গণমাধ্যমে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা- চালুনি চোখ রাঙায় সুঁইরে

বাংলার ঘরে চালুনি আর সুঁই কে না চেনেন। কথায় আছে শতছিদ্রওয়ালা চালুনি ঠাট্টা করে সুঁইয়ের একটা ছিদ্র নিয়ে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি আরোপ নিয়ে রাস্ট্রদূত পিটার হাসের যে কড়া আলাপ, তা সেই প্রবাদ বাক্য মনে করিয়ে দেয়।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এরপর বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক নেতা, সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। সম্পাদকদের সংগঠন এডিটর্স গিল্ড বাংলাদেশ পিটার হাসকে এক চিঠি পাঠিয়ে গভীর উদ্বেগও জানায় ।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর ‘এডিটর্স গিল্ড বাংলাদেশ’ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে তার বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি পাঠায়। ৩ অক্টোবর পিটার হাস সেই চিঠির উত্তর দেন। তার চিঠির বাংলা অনুবাদ করলে যা দাঁড়ায় তাহলো, এডিটর্স গিল্ড থেকে চিঠি দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সম্প্রতি চ্যানেল ২৪-এ এক সাক্ষাৎকারে আমার দেওয়া বক্তব্যকে আরও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার সুযোগের প্রশংসা করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের অধিকার এবং বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনও সরকারের সমালোচনামূলক মতামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন ২৪ মে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি নিয়ে বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সবার দায়িত্ব রয়েছে—ভোটার, রাজনৈতিক দলগুলো, সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ সবার। সমানভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ যে এসব প্রতিষ্ঠান যেন গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।

সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন নীতিটি সম্পর্কে যোগ করে বলেছেন, এটি যেকোনও বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা হবে।
এর মধ্যে যে কেউ অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, যারা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ নেয় এবং যদি সেই পদক্ষেপগুলো গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সরকার যখন তাদের রিসোর্স এবং সংস্থাকে ব্যবহার করে সেন্সরশিপ, ইন্টারনেট সংযোগকে সীমাবদ্ধ ও সাংবাদিকদের হয়রানি করবে, তখন আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে থাকবো।

‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে। যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলবো এবং আমাদের ভিসানীতি প্রয়োগ করবো।’

পিটার হাসের চিঠির কথা জানিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এডিটর্স গিল্ড জানায়, ‘বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এবং তাদের রাষ্ট্রদূতের অবস্থানের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে চায়। কারণ, তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হিসেবে সুপরিচিত।’

মিডিয়ায় যারা কাজ করেন তাদের উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। প্রশ্ন করা জরুরি, গণমাধ্যম কী কী ভাবে ভোটকে প্রভাবিত করবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে। এর মাপকাঠি তারা কিসের ভিত্তিতে তৈরী করেছে? সেই জায়গা থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যাখ্যা চাওয়ার অধিকার আছে।

যে আমেরিকা বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে চোখ রাঙায় তার নিজের দেশে সে কীভাবে মিডিয়াকে ব্যবহার করে- তার বহু নজির তারা সারা বিশ্ব রাজনীতিতে ছড়িয়ে রয়েছে।
মনে নেই কি কারো, সাবেক স্টেট সেক্রেটারি ও ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার নির্বাচনে মার্কিন গণমাধ্যম বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করেছিল। অনেকেরই ধারনা ছিল ট্রাম্প জয়লাভ করবেন না, জনপ্রিয়তার দিক থেকে হিলারি ছিলেন এগিয়ে। বলা হয়, ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া বিতর্কিত ভুমিকা পালন করেছে।

বলা হয়ে থাকে ‘ঐতিহ্যগত’ ভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে গণমাধ্যম প্রভাব বিস্তার করে। ১৯৬০ সালের নির্বাচন থেকে এই প্রথা প্রচলিত। কারণ প্রার্থীর খবর যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ গণমাধ্যম থেকেই বেশি পেয়ে থাকে। একজন প্রার্থীর বিষয়ে কীভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, কতটুকু করা হচ্ছে তার প্রতি নাগরিকদের আলাদা দৃষ্টি থাকে। আর সেই দৃষ্টি থেকেই মার্কিন গণমাধ্যমের এই খোলামেলা অবস্থান সবার নজরে আসে।

কিংবা ধরুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বুশের প্রথম পর্বের সামরিক মন্ত্রী কলিন পাওয়েল যখন জাতিসংঘের মতো একটি সংস্থায় সবিস্তারে বর্ণনা করেন যে ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের জিম্মায় এমন সব মারাত্মক অস্ত্র আছে যা দিয়ে পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব, সাদ্দাম হোসেনের পতন না ঘটালে সারা দুনিয়া এক ভয়াবহ পরিনতি ভোগ করবে। সমগ্র বিশ্ব এই প্রচারনায় মেতে উঠলো যে ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের কাছে “ওয়েপন অফ ম্যাস ডেসট্রাকশন” নামের এক মারাত্মক অস্ত্র আছে এবং এই অস্ত্রের একমাত্র টারগেট পশ্চিমা বিশ্ব। জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শক দল ইরাকে এমন কোনো অস্ত্রের সন্ধান পাননি, কিন্তু তাঁর পরেও আমেরিকা ও ইংল্যান্ড মিলে ইরাক আক্রমন করলো যার ভয়াবহ পরিনতির কথা আজ আমরা সকলেই জানি। সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট তথ্যের উপরে ভিত্তি করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আধুনিক জনপদ ইরাককে ধ্বংস করে দেয়া হয়। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু ও কয়েক কোটি মানুষের উদ্বাস্তু হওয়ার কথা আমরা সকলেই জানি।

নোম চমস্কি তাঁর লেখায় তথ্য উপাত্ত সহ ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে পশ্চিমা দেশগুলো তাদের নিজেদের বানানো বয়ান কে বাস্তবতা বলে প্রচার করে এবং এই সকল বয়ানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমগ্র পৃথিবীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দখল নেয়া। সমগ্র পৃথিবীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দখল নেয়াটা কখনও ঘটেছে সরাসরি যুদ্ধের মাধ্যমে, কখনও ঘটেছে কোনো দেশে গৃহ যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়ার মাধ্যমে, কখনও কোনো দেশে বা অঞ্চলে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে। আর এসবের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গণমাধ্যমকে। চমস্কি দেখিয়েছেন কীভাবে প্রোপাগান্ডা মডেল বা রাষ্ট্র কিভাবে প্রোপাগান্ডা মেশিন গড়ে তোলে ও তাকে ব্যবহার করে জনগনের মাঝে এর বয়ানের স্বপক্ষে সম্মতি উৎপাদন করার জন্যে।

সেই আমেরিকা যখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে চোখ রাঙিয়ে বলে আভ্যন্তরীণ নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটালে পড়তে হবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় তখন বিস্ময় জাগে- আসলে কী নির্বাচনের জন্য তারা এসব বলছে? নাকি পিছনে বড় লুকায়িত কোনো স্বার্থ আছে, যা তারা ভয় দেখিয়ে অর্জন করতে চায়।

আরেকটা অতি প্রচলিত গল্প দিয়ে শেষ করি, একদিন এক বৃদ্ধার সন্তান মহানবী (সাঃ) কে বললেন তার মায়ের বহুমূত্র রোগ আছে। তাকে মিস্টি খেতে যেনো নবীজী নিষেধ করে দেন। মহানবী চুপ করে থাকলেন কিছুক্ষণ, তারপর সে সন্তানকে কিছুদিন পরে আসতে বললেন। সেই নির্ধারিত দিনে ছেলে তার মাকে নিয়ে গেলে নবীজি মাকে বুঝিয়ে বলেন কেনো তার মিস্টি খাওয়া ঠিক না। ছেলেটি তখন বললো- হে নবী, আপনি সেইদিনই কোনো কাজটি করলেন না। উত্তরে তিনি বলেছিলেন- সেসময় আমি নিজে মিস্টি খেতাম। সেদিনের পরে আমি নিজে মিস্টি খাওয়া ছেড়েছি। তারপর আমি মাকে ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছি। আমেরিকা নিজে যা করে তার একভাগও করেনি এমন দেশকে চোখ রাঙায় কেবল মোড়লি জিইয়ে রাখতে।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




মেহেরপুরে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপিত

“জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি” প্রতিপাদ্যে সারা দেশের ন্যায় মেহেরপুরে র‍্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শামীম হোসেনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে যেয়ে শেষ হয়। র‍্যালি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ শামীম হোসেনের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল কাদির, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাপতালের তত্বাবধায়র ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুর সাত্তার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, মেহেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আল মামুন, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস সহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীরা আলোচনা সভায় অংশ নেন।




কার্পাসডাঙ্গায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের অভিযানে বিশেষ ক্ষমতা আইনে (সাজাপ্রাপ্ত) আসামী গ্রেফতার।

জানা গেছে চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা আরামডাঙ্গা চুরি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে সাজাপ্রাপ্ত আসামি মিনারুল (৩৮) পিতা আ: করিম’কে নিজ বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে রাত ৩ টার সময় গ্রেফতার করেন পুলিশ।

এই অভিযানে অংশ নেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই ইমরান হোসেন ও এ এস আই মোসলেম উদ্দিন সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আসামিকে নিজ বাড়িতে থেকে গ্রেফতার করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃত আসামিকে গতকাল দামুড়হুদা মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান। একের পর এক অভিযানে সফল হওয়ায় কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের সকল সদস্যদের’কে সাধুবাদ জানিয়েছে কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নবাসী।




মেহেরপুরে সিপিবির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মেহেরপুর জেলা শাখার কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় মেহেরপুর পৌর এলাকার পুরাতন বাসষ্ট‍্যান্ড পাড়ায় এই কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস‍্য কমরেড ডাঃ সাজেদুল হক রুবেল নির্দলীয় নিরেপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচি চালিয়ে জণগণকে সাথে নিয়ে বিকল্প বাম শক্তি গড়ে তুলে আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এবং সেই সাথে শোষকদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায় করার লক্ষে শ্রমিক-কৃষকদের সচেতন থাকতে বলেন।

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতির অনুপস্থিতিতে কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড শহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস‍্য কমরেড ডাঃ সাজেদুল হক রুবেল এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড ইদ্রিস আলী।

এসময় সিপিবি’র মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড শহিদুল ইসলাম কাননের সঞ্চালনায় কর্মী সভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড অ‍্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, কমরেড মুসা করিম, কমরেড মাহমুদুল হক, কমরেড রফিকুল ইসলাম, কমরেড আহসান হাবীব, কমরেড আব্দুল হাকিম, কমরেড গোলাম মোস্তফা, উষা, রাজনসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।




কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের অভিযান গ্রেফতার ১

কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালন করে বুপ্রেনরফেইন ইনজেকশনসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে।

দামুড়হুদা মডেল থানা মোঃ আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্পের এসআই (নিঃ) ইমরান হোসেন, এএসআই (নি:) মোঃ মসলেম উদ্দিন, সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অদ্য (০৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় দামুড়হুদা মডেল থানাধীন কার্পাসডাঙ্গা গ্রামস্থ জনৈক আব্দুল আলিম এর পরিত্যাক্ত মুদি দোকানের সামনে কার্পাসডাঙ্গা হইতে সুবলপুর গামী পাকা রাস্তার উপর হতে ধৃত আসামী মোঃ সাইফুল ইসলাম(৪২) পিতা- মৃত রমজান আলী, সাং- (ঝিনাইদহ বাসস্টান্ড পাড়া) থানা-সদর, বুপ্রেনরফেইন ইনজেকশন বহন করার সময় একটি FREEFOM মোটরসাইকেল এবং ৪০০(চারশত) পিচ বুপ্রেনরফেইন ইনজেকশন সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।




গাংনীতে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস ২০২৩ উদযাপন

“জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি’এই স্লোগানে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে গাংনীতে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার(৬ অক্টোবর) সকালে গাংনী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিন শেষে শোভাযাত্রা টি উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খন্দকার শহিদুল ইসলাম, মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সোহেল আহমেদ, তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল হক পচু, কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান রানা, ষোলোটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন পাশা, বামুন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওবাইদুর রহমান কমল, সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান সহ সাংবাদিক ও উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের পরিষদের সচিব,গ্রাম পুলিশ দফাদার সহ আরো অনেকে।

আলোচনা সভায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়।




অবশেষে শাকিবের নায়িকা হচ্ছেন সোনাল চৌহান

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে প্যান ইন্ডিয়ান সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেন পরিচালক অনন্য মামুন। সিনেমার নাম ‘দরদ’। নায়িকা থাকবেন বলিউডের।

কিন্তু সেই নায়িকা কে, ওই সময় তা প্রকাশ করেননি বাংলাদেশের এই পরিচালক। আর নিয়ে দুই মাস ধরেই চলছিল নানা জল্পনা।

একেক সময় একেক নায়িকার নাম শোনা গেছে। কখনো প্রাচী দেশাই, কখনো নেহা শর্মা, কখনো জেরিন খান তো কখনো শেহনাজ গিলের নাম।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে এই নায়িকাদের নাম ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শাকিবের বিপরীতে আসলেই কে থাকছেন সেই খবর পাওয়া যায়নি এতদিন।

এবার সব জল্পনার অবসান হলো। ‘দরদ’ সিনেমায় শাকিব খানের নায়িকা হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাল চৌহান। সম্প্রতি এই সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি।

সোনালের পক্ষ থেকে এর সত্যতা জানা না গেলেও সিনেমার তিন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কলকাতার এসকে মুভিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অশোক ধানুকা বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমার ছেলে হিমাংশু ধানুকা দেখছে। তবে আমি জানি, সোনাল চৌহান এই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। কবে হয়েছেন, এর সঠিক তারিখটি এখন মনে নেই।’

ভারতের উত্তরপ্রদেশের শাহি রাজপুত পরিবারের মেয়ে সোনাল চৌহান বলিউডের প্রায় দেড় ডজন সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ারসহ বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছেন।

এসকে মুভিজ ছাড়াও যৌথভাবে সিনেমাটি প্রযোজনা করছে মুম্বাইয়ের ওয়ান ওয়ার্ল্ড মুভিজ ও বাংলাদেশে অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট।

এদিকে অশোক ধানুকা জানিয়েছেন, ২০ অক্টোবর ভারতের বেনারসে এই ছবির শুটিং শুরু হবে। টানা ২৫ দিন চলবে শুটিং।

অনন্য মামুন ছাড়াও যৌথভাবে ভারত থেকে আরেকজন পরিচালক সিনেমাটি পরিচালনা করবেন। তবে তার নাম জানা যায়নি।




জীবননগরে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালন

‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে জীবননগর জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ  শুক্রবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদের কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

এরপর জীবননগর উপজেলা পরিষদের হলরুমে উপজেলা নিবাহী অফিসার হাসিনা মমতাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জীবননগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আঃ সালাম ঈশা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েসা সুলতানা লাকী, উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি তিথি মিত্র, মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান।

সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, জন্ম নিবন্ধন শিশুর অধিকার। জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনামূল্যে জন্মনিবন্ধন বিতরণ করতে হবে । জন্ম নিবন্ধনে মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। যারা নিবন্ধন করে তাদের সহায়তা করতে হবে। জন্মনিবন্ধন ব্যক্তি লাভের বিষয় নয়। দেশের বাজেট তৈরীতে পরিকল্পনা গ্রহনে বাধাগ্রস্থ হয়। মৃত্যু নিবন্ধন করাও জরুরি। মৃত্যু সনদ তৈরীতে সতর্ককতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।`




দুর্নীতিতে জর্জরিত যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নিয়ে মাথা ঘামায় না

ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিলকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার আইনপ্রনেতাদের ভোটে পদচ্যুত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এমন ঘটনা প্রথমবারের মতো ঘটলো। সোমবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়েছে। অভিযোগটি তুলেছিলেন তার দল রিপাবলিকান পার্টির একজন আইনপ্রণেতা ম্যাট গ্যাটেজ। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ২১৬ ভোট এবং বিপক্ষে পড়ে ২১০ ভোট।

ইউক্রেনে তহবিল সংক্রান্ত হোয়াইট হাউজের সঙ্গে গোপনে একটি চুক্তিতে যাওয়ার জন্য ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন গ্যাটেজ। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে স্পিকার ম্যাকার্থি বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে আলাদা কোনও চুক্তি হয়নি।

শুধু ম্যাকার্থি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা, সিনেটর সহ অনেকের বিুরদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নানান অভিযোগে এখন আদালতে চক্কর দিচ্ছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে তাঁর ছেলে হান্টার বাইডেন ও ভাইদের বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকিসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের। এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর বব মেনেনডেজ ও তাঁর স্ত্রী নাদিন দুর্নীতির অভিযোগ অভিযুক্ত হয়েছেন। মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মেনেনডেজের বিরুদ্ধে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দুর্নীতির অভিযোগ আনা হলো। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের সূত্রমতে, মেনেনডেজ ও তাঁর স্ত্রী নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সোনা, নগদ অর্থ, বিলাসবহুল গাড়ি ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ঘুষ নিয়েছেন। এসবের পরিমাণ কয়েক লাখ ডলার। নিউ জার্সির ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি তাঁর পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে তিন ব্যবসায়ী ও মিসরের সরকারকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত তিন ব্যবসায়ীর একজনের পৈতৃক বাড়ি মিসরে।

ডেমক্র্যাটিক দলীয় সিনেটর এই বব মেনেনডেজ রিপাবলিকান দলীয় সিনেটর টড ইয়াং এর নেতৃত্বাধীন সিনেটের আটজন সদস্য নিয়ে বাংলাদেশের র্যাবের সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মেনেনডেজ এই কাজ করেছিলেন প্রশাসন। বব মেনেনডেজই র্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন দেশে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে বেড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রনেতারা যে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন কাজ করেন এবং বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বেড়ান, এটিই তার বড় উদাহরণ।

এ বিষয়ে কলামিস্ট বেলেন ফার্নান্দেজ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে চালু থাকা একটি মিথ হলো, দুর্নীতি পুরোপুরি অন্য দেশের ব্যাপার। কম সভ্য দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের বিষয় এটি। গণতন্ত্রের প্রতি যাদের অঙ্গীকারের ঘাটতি রয়েছে, আইনের শাসনের প্রতি যাদের অশ্রদ্ধা রয়েছে,দুর্নীতি হলো তাদের বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের সবকিছুই পূতঃপবিত্র আর তাদের কর্মকর্তারা সবাই মহান।

সাবেক কুটনীতিকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিধিন মানবাধিকার লঙন হচ্ছে। প্রতিদিনই গুলিতে নিরীহ মানুষ মরছে। তাদের দেশে ঘুষ দুর্নীতি অবাধে চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। কিন্তু তারা বড় রাষ্ট্র, নিজেদের বিশ্ব মোড়ল, তাই তাদের নিজেদের অপরাধটা দেখার সময় নেই। তারা অন্য দেশ নিয়ে মাথা ঘামায়। এটা কোনোভাবেই কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।

সাবেক রাষ্ট্রদূত, এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, দেখেন আমেরিকা তো আমেরিকা। তাদেরকে কেউ কিছু বলতে পারবে না। আপনি যখন ভুল করবেন তখন তারা আপনাকে বলবে। তিনি বলেন, তারা তাদের কথা বলতে থাকুক। এগুলো শুনার দরকার নাই। আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনায় সমারোচনার উর্ তাকি তাহলে কেউ সমালোচনার সুযোগ পাবে না।

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, আমেরিকা নিজে দেশের বিষয়ে মাতা ঘামায় না। অন্যদের বিষয়ে তাদের মাথা ব্যাথা বেশি। তিনি বলেন, কোথাও কোনো ভুল হলে তারা পরামর্শ দিতে পারে। যেহেতু তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগি তারা এটা দিতে পারে। কিন্ত স্যাংশন, নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না। আমাদের পক্ষ থেকেই কেউ না কেউ তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে , এ কারণেই তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আরেক সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, তারা নিজের দেশেই যেটা মানে না সেটা তারা অন্যের দেশে প্রয়োগ করে। তারা কোনোভাবেই স্যাংশন দেওয়ার অধিকার রাখে না। তারপরও তারা সেটা করেছে। কই, তারা তো পাকিস্তান, মিশরের বিরুদ্ধে কোনো স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। সেসব দেশে তো খুব খারাপ অবস্থা। গণতন্ত্র নেই।

তিনি বলেন, মূলক আমেরিকা ‘‘সংকীর্ণ ও সাময়িক স্বার্থ ’’ এসব কাজ করে। এটা কোন পক্ষের জন্যই ভালো ফল বয়ে আনে না। আর দীর্ঘমেয়াদে তো নয়ই। কোনো পক্ষই উপকৃত হতে পারে।

মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের দোষ দেখার মত তাদের আঙ্গুল দেওয়ার সুযোগ নেই। ভুলভ্রান্তি হলে তারা কূটনৈতিক পদ্ধতিতে পরামর্শ দিতে পারে। ধরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু পাবলিকলি এগুলো বলে আমাদের দেশকে তারা করা হয়। এটা মনে রাখতেম হবে তারা নিজেদের স্বার্থই এসব নিষেধাজ্ঞা, স্যাংশন দেয়।

তিনি বলেন, আমেরিকা বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ বাজায়, সেসব দেশে যুদ্ধে সহযোগিতা করতে তাদের সৈন্য পাঠায়। কিন্ত তাদের সৈন্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙনের বিচার করা যাবে না। ঘুষ দুর্নীতি প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। ট্রম্পের বিরুদ্ধে তো নানান অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে।




আইনের পথে হাঁটলেই মুক্তি পেতে পারেন খালেদা জিয়া

দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্যে দেশের বাইরে নেয়া নিয়ে চলছে নানা ব্যাখ্যা অপব্যাখ্যার ফুলঝুরি। বিএনপি এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলছেন সরকার ইচ্ছে করে আইনি জটিলতায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করাতে দিচ্ছে না। আর অন্যান্য আইনজ্ঞরা বলছেন সরকার চাইলেই যা খুশি তাই করতে পারে না। সংবিধান এই স্বেচ্ছাচারের অধিকার কাউকে দেয় না। চলুন পাঠক আমরা দেখে নেই এনিয়ে কী বলেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এবং কী আছে আইনে।

আলোচনার সুবিধার জন্যে আমরা সরকারের আইনমন্ত্রীর বক্তব্য জেনে নিতে পারি। গত ৪ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকেদের তিনি বলেন, এখন আইনের পথে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার পথ বন্ধ। তবে তিনি যদি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, সেটা রাষ্ট্রপতি বিবেচনায় নিতে পারেন। এনিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলেন, আইনমন্ত্রী বা সরকার আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আইন অনু্যায়ী খালেদা জিয়াকে সরকারই মুক্তি দিতে পারে। বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন,ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় বলা আছে, সরকার চাইলেই নির্বাহী আদেশে যে কাউকে মুক্তি দিতে পারে এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে। ওই ধারাতেই বলা আছে, নির্বাহী আদেশে শর্ত ছাড়াই মুক্তি দেওয়া যায়। এমনকি সরকার সাজা মওকুফও করতে পারে। ফলে সরকারই শর্তহীন মুক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

এনিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হলে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে আগের আদেশ প্রত্যাহার করে নতুন আদেশ জারি করতে হবে। এখানে আগের আদেশ বলতে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও খালেদা জিয়াকে বাসায় চিকিৎসা নেয়ার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে সেটার কথা বলা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সে ক্ষেত্রে কিন্তু কিছুটা জটিলতা আছে। সেই আদেশ প্রত্যাহার হলে তিনি আর বাইরে থাকতে পারবেন না। কারাগারে ফিরে যেতে হবে। তার পর সেই আবেদন বিবেচনায় আনা হবে।

এখন আসি নিরেট আইনে। ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার চাইলে বিনাশর্তে বা শর্তসাপেক্ষে কারও দণ্ড স্থগিত করতে পারে। স্থগিতাদেশের সময় বাড়াতে পারে। আবার শর্ত ভাঙলে যে কোনো সময় স্থগিতাদেশ বাতিল করে দিতে পারে। আইনের উপধারা ১এ বলা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে, সরকার যে কোনো সময় বিনা শর্তে বা দণ্ডিত ব্যক্তি যা মেনে নেয়, সেই শর্তে তার দণ্ড কার্যকরীকরণ স্থগিত রাখতে বা সম্পূর্ণ দণ্ড বা দণ্ডের অংশবিশেষ মওকুফ করতে পারবেন। আর উপধারা-৫ এ বলা হয়, রাষ্ট্রপতি চাইলে তার কাছে যে কোন দণ্ডপ্রাপ্তকে ক্ষমা করতে পারেন। এছাড়া তিনি সরকার সাধারণ বিধিমালা বা বিশেষ আদেশ দ্বারা দণ্ড স্থগিত রাখতেও পারবেন। তবে সবার আগে দণ্ডপ্রাপ্তকে দোষ স্বীকার করে আবেদন করতে হবে।

সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম মাসুম বিল্লাহ জানান, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত আক্ষরিকভাবে ঠিক আছে। কিন্তু এতে কিছু ভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এই ভ্রান্তি দূর করতে কিছু বিষয় আলোচনা হওয়া দরকার। যেমন আইন বলছে, ক্ষমা প্রদর্শন বা শাস্তি কমানো কিংবা মওকুফ করা সরকারের নির্বাহী বিভাগের একটা গুরুত্বপূর্ণ সার্বভৌম কাজের অনুশীলন। কোনো অনিশ্চিত বা অস্পষ্ট ব্যাপারে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলন করা উচিত নয়। কেননা, বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশন আইন বা ভিসা আইনে দণ্ডিত ব্যক্তিকে সাধারণত ভিসা দেয়া হয় না। দিলেও সেটা প্রতিষ্ঠিত একটা ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়তে হবে। অপরাধীর দণ্ড স্থগিতকরণ বা হ্রাসকরণ অপরাধীকে নির্দোষ বানিয়ে দেয় না। তার দণ্ডাদেশ সক্রিয় থাকে। তাই ধরা যাক রাষ্ট্র যদি, কোনো দণ্ডিতের সাজা স্থগিত করে বা কমিয়ে তাকে বিদেশ যাবার অনুমতি দেয়, সেই দেশের ইমিগ্রেশন আইন ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে।

এই অনিশ্চয়তার কারণে, রাষ্ট্রীয় নির্বাহী-সার্বভৌম ক্ষমতা অন্য দেশের ভিসা আইনের মুখাপেক্ষী করা যায় না। প্রার্থী তার আবেদনে কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য-দেশের নাম উল্লেখ না করলে এই অনিশ্চয়তা বাড়ে। এই জটিলতার সঙ্গে আর একটা অভ্যন্তরীণ আইনি দিক যুক্ত আছে উল্লেখ ব্যাখ্যা করে মাসুম বিল্লাহ বলেন, পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩-এর মুখবন্ধে বলা আছে যে, পাসপোর্ট ব্যবস্থা পরিচালিত হবে ‘জনস্বার্থে’। এই আইনে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি কোনো অপরাধে কমপক্ষে দুই বছর দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি পাসপোর্ট পাবার যোগ্য নন। নবায়নের ক্ষেত্রেও সেই একই আইন প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, এখন খালেদা জিয়া যদি সত্যিই বিদেশে যেতে চান এবং তার মেডিক্যাল রিপোর্ট সাপোর্ট করে তাহলে একটাই আইনি পথ খোলা আছে। সংবিধানের ৪৯ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতির কাছে দাক্ষিণ্য আবেদন করা। ৪০১ ধারার অধীনেও সরকারের কাছেও দণ্ড মওকুফের আবেদন সম্ভব। তবে একটা কারণেও ৪০১-এর অধীনে মওকুফ আবেদন কোনো কাজে আসবে না, তা হলো ৪০১-এর মওকুফ আবেদনকারীকে নির্দোষ করে না। সুতরাং তার আইনজীবীদের প্রথমেই আদালতের রায় মেনে নিতে হবে।

আইনজ্ঞ মাসুম বিল্লাহ তার পর্বেক্ষণে বলেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আইনের পথেই হাঁটছেন না। তারা যতটা না খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার চেয়ে বেশি বিএনপির আইনজীবী। তাদের কথায় মনেই হয না যে খালেদার বিচার আইন অনুযায়ী হয়েছে। তারা তাকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেয়ে প্রমাণ করতে চান যে, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বিনা কারণে জেলে আছেন। অথচ যে মামলায় তিনি সাজা প্রাপ্ত হয়েছেন সেই মামলার সঙ্গে সরকারের কোন যোগসূত্রই নেই। মামলা করেছিল ২০০৭ এর তত্বাবধায়ক সরকার।

বিএনপির আইনজীবীদের হোমওয়ার্ক বাড়াতে বলেন মাসুম বিল্লাহ। আমাদের ভাবতে হবে, ‘তিনবারের প্রধানমন্ত্রী’ যুক্তি জ্ঞাত আইনবিজ্ঞানের কোনো ফর্মুলায় পড়ে না। বরং ‘তিনবারের প্রধানমন্ত্রী’ হবার কারণেই তার ক্ষেত্রে ৪০১ ধারা সতর্কভাবে প্রয়োগ হওয়া উচিত। ওই পয়েন্টে বার বার তারা হেরে যাবেন। মানবিক গ্রাউন্ড কথাটা ঠিক হয় না। কারণ ৪০১ ধারা নিজেই একটা মানবিক ধারা। যার বেনিফিট খালেদা জিয়া নিচ্ছেন। মনে রাখতে হবে, এটা স্কুলের টিউশন ফি কমানোর কোনো দরখাস্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে, গ্রাউন্ডটা হবে, মানবাধিকার গ্রাউন্ড। খালেদা জিয়ার বর্তমান বয়স,করোনা সার্কামস্টেন্সেস, রাইট টু লাইফ, রাইট টু হেলথ, রাইট টু ডিউ প্রসেস, প্রিজাম্পশন অব ইনোসেন্স, বেনিফিট অব টু কনস্ট্রাকশন ইত্যাদি গ্রাউন্ডে ৪০১-এর আবেদন করতে হবে।

এখন দেখা যাক যদি সত্যিই খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্যে বিদেশে নিতে হয় তাহলে কী করতে হবে তাঁর পরিবারকে। প্রথমে এই মামলায় উচ্চ আদালতের আপিল প্রত্যাহার করতে হবে। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা পেলেই কেবল, ফৌজদারি দণ্ড প্রশমন হয়, এবং দণ্ডিত তার হারানো সিভিল অধিকারগুলো ফেরত পান। তখন আর সেটা ইমিগ্রেশন আইন বা ভিসা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় না। আর তখনই কেবল আবেদনকারী বিদেশে যেতে পারেন।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।