চুয়াডাঙ্গা ডিঙ্গেদহে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরষ্কার বিতরণ 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহ বাজার বাফার মাঠে গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে তিনটার সময় মরহুম আঙ্গির মোল্লা স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

টুর্নামেন্টে শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রিয়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার।

এ সময় তিনি বলেন, আগামী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিকের পাশাপাশি স্মার্ট খেলোয়াড় দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ছাত্র ছাত্রীদের খেলার জন্য আলাদা কিছু ভাবছে। তাই বেশি বেশি খেলার অনুশীলনী করতে হবে। যারা খেলাধুলা করেন, তাঁদের মন ভালো থাকে, তাঁরা শান্তিতে থাকেন। মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা থেকে দূরে থাকেন। সুন্দর সমাজ গঠন করতে বেশি করে খেলাধুলার আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।

মরহুম আঙ্গির মোল্লা স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩ ফাইনাল খেলায় সুবদিয়া স্পোর্টিং ক্লাব হানুড়বাড়াদি স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন । খেলার ফলাফল হানুড়বাড়াদি স্পোর্টিং ক্লাব ০ সুবদিয়া স্পোর্টিং ক্লাব ১

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরোজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের আইসি হারুন আর রশিদ, ডিঙ্গেদাহ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ি জাকির হোসেন জোয়ার্দ্দার বাবু, চুয়াডাঙ্গা সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম তুহিন, খেলা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল মুন্সী।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ, পদ্মবিলা ইউনিয়ন যুব লীগের সভাপতি বনফুল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সুমন মেম্বর, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, রিংকু ইসলাম, আমজেদ, শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোমিন, শামিম, সাইফুদ্দীন, রাজু, আলিফ, রাশেদ, মেহেদি, সাকিব, শুভ, মিলন, শিপন, সাইদ, রাসেল, সুজন আমান, রুবেল, ফাহাদ, শাকিল, নয়ন, সাবেক ফুটবল বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।




চুয়াডাঙ্গায় জেলা বিএনপির আয়োজনে অনশন কর্মসূচী পালিত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্হায়ীমুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবীতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আয়োজনে আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচী পালিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা শহরের সাহিত্য পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত এ অনশন কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল জব্বার সোনা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।

অনশন কর্মসূচীতে চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গার পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতুবৃন্দ মত বিনিময় করেছেন। তিনি আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আলমডাঙ্গায় দলীয় কার্যালয়ে উপজেলার ৩৯ টি মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে এ মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

মতবিনিময় সভায় এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন,আমরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসি,যুগ যুগ ধরে হিন্দু মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসবাস করছি,মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেই চেতনা অনুযায়ি আমরা যার যার ধর্ম সেই সেই পালন করি,ধর্ম যার যার উৎসব সবার,আসুন আমরা সকলে মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসি সকলকে নিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন করি,যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন সেই বাংলাদেশ।একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নিয়ে দেশে আবারও অরাজকতা সৃষ্টির পায়তরা করছে,আসুন আমরা সকলে মিলে ৭১ এর সেই পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই,বিএনপি জামাতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেই।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্যাম সুন্দর আগরওয়ালা। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার সালমুন আহমেদ ডন, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনীন্দ্রনাথ দত্ত, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাধুখা।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডাক্তার অমল কুমার বিশ্বাসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার কালু ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক জয় কুমার বিশ্বাস, পৌর শাখার হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পলাশ আচার্য, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট এর প্রতিনিধি অসীম কুমার সাহা, রথতলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিদ্যুৎ কুমার সাহা, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, যুবলীগ নেতা সৈকত খান,ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম, বাদশা,আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার আব্দুল বাতেন? মহসিন কামাল, আমিরুল ইসলাম মন্টু, ইউপি চেয়ারম্যানের আশিকুর রহমান ওল্টু, আলোচনা সভা শেষে ৩৯ টি মন্দির কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি।




গাজা এখন ভয়ানক মৃত্যুপুরী

হামাস ও ইসরায়েল সংঘাতের আটদিন আজ। চলমান সংঘর্ষে বিশ্বের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ গাজায় এখন পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এবং অন্যদিকে ১ হাজার ৩০০ ইসরায়েলি নিহত হয়ে অঞ্চলটি এক ভয়ানক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।

