তবে কী ভোটের তারিখ পেছাবে?

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে ভোটের তারিখ পেছাতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পরও রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য ভোটের তারিখ পিছিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া যাবে। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করা হবে। বাছাইয়ে কারও মনোনয়ন ফরম বাতিল হলে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন। কোনো প্রার্থী ইচ্ছা করলে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করতে পারবেন। আর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর।

নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনে জোটবদ্ধ নির্বাচনের তথ্য জানিয়েছে ১০টি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে। যদিও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর জোটবদ্ধ নাকি একক নির্বাচন সেই ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে আছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তবে শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত। দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ রবিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এসময় তিনি রাষ্ট্রপতিকে তফশিল পেছানোর আহ্বান জানান।

যদিও বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। একা নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। সব দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই। যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। বিএনপি যদি মন পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে তাহলে স্বাগত জানাই।’

সোমবার সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এখনো যেসব রাজনৈতিক দল আসেনি তারা যদি আসতে চায় তাহলে আইন মেনে তাদের নির্বাচনে আসার পথ তৈরি করা হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো ধরনের সহায়তা চাইলে তাতে ইতিবাচক সাড়া দেবে ইসি। যদি তারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের আমরা স্বাগত জানাব।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে ভোটের তারিখ পেছাতে আপত্তি নেই বলেও জানান নির্বাচন কমিশন।

রাষ্ট্রপতির সাথে জাতীয় পাটির নেতৃত্বের সাক্ষাৎ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের আহবানের পর নির্বাচন কমিশনারে মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতির মাঠে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন নির্বাচনে না যাওয়া বিএনপির আরেকটা ভুল হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘এবারের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতেই হবে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচনের বোঝা দেশের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিএনপির সঙ্গে বহুবার কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছে। এবার নির্বাচনে না যাওয়া হবে আরেকটা ভুল। সময় হাতে খুব কম। আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনে জোয়ার তৈরি করে ফেলবেই, নতুন নতুন দলও নির্বাচনে আসবে।‘




`অযৌক্তিক’ হরতালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচালের উদ্দেশ্যে গত ২৯ অক্টোবর থেকে সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত টানা হরতাল-অবরোধ ডাক দিয়েছে বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো। কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতা কর্মীরা একের পর এক চোরাগোপ্তা হামলা করছে যানবাহনগুলোতে। শতশত যানবাহনে পেট্রোল বোমা মেরে পুড়িয়ে দিচ্ছে তারা, যা জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। শুধু পরিবহন সেক্টরেই নয়, হরতাল অবরোধের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের প্রতিটি সেক্টরে। আর এতে ধীরে ধীরে ফুঁসে উঠছে দেশের সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বিএনপির ডাকা হরতালের প্রতিবাদে নেমে আসছে রাজপথে।

তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রবিবার ও সোমবার হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সাত মসজিদ রোড, আসাদগেট, মিরপুর সড়ক, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, নিউমার্কেট, শাহবাগ, মৎস্যভবন মোড়, প্রেস ক্লাব, পল্টন, কাকরাইল, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি সড়কেই যানবাহনের তীব্র চাপ। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের কোথায় হরতাল সমর্থকদের পিকেটিংয়ে দেখা যায়নি। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে কোনো রকম বাধা ছাড়াই যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

শিকড় পরিবহনের চালক সেলিম জানান, তার গাড়ি মিরপুর থেকে আসছে। গাড়ি ভর্তি যাত্রী। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। তবে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরণের ভয়, আতঙ্ক আছে।

মোহাম্মদপুর থেকে ছেড়ে আসা গুলিস্তান অভিমুখী সিটি বাসের চালক মনির বলেন, বসিলা থেকে গাড়ি নিয়ে আসছি। রাস্তায় অনেক যাত্রী। গাড়িতেও যাত্রী আছে। মনির বলেন, `গতকালের তুলনায় আজকে বাস বেশি চলছে।‘ হরতালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, `যারা হরতাল ডাকে তারা রাস্তায় থাকে না। কিন্তু হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন দিয়ে সবার মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। আমরা গরীব মানুষ, এই হরতালে গাড়ি বন্ধ থাকলে খাবো কিভাবে, সেজন্য গাড়ি নিয়ে বের হই।‘

