দর্শনা থানার আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত

পুলিশ-জনতা ঐক্য করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি, এই স্লোগানকে সামনে রেখে দর্শনা থানা ও কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সকাল দশটার দিকে দিবসটি উপলক্ষে দর্শনা থানা পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সুদূহ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বর্নাট্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিটি দর্শনা থানা থেকে বের হয়ে রেলবাজার প্রদক্ষিণ শেষে আবার থানায় ফিরে সমাপ্ত হয়।

অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, দর্শনা থানা অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা,ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নীরব হোসেন, ইন্সপেক্টর (অপারেশন) শফিউল আলম সহ থানায় কর্মরত অন্যান্য অফিসার ও ফোর্স এবং কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সদস্যবৃন্দ।




বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়হীনতায় দ্বিধা-দ্বন্দ্বে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা

আন্দোলন নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আর শঙ্কায় বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এক দিকে নেতৃত্বের সংকট, আরেক দিকে সঠিক পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তের অভাবে আন্দোলনে নামার মনোবল হারিয়ে ফেলছেন তারা। নির্বাচনমুখি দল হলেও বিএনপির নির্বাচনের পথ পরিহার করে সহিংসতার পথ বেছে নেওয়ায় দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে এসেছে। দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

সরকারের পতন, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর এক দফা দাবিতে টানা প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। একই দিনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকার বিরোধী জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী ও অন্য দলগুলোও সমাবেশের ডাক দেয়।

কিন্তু সমাবেশ শুরু হওয়ার হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা যখন সমাবেশ মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন তখন সমাবেশের কাকরাইল প্রান্তে দলীয় নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সেই সংঘর্ষ মুহূর্তেই কাকরাইল ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে নয়াপল্টন, শাহাজাহানপুর, আরামবাগ, রাজারবাগসহ আশপাশের এলাকায়। সংঘর্ষের একজন পুলিশ সদস্য ও যুবদলের একজন কর্মী নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন অনেকে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ছিলো ভয়াবহ। এছাড়াও পুলিশ হাসপাতালে হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা হতবাক করে দেয় অনেককে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ওইদিন কাকরাইল মসজিদের বিপরীতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

সমাবেশ করতে এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশই হতবাক হয়েছেন। তাদের ভাবনাতেই ছিলো না এমন ঘটনা ঘটবে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনা বিএনপিকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে। নেতৃত্বের দুর্বলতার এবং অদূরদর্শীতার কারণেই সেদিন ঘটনা ঘটেছে।

ময়মনসিংহ জেলা বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা এক বছর ধরে যেভাবে দলটিকে এগিয়ে এনেছিলাম, সরকারের বিরুদ্ধে জনমানুষের একটা আস্থা তৈরি করেছিলাম ২৮ অক্টোবরের ঘটনা আমাদেরকে শেষ করে দিয়েছে।

নেত্রকোনা জেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ একটা সমাবেশ যেভাবে অতিউৎসাহী নেতাকর্মীদের কারণে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে তাতে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাশা দেখা দিয়েছে।

দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যার ফলে এখন দলের কোনো কর্মসূচিতেই মাঠ কর্মীদের পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। এর প্রমাণও ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। দল হরতাল ও অবরোধের মত কঠোর কর্মসূচি দিলেও দেশের বেশিরভাগ এলাকাতেই নেতাকর্মীদের হরতালের পিকেটিং বা অবরোধ সফল করে তুলতে মাঠে দেখা যায়নি।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, দলকে চাঙ্গা করতে এখন কৌশলের কোনো বিকল্প নেই। হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন তারা। বিএনপি কর্মীরা বলছেন, দলীয় নেতারা কর্মসূচী ঘোষণা দিয়েই শেষ। এটি কিভাবে, কারা সফল করে তুলবে সে নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো পরিকল্পনা নেই। তারা আরও বলছেন, যেহেতু আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ানো যাচ্ছে না সেক্ষেত্রে আরও দূরদর্শী চিন্তা করতে হবে। আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে নিয়ে দলীয় কর্মীদের গুলির মুখে ঠেলে না দেয়ার কথা বলছেন তারা।

