থ্রেডে এসেছে এডিট বাটন

মেটার থ্রেড পাচ্ছে এডিট বাটন। কোনো থ্রেড পোস্ট করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে এডিট করার সুযোগ পাবেন। এভাবে অন্তত রিপোস্টের ঝক্কি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

থ্রেডের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টুইটারের ১৬ বছর সময় লেগেছিল এই এডিট বাটন যুক্ত করতে। থ্রেড প্লাটফর্মটিতে গতি সঞ্চার করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিচারটি ওয়েব ও মোবাইল দুটো জায়গাতেই ব্যবহার করা যাবে। মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব দুটো ভার্সনেই সহজে এডিট অপশন ব্যবহার করা যাবে এবং এই ফিচার ব্যবহার করার জন্য গুণতে হবে না সাবস্ক্রিপশন চার্জ।

মেটার সিইও মার্ক জারাকবার্গ এও জানিয়েছেন, থ্রেডে ভয়েস নোটস যুক্ত হতে চলেছে। ক্যারিওকে স্টাইলের ভয়েস নোট প্লাটফর্মটিতে বিশেষ সংযোজন বলা যায়।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুর জেলা বিএনপির অনশন

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিতে বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনশন করেছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি।

আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মেহেরপুর পৌর এলাকার কাঁসারী পাড়ায় অবস্থিত জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সন্নিকটে বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই অনশন কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, আব্দুর রহমান বিশ্বাস, ইলিয়াস আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড: মারুফ আহমেদ বিজন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সাইয়েদাতুন্নেসা নয়ন সহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।




ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে চীনের রাগ বাংলাদেশের ওপর ঝাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র!

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোটামুটি একটি ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এসেছে। সবসময়েই বাংলাদেশ বৃহৎ শক্তিগুলোর দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। যখনই কোন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তখনই বাংলাদেশ কোন অবস্থান ব্যক্ত না করে তার পররাষ্ট্রনীতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এই প্রথম বাংলাদেশ অনেকগুলো দ্বন্দ্বের মাঝখানে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলোর ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি।

বলা বাহুল্য, ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির পাশাপাশি জিওগ্রাফিক্যাল অবস্থানের জন্য ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ইন্দোপ্যাসিফিক স্ট্র্যাটিজিতে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশপথ হিসাবে কাজ করতে পারে বাংলাদেশ। এমনকি এই অঞ্চলের আরেক শক্তি ভারতের সাথে সীমান্তবর্তী দেশ হওয়ায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। জনসংখ্যার বিচারেও বাংলাদেশ বড় একটি বাজার। অনেকেই বাংলাদেশের এই বাজারে ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন, বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। আর ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশ যে বিশাল জলসীমা পেয়েছে, সেখানেও প্রচুর সম্পদ আছে। এসব কারণে বাংলাদেশ এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ কোয়াডের অন্য সদস্য এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ঢাকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়ায় বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই ভারত সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর বেষ্টিত ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে ।

চীন কখন শক্তিশালী হয়ে উঠলো? বলা হয়ে থাকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় ধরণের বাঁক বদল ঘটেছিল ২০১৭ সালে। সেবছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে। ২০১৭ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র যত ধরণের প্রতিরক্ষা, সামরিক বা কূটনৈতিক দলিল প্রকাশ করেছে, তার সব কিছুর কেন্দ্রে আছে চীন । এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মাথাব্যাথা কীভাবে চীনকে ঠেকানো যায়। কীভাবে সেটা করা যাবে? যুক্তরাষ্ট্রের এসব কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি। এই স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইতমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত—এই চার দেশের জোট কোয়াড গঠিত হয়েছে। বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরই নামের যে মহা-পরিকল্পনা নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশে প্রভাব বিস্তার করছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি ছিল মূলত তার পাল্টা পরিকল্পনা, চীনকে ঠেকানোর কৌশল। ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যত মিত্র দেশ আছে, এই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে তাদেরকে একটি চীন-বিরোধী জোটে জড়ো করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

