ভারতকে কাঁদিয়ে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

একটা কথা প্রচলন আছে। ফাইনাল খেলতে হয় না, ফাইনাল জিততে হয়। আর সেই কথাই প্রমাণ করলো অস্ট্রেলিয়া। জোড়া হার দিয়ে এবারের আসর শুরু করা দলটাই একমাত্র অপরাজিত থাকা দল স্বাগতিক ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ষষ্ঠ শিরোপা জিতলো নিজেদের করে নিয়েছে অজিরা।

ঘরের মাঠে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শককে কাঁদিয়ে শিরোপা উদযাপনে মাতলো প্যাট কামিন্সের দল। ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে কামিন্স বলেছিলেন, ভারতীয় লাখো দর্শককে চুপ করে দেওয়ায় আমাদের লক্ষ্য। সেটাই করে দেখালেন কামিন্সরা।

রোববার (১৯ নভেম্বর) আহমেদবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করে ওভারে ২৪০ রানে অলআউট হয় ভারত। দলের পক্ষে বিরাট কোহলি ৬৩ বলে ৫৪ ও লোকেশ রাহুল ১০৭ বলে ৬৬ রান করেন।

২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ১৬ রানে ৩ বলে ৭ রান করে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার।

এরপর ক্রিজে আসা মিচেল মার্শকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ট্রেভিস হেড। তবে দলীয় ৪৭ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

মার্শ ১৫ বলে ১৫ ও স্টিভেন স্মিথ ৯ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর ক্রিজে আসা মার্নাস লেবুশানেকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন হেড।

দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি ফিফটি পূরণ করেন হেড। ফিফটির পর আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন তিনি। অন্যদিকে কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করতে থাকেন লেবুশানে।

মারমুখি ব্যাটিংয়ে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেন হেড। এরপর ফিফটি পূরণ করেন লেবুশানে। ভারতীয় বোলারদের আর কোনো সুযোগ না দিয়ে দলকে জয়ের পথ রাখেন এই দুই ব্যাটার।

তবে জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে ১২০ বলে ১৩৭ রান করে আউট হন হেড। এরপর ক্রিজে আসা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে ৪২ বলে হাতে রেখে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। সেইসঙ্গে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে অজিরা।

সূত্র: ইত্তেফাক




দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালের ২৯শে জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে অধিকাংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে উক্ত ৯০ দিনের মধ্যে একটি তারিখ নির্ধারণ করে ও নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য বিষয়ারলী যুক্ত করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। এহেন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন গত ১৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন সংক্রান্ত আইন এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নিশ্চিত করা আছে। এ অনুচ্ছেদ মতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় অভিযোগ করে যে নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ থাকে, আর ক্ষমতাসীন সরকার সবসময় নির্বাচন কমিশন স্বাধীন বলে দাবি করে।

তফসিল ঘোষণার পর আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন চাইলে প্রশাসনের মধ্যে রদবদল করতে পারে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা হয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং তাদের অধস্তন কর্মকর্তাদের নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা ছাড়া বদলি করা যাবে না।

অন্যদিকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বদলি করার প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশন লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব সে বদলি কার্যকর করতে হবে। যদি কোন প্রার্থী নির্বাচনী আইন ও আচরণ বিধির গুরুতর লঙ্ঘন করেন, সেক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়টিতে নির্বাচন কমিশনের পুরোপরি এখতিয়ার আছে। বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকগণ রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে উল্লেখ করা আছে, একজন রিটার্নিং অফিসারকে নির্বাচন কমিশন যেভাবে দায়িত্ব দেবে, তিনি সে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য থাকবেন। একজন রিটার্নিং অফিসার একটি এলাকায় ‘অল ইন অল’ বা সর্বেসর্বা। তার তত্ত্বাবধানের নির্বাচন পরিচালিত হয়। রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ ও বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। নির্বাচনী কার্যক্রম ও ভোট চলাকালে নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা কমিশনের হাতে আছে। তবে নির্বাচনের ফলাফল গেজেট বা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হবার পরে পুরো নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা যাবে না। ভোট চলাকালীন নির্বাচন কমিশনের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা আছে।

কমিশন আবশ্যিক মনে করলে ফলাফল গেজেট প্রকাশ করা স্থগিত রাখতে পারবে। নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে। তদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সংগত মনে করলে যেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে সেসব কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় যে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে গাইবান্ধায় একটি আসনে উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন অনিয়মের অভিযোগে সেদিনই ভোটগ্রহণ বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণার সাথে সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য দায়িত্ব পালন করার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়।”