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় হরতাল ও অবরোধকে ‘অযৌক্তিক বর্ণনা করে ইতোমধ্যে পথে নেমেছে শিল্পী সমাজ, পেশাজীবী নানা সংগঠন। এমনকি বার্ষিক পরীক্ষার এই সময়ে হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ফেলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন অভিভাবকবৃন্দও।

হরতালে উদ্বিগ্ন অভিভাবক সমাজ
সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু গত ২৯ অক্টোবর থেকে টানা হরতালে উত্তপ্ত সারাদেশ। প্রতিদিনই দেশজুড়ে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়িতে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। আবার নির্দেশনামতো এমন পরিস্থিতিতেই পরীক্ষা নিতে হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর। এতে সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর ভিকারুন্নেসা স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এক মানববন্ধনের মাধ্যমে উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন অভিভাবকরা।

সহিংসতা বন্ধে শাহবাগে মানববন্ধন
হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির প্রতিবাদে গত ১৮ নভেম্বর শাহবাগ জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করেন দেশের শিল্পী সমাজ। ‘’ধ্বংসের বিরুদ্ধে শিল্পীসমাজ” এর ব্যানারে শিল্পীরা বিএনপির চলমান হরতাল অবরোধের নামে যে ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ডকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেন। শিল্পীদের ভাষ্যমতে, হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি অভিধান থেকে হারিয়ে গিয়েছিল,সেগুলোকে আবার ফিরিয়ে এনেছে বিএনপি।

দেশের শিক্ষকসমাজের বিবৃতি
বিএনপি জামাতের অবৈধ হরতালের বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিতযথা শিক্ষকবৃন্দ । শিক্ষকদের দাবি, হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি জামাত শুধুমাত্র দেশের মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। তারা যেনো অনতিবিলম্বে হরতালের মতো নাশকতামূলক কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে গণতান্ত্রিক উপায়ে দেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে সে আহ্বান করেছেন শিক্ষকসমাজ।

দেশের সকল শ্রেণীপেশার মানুষ হরতালের বিপক্ষে, তারপরও কেনো বিএনপির এই হরতাল অবরোধ খেলা জানতে চেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আনিসুর রহমান বলেন, সরকার পতনের আন্দোলনের নামে সারা দেশে হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে দিনের পর দিন মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলছে বিএনপি। তারপরও কেনো এই হরতাল, কেনো এই অবরোধ। আমাদের মতো জনগনের কাছে এটা ‘অযৌক্তিক’।

বিএনপির অবরোধ অবরোধ কর্মসূচি ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হয়েছে। মানুষ অবরোধ পালন করছে না, বরং ভয়ের ভাবটাও কেটে যাচ্ছে।’ বিএনপি নেতারা নিজেরা আত্মগোপনে থেকে কর্মী ও সন্ত্রাসীদের টাকা দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করাই তাদের অবরোধ কর্মসূচি। এগুলো কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ না, সন্ত্রাসী সংগঠনের কাজ।




