পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই , আলোচনায় শিক্ষকরা

দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে আছে আন্তর্জাতিক চক্র। তাতে এখন চলছে অন্যরকম রাজনীতি। অতীতের মতো বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে। অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়নি। তাই বাংলাদেশে এখন পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ উন্নয়নের মহাসড়কে আছে বাংলাদেশ। সেই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারি না আমরা বলে জানিয়েছেন দেশের শিক্ষকরা।

শনিবার (১১ নভেম্বর) ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির’প্রতিবাদে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান তারা। এডুকেশেন রিসার্চ এন্ড ডেভেলমেন্ট ফোরাম বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউিটে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

এডুকেশেন রিসার্চ এন্ড ডেভেলমেন্ট ফোরাম বাংলাদশে (ইআরডিএফবি)- এর সিনিয়র সহ সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফসের ড. আব্দুল জব্বার খাঁন বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতির বিজ বপন করা হয়েছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। হত্যাকাণ্ড করেই কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি তারা। জাতীয় চার নেতাকে কারাবন্দী করা হয়েছে এবং জেলকোড ভেঙ্গে তাদের হত্যা করা হয়েছে। এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের কোন অস্তিত্ব ছিল না। এখানেই শেষ নয়, ইন্ডেমনিটি আইন করে বিচার চাওয়া বন্ধ করা হয়েছিয়েল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে মাত্র তিন বছরে মাথাপিছু আয় রেখে গিয়েছিলেন ৩৬০ ডলার। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত অসাংবিধানিক সরকার ছিল সবসময়। এই ১৬ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছিল মাত্র ২৩ ডলার। আমরা কি সেই বাংলাদেশে আবার ফিরে যাবো? আমরা কি অসাংবিধানিক কোন পদ্ধতিতে ফিরে যাবো? আজকে মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলার। আমরা পিছনে ফিরে যাওয়ার জন্য এতো কষ্ট করে বাংলাদেশ স্বাধীন করিনি। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতি এসব কিছু আমরা দেখে এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদেরকে নিয়ে অন্যরকম রাজনীতি চলছে। এখন আমরা যে অপরাজনীতি, জ্বালাও পোড়াও দেখছি তাতে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম কিভাবে চালু রাখব তা নিয়ে চিন্তিত। আমাদের শিক্ষার্থী কি আগুন সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ক্লাসে আসবে- আমরা এখন সেই আতংকে আছি। জ্বালা আসলে কোথায়- সেটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক চক্র! সম্প্রতি বাংলাদেশে বিভিন্ন মিশন প্রধানরা ভিয়েনা কনভেনশনকে পদদলিত করে একেরপর এক অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা এগুলোর নিন্দা জানাই। বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মতো সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে। বিদেশি টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অবস্থান পরিষ্কার, একদম শান্তি পূর্ণ অবস্থান।’

এসময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের বাইরে কোন নির্বাচন হবে না, হতে পারে না। এটি আমরা এই দেশে আর দেখতে চাই না। যখনই নির্বাচন সংবিধানের বাইরে যাবে তখনই বাংলাদেশ বারবার প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা বলেন, ‘শিশু রাসেলকে যারা হত্যা করেছে তারাই গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যা করেছে। আমরা চাই না নারায়ে তাকবির বলে কেউ শিক্ষার্থীদের হলে হামলা করে বের করে দিক। বঙ্গবন্ধু সন্ত্রাসের বিপক্ষে ছিলেন, তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কবি ছিলেন। তাকে বলা হতো রাজনীতির কবি।’

