প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা নজিরবিহীন

২৮ অক্টোবর ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাই সত্য হলো। রাজপথের রাজনীতি সংঘর্ষে রূপ নিল। এবারের সহিংসতায় নতুনমাত্রা যুক্ত হলো- হাসপাতালে আক্রমণ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ; বিরোধী রাজনৈতিক দল কর্তৃক সাংবাদিক পেটানো ও প্রধান বিচারপতির বাসভবন আক্রমণের ঘটনা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে দিয়ে কত মিছিল অতিক্রম করেছে, কিন্তু প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমণ, ভাঙচুর, বাসভবনের ভেতরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এমন ঘটনা অশ্রুত, নজিরবিহীন। তবে এমন ঘটনায় অবাক হইনি। কারণ কয়েক বছর ধরে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে বিএনপি ও তার মিত্ররা যেভাবে বিদ্বেষ, বিষোদগার ছড়িয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা নজিরবিহীনতাতে বিচার বিভাগ রোষের শিকার হবে, এটা অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক আন্দোলনের অপকৌশল হিসেবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে।

বিএনপির কোনো রাজনৈতিক নেতার অপরাধের বিরুদ্ধে রায় হলে তাকে ফরমায়েশি রায় বলা হচ্ছে। ক্ষমতা পরিবর্তন হলে সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিচার করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। বিচারকের বিরুদ্ধে আদালতে জুতা মিছিল করা হচ্ছে। রায়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির দুজন সিনিয়র নেতা বিচার বিভাগকে পুলিশের সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দিয়েছেন। একজন বলেছেন, ‘বিচার বিভাগ এখন পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’ আরেকজন বলেছেন, ‘বিচার বিভাগ এখন পুলিশের এক্সটেনশন।’ বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা প্রকাশ্য সভায় বিচারককে হুমকি প্রদান করে বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে সব বিষয়ের বিচার তো হবেই। সবার আগে বিচার হবে যে বিচারক এই রায় দিয়েছেন।

’আক্রমণে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে পোস্টারিং। সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে ৬৪টি জেলা আইনজীবী সমিতিতে ‘উই ডোন্ট ওয়ান্ট বায়াস অ্যান্ড আনফেয়ার জুডিশিয়ারি’ লেখাসংবলিত পোস্টার লাগিয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত সেই পোস্টার। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল পোস্টারের বিষয়ে বলেছেন, “আমাদের কথাই ওই পোস্টারে লেখা আছে। সারা দেশে বিচারের নামে প্রহসন চলছে। আদালতের পরিবেশ আজ দ্বিধাবিভক্ত। আজ বিএনপির জন্য এক আইন প্রচলিত, অন্যদের জন্য আরেক আইন। এ কারণে আমরা বলছি ‘উই ডিমান্ড ইমপারশিয়াল অ্যান্ড ফেয়ার জুডিশিয়ারি’ (আমরা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ বিচার বিভাগ চাই)।”

রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও ভয়ংকর আচরণ করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও কয়েকজন আইনের শিক্ষক। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায়দানকারী বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন দিনাজপুরের পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। শুধু বিরূপ মন্তব্য করেই তিনি থেমে থাকেননি, বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। মেয়রের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে অশালীন ও বিচারাধীন বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাসের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬ নভেম্বর তাঁকে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আরেকটি বক্তব্যে হাবিবুর রহমান হাবিব বিচারপতি আখতারুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘শপথ করে বলে যেতে চাই, এই সরকার যেদিন ক্ষমতায় থাকবে না, ওই বিচারপতি আখতারুজ্জামান জীবিত থাকলেও তাঁকে মরতে হবে, মরে গেলেও কবর থেকে লাশ ওঠানো হবে।’ খালেদা জিয়ার মামলার বিচার বন্ধে বিএনপির আইনজীবীরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন ১৩ বার। ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় বিএনপির আইনজীবীরা বিচারক পরিবর্তনের আবেদন করলে উচ্চ আদালত তিনবার বিচারক পরিবর্তন করে দেন। চতুর্থবার বিচারক পরিবর্তনের আবেদন করলে উচ্চ আদালত তাতে রাজি হননি। বিচারপতি আখতারুজ্জামান নিম্ন আদালতে তিনবার বিচারক পরিবর্তনের পর চতুর্থ বিচারক হিসেবে খালেদা জিয়ার মামলার বিচার করেন। দ্রুত বিচার আদালতের মামলা ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও ১০ বছরব্যাপী ২৬১ কর্মদিবসে ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মামলার রায় প্রদান করা হয়। বিএনপির আইনজীবীরা ১৫৫ বার সময় প্রার্থনা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষীদের জেরা করেছেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ২৮ দিন ধরে শুধু আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিতর্ক তুলে ধরেছেন। তার পরও কেন বিচারকের প্রতি ক্ষোভ, হত্যার হুমকি?

