২৪ ডিসেম্বর থেকে যে মোবাইলগুলিতে আর চলবে না হোয়াটসঅ্যাপ

দুশ্চিন্তায় একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী! কারণ এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি হালফিলে ঘোষণা করেছে যে, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে অ্যান্ড্রয়েড ৪.১ বা তারও পুরোনো তথা ‘আউট ডেটেড’ ওএস সংস্করণ দ্বারা চালিত ফোনে আর অ্যাপ সাপোর্ট করবে না। এক্ষেত্রে মেটা মালিকানাধীন এই মেসেজিং অ্যাপটি, কোন কোন ডিভাইসের জন্য অ্যাপ সাপোর্ট বন্ধ করতে চলেছে সেই তালিকাও প্রদান করেছে। এমত পরিস্থিতিতে, আপনার ব্যবহৃত মোবাইলটিও যদি এই তালিকায় সামিল থাকে তবে লেটেস্ট ওএস ভার্সনে ডিভাইসকে আপগ্রেড করাতে হবে অথবা নতুন একটি ফোন কিনতে হবে। না হলে আর হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে বা চ্যাটিং করার সুবিধা পাবেন না আপনারা।

আকস্মিক সাপোর্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে হোয়াটসঅ্যাপ তাদের একটি সাম্প্রতিক FAQ নোটে জানিয়েছে -‘অ্যাপ সাপোর্ট নিয়ে আমরা প্রতি বছর অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির মতো, কোন ডিভাইস ও সফটওয়্যারগুলি সবচেয়ে পুরোনো এবং সেগুলির ইউজার সংখ্যা কতটা কম তা যাচাই করে দেখি। যার পরই, পুরোনো ডিভাইসগুলির একটি তালিকা তৈরি করা হয়।’ মূলত সংস্থাগুলি, বহু বছর আগে লঞ্চ হওয়া ফোনগুলির জন্য লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম বা সিকিউরিটি প্যাচ রিলিজ করতে চায় না। ফলে হোয়াটসঅ্যাপ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ফাংশনালিটির অভাব দেখা দেয় পুরোনো ওএস চালিত ডিভাইসে। তাই এই সকল ফোনের জন্য অ্যাপ সাপোর্ট বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না উক্ত ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটির।

হোয়াটসঅ্যাপ তাদের সাম্প্রতিক নোটিসে আরও জানিয়েছে যে, অ্যাপ সাপোর্ট বন্ধ করার আগে পুরোনো অপারেটিং সিস্টেম চালিত ফোন ব্যবহারকারীদের রিমাইন্ডার পাঠানো হবে। যাতে তারা নিজেদের ডিভাইসের ওএস আপগ্রেড করাতে পারেন। অথবা নতুন ফোনে সুইচ করতে পারেন। কেননা অ্যাপ সাপোর্ট বন্ধ হওয়ার পর, পুরোনো-সফ্টওয়্যারে রান করা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আর হোয়াটসঅ্যাপ পরিচালনা বা চ্যাটিং করা সম্ভব হবে না।

২৪ অক্টোবরের পর এই ডিভাইসগুলিতে কাজ করবে না হোয়াটসঅ্যাপ :আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে যেসব ডিভাইসের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে, সেগুলির তালিকা নিচে দেওয়া হল –

Nexus 7, Samsung Galaxy Note 2, Samsung Galaxy S2, Samsung Galaxy Nexus, Samsung Galaxy Tab 10.1, Samsung Galaxy S, HTC One, HTC sensation, HTC Desire HD, Sony Xperia Z, Sony Xperia S2, Sony Ericsson Arc 3, Motorola Droid Razor, Motorola Zoom, LG Optimus G Pro, LG Optimus 2X, Asus E Pad Transformer, Acer Iconia Tab A5003 ।

আপনারা যদি নিজেদের ফোনের চলমান ওএস ভার্সন সম্পর্কে না জেনে থাকেন, তবে ডিভাইসের সেটিংস অপশনে গিয়ে সফটওয়্যার সংক্রান্ত তথ্য চেক করে নিতে পারেন।




টাইগারদের উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ইংলিশ অলরাউন্ডারের

আফগানিস্তানকে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে গত পরশু শনিবার ৬ উইকেটের বড় জয় নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। আর এ জয়ে গেল কয়েক দিন ধরে চলা তর্কবিতর্ক ভালোভাবেই চাপা দিয়েছেন টাইগাররা। বেড়েছে আত্মবিশ্বাসও। তবে এবার আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে টাইগারদের। কারণ আসরে সাকিবদের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতিপক্ষ গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড। যারা কিনা বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচকে টার্গেট করেই অপেক্ষা করছে আসরে লড়াইয়ে ফেরার। এমনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইংলিশ অলরাউন্ডার লিয়াম লিভিংস্টোন।

এবারের আসরের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট দল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। ঐ ম্যাচে ইংলিশরা পাত্তাই পায়নি কিউইদের সামনে। প্রথমে ব্ল্যাকক্যাপসের বোলারদের দাপট পরে ব্যাটারদের তাণ্ডব। সব মিলিয়ে আসরের শুরুতেই ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ গ্রহণ করতে হয় গেল আসরের চ্যাম্পিয়নদের। যেখানে আসর শুরুর আগে সেরা চারের জন্য ফেভারিট তো বটেই এবারও জিততে পারে বিশ্বকাপ বাটলারদের নিয়ে এমন বাজি ধরেছেন অনেকে।