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘তত্ত্বাবোধয়ক সরকারের নির্বাচন নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন। তাহলে ছয় বছরের পূর্ণিমা নির্যাতিত হল কেন? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল বাংলাদেশে অপরাজনীতির চিত্র তাহলে কি আমরা ওখানে ফিরে যাবো? আমরা কি হাওয়া ভবনে, খাম্বার রাজনীতিতে ফিরে যাবো? শুধুমাত্র বিএনপির জ্বালাও পোড়াও রাজনীতির জন্য এদেশ স্বাধীন হয়েছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর আমাদের অবশ্যই খুজতে হবে।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘জ্বালাও পোড়াও করে যারা মানুষ হত্যা করছে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, স্বাধীন বাংলাদেশে এই ধরনের অপরাজনীতি, জঙ্গিবাদের কোন ঠাই নাই।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়নের মহাসড়কে আছে বাংলাদেশ। সেই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারি না আমরা। পিছনে ফিরে যেতে পারি না আমরা। এই উন্নয়নের মহাসড়ককে এগিয়ে নিতে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পাশে আমাদের দাঁড়ানো দরকার। সন্ত্রাস কখনও কোন জাতির জন্য কল্যাণকর নয়। এটি অভিশাপ, এই অভিশাপ থেকে আমরা মুক্তি চাই।’

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)-এর উপাচার্য প্রকৌশল শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল যাতে দেশ স্বাধীন না হয়। অতএব তারা এই স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারে নাই। তারা বিভিন্ন আবহ ইঙ্গিতে বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছে। তারা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে প্রথমে সুশৃঙ্খলভাবে সমাবেশ করার কথা বললো, এখন তারা বিশৃঙ্খলা করছে। এখন্ত তারা এটার বিরোধিতা করে না। সুতরাং যারা এদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারে নাই, তারা কোন সময়ই এদেশে সুস্থ রাজনীতির ধারা মেনে নিতে পারে না।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘১৯৯৬ পর্যন্ত আমরা জানি ইতিহাস অন্যদিকে গিয়েছে, কারণ ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছিল। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। জয় বাংলার পরিবর্তে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ হয়েছিল। বর্তমানে আমাদের ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি সেকথা জানে না। সে জানে না সেই সময়ে বিদ্যুৎ কখন আসবে এই চিন্তা ছিল মানুষের মাথায়। আর এখন বিদ্যুৎ যায় না। এগুলো বর্তমানে ১৫ বছরের ছেলেদের জানানো দরকার। আগামী দিনে এই নির্বাচন কেন দরকার?’

ফোরামের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭০-এর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জনগণ ভোট প্রয়োগ করেছিল। তাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি। এখন কেন মানবাধিকার শেখানর কথা বলা হচ্ছে। গাঁজায় নিশ্রংস হত্যাকাণ্ড হচ্ছে সেদিকে কারো নজর নেই। আমাদের দেশে একটি অগণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। দেশে গোলমাল, সন্ত্রাস থাকলে তাদের লাভ হয়। তারা অস্ত্রের রাজনীতি করে। সুতরাং আমরা শিক্ষকরা আর ভুল করতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিসহ যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া জবাব দিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোটারদের ভোট কেন্দ্র আনতে শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে। একই সঙ্গে নতুন ও তরুণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্র আনতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। যদি এমনটা করা যায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রসহ যারা এ দেশের নির্বাচন নিয়ে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে তাদের কঠোর জবাব দেওয়া যাবে।’

বাংলাদশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য ও ইআরডিএফবি’র সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভুইয়া। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস- চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, চাঁদুপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস- চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নাসিম আক্তার, বাংলাদশে টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল, বাংলাদশে ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোকাদ্দেম হোসেন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস- চ্যান্সেলর প্রফসের ড. শামীম আরা হাসান প্রমুখ।




দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে চায় – জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘নির্বাচনের রোড ম্যাপ হয়েছে গেছে। আমরা নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আজকে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে চায়। কোন ষড়যন্ত্র নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তির জনপদে পরিনত হয়েছে। কেউ যদি সেই শান্তি নষ্ট করতে চাই তাহলে জনগন তাদের প্রতিহত করবে।’

