জনপ্রিয়তা থাকলে আগুনসন্ত্রাসের প্রয়োজন কেন?

জনমুখী রাজনীতি করলে যেকোনো সরকারের অধীনে নির্বাচনে সফল হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ড. মো. হাবিবুর রহমান। বিদেশি শক্তি নিজের স্বার্থে বাংলাদেশে দুর্যোগ কায়েম করছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী। জনসংযোগ না থাকলে অপরাজনীতি সন্ত্রাসের পথে, গণতন্ত্রবিরোধী পথে যায় বলে মনে করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

গতকাল শুক্রবার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের কাজী আকরাম খাঁ হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ ইআরডিএফবি।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে বিনাপুঁজির ভালো ব্যবসা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ ধর্মান্ধতা আর অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে এসব দেশে বিস্তৃত হচ্ছে।’ জনমুখী রাজনীতি করলে যেকোনো সরকারের অধীনে নির্বাচনে সফল হওয়া সম্ভব, তার উদাহরণ হিসেবে ১৯৭০এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জয়লাভের কথা মনে করিয়ে দেন ড. মো. হাবিবুর রহমান। হৃদয়ে দেশাত্মবোধ থাকলে সকলকে অপরাজনীতি না করার আহ্বান জানান তিনি।

কেন বিএনপির ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ প্রশ্ন তুলে ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পেছনে ফিরে গেলে স্বার্থসিদ্ধি করা যায়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে একবার ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশের অগ্রগতি রুখে দিতে কারাগারের মতো সুরক্ষিত স্থানে চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিলো, বলেন তিনি।’

হত্যাকাণ্ডকে অপরাজনীতির নিকৃষ্টতম পথ হিসেবে উল্লেখ করেন ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭০এর নির্বাচনে জয় পেয়েও বঙ্গবন্ধুকে যে ক্ষমতা নিতে দেওয়া হয়নি, তার মধ্য দিয়েই এই অঞ্চলে অপরাজনীতির গোড়াপত্তন হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, শিশু রাসেলকে হত্যা অপরাজনীতির নিকৃষ্টতম উদাহরণ বলে মত দেন তিনি। সেই অপরাজনীতি এখনো চলমান, তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ১৮-১৯ বার হত্যাচেষ্টা হয়েছে এবং পুলিশ হত্যা হয়েছে বলে সভায় বলেন তিনি। রাজনীতিতে জনপ্রিয়তা ও জনগণের মাঝে ভিত্তি থাকলে মানুষকে পিটিয়ে মারা বা আগুনসন্ত্রাসের কী প্রয়োজন, প্রশ্ন তুলে নুজহাত চৌধুরী বলেন, যে দলের জন্ম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়নি, যে দল কোনো বিদেশি স্বার্থে এবং দেশের ভেতরের স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থে তথাকথিত রাজনীতি করে, সেই কার্যকলাপই অপরাজনীতি।

বাংলাদেশে বিদেশি স্বার্থ না থাকলে স্বাধীন দেশের নির্বাচন ও বিচার প্রক্রিয়ায় বিদেশি শক্তি নাক গলাচ্ছে কেন, প্রশ্ন তুলে নুজহাত চৌধুরী জানতে চান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিদেশি শক্তির নাক গলানোর, বিরোধিতা করার অর্থ কী? কান টানলে যেভাবে মাথা আসে, সেভাবে বিএনপিকে টানলে জামায়াতে ইসলামী আসবে, জামায়াতকে টানলে হেনরি কিসিঞ্জার আসবে, জানান তিনি। গণতান্ত্রিক পথ থেকে সরে আসা যাবে না বলে জানিয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, অপরাজনীতি সবসময় রক্তপাত, সন্ত্রাসেই পর্যবসিত হয় এবং জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায়। বাঙালি নিজের মঙ্গল বুঝলে ভোট ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের সমর্থন থাকবে বলা আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একাত্তর পরবর্তী সময়ে মজুতদাররা যেভাবে দেশকে অস্থির করেছিলো, আজকের মজুতদারেরাও একইভাবে থাবা বিস্তার করছে বলে আশঙ্কা জানান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি বলেন, ‘তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দিয়ে অপরাজনীতির বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই সন্ত্রাসের পথে হাঁটেননি। বরং জনসংযোগ না থাকলে অপরাজনীতি সন্ত্রাসের পথে, গণতন্ত্রবিরোধী পথে যায়।’