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১৭টি রাজনৈতিক দল স্বাগত জানিয়েছে। অন্য দিকে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি সহ কয়েকটি দল তফসলকে প্রত্যাখান করে নির্বাচন না করার ঘোষনা দিয়েছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার দৈনন্দিন রুটিন কাজ ছাড়া কোন উন্নয়নমূখী প্রকল্প নতুন করে অনুমোদন দিচ্ছে না। ফলে সংবিধান মোতাবক তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে কোন বাধা নেই। আওয়ামীলীগসহ নির্বাচনমূখী দলসমূহ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

এহেন পরিস্থিতিতে বিএনপি কী করবে জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করবো। সরকার আগের মতো নির্বাচন করতে পারবে না এবং সেটিই আমরা নিশ্চিত করবো।” কিন্তু কীভাবে সেটি হতে পারে তার কোন সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দলটির নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপি তাকিয়ে আছে পশ্চিমাদের দিকে। কিন্তু পশ্চিমারা সবকিছু নিজের মতো করে করাতে পারবে তার তো নিশ্চয়তা নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হিসেবে ভারতের ভূমিকাও বেশ গুরুত্বপূর্র্ণ।
ভারত সম্প্রতি দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলে এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।

বিএনপির সামনে এখন দুটো পথ খোলা আছে, যথা ১) যে কোনভাবে হোক নির্বাচন ঠেকানো, এবং ২) তফসিল অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া। নির্বাচন ঠেকাতে হলে হরতাল-অবরোধসহ সহিংসতা করতে হবে। এর বিরুদ্ধে আবার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির হুমকি আছে।

আবার শুধু হরতাল অবরোধ দিয়ে এমন কোন পরিস্থিতি বিএনপি তৈরি করতে পারেনি যাতে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হয়। বিএনপি চাইছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করুক। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে নির্বাচন সংবিধানে থাকা নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হবে। এক্ষেত্রে কোনও চাপ তারা গ্রহণ করতে রাজি নয়।

এমতাবস্থায় তফসিল অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াই বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক। বিএনপির যদি নির্বাচনের ব্যাপক প্রস্তুতি না থাকে, তবে নির্বাচনের তারিখ কিছুটা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারে।

নির্বাচন কমিশন চাইলে চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ বদলাতে পারে। যদি সেটি দরকার হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের সে এখতিয়ার রয়েছে। সেক্ষেত্রে তফসিল সংশোধন করে দেয়া যায়। এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য তারিখগুলো পরিবর্তন করে দিতে পারে কমিশন। যেমন ২০০৮ সালে ড. এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ নির্বাচনের তারিখ দিয়েছিলো। কিন্তু বিএনপি তখন নির্বাচনে আসবে কিনা সেনিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছিল। এরপর বিএনপির দাবির ভিত্তিতে তাদের সাথে আলোচনার পর নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে ২৯ ডিসেম্বর করা হয়েছিলো।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি এরূপ সুযোগ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তা বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক হবে এবং নির্বাচনটিও অধিক প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে। অন্যথায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের সমন্বয়ে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হবে – এটি সন্দেহাতিতভাবেই বলা যায়।

লেখক: সাবেক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।




রাজধানীতে হরতালের প্রভাব নেই, সড়কে যানজট

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন রবিবার রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ ছিলো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সেই চাপ। হরতালকে উপক্ষো করে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিরবার সকালে রাজধানীর গাবতলী, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আসাদগেট, মিরপুর সড়ক, ফার্মগেট, বিজয়সরণি, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, প্রেস ক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি গণপরিবহণও চলছে সমানতালে। সকাল ১১ টায় রাজধানীর মৎস্যভবন মোড় থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। এসময় হরতালের সমর্থনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের একটি ছোট মিছিল পল্টন থেকে প্রেস ক্লাব হয়ে কদম ফোয়ারা ঘুরে আবারও পল্টনের দিকে যেতে চাইলে জ্যামের করেণে বাধাগ্রস্থ হয়। দীর্ঘ সময় জ্যামের মধ্যেই আটকে থাকে আন্দোলনকারীরা।