এদিকে বিএনপি একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মহলের ‘আহ্বান ও সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ওই দিন থেকে আজ অবধি সরকারের কঠোর অবস্থান চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বিএনপিকে। মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার প্রতিবাদে ‘হরতাল-অবরোধ’এর মত কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার পরও সরকারের ‘আচরণ’ নরম না-হয়ে বরং আরও কঠোর হয়েছে। এটা দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের শুধু চিন্তায় ফেলেছে না, মনোবলও ভেঙ্গে দিয়েছে।

ওই সূত্র আরো জানায়, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে একেবারে মাঠে কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়- তৃণমূলের এমন সংগঠকদের একের পর এক গ্রেপ্তার চলছে। ফলে দলে দেখা দিয়েছে নেতৃত্বের সংকট। এমতাবস্থায় অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়া যাবে কি-না দলের মধ্যে এমন আলোচনা এসেছে।

অবশ্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ ব্যাপারে বলছেন ভিন্ন কথা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচীর শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাদের অবরোধ কর্মসূচি সর্বাত্মক সফল হয়েছে। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে সন্তুষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে জানিয়ে তিনি ৫ ও ৬ নভেম্বর (রবি ও সোমবার) আরও দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ‘একদফা’র আন্দোলন চলতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আর পিছু ফেরার সময় নেই। জুলুম-নির্যাতন, মিথ্যা মামলা-হামলা, গ্রেফতার করে আন্দোলন স্তব্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির প্রতিটি কর্মীই নেতার ভূমিকা পালন করে এ আন্দোলনে সফলতা আনবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার পতনের একদফা দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অটল রয়েছি। যে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলছে তা অব্যাহত থাকবে। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে নস্যাৎ করা যাবে না।’




আলমডাঙ্গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

আলমডাঙ্গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৫২ তম সমবায় দিবস পালিত হয়েছে। “সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মাট হবে বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমবায় অধিদপ্তরের আয়োজনে এ দিবসটি পালিত হয়।

এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলনের পর উপজেলা চত্বর থেকে জাতীয় সমবায় দিবসের একটি র‌্যালি বের হয়ে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন।

প্রধান অতিথি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিল সমবায়ের মাধ্যমে প্রতিটি কাজ সুসম্পন্ন্ করতে। দশের লাঠি একের বোঝা। তাই কোন কাজ একা না করে সম্মিলিত ভাবে করলে সেটার একটা যথাযথ ফলাফল পাওয়া যায়। কোন কাজকে ছোট করে দেখা যাবে না। সমবায়ের মাধ্যমে শক্তিবৃদ্ধি পায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার সালমাল আহমেদ ডন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ, ইন্সটেক্টর জামাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সাহারুল ইসলাম। আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হামিদুল ইসলাম আজমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডক্টর মাহবুবুবুর রহমান, বিশিষ্ট সমাজকর্মি গোলাম সরোয়ার শামীম, সিরাজুল ইসলাম, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মনজুরুল ইসলাম বেলু, হাফেজ মাসুদ কামাল, অর্পিতা পাল, পানি উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি এনামুল হক, শিক্ষক বিপ্লব হোসেন প্রমুখ।




‘বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে এটা সংবিধানে লেখা নেই’

যাদের জনসমর্থন নেই, জনগণের ওপর যাদের আস্থা নেই তারা তো নির্বাচনে আসবে না, বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন,বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে এমন কোনো কথা সংবিধানে লেখা নেই।

শনিবার নভেম্বর সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।

সংবিধান সম্মতভাবেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে, ভবিষ্যতে আরও ভালো হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে নির্বাচনে ভোটারদের উৎসাহিত করার জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাবে।’ জনগণ তখন আরও বেশি উৎসাহিত হবে এবং আগামী নির্বাচনের জন্য আসবে বলে তিনি মনে করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ও গুলশানের কার্যালয় বন্ধ থাকায় ইসির চিঠি গ্রহণ করার মতো বিএনপির অফিসে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক খান বলেন, বিষয়টি বিএনপির জন্য লজ্জার। দলটির সাম্প্রতিক কর্মসূচি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এগুলো সহিংসতার কর্মসূচি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এগুলোকে ‘টেরোরিস্ট অ্যাকশন’ বলা যেতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি, নির্বাচনের সময় অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। সুতরাং যেসব রাজনৈতিক দলের সক্ষমতা নেই, যাদের জনসমর্থন নেই, জনগণের প্রতি যাদের আস্থা নেই; তারা তো নির্বাচনে আসবেই না।”