শনিবার বিকালে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। বাংলাদেশ এখন মেট্রোরেলের দেশ, বাংলাদেশ এখন কর্ণফুলী টানেলের দেশ, বাংলাদেশ এখন পদ্মা সেতুর দেশ, বাংলাদেশ এখন পরমানু বিদ্যুৎতের দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ। যাদের ঘর নেই, তাদের ঘর দিয়েছেন শেখ হাসিনা, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন, ডানে বামে সামনে পিছনে সব খানেই শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন। আপনারা ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন বলেই দেশে এতো উন্নয়ন। সামনে আরও পরিকল্পনা আছে। তাই উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।’

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. ইব্রাহিম শাহীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, সহ সভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসেম ,সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমঝুপি ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ , দারিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি ,আমদহ ইউপি চেয়ারম্যান রওশন আলী টোকন ,মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, বারাদী ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম মোমিন,বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, বুড়িপোতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জামান চৌধুরি, কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ,জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাধঁন।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সহ সভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল হালিম, জহুরুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট রুতশোভা মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আদিব হোসেন আসিফ, সাধারন সম্পাদক কুতুব উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুর সীমান্ত এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৩ হাজার ২শ ইউএস ডলার উদ্ধার

মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা সীমান্ত এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩৩ হাজার ২শ ইউএস ডলার উদ্ধার করেছে বিজিবি।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাষ্টার সহকারী পরিচালক হায়দার আলী ও বুড়িপোতা ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মোতালেব হোসেন সঙ্গীয় টহল দল এ অভিযান পরিচালনা করেন।

চুয়াডাঙ্গা বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ঘটনার সময় বুড়িপোতা বিওপির টহল দল সীমান্ত পিলার ১১৬/৪-এস হতে ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বুড়িপোতা মাঠে টহল পরিচালনা করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িপোতা মাঠে একজন ব্যক্তি ধান ক্ষেতে পানি দেওয়া অবস্থায় বিজিবির টহল দলকে দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ টহল দল পানির পাম্প এলাকায় গিয়ে পুরাতন কাপড় দিয়ে ঢাকা একটি কালো পলিথিনের ব্যাগ দেখতে পায়। টহল দল পলিথিনের ব্যাগটি তল্লাশী করে স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো ৪টি বান্ডিল থেকে ৩৩ হাজার ২০০ ইউএস ডলার উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে হাবিলদার মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় মামলা করেন। এবং উদ্ধারকৃত ইউএস ডলারগুলি মেহেরপুর ট্রেজারী অফিসে জমা করেন।




বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়ে মাসসেরা রাচীন রবীন্দ্র

ভারতে চলমান বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক ব্যাটার কুইন্টন ডি কক, স্বাগতিক পেস বোলার জসপ্রীত বুমরাহ ও কিউই তরুণ অলরাউন্ডার রাচীন রবীন্দ্র। তিন জনই দলের হয়ে দারুণ ভূমিকা রেখে জায়গা করে নিয়েছিল আইসিসির মাস সেরা হওয়ার দৌড়ে।

তবে শেষ অবধি ডি কক ও বুমরাহকে পেছনে ফেলে প্রথম বারের মতো আইসিসির অক্টোবর সেরা পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয় রাচীন। এছাড়া নারীদের মাসের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ক্রিকেটার হেইলি ম্যাথিউস।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। ২৩ বছর বয়সি রাচীন রবীন্দ্রের নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে। শুরুতে দলে স্পিনার হিসেবে জায়গা পেলেও ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে এসে দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কিউইদের হয়ে এই অলরাউন্ডার খেলেছেন ২১টি ওয়ানডে ম্যাচ। তার মধ্যে ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখান বিশ্বকাপে এসে; টপ অর্ডারে জায়গা পাওয়ার পর।

অক্টোবর মাসে ছয় ম্যাচ খেলে তিনি ৮১.২০ গড়ে রবীন্দ্র ৪০৬ রান। সঙ্গে নেন ৩ উইকেট। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন ১১৬ রান। এ সময় বল হাতেও শিকার করেছেন তিনটি উইকেট। আর এমন পারফরম্যান্সেই প্রথম বারের মতো তিনি পেয়েছেন মাস সেরার পুরস্কার।

