসিয়ে দিতে তিনটি বিপদ আসছে। যদিও ডেমোক্র্যাটপন্থী অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালে মন্দা এড়াতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি তিনটি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। প্রথমত, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারের বৃদ্ধি ও এর প্রভাবের মধ্যে সবসময় দেরি। ২০২৩ সালে ভোক্তা ও কোম্পানিগুলোর সঞ্চয় ছিল, যা তাদের অর্থায়নের প্রয়োজনকে সীমিত করেছিল। ২০২৪ সালে তাদের ‘থিনার বাফার’ থাকবে এবং উচ্চ হারে তাদের এক্সপোজার বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয়ত, যদিও ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়ানো শেষ করে ফেলেছে। তবে প্রকৃত হার ক্রমশ আরও সীমাবদ্ধ হয়ে উঠবে কারণ মূল্যস্ফীতি কমছে। তৃতীয়ত, বেকারত্বের হার বাড়ছে এবং ফের ধীরগতির দিকে এগোচ্ছে অর্থনীতি।

২০২৩ সালের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল যে, এটি পুরোপুরি মন্থর প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে, তা হলো মন্দা। মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে গেলে এমনটি হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় ২% প্রবৃদ্ধিতে চলতে থাকে দেশটি। এখন মার্কিনীরা আশায় বুক বেঁধেছে কারণ, মুদ্রাস্ফীতি ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৭% থেকে ১ বছরে ৩%-এ নেমে এসেছে। কিন্তু এই হারকে ঠেলে ধাক্কিয়ে ২%-এ নামিয়ে আনা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ভাড়ায় কমানোর প্রভাব এর মধ্যেই মুদ্রাস্ফীতির ওপর পড়েছে, যা ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কঠিন চাকরির বাজারে স্বস্তির মজুরি ধীরে ধীরে লাভের দিকে নিয়ে যাবে। তাই ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ২%এর নিচে না নামলেও কমে আসবে। সম্ভবত ২০২৪এর মাঝামাঝি সময়ে সুদের হার কমার সুযোগ তৈরি হবে।

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, আগামী বছরের জন্য তুলে রাখা এই পূর্বাভাসগুলো কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। অর্থনৈতিক নীতিতে মার্কিন ভোটাররা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদেরকে যে কম নম্বর দিয়েছে তা হতাশাজনক। ১০ জনের মধ্যে চারজনেরও কম মার্কিন নাগরিক বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের অর্থনীতি পরিচালনার পদ্ধতির সঙ্গে একমত।

বাইডেনের আমলে যতদিন মুদ্রাস্ফীতি কমতে থাকবে, ততদিন মার্কিন ভোটারদের মন গলানোর সময় আছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি মন্দা এড়াতে পারে, তাহলে নভেম্বরে নির্বাচনে জো বাইডেন হালে পানি পেতেও পারেন। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য আর দ্রুত বাড়ছে না ঠিকই। কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জো বাইডেন যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তখনকার থেকে দ্রব্যমূল্য এখনো প্রায় ২০% বেশি৷ ৭০-এর দশকের শেষের দিকে জিমি কার্টারের আমলের পর দ্রব্যমূল্যের এত বাড়াবাড়ি আর হয়নি।