নির্বাচনের সময় কোনো রাজনৈতিক দল যদি অরাজকতা সৃষ্টি করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রতি ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নেবে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, ‘ইসি নিজেই এটা জানে কখন কী ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এসব ব্যাপারে আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর সঙ্গে নির্বাচন কমিশন বৈঠক করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফারুক খান জানান, আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে যে, নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোট প্রয়োগ করবে।

৪ নভেম্বর সকালে বৈঠকে ইসির পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছিল- আওয়ামী লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, এলডিপি, তৃণমূল বিএনপি, এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিজেপি, সিপিবি, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ, এনপিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, খেলাফত মজলিস, বিএমএল, বিএনএফ, গণফ্রন্ট ও ইনসানিয়তা বিপ্লব বাংলাদেশকে। এর মধ্যে বৈঠকে যায়নি এলডিপি, বিজেপি, কল্যাণ পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, সিপিবি, গণতন্ত্রী পার্টি, বিএমএল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও খেলাফত মজলিস।




মেহেরপুরে র‌্যাবের অভিযানে নাশকতা মামলার আসামি আটক

মেহেরপুরে একটি নাশকতা মামলার আসামি হাশেম আলীকে (৪৫) আটক করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১২ গাংনী ক্যাম্পের এক অভিযানে শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে মেহেরপুরের ইছাখালী থেকে তাকে আটক করা হয়। হাশেম আলী ইছাখালী গ্রামের এলেজ আলীর ছেলে এবং স্থানীয় বিএনপি কর্মী।

র‌্যাব-১২ গাংনী ক্যাম্পের প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে, (২ নভেম্বর) ভোরে মেহেরপুর সদর উপজেলার ইছাখালী গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের সরকার উৎখাতের বিষয়ে নাশকতা মূলক কর্মকান্ড করছিলো এমন অভিযোগ এনে মেহেরপুর সদর থানার এসআই রেজোয়ানুল হক বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫ ডি ধারায় মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন সহ ২০ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরো ৮০ জন অজ্ঞাত আসামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার ১১ নং আসামি হাশেম আলী।

র‌্যাব প্রেস রিলিজে আরও জানায় , র‌্যাব ১২ গাংনী ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।




চুয়াডাঙ্গায় সরোজগঞ্জ ফাঁড়ির অভিযানে ফেনসিডিলসহ আটক ২

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ ক্যাম্প ও তিতুদহ ক্যাম্পের যৌথ অভিযানে ১৬৮পিস বোতল ফেনসিডিলের পিকআপ গাড়িসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ । মিনি পিকআপটি ও ১৬৮পিস বোতল ফেনসিডিলসহ সর্বমোট সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকার মূল্য মালামাল আটক করে পুলিশ।

জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থানার খায়েরহুদা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আজাদুর রহমান (৪৫) ও একই গ্রামের জুমাত আলীর ছেলে ফিরোজ হোসেন (২৩) আজ শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটার সময় ১৬৮ পিস বোতল ফেনসিডিলের পিকআপ গাড়ি যার নাম্বার ( ঢাকা মেট্রো ন – ২১-৩৬৭৯ ,) সহ দুজনকে সরোজগঞ্জ বাজারে কালুপোল সড়কের এ্যানি ম্যানি ওষুধের ফার্মেসির সামনে হতে কাঠের গুড়া বস্তা লোড সহ মিনি পিকআপ গাড়িটি জীবননগর থেকে ছেড়ে এসে খাড়াগোদা বাজার হয়ে সরোজগঞ্জে দিকে আসার সময়ে সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের পুলিশ পিকাআপটি গতিরোধ করে ফেনসিডিলের গাড়িসহ দুজনকে আটক করেন।