হরতালের কারণে অফিসে যেতে বিলম্বে হচ্ছে জানিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে আসা রুবেল আহমদ বলছিলেন, সকালে গাড়ি থাকলেও সংখ্যায় কম থাকায় যাত্রীদের চাপ ছিলো বেশি। যার ফলে নির্ধারিত সময়ে আসতে পারিনি। মিরপুর থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রুখসানা জানান, তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। রাস্তায় সময়ও নষ্ট হয়নি। মিরপুর-১০ থেকে মেট্রোরেলে করে অল্প সময়েই প্রেস ক্লাব এসে পৌঁছেছেন। উত্তরা থেকে আসা আব্দুর রহমান বলেন, তিনি জরুরি কাজে মতিঝিল আসতে সকালেই বাসা থেকে বের হয়েছেন। মেট্রোরেলে করে ৩০/৩৫ মিনিটেই মতিঝিল পৌঁছে গেছেন। কাজ শেষ করে আবার মেট্রোরেলেই উত্তরায় ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।

এদিকে মোহাম্মদপুর এলাকার স্কুল পাড়া হিসেবে পরিচিত আসাদ এভিনিউ, ইকবাল রোডসহ আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে গণপরিবহণের বাইরে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ ছিল। আসাদ এভিনিউয়ের দুই পাশে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখো গেছে। ওই এলাকার প্রায় সবকটি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। অভিভাবকরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চাদেরকে স্কুলে নিয়ে এসেছেন।

ওয়াইডব্লিউসিএ স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শরীফ কাজী জানান, মেয়ের পরীক্ষা থাকার কারণে তিনি শ্যামলী থেকে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে এসেছেন। বৃহস্পতিবার হরতালের কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা না নিলেও আজকে ঠিকই পরীক্ষা নিচ্ছেন। শরীফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই বার্ষিক পরীক্ষার সময় এসব হরতাল-অবরোধ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। রাজধানীতে হরতালের কোনো প্রভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাড়ি চললেও সমস্যা হচ্ছে আতঙ্ক। এই যে, কখন কোথায় গাড়িতে আগুন দেয় সেটা তো কেউ বলতে পারে না। তাই একটা বড় ঝুঁকি নিয়েই বের হতে হয়।




নাশকতার আগুনে আবারও পুড়ল স্কুল

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্যে এবাং প্রাথমিক বিদ্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি বেঞ্চ, বৈদ্যুতিক পাখা ও টিনের বেড়া পুড়ে গেছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহতের নামে সারা দেশে ৫৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে একই ভাবে স্কুল পুড়িয়ে দেওয়ার নাশকতার ষড়যন্ত্র চলছে মনে করেন শিক্ষাবিদেরা।

পুলিশ জানিয়েছে, রোববার (১৯ নভেম্বর) ভোরের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের গিলাশ্বর গ্রামের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আ. জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। এতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি বেঞ্চ, বৈদ্যুতিক পাখা ও টিনের বেড়া পুড়ে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদুল করিম জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে কয়েকজন যুবক বিদ্যালয়ে আগুন দেয়। পরে তারা মিছিল সহকারে ঘটনাস্থল ছেড়ে যায়। তিনি আরও জানান, ওই শ্রেণিকক্ষে প্রথম শিফটে দ্বিতীয় শ্রেণির ৩২ ও পঞ্চম শ্রেণির ৩৫ শিক্ষার্থীর পাঠদান করা হতো।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবে। এছাড়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিকক্ষটি দ্রুত মেরামত করে পাঠদানের উপযোগী করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকবলেন, ‘রাজনীতির মূল লক্ষ্য আমাদের প্রজন্মের অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাজনীতির নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর আগেও দশম সংসদ নির্বাচনে হয়েছিল। সেসময় নির্বাচন প্রতিহত করার নামে দেশে পাঁচশ’র বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রকারীরা আবার নাশকতায় নেমেছে। যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করতে চায় তাদের হাতে দেশ কখনও নিরাপদ থাকে না। দেশবাসীকে এজন্য সচেতন হতে হবে। সবাই মিলে নাশকতাকারীদের প্রতিহত করতে হবে।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় বিএনপি-জামায়াত জোট। অথচ শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে স্কুলে আসতে চায়। ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। বিএনপিকে বলব, বিদেশে পালিয়ে থাকা ব্যক্তির নির্দেশে দেশ ধ্বংসের কর্মসূচি না দিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা ভাবুন, দেশের কথা ভাবুন।’




তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সারা দেশ এখন নির্বাচনমুখী। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ছোট বড় অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল মাঠে নেমেছে। আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনের মনোনয়নপ্ত্রও বিতরণ শুরু করেছে। অন্যদিকে বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের কথা জানালেও তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০০৮ সালে নবম সংসদ এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও বয়কটের ঘোষণা দিয়েও শেষ মুহূর্তে অংশগ্রহণ করেছিল। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও এমনটি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

নির্বাচনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যায়, নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি,কিন্তু পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ভোটে আসে বিএনপি। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা। সেসময় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনুরোধ করেছিলেন দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তারকৃত দুই ছেলে তারেক রহমান ও কোকোকে যেনো বিনাশর্তে মুক্তি প্রদান করা হয়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার খালেদা জিয়ার অনুরোধ নাকচ করে দেয়। ফলে ছেলেদের মুক্তি ব্যতীত খালেদা জিয়া তার দল বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য খালেদা জিয়া ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। সমঝোতা অনুযায়ী, দুর্নীতিগ্রস্থ তারেক রহমান ও কোকো আর কখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে চলে যায় এবং বিএনপি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

এ প্রসঙ্গে ‘বাংলাদেশ: ইমার্জেন্সি অ্যান্ড দ্যা আফটারম্যাথ (২০০৭-২০০৮)’ শিরোনামের বইতে বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদ উল্লেখ করেছেন যে, ছেলেদের মুক্তি এবং বিদেশ পাঠানোর বিনিময়ে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত মেনে নিয়েছিলেন।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরব ছিল বিএনপি। সেসময় তারা প্রথমে দাবি করেছিল,দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা। কিন্তু সংবিধান মোতাবেক দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের শক্ত অবস্থানের ফলে এক পর্যায়ে বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট জোট গঠন করা হয় এবং সে নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ করে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির পর নির্বাচনের ফলাফল বয়কট করেছিল বিএনপি। কিন্তু সংসদে নিজেদের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে ৬ নির্বাচিত ও ১জন সংরক্ষিত মোট ৭ জনকে সংসদে পাঠিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু পরবর্তীতে সংসদীয় ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার না দিয়ে ৭ জন সংসদ সদস্যই সংসদ থেকে পদত্যাগ করে এবং দলীয় ভাবে বিএনপি রাজপথেই সকল দাবির উপর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।

ঈদের পর আন্দোলন,৩১ দফা,১৪ দফা,৪ দফা,১ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েও জনসম্প্রিক্ততা না থাকায় সকল আন্দোলনেই ব্যর্থ হয় বিএনপি। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের দাবিতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন করে বিএনপি। কিন্তু তাতেও আন্দোলনের ফলাফলের দিক থেকে তেমন সুবিধা করতে পারেনি বিএনপি।

অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিএনপি রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের দিকে ধাবিত হলেও সেখানেও ব্যর্থ, আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সংসদেও তাদের প্রতিনিধি থাকবেনা। এমতাবস্থায় দলটি অস্তিত্বসংকটে পরবে তা দলের শীর্ষ নেতাদের সবারই জানা। তাই বিএনপি এই মূহূর্তে সকলের অগোচরে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বছরের শুরু থেকেই দেশে বিদেশি তৎপরতা ছিল চোখে পরার মতো। একের পর এক পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিএনপি প্রীতিও এখন কারো অজানা নয়। রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন। দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতাদের সাথে, এমনকি সরকারকে চাপে ফেলতে ভিসা নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সকল পদক্ষেপেই ব্যর্থ হয়েছে বিদেশিরা। দলীয় সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে অনড় অবস্থানে রয়েছে সরকার।