এদিকে গেল অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ড গড়া বোলিং করেছিলেন নাহিদা আক্তার। তিন ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন সিরিজ সেরার পুরস্কারও। এমন পারফরম্যান্সের পর মাসসেরা ক্রিকেটারের মনোনয়ন পেয়েছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। যদিও শেষ পর্যন্ত পুরস্কার জেতা হয়নি নাহিদার।

২০২১ সালের মতো এবারও হেইলি ম্যাথিউসের পারফরম্যান্সের কাছে হেরে গেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দাপুটে পারফর্ম করে বাংলাদেশের স্পিনারকে পেছনে ফেলে অক্টোবর মাসের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছেন ম্যাথিউস। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ক্রিকেটার। তিন ম্যাচে ব্যাট হাতে ম্যাথিউস করেছিলেন ১৫৫ গড়ে ৩১০ রান। যেখানে রয়েছে ম্যাচ জেতানো ১৩২ রানের একটি ইনিংস। এছাড়া বল হাতেও তিনি দলকে জিততে সহায়তা করেছেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে ৪০ লিটার চোলাই মদসহ আটক ১

ঝিনাইদহে ৪০লিটার দেশীয় চোলাই মদসহ শুপলাভ বিশ্বাস নামের এক মাদক বিক্রেতাকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।আজ  শনিবার সকালে সদর উপজেলার ভূপতিপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত শুপলাভ বিশ্বাস সদর উপজেলার হাটগোপালপুর লোহাজঙ্গা গ্রামের সুশান্ত বিশ্বাসের ছেলে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, আটককৃত শুপলাভ বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেশীয় চোলাই মদ বিক্রি করে আসছিল। আমাদের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভূপতিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে ৪০ লিটার দেশীয় চোলাই মদসহ আটক করে।

আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।




ঝিনাইদহের মহেশপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে ছাগলে জমির মাসকালাই ক্ষেত তছরূপ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিটন হোসেন (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার প্রতিবেশীরা।

গতকাল  শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মহেশপুর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লিটন ওই গ্রামের আজিজুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় সময় ওই গ্রামের মজনু মিয়ার জমির মাসকালাই ক্ষেত তছরূপ করে প্রতিবেশী মালেক মিয়ার গরু ছাগলে। এ নিয়ে  গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাড়ী ফেরার পথে মজনুর সাথে মালেকের হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে তার চাচাতো ভাই লিটন এগিয়ে গিয়ে বাঁধা দিলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে মালেক ও তার লোকজন। সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় লিটনকে প্রথমে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে মালেক ও তার পরিবারের লোকজন।

মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িত যারা তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।




হাসপাতালে সংরক্ষণ হবে রোগীর সব তথ্য

দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা চালু করা হচ্ছে। সেবাগ্রহীতার সব তথ্য স্থায়ীভাবে সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে। হাসপাতালে গেলে আলাদা আইডি নম্বরে রোগী, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার সব তথ্য থাকবে। দ্বিতীয়বার গেলে পুরোনো রোগের কোনো তথ্য দিতে হবে না রোগীকে। এক ক্লিকে ডেটাবেজ থেকে সব তথ্য পাওয়া যাবে। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিশেষায়িত সব সরকারি হাসপাতালে এ ব্যবস্থাপনা চালু করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোগীকে কী কারণে কোন ওষুধ প্রদান করা হয়েছে, কোন মেডিকেলে পরীক্ষা করা হয়েছে– এসব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। খুব সহজেই আগের রোগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে চিকিৎসা দেওয়া যাবে। প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা হলে জনগণ সহজে সেবা পাবে, কমে আসবে হয়রানি ও চিকিৎসা ব্যয়। একজন রোগী দেশের যে কোনো সরকারি হাসপাতালেই তাঁর নিজস্ব ই-হেলথ রেকর্ডের মাধ্যমে এ সেবা ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হতে পারবেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর অবঠাকামো তৈরির সঙ্গে সেবার মান উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে। একই সঙ্গে অপ্রয়োজনী পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ, চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত করা জরুরি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা চালুকরণ শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে চলতি মাসের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব চলতি বছর জানুয়ারিতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। গত মার্চে আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগ থেকে পর্যবেক্ষণ প্রদান করে পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতে এ প্রকল্পের কাজ চালু হতে পারে। প্রথমে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০টি হাসপাতালে ওপেন মেডিকেল রেকর্ড সিস্টেম নামে একটি সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এর মাধ্যমে হাসপাতালের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এই প্রকল্পের আওতায় ৬২৩টি সরকারি হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে হবে। নতুন করে সাড়ে চার হাজার লোক নিয়োগ, এক লাখ স্বাস্থ্যসেবাদানকারী কর্মীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ধীরে ধীরে সরকারি সব হাসপাতালকে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে এসে শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড প্রবর্তন করা হবে। কেউ চাইলে নিজের হেলথ রেকর্ড দেখতে পারবে এবং যে কোনো প্রতিষ্ঠানে গ্রহণ করা সেবার তথ্য এতে সংরক্ষিত থাকবে। চিকিৎসাসেবা দ্রুত ও সহজলভ্য এবং সেবার মান উন্নত হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান সমকালকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছেন, ‘ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা’ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চিকিৎসায় রেফারেল পদ্ধতি চালু করা সহজ হবে। বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা থাকবে মানুষের হাতের নাগালে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সমকালকে বলেন, ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা ফেরাতে হবে। চিকিৎসকের উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা এবং অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে হবে। অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে সব রোগের উন্নত চিকিৎসার যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা এখন খুবই জরুরি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক শাহাদাত হোসেন বলেন, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য উপজেলা থেকে শুরু করে বিশেষায়িত সব সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। এর মাধ্যমে দেশে আস্তে আস্তে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো তৈরি হবে। এর সঙ্গে উন্নত চিকিৎসাসেবা যুক্ত হলে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া কমবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ডিজিটাল হেলথ বাস্তবায়ন শুরু করে। ডিজিটাল হেলথ সেবা ব্যবস্থার মাধ্যমে সারাদেশে সব কমিউনিটি ক্লিনিকে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে এখন ছোট কম্পিউটার আছে। এসবের মাধ্যমে অনলাইনে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহসহ টেলিমেডিসিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং মনিটরিং কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

দেশের সব সরকারি হাসপাতাল ইন্টারনেটে যুক্ত। কোনো ডাটা এখন আর কাগজে আসে না, অনলাইন তথ্যভান্ডারে যুক্ত হয়। হাসপাতালগুলোতে আধুনিক টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে। সব হাসপাতালে ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেমে যুক্ত করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কল সেন্টার ১৬২৬৩ প্রবর্তন করা হয়েছে। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।




পোকার আক্রমণে মেহেরপুরে আমন উৎপাদনে ঘাটতি

অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় চলতি আমন মৌসুমে ধানে বাদামি গাছ ফড়িং (কারেন) পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। গতবারের থেকে এবছর বিঘাপতি ৫ থেকে ৬ মন ধান কম উৎপাদন হচ্ছে। ফলে চাষীদের উৎপাদন খরচ ঘরে উঠছে না।

জানা গেছে, জমি প্রস্তুত, ধানের চারা লাগানো, সেচ, বিষ, কাটা-মাড়াসহ সকল উপকরণের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে গতবারের তুলনায়। ফলে গতবছর বিঘাপ্রতি জমিতে আমন ধান উৎপাদন করতে খরচ হয়েছিলো ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। এবছর তা বেড়ে গিয়ে দাড়িয়েছে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। ফলে ক্রমশ ধানের আবাদে অনিহা হয়ে উঠছে কৃষকরা। কিন্তু নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে তারা ধানের আবাদ ধরে রেখেছেন বলে জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার তিন উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ২৬ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম ও তাপমাত্রা বেশি থাকায় চলতি মৌসুমে বাদামি গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণ বেড়েছে। কৃষকদের সচেতনতার মাধ্যমে পোকা দমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলেও ফলন গতবারের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।

সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের ধানচাষী মইরুদ্দিন বলেন, এক বিঘা জমিতে ব্রি-৭৪ জাতের মোটা ধানের আবাদ করেছি। ভুই (জমি) পাকানো, চারা লাগানো, পানি (সেচ), বিষ, কাটা-মাড়া দিয়ে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গতবছর একই জমিতে ধান পেয়েছিলাম ২১ মন। এবার ১৫ থেকে ১৬ মনের বেশি হবে না। ধানে শীষ আসার আগে থেকেই কারেন পোকা লাগা শুরু হয়ছে। প্রতিবছর একবার বিষ দিলেই হয়। এবার চারবার বিষ দিতে হয়েছে। যে কারণে গতবছরে থেকে এবার খরচও বেশি হয়েছে।

সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শহিদুল ইসলাম এবার ৫বিঘা জমিতে ব্রি-৪৯ ধানের আবাদ করেছেন। তিনিও বলেন, গতবছর বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২১ মন করে ধান উৎপাদন হলেও এবার ১৪ মনের বেশি পাননি। এছাড়াও কারেন পোকার কারণে এবছর সার ও বিষ খরচ হয়েছে।

গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের ফিরোজ আলী বলেন, এবার আড়াই বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সংসারে দুবেলা ভাত জোটানোর জন্য ধানের আবাদ করি। প্রতিবছর সেখান থেকে কিছু বিক্রি করি। কিন্তু এবার কারেন পোকার ক্ষতির কারণে ফলন কম হয়েছে।

আড়ৎ ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, আমন ধান সবেমাত্র কাটা-মাড়া শুরু হয়েছে। ভালো মানের ধান ১১শ থেকে সাড়ে এগারশ টাকা বেচাকেনা চলছে। তবে কয়েকদিন পর থেকে পুরোপুরি সিজেন শুরু হলে দাম কমবে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, এ বছর বৃষ্টিপাত কম ও অপেক্ষাকৃত তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় বাদামি গাছ ফড়িং পোকার আক্রমণ হয়েছে। এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে চাষীদের সচেতন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক কৃষি কর্মকর্তাদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পোকা দমন করে তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে পোকা দমন করতে চাষীদের অতিরিক্ত খরচের মধ্যে পড়তে হয়েছে এবং কিছুটা হলেও ফলন কম হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন আমন সিজন। কিন্তু অনেক চাষী আছে যারা বোরো সিজনের ধানও আবাদ করেছেন। যার ফলে ওই সকল চাষীদের ফলন কম হতে পারে। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, অনেকচাষী আমন সিজনে ব্রি-৭৪ ধান চাষ করেছেন। ব্রি-৭৪ মূলত বোরো সিজনের ধান। আমন সিজনের জন্য উপেযাগী ব্রি-৭৫, ব্রি-৮৭, ব্রি-৯০ জাতের ধানের আবাদ করার পরামর্শ দেন।




‘ডার্ক প্যাটার্নের গল্পে যুক্ত হয়েছি’-আরিফিন শুভ

কিছুদিন আগেই পর্দায় এসেছে চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ অভিনীত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। বহুল আলোচিত এই সিনেমাটি মুক্তির পর দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শক-সমালোচকদের। যার রেশ এখনও চলমান রয়েছে।

সিনেমাটিতে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুভ। চরিত্রটি রূপায়নে প্রায় ৩ বছর আটকে ছিলেন সিনেমাটির ইউনিটে। তবে মুক্তির পর দর্শকদের প্রশংসায় সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে এই অভিনেতার। তাই হয়তো তিনি বারবার বলছিলেন, এমন সিনেমা করার পর আর কোনো কাজ না করলেও আক্ষেপ থাকবে না তার। তবে সেই সাফল্যের রেশ শেষ হতে না হতেই নতুন কাজে মন বাসাতে যাচ্ছেন আরিফিন শুভ।

সম্প্রতি ‘নীলচক্র’ নামের সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন মিঠু খান। চিত্রনাট্য ও কাহিনি বিন্যাস করেছেন নাজিম উদ দৌলা ও মিঠু খান। শিগগিরই সিনেমাটির শুটিং শুরু হতে যাচ্ছে জানান শুভ। তবে এবারও কাজ শেষ না করে এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে নারাজ এই অভিনেতা।

আরিফিন শুভ বলেন, ‘নীলচক্রে দর্শকরা সমসাময়িক একটি গল্প দেখতে পাবেন। বলতে পারেন, ডার্ক প্যাটার্নের গল্পে যুক্ত হয়েছি। তবে প্যাটার্ন ডার্ক হলেও, সঙ্গে আরও কিছু আছে।’

উল্লেখ্য, এরইমধ্যে সিনেমাটির অ্যানাউন্সমেন্ট পোস্টার প্রকাশ হয়েছে, যেখানে রক্তের সঙ্গে প্রযুক্তির এক মিশেল দেখা গেছে। সিনেমাটিতে আরিফিন শুভর সঙ্গে আরও অভিনয় করছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, শাহেদ আলী, টাইগার রবি প্রমুখ।




মোবাইল নম্বর ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপ

হোয়াটস অ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হয়। এভাবেই সবার অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়। কিন্তু এবার বদলে যেতে চলেছে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েটের এই পুরনো পদ্ধতি। ইমেইল ব্যবহারেও এখন হোয়াটস অ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। নতুন এই ফিচারটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে চালু রয়েছে। এটি কার্যকর হলে, ব্যবহারকারীরা তাদের ফোন নম্বর ছাড়া ইমেল দিয়েও অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে পারবেন।

সাধারণত ফোন বদল করলে হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তখন এসএমএসর মাধ্যমে ওটিপি যাচাইকরণ করেই হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট যুক্ত করে ফেলা সহজ একটি পদ্ধতি হবে এমনটাই স্বাভাবিক। আবার ভেবে দেখুন, কোনো নম্বর নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে বা ফোন চুরি হলে আরও বিপদ।

সাধারণত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট যাচাইকরণের জন্য এসএমএস এ ওটিপি আসে। এই পাসওয়ার্ড ছাড়া কেউ অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারে না। এটি সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। তবে কারও যদি মোবাইল নম্বরটিই বদলে যায় বা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, তাহলে তিনি আর এসএমএস পাবেন না। ফলে হোয়াটসঅ্যাপ এ লগইনও করতে পারবেন না।

ওয়াবেটাইনফ’র দাবি, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটি একটি ইমেল যাচাইকরণ ফিচার পরীক্ষা করছে। এটি ব্যবহারকারীদের মোবাইল নম্বর ছাড়াও ইমেল ব্যবহার করে তাদের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে দেবে।

নতুন ফিচারটি যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার একটি সংযোজন হতে চলেছে। এসএমএস যাচাইকরণের পাশাপাশি এটিও থাকবে। এই ফিচার এন্ড্রোয়েড ও আইওএস-এর বিটা ভার্সনে পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা ‘অ্যাকাউন্ট সেটিং’ এই অপশন পাবেন। সেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ই-মেইল অ্যাড্রেস লিখতে পারেন। যা কোনোভাবেই অন্যকোনো পক্ষ জানতে পারবে না দীর্ঘদিন ধরে এই নতুন ই-মেইল যাচাইকরণ ফিচারটি পরীক্ষা করছে হোয়াটসঅ্যাপ। সর্বশেষ বিটা সংস্করণ ২.২৩.২৪.১০ আপডেট অনেকেই ফিচারটি ব্যবহার করতে পারছেন। শিগরিগরই এই সুবিধা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

সূত্র: ওয়েবেটাইনফো