গাংনীতে সাড়ে তিন কেজি গাঁজা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে মো: সাহিদুল ইসলাম(৪১) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে সাড়ে তিন কেজি গাজা সহ আটক করেছে মেহেরপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আটককৃত মো: সাহিদুল ইসালাম গাংনী উপজেলার সাহারবাটি দক্ষিনপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে ,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল পৌনে আটটায় অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক রফিকুজ্জামান ও রুহল আমিনের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি টহল দল গাংনী থানাধীন সাহারবাটি দক্ষিণপাড়া গ্রামে আসামী সাহিদুল ইসলামের নিজ বাসভবনে তল্লাশি করে খাটের মাঝে বিশেষ ভাবে তৈরীকৃত বক্সের মধ্যে একটি প্লাস্টিকের বস্তার মধ্যে স্কসটেপ দিয়ে প্যাঁচানো ৪ টি পলিথিন প্যাকেটের মধ্যে সাড়ে তিন কেজি গাঁজা উদ্ধার ও জব্দ করে এবং আসামীকে গ্রেফতার করে। উদ্ধারকৃত গাজার আনুমানিক মূলা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো: আবুল হাশেম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি টহল দল সাক্ষিদের উপস্থিতিতে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানাধীন সাহারবাটি দক্ষিণপাড়া গ্রামে গ্রেফতারকৃত আসামী মো: সাহিদুল ইসলামের বাড়িতে তল্লাশি করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাখা সাড়ে তিন কেজি গাজা উদ্ধার ও জব্দ করে।

গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীকে গাংনী থানায় সোপর্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুইটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা তদন্ত করবেন। ‘




সংশোধনী

২০ নভেম্বর মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকা ও অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে ‘মেহেরপুর-১ আসনে রবিবারে যারা মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেছেন তাঁরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস, সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীনের ছেলে তানভির আহমেদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমজাদ হোসেন।’

একটি দায়িত্বপূর্ন ও নির্ভরযোগ্য সুত্র দলীয় মনোনয়ন ফর্ম কেনার বিষয়গুলি নিশ্চিত করার পর মেহেরপুর প্রতিদিনে নিউজটা প্রকাশ করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিউজে প্রকাশিত নাম গুলির মধ্যে আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস ও আমাম হোসেন মিলুর নাম প্রকাশ নিয়ে আপত্তি দেখে সত্যতা নিশ্চিত করতে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস ও আমাম হোসেন মিলুর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তারা নিশ্চিত করেন যে আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস ও আমাম হোসেন মিলু মনোনয়ন ফর্ম কেনেন নি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক বলেন, ‘আমি আমার নির্বাচনী এলাকা মেহেরপুর-২ (গাংনী) নিয়ে ব্যস্ত আছি। মেহেরপুর-১ আসনের মনোনয়নপত্র উত্তোলন সম্পর্কে সঠিক তথ্য আমার জানা নেই। তবে নমিনেশন তুলেছেন এমন কথা তারা আমাকে বলেনি।’

আমাম হোসেন মিলু বলেন বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনি নাই এবং আমার জানা মতে আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসও মনোনয়ন ফর্ম কেনেন নাই।

আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস মেহেরপুর প্রতিদিনে ফোন করে নিশ্চিত করেছেন তিনি মনোনয়ন ফর্ম উত্তোলন করেননি।

সুত্রে থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ভুল থাকায় মেহেরপুর প্রতিদিন আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।




মুজিবনগরে নানা আয়োজনে বিশ্ব শিশু দিবস পালন

“প্রতিটি শিশুর জন্য, প্রতিটি অধিকার “এই প্রতিপাদ্য মুজিবনগরে পালিত হয়েছে বিশ্ব শিশু দিবস। গুডনেইবারর্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি’র আয়োজনে দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ সোমবার বিকেলে গুডনেইবারর্স বল্লভপুর প্রজেক্ট অফিস থেকে একটি র‍্যালী বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে অফিস চত্তরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গুডনেইবারর্স মেহেরপুর সিডিপি এর ম্যানেজার বিভোব দেওয়ানের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র অফিসার (প্রোগ্রাম) রিফাত আল মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিম রেজা,বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন,বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য বাবুল মল্লিক,গুডনেইবারর্স মেহেরপুর সিডিপি এর মেডিক্যাল অফিসার ডা:শুভ কুমার মজুমদার,সু-প্রতিবেশি মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি রেহেনা খাতুন।