সর্বশেষ শর্তহীনভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসতে আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তাতেও খুব একটা সুবিধার আওতায় আসতে পারছেনা বিএনপি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংলাপের সময় ফুরিয়ে গেছে বলে সংলাপের আহবানকে প্রত্যাখান করা হয়েছে। বিদেশি তৎপরতার সকল চেষ্টাই আপাতত শেষ বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। বিএনপি এতদিন যে বিদেশিদের ঘাড়ে ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চেয়েছিল সে আশারও গুড়েবালি। তাই এই মুহূর্তে সকল পরিকল্পনাকে পাশ কাটিয়ে বিএনপি তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে যে গুঞ্জনটি শোনা যাচ্ছে তা একেবাড়ে উড়িয়ে দেয়ার মতো সুযোগ নেই।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমে ১৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে নির্বাচনের তারিখ আরও ১১ দিন পিছিয়ে ২৯ ডিসেম্বর করতে পুণরায় তফসিল ঘোষণা করা হয়। একইভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে, ৮ নভেম্বর ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ২৩শে ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের দাবির প্রেক্ষিতে ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিলে তা পিছিয়ে ৩০শে ডিসেম্বর নির্ধারিত হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে, বিএনপির বোধহয় আর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।এরকম ভাবার কোন অবকাশ নেই। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে এবং পুনঃ তফসিলের আবেদন করে তাহলে অবশ্যই তাদের আবেদন বিবেচনাসাপেক্ষে ভোটের দিন নতুনভাবে নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বিএনপি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটা শক্ত কারণ হচ্ছে, যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তাহলে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বহু নেতাই তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেবে। তৃণমূল বিএনপি ইতোমধ্যেই ৩০০ আসনে তাদের প্রার্থী দেবার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়াও বিএনপি ভেঙ্গে বিএনএফ, স্বতন্ত্র গণতন্ত্র মঞ্চ নামের আরো কয়েকটি দল গঠিত হয়েছে,যাদের নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপিরই সাবেক নেতারা। এ দলগুলোও আসন্ন নির্বাচনে জোটগতভাবে কিংবা স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তাহলে অধিকাংশ নেতাকর্মীই এসকল দলের হয়ে নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিএনপি তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে যে খবরটি চাউর হচ্ছে তা আসলেই যৌক্তিক।




দেশে ফিরে সব গুজবের জবাব দিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়

দেশে ফিরে পরিকল্পিত গুজব আর প্রোপ্যাগান্ডা জবাব দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। শুধুমাত্র হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলেল জন্য তাকে নিয়ে গুজব ছড়িয়েছিলো একটি মহল। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই নয়, গুজব ছড়ানোর সামনে ছিলেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো উপস্থাপকও। তবে সব গুজব মিথ্যা প্রমাণ করে তিনি দেশে ফিরে তরুণ উদ্ভাবকদের হাতে তুলে দিলেন জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে বাজেয়াপ্ত’ , ‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে সজীব ওয়াজেদ জয় গ্রেফতার’ , ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞায় জয়’ , জয়ের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কড়া চিঠি’ , ‘যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পালিয়েছেন জয়’ – এমন অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যদিও তিনি বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্রে তার অবস্থানের বার্তা নানাভাবে। সর্বশেষ তিনি তার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে একটি পারিবারিক ছবি পোস্ট করেছেন ভার্জিনিয়ার একটি গলফ ক্লাবে। মায়ের জন্মদিনে উপলক্ষে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করেন সজীব ওয়াজেদ। এই ছবিতে দেখা যায়, সজীব ওয়াজেদ তার পরিবার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন তার গলফ ক্লাবে। ছবির ক্যাপশনে সজীব ওয়াজেদ লেখেন, ‘ভার্জিনিয়ায় গল্ফ ক্লাবে পরিবারের সঙ্গে মায়ের জন্মদিনের ডিনার।’ এই ছবির মাধ্যমে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়ে দেন, পরিবারসহ তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছেন। শুধু সমালোচনার জন্যই মিথ্যা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল তার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বা ট্রেজারার বিভাগও খুঁজছে না।

সেই ছবি পোস্টের মাত্র ৮ ঘণ্টার মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টটিতে কমেন্ট করছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে অনেকেই গুজব রটনাকারীদের সমালোচনা করছেন। এক ব্যক্তি লেখেন, ‘এভাবে মাঝে মধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া উচিত, না হলে যেভাবে তারা (গুজব রটনাকারীরা) শুরু করেছিলো।’ গুজবকারীদের সমালোচনা করে অনেকেই বলেছেন, ‘সত্য সামনে আসবেই। সমালোচনা-গুজব সব ব্যর্থ সত্যের কাছে। প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।’

ছবি পোস্টের পর অপপ্রচার চালানো বন্ধ হয়নি বরং ছবিটি এডিট করে কিংবা ছবির তথ্য সম্পর্কে ভুয়া এনালাইসিস করে বুঝানোর চেষ্টা কড়া হয়েছে ছবিটি অনেক আগে তোলা। যদিও প্রযুক্তিবিদদের মতে, ফেসবুকে আপলোড করা ছবির তথ্য পুনরায় ডাউনলোড করে উদ্ধার করা সম্ভব না।

‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়’, গত ২৪ অক্টোবর এমন শিরোনামে ভিডিও প্রকাশ করা হয় একটি ফেসবুক পেজ থেকে। এটি প্রচারিত হয় বিএনপি-জামায়াতসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু পেজ ও প্রোফাইল থেকে। শুধু তাই নয়, চলতি বছর এমন আরও অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে জয়কে নিয়ে।

সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে অসংখ্য গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ও কারণ ছাড়াই ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে এমন সব অদ্ভুত ভিডিও । এসব ভিডিও বেশিরভাগই তৈরি করা হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থান নিয়ে যখন অপপ্রচার তুঙ্গে তখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতি গুজববাজ গোষ্ঠী গত বেশ কিছু দিন ধরে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে একটি গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, সজীব ওয়াজেদ জয় নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নেই, কারণ তাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এদের নিম্নমানের রুচি এবং মিথ্যাচারের কোনো সীমা নেই। এদের রাজনীতি ঘুরপাক খায় নোংরামি, রুচিহীনতা এবং মিথ্যাচারের আবর্তে।

জয়কে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে কথিত নর্থইস্ট নিউজে। সেখানে চন্দন নন্দী নামে এক সাংবাদিক লিখেছেন -বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ ভার্জিনিয়ায় নতুন বাড়ি কিনলেন, কিন্তু ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ছবিতে ‘নিখোঁজ’!

গুজব ছড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে জয়ের নিয়োগ নিয়েও। বলা হয় – কোটি কোটি টাকা বেতন নেন সজীব ওয়াজেদ জয়। অথচ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে- ‘এই নিয়োগ খন্ডকালীন এবং অবৈতনিক’।

জয়কে নিয়ে গুজব চালানো হচ্ছে এটি প্রমাণিত হয় তার ছবি পোস্ট করার আগেই। কারণ প্রথমে গুজব চালানো হয় – জয়কে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সেদেশে। এরপর আবার বলা হয় – জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না দিলে সেদেশে গ্রেফতার করা হয় কিভাবে- এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে একটি গোষ্ঠী উদ্দেশমূলকভাবে জয়কে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

সামাজিক মাধ্যম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর থেকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গুজবের ডানা মেলে আরও বিস্তর ভাবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীপক্ষ যুৎসই আন্দোলন না গড়তে পেরে বারবার ছড়িয়েছে নানা গুজব। এছাড়া বিরোধী রাজনীতিবিদরাও গুজবের আগুনে ঢেলেছেন ঘি। গুজব ছড়িয়েছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের একজন টকশো উপস্থাপকও। এছাড়া সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে গুজব ছড়িয়েছেন এক সময়ের ডাকসাইটে ছাত্রনেতা বর্তমানে একটি দলের নেতৃত্বে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্নাও।

দেশে ফিরে শনিবার (১৮ নভেম্বর) মানবিক কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে দেশের সেরা ১২ যুব সংগঠনকে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ তুলে দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে দেশের ৭৫০টিরও বেশি সংগঠনের মধ্য থেকে ছয় ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার দেয়ার আয়োজক আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআই’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়াং বাংলা’। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) প্রধানও সজীব ওয়াজেদ জয়। এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আগামী দশ থেকে পনেরো বছর পরে দেশে বিএনপি-জামায়াত নামে কোনো দল থাকবে না।

জয়ের দেশে ফেরা খবরে কেউ কেউ ফেসবুকে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ঢাকায় এসেছেন। উনার দেশে আগমনের মাধ্যমে পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, কনক সারওয়ারদের মতো অতিকথন আর অতিরঞ্জিত তথ্য ছড়ানো ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের গ্রহণযোগ্যতা পুরোপুরি নষ্ট হলো। চন্দন নন্দীর মতো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে এরা লাখো মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। অতিরঞ্জিত তথ্য ছড়িয়ে লাখো মানুষকে সাময়িক উত্তেজিত করে হতাশা সৃষ্টি করেছে এরা। দেশে কিছু ঘটলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে সেটা সময় হলেই সবাই দেখতে পারবে, না ঘটলে সেটাও সঠিক সময়মতো সবাই প্রত্যক্ষ করবে। তৎপরিবর্তে এসব ইউটিউবাররা অলিক ভবিষ্যদ্বাণী করে মানুষকে দিবাস্বপ্নে বিভোর রেখে মোটিভেশনের বদলে পর্বতসম হতাশ করে ছেড়েছে। চন্দন নন্দীদের প্রোপাগান্ডা থেকে নিজেকে হেফাজত করুন। এদের আলাদা এজেন্ডা আছে।