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দিয়ে দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ায় বিচারকের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। একজন চিঠি প্রদানকারী বিচারককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আরেকজন হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

একজন রাজনৈতিক নেতার প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে বিচার বিভাগের প্রতি আক্রমণ, বিদ্বেষ, শত্রুতা কিংবা বিমাতাসুলভ আচরণ বিচার বিভাগের প্রতি অন্যায়, আত্মঘাতী। তারেক ও জোবাইদা রহমানের বিচারের সমসাময়িক সময়ে ভারতে রাহুল গান্ধী, পাকিস্তানে ইমরান খান এবং যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের বিচার হয়েছে। অতীতে ইতালির চারবারের প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি বিচারে কয়েকবার জেল খেটেছেন। ব্রাজিলের লুলা ডি সিলভা দুই দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিচারের রায়ে ৫৮০ দিন জেল খেটেছেন। নির্বাচনে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাক গান হে দুর্নীতির কারণে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন এবং তাঁকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি দুর্নীতির মামলায় জেল খেটেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ১০ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন। দুর্নীতির একটি মামলার তদন্তে সহযোগিতা না করায় তাঁকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ৭০ বছর বয়সে জেলে যেতে হয়েছিল মিস্টার জুমাকে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কয়েকটি মামলার মধ্যে একটিতে ১২ বছরের জেল হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট প্রতারণার অভিযোগে দুই বছর তিন মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা ক্ষমতায় থাকার সময় চালে ভর্তুকির একটি দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট জিনাইন আনেজ প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাতের দায়ে ১০ বছরের সাজা ভোগ করছেন। কোথাও কি রায়ের পর জুতা মিছিল হয়েছে? কোনো দেশে রায়কে কি ফরমায়েশি রায় বলে উল্লেখ করে বিচার বিভাগকে অভিযুক্ত করা হয়েছে?

