ঝিনাইদহে ৪৬ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুপুর চারমাইল এলাকা থেকে ৪৬ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৬।

আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) র‌্যাব-৬, ঝিনাইদহ ক্যাম্পের এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে আভিযানিক দলটি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঝিনাইদহ শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর সামনে দর্শনা টু ঢাকা মহাসড়কে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনা কালে অবৈধ মাদকদ্রব্য ৪৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ মোঃ মিরাজ (২২) নামে এক মাদক ব্যবসায় কে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যবসায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার সুলতান পুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। আসামীর নিকট থেকে ৪৬ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাব-৬, সিপিসি-২, ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর নাঈম আহমেদ।

এ সময় উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে গ্রেপ্তারকৃত আসামীর হেফাজত হতে অবৈধ ৪৬ বোতল ফেন্সিডিল ছাড়াও ২টি মোবাইল ফোন ও নগদ- ৫২২/-টাকা উদ্ধার করে আসামীকে ঝিনাইদহ সদর থানায় হস্তান্তর করে আসামীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।




আল্লাহকে কটাক্ষের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

আল্লাহকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে মেহেরপুরের জিয়া নামের এক কথিত সাংবাদিকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার বাদ জুম্মা গাংনী উপজেলার করমদী পাগলার ব্রীজ এলাকায় এই মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন ‘উলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা’ ব্যানারে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন-মাওলানা হারুন অর রশিদ. মাওলানা আমানুল্লাহ, মাওলানা সিয়াম মনোয়ার, মাওলানা হাবিবুল্লাহ বাদশা, মাওলানা কবির হুসাইন, মাওলানা কায় খসরু, স্থানায় গণ্যমান্য ব্যক্তি জুলফিকার আলী, আব্দুর রহিম, ফরহাদ হুসাইনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিববৃন্দ, হাফেজবৃন্দ ও তৌহিদি জনতা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পাগলার ব্রীজ এলাকা থেকে শুরু হয়ে জিয়ার গ্রামের বাড়ি পলাশীপাড়া পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। এসময় নাস্তিক জিয়াকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান।

এ সময় বক্তারা বলেন, আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে যারা কটুক্তি করে সেই সব নাস্তিকদের ফাঁসি দিতে হবে। ভবিষ্যতে কেউ যেন আসমান জমিনের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ. তার প্রেরিত রাসুল হজরত মোহাম্মদ (স:)কে নিয়ে এমন মন্তব্য করার সাহষ না পায়।

বক্তারা আরও বলেন, কথিত সাংবাদিক জিয়া এলাকার মানুষকে সাংবাদিকতার ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানিসহ ব্লাকমেইল করে বহু মানুষকে হয়রানি নির্যাতন করেছে। সে নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে এলাকার মানুষের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে বাল্য বিয়ে আখ্যা দিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতো। এছাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতো বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

অভিযুক্ত জিয়া গাংনী উপজেলার পলাশীপাড়া গ্রামের দবের উদ্দীনের ছেলে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক সজীব উদ্দীন স্বাধীন তার নিজ নামে ডা. স্বাধীন ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়েছিলেন। সেখানে লেখা ছিল “পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে, আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন”। এখানে নামধারী সাংবাদিক জিয়া কমেন্ট করেন “আজ পর্যন্ত আল্লাহ কাকে রক্ষা করেছে ? কাউকেই রক্ষা করতে পারেনি”। কমেন্টটি এলাকার অনেকেই স্কীন সর্ট দিয়ে ছড়িয়ে দেন। এরপরপরই ফুঁসে ওঠে তৌহিদি জনতা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

গত ১৩ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনায় মহান আল্লাহকে নিয়ে কটাক্ষ করার অপরাধে গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক সাংবাদিক আসাদুল্লাহ বাদি হয়ে জিয়ার নামে গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেন। যার নং ৬২৬ তারিখ ১৬/০৯/২৪ ইং।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তাজুল ইসলাম জানান, এঘটনায় সাংবাদিক আসাদুল্লাহ একটি সাধারণ ডাইরি করেছেন। সাধারণ ডাইরিটি আদালতে প্রসিকিউশন দেওয়া হয়েছে। আদালত জিডিটি গ্রহণ করে জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

মামলার বাদি সাংবাদিক আসাদুল্লাহ বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে ওই নাস্তিক জিয়া। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আদালত যে বিচার করবে আমি সেটা মেনে নেবো। তবে, আমি আদালতের কাছে তার সব্বোর্চ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।




আমরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চাইনা, আমরা যৌক্তিক সংস্কার চাই: শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, আমরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চাইনা, আমরা যৌক্তিক সংস্কার চাই। তিনি বলেন, আমরা চাই ছাত্ররাজনীতির সংস্কার গবেষণা, এবং তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

আজ শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার আলাউদ্দিন নগর শিক্ষা পল্লী পার্কের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ইবি অঞ্চলের সাথী সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রশিবিরের প্রতিটি কর্মীকে পড়াশোনার পাশাপাশি সুন্দর রাষ্ট গঠনে নিজ নিজ স্থান থেকে কাজ করার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন “বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী ভাইদেরকে দিনে সাংগঠনিক কাজ করার পাশাপাশি গভীর রাতে জায়নামাজে বসে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর সাহায্য চাইতেও আহবান জানান।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন,”বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের জোড়ালো আবেদন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রণিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে খুব দ্রুত নতুন আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।

কুষ্টিয়ার শহর শিবিরের সভাপতি হাফেজ সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের সূরা সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবুল হাশেম এবং ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোঃ সুহাইল।

সেসময় কুষ্টিয়া জেলা শিবিরের সভাপতি ইমরান হোসেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা, মেহেপুর জেলা, ঝিনাইদহ জেলা ও শহর শাখার সভাপতিসহ শিবিরের প্রায় দেড় হাজার সাথী উপস্থিত ছিলেন।




মেহেরপুরে র‌্যাবের অভিযানে ৩৬ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

মেহেরপুর সীমান্তে মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৩৬ কেজি গাঁজাসহ রাহিব ওরফে রাকিব (৩৫) কে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২) সিপিসি-৩ মেহেরপুর ক্যাম্প।

র‌্যাব-১২ এর গাংনী ক্যাম্পের কমান্ডার সহকারি পুলিশ সুপার মো: এনামুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম গতকাল  ২৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার সময় গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তি লক্ষি নারায়নপুর ধলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে গাঁজাসহ রাকিবকে আটক করেন।

আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার সময় গাংনীস্থ র‌্যাব ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ ব্রীফ করে এই তথ্য জানান র‌্যাব কমান্ডার মো: এনামুল হক।

আটক রাকিব গাংনী উপজেলার লক্ষিনারায়নপুর ধলা গ্রামের মো: আক্তারুল ইসলামের ছেলে।

র‌্যাব ১২ এর মেহেরপুর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী-৩ এর গাংনী ক্যাম্পের কমান্ডার সহকারি পুলিশ সুপার মো: এনামুল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে খবর পেয়ে র‌্যাবের একটি টিম রাকিবের বাড়িটি ঘীরে ফেলে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তার বাড়ির বিভিন্ন রুমে, উঠানে ও অন্যান্য স্থান থেকে ২৬ টি প্যাকেটে মোড়ানো গাঁজার পুটলা উদ্ধার করা হয়। এসময় তার ঘর থেকে দেশীয় তৈরী দুটি ধারালো হাসুয়া উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত গাঁজার মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

র‌্যাব কমান্ডার জানান, আমাদের কাছে খবর এসেছিল ভারতীয় সীমান্তের তারকাটা পার হয়ে গাঁজার একটি বিরাট চালান বাংলাদেশ সীমান্তের লক্ষিনারায়পুর ধলা গ্রামের রাকিবের বাড়িতে মজুত করা হয়েছে। সেখান থেকে এই চালানটি তাদের বহনকারীদের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হবে।

তিনি বলেন, গাঁজার এই বড় চালানটির সাথে অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নাম পাওয়া গেছে। যা এখনি বলা যাবেনা। এই চালানের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাবের টিম কাজ শুরু করেছেন।

গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে আসামি রাকিবকে গাংনী থানা পুলিশে হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে।

উল্লেখ্য গাংনীতে র‌্যাব ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ছোট খাটো গাঁজা উদ্ধারের ঘটনা থাকলেও এটা গাঁজা উদ্ধারের সর্বোচ্চ ঘটনা।




দূর্ণীতির উর্দ্ধে থেকে সরকারি দফতরের কার্যক্রম সততা ও নিষ্ঠার সাথে করা হবে–ডিসি

মেহেরপুর নবাগত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত মেহনাজ বলেছেন, দূর্ণীতির উর্দ্ধে থেকে সরকারি দফতর সমূহে সকল কার্যক্রম সততা ও নিষ্ঠার সাথে করা হবে। স্বচ্ছভাবে নেওয়া হবে সকল উন্নয়ন প্রকল্প। এলাকার দুস্কৃতিকারী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। গাংনীতে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকতার্ ও সুধীবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

গাংনী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টার সময় নবাগত জেলা প্রশাসকের আগমন উপলক্ষ্যে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে গাংনী উপজেলা প্রশাসন।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা নিবার্হী অফিসার প্রীতম সাহা। এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুপ্রভা রানী, উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন, গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম সোনাসহ শিক্ষানবিশ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ প্রমুখ।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হুসাইন, সিএফএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল হেলাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি সালাউদ্দীন শাওন, খৃষ্টান সম্প্রদায়ের নেতা রেভারেন্ট বেনজামিন মন্ডল, গাংনী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মেহেরপুর প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী কানন, গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমএন পাভেল, গাংনী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিসি সিফাত মেহনাজ আরও বলেন. এলাকায় মাদক ও ইভটিজিং এর ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগে সব সময় সোচ্ছার। এলাকায় ইভটিজিং ও মাদকের কোনো ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।

সেবা প্রার্থীদের সরাসরি তার কাছে যাওয়ার জন্য আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জেলার উন্নয়নসহ অন্যান্য বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সাধারণ মানুষের মাঝে তৃতীয় কোনো পক্ষের কাজ করার সুযোগ থাকবেনা। সেবা প্রত্যাশীদের কোনো কোনো ধরনের সেবা আমি আইনগত ভাবে দিতে না পারলে তাদের বুঝিয়ে বলছি।

কাজলা ও সেউটি নদী খনন ও দখলমুক্ত করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মতামত সমন্ধে জেলা প্রশাসক বলেন, নদী দুটি খননের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এককভাবে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব নয় বলে মত তুলে ধরে তিনি বলেন, শিক্ষা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে শিক্ষার সাথে জড়িত। আমরা কেউ শিক্ষক, অভিভাবক নইতো ছাত্র। শিক্ষার মান উন্নয়নে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। ছাত্রকে বুঝতে হবে শিক্ষার গুরুত্ব-শিক্ষককে বুঝতে হবে তার পেশার দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং অভিভাবকদের বুঝতে হবে সন্তানের সুশিক্ষার দরকার আছে। ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের সমন্বয়ে শিক্ষার মান গড়ে তুলতে হবে।

ডিসি বলেন, জেলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসার মান বৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে সিভিল সার্জন ও মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়কের সাথে কথা হয়েছে। মেহেরপুরের এই হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে আড়াই’শ শয্যায় উন্নতি করা হয়েছে। এখানে জনবলসহ বিভিন্ন সংকটের কারণে স্বাস্থ্য সেবা পূর্ণাঙ্গভাবে দিতে না পারলেও যে সামর্থ্য রয়েছে সেটা দিয়েই সেবার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাকিগুলো সমাধানের জন্য স্বাস্থ্যে কর্মকর্তারা উপর মহলের সাথে যোগাযোগ করছেন। অচিরেই স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে কিছু সমাধান হয়ে যাবে।

বিগত দিনগুলোতে জেলার উন্নয়নে সুসম বন্টন হয়নি এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ডিসি বলেন, জেলায় বরাদ্দকৃত অর্থ এখন থেকে জনসংখ্যা এবং আয়তনের ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

মাদক নিয়ন্ত্রণে ছাত্রদের ভূমিকা নেওয়ার আহবান জানিয়ে ডিসি সিফাত মেহনাজ বলেন, সীমান্তবর্তি এই জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। এছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মেহেরপুর একটি কৃষি সমৃদ্ধ জেলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজেলার মাটিকে রক্ষা করতে হবে। ইটভাটার জন্য টপসয়েল কেটে নিলে মাটির বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই মাটির টপসয়েল রক্ষা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে সবার সহযোগীতা চান তিনি।

জেলায় দিন দিন জমি সংক্রান্ত বিরোধ বাড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে গ্রাম আদালত জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে। তাই গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকে নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ওয়াইফাই কর্ণার সামাজিক ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে হবে। এলাকার লাইব্রেরীগুলোর বর্তমান অবস্থান জানার জন্য স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়কদের ভূমিকা নিতে হবে। লাইব্রেরীগুলোকে সচল করে এই প্রজন্মের মানুষকে নতুন করে জ্ঞানমুখী ও বইমুখী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আবহানকাল থেকে এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৈদ্ধ খ্রষ্টান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে আসছেন। বিভিন্ন কঠিন সময়ে সেই উদাহরণ বাংলাদেশে আছে। আমরা পারস্পারিক সম্প্রীতির সাথে বসবাস করি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ধারা যেভাবে অব্যাহত আছে সেটা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের স্বারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের এই উৎসব জেলার প্রতিটিস্থানে সুন্দর ও সুশৃংখলভাবে উৎযাপিত হওয়ার জন্য সকল ধর্মের লোকজনকে সহযোগীতা করার অনুরোধ জানান।

ডিসি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীরা অনেক দুর থেকে এসে কাজ করেন। তারা এলাকাকে সর্ব্বোচ্চটা দিয়েই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগীতা করার জন্য স্থানীয়দের আহবান জানান। প্রশাসন ও স্থানীয়রা এক সাথে কাজ করলে জেলার সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্তি হবে।

এর আগে নবাগত জেলা প্রশাসক মতবিনিময় সভায় আগমন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা ও অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
মতবিনিময় সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সাংবাদিক, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকবৃন্দ, এনজিও কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




গাংনী নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহার প্রশংসায় ডিসি সিফাত মেহনাজ

গাংনীর মানুষেরজান মালের নিরাপত্তা, শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাদকমুক্ত গাংনী উপহার দিতে সর্বক্ষণ কাজ করছেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাব প্রীতম সাহা। গাংনীর সর্বস্তরের মানুষ সহযোগীতা করলে একটি সুন্দর ও সম্ভাবনাময় গাংনী উপহার দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

গাংনীর ইএনও সম্পর্কে আস্থা নিয়ে এসব কথা বলেন মেহেরপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে গাংনীতে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। গাংনী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত নবাগত জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজকে অভিনন্দন ও পরিচিতি সভার আয়োজন করেন।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর নবাগত জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ। জেলা প্রশাসক বলেন, আমার যোগদানের ১৫ দিনে প্রীতম সাহার সাথে আমার যতবার কথা হয়েছে সে সময়ে কোন সময় নিজের কথা বলেনি। গাংনীর মানুষের কথা বলেছে।

অনুষ্ঠানে গাংনী উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন,গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম,গাংনী উপজেলার ভিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা,বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




দামুড়হুদায় সুধী সমাজের ব্যক্তিদের সাথে নবাগত ইউএনওর মতবিনিময়

দামুড়হুদায় নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সুধী সমাজের ব্যক্তিবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ মমতাজ মহল এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তনু, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের, উপজেলা জামাতের আমীর নায়েব আলী, সেক্রেটারি জেনারেল আবেদ উদৌলা টিটন, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল গফুর, আব্দুল ওদুদশাহ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন, এনজিও প্রতিনিধি ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ, কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাস, হাউলী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন, কুড়ালগাছি ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, নতিপোতা ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ামিন আলী, উপজেলা ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি এনামুল কবীর, দামুড়হুদা মডেল মসজিদের ইমাম মুফতী মামুনুর রশীদ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উত্তম রঞ্জন দেবনাথ, দামুড়হুদা বাস স্টান্ড বাজার কমিটির সভাপতি মাকসুদুর রহমান রতন।

সভায় বক্তরা বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও সীমান্ত হত্যাবন্ধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার মান উন্নয়ন, তিন ফসলী জমি রক্ষা, সরকারি সম্পত্তি ও হাঁট-বাজার দখল মুক্তকরণ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দালাল মুক্তকরণ, মাদক, চোরাকারবারি, চাঁদাবাজ, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সড়ক সংস্কার, সাম্রদায়িক- সম্প্রীতি বজায় রাখা, আইন শৃঙ্খলার উন্নয়নসহ সমাজের অবহেলিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের উপর গুরুত্বরোপ করে আলোচনা করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ মমতাজ মহল ও দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে সকল সমস্যা সমাধানের জন্য উপস্থিত সকল সূধীবৃন্দের সহযোগীতা কামনা করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আশরাফ আলী মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, দামুড়হুদা থানা যুবদলের আহবায়ক মাহাবুবুর রহমান বাচ্চু, সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান মিল্টন, দর্শনা থানা যুবদলের আহবায়ক জালাল উদ্দীন লিটন, সদস্য সচিব মিলন মোল্লা, দর্শনা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব জালাল উদ্দীন, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ইকরামূল হক, দর্শনা কৃষক দলের আহবায়ক আশরাফুল হক বিপ্লব, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আফজালুর রহমান সবুজ, সদস্য সচিব এম ডিকে সুলতান, দর্শনা পৌর ছাত্র দলের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কবি সাহিত্যিক পরিষদের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার হারুন অর রশীদ।




দামুড়হুদায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ইউএনওর মতবিনিময় সভা

দামুড়হুদা উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নবাগত দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল।

দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শামসুজ্জোহা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ বীর ফয়সাল তানজির, সহসভাপতি মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, যুগ্ন সম্পাদক সাজিদ হাসান সোহাগ, নির্বাহী সদস্য মেহেদী হাসান মিলন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক এসএম সুজন, নির্বাহী সদস্য তাছির আহমেদ, হাবিবুর রহমান, সদস্য শাহাজালাল বাবু, হেলাল উদ্দিন, এম ডি কে সুলতান, সাংবাদিক হাতেম আলী, আল সাফায়েত হোসেন প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন। আর আমার একার পক্ষে এ উপজেলার সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর রাখা সম্ভব নাই। সাংবাদিকদের বস্তু, নিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে পুরো উপজেলার চিত্র দেখতে চাই। তিনি আরো বলেন, এ উপজেলার সাংবাদিকরা সাহসের সাথে সঠিক, সত্য যাচায় করে সত্য প্রচার করবে। তাতে যদি কোনো সাংবাদিক কে যেকেউ বিপদে ফেলার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ তারা সব সময় সত্যের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের সমস্যা চিহ্নিত, ও তা দূরীকরণে কাজ করবে এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।




কোটচাঁদপুরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

কোটচাঁদপুরে সর্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে পূজা মন্ডপসমুহের নিরাপত্তা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ শে সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অফির্সাস ক্লাব মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রস্তুতি মূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটচাঁদপুর সার্কেল মুন্না বিশ্বাস, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি জান্নাতুল মাওয়া, মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ সৈয়দ আল-মামুন, সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার এনামুল হক,সাফদারপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, দোড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বিশ্বাস, কুশান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহরুজ্জামান সবুজ, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি শরিফুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভুইয়া,পৌর বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ রায়,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী সিদ্ধার্থ কুমার কুন্ড, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার আশরাফুল আলম, সমাজ সেবা অফিসার বসির উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শিলা বেগম, বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসাহাক আলী,পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান,কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মইন উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বাশার প্রমুখ।

সে সময়  পূজা মন্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে করনীয় বিষয় তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন অতিথিরা।

এ সময় উপজেলার ৪১ টি পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি-সম্পদক, সাংবাদিক,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কর্মী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




পদ্মায় পানি বৃদ্ধিতে দৌলতপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার পানি বাড়ছে। এর ফলে কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরের ৪টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার চিলমারি এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

লোকালয়ে পানি না ঢুকলেও নিম্নাঞ্চলের আবাদি ফসল তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২শ’ হেক্টর জমির মাসকলাই আর মরিচ ক্ষেত ডুবে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তা ঘাটও। সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। এভাবে পানি বাড়তে থাকায় এলাকাবাসী শঙ্কায় থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড আর স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন বৃষ্টি না হলে পদ্মার পানিও কমতে থাকবে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, দৌলতপুর অংশে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে পদ্মায় পানি বাড়ছে। উপজেলার ভাগজোত এলাকায় গত ১০ দিনে ১.৭৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ০.১৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পয়েন্টে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ১৪.২৬ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১.৪৪ সেন্টিমিটার নিচে।

এদিকে দৌলতপুরের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শঙ্কায় পড়েছেন উপজেলার ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৩৬ গ্রামের মানুষ। বসতবাড়িতে পানি না ঢুকলেও বাড়ির আশপাশে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ক্ষেতের ফসল বিশেষ করে মাসকলাই আর মরিচের ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় ভীষণ ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছেন তারা।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামরে কৃষক আমিরুল ইসলাম জানান, এবার তিনি চরে ৮ বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ করেছেন। কিন্তু পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তার কলাইক্ষেত ডুবে গেছে। এতে ভীষণ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলেও জানান তিনি।

একই ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের আনারুল ৭ বিঘা মাসকলাই আবাদ করেছেন। ক্ষেতের সবটুকুই তলিয়ে গেছে পানিতে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তিনি।

পার্শ্ববর্তী চিলমারি ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। বসতবাড়িতে পানি না ঢুকলেও অবশিষ্ট নেই ওই এলাকার কোনো ফসলি জমি। কৃষক ফয়জুর রহমান স্বাধীন জানান, এবার তিনি ১৪ বিঘা জমিতে মাষকলাই আবাদ করেছেন। আগামী অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকে ফসল ঘরে তোলার কথা। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় তার ক্ষেতের সব মাষকলাই ডুবে গেছে। এতে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

চিলমারি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ একজন বড় চাষি। এবার তিনি ৩৪ বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ করেছেন। পদ্মার পানি আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মাষকলাই ক্ষেতের সবটুকুই ডুবে গেছে। পানি না কমলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।

রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, আকস্মিক পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মাষকলাই, মরিচসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার ইউনিয়নের প্রায় ১৬টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম লেমন জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার ৬৫ শতাংশই চাষ হয় চরাঞ্চলে। ইতোমধ্যে প্রায় ২শ’ একর জমির মাসকলাই ও মরিচ ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। পদ্মার পানি আকস্মিক বৃদ্ধিতে জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসায় গত ১০ থেকে ১২ দিন ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও দু’একদিন পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তারপর কমতে পারে পানি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নদী ভাঙনরোধে উপজেলার উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্পের নিকট জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।