তবে কী ভোটের তারিখ পেছাবে?
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে ভোটের তারিখ পেছাতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পরও রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য ভোটের তারিখ পিছিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া যাবে। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করা হবে। বাছাইয়ে কারও মনোনয়ন ফরম বাতিল হলে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন। কোনো প্রার্থী ইচ্ছা করলে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করতে পারবেন। আর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনে জোটবদ্ধ নির্বাচনের তথ্য জানিয়েছে ১০টি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি দল এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে। যদিও বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর জোটবদ্ধ নাকি একক নির্বাচন সেই ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে আছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তবে শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত। দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ রবিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এসময় তিনি রাষ্ট্রপতিকে তফশিল পেছানোর আহ্বান জানান।
যদিও বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। একা নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। সব দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই। যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। বিএনপি যদি মন পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে তাহলে স্বাগত জানাই।’
সোমবার সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এখনো যেসব রাজনৈতিক দল আসেনি তারা যদি আসতে চায় তাহলে আইন মেনে তাদের নির্বাচনে আসার পথ তৈরি করা হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো ধরনের সহায়তা চাইলে তাতে ইতিবাচক সাড়া দেবে ইসি। যদি তারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের আমরা স্বাগত জানাব।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলে ভোটের তারিখ পেছাতে আপত্তি নেই বলেও জানান নির্বাচন কমিশন।
রাষ্ট্রপতির সাথে জাতীয় পাটির নেতৃত্বের সাক্ষাৎ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের আহবানের পর নির্বাচন কমিশনারে মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতির মাঠে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন নির্বাচনে না যাওয়া বিএনপির আরেকটা ভুল হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘এবারের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতেই হবে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচনের বোঝা দেশের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিএনপির সঙ্গে বহুবার কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছে। এবার নির্বাচনে না যাওয়া হবে আরেকটা ভুল। সময় হাতে খুব কম। আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনে জোয়ার তৈরি করে ফেলবেই, নতুন নতুন দলও নির্বাচনে আসবে।‘