তবে আর পিছনে ফিরে তাকাতে চাইছে না ইংল্যান্ড। এবার তাদের পুরো ফোকাস ১০ অক্টোবর ধর্মশালার ম্যাচের দিকে। এ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপ লড়াইয়ে ফিরতে চান বাটলাররা। শুধু তাই নয় এই খেলা মাঠে গড়ানোর আগে রীতিমতো বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেওয়ার খানিকটা হুমকিও দিয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার লিভিংস্টোন। জানান, আগের ম্যাচের থেকে দ্বিগুণ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চান তারা। বলেন, ‘একটা ম্যাচ দিয়ে একটা টুর্নামেন্ট বিবেচনা করা যাবে না। আমাদের এই দলটার একটা বিষয় খুব ভালো যে যখন আমরা কোনো ম্যাচ হেরে যাই তখন আমরা আরো বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে যাই। মঙ্গলবারে (বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে) আমাদের এমনটা করার সুযোগ আছে। কন্ডিশনের কারণে বল খুব ভালো উড়ে। আপনি দেখলে এটা বুঝতে পারবেন। বাউন্ডারি মারতে এটি আপনাকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। সেখানে বাউন্ডারি এতটা বড় নয়। সেই সঙ্গে আমাদের লাইন আপে যে শক্তি আছে তাতে এটা আমাদের জন্য আরো ভালো হবে।’

ইংল্যান্ড দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় রয়েছে যারা নিয়মিত খেলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। সেই সুবাধে ভারতের সব মাঠেই তাদের কম বেশি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তেমনি ধর্মশালায় ঝোড়ো ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ইংলিশ এই অলরাউন্ডারেরও। চলতি বছরের গেল মে মাসে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে মাত্র ৪৮ বলে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লিভিংস্টোন। এছাড়া শুধু তিনি নয় তার সঙ্গে এই মাঠে ঐ ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছিলেন ইংলিশ বোলার স্যাম কারানও। আর এই দুই ক্রিকেটারকেই দেখা যাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামতে। সেগুলোই জয় পাওয়ার আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে ইংলিশদের। এ প্রসঙ্গে লিভিংস্টোন বলেন, ‘আমি, স্যামি (স্যাম কারান) এবং জস (বাটলার) সবাই এখানে খেলেছি। যা হয়ত আমাদের সহায়তা করবে। ঐ মাঠে আমাদের ভালো স্মৃতি আছে এবং আশা করি, আমি এ ম্যাচে (বাংলাদেশের বিপক্ষে) সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারব।’




মেহেরপুরে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

“স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী সরকার গাইডলাইন বাস্তবায়ন জরুরি”এই প্রতিপাদ্যে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে মেহেরপুরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপির সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার সভা কক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মঈন-উল-আলম সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহামেদ চুন্নু এবং বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

এসময় আমঝুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহামেদ চুন্নু বলেন,সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির কোনো লাইসেন্স প্রদান করা যাবে না। বিশেষ করে স্কুলের সামনে যেন সিগারেটের দোকান না থাকে এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক কাউকে যেন সিগারেট বিক্রি না করা হয় সে বিষয়ে অভিযান চালালে তামাক জাতীয় ব্যবহার অনেক অংশেই কমে আসবে।

তিনি আরো বলেন, আগামী অর্থ বছরের বাজেটে আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা শুধু প্রচার প্রচারণার বাজেট রাখবো।

আলোচনা সভায় এছাড়াও শানঘাট পল্লী উন্নয়ন নগরের নির্বাহী পরিচালক মোঃ মহিবুল আলম ওহিদ,এসপিএইসআর এর নির্বাহী পরিচালক আবু আবিদ,মফিজুল ইসলাম,নজরুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




প‌রিবারতন্ত্র থেকে বে‌রিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ

উত্তরাধিকার সূত্রে বা পারিবারিক পরিচয়ে রাজনীতির চর্চা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ উপমহাদেশে। বাবার সূত্রে কিংবা দাদার সূত্রে রাজনীতিতে এসে অনেকে পূর্বসূরিকে ছাড়িয়ে গেছেন। রাজনীতিতে হয়েছেন বটবৃক্ষ। আবার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও উত্তরাধিকার সূত্রে পদ-পদবি পেয়ে যাওয়ার উদাহরণও আছে। যারা এভাবে রাজনীতিতে এসেছেন, তারা কার্যত বনসাই হয়ে আছেন।

ত‌বে রাজ‌নৈ‌তিক বি‌শ্লেষক‌দের ম‌তে উত্তরা‌ধিকার রাজনী‌তি আধুনিক ও গণতা‌ন্ত্রিক রাজনী‌তির বি‌রোধী।

দেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ প্রায় সব দলেই উত্তরাধিকারের চর্চা রয়েছে। পারিবারিক সূত্রে এমপি হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমান একাদশ সংসদে এ সংখ্যা ৯৮। স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ জাগায় যে, আগামী দ্বাদশ সংসদে এ সংখ্যা কত হবে? যদিও বর্তমান সংসদের ৩৪টি উপনির্বাচনে উত্তরাধিকার সূত্রে এমপি হয়েছেন মাত্র চারজন। বা‌কি ৩০ জন‌কেই ম‌নোনয়ন দেওয়া হ‌য়ে‌ছে সা‌বেক ছাত্র নেতা ও রাজ‌নৈ‌তিক বি‌বেচনায়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচ‌নে বাংলা‌দেশ আওয়ামী লীগ সে প‌থেই হাট‌ছে ব‌লে উপনির্বাচ‌নের ম‌নোনয়নগু‌লো সে ই‌ঙ্গিত দি‌চ্ছে।

গতকাল র‌বিবার সন্ধ‌্যায় আওয়ামী লীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে গোলাম ফারুক পিংকুকে মনোনয়ন দিয়েছে ।

রাজধানীর গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু। এছাড়াও তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব এবং স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

একাদশ জাতীয় সংসদের শূন্যঘোষিত এ দুটি আসনে উপ-নির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১১ অক্টোবর এবং যাচাই-বাছাই ১২ অক্টোবর।

গত ১ অক্টোবর সংসদ সচিবালয় এ দুই আসন শূন্য ঘোষণা করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি এ কে এম শাহজাহান কামাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মৃত্যুবরণ করেন। এতে আসন দুটি শূন্য হয়। ব্রাক্ষণবা‌ড়িয়া ২ আস‌নে আওয়ামী লী‌গের ম‌নোনয়র চে‌য়ে‌ছি‌লেন উ‌কিল আব্দুস সাত্তা‌রের ছে‌লে ।

এ‌দি‌কে, সংসদের ৩০০ আসনে উত্তরসূরি হিসেবে বা পারিবারিক পরিচয়ে মনোনয়ন পাওয়ার পাশাপাশি সংরক্ষিত ৫০ আসনেও এই চর্চা আছে। বরং হিসাব করলে বেশিই দেখা যায়।

সব মিলিয়ে একাদশ সংসদেই উত্তরসূরি বা পারিবারিক পরিচয়ে এমপি রয়েছেন শতাধিক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় দলের প্রভাব ধরে রাখতে নেতার পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে আনা হয়। আবার অনেক সময় যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে না ওঠায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

তবে উত্তরাধিকার চর্চার প্রভাব নিয়ে সতর্ক করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এমন চর্চার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়। সংসদে দেখা যায়, অনেকে বক্তব্য দিতে পারেন না। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিও বোঝেন না। আবার জনসমাবেশে অরাজনৈতিক আচরণ করেন, যা সরকার বা দলকে বেকায়দায় ফেলে দেয়। হঠাৎ ক‌রে রাজনী‌তির মা‌ঠে এসে বেসামাল হ‌য়ে দল‌কে ঐক‌্যবদ্ধ রাখ‌তে পা‌রেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক সস্প্রতি এক গণমাধ‌্যম‌কে বলেন, ‘উত্তরাধিকারের রাজনীতি গণতন্ত্র ও আধুনিক রাজনীতির বিরোধী। দলের জন্য ও রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর।’ তিনি বলেন, ‘গত ১৫-২০ বছরে এ ধারার রাজনীতির চর্চা বেশি হচ্ছে বলেই দুর্বল হয়েছে রাজনীতি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘রাজনৈতিক ত্যাগ-তিতিক্ষা বা যোগ্যতা থাকলে এটা গ্রহণ করা যায়। উত্তরাধিকার সূত্রে সংসদে এত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা অবশ্যই দুশ্চিন্তার। আমি মনে করি, এ সংখ্যা নিয়ে প্রত্যেক দলেরই চিন্তার ব্যাপার আছে। কারণ দাদা, বাবার যোগ্যতায় এসব পদ পেয়ে থাকলে গণতন্ত্র কতটা মজবুত করবে, সেটাও ভাবতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রে উত্তরাধিকারের সুযোগ নেই। আবার এটাকে ধর্মগ্রন্থের বাণী মনে করলেও চলবে না। কারও যদি যোগ্যতা থেকে থাকে, তাহলে বাবা-দাদা থাকলে আসতে পারবেন না সেটাও তো হতে পারে না।’

আওয়ামী লীগের যারা : এমপি ও মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত। তার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম ১৯৭০, ’৭৩, ’৭৯ ও ’৮৬ সালের এমপি। দিনাজপুর থেকে নির্বাচিত খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বাবা প্রয়াত আবদুর রউফ চৌধুরী। তিনি ১৯৯৬ সালের এমপি ও দলের নেতা ছিলেন। ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা। এ ছাড়া তিনবার দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

দিনাজপুরের আরেকটি আসন থেকে নির্বাচিত ইকবালুর রহিমের বাবা প্রয়াত আবদুর রহিম। তিনি সত্তরের এমপি ছিলেন। তবে ইকবালুর রহিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দিনাজপুরের আরেকটি আসনের এমপি শিবলী সাদিক। তার বাবা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজুও এমপি ছিলেন।