মারা গেলেন ‘ধুম’ এর নির্মাতা

মাত্র ৫৭ বছর বয়সে মারা গেলেন বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘ধুম’ এর নির্মাতা সঞ্জয় গাধভি। রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। জনপ্রিয় এই নির্মাতার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছে না পুরো বলিউড।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গণমাধ্যমকে সঞ্জয় গাধভির মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন বনি কাপুর। তিনি জানান, ‘আজ সকাল ৮.৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক।’

প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও সঞ্জয় গাধভি গিয়েছিলেন মর্নিং ওয়াকে। হঠাৎই তিনি ঘামতে শুরু করেন। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ায় দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাইয়ের ককিলাবেন হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর পরিচালককে মৃত ঘোষণা করেন ডাক্তার। ডাক্তারের প্রাথমিক অনুমান মর্নিং ওয়াকের সময়ই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

২০০১ সালে ‘তেরে লিয়ে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডের সফর শুরু করেছিলেন নির্মাতা সঞ্জয় গাধভি। এরপর ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’ সিনেমা দিয়ে তিনি দর্শকের নজরে আসেন।

সঞ্জয় নির্মিত ‘ধুম’ বলিউডের অন্যতম সেরা ফ্রাঞ্চাইজি। এই ফ্রাঞ্চাইজি ‘ধুম’ ও ‘ধুম টু’ পরিচালনা করেছেন তিনি। এতে অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন, জন আব্রাহাম, ঐশ্বরিয়া রাই, হৃতিক রোশন সহ বহু তারকা। তবে ধুম থ্রি-তে ছিলেন না পরিচালক।




কাজের ফাঁকে মন ভালো রাখার ৮ টিপস

রোজকার কাজের চাপ আর ব্যস্ততার ভিড়ে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় আর হয়ে ওঠে না। তবে কাজের ফাঁকে মাত্র ১৫ মিনিটেরও কম সময়ে চাইলেই নিজেকে একটু স্বস্তি দেওয়া যায়। জেনে নেওয়া যাক এমন ৮ কৌশল:

মনের ঝুট-ঝামেলা দূর করুন
নিত্য কাজের ফাঁকে অল্প সময়ের জন্য ধ্যানের বিরতি নেওয়া যেতে পারে। কাজটি খুবই সহজ। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে বসে থাকুন এবং নিশ্বাস নিন। এভাবে করতে করতে যখন মনে হবে হঠাত্-ই মনোযোগ সরে গেছে তাহলে আবার নিঃশ্বাসে মনোযোগ ফিরিয়ে আনুন। এভাবে কিছুক্ষণ করতে পারলে দেখবেন আগের থেকে অনেক স্বস্তি লাগছে এবং ধৈর্যশক্তি বেড়েছে।

ঘরের বাইরে যান
খোলা পরিবেশে রোদে বসতে বা তাজা বাতাস পেতে কয়েক মিনিটের জন্য ঘরের বাইরে যান। গবেষণায় দেখা গেছে, বাইরে থাকার সময়টায় মানুষের মধ্যে প্রাণশক্তি ও স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায় এবং যেকোনো বিষয়ে উদ্বেগ কমে যায়। যদি আপনি শহরের বাসিন্দা হয়ে থাকেন তবে গাছ, ফুল এবং পার্কের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন। নিজেকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।

প্রাণ খুলে হাসুন
মন খুলে হাসা মানসিক স্বস্তির জন্য অনেক উপকারী। হাসিখুশি থাকতে মজার কোনো বইয়ের কয়েক পাতা পড়ুন, প্রিয় কোনো কৌতুক অভিনেতার ভিডিও দেখুন অথবা এমন কারো সংস্পর্শে আসুন যে সবসময় আপনাকে হাসি-খুশি রাখতে পারে। কারণ হাসি মানুষের মেজাজ হালকা করে, হূদয়, ফুসফুস ও পেশিকে উদ্দীপিত করে। মস্তিষ্ককে আরো ভালো অনুভূতির জন্য এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে।

নিজের সঙ্গে ঘটা ভালো কাজের হিসাব করুন
নিজেকে স্বস্তিবোধ করাতে একটি কলম নিন এবং অন্তত এমন কয়েকটি জিনিস তালিকাভুক্ত করুন যার কারণে ওই দিনের জন্য আপনি কৃতজ্ঞবোধ করছেন। নিজেকে নিয়ে একটু চিন্তা করুন, সারাদিন আপনার সঙ্গে কী কী ভালো কিছু ঘটেছে আর আপনার জন্য কোন বিষয়গুলো ইতিবাচক হয়েছে। হোক সেটা বড় কিংবা ছোট কোনো ঘটনা।