এদিকে তিতুদহ ক্যাম্পের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ শনিবার মিনি পিকআপটি পিছু পিছু ধাওয়া করেন বলে জানিয়েছেন তিতুদহ ক্যাম্পের এস আই উত্তম কুমার। তিতুদহ ক্যাম্পের পুলিশের সদস্যরা এবং সরোজগঞ্জ ক্যাম্পে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে দ্রুততার সাথে সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের পুলিশ মিনি পিকআপটি সরোজগঞ্জ চার রাস্তা মোড়ে পিকআপটিকে থামিয়ে অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিলসহ পিকআপটি আটক করে ক্যাম্পে রাখেন।

সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই হারুন অর- রশিদ ও এস আই অরিদুল ইসলাম মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রতিবেদকে বলেন আমি ও তিতুদহ ক্যাম্পের এস আই উত্তম কুমার সহ ফোর্স নিয়ে গোপন সংবাদের মাধ্যমে খাড়াগোদা বাজার হয়ে সরোজগঞ্জ বাজারের দিকে একটি পিকআপে ফেনসিডিলের বড় চালানের কথা শুনে বিভিন্ন যানবাহন তল্লাসি করতে থাকি তবে মিনি পিকআপটিকে আমাদের সন্দেহ হয়ে পিকআপটি পিছু পিছু ধাওয়া করতে থাকি এবং সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের সহযোগিতায় আমরা যৌথ অভিযানে ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

আসামীদেরকে আজ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সোর্পাদ করে মামলা দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন সরোজগঞ্জ ক্যাম্প পুলিশ।




যুক্তরাষ্ট্রকে পাত্তাই দিচ্ছেন না শেখ হাসিনা

কারোর চোখ রাঙানি সহ্য করবেন না শেখ হাসিনা। পাত্তাই দিলেন না যুক্তরাষ্ট্রকে। উল্টে কড়া হুঁশিয়ারি। হত্যাকারীদের সাথে কোন বৈঠক নয়। বাংলাদেশের নির্বাচন হবে সংবিধান মতো। আরো তেতে উঠছে বিরোধীরা। নির্বাচনের আগেই চরম অশান্তির ছায়া। জড়িয়ে গেল বাইডেনের নাম! তাহলে বলতে টা কি চাইছেন হাসিনা? কী হতে চলেছে?

বাংলাদেশ জুড়ে এখন হলুস্থুল কাণ্ড। নির্বাচনের আগেই ঢাকার বাতাসে হিংসার গন্ধ। উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিশ্বের বহু পরাশক্তি। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপ করার আহ্বান জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। কিন্তু সেই কথাকে এক্কেবারেই তোয়াক্কা করলেন না শেখ হাসিনা। বিএনপির সাথে কোন রকম সংলাপ নয়। শেখ হাসিনার কড়া জবাব, পার্লামেন্টারি ব্যবস্থায় বিরোধী দলের সংজ্ঞা অনুযায়ী বিরোধী দল তারাই যাদের সংসদে সিট আছে। এর বাইরে যে দলগুলো আছে, আমেরিকার মতো দেশেও কিন্তু তাদের বিরোধী দল হিসেবে গণ্য করা হয় না। রীতিমত বিরোধীদের খোঁচা দিয়েই বললেন, পার্লামেন্টের অংশ নয় এমন দলকে বাংলাদেশে বিরোধীদল বলা হয় না।

শেখ হাসিনার স্পষ্ট কথা, যেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সংলাপ হবে, সেদিনই তিনি বিরোধীদের সঙ্গে সংলাপ করবেন। তার আগে বিরোধী দলগুলোর সাথে কোন ধরনের কথা নয়। হত্যাকারীদের সঙ্গে কোন আলোচনার ব্যাপারই নেই। কারণ এটা বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ হত্যাকারীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা চায় না। তবে নির্বাচন নিয়ে কোন চিন্তা নেই। যথাসময়ে ভোট গ্রহণ করা হবে। মূলত বিএনপিকেই কাঠগোড়ায় তুলছেন শেখ হাসিনা। তার মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করছে। বিএনপি চাইছে না ভোট সুষ্ঠুভাবে হোক। তৈরি করছে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।