রংপুর-২ আসনের আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর চাচা আনিসুল হক চৌধুরী এমপি ছিলেন। গাইবান্ধা-২ আসনের মাহাবুব আরা গিনি পারিবারিক বিবেচনায় এমপি হয়েছেন। বগুড়া-১ আসনের সাহাদারা মান্নান প্রয়াত এমপি আবদুল মান্নানের স্ত্রী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ১৯৭৩ সালের এমপি প্রয়াত মইন উদ্দীন আহমদের ছেলে। নওগাঁ-৫ আসনের নিজাম উদ্দিন জলিলের (জন) বাবা প্রয়াত আবদুল জলিল ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী। সিরাজগঞ্জ-১ আসনের তানভীর শাকিল জয় প্রয়াত মন্ত্রী ও নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে। তার দাদা জাতীয় চার নেতার অন্যতম মনসুর আলী। সিরাজগঞ্জ-২ আসনের ডা. হাবিবে মিল্লাত সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মেয়ের জামাই। সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের তানভীর ইমাম প্রয়াত নেতা এইচ টি ইমামের ছেলে। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের মেরিনা জাহান দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রয়াত মযহারুল ইসলামের মেয়ে। তার ভাই চয়ন ইসলামও এমপি ছিলেন। পাবনা-২ আসনের আহমেদ ফিরোজ কবির প্রয়াত আহমেদ তফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৭৩ ও ’৯৬ সালের এমপি ছিলেন। মেহেরপুর-১ আসনের ফরহাদ হোসেনের বাবা প্রয়াত মোহাম্মদ সহিউদ্দিন ছিলেন ১৯৭০, ’৭৩ ও ’৮৬ সালের এমপি। কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের দাদা গোলাম কিবরিয়া ছিলেন এমপি। ঝিনাইদহ-২ আসনের তাহজীব আলম সিদ্দিকীর বাবা প্রয়াত নুরে আলম সিদ্দিকী ছিলেন দলের নেতা। ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি শফিকুল আজম খান। তার বাবা প্রয়াত শামসুল হুদা জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। যশোর-৫ আসনের স্বপন ভট্টাচার্যের ভাই পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য দলের নেতা। অবশ্য রাজনীতিতে স্বপনেরও অবদান রয়েছে। রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর বাবা প্রয়াত রফিকুল্লাহ চৌধুরী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর। তার বাবা মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান তিনবারের এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা শেখ হেলালের ছেলে শেখ ফারহান নাসের তন্ময় বাগেরহাট-২ আসনের এমপি। বাগেরহাট-৩ আসনের হাবিবুন নাহার খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের স্ত্রী। খুলনা-২ আসনের শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল শেখ নাসেরের ছেলে। খুলনা-৩ আসনের মন্নুজান সুফিয়ানের স্বামী আবু সুফিয়ান এ আসনের এমপি ছিলেন। তিনি নিজেও অবশ্য রাজনীতি করেছেন। ভোলা-২ আসনের আলী আজম মুকুল দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা। ভোলা-৪ আসনের আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বাবা প্রয়াত এমএম নজরুল ইসলাম ১৯৭৯ ও ’৯১ সালের এমপি। টাঙ্গাইল-৬ আসনের আহসানুল ইসলাম সাবেক এমপি হাজি মকবুল আহমেদের ছেলে। টাঙ্গাইলের আরেক আসনের এমপি খান আহমেদ শুভ দলের জেলা সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুকের ছেলে। ফারুক ১৯৭৩ সালে এমপি ছিলেন। ময়মনসিংহ-১ আসনের জুয়েল আরেং সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের ছেলে। ময়মনসিংহ-২ আসনের শরীফ আহমেদের বাবা শামসুল হক চারবারের এমপি। ময়মনসিংহ-১০ আসনের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের বাবা প্রয়াত এমপি আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। নেত্রকোনার এমপি সাজ্জাদ হাসানের বাবা প্রয়াত আখলাকুল হোসাইন আহমেদ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দা জাকিয়া নূর চার জাতীয় নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ও দলের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন। কিশোরগঞ্জের আরেক এমপি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ছেলে। অন্য এমপি নাজমুল হাসান পাপনের বাবা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুুর রহমান। তার মা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আইভি রহমান। মানিকগঞ্জের নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বাবা প্রয়াত সায়েদুর রহমান এমপি ছিলেন। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে নির্বাচিত নসরুল হামিদের বাবা হামিদুর রহমান দলের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। মা হাসনা হামিদও রাজনীতি করতেন। গাজীপুরের জাহিদ আহসান রাসেল প্রয়াত নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে। সিমিন হোসেন রিমি প্রয়াত জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে। মেহের আফরোজ চুমকির বাবা প্রয়াত ময়েজউদ্দিন ১৯৭০ ও ’৭৩ সালের এমপি। কাজী কেরামত আলীর বাবা কাজী হেদায়েত হোসেন গণপরিষদ সদস্য ছিলেন। মুজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) বাবা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মীয়। তার আরেক ছেলে নূর-ই-আলম চৌধুরীও এমপি। ফরিদপুর-৩ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আত্মীয় পরিচয়ে এমপি হন। ফরিদপুরের আরেকটি আসনের এমপি শাহদাব আকবরের মা প্রয়াত এমপি দলের নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। নাহিম রাজ্জাকের বাবা প্রয়াত নেতা ও এমপি আবদুর রাজ্জাক। জয়া সেনগুপ্তা প্রয়াত এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী। এ কে আবদুল মোমেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই। গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজের (মিলাদ গাজী) বাবা প্রয়াত এমপি দেওয়ান ফরিদ গাজী। মাহবুব আলীর বাবা আছাদ আলী প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। আনিসুল হকের বাবা প্রয়াত সিরাজুল হক ১৯৭০ সালের এমপি ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা। রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের বাবা এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী ছিলেন জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের এমপি। দীপু মনির বাবা প্রয়াত এমএ ওয়াদুদ ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। আয়েশা ফেরদাউসের স্বামী প্রয়াত এমপি মোহাম্মদ আলী। মাহফুজুর রহমানের বাবা মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ ও ’৯৬ সালের এমপি ছিলেন। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বাবা প্রয়াত ফজলুল কবির চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাবা চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাবা প্রয়াত এমপি আখতারুজ্জামান চৌধুরী। সাইমুম সরওয়ার কমলের বাবা প্রয়াত ওসমান সরওয়ার চৌধুরী ছিলেন ১৯৭৩ সালের এমপি। শাহিনা আক্তার চৌধুরীর স্বামী সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি। শিরীন আহমেদের স্বামী প্রয়াত বজলুর রহমান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। নাহিদ ইজাহার খানের বাবা খন্দকার নাজমুল হুদা পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর নিহত সেনা কর্মকর্তা। খাদিজাতুল আনোয়ারের বাবা প্রয়াত এমপি রফিকুল আনোয়ার। ওয়াসিকা আয়শা খানের বাবা প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সার দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ছিলেন। কানিজ ফাতেমা আহমেদের স্বামী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতা। আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা কুমিল্লার প্রয়াত নেতা আফজল খান। উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমের (শিউলী আজাদ) স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদ। রুমানা আলীর বাবা প্রয়াত এমপি রহমত আলী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের এমপি বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। তার মামা খালেদ মোশাররফ। পারিবারিক পরিচয়ে এমপি হলেও সংগ্রাম এমপি হওয়ার আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। সুলতানা নাদিরার স্বামী প্রয়াত নেতা গোলাম সবুর টুলু। হাবিবা রহমান খান শেফালীর বাবা প্রয়াত ফজলুর রহমান খান তিনবারের এমপি ছিলেন। জাকিয়া পারভীন খানমের বাবা সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান খান চুন্নু মিয়া। তার স্বামী আওয়ামী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। অপরাজিতা হকের বাবা প্রয়াত খন্দকার আসাদুজ্জামান ছিলেন তিনবারের এমপি। তামান্না নুসরাত বুবলীর স্বামী প্রয়াত লোকমান হোসেন ছিলেন নরসিংদীর মেয়র। জাকিয়া তাবাসসুমের বাবা প্রয়াত আজিজুর রহমান দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ফরিদা খানম নারী মুক্তিযোদ্ধা। তার স্বামী নোয়াখালী জেলা মুজিব বাহিনী প্রধান মাহমুদুর রহমান বেলায়েত। রাজবাড়ীর সালমা চৌধুরীর বাবা প্রয়াত আবদুল ওয়াজেদ চৌধুরী ছিলেন এমপি। সৈয়দা রাশিদা বেগমের স্বামী কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সৈয়দ নিজাম উদ্দিন লাইট। ফেরদৌসী ইসলাম জেসীর বাবা প্রয়াত ভাষাসৈনিক ও সংসদ সদস্য আ আ ম মেসবাহুল হক বাচ্চু। পারভীন হক সিকদারের বাবা প্রয়াত ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদার। জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভায়রা। এ ছাড়া শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ হেলাল উদ্দীন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও শামীম ওসমানের পারিবারিক পরিচয় থাকলেও তারা এখন প্রত্যেকে রাজনীতিতে স্বনামে প্রতিষ্ঠিত।

জাতীয় পার্টি : বিরোধী দলনেতা রওশন এরশাদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী। তাদের ছেলে সাদ এরশাদও এমপি। আহসান আদেলুর রহমান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদ ও দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ভাগ্নে। জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদেরও এমপি। নীলফামারী-৪ আসনে আদেলুর রহমান আদেল, তার বাবা ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি ছিলেন। নাসরীন জাহান রত্না দলের কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী। আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান।

অন্যান্য : ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেসা খান সংরক্ষিত নারীর আসনে এমপি। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিজে ও তার স্ত্রী বেগম আফরোজা হকও এমপি। মাহী বি চৌধুরীর বাবা সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সেলিনা ইসলামের স্বামী পদচ্যুত এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল।




ভাড়া বিল্ডিংয়ে চলছে মেহেরপুর ডাক বিভাগের কার্যক্রম

সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেহেরপুর প্রধান ডাকঘর নির্মাণের কাজ দুই বছরেও শেষ হয়নি। ফলে শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার একটি বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম।

আজ ৯ অক্টোবর সোমবার বিশ্ব ডাক দিবস। প্রতি বছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডাক অধিদপ্তর দিবসটি পালন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার কিছু জানাতে পারেননি। এমনকি ডাক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন তথ্য দেয়া নেই।

১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইউনির্ভাসেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। পরে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ৯ অক্টোবরকে বিশ্ব ডাক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্যপদ লাভ করে। এরপর থেকে দেশে প্রতি বছর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

মেহেরপুর পোস্ট অফিসে এ দিবসটি উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর ও মেহেরপুর পোস্ট অফিসের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে গেলে নির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারেননি মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরে কর্তব্যরত পোস্টমাস্টার। তবে বলেছেন ডাক অধিদপ্তর থেকে মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরে মাত্র তিন পিস পোস্টার পাঠানো হয়েছে।

ভূমি সেবা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, চিঠি বুকিং ও বিলিতে এসএমএস সার্ভিস নতুন তিনটি সেবা চালু হওয়াতে ডাক বিভাগ মানুষের কাছে নতুন করে আস্থার জায়গা ফিরে পাচ্ছে।

সরজমিনে মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরে যেয়ে জানা যায়, মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরের অধীনে একটি উপজেলা পোস্ট অফিস (গাংনী) ও তিনটি সাব পোস্ট অফিস রয়েছে। সেগুলো হলো আমঝুপি সাব পোস্ট অফিস, বড়বাজার সাব পোস্ট অফিস ও কোর্ট সাব পোস্ট অফিস। এছাড়াও ৩০ টি শাখা ডাকখর রয়েছে।

মেহেরপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার জহুরুল হক বলেন, ‘নতুন ভবনের কিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। আশা করছি দুই মাসের মধ্যে নতুন ভবনে যেতে পারবো। অতীতে সব মিলিয়ে দিনে প্রায় এক হাজার চিঠির আদান প্রদান হতো। তবে বর্তমানে সাধারণ চিঠির সংখ্যা কমে গেলেও রেজিস্ট্রি যোগে পাঠানো চিঠির সংখ্যা বেড়েছে, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সহ ব্যক্তিগত রেজিস্ট্রি চিঠি এখন প্রতিদিন প্রায় এক হাজার করে আদান প্রদান করা হয়। তবে সাধারণ চিঠি প্রদানের হার প্রায় শূন্যের কোঠায়। বিভিন্ন সরকারি স্কিম ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ এবং মেয়াদী হিসাব মিলিয়ে জেলায় প্রায় ১০ হাজার সেবা গ্রহীতা রয়েছেন। তারা কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই সেবা পাচ্ছেন। এছাড়া সদ্য চালু হয়েছে সবচেয়ে কম খরচে টাকা পাঠানোর জন্য ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম (ইএমটিএস)। এক সময়ের জনপ্রিয় পোস্টাল ক্যাশ কার্ড সেবা জনসচেতনতার অভাবে প্রায় বন্ধ।’




দামুড়হুদায় ফুলকপি চাষে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের জমি পরিদর্শনে কৃষি অফিসার

দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুরে ফুলকপি চাষে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শন করলেন কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার। গতকাল রোববার বেলা ১২ টার দিকে তিনি সরজমিনে জয়রামপুর মাঠে গিয়ে পরিদর্শন করেন।

জানাগেছে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুরে কিরন ফুলকপি চাষে ক্ষতিগ্রস্থ হয় অসংখ্য কৃষক। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার জয়রামপুরের ভুক্তভোগী ২০ জন কৃষক ক্ষতিপূরণ চেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরে তদন্তের ভার দেন। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার ক্ষতিগ্রস্ত ফুলকপি চাষীদের ক্ষেত সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং কৃষকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তাদের খোঁজখবর নেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অভিজিৎ কুমার বিশ্বাস সহ উপসহকারি কৃষি অফিসার ও ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, আমরা তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। কৃষক নি:সন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কারণ টা আমরা আরো বিস্তারিত সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে পরে প্রতিবেদন আকারে মতামত দিব।




এতো টাকা কোথায় পাচ্ছেন নূর: নতুন অফিসের মূল্য ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা

সমালোচনার মুখে গত আগস্ট মাসে ৩ কোটি টাকা মূল্যমানের রূপায়ন টাওয়ারের অফিস কেনা ভেস্তে গেলেও আবারও নতুন জায়গায় অফিস স্পেস কেনার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ইতোমধ্যে বায়নার ৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকী টাকা আগামী দুই মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু এতো টাকা নূর কোথায় পান? নূরের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। যদিও নূর বলছেন পুরোটাই পার্টির সদস্যদের টাকা।

নুরুল হক নুর ও রেজা কিবরিয়ার মধ্যকার দ্বন্দ্বে দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর দুই অংশই তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে অস্থায়ী কার্যালয়ে। অন্যদিকে পুলিশের দখলে রয়েছে দলটির প্রীতম জামান টাওয়ারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। অব্যাহতি-পাল্টা অব্যাহতির পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই প্রীতম জামান টাওয়ারের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয় নুরুল হক নুরের অনুসারীদের।

এর আগে গত আগস্ট মাসে একটি অফিস কেনার কথা জানা গিয়েছিলো। প্রাপ্ত নথিপত্র অনুযায়ী, পল্টনের কালভার্ট রোডের এন/এ নম্বর প্লটে নির্মাণাধীন রূপায়ণ এফপিএবি টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত ফ্লোরটি বিক্রি করছিলো রূপায়ণ গ্রুপ। আর এটির ক্রেতা মো. নুরুল হক নুর। প্রতি বর্গফুটের মূল্য ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৮০০ টাকা। সেই হিসাবে ১৬৫৫ বর্গফুটের জায়গাটির (স্পেস) মোট মূল্য ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এর সঙ্গে কার পার্কিং বাবদ ৮ লাখ এবং ইউটিলিটি বাবদ আড়াই লাখ টাকা ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে জায়গাটি কেনার জন্য নুরুল হক নুরকে দিতে হতো ৩ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার টাকা। যদিও গণমাধ্যমে সমালোচনার মুখে সেই দফা স্পেস কেনা থেকে বিরত হন নূর।

আবারও নতুন করে অফিস কেনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নুরুল হক নূর বলেন, ‘এটা পার্টির লোকজনের টাকা। সবাই ন্যূনতম ১০হাজার টাকা করে দিবে। কেউ সামর্থ অনুযায়ী ৫/১০ লক্ষ টাকাও দিচ্ছে। আমি গ্রাম থেকে আসা মানুষ। আমার এতো টাকা কোথা থেকে আসবে। আমাকে নিয়ে যা বলা হয়ে থাকে তার সবই মনগড়া। যদিও টাকার উৎসের প্রসঙ্গ আসলে নুর সবসময় বলে আসেন প্রবাসিদের চাঁদার টাকাই তার উৎস।’

যখন তিনি এরকম দাবি তুলছেন ঠিক তখন নুরের দলের নেতাকর্মীরাই তার বিরুদ্ধে আর্থিক অসংগতির কথা তুলে ধরেছেন, দলের টাকা তিনি ব্যক্তিগতভাবে খরচ করেন, এমনকি প্রবাসীদের দেয়া টাকার হিসাবও তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের কাছে দেন না।

গণ অধিকার পরিষদে নূরের সঙ্গে সহযাত্রী ছিলেন দলটির সাবেক আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া। দলটি ভেঙ্গে যাওয়ার পরপরই নূরের সকল আর্থিক অসঙ্গগতির তথ্য ফাঁস করে দেন । গত ২১ জুন ড. রেজা কিবরিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ নুর প্রবাসে কমিটি গঠনের ব্যাপারে নিজেকে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন,যাতে অন্য কেউ প্রবাসীদের টাকার তথ্য না পায়। দলীয় ফান্ডের কোনো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নেই। কাউকে হিসাবনিকাশ দিতে চান না তিনি। আমি দলের প্রধান, কিন্তু আমাকে হিসাবনিকাশ দেন না। এখন আমি হিসাব চাওয়াতে তিনি আজেবাজে কথা বলছেন।

পদের বিনিময়ে নূর নগদ অর্থ,দামী গাড়ি নেন পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে,এমন তথ্যও দিয়েছেন রেজা কিবরিয়া । নুরুর বিরুদ্ধে কমিটিতে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘নুর এত গাড়ি কোথায় পায়! এর আগে বলা হয়েছিল কাতারের সভাপতি গাড়ি দিয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। কাতারের সভাপতি কেন গাড়ি দেবে?

অর্থের বিনিময়ে পদ বাণিজ্য করেন বলে নূরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতারা। অর্থের বিনিময়ে নুর কমিটি দিয়েছেন, প্রবাসী অধিকার পরিষদ ইরাক শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সুলতান নুরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন। গত ৫ জুলাই ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে সুলতান জানান এ তথ্য ফাঁস করে দেন । তিনি বলেন, ‘প্রবাসি অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক নিয়মের বাইরে প্রায় দুই কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এবং সেই টাকার মাধ্যমে নুর ও তার গুটিকয়েক সমর্থক লাভবান হয়েছে। কমিটিতে বড় পদায়ন অর্থের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে, যেমন মালয়শিয়া থেকে ভিপি নুরের জন্য যিনি দামী মোবাইল ও মেয়ের জন্য স্বর্ণের চেইন দিয়েছিলেন পরে তাকেই প্রবাসী অধিকার পরিষদের মালয়শিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

গণ অধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহবায়ক মেজর আমীন আহমেদ আফসারী (অব.) একাত্তর টিভিতে এক নতুন তথ্য দিয়েছেন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার ভাষ্য ,নুরকে এক জায়গা থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, নুর প্রতিমন্ত্রী হবে এবং দশটি আসনও পাবে। আমিন আহমেদ আফসারি একাত্তরকে বলেন, ‘নুর আমাকে অফার করেছে প্রার্থী হবার এবং আমরা ১০টি সিট পাচ্ছি। আমি প্রার্থী হলে নির্বাচনের জন্য দুই কোটি টাকা আমাকে দেয়া হবে এবং নুর পাবে এক কোটি। এভাবে ১০টি আসনের জন্য মোট ৩০ কোটি টাকা পাবে নুর, কিন্তু আমি এই অফার নাকচ করে দিয়েছি।

টাকার উৎস বিষয়ে জানতে চাইলে নূরুল হক নূর বলেন, আমাকে নিয়ে সবসময় সমালোচনা করা হয়। আমরা যখন রাজনৈতিক দল করলাম তখন রেজা কিবরিয়াকে অভিভাবক হিসেবে সাথে রাখলাম। এরপর তিনি বিএনএম এর সাথে যোগাযোগ রাখা শুরু করলেন তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিই আলাদা হওয়ার। আমাদেরকে পুলিশ দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপরতো আমাদের অফিস নিতে হবে। নতুন অফিসের টাকা আসছে কোথা থেকে প্রশ্নে তিনি বলেন, টাকা আমাদের দলের সদস্যদের। আপনাদের দলে কতজন সদস্য যে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা তারা দিচ্ছেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, গণ পরিষদের ৫৬টি জেলায় কমিটি আছে, ৩০০ উপজেলা কমিটি আছে। আমাদের ৫টি অঙ্গ সংগঠন আছে, প্রবাসী অধিকার পরিষদ আছে ৪২টা দেশে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১৬৩ সদস্য আছে। প্রত্যেকে ন্যুনতম ১০ হাজার টাকা দিবে। অনেকে আছেন যারা ৫/১০ লক্ষ টাকা দিবেন। বাইরের কোন টাকা নেই। তবে তিনি মোট সদস্য কত সেবিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলেননি।




দর্শনা সীমান্তে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার, কোমরে মিললো ৬৮ টি স্বর্ণের বার

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার নাস্তিপুর সীমান্তে মাথাভাঙ্গা নদীতে প্রায় ১০ কেজি ওজনের ৬৮ টি স্বর্ণের ভারে ডুবে যায় মিরাজ মন্ডল (১৯) নামের এক যুবক। তিনি উপজেলার নাস্তিপুর গ্রামের ভাট পাড়ার ইয়াসিন মন্ডলের ছেলে।

জানাগেছে গতকাল রোববার বেলা ১২ টার দিকে নাস্তিপুর সীমান্তের মাথাভাঙ্গা নদীর ৮০/১ নং পিলারে নিকট ২ জন স্বর্ণ চোরাকারবারী মাথাভাঙ্গা নদী পার হয়ে ভারতে যাওয়ার প্রাক্কালে আনুমানিক ২৫ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় এক চোরাকারবারী পালিয়ে গিয়ে গ্রামবাসির খবর দেয়। খবর পেয়ে বিজিবি,পুলিশ,ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন এসে মৃত্য দেহটি উদ্ধার করে।

বিকাল ৪ টার দিকে স্থানীয় ও বিজিবি, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস মাথাভাঙ্গা নদীতে অভিযান চালিয়ে তার মৃত লাশ উদ্ধার করে। তার শরীলে বাধা কাপড়ের ৪ টি পুটলাই ছোট-বড় ৬৮ টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে বিজিবি। যার ওজন ১০ কেজি ২ শ ৬৩ গ্রাম। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি ২ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। পুলিশ রাতে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

স্থানীয় ও বিজিবি সূত্র জানায়, গতকাল রোববার দুপুরে দামুড়হুদা সীমান্তের নাস্তিপুর গ্রামের মিরাজ মন্ডল তার শরীরে কোমরে বেঁধে মাথাভাঙ্গা নদীতে কলার ভেলা বানিয়ে পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে যায়। এ সময় মাথাভাঙ্গা নদীর মাঝখানে পৌঁছালে তার কাছ থেকে নদীর স্রোতে কলার ভেলা ভেসে যায়। এতে করে তার কাছে থাকা ৬৮টি স্বর্নের বার প্রায় ১০ কেজি ২শ ৬৩ গ্রাম স্বর্ণের ভারে পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার ৪ ঘন্টা পর তার লাশ উদ্ধার করে বিজিবি।

এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল রোববার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি সীমান্ত দিয়ে ভারতে স্বর্ণের একটি বড় চালাল পাচার হবে। খবর পেয়ে মিরাজ তার শরীরে কাপড়ের টুপলা করে মাজায় বেঁধে স্বর্ণের বার নিয়ে মাথাভাঙ্গা নদী পার হচ্ছে নদীর স্রোতে কলার ভেলা তার কাছ থেকে ছুটে গিয়ে পানিতে ডুবে সে নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় পুলিশ ফায়ার সার্ভিস কে খবর দেয়। বিকাল ৪ টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে বাধা কাপড়ের একটি টুপলা উদ্ধার করা হয়। যার মধ্য থেকে প্রায় ছোট বড় ৬৮ টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে। যার ওজন ১০ কেজি ২শ ৬৩ গ্রাম(৮৭৯.৮৮ ভরি)।

এ ঘটনায় দর্শনা থানায় মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।




দর্শনা পুলিশের অভিযানে ১ কেজি গাঁজাসহ মহিলা গ্রেফতার

দর্শনায় থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ১ কেজি গাঁজাসহ নুরজাহান (৩৮) নামে এক মহিলা গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃত নুরজাহান দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর (মাঝপাড়া) গ্রামের মোঃ এরশাদ আলী স্ত্রী। আজ রবিবার বেলা ১১ টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানান, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় দর্শনা থানা পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযানে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহার নেতৃত্বে দর্শনা থানার এসআই (নিঃ) মোঃ সুজন আলী সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ রবিবার বেলা ১১ টায় দর্শনা থানাধীন কৃষ্ণপুর গ্রামস্থ কৃষ্ণপুর ডাঙ্গার মাঠের জনৈক ফারুক মল্লিকের আবাদী জমির উত্তর পার্শ্বে দর্শনা-হিজলগাড়ী গামী পাঁকা রাস্তার উপর থেকে মোছাঃ নুরজাহান (৩৮) কে ১ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।




মেহেরপুরে জনপ্রতিনিধি সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের

মেহেরপুর জেলা বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের সদস্যরা জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

আজ রবিবার সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতি রেহেনা মান্নানের নেতৃত্বে একটি টিম এ সৌজন্য সাক্ষাৎ করা হয়।

মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মহা: আব্দুস সালাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক এ্যাড. মিয়াজান আলী, মেহেরপুর পৌর মেয়র ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক মাহফুজুর রহমান রিটনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎকালে বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের সদর উপজেলা সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন মিরন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা সভাপতি আজিমুল বারি মুকুল, পৌর শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক সুলহানা মুস্তাফিজ ঐশী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।