একটু ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চল ঘুরে দেখা যাক। এই অঞ্চল এর রাজনীতি অর্থনীতি কেনো এতো গুরুত্বপূর্ণ? ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে দেশ আছে এক ডজনেরও বেশি। আছে চীন, ভারত, পাকিস্তানের মতো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। আছে জাপান-কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিক শক্তি। ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোতে যে জনসংখ্যা সেটা বৈশ্বিক জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি, যার ৫৮ শতাংশই আবার তরুণ। কর্মশক্তি এবং ভোক্তা -দুই হিসেবেই সংখ্যাটা বিশাল। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক অর্থনীতিরই দুই-তৃতীয়াংশ, জিডিপি’র পরিমাণ হচ্ছে বৈশ্বিক জিডিপি’র ৬০ শতাংশ। ছাড়া বিশ্বে যে সমুদ্র আছে, তার ৬৫ শতাংশ পড়েছে ইন্দো-প্যাসিফিকে, ভূমির ক্ষেত্রে যেটা ২৫ শতাংশ। যার কারণে এই অঞ্চল হয়ে উঠছে বৈশ্বিক রাজনীতির ভরকেন্দ্র এবং আগ্রহের কারণ।

এদিকে ভারতের সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক বিবিসি ও রয়টার্সের সাবেক সংবাদদাতা। গত ৮ অক্টোবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল হেরাল্ডের অনলাইন সংস্করণে ‘আই অন চায়না, প্রেসার অন বাংলাদেশ: আমেরিকাস লেটেস্ট গ্রেট গেম ইন দ্য ইস্ট’ শিরোনামে এক নিবন্ধে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপের অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে তুলে ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন এত মাথাব্যথা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। ভৌমিক বলেছেন, চীনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যেসব কৌশল আঁটছে তার মধ্যেই এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতে পারে। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের স্থল ও সমুদ্রে প্রবেশের রুটগুলোকে অবরুদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা।

এই যে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের ওপর ক্ষোভ তার কারণ দেশটি এতো স্ট্যাটেজিতে পা দিচ্ছে না বাংলাদেশ। এবং আমেরিকার জন্য বড় চিন্তার হলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় ইন্দো-প্যাসিফিক এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, এই অঞ্চলকে ঘিরেই এখন তীব্র হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বে দুই বৃহৎ শক্তিই বাংলাদেশকে তাদের পক্ষে চায় । ২৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি আবারও ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। এই অঞ্চলকে ঘিরে ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে, সেটাই মূলত তুলে ধরা হয়েছে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা’ নামের ওই নীতিতে। “সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়” বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির যে মূল ভিত্তি সেটিই তুলে ধরা হয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ঘিরে বাংলাদেশের রূপরেখায় ।
আর বিপত্তিটা ঘটলো এখানেই। ফলাফল, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘন, সুষ্ঠু নির্বাচনের অজুহাতে দেশের অভ্যন্তরীণ সকল বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে প্রচ্ছন্নভাবে নানা দিক থেকে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে বাংলাদেশকে । দীর্ঘবছর ধরেই বাংলাদেশের মানবাধিকার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অজুহাতে দেশের প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। কিন্তু তারা অন্য অনেক দেশের কোন লঙ্ঘনকেই যুক্তরাষ্ট্র আমলে নেয় না। ফলে বলাই যায় যে, বাংলাদেশ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের এত কূটনীতিক তৎপরতার কারণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ঘিরে বাংলাদেশের নিরপেক্ষ অবস্থান ঘোষণা দেয়া।

আসলেই চীনকে প্রতিপক্ষ ভেবে কতদূর করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র? এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় ৯ অক্টোবর রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত বে অব বেঙ্গল সম্মেলনে ‘ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক অধিবেশনে যে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সেটি থেকেই। তিনি সরাসরি বলেন, ইন্দোপ্যাসেফিক অঞ্চলে ক্রমেই চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবাধে বাড়তে দিলে তা এ অঞ্চলের দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। ফলে চীন ঠেকাও যেমন মনোভাবে আছে, সেটা করতে বাংলাদেশকে দুর্বল করে সাথে নেওয়ার কৌশলও বিদ্যমান।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




দেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকার

একটি জাতির সামগ্রিক সত্তার পরিচয় তার সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে প্রকাশ হয়। সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে একটি জাতি জাতীয় ও বিশ্ব দরবারে নিজের অবস্থান তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি আজ বিশ্বের দরবারে তার স্বকীয় উন্নত সংস্কৃতির মাধ্যমে নিজের অবস্থান তৈরি করেছে। আজ বাঙালি ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের বলিষ্ঠ ও সৃজনশীল নেতৃত্বে।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আপামর বাঙালি তাঁর কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে । এক্ষেত্রেও অন্যতম অনুপ্রেরণা ছিল বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতিগত আবেগ। এই সফল্য আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, সিপাহী বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, সাঁওতাল বিদ্রোহ, এমনকি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মতো জীবন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতার ফল। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির সাংস্কৃতিক ঐক্য ও ঐতিহ্য প্রতিফলিত হয়েছে জাতির পিতার আদর্শে তথা মুজিবীয় ভাবধারায়। এই আদর্শ অনুসরণ করে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে, কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক জনপদ পর্যন্ত সংস্কৃতিচর্চার একটি উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারের হাত ধরে বাংলাদেশ আজ জীবনযাত্রার নব নব অভিযাত্রায় উন্নতির জোয়ারে ভাসছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান্নোয়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতিচর্চা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার পূরণ সম্ভব হয়েছে। রাস্তাঘাট, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও সোলার পোঁছে দেওয়া, ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে শেখ হাসিনা ও তাঁর আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় পর্যায়কে অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের নেতৃত্ব প্রমাণ করেছে।

বাংলাদেশ এমডিজির লক্ষ্য সফলভাবে পূরণ করে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এসডিজির লক্ষ্য পূরণের পথে দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশের এই উন্নয়নে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিকা প্রশংসনীয়। জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি বারবার আস্থা রেখেছে। মানুষের সেই আস্থার প্রমাণ দেখি দেশে অনুষ্ঠিত সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিয়ে বারবার আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করার মধ্য দিয়ে। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার নেতৃত্বের প্রতি ভরসা রেখে বাঙালি স্বাধীনতা লাভ করেছে, তেমনি শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি দেশের জনগণের বারবার আস্থা রাখার ফল আমরা পাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বর্তমানে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির পাশাপাশি সংস্কৃতিগতভাবে এগিয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংস্কৃতিগত পদক্ষেপ নতুন প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করছে। দেশে প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে জনগণের মধ্যে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা, বিশ্বাস ও মূল্যবোধ তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি এদেশের জনগণ বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্ব পরিমণ্ডলেও পরিচিত করে তুলছে। এই সংস্কৃতিচর্চা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের পরিবেশ সম্ভব হয়েছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার সরকার বাঙালি জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি , মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সাহিত্য ও গবেষণামূলক কাজ সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে প্রযুক্তি যুক্ত করে প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন ও নিজস্ব সংস্কৃতিতে বলীয়ান শিক্ষিত জাতি হিসেবে আমাদের গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছে।

আমাদের দেশে তৃণমূল পর্যায়ে অসংখ্য প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার তৃণমূলের সেই প্রতিভা জাতীয় পর্যায়ে প্রকৃত পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে বিকাশের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য অসাম্প্রদায়িক চেতনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে দেশে প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ হচ্ছে। জ্ঞানচর্চার জন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা, শিল্প-সাহিত্যচর্চার প্রকৃত পরিবেশ সৃষ্টি, গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ব্যাপকভাবে পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে দেশ আজ রুচিশীলতার আলো ছড়াচ্ছে। আজ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংস্কৃতবান আলোকিত মানুষ তৈরির প্রকৃত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার শুধু যাতায়াত ব্যবস্থা কিংবা প্রযুক্তিগত উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছে তা নয়, এর পাশাপাশি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নানারকম পদক্ষেপ হাতে নিয়ে তা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাজ লক্ষ্য করলে তার প্রমাণ মেলে। যেমন- জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, চারু-কারু এবং ললিত কলার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন; প্রত্নতত্ত্ব, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য; জাতীয় গ্রন্থাগার/গণগ্রন্থাগারের উন্নয়ন ও প্রবর্ধন; জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলনে সহায়তা; জাতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং চারুকলার বিকাশ ও উন্নয়নে সহায়তা প্রদান; শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান; বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সাথে চুক্তি সম্পাদন ও সাংস্কৃতিক ভাবের আদান-প্রদান; পল্লি সাহিত্য, পল্লি সংস্কৃতি ও পল্লি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা; শিল্পী, লেখক কিংবা সাহিত্যিকদের পেনশন প্রদান প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ সফলতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার এরইমধ্যে প্রায় ১৮৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ টি উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন করেছে এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ১৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশে বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গ্রামীণ সংস্কৃতিতে ব্যাপক ইতিবাচক বিবর্তন এনেছে। আজ গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ থাকায় গ্রাম ও শহরে মধ্যে ঐক্য স্থাপিত হয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের ফলে গ্রামের মানুষ হাঁস-মুরগির খামার, মৎস্যপালন ও কৃষিজাত দ্রব্য খুব দ্রুত দেশের সর্বত্র পাঠাতে পারছে। এতে করে গ্রামীণ অর্থনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি জাতীয় পর্যায়ে নিজের অবস্থান শক্ত করে তুলেছে। এছাড়াও গ্রামে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অর্জন।

একটি দেশে মাঝে মাঝে এক শ্রেণির অপশক্তির দ্বারা জাতীয় সংস্কৃতি আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এই ধরনের অপশক্তি দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে চায়। ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পাকিস্তানি-বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা বাঙালি সংস্কৃতির উপর চরম আঘাত করে। পাকিস্তানিরা তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বাংলাদেশকে সংস্কৃতিগতভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিলো সেই অপশক্তি। কিন্তু মুজিবীয় আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনার ধারক ও বাহক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার সকল অপশক্তিকে পরাজিত করে বর্তমানে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্ব-পরিমণ্ডলে প্রতিনিয়ত পরিচিত করে তুলছে।

১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হলে আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশ্ব অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে’ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার সেই বক্তব্যকে প্রতিনিয়ত বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, ‘ আমি বিশ্বাস করি জাতির পিতার সাংস্কৃতিক দর্শন প্রতিষ্ঠা করা আমাদের কর্তব্য’দেশের জনগণ বর্তমানে যে উন্নতির স্বাদ পাচ্ছে এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, তা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে।

আসন্ন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জনগণ বরাবরের মতো শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আস্থা রাখবে নিঃসন্দেহে। কেননা, বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতার আদর্শ, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। সুতরাং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের উন্নয়নের জোয়ার ও জাতির পিতার সাংস্কৃতিক দর্শনকে সমুন্নত রাখতে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক ইতিবাচক স্বার্থের জন্য অপরিহার্য।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা।




দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে বি.এন.পি ও জামাতের অরাজকতা সৃষ্টি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলার লক্ষ্যে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের নির্বাচনী এলাকার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আয়োজনে চন্দ্রবাস স্কুল মাঠে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

নাটুদহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে নৌকা প্রত্যাশী প্রার্থীগণের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু, জীবননগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু মোঃ আব্দুল লতিফ অমল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ ডঃ মোঃ হামিদুর রহমান, জাতীয় দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নূর হাকিম, এয়ার কমোডর (অবঃ) মোঃ আবু বক্কর, অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার কবির।

এ সময় বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।রাস্তা, ঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক হারে। শুধু তাই নয়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, শিক্ষা ভাতা, শিশু ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ বিভিন্ন ভাতা প্রদান করছে বর্তমান সরকার। এছাড়াও মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট, অসংখ্য উড়াল সেতু সহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গোটাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিরোধী দল। তাই তারা অহেতুক অরাজগতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের পায়তারায় মেতেছে। বিরোধী দলের অপকর্মকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে হবে। আসুন সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে জামাত বিএনপির অপকর্মকে রুখে দিই। সেই সাথে দলের ভিতরের যে সকল হাইব্রিড নেতারা দলের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাড়াতে হবে। যাতে করে দলের বড় ধরনের ক্ষতি করতে না পারে। সেদিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, এ্যাডভোকেট আবু তালেব, আওয়ামী লীগ নেতা- এম.এ ফয়সাল, আসাদুল হক সহ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন, নাটুদহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম।




হাসের সঙ্গে কী গোপন বৈঠক, কেন অস্বীকার ফখরুলের?

ঢাকায় নিযুক্ত ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বৈঠক করেছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়লেও সত্যতা উড়িয়ে দিয়েছেন ফখরুল। এমনকি আমেরিকান অ্যাম্বাসির সঙ্গে বিষয়টির সত্যতা জানতে চেয়ে গণমাধ্যমগুলো যোগাযোগ করলে তারাও সরাসরি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে গেছে। যখন আমেরিকার পক্ষ থেকে প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের সঙ্গে কেবল বৈঠক শেষ করেছে সেসময় পিটার হাসের সঙ্গে এই গোপন বৈঠক নিয়ে অস্বীকারের খেলা কেনো খেলছে বিএনপি?

আলোচনার শুরু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। সেদিন দুপুরে বারিধারায় প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে বৈঠকটি হয়েছে বলে খবর আসতে থাকে। গণমাধ্যমগুলোর পক্ষ থেকে ফখরুল ইসলামের সঙ্গে সন্ধ্যার পর যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনও বৈঠক হয়নি। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’

যদিও বিএনপির একাধিক রাজনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পিটার হাসের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠক সম্পর্কে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া অন্য কেউ অবহিত নয়। তবে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করে যে পিটার হাস ও মির্জা ফখরুলের বৈঠকটি আমেরিকান ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ফখরুল ইসলাম বেলা ১২টা ৫০ থেকে ১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করেন। এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটাস হাস ও মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সিলর আর্থরো হিনস ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে ফখরুল ইসলামকে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) আবারও জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এটার উত্তর দেব না। কালকে দিয়ে দিয়েছি (উত্তর)। আমি আপনাদের একটাই অনুরোধ করব সব সময়, আমরা সবাই তো এ দেশের মানুষ। আমাদের প্রত্যেকেরই এই দেশের প্রতি, মাটির প্রতি, মানুষের প্রতি দায়িত্ব আছে। আপনারা সাংবাদিক, স্বাভাবিকভাবেই স্কুপ নিউজ খুঁজবেন। বাট এট দ্য সেম টাইম সেই বিষয়টাকে আমরা ডাইভার্ট করব না, যা জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই এই সময় পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিষয়েই জানানো দরকার বলে মনে করেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, একটা দেশের রাষ্ট্রদূত, এবং সেই দেশটি আমেরিকা, যখন বিএনপির মতো একটি দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন তখন সেখানে নানা প্রশ্নের জন্ম দিবে এটাই স্বাভাবিক। এখন একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আরেকদিকে তাদের পর্যবেক্ষকরা দেশে এসে নানা দলের সঙ্গে গোষ্ঠীর সঙ্গে সভা করছে। সেসময় আলাদা করে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে পিটার হাসের কী আলাপ?

এমনকি এইদিনে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যখন বিএনপি প্রতিনিধি দল দেখা করছেন তখন পিটার হাসের সঙ্গে কেনো কেবল ফখরুল ইসলাম আলমগীর গেলেন সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দুপুরে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সঙ্গে বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজ করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। রাজধানীর বারিধারায় রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ এবং বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল এতে অংশ নেন। বৈঠক শেষে তাঁরা রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। এ সময় তাঁরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তাঁরা রাষ্ট্রদূতকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা ছাড়াও মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় চলমান এক দফা আন্দোলনের বিষয়ে অবহিত করা হয়।

এদিকে, বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত একাধিক দলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের সঙ্গে এই বৈঠক নিয়ে কোন আলাপ হয়নি। যদি ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাক্ষাৎ করেনও যুগপৎ নেতাদের সাথে পরামর্শ ছাড়া এককভাবে কোন বড় সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ফলে আলোচনা হলে জোটের নেতারা জানবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগপৎয়ের বাম ঘারানার এক নেতা বলেন, ‘খবরটি বৃহস্পতিবার আমরা যখন শুনেছি তখন অলরেডি গণমাধ্যম জেনে গেছে। কেনো ফখরুল ইসলাম বৈঠকের কথা অস্বীকার করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুটো কারণ হতে পারে। এক কূটনৈতিক শিষ্টাচারজনিত কোনও বিশেষ কারণে বৈঠকের খবরটিকে সামনে আনতে চাইছে না বিএনপি। আরেকটি বিষয়ে হলো, কী আলাপ হয়েছে তিনি তা এখনই বলতে চান না।’




২০০১ সালের রামশীল যেন একাত্তরের শরণার্থী শিবির

বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন মানেই অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এখন আতঙ্কের আরেক নাম। দুরারোগ্য অসুখের মতো বাংলাদেশের বুকে লেগে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এমনিতেই সারা বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনের বিশেষ দিনগুলোতেই অত্যাচার অব্যাহত রাখে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন এলে তাদের জীবন-সম্ভ্রম-সম্পদের ওপর নেমে আসে জামায়াত-বিএনপি সিন্ডিকেটের হিংস্র কার্যকলাপ। বিশেষ করে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তো রীতিমতো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের সম্পদ লুট, হত্যা, ধর্ষণ, চাদাবাজি চলেছে। সেই কালযুগের ভিক্টিমরা আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে আবার আতঙ্কিত।

২০০১ সালের নির্বাচনের পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্তদের ওপর চালানো আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ রামশীলে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। এটি গোপালঞ্জের কোটালীপাড়ায় ১২টি ইউনিয়নের একটি রামশীল। বাগেরহাট বরিশালের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সেদিন কোটালীপাড়ার রামশীলকেই নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নিয়েছিল। এক কাপড়ে ভিটেমাটি ছেড়ে বের হয়ে যেতে বাধ্য হওয়া কপর্দকশূন্য মানুষগুলোর পাশে সেদিন রামশীলের মানুষ নিজেদের সর্বস্ব নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার ওই জনগোষ্ঠীকে সাধ্যমত সাহায্য করেছিলেন রামশীলবাসী। ইউনিয়নটি পরিণত হয়েছিলো ১৯৭১ সালের মতোই এক শরণার্থী শিবিরে। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছিল।

২০০১ সালের ৪ অক্টোবর রামশীলে ঘরহারা নির্যাতিত মানুষ আসতে শুরু করে বানের জলের মতো। তখনকার সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর, বাগেরহাটের মোল্লাহার এলাকা থেকে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমান নির্যাতিতরাও হাজারে হাজারে রামশীল ইউনিয়নে এসে আশ্রয় নিয়েছিলো। বাস্তুচ্যুত এসব হতভাগ্যদের মধ্যে অনেক ধর্ষিত নারী ছিলেন বলে সেই সময়ের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। নির্যাতিতরা কোনোপ্রকার চিকিৎসাসেবা না পেয়েই প্রাণ হাতে এলাকা ত্যাগ করেছিলেন সেদিন। কারণ নির্বাচনে জেতার পর বিএনপির নির্বাচিতরা সেখানে সরকারি-বেসরকারি সব সাহায্য পাবার পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।

বাগেরহাটে ২০০১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট) ও বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিনের নির্বাচনী জনসভায় বোমা বিস্ফোরণে জনসভায় আসা আট জন নারী-পুরুষ নিহত হন। ভয়ঙ্কর এই ঘটনায় জড়িত ছিল হরতাকুল জিহাদ এবং বিএনপি জামায়াতের স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনের পর ওই জেলার মোল্লাহাট উপজেলার জয়ঘা, চাঁদেরহাট, মাদারতলি, বুড়িগাংনি, বড়গাওলা, চাঘদা আক্রান্ত হয়। বেছে বেছে এই গ্রামগুলোতে তাণ্ডব চালানোর কারণ, এগুলো হিন্দু অধ্যুষিত।

বাগেরহাটের পাশাপাশি বরিশালও সহ্য করেছে ২০০১ সালের জামায়াত-বিএনপির নৃশংসতা। বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং হিন্দু সস্প্রদায়ের মানুষজনের ওপর চালানো বর্বরতা সারা পৃথিবীতে সমালোচিত হয়েছিলো। ২০০১ সালে বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আগৈলঝাড়ার বাশাইলের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লাকে অপহরণ করে হত্যা করে। সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বুলেটকে গৌরনদী বন্দরে দিনের বেলাতেই ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার ছাত্রলীগ নেতা মাসুম সিকদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

২০০১ সালে জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকারের কর্মীবাহিনীর অত্যাচারের শিকার হয় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ধানডোবা গ্রামের ৩০টি, চাঁদশী গ্রামের ২০টি, খাঞ্জাপুর গ্রামের ১৫টি, বিল্লগ্রামের ২৫টি, ইল্লা গ্রামের ৫টি, গেরাকুল গ্রামের ৫টি এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার গ্রামের ৫০টি, বাহাদুরপুর গ্রামের ৩০টি, বাকাল গ্রামের ২৫টি, রামানন্দেরআঁক গ্রামের ২৫টি, পতিহার গ্রামের ৩০টিসহ কয়েকশত পরিবার। বিকৃত রুচির এসব সন্ত্রাসী হিংস্রতা থেকে বাঁচতে হিন্দু পরিবারগুলোর নারী সদস্যরা অধিকাংশই গোপনে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যাদের সেই উপায় ছিলো না, তারা বিএনপি সন্ত্রাসীদের কালো থাবা থেকে বাঁচতে রাতের আঁধারে নির্জন পুকুর কিংবা দিঘির মাঝখানে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গৌরনদীর বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য পরিবার নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।

রামশীলে আশ্রয় নিতে আসা অনেক শিশু নিয়মিত খেতে পায়নি। এক বাড়িতেই প্রায় ২০০ আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছে। অনেক ধর্ষিত নারীকে আত্মহত্যার পথ থেকে বুঝিয়ে নিবৃত্ত করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে জানিয়েছেন রামশীলের মানুষ। বরিশাল এবং বাগেরহাট থেকে রামশীলে এসে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিলো। এমন ভয়াবহ বিপদ মোকাবেলা করতে সেখানে সেদিন গড়ে তোলা হয়েছিলো ২১ সদস্যের কমিটি। কিন্তু হতভাগ্য এসব মানুষ রামশীলেও স্বস্তি পায়নি। জামায়াত- বিএনপির স্থানীয় প্রশাসন বরিশাল-বাগেরহাটের ওইসব শরণার্থীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যেতে চাপ দেয়া শুরু করে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী রামশীল আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনের কথা দিয়েও যাননি।