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সংর্বধনা বর্জন করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইডেট লইয়ার্স ফ্রন্ট। যে কেউ সংর্বধনা বর্জন করতেই পারে, কিন্তু সংর্বধনাস্থলের পাশে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ বিদ্বেষের বার্তা দেয় বৈকি। মাঠের রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ জনগণকে বিচার বিভাগ সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক ও বিচারপতিদের প্রতি বিরূপ ধারণা প্রদান শুধু অযৌক্তিক ও অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়, এটি আত্মঘাতীও বটে।
আমাদের বিচারব্যবস্থায় বিচারক কেবল আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করেন। মূল আইনি লড়াই হয় দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে। এক পক্ষের যুক্তিতর্ক-সাক্ষ্য খণ্ডন করে অপর পক্ষ যুক্তিতর্ক-সাক্ষ্য উপস্থাপন না করতে পারলে তার দায় ওই আইনজীবীর। কোনো পক্ষ যদি মিথ্যা সাক্ষ্য উপস্থাপন করে, প্রতিপক্ষ তা খণ্ডন করতে না পারলে বিচারকের কী করার আছে? বিচারক যখন রায় লেখেন, উভয় পক্ষের উপস্থাপিত ঘটনার সারসংক্ষেপ, তাদের উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য-প্রমাণের কথাই রায়ে উল্লেখ করেন। কোনো কিছুই গোপনে করা হয় না। এখানে পক্ষপাতিত্বের সুযোগ কোথায়? নিম্ন আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট না হলে হাইকোর্ট বিভাগের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ আছে। হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট না হলে আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এর পরও যদি বিএনপি মনে করে নিম্ন আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ সবই দলীয়করণ হয়ে গেছে, সবাই আওয়ামী লীগ, তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সরকার চালাবে কিভাবে? বিএনপি সরকার গঠন করলে নির্বাহী বিভাগের রাজনৈতিক অংশ পরিবর্তন হবে। চাইলে আমলাদের কাউকে অপসারণ করতে পারবে। নির্বাচনে জয়ী হলে আইন বিভাগের তথা সংসদ সদস্যরাও পরিবর্তন হতে পারেন। কিন্তু বিচার বিভাগের কোনো সদস্যকে বিএনপি নিজেদের ইচ্ছামতো পরিবর্তন বা অপসারণ করে নতুন বিচারক নিয়োগ করতে পারবে না। এই বিচারকদের নিয়েই বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে। ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে মহাজোট সরকার ও সরকারদলীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়ায় প্রয়াত বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ‘সরকার যদি মনে করে- তারা বিচার বিভাগের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবে, তাহলে আমি বলতে চাই যে সেই প্রতিযোগিতায় আপনারা পরাজিত হবেন। কারণ যারাই বিচার বিভাগের ওপর হাত দেয়, সেই হাত পুড়ে যায়। সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু বিচার বিভাগের অস্তিত্ব, ইজ্জত-সম্মান, মর্যাদা সব সময় থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’

শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ কাজে মূল ভূমিকা পালন করছেন খােলদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেসসচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী ও দেশি-বিদেশি কয়েকজন অধ্যাপক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, বিএনপি, জামায়াত ও তাদের মিত্ররা বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে কী ভয়ংকর রোষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিচার বিভাগের প্রতি ধারাবাহিকভাবে যে বিদ্বেষ ও অনাস্থা উগরে দেওয়া হচ্ছে, তারই ফলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা। বিচার বিভাগের অভিভাবক হলেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমণ প্রকারান্তরে বিচার বিভাগের ওপর হামলা। রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগের ওপর হামলা রাষ্ট্রের ওপরও হামলা।

লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়




২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনা জেনে অবাক হয়েছেন কূটনীতিকরা

২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক সহিংসতার তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছে সরকার। সোমবার আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে। তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।

আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা কোন প্রশ্ন করেননি বলেও সাংবাদিকদের জানানো হয়।

কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে শনিবার ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে, তা বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিএনপির সংশ্লিষ্টতায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেওয়া মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর কর্মকাণ্ডের কথাও কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মহাসমাশের নাম নিয়ে বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য আসছে নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কি হয়েছে। প্রেডিসেডন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজন নিয়ে কি কি করা হয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছি।’
এসময় বিএনপিকে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানান ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। রাজনৈতিক সহিংসতা করে সরকার পতনের যে অপচেষ্টা, এটা অলীক।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মান, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইইউ, জাতিসংঘ, ওআইসি, বিমসটেকসহ ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এসময় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’ কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে; সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকের আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।’ বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্য কি ছিল— জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।’




জীবননগরে ডেঙ্গু প্রতিরোধ পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ পালন

আজ সোমবার সকালে জীবননগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ডেঙ্গু প্রতিরোধ পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে মশক নিধন ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার কাজের উদ্বোধন করেন জীবননগর উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হাফিজুর রহমান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ, জীবননগর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আঃ সালাম ইশা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ আয়েশা সুলতানা লাকী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তিথি মিত্র প্রমুখ।




ঝিনাইদহে ভাগ্নেকে খুনের দায়ে মামার মৃত্যুদন্ড

মহেশপুরে ভাগ্নেকে খুনের দায়ে মামা আব্দুল জলিল সরকারকে মুত্যুদন্ড দিয়েছে ঝিনাইদহের দায়রা জজ আদালতের বিচারক।

