হতাশা কিংবা বিষণ্ণতা অথবা উদ্বিগ্নতা দিন-দিন মানুষের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানসিক বা শারীরিকভাবে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যেকোনো মানুষের জীবনে যেকোনো কারণে যেকোনো সময়ে মানুষ হতাশ অথবা বিষণ্ণ হতে পারে।
মোটকথা মানুষের জীবনে হতাশার কারণে কোনো জুড়ি নেই। তা মানুষের শারীরিক কারণও হতে পারে কিংবা মানসিক কারণ হয়তো বা তার জীবনের কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা কিংবা তার কর্মক্ষেত্রও হতে পারে। এছাড়া আমাদের জীবনযাত্রা, আবহাওয়া, প্রকৃতি, আমাদের চাহিদা, আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে যেকোনো সময় আমরা হতাশ বা বিষণ্ণতার মধ্যে পড়তে পারি। তবে হতাশ বা বিষণ্ণতা এই দুটোকে কেন্দ্র করে কখনোই জীবন চালানো যাবে না।
জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদের সুস্থ থাকার জন্য সবারই একটা সুন্দর জীবন কাম্য। তবে সেখানে যদি অনেক ধরনের সমস্যা থাকে, সে সমস্যাগুলোকে কখনোই সমস্যা মনে করে জীবনের সঙ্গে না জড়িয়ে সমাধান খুঁজতে হবে। তেমনি হতাশার ক্ষেত্রেও হতাশা দূর করার ব্যবস্থা নিতে হবে। হতাশ আছি বলে হতাশ হয়ে যাচ্ছে সব কিছু এমনটা ভাবলে চলবে না।
জীবনকে সুন্দর করার জন্য সহজ উপায়ে জীবন-যাপন করার জন্য হতাশা এবং বিষণ্ণতাকে দূরে রাখতে হবে। তবে এর জন্য আমাদের দরকার নিজস্ব উদ্যোগ।
হতাশার বিষণ্ণতা দূর করতে কিংবা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনে শরীরচর্চা এক অপারেশন ভূমিকা পালন করে সেই বিষয়েই জানা যাক:
.দৈনন্দিন কাজের রুটিন তৈরি করুন।
.লক্ষ্য স্থির করুন।
.ব্যায়াম বা শরীরচর্চা।
.নির্দিষ্ট সময় বাইরে গিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা।
.স্বাস্থ্যকর পরিমিত খাবার খাওয়া।
.নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো ও পর্যাপ্ত ঘুম।
.পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান দায়িত্ব গ্রহণ করুন।
.ইতিবাচক চিন্তা করুন।
.বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন)/হতাশা নিরাময়ে কাউন্সেলিং নিন।
.বেশি প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
হতাশা বা বিষণ্ণতা দূর করতে শরীরচর্চা রয়েছে অপরিসীম ভূমিকা:
শরীরচর্চা মানুষের শরীরে এন্ডোরফিন নামে রাসায়নিকগুলো বাড়ায় যা আমাদের ভালো থাকার অনুভূতি বৃদ্ধি করে। এটি হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনতে পারে। নিয়মিত শরীরচর্চা মস্তিষ্ককে ইতিবাচক ধারণাগুলো পুনঃগঠন করতে উৎসাহিত করে। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় শরীরচর্চা করতে হবে এমন কোনো বাঁধা-ধরা নিয়ম নেই, সপ্তাহে কয়েকবার কিছুক্ষণ হাঁটাতেও কাজ হতে পারে।
ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ফলে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে অতিরিক্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হয়। এর ফলে আমাদের হৃদযন্ত্র এবং রক্তনালী সচল থাকে। এর ফলে সমস্ত শরীরে একটি সুস্থ প্রাণস্পন্দন ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। ব্যায়াম কাজের গতি বাড়ায়।
যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। ব্যায়াম অনিদ্রা দূর করে, অতি নিদ্রা হ্রাস করে।
শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্ক থেকে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এসব রাসায়নিক উপাদান চিত্ত প্রফুল্ল করে এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি চেহারায় লাবণ্য ও ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। নিয়মিত শরীর চর্চাকারীকে বিষণ্ণতা কিংবা হতাশা সহজে গ্রাস করতে পারে না। মানসিক শক্তি পাওয়া যায় ব্যায়ামের মাধ্যমে।
তবে শুধু ব্যায়ামের ওপর নির্ভরশীল হলেই চলবে না। একটি সুস্থ জীবন যাপনের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন আমাদের সবারই অনুসরণ করতে হবে। নিয়ম মেনে চলা অভ্যাসের পরিণত করতে হবে।
প্রতিটি দিন আমাদের নিজেদের। তাই কোনো কারণে একটি দিন নষ্ট করলে জীবন থেকে অনেকটা সুন্দর সময় নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জীবনকে সুন্দর সহজ সরল করার জন্য কিছু ভালো অভ্যাস করাই যেতে পারে।
সূত্র: ইত্তেফাক