স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে আজ 

বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতু দিয়ে এবার চলবে ট্রেন। মঙ্গলবার সবুজ পতাকা নেড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙ্গা থেকে ঢাকা অভিমুখি যাত্রীবাহী ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। পরের দিন থেকে যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের সাড়ে ১৫ মাস পর ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে স্বপ্নের সেতুটি।

দু’তলা এই সেতুর উপর দিয়ে চার লেনে চলাচল করছে যানবাহন। আর নিচ তলা দিয়ে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে চলবে ট্রেন। এরমধ্য দিয়ে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। একই সঙ্গে সারাদেশ রেল যোগাযোগের আওতায় চলে আসার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

রেল মন্ত্রণালয় ও পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হলো। এই রেল যোগাযোগ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে। সংশ্লিষ্টদের আশা, মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) আনুমানিক এক (১) শতাংশ বৃদ্ধি পাবে রেলপথ চালু হওয়ার কারণে।

৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের মধ্যে। এই প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন ১৪টি স্টেশন ও ৬৬টি বড় সেতু। এছাড়াও ৬টি পুরনো স্টেশন পুনঃনির্মাণ ও ২৫৪টি ছোট সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এই প্রকল্পেরে আওতায় ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেললাইন ও স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।

পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়ে গেলে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা নতুন করে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। ধাপে ধাপে বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরকে রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন সহজ হবে, তেমনি ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য কম খরচে ট্রেনের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনও সহজ হবে। এতে করে দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।

ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের ফলে ঢাকা থেকে যশোরের দূরত্ব কমবে ১৮৪ দশমিক ৭২ কিলোমিটার, ঢাকা-খুলনা দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার এবং ঢাকার সঙ্গে দর্শনার দূরত্ব কমবে ৪৪ কিলোমিটার ফলে যাত্রার সময়ও কমে আসবে। এই রেলপথটি শুধু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রেই নেয়, আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও বড় অবদান রাখবে। এছাড়া ভাঙ্গা থেকে পাচুরিয়া-রাজবাড়ী সেকশনটি পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে।

পদ্মা রেল লিংকটি শুধু দেশের রেল যোগাযোগেই পরিবর্তন আনবে। এই রুটটি যুক্ত হবে ট্রান্স এশিয়ান রেল রুটের সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে মায়ানমার হয়ে চীন পর্যন্ত সংযোগ ঘটাবে এই রেল রুট। পদ্মাসেতুর রেল রুট ব্যবহার করে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারি হয়ে মিয়ানমারের গুনদুম সীমান্তে গিয়ে মিলবে। এর ফলে নানামুখী সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

ট্রান্স-এশিয়ান রেল রুটের সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক(পিডি) প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, উদ্দেশ্য একটাই, দ্বার খুলে দেয়া এবং সংযোগ বাড়ানো। এরইমধ্যে ভারতের সঙ্গে আমাদের সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবারে আমরা মিয়ানমারকে সংযুক্ত করতে যাচ্ছি। সেখান থকে চীনের সঙ্গে সংযোগ ঘটবে। এই রুটের মাধ্যমে আরো অনেক দেশে যেতে পারবো। অর্থাৎ, সম্ভাবনা অনেক।

দেশের প্রথম পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ হয়েছে পদ্মা সেতুতে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাথরবিহীন এই রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে মূল সেতুতে। যার দৈর্ঘ্য ১৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভ্রমণের ক্ষেত্রে পাথরবিহীন রেলপথ খুবই আরামদায়ক। সেতুতে যাতে কোনো ঝাঁকুনি (জার্কিং) না হয়, সেজন্য তারা পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তারা জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাথরবিহীন রেলপথ দিয়ে ঘণ্টায় ৩০০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে পারে। পদ্মা সেতুতে এর গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত (ফার্স্ট ট্র্যাক) ১০ প্রকল্পের একটি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমে ব্যয় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তিতে নতুনভাবে ডুয়েলগেজ নির্মাণ, ভাঙ্গা জংশনে ওভারহেড স্টেশন, নড়াইলের তুলারামপুরে নতুন আন্ডারপাস, ভায়াডাক্টের পিয়ারের নকশা পরিবর্তন, ১০০টি বিজি কোচের ডিজাইন পরিবর্তন, স্টেশনগুলোতে অপারেশনাল সুবিধা বৃদ্ধিজনিত পরিবর্তন, নদীর নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধির কারণে কারণে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকায়। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া ও ভাঙ্গা-যশোর সেকশনে জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব এবং ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তর। তুলারামপুর ও টিটিপাড়া পয়েন্টে লেভেল ক্রসিংয়ের পরিবর্তে রেলওয়ে আন্ডারপাস নির্মাণের মতো পরিকল্পনা গ্রহণ করায় এই ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে । পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন হচ্ছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা। বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে চীন।




মেহেরপুরে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহর মতবিনিময়

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক ভিপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন।

বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে চলমান এক দফা আন্দোলন বাস্তবায়ন ও আগামী দিনে গাংনীর সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেন তিনি।

মেহেরপুর লা-ভোগ রেস্টুরেন্টে গতকাল সোমবার দুপুরে আয়োজিত এই মতবিনিময় উপস্থিত ছিলেন গাংনী পৌর বিএনপির সভাপতি মুরাদ আলী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খোকন ও সাবেক সহসভাপতি আব্দুস সালাম।

এসময় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।




মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ

গতকাল সোমবার বিকালে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে দেশে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলীর সভাপতিত্বে মেহেরপুর শহীদ শামসুজ্জোহা নগর উদ্যানে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এ এম এস ইমন, পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশান, মুজিবনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান চাদু, মেহেরপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা লাভলী ইয়াসমিন প্রমুখ।

এর আগে আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে একটি বিশাল মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে শহীদ শামসুজ্জোহা নগর উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেয়।

শান্তি সমাবেশে ইয়ারুল ইসলাম বলেন, কাধে কাধ মিলিয়ে সকলকে ঔক্যবদ্ধ ভাবে সকল বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

গোলাম রসুল বলেন, কয়দিন আগে আমাদের বলা হয়েছে আমরা নাকি নৌকায় ভোট দিইনি, আমাদের নাকি মেরুদণ্ড ভাঙা।

জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, গত ইউনিয়ন নির্বাচনে চারটি ইউনিয়নকেই ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রকারীদের যদি আবার মনোনয়ন দেয়া হয় তাহলে ওই নৌকায় আমি চড়বো না। তাই আগামী নির্বাচনে আমি পরিবর্তন চাই। যদি নিবেদিত কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আমার জীবন দিয়ে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনবো।

মিয়াজান আলী বলেন, আমি যখন জেলা পরিষদে ভোট করি, শেথ হাসিনা নমিনেশন দেয় তখন যারা নিজেদের আওয়ামী লীগ বলে দাবী করেন ওই ফরহাদ হোসেন, খালেক, বাবলু বিশ্বাস, আমাম হোসেন মিলু জেলা পরিষদে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে।




মেহেরপুরে বাড়িওয়ালাকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল নিয়ে চম্পট আটক ২

মেহেরপুরের গোরস্থান পাড়া থেকে বাড়ির মালিক কে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয়া দুই আসামি রাজন আলী(২৫) ও তার স্ত্রী সালমা খাতুন (১৯)কে আটক করেছে মেহেরপুর সদর ফাঁড়ি পুলিশ। আটক রাজন আলী মেহেরপুরের গোরস্থান পাড়ার মোহাম্মদ শরীফের ছেলে এবং সালমা খাতুন রাজনের স্ত্রী।

গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেহেরপুর সদর থানার আওতাধীন সদর ফাঁরি পুলিশের ইনচার্জ এসআই আশরাফের নেতৃত্বে একটি টিম তাদের আটক করে।

গত ২ অক্টোবর আটককৃত ২ আসামী মেহেরপুর পৌর এলাকার গোরস্থান পাড়ার লক্ষী খাতুন এর বাড়ি ভাড়া নেয়। অতঃপর ৫ অক্টোবর বাড়ির মালিক লক্ষ্মী খাতুনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

আটক অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া এসআই আশরাফ বলেন আসামি জাহিদের বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে এবং স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন বলেন, ‘আটকৃত আসামিদের আজ মঙ্গলবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’




চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বিএনপি-জামায়াতের হত্যা ষড়যন্ত্র অগ্নিসন্ত্রাস- নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগ।

সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রিয়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার।

এ সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রিয়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের
নেতৃত্ব চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের কার্যালয় হতে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বাহির হয়। র‍্যালিটি চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছালে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। তলা বিহীন ঝুঁড়ি থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপ নিয়েছে আজকের বাংলাদেশ। দেশের গ্রাম থেকে শহর সকল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ব্যাপক ভাবে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছে দেশ।দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।বাস্তহারা মানুষকে বসতিতে পূর্ণবাসন করেছে।দেশের যেকোনো স্তরের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

কিন্তু বিএনপি জামায়াত সরকার আবারো এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চাই। তারা ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে।বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় থেকে হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটতরাজ করে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিদেশে পাচার করেছে। ছাত্র সমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে তাদের ব্যবহার করেছিলেন। দেশের অশান্তির সৃষ্টি করেছিলেন এই বিএনপি-জামায়াত দেশের শত্রু। তারা স্বাধীনতার শত্রু। একাত্তরে তারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি। জিয়াউর রহমান সেই পরাজিত শক্তিকে, স্বাধীনতার শত্রু জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তাদের গাড়িতে এই স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকা উড়েছিল। এরা যখনই আবার ক্ষমতায় আসবে তখনই বাংলাদেশের মানুষ প্রশ্নবিদ্ধ হবে, জঙ্গি হামলার শিকার হবে। বাংলাদেশের মানুষ বিপথগামী হবে। অতএব তাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবেনা।

যারা বিএনপি জামায়াত দলকে সমর্থন করে তারা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। যে দলের নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে সে দলকে বর্তমান নেতৃত্ব দিচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

এ সময় তিনি আরও বলেন, সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই। স্মার্ট বাংলাদেশ ও শেখা হাসিনার স্বপ্ন পূরণ এবং বিনির্মাণে যুবলীগ কাজ করে যাবে। বিএনপি-জামায়াত যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন শেখ হাসিনার পাশে থেকে সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙা জবাব দিবে যুবলীগ। আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করেই ঘরে ফিরবে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগ।

হাফিজুর রহমান হাপুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামসুদ্দোহা মল্লিক হাসু, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আরও বক্তব্য প্রদান করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সদস্য সাজেদুল ইসলাম লাভলু,জেলা যুবলীগ সদস্য আজাদ আলী, আবু বক্কর সিদ্দিক আরিফ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা পিরু মিয়া, হাসানুল ইসলাম পলেন, জুয়েল জোয়ার্দ্দার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রামীম হোসেন সৈকত, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ সানিউল শেখ সুইট, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শেখ রাসেল, দিপু বিশ্বাস।

আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আব্দুল আলিম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মিঠু,সহ-সভাপতি জুয়েল , পদ্মবিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি বিপ্লব হোসেন, মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ফিরোজ,জাকির, আরও উপস্থিত ছিলেন, তানভীর রেজা টুটুল, রনি,শাওন রেজা কবীর, হাসান, সজল, লিপটন, রকি, সান, টিপু, সুমন, রাসেল, তিব্বত, ফিরোজ, তারিক, সজীব, করিম, হাসিব, রাজন, বক্কর, রমজান, সবুজ, রাকিব, গিয়াস, আমান, রুবেল, ফাহাদ, রাশিদুল, নয়ন, দিপু, রনি, জনি, মিন্টু, শফিক, বক্কর, রাসেল, শাকিব, বিপুল, পিয়াস, বাচ্চু, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা উপ-সম্পাদক শেখ আনোয়ার, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান ফেরদৌস, মিলন, টিলু, শাহীন, তানজির।




মুজিবনগরে বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত

মুজিবনগরে বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স এ পর্যটন মটেল হল রুমে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মধু এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এ্যাড: ইব্রাহিম শাহীন, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন।

বর্ধিত সভায় বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাবুল মল্লিক,রকিবউদ্দীন,সিবাস্তিন মল্লিক, আফরোজা রোজ, মাবিয়া খাতুন এবং মরিয়ম খাতুন সহ ৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী ও সমর্থক বৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।




গাংনীতে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে মাঠ দিবস

মেহেরপুরের গাংনী পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি (পিএসকেএস)- সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর কৃষি খাতের আওতায় উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী) প্রদর্শনীর আওতায় মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে কাজীপুর শাখার হাড়াভাঙ্গা গ্রামে সদস্যের (গেন্ডারী প্রদর্শনী) জমির পাশে ৭৫ জন কৃষক কৃষাণী নিয়ে একটি মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয় । উক্ত মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহা: ইমরান হোসেন ।

কাজিপুর শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, স্থানিয় ইউপি সদস্য মো: মহিবুল ইসলাম, স্থানিয় স্কুল শিক্ষক মো: মুখলেছুর রহমান, ও সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথিগন উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী ) চাষের পদ্ধতি, গুরুত্ব ,বালাইদমন ব্যবস্থাপনা, আখজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপনন নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন। এ সময় স্থানিয় চাষিগণ উচ্চমূল্যের ফসল চাষ (থাই গেন্ডারী) চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন




যুক্তরাষ্ট্রের `যুদ্ধ’ নিয়ে দেশের মানবাধিকার কর্মীরা চুপ কেন?

একের পর এক দেশের সঙ্গে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে লিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র। ‘বাধানো’ যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকার সৈন্যসহ অসংখ্য নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিক। এনিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন খোদ মার্কিন নাগরিকরা। তবে তাতে তোয়াক্কা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের নানা বিষয়ে মানবাধিকার কর্মীরা সরব ভূমিকা পালন করলেও যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ যুদ্ধ নিয়ে কোনো টুঁ শব্দ করছেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তারা বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশের অর্থায়নে কাজ করেন। সুতরাং মানসিকভাবেই তারা পশ্চিমাজগতে বাস করেন।

হঠাৎ করেই শুরু হওয়া ফিলিস্তিন-ইজরায়েল ‘যুদ্ধ’ বিষয়ে মানবাধিকারের কথা না বললেও যুদ্ধে জয়ী হতে সরাসরি ইজারায়েলকে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে ইজরায়েলকে সহায়তা দেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মদদে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অধিকাংশ যুদ্ধের আইনি ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং আইনি বিশ্লেষকরা।

একটি পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৩টি অঞ্চলে সংঘটিত ২৪৮টি সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে ২০১টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা সমর্থিত ছিল, যা মোট সংখ্যার ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে কয়েকটি যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘বৈধ পদ্ধতির’ মাধ্যমে চালিয়েছিল যা তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য জাতিসংঘকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে এর বেশির ভাগই ছিল মানবাধিকারের নামে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে শুরু করা অবৈধ যুদ্ধ।

২০০৪ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান ইরাক যুদ্ধ নিয়ে অনেক সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ’ নয়। নিরাপত্তা পরিষদের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যুদ্ধে যাওয়ার পদক্ষেপের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয় ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ইরাকে ঠিকাদারি কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োজিত থাকার সময় এক ঠিকাদারের কাছ থেকে হাজার হাজার ডলার গ্র্যাচুইটি গ্রহণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে।

আফগানিস্তান ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘দীর্ঘ ও ভিত্তিহীন’ যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ এবং মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘন করে অঘোষিত যুদ্ধ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই যুদ্ধগুলো রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটিক উভয় দলের এবং আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম দ্বারা ব্যাপকভাবে সমর্থিত ছিল। তার আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে সামাজিক আন্দোলন তৈরি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।

যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বিতর্কিত হাতিয়ার হচ্ছে ড্রোন হামলা। নিউইয়র্ক টাইমস এক অনুসন্ধানি প্রতিবেদনে বলেছিল ড্রোন হামলায় কে মারা যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই! যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। কেউ কেউ এটাকে বিচারবহির্ভূত হত্যা হিসেবেও আখ্যায়িত করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের সর্বশেষ মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বলেছে, গতবছরের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলা হত্যার নিন্দা জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়সহ একাধিক স্বাধীন তদন্তে দেখা গেছে, একজন ইসরায়েলি সৈন্য তাকে হত্যা করেছে। গত বছরের নভেম্বরে এফবিআই তার মৃত্যুর তদন্ত শুরু করে। ইসরায়েল গত সেপ্টেম্বরে স্বীকার করে যে আবু আকলা সম্ভবত একজন ইসরায়েলি সৈন্যের গুলিতে নিহত হয়েছেন, তবে যদি তাই হয় তবে এটি দুর্ঘটনাজনিত এবং তারা মার্কিন তদন্তে অংশ নেবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন গুয়ানতানামো বে-তে অবস্থিত মার্কিন সামরিক কারাগার বন্ধ করার অঙ্গীকার করলেও ৩৬ জন বিদেশি মুসলিম এখনো রয়ে গেছেন, যাদের অধিকাংশই দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক রয়েছেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় অভিযুক্ত পাঁচ গুয়ানতানামো বন্দির বিচার ত্রুটিপূর্ণ সামরিক কমিশনে স্থগিত করা হয়েছিল। আসামিরা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ দোষীদের আবেদনের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছিলেন।

বাংলাদেশে মানবাধিকারের ইস্যু তুলে বারবার সরকারকে কাঠগোড়ায় তোলার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল আগ্রাসনসহ নানা মানবাধিকারহরণ করা ঘটনায় নীরব যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের বিমান হামলায় এ পর্যন্ত কয়েকশত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রাণ গেছে শিশু-নারীদের। মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে নিশ্চুপ ওয়াশিংটন, তবে ইজরায়েলকে সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ’র মতে, বেশিরভাগ যুদ্ধই আইনসিদ্ধ না। তিনি বলেন, ‘যেভাবে সাধারণ জনতাকে বিশেষ করে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া কঠিন। মুসলিম উম্মাহ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমাদের দরদ ও সহানুভূতি বেশি। নিকট অতীতের ২০০৮, ২০১৪ এবং বর্তমান ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে বারবার। অবশ্য হামাসের কর্মকান্ড ও হামলাকেও অনেক অর্থেই বৈধ বলা যাবেনা।’

তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ আন্তর্জাতিক আইন বিশ্লেষকরা মনে করেন যে গত কয়েক দশক ধরে, অকুপেশন ফোর্স হিসেবে, ইসরায়েল যে আধিপত্যমূলক বসতি নীতি অনুসরণ করে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইয়াহুদীদের আবাসন কায়েম করেছে তা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের লঙ্ঘন। সমগ্র জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরায়েল তাঁর ষোলোকলা পূর্ণ করতে চায়, যা আমেরিকাসহ হাতেগোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া অনুমোদন করে না। জাতিসংঘও এমন আইডিয়া সমর্থন করেনা। এমন ধারণা নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশনেরও লঙ্ঘন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ইতিহাস দেখলে বুঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রের রেকর্ড খুবই খারাপ। ভিয়েতনাম থেকে শুরু করে যত যুদ্ধ হয়েছে কোনটাই তো আইনসিদ্ধ না। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ কিংবা কোথাও যুদ্ধগুলো পাশ করে করা হয় নাই। সরাসরি প্রেসিডেন্টের অর্ডারের যুদ্ধ পরিচালনা হয়েছে। কোরিয়ান যুদ্ধে কিছুতা জাতিসংঘের সায় ছিল। কিন্তু সেটি বাদ দিলে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কোন যুদ্ধে সফল হয়নি।’

তিনি বলেন, প্রতিটি যুদ্ধ ছিল আইন বহির্ভূত। প্রতিটি যুদ্ধে আইন বহির্ভূতভাবে বাজেট ছিল। এমনকি আফগানিস্তানে গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ ছিল বলেই আইসিসি’র জারা জুরি ছিলেন, বিশেষ করে জিনি প্রসেকিউটর ছিলেন তাকে আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আমাদের জারা মানবাধিকার কর্মী আছে তার এগুলো নিয়ে কথা বলবে না। কারণ বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন তারা বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশের অর্থায়নে কাজ করেন। সুতরাং মানসিকভাবেই তারা পশ্চিমাজগতে বাস করেন।




বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না: রেহমান সোবহান

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্বেগ জানালেও, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান অভয় দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না। সোমবার অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রবীণ অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, “বাংলাদেশের রিজার্ভ যেভাবে ধারাবাহিকভাবে কমছে, তার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মিল আছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে।”বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমাদের বড় একটি রপ্তানি খাত আছে। সেই সঙ্গে আছে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি। সে কারণে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনও শ্রীলঙ্কার মতো হবে না।”

১৯৯১ সালের তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রেহমান সোবহান বলেন, “দেশে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। তবে তার মানে এই নয় যে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাস্তবে কমে গেছে; আনুষ্ঠানিক পথে না এসে অনানুষ্ঠানিক পথে আসছে প্রবাসী আয়। যার মূল মাধ্যম হুন্ডি। অর্থাৎ রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা না হয়ে হুন্ডিতে জমা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাইরে জমা হচ্ছে। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেন, তাদের জন্য এটা সুবিধাজনক হয়েছে।”

দেশের বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “দেশের আর্থিক খাতের সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। ঋণ নেওয়ার পর ফেরত না দেওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। এটা করার জন্য বড় ব্যবসায়ী নয়; বরং যারা এসব করছেন, তারা নিজেদের বড় রাজনীতিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।”

দেশের চলমান ডলার সংকট নিরসনে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন রেহমান সোবহান। বলেন, “নীতি-নির্ধারকদের এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আগে বিএমডব্লিউ গাড়ি আমদানি করবে; না কি ডিম কিংবা সার আমদানি করবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস’হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

তার আগের সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৭ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারে। এ হিসাবে এক সপ্তাহে বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১০ কোটি ডলার। আর ‘গ্রস’ হিসাবে কমেছে ১৯ কোটি ডলার।

১৪ সেপ্টেম্বর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৭ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’হিসাবে ছিল ২৯ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।

৭ সেপ্টেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্ট মেয়াদের ১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম৬ হিসাবে রিজার্ভ ২১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলারে।

গত ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম৬ পদ্ধতি অসুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন ‘গ্রস’ রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ গত জুলাই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে চার মাসের কিছু বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।




বাংলাদেশের নির্বাচন ও বিশ্বমোড়ল আমেরিকার হস্তক্ষেপ

চলতি বছরের ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা প্রদানকারী ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদানের বিধি-নিষেধ আরাপের পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। এই ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তার বিবৃতিতে উঠে এসেছে যে, ভিসা নীতির আওতায় সরকার সমর্থক, বিরোধীদল, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কয়েকদিন আগে ঘোষণা করা হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমও এই নিষেধাজ্ঞা বা সাংশন এর আওতাভুক্ত। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস চ্যানেল-২৪’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি পুর্নব্যক্ত করেন। যেটি অনেকাংশে আগুনে ঘি ঢালার শামিল। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সম্পাদক পরিষদ ও এডিটরস্ গিল্ড যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ঘোষণাকে স্বাধীন মত প্রকাশের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।

আমেরিকার এই অযৌক্তিক, অহেতুক ও অনধিকার হস্তক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি উত্তপ্ত। বিরোধী দল এ বিষয়কে অস্ত্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অপপ্রয়াস নিয়ে তাঁর সাম্প্রতিক আমেরিকা সফরের সময় ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। দেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আওয়ামী লীগের ছিলো। আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ তা প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই অবস্থার পরও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে, হঠাৎ কথা নেই, বার্তা নেই, তারা আমাদের উপর ভিসা সাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে?” জননেত্রীর এই সাহসী উচ্চারণ আমেরিকা ও নির্বাচন বিষয়ে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট বলে মনে করি।

একটি কথা প্রচলিত আছে, আমেরিকা যার বন্ধু তার কোনো শত্রুর প্রয়োজন নেই। অতীতের বাংলাদেশ ও ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষণ করলে, এই সত্যের সারবত্তা স্পষ্ট হয়। কেননা বাংলাদেশের উন্মেষকাল থেকে আমেরিকার ভূমিকা ছিলো বৈরী। তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর ঘটনাও আমাদের মনে আছে। হতে পারে সাম্প্রতিক সাংশন ৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ। আমেরিকার অপচেষ্টা আমরা আরো স্মরণ করতে পারি ৭৪’র দুর্ভিক্ষের কারণও কিন্তু আমেরিকা। অর্থ দিয়ে কেনা গম বোঝাই জাহাজও তারা সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলো। এছাড়া ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ড সিআইএ এর ভূমিকাও প্রমাণিত।

বৈশ্বিক রাজনীতিতেও আমেরিকার ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা দেখেছি। ভিয়েতনামে তারা দশকের পর দশক যুদ্ধ করেছে। পোড়াামাটি নীতি প্রয়োগ করেছে। এছাড়া মার্কিনীদের অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়াসহ দেশগুলো এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশও হয়তো আমরিকার নতুন টার্গেট। কিন্তু আমেরিকার এই গাত্রদাহের কারণ কী? বাংলাদেশ এখন সমগ্র বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল। উন্নয়নের যে মহাসড়কে বাংলাদেশ ক্রমশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্বমোড়ল আমেরিকার অপছন্দ। পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ কোনো এক বিশেষ ব্লকে সীমাবদ্ধ নয়। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’ বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্ববাসী। সে কারণে চীনের সাথে সহযোগিতায় পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল বাস্তবায়ন করেছে। রাশিয়া থেকে ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছেছে দেশে। শূন্য থেকে বাংলাদেশের পারমাণবিক জ্বালানিতে পদার্পণ। বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক উৎপাদনকারী এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দৈনিক ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এবং সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের। ভারতের সঙ্গেও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার। জাপানও বাংলাদেশর উন্নয়ন সহযোগী কিন্তু আমেরিকা চায় বাংলাদেশ কেবল তার উপর অতি নির্ভরশীল থাকুক। আমেরিকা সবসময় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে তাবেদার বানিয়ে রাখতে চায়।

এ প্রসঙ্গে আরো একটি বিষয় উল্লেখ্য। আমেরিকা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সেন্ট-মার্টিন দ্বীপ চেয়েছিলো সামরিক ঘাঁটি করার জন্য। কিন্তু বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের ওই চাওয়া প্রত্যাখান করেছিলেন। আমেরিকা এখন আবার সেন্ট-মার্টিন দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি করতে চায়। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা কোনো অবস্থাতেই এই প্রস্তাব মানতে রাজি নন। তিনি কখনো দেশের সার্বভৌমত্ব বিলীন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চান না। সামাজ্রবাদী আমেরিকার কূটকৌশলের ধরন এখন পাল্টে গেছে। নব্য সামাজ্যবাদীর ভূমিকায় অবতীর্ণ আমেরিকা এখন সেই আগ্রাসনের নতুন ফর্মুলা গ্রহণ করেছে। এই অপশক্তি হতে এসেছে নতুন অস্ত্র সাংশন বা ভিসা নিষেধাজ্ঞা।

আমেরিকার কারণে বহু প্রকল্পচুক্তি থেকে সরকার থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়ে হয়েছে। এছাড়া প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের আগে কেন এই ভিসা ইস্যু? সরকার বারংবার উচ্চারণ করেছে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ-অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক। কিন্তু বিএনপিসহ কিছু সুবিধাবাদী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করতে দিবে না। তারা ঘোষণা করেছে এই নির্বাচন তারা প্রতিহত করবে। অথচ সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আর কোনো সুযোগ নেই। তাহলে আমেরিকা কি বিশেষ কোনো মহল বা তৃতীয় কোনো শক্তিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায়? কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাচক্রকে প্রভাবিত করার জন্য বিএনপির তরফ থেকে হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে বিশেষ লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ় ও দূরদর্শী নেতৃত্বে, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার সকল পথ নিশ্চয়ই বন্ধ করে দেবে। বাংলাদেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর ক্ষমতার আসতে হলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই আসতে হবে। সরকার প্রধান দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য সকল বৃহৎশক্তি ও উন্নয়ন পার্টনারদের পর্যবেক্ষক টিম পাঠাতে বলেন। অতীতেও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো, কিন্তু সুন্দর ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করা যায়নি। নিশ্চয়ই, আমেরিকার সাংশনও নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

এদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। এতে ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্ত ও দু’লক্ষ মা- বোনের সম্ভ্রম হারানোর ক্ষতও আছে। এদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রাণ হারিয়েছেন স্বয়ং জাতির পিতার পরিবার। জাতীয় নেতৃবৃন্দ। পথ হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। আবার সম্ভিত ফিরে পায় বেঁচে থাকা বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ’কে। সরকার প্রধান হয়েছেন চার বার। এই ধারাবাহিকতা ১৫ বছর। শত বাধা আতিক্রম করে বাংলাদেশ এখন বিশ^ অর্থনীতিতে ৩১তম স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশ এখন এক অবিস্মরণীয় উন্নয়নের দেশ। কোভিড-অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেও মেগা প্রকল্পগুলো অব্যাহত আছে এবং দৃশ্যমানও হয়েছে অনেক। দীর্ঘ সরকার পরিচালনায় হয়তো কিছু ভুল বা ব্যর্থতা থাকতে পারে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দু’একটি নির্বাচন হয়তো ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক হয়নি। এরকম উদাহারণ স্বয়ং আমেরিকায়ও দেখি। অনবরত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সবক দেওয়া আমেরিকার গত নির্বাচনও কলঙ্কিত হয়েছে ক্যাপিটাল হিলের হামলায়।

এতদসত্ত্বেও গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নির্বাচনের বিকল্প নেই। শত ভিসা নীতি ও সাংশন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারবে না। সাংশন চ্যালেঞ্জ কখনো ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে কঠিন হবে না। বৃহৎ স্বার্থের জন্য জনগণকে কিছু ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করতে হতে পারে, যেটি হবে সাময়িক। বাঙালি কখনো গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিতে পারে না। বাঙালির পরম স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা শেখ হাসিনার হাতে স্মার্ট বাংলাদেশ হয়ে গড়ে উঠবেই।

লেখক: প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, সাবেক ডিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।