পরিচিতদের শুভেচ্ছা জানান
অন্যের প্রতি সমবেদনার চর্চা করাও মানুষকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত বন্ধু, পরিবারের সদস্য, সহকর্মী বা পরিচিতদের তালিকা থেকে কাউকে বেছে নিন আর তাকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান।

স্মার্ট স্ন্যাকস
ভালো ক্যালরি, স্বাস্থ্যকর এমন কিছু খাবার আপনাকে সতেজ রাখতে পারে। সহজে পাওয়া যায় এমন কিছু স্ন্যাকসের তালিকায় রাখতে পারেন কমলালেবু। এটি একটি সাইট্রাস ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা আপনার ইমিউন সিস্টেমের জন্য ভালো। এছাড়াও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের জন্য আখরোট, বাদাম বা পেস্তা খেতে পারেন। এসব খাবার আপনার স্ট্রেস হরমোনগুলোকেও বের করে দেয়।

একটি ভালো কাজ করুন
নিয়মিত একটি ভালো কাজ করুন। স্বেচ্ছাসেবী যেকোনো কাজে মানসিক স্বস্তি মেলে। হতে পারে আপনার পরিবারের কারো জন্য কিংবা প্রতিবেশী-আত্মীয়স্বজন।

ধন্যবাদ নোট লিখুন
যে আপনাকে সাহায্য করেছে তার প্রশংসা করতে কয়েকটি শব্দ লিখে রাখুন। আপনি সাম্প্রতিক কোনো সহায়তা, জন্মদিনের উপহার বা দীর্ঘস্থায়ী সমর্থনের জন্য কাউকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এটি করেছে তারা আসলে নিজেদেরকে আরো কৃতজ্ঞ হতে প্রশিক্ষিত করেছে।

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে কাস্টসাগরায় ইটভাটার গাড়ী চালকের মৃত্যু

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের ফাইভ স্টার ইটভাটায় এস্কেভেটর দুর্ঘটনায় সবুজ কাজী (২৫) নামের এক চালকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সবুজ কাজী পাবনার সুজানগর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের দুলু কাজীর ছেলে।

নিহতের ভাই সোহাগ কাজী জানায়, রাত ১১ টার দিকে এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটছিলো তার ভাই সবুজ কাজী। মেশিনের চেইন ছিঁড়ে গেলে ডান পাশের জানালা দিয়ে চাকা দেখার চেষ্টা করছিলো। সেসময় দুর্ঘটনাবশত মেশিনের বাকেটের বুম মাথায় লেগে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।

এই ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।




ফাইনালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত

স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে পর্দা নামছে ১৩তম ওয়ানডে বিশ্বকাপের। রোববার (১৯ নভেম্বর) বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়াম মাঠে নামছে এই দু’দল। ফাইনালে টস জিতে বোলিংয়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।

বিশ্বকাপে দাপট দেখিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় স্বাগতিক ভারত। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে ৯টি ও সেমিফাইনালসহ টানা ১০ ম্যাচ জিতে অপরাজিত থেকে ফাইনালে নাম লেখায় স্বাগতিকরা। এখন বাকী শুধু একটি ম্যাচ। ফাইনাল জিতলেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে ভারত।

ফাইনালে মাঠে উপস্থিত থাকবেন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ভারতীয় সমর্থক। সমর্থকদের তৃতীয় শিরোপা উপহার দিতে প্রস্তুত ভারত। ফাইনালে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে স্বাগতিকরা।

অন্যদিকে, ‘হেক্সা মিশন’ কমপ্লিট করার দ্বারপ্রান্তে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে শুরুটা ভালো না হলেও ঠিকই ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে অজিরা। টানা দুই হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর টানা জয় পায় তারা। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে অজিরা।

ফাইনালে মাঠে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স জানিয়েছিলেন, ভারতীয় লাখো দর্শককে চুপ করিয়ে দেওয়াই লক্ষ্য তাদের। ভারতের মতো অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামছে অস্ট্রেলিয়া।

ভারত একাদশ: শুভমান গিল, রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রীত বুমরাহ ও কুলদ্বীপ যাদব।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ ইংলিশ, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পা।

সূত্র: ইত্তেফাক