পশ্চিমাদের অর্থে দেশের দরিদ্র ও নারীদেরকে কৌশলে জঙ্গিবাদে যুক্ত করা হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসাইন। পার্বত্য চট্টগ্রামে জঙ্গিদের ঘাঁটি করা নিয়েও উদ্বিগ্ন তিনি। এসব জঙ্গিরা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে জানিয়ে তিনি বলেন,‘ আমাদের শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করার সময় হয়েছে।’

আজ যারা মানবাধিকারের কথা তুলছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সময় মানবাধিকার কোথায় ছিলো, প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি, শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করাই অপরাজনীতি।’ বিএনপির ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘মানুষ মেরে গাছে ঝুলিয়ে রাখা, দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া, ২৪ ঘণ্টায় ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎহীন থাকা, জঙ্গি হামলার বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই কি না।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনের সিদ্ধান্ত ভোটের মাধ্যমে নেয়ার পক্ষে মত দেন ড. মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে যুক্ত হতে বাংলাদেশে শিক্ষা, গবেষণা আর উন্নয়ন একসাথেই চলমান থাকবে। বিদেশিরা কেন আমাদের দেশে সন্ত্রাসকে উস্কে দিচ্ছে।’ ফিলিস্তিনে বোমাবর্ষণ নিয়ে বিদেশিদের কেন কোনো বক্তব্য নেই, অথচ বাংলাদেশে অপরাজনীতি কেন বিস্তৃত হতে দেয়া হচ্ছে, জানতে চান ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান বলেন,‘ দেশের সার্বভৌমত্বে মাঝেমধ্যে বিদেশি শক্তির আঘাত আসে। মার্কিন বিশেষ ভিসানীতিকে আমাদের দ্বাদশ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা। ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে দেশে অপরাজনীতির যে গোড়াপত্তন হয়েছিলো, তাকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বিভিন্ন সময়ে দেশের মাথাপিছু আয়ের দৃষ্টান্ত সামনে এনে তিনি দেখান, অসাংবিধানিক সরকারের অধীনে দেশের উন্নতি হয় না। আসন্ন নির্বাচনের সময় বিষয়টি সবার মনে রাখা জরুরি বলে জানান তিনি।




জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি চক্রান্ত করছে। কিন্তু আমাদের শক্তি জনগণ। বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে, শত বাধা অতিক্রম করে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেন বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। এদেশের মানুষের নির্বাচন কেউ বানচাল করতে পারবে না।’

গতকাল শুক্রবার জাতীয় চারনেতার হত্যা দিবস স্মরণে আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেণ, ‘ওরা নানাভাবে অপচেষ্টা করবে। আওয়ামী নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভোটের অধিকার যেনো নিশ্চিত থাকে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট যেন দিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারা যদি নির্বাচনে আসেও সেটা নমিনেশন বাণিজ্যের জন্য আসবে। মানুষের জানমাল যেনো ক্ষতি না করতে পারে সেই সুরক্ষা দিতে হবে। এটাই আওয়ামীলীগের দায়িত্ব।’

তিনি জাতীয় চারনেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘যে রক্ত দিয়ে লাখো শহীদ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, নির্যাতিত মা বোন, জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড, চার নেতার হত্যা, হাজার হাজার নেতাকর্মী যারা সংগ্রাম করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন তাদের কথা স্মরণে রেখে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্ত, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২৫মার্চ গণহত্যা শুরু পরেরই স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এর আগে ৭ মার্চ তিনি ভাষণে বলেন- যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। সেই নির্দেশনা মেনে এদেশের মানুষ যুদ্ধে যায়। জাতীয় ৪ নেতাসহ সব নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধ পরিচালনা করতে হবে। সেটা করেই আমরা জয় লাভ করি। দুর্ভাগ্য যে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়। এরপরেই কারাগারে ৩ নভেম্বর চারনেতাকে হত্যা করা হয়।’

এই হত্যাকান্ডের পিছনে ছিলো খুনি মোস্তাক জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, খুনিচক্রের মুল শক্তি ছিলো জিয়াউর রহমান। সেনাবাহিনীতে উপসেনাপ্রধান হিসেবে যাকে রাখা হয়েছিল সেই ছিলো এই ষড়যন্ত্রে সক্রিয়। মোস্তাক টিকতে পারেনি, জিয়া ক্ষমতায় চলে আসে। এরা চক্রান্ত করে জাতির পিতাকে হত্যা করেছে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকের বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বিভৎস চেহারা, পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা এসব এই প্রথম হলো তা না। ২০১৩ তে, ২০১৫তে ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে অত্যাচার করে, আটক রেখে আগুন দিয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। অগ্নি সন্ত্রাসে যে যেখানে থাকুক, যেই আগুন দিবে সাথে সাথে তারে প্রতিরোধ করতে হবে। এখন আবার অবরোধ দিয়েছে। এর আগেও দিয়েছিল। অফিসে বসে থেকে শেষমেষ তারাই অবরুদ্ধ হয়েছিলো। মানুষ অবরোধ মানে নাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপার্সন এতিমের টাকা মেরে নেওয়ার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার বোন ভাই দেখা করেছে, সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কুলাঙ্গার পয়দা করে রেখে গেছে জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশকে অস্ত্র চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিলো। মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামরায় সে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সন্দেহ নেই। খালেদা জিয়া বলেছিলো, আওয়ামীলীগ একশবছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এটা বলতে পেরেছিলো তা বুঝা যায়। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বানিয়ে দিয়েছি আর সে ওখানে থেকে জ্বালাও পোড়াও নির্দেশ দেয়। এরা কিসের রাজনীতি করে? এরা মানুষ পুড়িয়ে রাজনীতি করে? কার স্বার্থে রাজনীতি করে? আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকারে এসেছি। ওয়াদা দিলে ওয়াদা রাখব।’




চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের নিয়মিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর পদধ্বনি -১৫১১ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় শহীদ আলাউল হলে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাপ্তাহিক পদধ্বনি অনুষ্ঠিত হয় ।  ১৫১১ তম এই আসরে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নজমুল হেলাল।

স্বরচিত লেখা পাঠ করেন গোলাম কবীর মুকুল, এম এ মামুন, নটরাজ হারুন অর রশিদ, আবু নাসিফ খলিল, হুমায়ুন কবীর, বনলতা,শহিদুল ইসলাম,জি এম জোয়ার্দ্দার , ডা.তোফাজ্জল হোসেন,রোকসানা জেবা,হোসেন মোহাম্মদ ফারুক, গুরু কাজল,আনছার আলী, সুমন ইকবাল, কবি নজমুল হেলাল প্রমুখ।স্বরচিত লেখার উপর বিশদভাবে আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজির আহমেদ, গোলাম কবীর মুকুল, আবু নাসিফ খলিল এবং হুমায়ূন কবীর। চিরায়ত সাহিত্য থেকে আলোচনা করেন আর্টিষ্ট জি এম জোয়ার্দ্দার । অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক সুমন ইকবাল।




আল্টিমেটাম নয়, জনগণ সাথে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে

পৃথিবী বদলাচ্ছে, এর সাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের মন-মানসিকতা । পৃথিবী বদলের মূল শক্তি হিসাবে কাজ করছে স্থিতিশীলতা, টেকসই উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি । আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে মানুষ একটি স্থিতিশীল পরিবেশের মাধ্যমে নিজেদের এগিয়ে নিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে । আজকের বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নয় । সবচেয়ে বড় কথা, দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন একটি জায়গায় এসে পৌঁছেছে, যেটি মানুষ আগে সেভাবে ভেবে উঠতে পারেনি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এর সূচনা ঘটলেও রাষ্ট্র বিরোধী অপশক্তি তা সফল হতে দেয়নি। এরপর বাংলাদেশ ক্রমাগত উল্টোপথে হেটে লক্ষচ্যুত হয়েছে। মানুষ আর আগের মতো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, জ্বালাও পোড়াও, জাতিগত বিদ্বেষ, হত্যাযজ্ঞ, স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিতে চায়না । কারণ যারা স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেনা, দেশপ্রেম যাদের মধ্যে নেই, যারা মীরজাফর-মোশতাকের মতো বিশ্বাসঘাতকের চরিত্রকে ধারণ করে, তাদের কাছে জনগণের পাওয়ার কিছুই নেই ।