২০০১ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন গোপালগঞ্জ ও বরিশালের ডিসি, এসপি আসেন রামশীলের শরণার্থীদের খবর নিতে। তারাও অত্যাচারিত মানুষদেরকে নিজ গ্রামে ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু যারা ফেরার চেষ্টা করেছে, তারা পথেই জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের হাতে মার খেয়েছে। সন্ত্রাসীদের তাড়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে আবারও পালাতে হয়েছে তাদেরকে।

দলীয় অবস্থান থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রামশীলে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের পাশে ছিলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সময় ব্যক্তিগতভাবে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তাদেরকে।

ঘটনার ১০ বছর পর হিন্দু সম্প্রদায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের সদস্যরা ২০১০ সালের ১৭ এপ্রিল রামশীল ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন। নির্যাতিত ব্যক্তিদের আশ্রয়দানকারীদের ১৪জন ব্যক্তি তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাহাবুদ্দিন আহম্মদ, সদস্য শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ার হোসেনের কাছে সাক্ষ্য দেন। শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে নির্যাতিত মানুষের দুঃসহ স্মৃতি আজও রামশীলবাসীদের মনে দাগ কেটে আছে।




দর্শনা পাখি ভ্যানের নিচে পড়ে শিশুর  মৃত্য

দর্শনায় খেলার ছলে পাখি ভ্যান চালাতে গিয়ে ঘটলো বিপত্তি, ভ্যানের নিচে পড়ে শিশু সাইমুন (৭) এর করুন মৃত্য হয়েছে।

সাইমুন দর্শনা পৌরসভার ঈশ্বরচন্দ্রপুর মাঠ পাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে। আজ শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে দর্শনা চেকপোষ্ট সড়কের কানকাটা ব্রীজের নিকট খেলার ছলে পাখি ভ্যান চালাতে গিয়ে ভ্যান থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়।

আহত অবস্থায় সায়মুনকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষনা করে।তার করুন মৃত্যতে গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বজনদের কান্নায় ঐ গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

আজ বেদনা বিধুর পরিবেশে স্থানীয় কবরস্থানে শিশু সাইমুনের দাফন সম্পর্ন হয়েছে।




চুয়াডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন

চুয়াডাঙ্গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস। দিবসটি উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় শুক্রবার সকাল দশটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বাহির হয়।

র‍্যালিটি চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো”অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি। র‍্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক নাজমুল হামিদ রেজা সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।

এ সময় তিনি বলেন,প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসাবে পরিচিত। বৈশ্বয়িক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দেশের জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষায় বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলন সহ বিভিন্ন ফোরামে এধরণের বিষয় তুলে ধরায় এর ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। দূর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি ও সচেতনতার বিকল্প নেই। প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমন বজ্রপাত, খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে আগাম সতর্কতা ও দূর্যোগকালীন সময়ে করণীয় বিষয়ে জনসচেতনতা মূলক প্রচারাভিযান চালাতে হবে। মনুষ্যসৃষ্ট দূর্যোগ মোকাবিলায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ও পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে তালের চারা রোপন এর উদ্যোগে অংশ নিতে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুর ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান

এসময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদস্যবৃন্দ, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধি, রোভার স্কাউটস এর সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অভিযানে ট্যাপেন্টাডলসহ আটক ১

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৫০ পিচ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধারসহ ১জনকে গ্রেফতার করেছে।

আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রাম থেকে তাকে আটক করে।

আটক ব্যক্তি দামুড়হুদা উপজেলার গেপীনাথপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৬)।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের ব্রীজের উপর ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট বেচাকেনা হচ্ছে বলে পুলিশের কাছে সংবাদ আসে। সংবাদের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথের নির্দেশে এসআই (নিঃ) তারিফুজ্জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশেরর অভিযানে ট্যাপেন্টাডল ট্যবলেটসহ শরিফুল ইসলামকে হাতে নাতে আটক হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে।