সেমিফাইনালে আম্পায়ার হিসেবে থাকছেন যারা

চলমান বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষ শুরু হতে যাচ্ছে ফাইনালে উঠার লড়াই। এই মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো পরিচালনা করছেন কারা সেই দিকেও থাকছে বাড়তি নজর। সোমবার (১৩ নভেম্বর) সেমিফাইনালে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া ম্যাচ অফিসিয়ালদের নাম জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।

আগামীকাল ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ে প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে স্বাগতিক ভারত। সে ম্যাচে অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন রিচার্ড ইলিংওর্থ ও রড টাকার। এবার অনফিল্ডে দায়িত্ব পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার টাকার দারুণ একটি মাইলফলক পূর্ণ করতে যাচ্ছেন। অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ক্যারিয়ারের ১০০তম ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনা করবেন তিনি।

থার্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোয়েল উইলসন। ফোর্থ আম্পায়ার থাকবেন দক্ষিণ আফ্রিকার এড্রিয়ান হোল্ডস্টক। আর গুরুত্বপূর্ণ সেই লড়াইয়ে ম্যাচ রেফারির ভূমিকা পালন করবেন জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি পাইক্রফট।

আগামী ১৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ইংল্যান্ডের রিচার্ড কেটেলবরো ও ভারতের নিতিন মেনন। ওই ম্যাচ দিয়ে টানা তৃতীয় বিশ্বকাপের সেমিতে থাকবেন কেটেলবরো। অভিজ্ঞ কেটেলবরোর সঙ্গে কলকাতার মাঠে দেখা যাবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করা মেননকে।

থার্ড আম্পায়ার হিসেবে তাদের সঙ্গে ম্যাচ পরিচালনায় যোগ দেবেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিস গ্যাফানি। আর চতুর্থ আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করবেন ইংল্যান্ডের মাইকেল গফ। ম্যাচ রেফারি হিসেবে ইডেন গার্ডেন্সে থাকবেন ভারতের জাভাগাল শ্রীনাথ।

সূত্র: ইত্তেফাক




কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মেটা দিচ্ছে বাড়তি আয়ের সুযোগ

ফেসবুকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা পান আয়ের সুযোগ। সম্প্রতি মেটা ইয়ার অ্যান্ড বোনাসেও দিচ্ছে বাড়তি আয়ের সুযোগ। মেটার অধীনে থাকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো আয়ের সুযোগ পাবে। ৩৫টি দেশে মিলছে বাড়তি আয়ের সুযোগ।

প্রথমেই আসবে ইনস্টাগ্রাম৷ এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইনভাইট অনলি বোনাসের মাধ্যমে আয় করা যাবে। ক্রিয়েটররা সৃজনশীল কন্টেন্টের মাধ্যমে রিলস ও ফটো শেয়ার করে রিওয়ার্ড পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে কয়েকজনকে নির্বাচন করে এই রিওয়ার্ড দেওয়া হবে।

ইনস্টাগ্রামে আরও রয়েছে গিফট সুযোগ। কোনো রিলস পছন্দ হলে ইনস্টাগ্রামে ফলোয়াররা গিফট পাঠাতে পারবেন।

ফেসবুকেও রয়েছে আয়ের সুযোগ। ফেসবুকে স্টোরির মাধ্যমে রোল করা যাবে সাবস্ক্রিপশন। কয়েকদিনে ফলোয়ার অ্যাকাউন্টে তা রোল আউট করা হবে। ফ্যানদের ৩০ দিন ফ্রি সাবস্ক্রিপশনের সুযোগও দেওয়া হবে।

সবশেষে বিজ্ঞাপনেও অংশীদারিত্ব বাড়ার সুযোগ রয়েছে। ‘অ্যালাও ব্র‍্যান্ড পার্টনার টু বুস্ট’ দিয়েও আয় শেয়ার করা যাবে।

সূত্র: ইত্তেফাক




মেহেরপুরে চতুর্থ দফার ডাকা অবরোধে মাঠে ছিল না কেউ, কর্মসূচি ছিল ভার্চুয়াল

বিএনপির ও সমমনা দলগুলোর ডাকা চতুর্থ দফা অবরোধে মেহেরপুর জেলাতে মাঠে ছিলো না বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। আাবার অবরোধ প্রতিরোধে আওয়ামী লীগেরও তেমন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না ।

রবি ও সোমবার জেলার কোথাও অবরোধের সমর্থনে কোনও নেতাকর্মীকে মিছিল বা সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। উপরন্তু রবিবার রাতে গাংনীর জনশুন্য রাস্তায় যুবদলের ব্যানারে একটি মশাল মিছিল করে ও একটি টায়ারে আগুন দিয়ে নিজেরাই সেই কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করে স্থান ও অংশনেওয়া নেতাকর্মীদের নাম গোপন করে ভিডিও চিত্র সাংবাদিকদের কাছে পাঠিয়ে ভার্চুয়াল অবরোধ কর্মসূচি পালনের তকমা পেয়েছেন।

অবরোধের কারণে রবিবার ও সোমবার মেহেরপুর – চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর – কুষ্টিয়া সড়কে বাস চলাচল করনি। তবে আন্তঃজেলা সড়কগুলোতে এবং অভ্যন্তরীণ সড়কে পর্যাপ্ত ইজিবাইক, নসিমন, রিকশাসহ ছোট যান চলাচল করছে। শহরের দোকানপাট-শপিংমল খুলেছে স্বাভাবিক দিনের মতো।

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে ঘিরে রয়েছে কোন প্রোগ্রাম করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমার বাড়ি, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানের সাদা পোশাকে পুলিশ, র‌্যাব এমন লাগানো হয়েছে যাতে আমরা যেন কিছু না করতে পারি। তিনি আরো বলেন, দিন এমন থাকবে। যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য বেড়েছে জনগণই এ সরকারের পতন নিয়ে আসবে একদিন ।

এদিকে, অবরোধে প্রতিবাদে মেহেরপুর জেলাতে ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন দেখা যায়নি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনগুলিকে।

তবে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন এলাকা ও সড়কের মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।




মুজিবনগরে নানা আয়োজনে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত

মুজিবনগরে র‍্যালী ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়েছে। গুডনেইবারর্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি এর আয়োজনে মঙ্গলবার  সকাল সাড়ে ১১ দিকে বল্লভপুর প্রজেক্ট অফাস চত্বর থেকে একটি র‍্যালী বের করা হয়। র‍্যালীটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে  কার্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

র‍্যালী শেষে সেখানে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। গুডনেইবারর্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপি এর ম্যানেজার বিভোব দেওয়ানের সভাপতিত্বে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন,মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান।

আলোচনা সভায় গুডনেইবারর্স মেহেরপুর সিডিপির সিনিয়র অফিসার (প্রোগ্রাম) রিফাত আল মাহমুদ এর সঞ্চালনায় উপস্হিত ছিলেন, গুডনেইবারর্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার শুভ কুমার মজুমদার,হেলথ অফিসার, আহসানুল হক, গুডনেইবারর্স বাংলাদেশ মেহেরপুর সিডিপির কর্মকর্তা কর্মচারি,পন্সর শিশুদের পিতামাতা সহ কমিউনিটির মহিলারা।




গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্কুল ছাত্রের

মেহেরপুর কুষ্টিয়া সড়কে গাংনীর আকুবপুর নামক স্থানে বালু বোঝায় ড্রাম ট্রাকের সাথে মোটর সাইকেলের সংঘর্ষে সায়েম নামের এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে তার বন্ধু বকুল।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকসহ চালক আলামিন ও হেলপার মারুফকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত সায়েম গাংনী উপজেলা মটমুড়া ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামের হাসেম আলী বিশ্বাসের ছেলে। সে স্থানীয় হাজি ভরস উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।

স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় সায়েম ও তার বন্ধু বকুল মোটরসাইকেলযোগে খলিশাকুন্ডি যাচ্ছিলেন। আকুবপুর নামক স্থানে পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা বালু বোঝায় ড্রাম ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুজনই মারাত্মক জখম হয়। দুমড়ে মুচড়ে যায় মোটরসাইকেলটি। স্থানীয়রা আহত দুজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১১ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সায়েমের মৃত্যু হয়।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি জব্দ করার পাশাপাশি ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করা হয়েছে। তবে নিহত ও আহত কারোর পরিবার থেকে এখনও কেউ কোন অভিযোগ করেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।




মেহেরপুরে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত

মেহেরপুরে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র‍্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মেহেরপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের আয়োজনে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল দশটার দিকে ডায়াবেটিস হাসপাতাল চত্বর থেকে একটি র‍্যালী বের করা হয়। র‍্যালীটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

র‍্যালী শেষে সেখানে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এসময় মেহেরপুর ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মালেক, কোষাধক্ষ্য আরিফুল ইসলাম বকুল, প্রচার সম্পাদক ফজলুল হক মন্টু ,সদস্য মোকলেসুর রহমান, প্রভাষক ও মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আবু সাঈদ, ডাক্তার অবিন্দম পোদ্দার, ডাক্তার সুমনা,হাসপাতালের ম্যানেজার মোহাম্মদ ফেরদৌস শোভনসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




জনবল সংকটের মধ্যেই মেহেরপুর জেলা কারাগারে বাড়ছে বন্দির চাপ

জনবল সংকটের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর জেলা কারাগারে বেড়েছে বন্দির চাপ। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মেহেরপুর জেলা কারাগারে বন্দির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কারাগারের রয়েছে ধারণ ক্ষমতার প্রায় শতভাগ বন্দী।

মেহেরপুর জেলা কারাগারে থেকে জানা যায়, জেল কোড অনুযায়ী একজন বন্দির জন্য ৩৬ ফুট জায়গা প্রয়োজন।এই হিসাবে মেহেরপুর জেলা কারাগারে ৩৩০ জন কারাবন্দি রাখার জায়গা আছে। ১৩ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত এই কারাগারে বন্দি ছিল ৩২৯।

মেহেরপুর জেলা কারাগারের সুত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এই কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা কাগজে কলমে ২০০ জনের। কিন্তু কিছু ভৌত অবকাঠামো নতুন কারাগারটি চালু হওয়ার পর নির্মিত হওয়ায় কারা অধিদফতরের নিয়মানুযায়ী সার্ভে করে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৩৩০ ঘোষণা করার সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। ২০১৫ সালে কারাগারটির কারারক্ষীর সংখা ৩৫ জন থেকে ৫১ জনে উন্নীত করা হয়।

তারপরও বর্তমানে জনবল সংকটে রয়েছে কারাগারটি। কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে মোট ৮০ পদের বিপরীতে জনবল রয়েছে মোট ৬৫ জনের।
ডেপুটি জেলারের ২ টি পদের বিপরিতে কর্মরত রয়েছেন একজন। সিভিল সার্জনের নির্দেশে কারাগারে একজন চিকিৎসক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত আছেন, তবে নাই কোন ডিপ্লোমা নার্স। ফারমাসিস্টের একটি পদ থাকলেও সেটি খালি।

জেল সুপার মনির আহমেদ চিকিৎসা জনিত কারনে ছুটিতে দেশের বাইরে থাকাতে, মেহেরপুর জেলা কারাগারের জেলার মোঃ আমান উল্লাহ বলেন,’ লোকবল সংকট জনিত কিছুটা সমস্যা থাকলেও বর্তমান জনবল নিয়েই কারাগারের সকল কর্মকাণ্ড সুচারুরূপে চালিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বন্দিদের খাবারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া আছে।

শীত নিবারণের জন্যও রয়েছে পর্যাপ্ত কম্বলও। কিছু আপডেটেড সিকিউরিট ইকুইপমেন্ট সহ শুন্য পদে জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।এছারাও সুচারু ভাবে জেলা কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩০ টি সিসি টিভি ক্যামেরা প্রয়োজন,এখানে কিছুটা ঘাটতি আছে।‘




শিক্ষা ও অর্থনীতিতে হরতাল-অবরোধের প্রভাব

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ধর্মঘট এবং অবরোধের কারণে নানান সমস্যা দেখা যায়। এসব সমস্যা সাধারণ জনগণের উপর উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলছে। প্রায়ই রাজনৈতিক বিরোধ, অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক উত্তেজনার ফলাফল সূদূঢ়প্রসারী হয়।

নাগরিকদের মঙ্গলের জন্য এসব দাবি করা হলেও কৌশলগত দুর্বলতার কারণে মারাত্মক প্রভাব ফেলে জনজীবনে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ধর্মঘট ও অবরোধ পরিবহন ব্যবস্থাকে অচল করে দেয়। যার প্রভাব পরে অর্থনীতিতে।

এমন কি যারা সকালে কর্মস্থলে যাচ্ছে, তারা যে দলই করুক না কেন, হরতালের কারণে সংকটের মুখে পড়ে। সাধারণ জনগণের যাতায়াতের ক্ষেত্রে মারাত্মক অসুবিধা দেখা যায়। রাস্তা অবরুদ্ধ হলে নগরজীবনে নানান ভোগান্তি দেখা যায়। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বন্ধ হয়ে গেলে অসংখ্য মানুষের কাজে সমস্যা হয়। এই সমস্যা যেমন মানবিক, তেমনি আর্থিক।

হাজার কোটি টাকার ক্ষতি
হরতাল অবরোধের কারণে সাধারণ কলকারখানা বন্ধ রাখেন মালিকেরা। এতে কত শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয় তা নিয়ে গবেষণার সুযোগ আছে। ২০১৩ সালে ঢাকা চেম্বারের হিসাবে, পাইকারি বাজার, শপিং মল, শোরুম, ক্ষুদ্র্র ও ছোট দোকান প্রতিদিন ৬০০ কোটি আর বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির দাবি, হরতালে দেশের ২০ লাখ দোকানে প্রতিদিন ক্ষতি হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা। ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির হিসাবে, হরতালের দিন দিনের বেলায় সারা দেশে গড়ে কমপক্ষে সাড়ে তিন লাখ বাস-মিনিবাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকে। এ কারণে ওই সব দিন অন্তত ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এই পরিসংখ্যান ২০১৩ সালের, সেই হিসেবে ২০১৩ সালে ক্ষতির পরিমাণ আরও ৩০ গুণ বেশি ধরে নিতে পারি আমরা।

২০১৩ সালের তথ্য বলছে, এফবিসিসিআইয়ের হিসাবে, এক দিনের হরতালে দেশের জিডিপির দশমিক ১২ শতাংশ ক্ষতি হয়। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) হিসাবে, এক দিনের হরতালে এক হাজার ৫৪০ কোটি টাকার (২০ কোটি ডলার) ক্ষতি হয়। হরতালে ক্ষতির একটি হিসাব করেছে ঢাকা চেম্বারও।

সংগঠনটির হিসাবে, এক দিনের হরতালে দেশের এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। বছরে গড়ে ৪০ দিন হরতাল হয়। সে দিক থেকে হরতালে এক বছরে ক্ষতি হয় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর হরতালের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা বাংলাদেশের জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের সমান। বাংলাদেশের হরতাল নিয়ে ২০০৫ সালে প্রকাশিত জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) গবেষণায় বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর হরতালের কারণে দেশের জিডিপির ৩ থেকে ৪ শতাংশের সমান আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) তথ্য অনুসারে ২০১৫ সালের হিসেবে অবরোধ-হরতালে প্রতিদিন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হয় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।)। এক কথায় বলা যায়, ক্ষতির অংক অনেক বড়।

রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় অর্থনৈতিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ব্যাপকভাবে খেয়াল করা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে ছোট উদ্যোগ ও মাঝারি ধরণের উদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও বাধার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দৈনিক মজুরি নির্ভর শ্রমিক ও ছোট ব্যবসার মালিকদের আর্থিক ক্ষতি পরিবারগুলিকে আর্থিক কষ্টের মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হয়। বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশে বিনিয়োগ করতে দ্বিধায় থাকে। সামগ্রিকভাবে বিদেশী ও দেশীয় বিনিয়োগ হ্রাস পায়।

শিক্ষাখাতের যত সংকট
রাজনৈতিক অস্থিরতায় উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া আরেকটি খাত হচ্ছে শিক্ষা। ধর্মঘট বা বিক্ষোভের সময় স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে একাডেমিক ক্যালেন্ডার ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়াশোনা ও ফলাফল প্রভাবিত হচ্ছে।

আগামী নির্বাচন উপলক্ষ্যে ২০২৩ সালের শেষ দুটি মাস বেশ ঘটনাবহুল হবে বলা যায়। আবার নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাস কিন্তু বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার মৌসুম। আমরা দেখছি, প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব স্তরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা থাকে এ সময়ে।

প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা, এসএসসি বা পাবলিক পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা থাকে, বা এই সময়ে ভর্তির মৌসুম শুরু হয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের তিন কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থী আর কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য এই সময় বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষাবর্ষের বড় একটি সময় ক্লাস করতে না পারার ঝুঁকিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। আগেও আমরা দেখেছি হরতাল-অবরোধের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা চরম হুমকির মুখে পড়ে। হরতালের কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস মিস স্বাভাবিক। হরতালের কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ব্যাহত হয়।

২০১৪ সালে দেখা যায় ছুটি ও হরতাল-অবরোধের কারণে ২০৮ দিন ক্লাসে শিক্ষার্থীরা আসেনি। হরতাল-অবরোধ যদি সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তাহলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার বিষয়টিকে মাথায় রাখা প্রয়োজন কিন্তু।

পরিশেষে বলতে চাই, হরতাল বা অবরোধের মত রাজনৈতিক মাধ্যম সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। এই বিষয়গুলো অনেক সেনসেটিভ বিষয়।

এখন ২০২৩ সাল, ১৯৮৩ সালের বাংলাদেশ কিংবা পৃথিবী নেই। পৃথিবী সামনে এগিয়েছে, রাজনৈতিকভাবেও আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিকল্প ও আরও কার্যকর রাজনৈতিকভাবে অধিকার আদায়ের কৌশল খোঁজা প্রয়োজন সব রাজনৈতিক দলের।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।




কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে আন্না খাতুন (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে উপজেলার চর গোলাপনগর ভাঙা পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

আন্না খাতুন উপজেলার চর গোলাপনগর ভাঙা পাড়া গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়ে দামুদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আন্না খাতুনসহ সমবয়সী তিনজন আজ সকালে বাড়ির পাশে পদ্মা নদীতে গোসল করতে যায়। নদীতে নামার পর হঠাৎ সে পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ফাতেমা খাতুন (১২) এগিয়ে যায়। সেও ডুবে যেতে লাগলে তাদের সঙ্গে থাকা সাত বছর বয়সী ইতি খাতুন স্থানীয়দের ডাকাডাকি শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা নদীতে নেমে তাদের উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে চিকিৎসক আন্না খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।




জীবননগরে দুই মাদকসেবীর ৩ মাসের কারাদণ্ড

জীবননগরে দুই মাদকসেবীকে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রামমাণ আদালত। আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এই কারাদণ্ড দেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসিনা মমতাজ।

এর আগে মাদকসেবন অবস্থায় জীবননগর শাপলাকলি পাড়ার রমজান আলীর ছেলে রিফাত ও উপজেলায় কর্চাডাঙ্গার গ্রামের আখের আলীর স্ত্রী মোছা. ফিরোজাকে গ্রেপ্তার করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মাদকসেবন অবস্থায় রিফাত ও মোছা. ফিরোজাকে আটক করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।

এসময় তাঁদের কাছ থেকে ৩শ গ্রাম গাঁজা ও ৩০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। পরে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসিনা মমতাজকে খবর দেওয়া হলে তিনি ঘটনাস্থলে যান।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুজনকে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন তিনি। এসময় জব্দ মাদক জনসম্মুখে ধ্বংস করা হয়। আর দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।