টিয়ারশেলের আঘাতে নয়, স্ট্রোকে মৃত্যু সাংবাদিক রফিকের

পুলিশের টিয়ারশেলের আঘাতে নয়, স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়ার। এতথ্য জানিয়েছে তার কন্যা উর্মি ভূঁইয়া বলেন, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে (স্ট্রোক) মারা গেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রফিক।

একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জবাবে উর্মি বলেন, ‘রিকশা করে যাওয়ার পথে আমার বাবা হঠাৎ স্ট্রোক করে রিকশা থেকে পড়ে যান। এরপর তার ব্রেইন ডেড হয়ে যায়, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোক করার কারণে ব্যালান্স রাখতে না পেরে রিকশা থেকে পড়ে যান তিনি। আর তখন মাথার পিছনে ব্যথা পাওয়া ইন্টার্নাল ব্লিডিং হয়েছে।

বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে টিয়ারশেলে মৃত্যু নিয়ে যেসব তথ্য প্রচারিত হচ্ছে সেগুলো নিয়ে আপত্তি তুলে ঊর্মি বলেন, ‘এধরনের খবর একেবারেই মিথ্যা। যদি টিয়ারশেলের আঘাতে আমার বাবা মারা যেতেন, তাহলে আমরাই জিডি করতাম বা অভিযোগ করতাম। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা এগুলো করিনি। আমরা কিছু না বললেও কিছু মানুষ এই ঘটনায় নানান রং মিশিয়ে বিভিন্নভাবে প্রচার করছে।’

উর্মি বলেন, ‘মানুষ আসলে বিভিন্ন রকম রং দিচ্ছে। আমার বাবা একজন একজন সহজ সরল ব্যক্তি, উনাকে নিয়ে যদি এটা করা খুবই দুঃখজনক। আমার বাবা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু এর জন্য তিনি কোনো সুযোগ নেননি। এখন তিনি বলতেন- কেউ মায়ের জন্য কিছু করলে সুবিধা নেয় নাকি? দেশের জন্য যুদ্ধ করছেন, সুযোগ-সুবিধার জন্য নয়।’

এখন তাকে নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দল টানাটানি করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই মানুষটাকে নিয়ে যারা এধরনের মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে তাদেরকে থামতে বলেন সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়ার মেয়ে।

শনিবার প্রেসক্লাবে যাওয়ার পথে সেগুনবাগিচায় রিকশা থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান রফিক ভূঁইয়া। পরে তাকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে সেখান থেকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় তিনি মারা যান।

রফিক ভূঁইয়া ১৯৫১ সালের ১০ জানুয়ারি ফেনীর দাগনভূঞায় জন্মগ্রহণ করেন। নিহত রফিক ভূঁইয়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য ও সাপ্তাহিক নতুন কাগজ–এর সম্পাদক ছিলেন। তিনি চার ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।




রাজনীতিক কোন সংলাপই সফলতার মুখ দেখেনি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতোই ঘনিয়ে আসছে রাজনীতির মাঠে ততোই ‘সংলাপ’ সামনে চলে আসছে। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে সংকট নিরসনের মাধ্যম হিসেবে সংলাপকে গুরুত্ব দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন সংলাপই কার্যকর কোনো ফলাফল বয়ে আনতে পারেনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে আবারও আলোচনায় আসছে সংলাপের বিষয়টি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করে সংলাপে বসতে রাজি বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শর্তযুক্ত কোন সংলাপে অংশগ্রহণ করবেনা দলটি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসও শর্তহীনভাবে রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপে বসে সংকট নিরসন করবে বলে প্রত্যশা করেছেন। কিন্তু বাস্তবায়তা কী? কোনো সংলাপ কী সফলতার মুখ দেখেছিল?

জিয়াউর রহমানের সংলাপ
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর যখন টালমাটাল রাজনীতির পরিবেশ,তখন নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদে বসেন জিয়াউর রহমান। নিজের ক্ষমতার আসনকে পাকাপোক্ত করতে এবং রাজনৈতিক পরিবেশ নিজের অনুকূলে আনতে চতুর জিয়া তার বিশেষ সহকারী বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে দিয়ে ১৯৭৬ সালের ২২ জানুয়ারি তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে একটি সংলাপের আয়োজন করান। আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক দল সে সংলাপকে প্রত্যাখান করেছিল ।

এরশাদের যত সংলাপ
১৯৮৪ সালের ৯ এপ্রিল বঙ্গভবনে সাত দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সাত দলের পক্ষ থেকে ৩০ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় এরশাদের কাছে। এরশাদ দাবি না মানলে সাত দলের নেতারা সংলাপ কক্ষ ছেড়ে বের হয়ে আসেন। ১৯৮৪ সালের ১০ এপ্রিল বঙ্গভবনে জামায়াতের সঙ্গে সংলাপ করেন এরশাদ। ১১ এপ্রিল এরশাদ সংলাপ করেন ১৫ দলের নেতাদের সঙ্গে। সংলাপ ফলপ্রসূ না হলে ১৪ই এপ্রিল দ্বিতীয় দফা বৈঠক করেন ১৫ দলের নেতাদের সঙ্গে। আবার ১২ এপ্রিল এরশাদ বঙ্গভবনে বসে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। একই বছর ২৮ এপ্রিল আবারও বঙ্গভবনে এরশাদের সঙ্গে সংলাপ হয় ১০ দলের। কিন্তু কোনো সংলাপ ফলপ্রসু হয়নি।

১৯৮৭ সালে সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির অব্যাহত আন্দোলনে কোনঠাসা এরশাদ সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি। রাজনৈতিক নেতারা প্রত্যাখ্যান করে সে আহ্বান। ওই বছরের ২৮ অক্টোবর এরশাদবিরোধী আন্দোলনের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছিলো। একই বছরের ২৮ নভেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদ আবারও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি। কিন্তু কোনো দলের কাছ থেকেই তেমন সাড়া মেলেনি।

নব্বই পরবর্তী সংলাপ
নব্বই পরবর্তী রাজনৈতিক ইতিহাসে চোখ রাখলে দেখা যায়, নির্বাচন এগিয়ে এলেই সামনে আসে সংলাপ প্রসঙ্গ। এসব সংলাপ কখনও হয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে, কখনও নেতাদের মধ্যে। কখনো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদেরও দেখা গেছে সংলাপের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে।

১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তাদের ক্ষমতার শেষদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে নামে প্রায় সব বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি। ১৯৯৪ সালের ৩১ আগস্ট সরকারি ও বিরোধী দলের দুই উপনেতার বৈঠক হয়। একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর সে সময়ের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয় বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের।

উদ্যোগ নেয়া হয় দুই প্রধান নেত্রীর বৈঠকের। কমনওয়েলথ মহাসচিব এনিয়াওকুর এমেকা ওই বছরের ১৩ই সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসে দেখা করেন দুই নেত্রীর সঙ্গে। এমেকা পরে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান স্যার স্টিফেন নিনিয়ানকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সংলাপ তত্ত্বাবধানে তার বিশেষত্ব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে তিনি সফল হননি।

১৯৯৫ সালে আবার সংলাপের প্রস্তাব আসে সে সময়ের বিরোধীদল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তখনকার সংসদ উপনেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তবে সংলাপ ব্যর্থ হলেও ১৯৯৬ সালে একতরফা নির্বাচন করেও টিকতে পারেনি বিএনপি। আওয়ামী লীগসহ অন্য বিরোধীদলগুলোর আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় বিএনপি।

৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মধ্যস্থতায় সংলাপের আয়োজন হয়েছিল। ২০০১ সালেও নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দ্বন্দ্ব হয় আওয়ামী লীগ বিএনপির মধ্যে। সে সময় মধ্যস্থতার জন্য এসেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনিও সংলাপ করেছিলেন দুই পক্ষের সঙ্গে। তার সে প্রচেষ্টাও ফলপ্রসূ হয়নি।

২০০৬ সালের অক্টোবরে সে সময়ের সরকারি দল বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং বিরোধীদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল দফায় দফায় বৈঠক করেন। তিন সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক সংলাপে বিএনপি মহাসচিবের কাছে ২৯ দফা প্রস্তাব দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ছয় দফা বৈঠক করেও তারা কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৩ সালের শেষ দিকে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘ মহাসচিরের বিশেষদূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। ছয়দিন ঢাকায় অবস্থান করে ১০ ও ১১ ডিসেম্বর বৈঠক করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। তৃতীয় বৈঠক হয় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকারের উপস্থিতিতে। কোনো বৈঠকই সফল হয়নি। এর আগে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর টানটান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করেন সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সংলাপ
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও আনুষ্ঠানিক সংলাপ হয় দুই রাজনৈতিক জোটের মধ্যে। ২০১৮ সালের পয়লা নভেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত সে সংলাপে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফন্ট্রের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন নেতা। আর আওয়ামী জোটের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪ দলের নেতারা।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সংলাপ ইস্যু
যদিও সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, সংলাপ হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার। আমরা বলেছি, আমরা সবসময় সংলাপকে স্বাগত জানাই। সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে আমরাও মনে করি। সংবিধান আমাদের যেভাবে কাঠামো করে দিয়েছে, সেটা অনুসারে সংলাপ করতে হবে। সংবিধান আমাদের যেভাবে কাঠামো করে দিয়েছে, সেটা অনুসারে সংলাপ করতে হবে। বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

যদিও বিএনপি শুরু থেকেই ‘রাজপথেই ফয়সালা হবে’ আর আওয়ামী লীগ ‘বিএনপিকে কোন ছাড় নয়’ নীতি নিয়েই অগ্রসর হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আলোচনা বা সংলাপ তখনই হবে, যখন নির্দলীয় সরকার মেনে নেওয়া হবে। দাবি মানার পর নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের মডেল বা রূপরেখা কী হবে, সেটি নিয়ে সংলাপ হতে পারে। এ ছাড়া সংলাপ করে কোনো লাভ নেই। তবে ২৮শে অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিনে ব্যাপক সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুই জনের মৃত্যুর পর বিএনপি মহাসচিবসহ অনেককেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আর উদ্ভূত এই পরিস্থিতির পর নির্বাচন নিয়ে সংলাপ বা সমঝোতার পরিবেশ তৈরির আর কোন সুযোগ আছে বলে মনে করেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন। তিনি বলেন, ‘২৮শে অক্টোবরে যে সহিংসতা হলো সেই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ যা বলছে তাতে আসলে সমঝোতার চিন্তা করারই আর কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। পরিস্থিতি যাই হোক বিএনপির জন্য আওয়ামী লীগের সংলাপের দরজা খোলা নেই-এটিই এখন বাস্তবতা।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, দল দুটির এমন অনড় অবস্থানের কারণে সমঝোতার সম্ভাবনা আগে থেকেই ছিলো না। তিনি বলেন, ‘তারা কেউই তাদের জায়গা থেকে কখনো একটুও সরেননি। এ অবস্থায় সংলাপ হওয়ার কথাও না। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপ করার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছিলো কিন্তু বিএনপি এই নির্বাচন কমিশনকেই মানছে না ‘ এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি সফল হোক আর না হোক কিংবা তাদের কর্মসূচি মানুষ গ্রহণ করুক আর না করুক- বিদ্যমান বাস্তবতায় সমঝোতার কোন পরিস্থিতিই অবশিষ্ট নেই বলেই মনে করেন তিনি।




সায়মা ওয়াজেদ ডাব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ভারতের নয়াদিল্লি থেকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ তথ্য জানান।

বাংলাদেশ, ভুটান, গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া ডিপিআরকে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং তিমুর-লেস্তে বুধবার নয়াদিল্লিতে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক অধিবেশনের তৃতীয় দিনে ভোটে অংশ নেয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য কমিটি। সায়মা আট ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অপর প্রার্থী, নেপাল মনোনীত ডা. শম্ভু প্রসাদ আচার্য্য পেয়েছেন দুটি ভোট।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার দুপুরে তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমরা একটা সুখবর পেয়েছি। খুবই সুখবর। আমরা অনেক দিন ধরেই এ নির্বাচনের জন্য প্রচার চালাচ্ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।’

সায়মা ওয়াজেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা এবং একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-বিশেষ করে অটিজমের ভূমিকার জন্য বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ডাব্লিউএইচও -এর মহাপরিচালকের উপদেষ্টা। তার নাম এখন ডাব্লিউএইচও নির্বাহী বোর্ডের ১৫৪ তম অধিবেশনে নিয়োগের জন্য জমা দেওয়া হবে। আগামী ২২-২৭ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে ওই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

এরপর তিনি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এর সাথে, সায়মা ওয়াজেদ প্রথম বাংলাদেশি হবেন যিনি ডাব্লিউএইচও -এর আঞ্চলিক বিভাগের অংশ হিসাবে 1948 সালে তৈরি করা পদে অধিষ্ঠিত হবেন।

বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদকে মনোনীত করেছিল। ডব্লিউএইচও দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলবিষয়ক অফিস ওই সংস্থার ছয়টি আঞ্চলিক অফিসের মধ্যে একটি। এটি সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত।

সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।




দর্শনা সীমান্তে ৭ কেজি রুপাসহ ২ চোরাকারবারী আটক

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বাড়াদী সীমান্তে প্রায় ৭ কেজি দানাদার রুপাসহ ২ চোরাচালানীকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি।

আজ বুধবার (১লা নভেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের ৬ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, পিএসসি নেতৃত্বে অভিযান চালায় হৈবৎপুর মাঠে ৬ বিজিবির বারাদী বিওপির টহল কমান্ডার হাবিলদার মনির হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় টহল দল নিয়ে সীমান্তের মেইন পিলার ৮০ হতে আনুমানিক ০১ কিঃ মিঃ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হৈবতপুর মাঠের পাশে অভিযান চালায়।

এ সময় সন্দেহজনক ভাবে তিনজন ব্যক্তিকে সীমান্তের দিক থেকে পায়ে হেটে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হৈবতপুর মাঠের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি টহল দল তাদেরকে ধাওয়া করে। বিজিবি ধাওয়া করে বিজিবি সশস্ত্র টহল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে দুইজন ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হয়।

আটককৃত চোরাচালানী হৈয়বতপুর গ্রামের আবু ববক্কর (২২), পিতা-আবুল কাশেম, ইমার হামজা (২৩), পিতা- হিসাব আলী।পরে তাদের দেহ তল্লাশী করে ২ জনের কোমরে সাদা কপড়ে পেছানো ৬কেজি ৯শ৯০ গ্রাম দানাদার রুপা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত দানাদার রৃপার বাজার মৃল্যে ১২ লক্ষ টাকা।এ ঘটনায় বাড়াদী ক্যাম্পের হাবিলদার মনির হোসেন বাদী হয়ে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেছে। এবং আটককৃত রুপাগুলি চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারী অফিসে জমা করণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




দর্শনা পুরাতন বাজারে তরফদার ক্লিনিকের শুভ উদ্বোধন

দর্শনা পুরাতন বাজার তরফদার মার্কেটে তরফদার ক্লিনিকের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১ টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজার দোয়েল চত্তর সংলগ্ন তরফদার মার্কেটে তরফদার ক্লিনিকের শুভ উদ্ধোধন করেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু,দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু।

ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী পুরাতন বাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সোহেল তরফদারের সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী,সহ সভাপতি শফিকুল আলম, দর্শনা পুরাতন বাজার কমিটির সভাপতি আশরাফুল আলম বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক,হাজী আব্দুল মমিন,আবু সুফিয়ান,সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হানিফ মন্ডল। উদ্ধোধনী শেষে দোয়া অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা রাসেল আহম্মেদ।




আলমডাঙ্গার রাস্তাতে গাইড ওয়াল না থাকায় ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা

আলমডাঙ্গার কালিদাসপুরে রাস্তার পাশে গাইড ওয়াল না থাকায় সদ্য নির্মিত রাস্তা ভেঙে নেমে যাচ্ছে পুকুরে । নির্মিত রাস্তা সংরক্ষণের জন্য গাইড ওয়াল নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবী রাস্তা নির্মাণের আগেই পুকুরের ধারে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হোক।

মাঝে মিশ্র প্রতিক্রীয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে আজ বুধবার সদ্য নির্মিত এ রাস্তা পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরুণ জোয়ার্দ্দার।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর দক্ষিণপাড়ায় প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যায়ে আরডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩’শ মিটার রাস্তার কাজ চলমান। ইতোমধ্যে রাস্তার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কালিদাসপুর ইউনিয়ন শহর কেন্দ্রীক হলেও দীর্ঘদিন ধরে এ রাস্তার উন্নয়নের কাজ হয়নি। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়াদ্দার ছেলুনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন পর এই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। গত ১ মাস পূর্বে মুসল ধারার বৃষ্টিতে সদ্য নির্মিত রাস্তাটি ভেঙে পাশেই অবস্থিত পুকুরে চলে গেছে। এ রুপ ঘটনায় এলাকাবাসী রাস্তাটি দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই ভাবে নির্মাণ সহ গাইড ওয়াল নির্মাণের দাবি করেন। এমন ঘটনায় বুধবার সকালে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী তরুণ জোয়ার্দ্দার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আহসান উল্লাহ। তিনি জানান, সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়াদ্দার ছেলুন এমপির প্রচেষ্টায় রাস্তার কাজ হচ্ছে। তবে গাইড ওয়াল বরাদ্দ না থাকায় নির্মাণ করা হয়নি। টেকসই সড়ক নির্মানের জন্য গাইডওয়াল একান্ত প্রয়োজন, এজন্য উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।




জীবননগরে জাতীয় যুব দিবস পালিত

জীবননগরে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টার সময় উপজেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে র‌্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকী, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজ্জদ মির্জা প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চেক বিতারণ করা হয়। অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে একই দিনে বিকাল ৪টার সময় উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের বাঁকা গ্রামের সমৃদ্ধ কেন্দ্রে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ইউনিয়ন যুবদের আয়োজনে পল্লি কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর ইয়ুথ এ্যাসেম্বলির সভাপতি ও মাই টিভি প্রতিনিধি মিথুন মাহমুদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক এ,আর, ডাবলু, বাঁকা ইউনিয়ন সমৃদ্ধি কর্মসূচির সমন্বয়ক ইশরাত জাহান, ওয়েভ কর্মকর্তা পাপিয়া খাতুন, বাঁকা ইউনিয়ন যুব কমিটির সভাপতি ইনামুল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিথুন মাহমুদ বলেন, “যুবদের সেবা, উদ্যোগ ও উদ্ভাবনী মানসিকতা দেশ ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের যুব সমাজের অংশীদারিত্ব ছিল অন্যতম। দেশের যুব সমাজের বৃহদাংশ আজ উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। যারা দেশের মৎস্য, কৃষি, বস্ত্র, হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করে তুলছে”।




মেহেরপুরে নানা আয়োজনে জাতীয় যুব দিবস পালন

জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়ন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। বুধবার সকালে মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুব র‍্যালি, মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, যুব ঋণের চেক, সনদপত্র, ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

জেলা প্রশাসক মো: শামীম হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল আহসান, মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক কাজী আব্দুল কাদির মিয়া, মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কাজী কাদের মোহাম্মদ ফজলের রাব্বি, কারিগরি শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আরিফ হোসেন তালুকদার।

জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক  ফিরোজ আহমেদ।
যুব দিবস উপলক্ষে যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষনার্থী সুমাইয়া আক্তার, সফল আত্মকর্মী মিজানুর রহমান, যুব সংগঠক রেহেনা মান্নান, সদস্য যুব কাউন্সিল নিশাত আফরিন রাহী এ সময় বক্তব্য রাখেন।

মেহেরপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কম্পিউটার প্রশিক্ষক মাসুদ আল আহসান নবেল জাতীয় যুব দিবসের প্রোগ্রাম সঞ্চালনা করেন।

এছাড়াও মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়নের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।




তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করলেন হাসিনা-মোদি

ভারতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প যৌথভাবে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নয়াদিল্লি থেকে যুক্ত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রকল্প তিনটি হলো—আখাউড়া-আগরতলা আন্তসীমান্ত রেলসংযোগ, খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিট।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো উভয় দেশের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। এছাড়া আঞ্চলিক যোগাযোগ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বহিঃপ্রকাশ। এজন্য আমি নরেন্দ্র মোদিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে আমাদের অর্জন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লাভ করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর, মোংলা বন্দর এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ভারতের জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালে ছিল ২৫.১ শতাংশ। ২০২২ সালে ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে ২৭৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে।’

যৌথ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘এটা আনন্দের বিষয় যে আমরা আবারও ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতার সাফল্য উদযাপন করতে সংযুক্ত হয়েছি। আমাদের সম্পর্ক ক্রমাগত নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। গত ৯ বছরে আমরা একসঙ্গে যে কাজ করেছি, তা আগের কয়েক দশকেও করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্তে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এটি কয়েক দশক ধরে ঝুঁলে ছিল। আমরা সমুদ্রসীমার বিরোধও সমাধান করেছি। গত ৯ বছরে ৩টি নতুন বাস পরিষেবা চালুর মাধ্যমে ঢাকা, শিলং, আগরতলা, গুয়াহাটি এবং কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত ৯ বছরে ৩টি নতুন ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে পার্সেল এবং কন্টেইনার ট্রেনগুলোও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলছে, গঙ্গা বিলাস নামে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী চালু করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটনও চাঙ্গা করা হয়েছে। গত ৯ বছরে আমাদের (বাংলাদেশ ও ভারতের) অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য তিনগুণ বেড়েছে।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের এই উন্নয়নে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।’ তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে আছে এবং থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

আখাউড়া-আগরতলা আন্তসীমান্ত রেলসংযোগ প্রকল্পটি ভারত সরকারের ৩৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকার অনুদান সহায়তার আওতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। রেলসংযোগের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন এবং ত্রিপুরায় ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার।

খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পটি ভারত সরকারের ছাড়ের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ৩৮৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় মোংলা বন্দর ও খুলনার বিদ্যমান রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলা ব্রডগেজ রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারতীয় ঋণসহায়তার আওতায় বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের রামপালে অবস্থিত একটি ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট (২x৬৬০) সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট (এমএসটিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। এই পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে উভয় প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে উদ্বোধন করেন এবং ইউনিট-২ চলতি বছরের ১ নভেম্বর উদ্বোধন করবেন।




গাংনীতে সাইকেল র‍্যালি দিয়ে যুব দিবস পালন

গাংনীর জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেনীর ছাত্রীদের নিয়ে পরিবেশ বান্ধব যানবাহন ব্যবহার করি নির্মল বায়ূ নিশ্চিত করি এবং প্রতিটি রাস্তায় সাইকেল লেন বাস্তবায়ন করি এই প্রতিপাদ্য বিষয় কে সামনে রেখে সাইকেল র‍্যালির মাধ্যমে যুব দিবস পালন করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল ১১ টার সময় গাংনীর জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ সারা বাংলাদেশে বিশুদ্ধ বায়ু ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এদেশের বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন / এনজিওকে সাথে নিয়ে দ্য আর্থ সোসাইটি বাংলাদেশের গঠিত জাতীয় প্লাটফর্ম ইয়ুথ ফর কেয়ার। জাতীয় যুব দিবসে পরিবেশবাহন যানবাহনের প্রচলন বৃদ্ধি, মহাসড়কগুলোতে সাইকেল লেন নির্মাণ এবং নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার দাবিকে সামনে রেখে ইয়ুথ ফর কেয়ার প্লাটফর্মের কমিউনিটি পার্টনারদের উদ্যেগে জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ দেশের ৩০ টি জেলায় সাইকেল র‍্যালি আয়োজিত হয়েছে৷

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আল নূর।দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের গাংনী এরিয়া সমন্বয়কারী হেলাল উদ্দিন। ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশের যশোর অঞ্চলের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ফিরোজ আহম্মেদ পলাশ। কাথুলী ইয়ূথ ইউনিট এর কো অর্ডিনেটর রায়হান আলী সহ স্কুলের বিভিন্ন শ্রেনীর ছাত্রীদের নিয়ে সাইকেল র‍্যালি করা হয়।