সাথে কড়া প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। শেখ হাসিনার কথায়, এই সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রশ্ন করা উচিত ছিল, সাম্প্রতিক সহিংসতায় যে এতগুলো মানুষ হত্যা হলো সেই বিষয়ে কেন কোন মন্তব্য নেই? কেন তারা বিচারের দাবি করে না? হাসিনার প্রশ্ন, ২৮ শে অক্টোবর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যে তীব্র অশান্তি হল, মানুষের মৃত্যু হল, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এত নীরব কেন? কোথায় গেল মানবিক বোধ? তাই “মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডিনার খাক আর ডায়লগ করুক, এটা আমাদের দেশ। আমরা স্বাধীনতা এনেছি রক্ত দিয়ে। কাজেই আমাদের সার্বভৌমত্বের বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্রের মাথায় রাখা উচিত”। কে চোখ রাঙালো আর কে বাঁকালো তার কোন পরোয়া করেন না তিনি। অনেক সংগ্রাম করে প্রতিষ্ঠা করেছেন গণতন্ত্র। সেখানে কোনো আঁচ আসতে দেবেন না। ভারত, কানাডা, ইংল্যান্ড সহ সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও ঠিক সেটাই হবে।

শেখ হাসিনা তীব্র জবাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া যে আসবে তা আশাই করা যায়। অপরদিকে বিএনপি তোপ দাগছে আওয়ামী লীগের উপর। যদি সুষ্ঠু সমাধান না হয় তাহলে নির্বাচন কিভাবে শান্তিপূর্ণ হবে? এটা সত্যি চিন্তার বিষয়। শাসক দল আর বিরোধী দলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা, দ্বন্দ্ব একেবারেই নতুন নয়।




বিএনপির জ্বালাও পোড়াও রাজনীতির অবসান হবে কি?