আজ সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ নাজিমুদ্দৌলা এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আব্দুল জলিল সরকার মহেশপুর উপজেলার ঘুগরী গ্রামের দুলু সরকারের ছেলে।

মামলার সংক্ষিপ্ত রায়ে জানা যায়, মহেশপুরের ঘুগরী গ্রামের দুলু সরকারের মেয়ের সাথে রইচ উদ্দিনের বিয়ে হয়। সেখানে একটি পুত্র সন্তান হয়। মা শিখা বেগম এক বছর পরে ছেলে সাইদুর রহমান রানাকে রেখে অন্যত্রে বিয়ে করে। আবার বাবাও অন্যত্রে বিয়ে করে। ফলে রানা তার নানা বাড়ীতে থেকে যায়। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময় নানা দুলু সরকার ইচ্চাকৃত ভাবে নাতিকে ৪ কাঠা জমি রেজিষ্ট্রী করে দেয়। এরপর থেকে মামা জলিলের সাথে ভাগ্নের রানার শত্রুতা বেড়ে যায়। জলিল তার পিতা-মাতাকে মারধর করতে শুরু করে।

একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৩ সালের ১০ আগষ্ট সন্ধ্যার পরে বাড়ীর সামনের রাস্তার উপর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে জখম করে ভাগ্নে রানাকে। চিকিৎসার জন্য মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় রানা। ঐদিন রাতেই রানার পিতা বাদী হয়ে আব্দুল জলিল সরকারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২ ধারার একটি মামলা দায়ের করে মহেশপুর থানায়। তদন্ত শেষে একমাত্র আসামী মোঃ আব্দুল জলিল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ। আদালতে দীর্ঘ দিন ধরে বিচার কার্য অনুষ্ঠিত হয়।

আজ সোমবার এ রায় প্রদান করা হয়। রায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আব্দুল জলিলকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে আদালত। এছাড়াও তিন লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য় করে আদালত। এ মামলার আসামী আব্দুল জলিল সরকার পলাতক রয়েছে।




আলমডাঙ্গায় জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান ও আলোচনা সভা

আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে জাতীয় ইঁদুর নিধন অফিযান- ২০২৩ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে।

‘ইঁদুরের দিন শেষ, গড়বে সোনার বাংলাদেশ ‘ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কৃষি অফিসের হলরুমে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার রেহানা পারভীন।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র রায়। তিনি বলেন- আপনারা জানেন ইঁদুর প্রতিবছর কত মেট্রিক টন ধান নষ্ট করে। সরকার ইঁদুর নিধন কল্পে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন,আপনারা যদি ২শত থেকে ৫শত ইঁদুর মেরে তার লেজ কেটে কৃষি অফিসে জমা দেন তাহলে আপনাকে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে পুরস্কৃত হবেন ,শুধু তাই নয় জাতীয় পর্যায় থেকেও আপনি পুরস্কৃত হতে পারেন,তাই সরকারের সম্পদ বাঁচাতে সকল কৃষক, কৃষানী ইঁদুর নিধনে সামিল হবেন।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(উদ্যোন)মোমরাজ আলী, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহরদ,খালিদ সাইফুল্লাহ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজম, সিনিয়র সাংবাদিক প্রশান্ত বিশ্বাস, তানভীর সোহেল প্রমুখ।

এছাড়াও  সভায় শতাধিক কৃষক, কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।




গাংনীর নবীনপুরে দোয়াত আলী মাদ্রাসার শুভ উদ্বোধন

গাংনী উপজেলার নবীনপুর ধলার মাঠে দোয়াত আলী মাদ্রাসার শুভ উদ্বোধন করেছেন মেহেরপুর -২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন। আজ সোমবার বিকেলে তিনি মাদ্রাসার উদ্বোধন করেন।

মাদ্রাসার পরিচালক দোয়াত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন নওয়াপাড়া গ্রামের প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা জাবের আলী মন্ডল,সুজন আলী,রাইফেল আলী,আওয়ামীলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মাস্টার ও মনিরুজ্জামান আতু প্রমুখ।

গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক নাসিরুদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, বর্তমানে অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। ধর্মীয় শিক্ষায় মানুষের মধ্যে মানবিক গুণাবলী তৈরি হয়। হাদিস এবং কোরআনের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হলে মানুষ কখনো অপরাধ করবে না। মানুষের দ্বারা মানুষ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কোরআনের প্রকৃত ব্যাখ্যা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিলে মানুষের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ তৈরি হবে।
তিনি আরো বলেন,বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসা সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যা অন্যান্য সরকারের আমলে হয়নি। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কারো কাছে হাত না পাতারও আহবান জানান তিনি।

এ বিষয়ে এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন,সবচেয়ে নেককারজনক ঘটনা হচ্ছে মানুষের কাছে হাত পাতা। মুসলমান জাতি সর্বোচ্চ জাতি। সকল ধর্মের চেয়েও মুসলমান ধর্ম বড়। তাই মুসলমান কখনো কারো কাছে হাত পেতে ছোট হবে না। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানুষ অনেক কটুক্তি করে সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার্থীদের দিয়ে কখনো কারো কাছে হাত পেতে ছোট করবেননা। তাদেরকে অনেক বড় মানুষ বানাতে সাহায্য করবে মাদ্রাসা শিক্ষকরা। সে ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন। নতুন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রতি তিনি সহযোগিতা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন বলেও তিনি বক্তব্য দেন। সেই সাথে নতুন এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ সাফল্য কামনা করেন।




মুজিবনগরে ডেন্টাল স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

মুজিবনগরে গুডনেইবারর্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি এর আয়োজনে, কমিউনিটির সুবিধাবঞ্চিত মানুষ বিশেষ করে মহিলা ও বাচ্চাদের দাঁতের রোগের চিকিৎসা এবং ডেন্টাল স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে গুডনেইবারর্স এর বল্লভপুর প্রজেক্ট অফিস চত্বরে এই ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।

দিন ব্যাপী কমিউনিটির সুবিধাবঞ্চিত মহিলা ও শিশুদের দাঁতের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেন মো: কামরুল হাসান রিদয় (বিডিএস, পিজিটি- রাজশাহী)

এ সময় সিডিপি ম্যানেজারঃ বিভব দেওয়ান গুড নেইবারস বাংলাদেশ এর মেডিকেল অফিসার শুভ কুমার মজুমদার হেলথ অফিসার আহসানুল হক উপস্হিত ছিলেন।




সিলেটে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

যোগ্যতা

প্রার্থীকে যেকোনো বিষয়ে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে । বয়সসীমা: ২০ নভেম্বর, ২০২৩ইং তারিখে সর্বোচ্চ ৫০ বছর। অভিজ্ঞতা: স্বনামধন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্থায়ীকর্মী হিসেবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কাজ করার পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অন্যথায়, আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে ।

বেতন

বেতন ও পদমর্যাদা নির্বাচিত প্রার্থীদের কর্মক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।

কর্মস্থল

সিলেট

আবেদন প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা

যোগ্য ও আগ্রহী প্রার্থীদেরকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নিয়োগ সংক্রান্ত নির্ধারিত ওয়েবসাইট http://app.dutchbanglabank.com/Online_Job -এ অনলাইনে আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। সম্প্রতি তোলা স্ক্যানকৃত ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র, সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ এবং সর্বশেষ পে-স্লিপ এর স্ক্যানকৃত কপি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

আবেদনের শেষ তারিখ

২০ নভেম্বর ২০২৩

সূত্র : বিডিজবস




বাইডেনের তথাকথিত উপদেষ্টা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মিয়ান আরেফি আটক

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার ঘটনায় মিয়ান আরেফি, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল  রবিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে পল্টন থানায় এ মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন বাদী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিএমপির মিডিয়া উইং।

আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফির প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পর রোববার বিকেলে তিনি দেশছাড়ার চেষ্টা করলে তবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশে সোপর্দ করে।

২৮ অক্টোবর বিশৃঙ্খলার কারনে বিএনপির মহাসমাবেশ পন্ড হওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে অবঃ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন।এসময় তিনি বলেন পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের (যুক্তরাষ্ট্র) কাছে সুপারিশ করেছেন।এসময় মিয়ান আরেফি তার বক্তব্যে দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

উল্লেখ্য ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের এক সদস্য নিহত ও পুলিশের ৪১ সদস্য আহত হন। সেসময় দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে ৩০ জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হইয়েছে, ওই সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে মিয়ান আরেফির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। মিয়ান আরেফি তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।




বিএনপি কী গণমাধ্যম বিমুখ হলো?

একজন নয় দু’জন নয় ২জন সাংবাদিক বিএনপি কর্মীদের হামলায় আহত! অবাক না হয়ে উপায় কী? একজন দু’জন হলে না হয় বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়া যেতো। কিন্ত সংখ্যাটা যখন এত বেশি তখন বলতেই হবে সাংবাদিকদের ওপর বিশেষ ক্ষোভ রয়েছে বিএনপি কর্মীদের। শুধু তাই নয়, বলতে হবে এই হামলা পরিকল্পিত এবং নির্দেশিত। কিন্তু কেন? সাংবাদিকদের সঙ্গে তো রাজনৈতিকে কর্মীদের শত্রুতা থাকার কথা নয় বরং বন্ধুত্ব থাকার কথা। যুগে যুগে তাই ছিল। কিন্তু কেন জানি, এই ২৮শে অক্টোবরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০ এর গণঅভ্যূত্থানের ধারাবাহিকতা ভাঙলো।

আমাদের প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে, কোন রাজনৈতিক দল যেটা করবে সাংবাদিক সেটা প্রচার করবে। সারাদেশের মানুষ তাদের মাধ্যমেই কী হয়েছে সেটার একটা চিত্র পাবে এবং তার এই মুহূর্তের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু ২৮শে অক্টোবর আমরা কী দেখলাম? দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ভেঙে একের পর এক সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হলো। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হলো। টেলিভিশনের গাড়ি ভাঙা হলো। অদ্ভুদ। আগে কখনো এরকম দেখেছি বা শুনেছি বলে আমি মনে করতে পারছি না।

একদল লোক যাদের কাজ তথ্য সংগ্রহ করা এবং ছবি তোলা। তারা নানা ঘটনার ছবি তোলে এবং তথ্য সংগ্রহ করে। পরে এই ছবি এবং তথ্য মিলিয়ে মানুষকে খবর জানায়। তাহলে কী এখন আমরা বলবো গণমাধ্যমকে বিএনপির দরকার নেই? আমার মনে হয়, সেটা বলার যায়। কারণ আমরা জানি, গত দুই মাস ধরে বিএনপি দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা দেশের অন্যতম দুটি টেলিভিশনে যাবে না এবং কথা বলবে না।

দুই টেলিভিশনের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার সিদ্ধান্তটা অবশ্য প্রকাশ্য। গণমাধ্যমের প্রতি কোন রাজনৈতিক দলের এমন প্রকাশ্য বিদ্বেষ অবশ্য বিরল। কিন্তু কাজটি তারা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় চিন্তা করলে বলা যায়, সাংবাদিকদের প্রতি বিএনপি কর্তৃপক্ষের বিদ্বেষ রয়েছে। আরও বলা যায় এই বিদ্বেষ সদ্য নয়। বেশ পুরোনো। না হলে একদিনেই ২৭ জন সাংবাদিকের ওপর হামলার সিদ্ধন্ত নেয়া যায় না।