মানুষ এখন বুঝে, কিসে তার ভালো, কিসে তার মন্দ । এর একটা ইতিবাচক ফলাফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি । বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের নামে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছে । বিভিন্ন অপকৌশল, গুজব, মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তাদের সভা-সমাবেশগুলোতে সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারবে বলে তারা যে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলো তা বাস্তবে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে ।

তাদের সমাবেশগুলোতে তাদের নেতা-কর্মীদের দেখা গেলেও সাধারণ মানুষ তাদের এই আন্দোলের সাথে যুক্ত হচ্ছেনা । আবার তাদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চ্চা নেই বলে অনেক নেতা-কর্মী তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ।

অথচ তারা নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো বিচার বিশ্লেষণ না করে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা, উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করতে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে । তাদের নিজেদের শক্তির উপর তারা ভরসা পাচ্ছেনা বলে অন্যান্য শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা দেশের সাধারণ মানুষ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেনা । গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন হতেই পারে, কিন্তু এখন আন্দোলনের নামে অপশক্তিগুলো যা করছে তার কোনো লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নেই । আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবার মতো তাদের কোনো নেতা নেই, আসলে আন্দোলন কেন হচ্ছে সাধারণ মানুষ সেটিই বুঝে উঠতে পারছেনা ।

এর আগে ১০ ডিসেম্বর ২০২২ এ সরকার পতনের আল্টিমেটাম দিয়ে তারা মাঠ গরম করলেও সেখানে সাধারণ মানুষের কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা ছিলো না । বরং সেটা একটা প্রহসনের নাটকে পরিণত হয়েছিল । সাধারণ জনগণ বলছেন, যত গর্জে, তত বর্ষে না। সেই ধারবাহিকতায় ২৮ অক্টোবরকে টার্গেট করে মাঠে নামে দলটি। এর মূল উদ্দেশ্য কি, কেন এই আন্দোলন, এতে কাদের মঙ্গল, জনগণ তা বুঝে উঠতে পারছে না । অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়, বরং রাষ্ট্র যে একটি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে তার গতিকে রুদ্ধ করা । যদি মনস্তাত্ত্বিক বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়, তবে এতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে তারা জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় একধরণের সংকটের মধ্যে পড়েছে । এর দায়দায়িত্ব তাদের নিজেদের, তাদের অতীত কৃতকর্মের ।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তাদের মধ্যে নির্বাচন ভীতি কাজ করছে , কারণ তারা বুঝতে পেরেছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রের ভিত্তি এখন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে, সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে, উন্নয়ন পরিকল্পনায় ফাইলবন্দী হয়ে না থেকে বাস্তবে পরিণত হয়েছে, মানুষ দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখছে, সেই উন্নয়ন মানুষের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে যোগসূত্র গড়ে দিয়েছে । উন্নয়নের সাথে সাথে উন্নয়নের নীতিমালা প্রণীত হয়েছে । প্রযুক্তির উৎকর্ষতা মানুষের জীবনে গতি এনে দিয়েছে, মানুষের কর্মযজ্ঞ দেশের গন্ডি পেরিয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে । তরুণদের মধ্যে একসময় যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ছিল, তা এখন আত্মশক্তি ও আত্মবিশ্বাসে পরিণত হয়েছে । এর ফলে মাথায় হাত বুলিয়ে তরুণদের তারা আর বিপথগামী করতে পারছেনা, বরং তরুণরা তাদের এই ধরণের কার্যকলাপকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মূল্যায়ন করছে ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর থেকে ইতিহাসকে তারা নিজেদের মতো করে লিখেছিলো, প্রচার করেছিল । ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজম্মের উপর তারা মিথ্যাকে চাপিয়ে দিয়েছিলো । তারা ভেবেছিলো, মানুষ তাদের এই বিকৃত ইতিহাসকে সত্য বলে মেনে নিয়ে নিজেদের শেকড়ের শক্তি থেকে পথচ্যুত হবে । বাস্তবে তা ঘটেনি, বরং মানুষ এখন ইতিহাস জানছে, প্রামাণ্য দলিল থেকে উঠে আসছে ইতিহাসের নিখাদ সত্য । প্রমাণিত হচ্ছে. ইতিহাস বিকৃতির পিছনের কুশিলরাই ছিল দেশ ধ্বংসের মূল ক্রীড়ানক । বাঙালির আবহমান সাহিত্য, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি, বিশ্বাস ও ভালোবাসার উপর তারা বিষ ঢেলে দিয়ে মনে করেছিল, বাংলার আপামর মানুষ ভুলে যাবে তাদের নিজেদের অস্তিত্বকে । তেমনটা ঘটেনি, বরং মানুষ এখন আরও বেশি সৃজনশীল, আরও বেশি মননশীল, আরও বেশি অগ্রসরমান হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাদের অবদান রাখছে ।

সারা পৃথিবীতে সংলাপ ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অনেক সংকটের সমাধান হলেও তারা সংলাপেও ভয় পাচ্ছে । সংলাপের আগেও অযৌক্তিক শর্ত জুড়ে দিয়ে তারা জনগণকে বুঝাতে চাইছে, তারা সংলাপ চাইলেও সরকার সংলাপে আগ্রহ দেখাচ্ছেনা । তাদের এই ধরণের দ্বিমুখীতা সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার পন্থা বলেই বিবেচিত হচ্ছে । নির্বাচন কমিশন তাদের সংলাপে ডাকলেও তারা সাড়া দেয়নি । সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে, তারা শান্তি চায়না, সংলাপ চায়না, নির্বাচন চায়না, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে পতিত করা, পরনির্ভরশীল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা, প্রকৃত স্বাধীনতাকে হরণ করা । সারাদেশেও তারা আন্দোলন করতে পারছেনা,কারণ সারাদেশের তৃণমূল মানুষ বুঝতে পেরেছে, তাদের এসব আন্দোলনে জনগণের কোনো কল্যাণ নেই, বরং এসব আন্দোলন জনগণকে জিম্মি করার মাধ্যমে পিছিয়ে দেবার অপচেষ্টা । এখন তারা বলছে, আন্দোলন হবে ঢাকা কেন্দ্রিক । অথচ যেখানে জনগণের কোনো আগ্রহই নেই, সেই নিষ্ফল আন্দোলনের মূল্যইবা কতটুকু ।

এই সময়ে এসে যখন বাংলাদেশের মানুষ চিন্তা ও চেতনাকে ধারণ করে নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে তখন তাদের এই কর্মকান্ডকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন করতে হলে গণতন্ত্রকে মানতে হবে, রাষ্ট্রের সংবিধানকে অনুসরণ করতে হবে, স্বাধীন নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে । সবচেয়ে বেশি দরকার জনগণের বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করা, জনগণকে বুঝা, জনগণের সুখে দুঃখ অনুধাবন করে নিজেদের দেশপ্রেমিক হিসাবে প্রমান করা । এগুলোর বিন্দুমাত্র লক্ষন তাদের ভিতরে নেই । সাধারণ জনগণ খুব কাছ থেকে দেখেছে, তারা জনগণের জন্য কল্যাণমুখী উদ্যোগগুলোতে কিভাবে বাধা সৃষ্টি করেছে । পদ্মা সেতু এর একটি অন্যতম উদাহরণ । পদ্মা সেতুর মতো সব উন্নয়নকেই তারা বাধাগ্রস্থ করে জনগণের শত্রু হিসাবে কাজ করেছে, অনেকটা ট্রয়ের ঘোড়ার মতো । জনগণ এখন জানে, তারা সাধারণ মানুষের ভালো চায়না, বরং সাধারণ মানুষদের তারা নিজেদের প্রতিপক্ষ মনে করে । কারণ তারা মানুষের অধিকারের শক্তিতে বিশ্বাস করেনা, তারা বিশ্বাস করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাকে কিভাবে কুক্ষিগত করা যায় ।
দেশের সাধারণ মানুষ, এখন রাজনীতি বুঝে, অর্থনীতি বুঝে, নিজেদের পায়ে মাথা উঁচু করে গর্বের সাথে দাঁড়িয়ে বলতে পারে, আমরাও পারি, কেউ আমাদের রুখবার মতো নেই । যারা আন্দোলন আন্দোলন খেলছেন, তারা যত দ্রুত এগুলো বুঝতে পারবেন, তত তাদের মঙ্গল, তা না হলে রাজনীতি থেকে তাদের চিরকালের জন্য নির্বাসিত হতে হবে, তখন কপাল চাপড়িয়ে ভাগ্যকে দোষ দিয়ে কোনো লাভ হবেনা ।
লেখক: অধ্যাপক, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর।




আমঝুপিতে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে ভ্যান খোয়ালেন চালক

জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে মোটর চালিত পাখি ভ্যান খোয়ালেন আজিরুল ইসলাম নামের এক ভ্যান চালক। ভ্যানচালক ইজারুল ইসলাম আমঝুপি সাকোপাড়ার মৃত ইজাজ উদ্দিনের ছেলে।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) আজিরুল ইসলাম আমঝুপি হাট মসজিদের বাইরে তার ভ্যানটি রেখে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ে এসে আর ভ্যানটি না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ভ্যানটি তিনি ভাড়ায় নিয়ে চালাতেন।

উল্লেখ্য ইতোপূর্বে গত বৃহস্পতিবার আমঝুপি হাট থেকে হাট চলাকালীন সময়ে দুটি বাইসাইকেল ও আমঝুপি উত্তরপাড়ার মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ইউসুফ আলীর একটি ভ্যান চুরি হয়। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে এলাকার সকলেই আমঝুপিতে চোরের উপদ্রব বেড়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে। কয়েকদিন পূর্বে আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির তালা ভেঙে লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি হয় বলেও জানান তারা।

আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন চুন্নু মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রতিবেদককে বলেন বলেন, “এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ আমাকে ফোন করেও ঘটনাটি জানায়নি। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। ‘

এ বিষয়ে মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ব্যপারে কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। আর অভিযোগ পেলেও এসব ক্ষেত্রে কিছুই করার থাকেনা। ভ্যান চালকের আরো সতর্ক থাকা উচিত ছিলো।’




৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুরের মৃত আতাহার আলীর ছেলে মোঃ মতিউর রহমান জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়েও পুলিশের সহযোগীতা না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মতিউর রহমান বলেন, ‘ আমার পিতার নামিও রাজাপুর মৌজার ৫৩ শতক জমিতে মেহগনি গাছের বাগান আছে। আসামী বজলু, আবিদুল, বদরুল, বুলবুল, হাবিব, রাজ্জাক, আতিয়ার সহ বেশ কয়েকজন গত ১৬ সেপ্টেম্বর উক্ত জমি থেকে ৬টি মেহগুনি গাছ চুরি করার উদ্দেশ্যে কেটে ফেলে। এসময়ে মেহেরপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ আসলে, আসামীরা গাছ ফেলে পালিয়ে যায়। এতে আমাদের ৮০,০০০ /- (আশি হাজার) টাকার ক্ষতি হয়। ঐ ঘটনায় পুলিশ মামলা না নিলে আমার বোন শরিফা বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর আমলী আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পরে আসামীরা আজ শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৮ টা হতে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নালিশী জমিতে সাঙ্গ-পাঙ্গসহ দলবদ্ধ ভাবে হাজির হয়ে গাছ চুরি করার উদ্দেশ্যে গাছ কাটতে থাকে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আসামীদের গাছ কাটতে নিষেধ করলে এবং গাছ কাটার দৃশ্য ভিডিও করতে গেলে আসামীরা আমাদের কে ঘিরে ফেলে। আসামীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল (দা, কুড়াল, ইত্যাদি)। আসামীরা আমাদের হত্যার হুমকি দিয়ে আমাদের হাতের মোবাইল কেড়ে নিয়ে উক্ত ভিডিও মুছে দেয়। আসামীরা আনুমানিক ৪০ টি গাছ কেটে চুরি করে আনুমানিক ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি করে। এসময়ে আমরা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগীতা চাইলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে নাই।

পরে আমি মেহেরপুর থানায় উপস্থিত হয়ে ওসি সাহেবকে ঘটনা বললেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। আমি মামলা করতে চাইলেও তিনি মামলা গ্রহণ করেন নাই। ওসি সাহেব বলেন আদালতের আদেশ পেলে ঘটনাস্থলে যাব। আমি নিরুপায় হয়ে থানা থেকে ফেরত আসি। আমরা এই ঘটনায় চরম অসহায় ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। জীবনের ও সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্য সংবাদ সম্মেলন করছি।




প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় যুব মহিলা লীগের জনসভা

প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় যুব মহিলা লীগের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকাল চারটায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার চত্বরের পৌর মুক্ত মঞ্চে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপ্না খাতুন চিনির সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন।

সভার শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জনসভা শুরু হয়। এরপর জনসভায় আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালি করার লক্ষ্যে ও আগামীতে আবারও নৌকা বিজয় করার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত আছে এবং আগামী নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগের বিজয় করার লক্ষ্যে উপস্থিত মহিলা যুবলীগের সকল নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করা হয়।

এর আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের কার্যালয়ে থেকে আনন্দ র‍্যালি করতে করতে মুক্ত মঞ্চে এসে মহিলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হোন সভার প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা এক আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশি চুয়াডাঙ্গা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন বলেন, প্রথমে জাতীয় চার নেতাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছি। আজ বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের সরকার। আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আবারও সবাই একজোট হয়ে নৌকাকে বিজয় করবো। আজকের চুয়াডাঙ্গা জেলা উন্নয়ন করতে চাই। আজ বাংলাদেশের মানুষ কেউ ক্ষুধার্ত নাই । আগামী বাংলাদেশের উন্নয়ন ও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিককে আবারও জয়যুক্ত করতে হবে। বার বার দরকার শেখ হাসিনার সরকার। উন্নয়নের সরকার শেখ হাসিনার সরকার। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ও৷বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তি রুখতে চুয়াডাঙ্গা যুব মহিলা লীগ সবসময় মাঠে আছেন।

এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মোমেনা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মহিলা যুবলীগের সভাপতি পারুলা খাতুন, দামুড়হুদা মহিলা যুবলীগের সভাপতি সাহেদা খাতুন, আলমডাঙ্গা মহিলা যুবলীগের সভাপতি মনিরা খাতুন, জীবননগর মহিলা যুবলীগের সভাপতি কোহিনূর খাতুন, প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব মহিলা লীগের সকল নেতাকর্মী।




দর্শনায় জেল হত্যা দিবস পালিত

দর্শনায় যথাযথ মর্যাদার সাথে জেল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে দর্শনা রেল বাজার বঙ্গবন্ধু চত্তরে জাতীয় শোক পতাকা উত্তোলন এবং ৪ নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন নেতৃবৃন্দ শুরু হয় সংক্ষিপ্ত আলোচনা।
দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের আয়োজনে আলোচনার সভার সভাপতিত্ব করেন দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী।
আলোচনা করেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু,দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু,দর্শনা পৌর আ’লীগের যুগ্ন সম্পাদক গোলাম ফারুক আরিফ,দর্শনা পৌর আ’লীগের সহ সভাপতি শফিকুল আলম,আ’লীগ নেতা,বিল্লাল হোসেন,জয়নাল আবেদীন নফর, সোলায়মান কবির, আব্দুল হাকিম, দাউদ হোসেন,যুবলীগের উপজেলা সভাপতি আব্দুল হান্নান ছোট,ছাত্রলীগের উপজেলা সভাপতি আরিফ মল্লিক,দর্শনা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ববি,দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ,সাধারন সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু,



আলমডাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক বসতবাড়িতে, চালকের মৃত্যু

আলমডাঙ্গায় দ্রুতগতির  ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আঞ্চলিক সড়কের পাশে একটি বসতবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। এতে গাড়ির মধ্যে চাপা পড়ে ট্রাক চালকের মৃত্যু হয়েছে।
 বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের রোয়াকুলি নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ট্রাক চালক সোহেল রানা (৩৫) আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একটি খালি ট্রাক চুয়াডাঙ্গা থেকে আসছিল। আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের রোয়াকুলি এলাকায় আসার পর দ্রুতগতির ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ে। এসময় ট্রাক চালক গাড়িতে চাপা পড়েন। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এসময় ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা ট্রাক চালকের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠাই। এসময় উত্তেজিত জনতা আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেন। পরে আলমডাঙ্গা থানা ও মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়িপুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ট্রাক চালককে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আফরিনা আক্তার হীরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটকে পড়া চালককে উদ্ধার করা হয়। তিনি ট্রাকের মধ্যেই মারা যায়।
মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউসুব আলী জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।



আলমডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের আরো ১১ নেতাকর্মী গ্রেফতার

আলমডাঙ্গায় ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে পালানোর সময় জামায়াত, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে জেলার আলমডাঙ্গা আইলহাঁস ইউনিয়নের বলেশ্বরপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর উত্তরপাড়ার বজলুল হকের ছেলে মহাবুল হক (৫৫), কামালপুর গ্রামের চরপাড়ার মৃত হাজী মোফাজ্জেল মন্ডলের ছেলে সাইদুর রহমান সাকের (৫৫),

আলমডাঙ্গা জহুরুলনগর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ইমাদুল হক একদুল (৫৫), আলমডাঙ্গা বুড়াপাড়া গ্রামের আসাদুল হকের ছেলে সাগর রহমান (৩৬), আলমডাঙ্গা বলেশ্বরপুর গ্রামের মৃত নুর মহাম্মদ বিশ্বাসের ছেলে সাইফুর রহমান (৪৪), আলমডাঙ্গা টাকপাড়া গ্রামের মৃত শাহাদৎ হোসেন মল্লিকের ছেলে আনোয়ার হোসেন মল্লিক (৪৫), আলমডাঙ্গা পাইকপাড়া ঘোলদাড়ী গ্রামের মৃত আওলাদ আলী মন্ডলের ছেলে আব্দুল ওহাব মাষ্টার (৫৮), আলমডাঙ্গা চরশ্রীরামপুর গ্রামের মৃত জোয়াদ আলী মন্ডলের ছেলে মঈন উদ্দিন (৫৮), আলমডাঙ্গা কয়রাডাঙ্গা মাঝেরপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪৫), আলমডাঙ্গা নারায়নপুর গ্রামের মৃত আইজুদ্দিন শেখের ছেলে তাহাজুদ্দি (৫০), আলমডাঙ্গা শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত মতলেবের ছেলে নাকিব উদ্দিন আহম্মেদ (৪৭)।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, গোপন সংবাদে জানা যায় আলমডাঙ্গা বলেশ্বরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ফাঁকা মাঠের দক্ষিন পাশের নতুন ভবনের সামনে ফাঁকা মাঠের মধ্যে বিএনপি এবং জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এর বহু সংখ্যক উশৃংখল নেতাকর্মী মারাত্নক অস্ত্র নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত ইসলামী এর কেন্দ্রীয় ঘোষিত ৪৮ ঘন্টার অবরোধ উপলক্ষ্যে আলমডাঙ্গা এলাকায় পিকেটিং ও নাশকতামূলক কাজ করাসহ, সরকারী স্থাপনা ধ্বংস, শান্তি প্রিয় জনসাধারণের জান মালের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে অবৈধ অস্ত্র গুলি, বোমাসহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া উক্ত স্থানে গোপন বৈঠক করছে। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ গেলে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ককটেল বোমার বিস্ফোরন ঘটিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় তাদের গ্রেফতার করা হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে কালো স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো টিনের তৈরী জর্দ্দার কৌটার হাত বোমা সাদৃশ্য বস্তু ৮ টি, বিস্ফোরিত পদার্থের গন্ধযুক্ত লোহার জালের কাঠি ১০ টি, বিস্ফোরিত এবং বিস্ফোরক পদার্থের গন্ধযুক্ত ৩ টুকরা টিনের তৈরী জর্দ্দার কৌটার বিস্ফোরিত বোমার অংশ বিশে, ২২ টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।