ঝিনাইদহে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত

“পুলিশ -জনতা ঐক্য করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ডে -২০২৪ উদযাপন করা হয়েছে।

আজ শনিবার(৪অক্টোবার) সকাল ১১টায় ঝিনাইদহ পুলিশ লাইন ময়দানে এই উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো: আজিম- উল- আহসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আব্দুল হাই (এমপি), বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি (এমপি), খালেদা খানম ( মহিলা এমপি), ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি কনক কান্তি দাস, পৌরসভার মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল, সরকারি কে.সি কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার মৌলিক, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ কমিউনিটি পুলিশিং এর বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান।

বক্তারা বলেন পুলিশ জনগণের বন্ধু এবং পুলিশি জনতা জনতায় পুলিশ, এখন পুলিশকে আর মানুষ আগেরমত কেউ ভয় পায়না, বিপদে পড়লে সবাই পুলিশের সহযোগিতা নেয়, পুলিশ ছাড়া দেশ একদিনও চলতে পারে না। মানুষের নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা অগ্রগণ্য। এছাড়াও দুর্যোগ দুর্বিপাকে পুলিশের সেবা নিয়ে থাকি। পুলিশকে আরও পেশাদারিত্বের ভূমিকা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান।

আলোচনা শেষে ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশ অফিসার হিসেবে ঝিনাইদহ সদর থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মোঃ শরিফুল ইসলাম শরীফ কে এবং কয়েকজন কমিউনিটি পুলিশ সদস্যকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।




আরও শক্তিশালী হলো ‘গুগল প্লে প্রোটেক্ট’

ব্যবহারকারীরা যাতে নিরাপদ অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন সেজন্য ‘গুগল প্লে প্রোটেক্ট’-কে আরও উন্নত করল গুগল। নতুন আপডেটের মাধ্যমে থার্ড পার্টি অ্যাপ স্ক্যান ও পর্যবেক্ষণে অধিকতর শক্তিশালী হলো এটি।

গুগল প্লে প্রোটেক্ট সম্ভাব্য ক্ষতিকারক অ্যাপগুলো ডাউনলোড করার আগে বিশ্লেষণ করে। অ্যান্ড্রয়েড নিয়মিতভাবে অ্যাপগুলোকে ম্যালওয়্যারের জন্য স্ক্যান করে। যেকোনো খারাপ অ্যাপ আনইনস্টল করার জন্য ব্যবহারকারীকে অনুরোধও করে।

সম্ভাব্য ক্ষতিকারক অ্যাপ্লিকেশন (পিএইচএ) আছে কি না তা নির্ধারণ করতে গুগল প্লে প্রোটেক্ট ক্লাউডভিত্তিক অ্যাপ ভেরিফিকেশন পরিষেবাগুলো ব্যবহার করে। পিএইচএর প্রমাণের জন্য গুগল প্লে প্রোটেক্ট ডিভাইস স্ক্যান করে। তা ডিভাইসের সব অ্যাপ পরীক্ষা করে।

প্লে প্রোটেক্ট ফিচারটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনকে ম্যালিশিয়াস বা ভাইরাসযুক্ত অ্যাপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে, কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করার পর, গুগল প্লে প্রোটেক্ট প্রথমে সেটিকে স্ক্যান করবে, যেন অ্যাপটি ব্যবহারের জন্য নিরাপদ কি না তা জানিয়ে দিতে পারে ব্যবহারকারীকে।

এদিকে, প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এভাবে থার্ড পার্টি অ্যাপের ওপরও গুগল নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এক বা দুইবার শর্ত লঙ্ঘন করলেই আর অ্যাপে অ্যাক্সেস করা যাবে না। তবে থার্ড পার্টি অ্যাপ স্ক্যান করতে পারলে গুগল অনেক ম্যালওয়্যার বাদ দিতে পারবে। ম্যালওয়্যার বাদ দিতে পারলে অনেকটাই সুবিধা।

সূত্র: ইত্তেফাক




রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি রাচিনের

নিজের অভিষেক বিশ্বকাপে নতুন এক রেকর্ড গড়লেন রাচিন রবীন্দ্র। তরুণ এই ক্রিকেটার পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে করলেন অভিষেক আসরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড।

এদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। শুরু থেকে পাকিস্তান বোলারদের উপর চড়াও হয় কিউই ব্যাটাররা। শুরু থেকে নিজের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৮৮ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন রবীন্দ্র।

আর এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে বিশ্বকাপের অভিষেক আসরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন রবীন্দ্র। এছাড়া মেগা এই টুর্নামেন্টে তার করা তৃতীয় শতক নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের মধ্যেও সর্বোচ্চ। এর আগে কিউইদের ৬ ব্যাটার বিশ্বকাপে দুটি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

এছাড়া সবচেয়ে কম বয়সে তিন সেঞ্চুরি পেয়েছেন রবীন্দ্র। আজ তার বয়স দাঁড়িয়েছে ২৩ বছর ৩৫১ দিনে। এর আগে সর্বনিম্ন ২২ বছর ৩১৩ ‍দিন বয়সে ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছিলেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে ১১ টি চোরাই মোটরসাইকেল সহ আটক ৩

ঝিনাইদহে ১১ টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দক্ষিণবঙ্গের আন্ত:জেলা চোরচক্রের তিন জনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই ১১ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়। আজ শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান জানান, ঝিনাইদহ শহর থেকে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনায় গত মাসের ২২ তারিখে সদর থানায় মামলা করা হয়। এরপর গোপন তথ্যে পরদিন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানা এলাকা থেকে মোটর সাইকেল চুরির দক্ষিণবঙ্গের আন্ত:জেলা চোর চক্রের মুলহোতা মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে জড়িত আরো দু-জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এই অঞ্চলের ১৮ টি জেলায় মোটর সাইকেল চুরির সাথে জড়িত। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার রাতে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ, শ্যামনগর, আশাশুনি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই ১১ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোটর সাইকেলগুলো পর্যায়ক্রমে তাদের মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়।

সেসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইমরান জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এসএম রাজু আহম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মীর আবিদুর রহমান, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীন উদ্দিন, এসআই ফরিদ হোসেনসহ পুলিশের উদ্ধতন কর্মকর্তারা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হল, সাতক্ষীরা জেলার বংশিপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী, ভ্যাটখালী গ্রামের মনিরুজ্জামান, খুলনা জেলার চালনা গ্রামের হেলাল। মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া সহ বিভিন্ন থানায় ১৫ টি মামলা রয়েছে।




মেহেরপুরে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

“সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যে মেহেরপুরে ৫২ তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‍্যালীর আয়োজন করা হয়।

শনিবার (৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে বারোটার দিকে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমবায় কার্যালয়ের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়‌‌।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ রোকনুজ্জামান তুষারের সঞ্চালনায় এসময় জেলা সমবায় কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র বালা,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভার আগে একটা র‍্যালী বের করা হয়। র‍্যালী জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু করে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলন করা হয়।




মেহেরপুরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত

‘পুলিশ-জনতা ঐক্য করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ প্রতিপাদ্যে মেহেরপুরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২৩ পালিত হয়েছে।

আজ শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় মেহেরপুর পুলিশ লাইনের ড্রিলশেডে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০২৩ আলোচনাসভা, শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের পুরস্কার প্রদানসহ নানা আয়োজন করা হয়।

কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মেহেরপুর জেলায় ২৭ টি বিটে কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।

প্রধান অতিথি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, “কমিউনিটি পুলিশিং একটি সংগঠনভিত্তিক দর্শন ও ব্যবস্থাপনা, যা জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনগণ ও পুলিশের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সমাজে অপরাধ ভীতি হ্রাস সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি একটি গণমুখী, প্রতিরোধমূলক এবং সমস্যা সমাধানমূলক পুলিশি ব্যবস্থা।’

পুলিশ সুপার মেহেরপুর রাফিউল আলম বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশ-জনগণের মিথস্ক্রিয়ার ফলে পুলিশের কাজে জনগণের আস্থা, অংশগ্রহণ, সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও অপরাধ বিরোধী সচেতনতা তৈরি, বাল্যবিবাহ রোধ, ইভটিজিং প্রতিরোধ, জঙ্গিবাদ দমন, সন্ত্রাস দমন, মাদকের কুফল, নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক নিরোধ ও সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধিতেও কমিউনিটি পুলিশিং বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ‘

পুলিশ সুপার মেহেরপুর মোঃ রাফিউল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর ১ সংসদীয় আসনের এমপি ফরহাদ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন মেহেরপুর ২ সংসদীয় আসনের এমপি সাহিদুজ্জামান (খোকন), জেলা প্রশাসক মেহেরপুর শামীম হাসান ও জেলা পুলিশিং কমিউনিটির সভাপতি ডা. এম এ বাশার প্রমুখ।




শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছেড়ে কেন সহিংস বিএনপি?

বিএনপির সহিংস রাজনীতিতে ফিরে আসা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে যে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছিল সেই পথেই আবার ফিরতে গিয়ে জামায়াতের সঙ্গে আবারও একাত্ম হয়েছে দলটি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জামায়াতকে সাথে নিয়ে প্রথম থেকেই বিএনপি মারমুখী ছিল। বিএনপিকে যখন নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছিল ঠিক সেই সময় বিএনপির অনড় অবস্থান দেখে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে বিএনপি এবার সহিংস রূপে আবার ফিরে আসবে।

নয়াপল্টনে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর অবরোধ কর্মসূচির নামে আবারো জ্বালাও পোড়াও ও আগুন সন্ত্রাসের ঘটনায় আবার প্রমাণ হয়েছে বিএনপি মুখে যতোই না করুক না কেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিলো এবং আছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে গত কয়েকদিন ধরেই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির নতুন করে সম্পর্ক হয়েছে। এই সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে জামায়াত বিএনপির সাথে সমান্তরালভাবে আবার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা শুরু করেছে। জামায়াত শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ ডেকেছিল। কিন্তু জামায়াত যেহেতু নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়, সেই জন্য শাপলা চত্বর এলাকায় সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জামাত শেষ পর্যন্ত আরামবাগ এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করে। যেহেতু জামায়াত বিএনপির প্রধান মিত্র এবং তারা শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে পারছে না, সে কারণেই একটা ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য বিএনপি চেষ্টা করেছে।

তবে ২৮ অক্টোবরের হামলা ও নাশকতার মামলায় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আটকের কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিএনপির সহিংসতার পিছনের কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় সারির এক নেতা বলেন, সহিংস হয়ে ওঠা ছাড়া এসময় বিএনপির আর কোন পথ নেই। শেষ আঘাত হিসেবে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিলো। জনগণের এটুকু ভোগান্তি হবে সেটাও আমাদের হিসেব নিকেশের ভেতরই ছিলো। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে অন্য কিছু করার নেই।

২৮ অক্টোবর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশের দিন ব্যাপক সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুই জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনার পর আটক করা হয়েছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আরো অনেককে। বিএনপির ডাকে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতাল পালিত হয়েছে। এই হরতালের সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাসহ মোট তিন জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ শেষে আবারও ৫ ও ৬নভেম্বর দেশব্যাপী অবরোধের ডাক দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের খপ্পরে পড়েই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথ ছেড়ে আবারও আগুনের পথে।

আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহিংসতা বিষয়ে বলেন, ‘বিএনপি শুধু সন্ত্রাস চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তারা মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের মাধ্যমে তথ্য-সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। যার মধ্য দিয়ে তাদের চিরাচরিত মিথ্যাচার-অপপপ্রচার ও গুজবের প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাস বিএনপির রাজনীতির মূল অস্ত্র। এখন তারা তথাকথিত নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের আড়ালে পুনরায় সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘অবরোধের নামে জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা, আর অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি-জামায়াত জোট কার্যত দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। বিএনপি-জামায়াতের তথাকথিত আন্দোলনের ভয়ে কিংবা তাদের বিদেশি প্রভুদের ইচ্ছায় বাংলাদেশ চলবে না। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন না, তাদের আসল উদ্দেশ্য আগুনসন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের পথে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে নির্বাচন বানচাল করা এবং অস্বাভাবিক-অসাংবিধানিক সরকার আনা। বিএনপি জামায়াত সম্মিলিতভাবে যে ধ্বংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ করতে চেষ্টা করছে সেটা জনগন মেনে নিবে না।

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন শমশের মুবিন চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, ‘২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশ চলাকালে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সহিংস ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ তার দায়িত্ব পালনকালে দুর্বৃত্তের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন, বাংলাদেশ প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে যে হামলা করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। সরকারি হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ দেওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। রাজনীতি দেশ এবং দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। জীবন কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। আমরা দেশের সুষ্ঠ রাজনীতির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।’

সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক মনে করেন জামায়াত কোনদিনই বিএনপিকে ছেড়ে যায়নি। আর বিএনপি কৌশল হিসেবে জামায়াত বিচ্ছিন্নতা প্রমাণ করতে চেয়েছে। সামনে যাই দেখাক না কেনো তারা একই মায়ের পেটের সহদর। এটা বলছি তার কারণ তাদের জন্ম হয়েছে সন্ত্রাস করতে।




বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকে নিয়ে যা বললেন ইশরাক

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের পর দলটির কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা আরেফির মিথ্যাচার ছড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকায় দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। লাইভে এসে তিনি এই কথা বলেন।

বিএনপির কার্যালয়ে বসে মার্কিন নাগরিক মিয়া আরেফির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ইশরাক হোসেন লাইভে বলেন, ‘আরেফি তার বক্তব্য রাখার এক পর্যায়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলা শুরু করে, যার মধ্যে কূটনৈতিক শিষ্টাচার ছিলো না। কিন্তু ওই মুহূর্তে সংবাদ সম্মেলন থেকে ক্যামেরার সামনে থেকে উঠে যাওয়ার ইচ্ছা হলেও তা পারেননি বলে জানিয়েছেন ইশরাক হোসেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন যে, ২৮ অক্টোবর তিনি কয়েকটি ‘গুলিবিদ্ধ’ হয়েছিলেন এবং ট্রমাটাইজ ছিলেন। পুরো বিষয়টি বুঝে ওঠার আগে আরেফির সংবাদ সম্মেলনটি ঘটে গেছে, বলে তিনি যোগ করেন। সেই সময় কারও সাথে কথা বলার মতো পরিস্থিতি ছিলো না। এই অবস্থায় যা হয়েছে তা করা উচিত হয়নি জানিয়ে সবার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন আরও জানিয়েছেন, ঘটনাটির পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় রুহুল কবির রিজভীকে পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করেন। তিনি কোন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন, তা তিনি রিজভীকে বুঝিয়ে বলতে সক্ষম হন। ঘটনাটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করতে তিনি রিজভীকে অনুরোধ করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে মুখ ঢেকে তিনি গন্তব্যে পৌঁছে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহিরউদ্দিন স্বপন এবং দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের মাধ্যমে দলের মহাসচিবকে পুরো ঘটনাটি জানান। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গেও তখন তিনি যোগাযোগ করে পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন। বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকেও বিষয়টি অবহিত করে দুঃখপ্রকাশ করেন।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মার্কিন নাগরিক মিয়া আরেফি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, বিএনপির অফিসে বসে সে যা যা বলেছে, তা তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই শিখিয়ে-পড়িয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বেতনভুক্ত সাংবাদিক মুশফিকুর ফজল আনসারীর বন্ধু সে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা জামায়াতে ইসলামির লোকজনের কাছে আরেফিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় মুশফিকুর ফজল আনসারী। আরেফি বাংলাদেশে তৎপরতা চালানোর সময় তার যাবতীয় ব্যয়ভার জামায়াতে ইসলামিকে বহনে রাজি করায় মুশফিকুর। পুরো কাজটির জন্য তারেক রহমানের অনুমতি জোগাড় করে মুশফিক। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন ও ইশরাক হোসেনকে বার্তা দেন তারেক। ফলে বিএনপি অফিসে সহজে ঢুকতে পারে আরেফি আর সারওয়ার্দী। এভাবেই এই ঘটনায় যোগ দেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।