আমি আহত কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বেশিরভাগই ফটো সাংবাদিক। তারা প্রত্যেকেই কাজ করছিলেন। অর্থাৎ এই হামলা মাঠে কর্মরত সাংবাদিকের ওপর হামলা। যারা হামলা শিকার হয়েছেন, তারা নিজের পরিচয় লুকাননি। যে কারণে বিএনপি কর্মীদের হামলার জন্যে তাদের খুঁজে বের করতে দেরি হয়নি। পরে কেউ কেউ অবশ্য পরিচয় লুকিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন।

২৮শে অক্টোবর নিশ্চয়ই সাংবাদিকরা বার্তা পেয়ে গেছেন যে, এখন থেকে বিএনপির খবর সংগ্রহ করতে হলে সাবধানে করতে হবে। সেই সাবধানতা বিএনপির জন্যে কতটুকু ভালো হবে, আমি জানি না। কিন্তু সাংবাদিকদের অনেকেই বিএনপির কর্মসূচির্ খবর সংগ্রহ করার ঝুঁকি নিতে চাইবেন না, এটা এখন স্বাভাবিক। এই সরল সত্য বোঝার ক্ষমতা বিএনপি নেতাদের নেই, সেটা ভাবতে চাই না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন বিএনপি প্রচলিত গণমাধ্যমকে এমন বার্তা দিল? তারাতো একটি রাজনৈতিক দল। নিজেদের কথা তো বলতেই হবে। তাহলে মাধ্যমটি কী হবে? এখনতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া, আমি কোন মাধ্যম দেখছি না। তারা যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর হয়ে পড়েছে, সে নিয়ে অবশ্য সন্দেহ থাকার কথা নয়। সেকথা পাঠক্ও নিশ্চই জানেন। কিন্ত প্রচলিত গণমাধ্যম ফেলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর কতটা ঠিক হলো?

চরিত্র অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে যা খুশি তাই বলা যায়। কিন্তু একজন গণমাধ্যম কর্মী কখনই যা খুশি তা বলতে পারেন না। কিছু বলতে হলে তাকে নানা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে বলতে হয়। তার ক্লু লাগে সোর্স লাগে। নিশ্চিত হওয়ার দরকার পড়ে। তাই একজন সাংবাদিক যেটা বলেন সেটার ওপর মানুষ ভর করতে পারেন। কিন্তু সত্যের জন্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধমের ওপর ভরে করলে সেই ফল যে খুব ভালো হওয়ার কথা নয়, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

সা্ংবাদিক তার কাজের পদ্ধতির কারণে হয়তো বিএনপিকে খুশি করতে পারছে না। যেকারণে তারা আজ প্রচলিত গণমাধ্যম বিমুখ। এখন বিএনপির এই প্রচলিত গণমাধ্যম বিমুখতার সূত্র ধরে কেউ যদি বলে, এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধেমে সরকার বিরোধী যত প্রপাগাণ্ডা এসবই বিএনপির পরিকল্পিত তিনি কী ভুল বলবেন? কেউ যদি বলেন সাংবাদিকদের হামলার পরিকল্পনা এবং সরকার বিরোধী প্রপাগাণ্ডার পরিকল্পনা একই সূত্রে গাঁথা, তিনিও কী ভুল বলবেন?

তাদের কথা ভুল না ঠিক সেটা আমার মূল আলোচনা নয়। মূল কথা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর ভর করে বৈতরনী পার হওয়া যাবে না। কারণ তারা একটি রাজনৈতিক দল। সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা বলে তাদের জন্ম। কিন্তু আমাদের এখনকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভরকেন্দ্র হচ্ছে ঘৃণা। এই ঘৃণা দিয়ে আর যাই হোক, মানুষের কল্যাণ করা যায় না।

এই লেখা লিখতে লিখতেই খবর পেলাম, শনিবারের সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিভাগ এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকদের ওপর হামলাসহ প্রতিটি সহিংসতা পর্যালোচনা করা হবে। সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য এই সহিংসতা আমলে আসবে। আপাতত আর কিছু বলতে চাই না। শুধু বলি, মাথাভরা ঘৃণা থাকার ফল যে ভাল কিছু আনে না, তা প্রমাণের জন্যে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না।

লেখক: গণমাধ্যম কর্মী।