হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে চবিতে শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন
সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চলমান হরতাল-অবরোধ এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিদেশিদের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। বুধবার (২২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পন্থা নির্বাচন। কিন্তু যারা হরতাল-অবরোধের নামে দেশের ভেতর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তারা মনে করে, তাদের এই অপ-তৎপরতার মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এরকমভাবে দেশ ও দেশের জনগণের ক্ষতি সাধন করে কখনও ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না। তাই আমরা তাদেরকে আহ্বান করছি এরকম ধ্বংসাত্মক কাজ বন্ধ করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণকে গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতৃত্ব প্রদান করতে সহায়তা করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, আমাদের গণতন্ত্রে বিদেশিরা নগ্ন হস্তক্ষেপ। এভাবে হস্তক্ষেপ করে বাংলাদের গণতান্ত্রিক পন্থা নস্যাৎ করতে পারবে না। আমরা তাই জনগণের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বজায় রাখুন।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকবে, রাষ্ট্র পরিচালনার এটি ক্ষেত্রে দরকার। আমাদের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি ক্ষেত্রে আপত্তি, যে দলই হোক না কেন, তাদের আন্দোলন কর্মসূচির জন্য বৈধ পন্থা অবলম্বন করুন যাতে দেশ ও জনগণের ক্ষতি না হয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে, রাস্তার পাশে রাখা গাড়ি, গ্যারেজের ভেতরে গিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ঘটাচ্ছে। এসব নৈরাজ্য ও ধ্বংস কখনও আমাদের কাম্য না। তাই আজকের মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এসব ধ্বংসাত্মক কাজের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এসব ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতির সদস্য ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘হরতাল অবরোধের ১৪তম দিনে এসে আমরা আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আজকে আমরা বাধ্য হয়েছি এখানে দাঁড়াতে। বর্তমান নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা বলতে চাই, সরকার পরিবর্তন হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে। জনগণ যাকে চাইবে তারা হবে নির্বাচিত। এই হরতাল, অবরোধ, ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে দিনমজুর, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’ এভাবে হরতাল অবরোধ, অগ্নিসংযোগ বন্ধ করে দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে সরকার নির্বাচনে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানান তারা।