উপস্হিত ছিলেন, স্পন্সর শিশু ও তাদের মায়েরা এবং কমিউনিটির শিশু ও মায়েরা। বিশ্ব শিশু দিবসে, শিশুর অধিকার, বাল্যবিবাহের কুফল, শিশু শ্রম বন্ধে করণীয়, শিশুদের সুন্দর ও সুস্থভাবে গড়ে ওঠার জন্য পিতা-মাতার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন আমন্ত্রীত অতিথিবৃন্দ।




ভোটে আগ্রহী দলের সংখ্যা বাড়ছে

নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। প্রথম দিন ১০টি দল নিজেদের অবস্থান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে। দ্বিতীয় দিন আরও পাঁচটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণসংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতার বিষয় ইসিকে অবহিত করে। এখন পর্যন্ত ১৫টি আগ্রহ প্রকাশ করায় নির্বাচন কমিশন মনে করছে নিবন্ধিত অন্তত এক-তৃতীয়াংশ রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এসব দল নির্বাচনে অংশ নিতে জোটগত অবস্থান বা দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। এসবের বাইরে আরও কিছু রাজনৈতিক দল শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেবে বলেও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আগ্রহী দলের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইসিসংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিতে হলে তফশিল ঘোষণার ৩ দিনের মধ্যে তা নির্বাচন কমিশনে জানানোর নিয়ম রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে তথ্য জানাতে ১৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। একইদিন দলীয় প্রার্থীকে কার স্বাক্ষরে মনোনয়ন দেওয়া হবে তা ইসিকে অবহিত করতে বলা হয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ১৫টি নিবন্ধিত দল তাদের অবস্থান ইসিকে জানিয়েছে। তবে বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল ইসির ওই চিঠির জবাব দেয়নি। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। তবে বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সহায়তা চাইলে তা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। রোববার নিজ কার্যালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিএনপি যদি বলে আমরা নির্বাচন করব, আমাদের সহায়তা করেন তাহলে অবশ্যই করব। তবে রাজনৈতিক দলকে কন্ট্রোল করার দায়িত্ব আমাদের নয়। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের জন্য যতরকম চেষ্টা আছে তা করা হবে। যারা নির্বাচনে আসবে না তাদের ব্যাপারে কিছু করার নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসন বা পুলিশের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে এবং তা প্রমাণিত হলে ইসি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার পর্যন্ত অন্তত ১৫টি রাজনৈতিক দলের চিঠি পেয়েছে ইসি। দলগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), গণতন্ত্রী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি), তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি, গণফ্রন্ট, গণফোরাম এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি। এর মধ্যে নয়টি রাজনৈতিক দল নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত নির্বাচনের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আরও জানা গেছে, জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়ন ও প্রতীক দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দেবেন বলে ইসিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ইসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, দলটির মহাসচিব মো. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নে সই দেবেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি গণতন্ত্র বিকাশ মঞ্চ নিয়ে জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। যদিও জোটের অন্য শরিকরা ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, যেসব রাজনৈতিক দল ইসিতে চিঠি দিয়েছে, সেগুলো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তা স্পষ্ট হলো। যদিও যেসব দল জোট ছাড়া এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের ইসিতে তথ্য জানানোর বাধ্যবাধকতা নেই। তবে নির্বাচন কমিশন মনে করছে, শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।

সূত্র: যুগান্তর




চার দেশকে নিয়ে রেল সংযোগের পরিকল্পনা

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় রেল সংযোগ (কানেকটিভিটি) স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে কোনো সীমান্ত বাধা থাকবে না। ইউরোপের দেশগুলোর মতো কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই এক দেশের রেল আরেক দেশে পণ্য ও যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত ক্রস বর্ডার রেল যোগাযোগ প্রকল্পটি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরিষেবা কোম্পানি ডেলয়েট। কোম্পানিটির প্রতিনিধি দল বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছে।

ডেলয়েটের সিনিয়র কনসালটেন্ট রুশাভ শাহ সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাংকের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান) অঞ্চলে আন্তসীমান্ত রেল পরিষেবার জন্য রোডম্যাপ তৈরির ওপর মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সীমান্তবিহীন এই রেল পরিষেবা চালু হলে আন্তআঞ্চলিক বাণিজ্যের আরও বেশি প্রসার ঘটবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়। কোম্পানিটির প্রতিনিধি দল এ বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, একটি সংস্থার প্রতিনিধি দল রেল কানেকটিভিটি নিয়ে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে গেছেন। ইতোমধ্যেই ত্রিপুরা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতার মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আঞ্চলিক করিডর ছাড়িয়ে ভারত, নেপালের পাশাপাশি, চীন, পাকিস্তান, ইরান হয়ে ইউরোপ অবধি এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে সুফল পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রস্তাবিত রেল কানেকটিভিটি প্রকল্পটিকে- বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যে মোটরযান চলাচল চুক্তি (বিবিআইএন) তার অনুরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিবিআইএন চুক্তিতে ভুটান স্বাক্ষর করেনি। এছাড়া ভুটানে কোনো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল সংযোগ রয়েছে। নেপালের সঙ্গেও ভারতের রেল সংযোগ আছে।

এছাড়া ভারত ও নেপালের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত সংযোগের মাধ্যমে জয়নগর-বিজলপুরা-বারদিবাস রেললাইনের কুর্থা থেকে বিজলপুরা পর্যন্ত রেল সেকশন চালু হয়েছে। ফলে বর্তমান অবকাঠামো সুবিধা দিয়ে রেল কানেকটিভিটি চালু হলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপালের মধ্যে ত্রিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন




নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রা শুরু

তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ট্রেন। তবে সেই ট্রেনে কারা কারা উঠবেন তা এখন নিশ্চিত নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তফসিল ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে ১৫টি একে স্বাগত জানিয়েছে, ১৭টি দল প্রত্যাখ্যান করেছে। ১২টি দল এখনো নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

আমার ধারণা, সময়ের সাথে সাথে আরও অনেকগুলো দল নির্বাচনী ট্রেনে চড়তে মরিয়া চেষ্টা চালাবে। অঙ্কের হিসাবে যাই হোক, মূল কথা হলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। তারা ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির মাধ্যমে নির্বাচনী লড়াইয়ে শামিল হয়েছে। তবে মাঠের মূল বিরোধী দল বিএনপি এখনো সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে আছে। তারা নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

নির্বাচন কমিশনের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে যদি বিবেচনা করেন, নির্ধারিত সময়ে তফসিল ঘোষণা করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। এটা তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। একদম যদি আইনের কথা বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্ধারিত সময়ে তফসিল ঘোষণা করে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। কারা নির্বাচনে আসবে, কারা আসবে না; এটা দেখা তাদের দায়িত্ব নয়। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চেষ্টা নির্বাচন কমিশন কম করেনি।

তবে নির্বাচন কমিশন বারবার আমন্ত্রণ জানালেও বিএনপি তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না, সবগুলো দল তাতে অংশ নেবে কি না, তা নিশ্চিত করা আসলে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব। তারা নিজেরা আলাপ-আলোচনা করেই তবেই ঠিক করবে। নির্বাচন কমিশন তো কোনো রাজনীতির অংশ নয়। কাউকে জোর করে নির্বাচনে আনা বা কাউকে নির্বাচনের বাইরে রাখা তাদের কাজ নয়।

সবচেয়ে ভালো হতো, তফসিল ঘোষণার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার পরিবেশ তৈরি হলে। কিন্তু অনেকদিন ধরেই আমাদের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে চায়। আর বিএনপির একদফা হলো, সরকারের পদত্যাগ। তো সরকার যদি পদত্যাগই করে তাহলে বিএনপি কার সাথে আলোচনা করবে? দুই পক্ষের শর্তের বেড়াজালে আটকে ছিল সংলাপের সম্ভাবনা।

তফসিল ঘোষণার আগে আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ জানিয়ে দিয়েছে, এখন আর সংলাপের সময় ও পরিবেশ নেই।

তাদের যুক্তি হলো, বিএনপি যেহেতু সরকার পতনের একদফা দাবিতে অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে, তাই সংলাপের পরিবেশ তারাই নষ্ট করেছে। আর তফসিল ঘোষণার পর এখন আর সংলাপের সময় নেই। আওয়ামী লীগের যুক্তি মেনেও বলি, তারা যেহেতু টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে তাই তাদের দায়িত্ব বেশি। একটু ছাড় দিয়ে হলেও বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পারলে তা দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক।

তফসিল ঘোষণা হলেও সব সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আলোচনার সুযোগ আছে। প্রয়োজনে তফসিল পেছানোর সুযোগও আছে। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সবাই যদি নিজেদের ইগো দূরে রেখে, শর্ত ভুলে গিয়ে সমঝোতার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসেন; এখনো একটি সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে জাতি। তাতে এক নিমেষে উড়ে যাবে শঙ্কার সব কালো মেঘ।

বিএনপি টানা ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয়। তারা একটি স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক দল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও ফলাফল হয়েছে শোচনীয়। বিএনপি চেষ্টা করেও ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করতে পারেনি।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পরও কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। এখন তারা সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে মাঠে আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি। নিকট ভবিষ্যতে পারবে, তেমন কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।
বিএনপি এখন আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করে, কিছু যানবাহনে আগুন দিয়ে, জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায় করা যাবে না। তাহলে বিএনপি কী করবে? আরও এক মেয়াদ ক্ষমতা বা ক্ষমতা কাঠামোর বাইরে থাকার মতো সাংগঠনিক সক্ষমতা কি বিএনপির আছে।

আগেই বলেছি, বিএনপি কোনো বিপ্লবী দল নয়। তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া একটি দল। এবার নির্বাচনে গেলেই যে বিএনপি ক্ষমতায় চলে যাবে তেমন কোনো গ্যারান্টি নেই। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিলে নেতাকর্মীরা চাঙা থাকেন। ক্ষমতায় যেতে পারলে ভালো, না গেলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে জিততে পারলে সংসদের ভেতরে-বাইরে আন্দোলন চালানো যায়।

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা প্রমাণের জন্য বারবার নির্বাচন বর্জন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করে দিলে তো দিনশেষে বিএনপির ক্ষতি, আওয়ামী লীগেরই লাভ। আওয়ামী লীগ অনেক আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। তারা দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করাও শুরু করেছে। এতদিন আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি নির্বাচনে আসবে ধরে নিয়েই।

আওয়ামী লীগের দুই ধরনের প্রস্তুতিই আছে। বিএনপি নির্বাচনে এলে জাতীয় পার্টিসহ মহাজোট হিসেবে আওয়ামী লীগ তাদের মোকাবিলায় মাঠে নামবে। আর না হয় হয়তো জাতীয় পার্টি আলাদাভাবেই নির্বাচন করবে, যাতে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আগেই তৃণমূল বিএনপিকে তৈরি করে রেখেছে সরকার।

আর নির্বাচন এলেই বাংলাদেশের কিছু ইসলামি দল মাঠে নামে নানা সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার ধান্ধায়। তারা কখনো এই দলের সাথে, কখনো ঐ দলের সাথে দর কষাকষি করে। ভোটের মাঠে তাদের অবস্থান নড়বড়ে হলেও আওয়াজ তাদের অনেক লম্বা।

তবে বছরের পর বছর বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে, ধর্ম নিয়ে তাদের আবেগ থাকলেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তাই তো এই দেশেও ইসলামি দলগুলোর ভোট ভগ্নাংশের বেশি নয়। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে নাই আসে, তাহলে কি নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে? নির্বাচনের পরে কী হবে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে জানি না; তবে নির্বাচনের ট্রেনের যাত্রা থামার কোনো সুযোগ নেই। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার স্বার্থেই এই ট্রেন এগিয়ে যাবে।

লেখক: বার্তা প্রধান, এটিএন নিউজ।




আলমডাঙ্গায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও ফার্মেসি ব্যবসায়ী