বিএনপির জ্বালাও পোড়াও রাজনীতির অবসান হবে কবে? এই প্রশ্নটিই বর্তমান লেখাটির শিরোনাম করা হয়েছে! বিএনপি ইতোমধ্যে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দলীয় সম্পৃক্ততার কারণে অনেকে স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করলেও কানাডার আদালতের রায় এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এখবর এখন পক্ষে-বিপক্ষের সবারই জানা যে, কানাডার আদালত পঞ্চমবারের মত বিএনপি-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে রায় দিয়েছে। সেই বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর (২০২৩) ঢাকায় তাদের মহাসমাবেশ থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়। ‘পলিটিক্যাল ইকোনোমি অব এনার্জি ট্রঞ্জিশন’ এর প্রফেসর ফ্রাঁসোয়া ব্যাফোইল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের রাজনীতির সাথে ‘হ্যালুসিনেশনের’ মিল খুঁজে পেয়েছেন।
 যদিও ২৮ তারিখে সমাবেশ করার অনুমতি নেয়ার সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাবেশ করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছিল বিএনপি নেতৃত্ব। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল দায়িত্বপালনরত একজন পুলিশ সদস্যের ওপর লাঠি হাতে বোধশূন্য উন্মাদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেধড়ক পেটানো শুরু করে।
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন। সমগ্র এলাকা এবং তার আশে-পাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল। ফলে, যেসব ঘটনা ঘটেছে সেইসব কিছুই সিসিটিভির ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক পুলিশ সদস্য মুমূর্ষু অবস্থায় ফুটপাতে পড়ে আছেন। পাশের গলি থেকে কয়েকজন বেরিয়ে এলো এবং একজন হাতের লাঠি দিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা সেই অসহায়, আহত পুলিশ সদস্যকে ভয়ংকর নিষ্ঠুরতার সঙ্গে পেটাতে থাকল। হতভাগ্য সেই পুলিশ সদস্য দুর্বলভাবে হাত নাড়াচ্ছেন। অর্থাৎ তখনও বেঁচে আছেন। মুহূর্তেই লাঠি হাতে ছুটে এলো আরও অনেকে এবং লাঠি দিয়ে নৃশংসভাবে পেটাতে থাকল। কেউ একজন সেই পুলিশ সদস্যকে কোপাতে থাকে। নিথর পড়ে থাকা একজন মানুষকে অনেকে মিলে উন্মাদের মতো আঘাতের সেই দৃশ্য অসহনীয়! কিন্তু আঘাতকারীদের মধ্যে কোনো দ্বিধা বা দয়ার উদয় হয় নাই। ঢাকা মহানগর পুলিশের কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে যে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করল বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা, টেলিভিশনের পর্দায় সে দৃশ্য দেখে চোখের পানি আটকাতে পেরেছে, এমন লোক কমই আছে। পারভেজের পিতা সেকান্দার আলী মোল্লা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ভাবতে অবাক লাগে স্বাধীন বাংলাদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে দায়িত্বপালন করতে যেয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়!
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে অনেকে। কেউ কেউ মুখে ইটের টুকরো দিয়ে বারবার আঘাত করছে; শরীরের ওপর উঠে লাথি মারছে। পুলিশ সদস্যের ওপর নিষ্ঠুরভাবে লাঠি ও চাপাতি দিয়ে যারা করেছে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমাজেরই লোক। সহিংসতার উন্মত্ততায় মেতে ওঠা এইসব লোক আমরা যে সমাজে বসবাস করি সেই সমাজেরই একটি অংশ। তারা বিএনপি-জামায়াত-এর নেতা-কর্মী। ভাবতে কষ্ট হয়, নির্মম এসব লোক আমাদেরই সমাজের! যে সমাজে এমন মানবিকতাবিহীন লোকেরা ঘুরে বেড়ায়, সেই সমাজ নাগরিকদের জন্য কতটা বিপজ্জনক আর ঝুঁকিপূর্ণ! সেই চিন্তা আমাদের ভীত আর বিপর্যস্ত করে তোলে!
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতা–কর্মীরা সহিংসতায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে। এসময় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালনরত পুলিশ, আনসার ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর দলটির নেতাকর্মীরা আক্রমন করে। দায়িত্বপালনরত অবস্থায়  এক পুলিশ সদস্যসহ ২ জন নিহত হন। গুরুতর আহত একজন আনসার সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মৃত্যুবরণ করেন।  সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাকরাইল, মতিঝিল, মগবাজার, হাইকোর্ট মোড়, বিজয়নগর ও আরামবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত এর নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের  সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত তিনশ’ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪১ জন পুলিশ সদস্য এবং ১৮ জন সাংবাদিক রয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে কাকরাইলে পুলিশ বক্স ও বিভিন্ন স্থানে অন্তত দেড় ডজন গাড়িতে আগুন এবং দুই ডজন যানবাহন ভাঙচুর করে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা।
এদিকে মহাসমাবেশের দিন বিকেলে মালিবাগ ফ্লাইওভারের ওপর বলাকা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ওই বাসে আগুনের ঘটনাটি ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরা অবস্থায় বাসটির পাশে ঘুরছেন। বুলেট প্রুফ জ্যাকেটে ‘প্রেস’ লেখা রয়েছে। তার হাতে একটি লাঠি। সঙ্গে বেশ কয়েকজন যুবক।
‘পলিটিক্যাল ইকোনোমি অব এনার্জি ট্রাঞ্জিশন’ এর প্রফেসর ফ্রাঁসোয়া ব্যাফোইল তার ‘দ্য পলিটিক্স অব ডেস্ট্রাকশন’ গ্রন্থে ইউএসএসআর, পোল্যান্ডের পিআইএস পার্টি এবং ইসলামিক স্টেট-এর কর্মকান্ড যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সে অনুযায়ী বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ভিত্তিক রাজনীতির ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যেতে পারে।  সামাজিক বিজ্ঞানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মনোবিশ্লেষণমূলক পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডভিত্তিক রাজনীতির হোতারা ‘স্থান এবং সময়ের’ রেফারেন্স ধ্বংস করে(যেমন ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার নমুনা ধ্বংস করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট); এর পরিবর্তে সন্ত্রাসীদের মূল হোতাগণ তাদের পছন্দমত কোনকিছু দিয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দাঁড় করে থাকেন; এবং আশ্রয়ের জন্য ক্ষতাবান ব্যক্তিদের ভালবাসা বা ঘৃণার ভাব বুঝে সামাজিক স্থানগুলিতে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নিযুক্ত করে থাকে। কানাডার আদালত কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত বিএনপির বেলায়ও তেমনটি লক্ষ্য করা যেতে পারে। তাদের কৃত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে অস্বীকার এবং এটিকে অন্য উপায়ে পুনরুৎ্পাদন করে, যা স্বপ্নদ্রষ্টার (যেমন বিএনপির লন্ডনস্থ নেতা) ইচ্ছার সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্য বিধান করে। একারণে সন্ত্রাসীদের থেকে উদ্ভূত রাজনীতির সাথে একটি হ্যালুসিনেশনের (যার অর্থ অমূলক বা বিভ্রান্তির )অনেক মিল রয়েছে। এই বিশ্লেষণের পরে আমরা এই উপসংহারে উপনীত হতে পারি যে, অতীতের ন্যায় বিএনপি তাদের বর্তমানের জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি পরিত্যাগ করবে না। এর জন্য তারা ভিন্ন ব্যাখ্যা এবং তাদের সেই মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক ব্যাখ্যার সমর্থন তারা দেশের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও পাবে। যেমনটি ইউএনএইচসিআর ২৮ অক্টোবর ২০২৩ বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করছে!এই পরিস্থিতিতে সঠিক ঘটনা যথাযথভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরে বিএনপি-জামায়াতের মুখোশ খুলে দিতে হবে।
লেখক: সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ। সাবেক ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, সাবেক চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।