শনিবারের আপডেটে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ৭২৪ শিশু এবং ৪৫৮ নারীসহ ২ হাজার ২১৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, গাজায় আরও ৮ হাজার ৭১৪ জন নাগরিক আহত হয়েছেন এবং বিভিন্ন মাত্রায় আঘাত পেয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ হাজার ৪৫০ শিশু এবং ১ হাজার ৫৩৬ জন নারী রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় গাজার হাসপাতালগুলো আহত লোকে ভরে গেছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার ঘোষণা করেছে, গাজা উপত্যকায় ২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক সংঘাতে নিহত হয়েছে। আরও হাজার হাজার আহত লোক দিয়ে কেন্দ্রীয় হাসপাতাল ভরে গেছে।

খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসার অভাবে গাজার মানবিক সংকট চরমে। বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ। শনিবার সিএনএনের কাছে আসা ভিডিওতে বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে দেইর আল বালাহের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। হাসপাতালে জরুরি পরিষেবাগুলোকে চিকিত্সা সহায়তার প্রয়োজনে সকল বয়সের লোকদের স্ট্রেচার নিয়ে পাগলের মতো ছুটে আসতে দেখা গেছে।




ক্ষুধামুক্তির লড়াইয়ে আরও এগিয়েছে বাংলাদেশ

উন্নতি অব্যাহত থাকায় ক্ষুধামুক্তির লড়াইয়ে আরও একটু এগিয়েছে বাংলাদেশ। কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে চলতি বছরের যে ‘বিশ্ব ক্ষুধা সূচক’ প্রকাশ করেছে, তাতে বাংলাদেশের স্কোর গতবারের ১৯.১ থেকে কমে ১৯ পয়েন্ট হয়েছে। এই সূচকে ১৯ স্কোর মানে হল,যেসব দেশে ক্ষুধার সংকট মাঝারি পর্যায়ে, সেই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ।

ক্ষুধার সূচকে গতবছর ১১৬টি দেশের মধ্যে ৭৬তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর এ বছর ১২৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান ৮১তম। ২০১২ সালের পর থেকে ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে; তীব্র ক্ষুধা সংকটের পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচিত স্কোর ২৮.৬ থেকে মাঝারি মাত্রার ১৯ স্কোরে নেমেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের পর থেকে যে সাতটি দেশ এই সূচকে স্কোর ৫ পয়েন্ট বা তার বেশি কমাতে পেরেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। ক্ষুধার সূচকে আঞ্চলিক পর্যায়েও বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হয়েছে। স্কোরের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান (৪৯.৬) মিয়ানমার (৪০.২) ভারত (৩৮.৪), নেপাল (৩৭.২), পাকিস্তান (৩৬.৭) ও শ্রীলঙ্কার (২১.৭) চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে বাংলাদেশ।

অপুষ্টির হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে উচ্চতার তুলনায় কম ওজনের শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে কম উচ্চতার শিশুর হার, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার- এই চারটি মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশের পরিস্থিতি বিচার করে তৈরি হয় গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) বা বিশ্ব ক্ষুধা সূচক।

এই সূচকে সবচেয়ে ভালো স্কোর হল শূন্য। আর সবচেয়ে খারাপ স্কোর হলো ১০০ পয়েন্ট। স্কোর বাড়লে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি, আর কমলে পরিস্থিতির উন্নতি।

স্কোরের মধ্যে দেশগুলোর অবস্থানকে মোটা দাগে পাঁচটি ধাপে ভাগ করে খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতি বোঝানো হয়- স্কোর ৫০ এর বেশি হলে ‘অতি উদ্বেগজনক’। স্কোর ৩৫ থেকে ৪৯.৯ এর মধ্যে থাকলে ‘উদ্বেগজনক’। স্কোর ২০ থেকে ৩৪.৯ এর মধ্যে থাকলে ‘গুরুতর’। স্কোর ১০ থেকে ১৯.৯ এর মধ্যে থাকলে ‘মাঝারি’ (বাংলাদেশের অবস্থান)। স্কোর ৯.৯৯ এর নিচে হলে পরিস্থিতি ‘নিম্ন’।