আলমডাঙ্গায় সুজা উদ্দীন নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা নিয়ে পরিবারসহ উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যবসায়ী এবং ব্যক্তির কাছ থকে ব্যবসা সূত্রে তিনি এই টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

সুজা উদ্দীন যশোর সদর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আছির আলীর ছেলে। সে বৈবাহিক সূত্রে উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামের শশুর আব্দুল মান্নানের বাড়িতে বসবাস করত।

স্থানীয়রা জানান, গত ৭ বছর আগে সুজা উদ্দীন আলমডাঙ্গা পৌর শহরের মেডিসিন কর্ণারে চাকুরি করেন। ২০২০ সালে সে নিজেই রিপন ফার্মেসি নামের একটি দোকান শুরু করেন। ব্যবসায়ীক সম্পর্কে সে বিভিন্ন এনজিও, ব্যবসায়ী ও ব্যাক্তির নিকট থেকে ঋণ নেয়। এছাড়া বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির নিকট থেকে বাকিতে ঔষধ নেয়। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্নসাৎ করে রাতারাতি উধাও হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী ঔষধ কোম্পানি মার্কেটিং রিপ্রেজেন্টিভেরা জানায়, ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা, একমি ফার্মাসিটিক্যাল ১ লাখ টাকা, নাভানা ফার্মাসিটিক্যাল ১ লাখ ১০ হাজার টাকা , বিকন ফার্মা ৯০ হাজার টাকা, বায়ো ফার্মা ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা, নিপ্রো জেএমআইয়ের ৫০ হাজার টাকা, পপুলার ফার্মা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, এসকেএফ ফার্মা ১৫ হাজার টাকা, জিসকা ফার্মা ১৬ হাজার টাকা, প্যাসেফিক ফার্মা ১১ হাজার টাকা, এভারেস্ট ফার্মা ১৬ হাজার টাকা, ড্রাগ ফার্মা ১০ হাজার টাকা, এপেক্স ফার্মা ৪ হাজার টাকা। ব্রাক এনজিও থেকে ৭ লাখ ও একতা ডেইলি সমিতি থেকে ২৭ লাখ এবং ফোর স্টার সমিতি থেকে ৭ লাখ টাকা নেন।

এছাড়া প্রতিবেশী কসমেটিকস এন্ড কনফেশনারী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের কাছ থেকে ৪ লাখ, ভাই ভাই মোবাইলের মালিক জুয়েল রানার কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার, আমেনা কনফেশনারীর মালিক ডাবলুর কাছ থেকে ৫০ হাজার ধার নেন। এছাড়াও গোপনে তিনি চড়া সুদে অনেক ব্যাক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন।

ইবনে সিনা ফার্মার এমআর আসাদুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ীক সূত্রে কোম্পানির প্রায় ৭ লাখ টাকা বাকি দেওয়া হয়েছে। গত (১৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার রাতের আধারে তিনি পরিবার নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী কসমেটিকস এন্ড কনফেশনারী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানান, গত ১ মাস পূর্বে দোকানে ঔষধ কেনার জন্য ৪ লাখ টাকা ধার নেয়। ব্যাংকে লোনের টাকা তুলে পরিশোধ করবে। তিনি রাতারাতি পরিবার নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।

এবিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাদিউজ্জামান বলেন, কয়েকজন ঔষধ কোম্পানির এমআর বাদি হয়ে অভিযুক্ত সুজা উদ্দীনের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে সত্যতা নিশ্চিতে খোঁজখবর চলছে।

আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, অর্থ আত্নসাৎ করে উধাও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে, পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




মেহেরপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাড. ইয়ারুল ইসলামের পদত্যাগ

ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলেন অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম। তিনি মেহেরপুর জেলা অওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আজ ২০ নভেম্বর সোমবার তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর এ পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন আজ থেকে তিনি এ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। বলে পত্রে জানিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি এ পদত্যাগ করেছেন বলে পত্রে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।