গাংনীতে ৫২ তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদে মেহেরপুর গাংনীতে ৫২ তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও আলোচনা সভা ও শ্রেষ্ঠ সমবায়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে

আজ শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা সমবায় অফিস ও উপজেলা প্রশাসন।

জাতীয় সমবায় দিবস সরকার ঘোষিত একটি জাতীয় দিবস। সমবায় সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা এবং সমবায় আন্দোলনে গতিশীলতা আনতে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের প্রথম শনিবার দিবসটি দেশব্যাপী উদযাপন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন।

উপজেলা সমবায় অফিসার মাহবুবুল হক মন্টু এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খন্দকার সাহিদুর রহমান, উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ প্রভাষক নাসির উদ্দিন, গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ সাজ্জাদ রাজা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনতাজ আলী, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি (জেপি) আব্দুল হালিম, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান আতু, চাঁদপুর সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রাক্তন সভাপতি আবুল কাশেম, দুর্লভপুর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মশিউর রহমান পলাশ প্রমুখ।

জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে শ্রেষ্ঠ ক্যাটাগরিতে ৩টি সমবায় সমিতিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। সমবায় সমিতি গুলো হল- চাঁদপুর সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ, নাগদার খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ ও কুমারীডাঙ্গা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ। সফল সমবায় সমিতি ক্যাটাগরিতে গাংনী উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডকে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

এ সময় উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রায় ২ শত নারী ও পুরুষ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।




চুয়াডাঙ্গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপিত

‘পুলিশ-জনতা ঐক্য করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২৩’ উদযাপিত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে দিবসটি বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সকল পদমর্যাদার অফিসার ফোর্স, আমন্ত্রিত অতিথি ও কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার শহীদ হাসান চত্বরস্থ মাথাভাঙ্গা নতুন ব্রীজ হতে বেলুন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডিসি সাহিত্য মঞ্চে এসে শেষ হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ডিসি সাহিত্য মঞ্চে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২৩’ উপলক্ষে সকল আত্মবলিদানকারী গর্বিত বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের আত্মার মাহফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন ও প্রধান উপদেষ্টা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটি, চুয়াডাঙ্গার সভাপতিত্বে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু, সাবেক সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন-৯) শিরিন নাইম পুনম, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও আহবায়ক কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটি প্রফেসর মোঃ কামরুজ্জামান, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (অব:) ও সদস্য সচিব কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটি মোঃ মনিরুজ্জামান সহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সুশীল সমাজ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস্ মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সকল পদমর্যাদার অফিসার-ফোর্সবৃন্দ

অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশ পুলিশ এখন দেশের মানুষের প্রধান ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ও অপরাধ দমনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কমিউনিটি পুলিশিং বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

পুলিশের কাজে সহযোগিতা ও অপরাধ সচেতনতা তৈরিতে বাল্য বিবাহ রোধ, ইভটিজিং প্রতিরোধ, জঙ্গিবাদ দমন, সন্ত্রাস দমন, মাদকের কুফল, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, যৌতুক নিরোধ ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টিসহ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বক্তারা বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।