মিয়া আরেফি বাংলাদেশে কার সঙ্গে থেকে কাজ করবে তাও বলে দেয় জামায়াতে ইসলামি। লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সারওয়ার্দীকে সামনে রেখে অন্তর্বতী সরকারের কাঠামোর দাঁড় করাতে চাইছে জামায়াত। সেই সারওয়ার্দী আরেফির দায়িত্ব নেন।

২৮ অক্টোবর আরেফিকে নিয়ে বিএনপি অফিসে যান সারওয়ার্দী। বিএনপি হাই কমাণ্ডের নির্দেশ ও মুশফিকুর ফজল আনসারীর আনসারীর অনুরোধে সংবাদ সম্মেলন করে আরেফি। সেখানে আরেফি আর সারওয়ার্দীর মাঝখানে বসে থাকতে দেখা গেছে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে। ভুয়া উপদেষ্টা আরেফির মিথ্যাচার ছড়িয়ে পড়লে মার্কিন দূতাবাস তার ব্যাপারে সত্য তথ্য জানিয়ে দেয়। এরপর তাকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়।




চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আয়োজনে জেল হত্যা দিবস পালিত

যথাযথ মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গতকাল ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস পালন করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী যুবলীগ।জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে সকালে নানা কর্মসূচি পালিত হয়।

প্রথমে গতকাল শুক্রবার সকালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর, কারা অভ্যন্তরে ঘাতকের নির্মম বুলেটে শহীদ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড় সংলগ্ন মোহাম্মদী শপিং কমপ্লেক্সে জেলা যুবলীগের কার্যালয়ে শোক-কালো পতাকা উত্তোলন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এরপর নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, সামসুদ্দোহা মল্লিক হাসু ও জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর শহীদ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধায় পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর বিকেলে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জেলা যুবলীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার। জেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহবায় সামসুদ্দোহা মল্লিক হাসুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজেদুল ইসলাম লাভলু, আজাদ আলী, হাফিজুর রহমান হাপু, আবুবক্কর সিদ্দিক আরিফ, আলমগীর আজম খোকা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহ্বায়ক, খাসকররা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাছফির আহমেদ মল্লিক লাল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা পীরু মিয়া, শেখ শাহী, বিপুল জোয়ার্দ্দার, টিটু, জুয়েল জোয়ার্দ্দার, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রামীম হোসেন সৈকত, দিপু বিশ্বাস, তানভীর রেজা টুটুল,পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিউল শেখ সুইট, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শেখ রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সার্বিক সদস্য খালিদ মন্ডল, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি রানা, সাধারণ সম্পাদক খানজাহান আলী, ৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুল আলিম, সহ-সভাপতি জুয়েল, ৭ নং যুবলীগের সভাপতি আসাদুর রহমান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম, মোমিনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোমিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছোট, বঙ্গ, শিমুল, মুনাজাতে, মিন্টু, মোমিন, বাবু, লিপ্টন, রাজন, মাফুজ, পারভেজ, সেফাত, হাসিব, আবির, তন্ময়, জনি, সিকদার, সাব্বির, জিতু, জিনারুল, বিপ্লব, শাহিন, লাল্টু, নাইম , জাহাঙ্গীর, রুবেল, তানজিল, সঞ্জু, বাচ্চু, জাহিদ, সাকের, আরাফাত, রসূল, রতন, রজত, রনি, ইমরান, সোহেল, তুষার, সোহান, আলামিন, ইয়াসিন, রবিন, নয়ন, নাজমুল, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান ফেরদৌস, নোমান, সাহেদ, সাকিব, বিপুল, আলী, তানজির, মিশা, কাফি, ছাত্রলীগ নেতা ইমাদ ওয়াসিম, শাকিল, সাব্বির, জিম, আরিন, জুয়েল, সবুজ, কবির, শরিফুল, হৃদয়, শরিফ, রুবেল, শাকিল সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন নতুন এস্টেডিয়াম জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মোঃ ওমর ফারুক।




মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল উদ্বোধন আজ

অপেক্ষার পালা শেষ। শনিবার থেকে মেট্রোরেলের হুইসেল বাজবে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকার তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে চাইলেই মিলবে মুক্তি। এর মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিলে তৈরি হচ্ছে নতুন গতির পথ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও ৯টি স্টেশনের পর এবার যুক্ত হবে নতুন ৭টি স্টেশন, যা জানান দিচ্ছে নগরের উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণের নতুন সংযোগের।

মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ শনিবার (৪ নভেম্বর) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হবে এই পথে বাণিজ্যিক যাত্রা। আর এর মধ্য দিয়ে রাজধানীর উত্তর থেকে দক্ষিণে চলাচলকারীদের যাপিত জীবনে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত চার কর্মঘণ্টা! উত্তরা থেকে মতিঝিল শুনলেই নিয়মিত যারা এই পথে চলেন তাদের ভাবনায় চলে আসে দুই থেকে তিন ঘণ্টার পথ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পাশাপাশি মোটা অংকের ভাড়া দিতে হয় উবার বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে। অথচ মাত্র বিশ থেকে বাইশ কিলোমিটার পথ। ছয় কিলোমিটার গতিতে চলা এই নগরবাসী তাই বরাবরই রাজপথে বড্ড অসহায়।

এসব এখন পিছে ফেলে রাজধানীবাসী ফিরে পাবে প্রাণ। প্রাথমিকভাবে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল ৩টি স্টেশনের যাত্রায় উত্তরা থেকে ৩১ মিনিট সময় লাগলেও সব কটি স্টেশন চালু হলে লাগবে ৩৮ মিনিট। অর্থাৎ হিসাব বলছে, উত্তরা থেকে একবার মতিঝিল যেতে কর্মঘণ্টা বাঁচবে দুই ঘণ্টা। এবার যাওয়া-আসার এই হিসাব মেলালে প্রতিদিন এই পথে সাধারণের ঝুলিতে যুক্ত করবে চার কর্মঘণ্টা।

প্রথম পর্বে ওপরের গতির পাশপাশি নিচের সড়কের সুফল এখন দৃশ্যমান। তাই এই পথেও যাত্রী যখন উপরে উঠবে চাপ কমবে নিচে, কিছুটা হলেও ফিরবে স্বস্তি। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমে আসবে বলে ধারণা করছেন নগর পরিকল্পনাবিদেরা। প্রথম ধাপে উত্তরা-আগারগাঁও দুই পাশের মতো শাটল সার্ভিস দিয়ে ফর্মগেট, শাহবাগ ও মতিঝিলের মতো স্টেশনগুলো থেকে যদি মেট্রো যাত্রীদের বের করে দেয়া যায়, তাহলে মিলবে পুরোপুরি সুফল।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, যাত্রীরা প্রত্যেকেই যাতায়াতে দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় বাঁচাতে পারবেন বলে ধারণা করছি। এ ছাড়াও এর ফলে নিচের রাস্তায় চাপ কমবে। এতে যানজট থেকে অনেকটা স্বস্তি পাবেন নগরবাসী। পুরো কার্যক্রম শুরু হলে মানুষের চলাচলে অনেক স্বস্তি মিলবে।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। এরপর উত্তরা-আগারগাঁও মেট্রোরেলের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরই মধ্যে এই অংশের সব স্টেশন চালু হয়েছে। এখন মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল।
শনিবার উদ্বোধন হওয়ার পরে রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে উত্তরা ও মতিঝিলে একই সময় ছাড়বে নিয়মিত মেট্রোরেল। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম প্রথম মতিঝিল থেকে উত্তরা (২০.১ কিলোমিটার পথ) যেতে ৩৮ মিনিট সময় লাগবে।

মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে উত্তরা অংশের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে গত ১ নভেম্ব) রাজধানীর পরিবাগে ডিএমটিসিএল কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেলের স্বাভাবিক চলাচল। ওইদিন মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল যাবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে ৭ জুলাই মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।