এবারের সূচকে সবচেয়ে কম ক্ষুধার শীর্ষ দশ দেশ হল– বেলারুশ, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, চিলি, চীন, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, জর্জিয়া, হাঙ্গেরি, কুয়েত, লাটভিয়া। আর তালিকার তলানিতে থাকা নয়টি দেশে ক্ষুধার মাত্রা রয়েছে ‘উদ্বেগজনক’ পর্যায়ে। দেশগুলো হল- সাউথ সুদান, বুরুন্ডি, সোমালিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, মাদাগাস্কার, ইয়েমেন,ডি আর কঙ্গো, লেসোথো ও নাইজার।




বিএনপি নেতারা অনশনে, কর্মীরা ব্যস্ত খাওয়া-দাওয়ায়

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপির অনশনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে খাওয়া দাওয়া। একদিকে নেতারা দলের নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে অনশন করছেন, অন্যদিকে নেতাকর্মীরা আশপাশের গলিতে খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা মাস্তিতে ব্যস্ত ছিলেন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুরু হয়ে অনশন চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এই অনশন কর্মসূচি আহবান করা হয়েছিল।

অনশন স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেই মঞ্চে ছিলেন দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, রহুল কবীর রিজভী, সেলিমা রহমানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা। খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মঞ্চের সামনের সড়কে মাদুর বিছিয়ে বসেছিলেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

মঞ্চের সামনে যতো না নেতাকর্মী অনশন করছেন তার চেয়ে অনেক বেশি নেতাকর্মী বিএনপির নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের আশপাশের গলিতে চা-নাস্তা আর আড্ডায় ব্যস্ত। এমন দৃশ্য দেখে অনেকিই বলতে শোনা গেছে, “হ্যাঁ , এরা করবে আন্দোলন। ৩ ঘণ্টার অনশনে আইসা শুধু খাই খাই করতেছে। নেত্রীর জন্য ৩ ঘণ্টা না খেয়ে তাকতে পারল না।’

মহানগর উত্তর বিএনপির কর্মী সাগর বলন, ‘দেখেন এই ৩ ঘণ্টার অনশনে কোনে কিছুই হবে না। আমি এসেছি, কর্মসূচিতে আসতে হবে এ জন্য। এসব আন্দোলন দিয়া নেত্রীকেও মুক্ত করা যাবে না আর সরকারেরও পতন ঘটবে না।’ মহানগর উত্তর বিএনপির আরেক কর্মী মোহাম্মদ আজমল হোসেন বলেন, ‘নেতাদেরই যেখানে ঠিক নাই, সেখানে কর্মীদের দোষ দিয়ে লাভ কি?’ অনশন কর্মসূচীতে যোগ দিতে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আসা বিএনপি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনশনস্থলেই ছিলোম। ভাবলাম একটু চা-পানি খাই, তাই গলিতে ঢুকে খাচ্ছি।’

এদিকে বিএনপির এই অনশন কর্মসূচি ঘিরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মসূচির শুরুতেই নয়া পল্টনের সড়কের এক পাশে যানচালাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এই গণ অনশনে আসতে থাকেন এবং কার্যালয়ের সামসনে পৌঁছানোর পর কাকরাইল মোড় থেকে ফকিরেরপুল পর্যন্ত রাস্তার এক পাশের সড়কে বসে পড়েন। এর ফলে এক পাশের সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল কর গিয়ে নয়াপল্টন, দৈনিক বাংলা মোড়, পল্টন, কাকরাইল, নাইটেংগেল মোড়সহ আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ওই সড়গুরো দিয়ে চলাচলকারীদের প্রায় ৩/৪ ঘণ্টা কঠিন ভোগান্তি পোহাতে হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সে দিনই কারাগারে পাঠানো হয়। ওই বছরের অক্টোবরের শেষে হাই কোর্টের রায়ে সাজা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। তার আগের দিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায়ও বিএনপির চেয়ারপারসনের ৭ বছর সাজা হয়। খালেদা জিয়া শারিরীক অসুস্থজনিত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মানবিক কারণে মার্চ মাসেই সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদার জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে তাকে কারাগারের পরিবর্তে বাসায় থাকার সুযোগ করে দেয়। বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া আছেন।




ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এমপি চঞ্চলের গণসংযোগ

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে হাটে বাজারে গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ দলীও ঝিনাইদহ (৩) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডঃ শফিকুল আজম খান চঞ্চল।

আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর ইউনিয়নের মকসেদ মোড়ে ও বাজারে নৌকা মার্কার গণসংযোগ করেন তিনি। সে সময় সংসদ সদস্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মানুষের সামনে তুলে ধরেন। বলেন,দেশের উন্নয়ন এগিয়ে চলেছে। আর এ উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে নৌকা প্রতিকের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে, আবারও যড়যন্ত্র শুরু করেছে জামাত বিএনপি। এ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধু কন্যা জনগণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা হাত কে শক্তি শালী করতে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিন।

এ সময় গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান আলী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান, সাফদারপুর ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন,সাংবাদিক শেখ ইসমাইল হোসেন, ছাত্র লীগ নেতা, প্রদীপ কুমার হালদার, রাব্বি হাসান, ওবায়দুল হক, মানিক, নয়ন সহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনে নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।




পর্যটনে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ

বিলম্বে হলেও আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪ জেলাকে রেল নেটওয়ার্কে আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে সরকার। অথচ দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও পুরনো যোগাযোগ মাধ্যম হলো রেলপথ। ১৯৬২ সালে ব্রিটিশ আমল থেকেই এ অঞ্চলে রেল যোগাযোগ শুরু হয়। এতোদিনেও সকল জেলায় রেল লাইন হয়নি, যা সত্যিই বিস্ময়ের। তবুও পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ৪৩ থেকে ৪৭ জেলা রেল যোগাযোগে যুক্ত হয়েছে।

আগামী ১২ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে রেল যোগাযোগে আরেকটি মাইল ফলক অর্জনের পথে বাংলাদেশ। সরকারের ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের একটি চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ। এর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারও আসছে রেল যোগাযোগের আওতায়। ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনযোগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখতে যেতে পারবেন পর্যটকরা। যা সত্যিই আনন্দের খবর।

শুধু কি তাই? এ প্রকল্প চালুর মধ্য দিয়ে গোটা কক্সবাজারের অর্থনীতিতে আরো বেশি গতি ফিরবে। কারণ পর্যটক আগের চেয়ে অনেক বাড়বে। তেমনি তৈরি হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। কারণ এখানে শুধু সমুদ্র সৈকত আছে তা নয়, অন্তত ১৫টি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে জেলাজুড়ে। এর সবকটিতেই পর্যটক উপস্থিতি বাড়বে, তা নিঃস্বন্দেহে বলা যেতে পারে। এই সুযোগটিকে সরকার কতোটুকু কাজে লাগিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে তাই দেখার বিষয়।

কক্সবাজারের প্রাচীন নাম পালংকী। একসময় এটি প্যানোয়া নামে পরিচিত ছিল। প্যানোয়া শব্দটির অর্থ ‘হলুদ ফুল’। অতীতে কক্সবাজারের আশপাশের এলাকাগুলো এই হলুদ ফুলে ঝকমক করত। এটি চট্টগ্রাম থেকে ১৫৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এ জেলায় রয়েছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। সমুদ্র সৈকতের চেয়ে এ দ্বীপের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ অনেকগুন। এর বাইরে রাবার বাগান, সোনাদিয়া দ্বীপ, রামকোট সহ বেশ কয়েকটি বড় ও আকর্ষণীয় বৌদ্ধ বিহার। পাশাপাশি হিমছড়ি, রাবার স্টেশন, ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক, মহেশখালী জেটি, কুতুবদিয়া বাতিঘর, আদিনাথ মন্দির, অজ্ঞামেবী ক্যং প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকদের তালিকায় এগিয়ে। রেলপথ চালুর পর এর সবকটিতেই কমবেশি পর্যটক বাড়বে। এর বড় কারণ হলো, ট্রেন যাত্রা অনেকটাই আরামদায়ক। ভাড়া বিবেচনায় আকাশ ও সড়ক পথের চেয়েও অনেকক্ষেত্রে সাশ্রয়ি।

বিশ্ব পর্যটন সংস্থার প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৫১টি দেশের পর্যটকরা বাংলাদেশে ভ্রমণ করবেন, যা মোট জিডিপিতে ১০ শতাংশ অবদান রাখবে। পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল। পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) হিসাব অনুযায়ী, বছরে এখন ৫০ থেকে ৬০ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। বছর পাঁচেক আগেও এ সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ লাখ ছিল।

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে দেশের পর্যটন খাত। আর্থিক মূল্যে দেশীয় পর্যটন খাতের আকার দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ২০ লাখ পর্যটককে আতিথেয়তা দেয় কক্সবাজার। বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের মধ্যে পর্যটনশিল্পের সর্বোচ্চ বিকাশে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। পুরো দেশকে আটটি পর্যটন জোনে ভাগ করে প্রতিটি স্তরে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথমবারের মতো সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসাবে কক্সবাজারে পর্যটন অবকাঠামো নির্মাণে ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোয় প্রায় প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগ হবে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। পরোক্ষভাবে বিনিয়োগ হবে ১ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

মূলত পর্যটকদের সুবিধার্থে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণ করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, জেলা শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর দৃশ্যমান আইকনিক রেল স্টেশন। ঝিনুকের আদলে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এ স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লক্ষ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয়তলা বিশিষ্ট স্টেশনটি নির্মাণে চীন, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন আধুনিক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিতে ১১০ জন বিদেশিসহ মোট ২৫০ জন প্রকৌশলী এবং ছয় শতাধিক লোক কাজ করছে। চার বছরের শ্রমে আইকনিক রেলস্টেশন ভবনটি আজ সত্যিই চোখ জুড়ানো বাস্তবতা।

এশিয়ার প্রথম শতভাগ পর্যটনবান্ধব কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টেশনে রয়েছে পর্যটকদের জন্য সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা। পর্যটকরা যেন কক্সবাজারে দিনে এসে ঘুরে আবার ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। স্টেশনে থাকবে লাগেজ ও লকার সিস্টেম। থাকছে আধুনিক ট্রাফিক সুবিধা। নিচতলায় টিকেট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র। দ্বিতীয়তলায় শপিংমল ও রেস্তোরাঁ। তিন তলায় তারকা মানের হোটেল। থাকছে মসজিদ, শিশু যত্ন কেন্দ্র ও চলন্ত সিঁড়ি। এখনে থাকছে এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথসহ নানা সেবা কেন্দ্র।

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথটি দুটি ভাগে কাজ করছে ঠিকাদার। দোহাজারী থেকে চকরিয়া অংশের কাজ করছে সিআরইসি এবং তমা কনস্ট্রাকশন। আর চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসিইসিসি এবং ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ফাস্টট্র্যাকভুক্ত হয়। ২০১০ এর জুলাই থেকে শুরু হয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ঢাকা থেকে দিনে দুটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে- একটি ট্রেন সকাল সোয়া আটটায় ঢাকার কমলাপুর থেকে যাত্রা করে দুপুর সোয়া দুইটায় কক্সবাজারে পৌঁছাবে। ওই ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে রাত সাড়ে সাতটায় যাত্রা করে কমলাপুর পৌঁছাবে ভোর তিনটা ৪০ মিনিটে। আরেকটি ট্রেন কমলাপুর থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে সকাল সাড়ে ছয়টায় পৌঁছাবে কক্সবাজারে। সেখান থেকে দুপুর ১২টায় ফিরতি যাত্রা করে কমলাপুরে ফিরবে রাত আটটায়।

সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ। এটি ট্রেন চলাচল শুরু করার ক্ষেত্রে তেমন একটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। বন্যায় ক্ষতি হওয়া লাইনের মেরামত ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

পর্যটনশিল্প-বিকাশে অবারিত সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। বিদেশি পর্যটক ছাড়াও দেশের পর্যটকদের নিরাপত্তা, যোগাযোগের সুবিধা ও আকর্ষণীয় অফার দিলে সাগড়কন্যাখ্যাত পর্যটনগরী কক্সবাজারে লোক সমাগম বাড়বে। এক্ষেত্রে স্থানীয় যাতায়াতের সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় ভাবনার জায়গাটি খুবই দুর্বল বা অবেহেলিত বলা যেতেই পারে। পর্যটনে এগিয়ে যেতে হলে অঞ্চল বা জেলা ধরে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যেমন, কক্সবাজারের পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকাগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা, পর্যটন এলাকায় পর্যটন পুলিশকেন্দ্র স্থাপন, বিদেশি পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক গাইডের ব্যবস্থা, বিদেশে বাংলাদেশের ট্যুরিজম প্রমোশনে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের উদ্যোগী ভ‚মিকা পালন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রচারণা, পর্যটন এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোন ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয়সংখ্যক হোটেল নির্মাণ। যেন সাধ্যের মধ্যে পর্যটকরা সব ধরণের হোটেলে থাকার সুযোগ পান। সবশেষে পর্যটনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় যাত্রা শুরু হোক ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট




জনস্বাস্থ্যে শেখ হাসিনার অবদান

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মপরিকল্পনাকে আমরা মূলত দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি। এক, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা; দুই, সমসাময়িক কিংবা তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা। এই দুই অংশের সহযাত্রা একটি জাতির জনস্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জনস্বাস্থ্যে গৃহীত পদক্ষেপ গুলি ছিল মূলত সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে সেটিই স্বাভাবিক ছিল। বঙ্গবন্ধু, সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবার সমান প্রাপ্তি এবং বৈষম্য কমাতে স্বাস্থ্য সেবার জাতীয়করণ করেন, যার সুফল ৫০ বছর ধরে এদেশের মানুষ পেয়ে যাচ্ছে। তিনি সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন যা তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো তৈরি, টিকাদান কর্মসূচি, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনস্বাস্থ্য শিক্ষা, জনস্বাস্থ্যের লোকবল বৃদ্ধি এবং জরুরী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে একটি দৃষ্টান্তমূলক যাত্রা শুরু করেছিলেন। এ যাত্রার অংশ হিসেবে ১৯৭৪ সালে জনস্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম) প্রতিষ্ঠা করেন।

পিতার আদর্শে উদ্ভূত জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছরে জনস্বাস্থ্য খাতে জাতির পিতার ছায়াকে অনুসরণ করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম তাৎপর্যগতভাবে একই সাথে সুদূরপ্রসারী এবং সমসাময়িক। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আদলে তিনি কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণা প্রবর্তন করেন যা ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার অংশ। কমিউনিটি ক্লিনিক একটি জনমুখী স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এবং সারাদেশে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রসারিত করাই এর লক্ষ্য। এটি জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই যুগান্তকারী এবং সুদূরপ্রসারী ধারণার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এবার আসা যাক সমসাময়িক কিংবা তাৎক্ষণিক জনস্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধ করতে এবং দেশে এর প্রভাব প্রশমিত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং অবদান রেখেছেন। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে রোল মডেল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির অসামান্য সাফল্যের জন্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৯ সালে গ্যাভি ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছেন। সুতরাং, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহের দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক, শিশু টিকাদানের সর্বজনীন কভারেজ এবং কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা ও টিকাদানে সাম্প্রতিক সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হয়েছে। আর এই স্বীকৃতির রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা।

সামগ্রিক স্যানিটেশন, হাইজিন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিশু ও মাতৃমৃত্যু, এইডস ও ম্যালেরিয়া সহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ অর্জনে শতভাগ সফলতা অর্জন করায়, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস (এমডিজি) এর লক্ষ্য অর্জন করে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ এখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ২০৩০ সালের ভিতর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (এসডিজি) এর লক্ষ্য অর্জনে।

নবজাতক মৃত্যুর হার প্রতি ১০০০ জীবিত জন্মে ২০ এর কম, শিশু মৃত্যুর হার ২১.৫/১০০০ জীবিত জন্মে এবং ৫ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার ২২-এ নেমে এসেছে। মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৭০/১০,০০০-এর কমে নেমে এসেছে। মহিলাদের আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৪.১ বছর এবং পুরুষদের জন্য ৭০.৮ বছর।২০১৩ সালে, বাংলাদেশ এমডিজি লক্ষ্যমাত্রায় ক্ষুধা অর্ধেকে কমানোর জন্য জাতিসংঘের এফএও পুরস্কার পেয়েছে যা দেশের মানুষের পুষ্টির যোগানের স্বয়ংসম্পূর্ণতার বহিঃপ্রকাশ। সরকার খাদ্য নিরাপত্তা ও মান নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছে এবং বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছে।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ ৮৩..৯ শতাংশ বৈধ পূর্ণ টিকা কভারেজ অর্জন করেছে, যা ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করেছে।২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা বাংলাদেশ পোলিও-মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। অবহেলিত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে এবং ম্যালেরিয়া রোগ কমাতেও বাংলাদেশ সফল হয়েছে। অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বহুক্ষেত্রীয় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য, অটিজম, এবং প্রতিবন্ধী কল্যাণে বিগত বছরেরগুলোতে বিশেষ নজর দিয়েছে। প্রতিবন্ধী অধিকার আইন এবং নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটি প্রোটেকশন ট্রাস্ট আইনের মতো আইন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ একজন WHO গুডউইল অ্যাম্বাসেডর এবং অটিজমের জন্য আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন। টেলিমেডিসিন এবং “স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩” কল সেন্টার দেশব্যাপী স্বাস্থ্য সেবা এবং তথ্য প্রদান করে চলেছে। ২০১১ সালে, প্রধানমন্ত্রী আইসিটি ব্যবহার করে স্বাস্থ্য খাতে অগ্রসর হওয়ার জন্য ‘ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট’ গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড চিলড্রেনস অ্যাওয়ার্ড পান।

গত দেড় দশকে স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি হয়েছে সরকারের প্রতিশ্রুতি, নীতি, কৌশল, আইন প্রণয়ন এবং তাদের কার্যকর ও সময়োপযোগী বাস্তবায়ন, প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত ও কার্যকরী সাংগঠনিক নেটওয়ার্কের কারণে। এবং অ-প্রযুক্তিগত স্বাস্থ্য জনশক্তি, সরকারী, বেসরকারী সংস্থাগুলির সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সহায়তা; এবং পরিবার পরিকল্পনা, ইমিউনাইজেশন, ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি, যক্ষ্মা, ভিটামিন-এ সহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে সামগ্রিকভাবে সক্রিয় অংশগ্রহনের জন্য। এ অগ্রগতি গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- স্বাস্থ্য বীমা, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, চিকিৎসা শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনে সহনশীলতা অর্জন এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিশেষায়িত ভৌত কাঠামো নির্মাণ। যার পেছনে নিরলস কাজ করে গেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। জনস্বাস্থ্য সহ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত আজ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই উচ্চতা ধারণ করেন বলেই তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন, “আমি অসুস্থ হলে এই দেশেই চিকিৎসা করো, বিদেশে যাওয়ার দরকার নাই”।

লেখক: অধ্যাপক, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।




ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১

ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬। আজ শনিবার (১৪ অক্টোবর) র‌্যাব-৬, সিপিসি-২,ঝিনাইদহ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানাধীন মালিথিয়া গ্রামে কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মাদকদ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একই তারিখ রাত দেড়টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানাধীন নতুনভুক্ত মালিথিয়া গ্রামস্থ অনন্ত স্টোর এর সামনে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কুখ্যাত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিরাপদ মন্ডল (৭০) কে গ্রেপ্তার।

সে একই উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত পঞ্চানন মন্ডলের ছেলে।

এ সময় উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে গ্রেপ্তারকৃত আসামীর হেফাজত হতে ১ টি দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র (পাইপগান) উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন পূর্বক এলাকায় বিভিন্ন মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, রাহাজানীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয় স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীর নিকট থেকে জব্দকৃত আলামত শৈলকুপা থানায় হস্তান্তর করতঃ গ্রেপ্তারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান।