মেহেরপুর গাংনী বাজার বাসস্ট্যান্ডে দৃষ্টি নন্দন গোল চত্বর নির্মাণ,রাস্তার মাঝ থেকে যাত্রী ছাউনি ও দোকান অপসারণ এবং একনেকে অনুমোদিত প্রকৃত নকশায় সড়ক প্রসস্তকরন কাজের দাবীতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে গাংনী বাজার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।
আজ শনিবার ( ২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় গাংনী বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করা হয়।
গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মেঘলার নেতৃত্বে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেন বিভিন্ন শেনী পেশার মানুষ । দুপুর ১ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি।
বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মানিক,মাহাবুবুর রহমান স্বপন, বাজার কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন শাওন,
সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জামান, উপজেলা যুব দলের আহবায়ক সাইদুল ইসলাম, যুবদল নেতা সালাউদ্দিন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান,মেহেরপুর – কুষ্টিয়ার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়ক প্রসস্তকরন কাজ শুরু করেন মেহেরপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ। মেহেরপুর অঞ্চল এবং কুস্টিয়া অঞ্চলে কাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সে লক্ষে ২০২৩ সালের শেষের দিকে সড়ক বিভাগ সড়কের দুই দিকের বড়বড় শতবৎসরের গাছ কেটে সড়কের দুপাশ পরিষ্কার করা হয়। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, বিভিন্ন যাত্রী ছাউনি উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায় সড়ক বিভাগ। সে সময় সড়কে অবস্থিত জেলার প্রায় ১৩ টি যাত্রী ছাউনি অপসারণ করা হয়। অপসারনের হাত থেকে রক্ষা পাইনি মসজিদ ও ইদগাহ ময়দানের প্রাচীরও। এখানে রাস্তা প্রসস্তকরনে জনগনের চাওয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে একক ভাবে ব্যাক্তি স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়া হয়। সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী,মনগড়া ও দায়সারা কাজ শেষ করতে চাওয়ায় জনগন দাবী নিয়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। বাসস্ট্যান্ডের এই যাত্রী ছাউনি অপসারন না করে সড়কের কাজ শেষ করা হলে বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটবে বলেও দাবী করেন বিক্ষোভকারীরা।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন,উপজেলা প্রশাসন, সড়ক বিভাগ ও মেহেরপুর জেলায় দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর বরাবর স্বারক লিপি দেয়া হয়। ব্যবসায়ীদের সাথে সাধারণ মানুষও বিক্ষোভে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীরা সড়ক বিভাগ,জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন সকলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন।
গাংনী বাজারের ব্যাবসায়ী আলাল উদ্দিন রেন্টু বলেন, বর্তমান বিচার বিভাগ,জেলা প্রশাসন,জেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন আছেন সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের জন্য। অথচ সড়ক বিভাগ রাস্তা প্রসস্তকরনের আগে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা ভেংগে দিয়েছে। অথচ গাংনীর হাজারও মানুষের চাওয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সড়ক বিভাগ গাংনী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি নামক একটি ফলের দেকানে এসে স্থবির হয়ে পড়ছে। সড়ক বিভাগের এমন উদাসীনতা ও প্রশাসনের এমন ঢিলেঢালা মনোভাব দেখে হাজার মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে নেতিবাচক নানা প্রশ্ন।
গাংনী বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান স্বপন বলেন, জেলা পরিষদ ,উপজেলা পরিষদ,জেলা প্রশাসন,উপজেলা প্রশাসন, সড়ক বিভাগ সবই জনস্বার্থে কাজ করেন। গাংনী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র গাংনী বাজার বাসস্ট্যান্ড। এখানে ত্রিভুজাকৃতির একটি সড়ক নির্মানের নকশা রয়েছে। সর্বসাধারণের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে জেলা পরিষদের চুক্তি খুব সহজেই বাতিল করা যায়। এখানে টার্নিং পয়েন্ট টি পরিস্কার করা না হলে নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটবে এবং যে উদদেশ্যে সড়ক প্রসস্তকরন করা হচ্ছে সেই সুফল থেকে মানুষ বঞ্চিত থাকবেন।
গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন শাওন বলেন,যাত্রী ছাউনি অপসারনের দবীতে বাজারের সকল ব্যাবসায়ীরা রাস্তায় নেমে অবরোধ কর্মসুচী ও বিক্ষো করেন। এতে বাজারে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। আমি বিষয়টি জেনে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে সেজন্য সাথে আ: মালেক স্টোরের নিরাপত্তার কথা ভেবে সাময়িক সময়ের জন্য দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়।
গাংনী পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোকবুল হোসেন মেঘলা বলেন, সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদ মানুষের সাথে লুকোচুরি খেলছে। মেহেরপুর থেকে শুরু করে খলিশাকুন্ডি পর্যন্ত সব অবৈদ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে প্রায় ১৩ টি যাত্রী ছাউনি ভাঙ্গা হয়েছে। এমনকি রাস্তার পাশে থাকা মসজিদ ও ইদগাহ ভাংগা হয়েছে। অথচ গাংনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনি ও একটি দোকান কেনো ভাংগা হয়নি। তা জানতে চাই গাংনীর মানুষ।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন,মেহেরপুরে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর কাছে স্বারক লীপী দেয়া হয়েছে। বেশ কয়কদিন অতিবাহিত হলেও সাধারন মানুষ তার কোন সুফল পাইনি। যার ফলে মানুষকে আন্দোলনে বাধ্য হতে হয়েছে। একক ক্ষমতাকে প্রাধান্য না দিয়ে জনগনের স্বার্থের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে যে কোন অস্থিশীল পরিস্থিতির জন্য উপজেলা প্রশাসন দায়ী থাকবেন।
গাংনী উপজেলা নি্র্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, আজ সকাল ১১ টার সময় গাংনী বাজারের ব্যাবসায়ী ও সাধারণ মানুষ যাত্রী ছাউনি অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ করেন। এসময় রাস্তায় গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত সকলের কথা শুনেছি এবং তাদের সাথে কথা বলেছি। এটি একক বিষয় নয়। সড়ক বিভাগ,জেলা পরিষদ জড়িত। ব্যাবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে আলেচনা সাপেক্ষে সমস্যার সমাধান দেয়া হবে। জনস্বার্থকে গুরুত্ব দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়েছে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ বলেন,আমি বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যাত্রী ছাউনি অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ করছেন এ বিষয়টি আমাকে ইউএনও জানিয়েছে। সকলকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।