মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রশিক্ষণ দিয়েছে পাবলিক পোস্ট

ব্যবহারকারীদের আরও ভালো ও রেসপন্সিভ অভিজ্ঞতা দিতেই মেটা চালু করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট। তারা জানিয়েছে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পাবলিক পোস্ট ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যেসব পোস্ট প্রাইভেট করা ছিল সেগুলো তারা ব্যবহার করেননি বলে আশ্বস্থ করেছেন।

এমনকি এই ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষেত্রে মেসেজিং-এর ক্ষেত্রেও কোনো তথ্য নেওয়া হয়নি। পাবলিক পোস্ট থেকে গোপনীয় তথ্য ফিল্টার করার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মেটার বৈশ্বিক সম্পর্ক বিভাগের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ জানান, ‘যেসব ডাটাসেটে ব্যক্তিগত তথ্য বেশি রয়েছে আমরা সেগুলো বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’ নতুন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টকে প্রশিক্ষণদানে ব্যবহৃত তথ্যের অধিকাংশই প্রকাশ্যে ছিল বলেও জানান তিনি। উদাহরণস্বরূপ তিনি লিংকডইনের কথা জানান। সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য বেশি থাকায় প্রশিক্ষণের জন্য প্লাটফর্মটিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।’

মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বাদেও ওপেনএআই, গুগল বার্ডসহ একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ট্রেনিং করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের ডাটা ব্যবহার নিয়ে অনেক সমালোচনা ইতোমধ্যে হয়েছে। অনুমতি ছাড়াই ইন্টারনেট আর্কাইভ থেকে তথ্য ব্যবহার করাটা মোটেও ঠিক নয় বলে অনেক বিশ্লেষকের মতামত।

এআই মডেলের প্রশিক্ষণে যেসব তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে সেখান থেকে ব্যক্তিগত ও কপিরাইট উপাদান সরানোর বিষয়ে কাজ করছে কোম্পানিগুলো। এরই মধ্যে অনেকে কপিরাইট বা লেখকস্বত্ব ইস্যুতে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করে দিয়েছেন এবং এ নিয়ে বিতর্কও বেড়ে চলেছে। মেটা বার্ষিক পণ্য প্রদর্শনী বা সম্মেলন কানেক্টে সিইও মার্ক জাকারবার্গ নতুন টুল উন্মোচন করেছেন। বলা বাহুল্য, এটিই ছিল ভোক্তার জন্য কোম্পানিটির প্রথম এআইনির্ভর টুল। এ বছরের আয়োজনেও আলোচনার মূলে ছিল এআই। আগের সম্মেলনগুলোতেও অগমেন্টেড ও ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ভুল পোস্টে রিপোর্টের সুযোগ নেই এক্সেভুল পোস্টে রিপোর্টের সুযোগ নেই এক্সে
জুলাইয়ে ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য এললামা ২ লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল উন্মোচন করে মেটা। বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর নির্ভর করেই নতুন কাস্টম মডেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট তৈরি করেছে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, টেক্সটের ভিত্তিতে ছবি তৈরিতে সক্ষম ইমু মডেলও ব্যবহার করা হয়েছে।

মাইক্রোসফট বিং সার্চ ইঞ্জিনের সহায়তায় নতুন টুলটি টেক্সট, অডিও ও ছবি তৈরি করতে এবং রিয়াল টাইম বা তাৎক্ষণিক যেকোনো তথ্যে প্রবেশ করতে পারবে। ক্লেগ জানান, প্রশিক্ষণের জন্য ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পোস্টের ছবি ও ভিডিও দুই ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি জানান, মেটার নতুন এআই টুল কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে পারবে সে বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মেটা। এর মধ্যে পাবলিক ফিগার বা পরিচিত ব্যক্তির অনুরূপ ছবি তৈরির বিষয় রয়েছে। কপিরাইটেড উপাদানের বিষয়ে ক্লেগ আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘কমেন্ট্রি বা ব্যাখ্যা, গবেষণাসহ কয়েকটি বিষয়ে সংরক্ষিত বিষয়ের তথ্য ব্যবহারের নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।

সূত্র: ইত্তেফাক




দামুড়হুদায় কন্যা হত্যার আসামি পিতা আটক

দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঘাডাঙ্গা গ্রামে কন্যা হত্যার পাষণ্ড পিতা আজিজুল হক ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির হাতে আটক হয়েছে ।

আজ সোমবার কার্পাসডাঙ্গার চাকুলিয়া সীমান্ত থেকে সকাল ৮টার সময় ৮৭এর ৩ আর থেকে বিজিবির ল্যান্স নায়েক মোঃ শাহিন আলমের নেতৃত্বে আটক করে বিজিবি সদস্যরা। পরে কার্পাসডাঙ্গা ফাঁড়ি পুলিশের কাছে হস্থানন্তর করে ঠাকুরপুর বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার কাজি আজাদ।

উল্লেখ্য দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় ঘুমন্ত মেয়ে মর্জিনা খাতুনকে কুপিয়ে হত্যা করে বাবা আজিজুল হক। শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঘাডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বোনের ছেলে হোসেইন বলেন, সন্ধ্যায় সমিতি থেকে নেয়া ঋণের কিস্তির টাকা দেওয়া নিয়ে বাবা আজিবার মণ্ডলের সঙ্গে মর্জিনা খাতুনের বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে রাত দেড়টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন আজিজুল হক। একপর্যায়ে বাড়ির একটি গর্তে ফেলে রাখেন। এ সময় মর্জিনার চিৎকারে তার মেয়ে রোকসানা ছুটে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন আজিজুল। পরে দুজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে মর্জিনাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, মর্জিনা খাতুনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। রোকসানার দুই হাত জখম হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) ইমরান। তিনি বলেন, ঘটনার পরেই পালিয়েছেন অভিযুক্ত আজিজুল হক। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।




অক্টোবর নিয়ে ভয় তৈরি করছে বিএনপি

অক্টোবরে বিএনপি কী করবে বা কী করতে পারবে—এখন এই প্রশ্নেই আলোচনা ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের পরিণতি দেখতে চায় তারা। এমন চিন্তা থেকে যুগপৎ আন্দোলনকে অক্টোবরের মধ্যেই চূড়ান্ত ধাপে নিতে কৌশল ঠিক করছে দলটি। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ইতোমধ্যে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে সারা দেশে দলের নেতা–কর্মীদের।

কী হবে অক্টোবরে সে নিয়ে শঙ্কায় আছে মানুষ। সরকার এবার বিনা চ্যালেঞ্জে একতরফা নির্বাচনের দিকে যাতে এগোতে না পারে, সে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা সম্ভব হবে বলে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বড় অংশ মনে করছে। সাধারণ মানুষ ভাবছে এই যদি হয় পরিকল্পনা, তাহলে আবার সন্ত্রাস শুরু হতে পারে। বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের কথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। কীভাবে সাধারণ জনগণকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল, সবাই মনে রেখেছে। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্র জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যখন বিচার শুরু হয় তখনই এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি শুরু হয়। সে সময় ৪১৯টি ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয় ৪৯২ জন, আহত হয় আড়াই হাজারের কাছাকাছি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি জোটের ভয়াবহ সন্ত্রাসের কথা কেউ ভোলেনি। তখন শত শতযানবাহন পুড়িয়ে দেয়া হয়। পেট্রোল বোমার আঘাতে দগ্ধ মানুষের আহাজারিতে ভরে যায় ঢাকার আকাশ বাতাস। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি লাখ লাখ গাছও। নির্বাচনের দিন প্রিসাইডিং অফিসারসহ হত্যা করা হয় ২৬ জন নিরীহ মানুষকে। সারাদেশে ৫৮২টি ভোটকেন্দ্রে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

এসব বাধা অতিক্রম করে সেদিন জনগণ গণতন্ত্রকে বিজয়ী করেছিল। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সরকারের এক বছর পূর্তির দিনও বিএনপি জামায়াত চক্র আবার জ্বালাও-পোড়াও করে বাস, ট্রেন, লঞ্চ, সরকারি স্থাপনাগুলোতে পেট্রোল বোমা মেরে সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। ওই সময় ২৩১ জনকে হত্যা করা হয়। প্রায় ১২শ লোক মারাত্মকভাবে আহত হয়। ২ হাজার ৯০৩টি বাস-ট্রাক, ১৮টি ট্রেন, আটটি যাত্রীবাহী লঞ্চ, সাতটি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি অফিসে আগুন দেয়।

জনগণের শঙ্কা সেই দিন আবারও ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনায় মত্ত এই দলটি। বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল হক বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের পথে এসেছে। আমরা গত দুই বছরে পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেখেছি। কোনো একটা রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে এই ধারাবাহিকতা নষ্ট হোক তা আমরা চাই না।

উন্নয়নকর্মী রেজাউল করীম মনে করেন এখন জনগণ কোনো জ্বালাও পোড়াও সহ্য করবে না। তিনি বলেন, ‘কোভিডের পরে আমরা সবাই নানা সংকটে আছি। অর্থের যোগান নানা ভাবে কমেছে। এসবের মধ্যে সরকার সিদ্ধহস্তে সব সামলে নিতে চেষ্টা করছে। এখন কোনো ধরনের আভ্যন্তরীণ সংকট ঘটলে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। বিএনপি অক্টোবরে আন্দোলনের ভয় দেখানোর কারণে অমাদের নানা সামাজিক কর্মসূচি আমরা স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছি। তবে আগের মতো জ্বালাও পোড়াও করে জনগণের সমর্থন আদায় করতে পারবে না এটা দলটিকে মেনে নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, ঢাকায় বড় জমায়েতের মহাসমাবেশ করার পরদিনই গত ২৯ জুলাই রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা–কর্মীদের জমায়েত সেভাবে ছিল না। সেই পরিস্থিতি ছিল তাঁদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। এরপর আগস্টে আবার দুই দফায় গণমিছিল–পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে এক দফার যুগপৎ আন্দোলনে ফিরেছে বিএনপি। এখন দলটি অক্টোবর মাসের মধ্যে তাদের আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিতে চাইছে।




ল্যানসেট কেন সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো?

যখনই কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে আসেন তখনই কোন এক অজানা প্রান্ত থেকে আসে বিপত্তি। প্রশ্ন ওঠে – ওই পদে ব্যক্তির যোগ্যতা নিয়ে। এটিই এখন একটি সচরাচর চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়া বর্তমানে একটি অন্যতম অবস্থানে আছে। আর নারী নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় সবচেয়ে বেশি এই অঞ্চলেই। তেমনি একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন- বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সৃষ্টিশীল নারী নেতৃত্বের ১০০ জনের তালিকায় স্থান নেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে বাংলাদেশের মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে সায়মা ওয়াজেদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। তবে তাদের প্রশ্নের যৌক্তিকতা নিয়েও আছে প্রশ্ন।

চিকিৎসা সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তালহা বারকি নামে একজন বিশ্লেষক ও গবেষক। তার প্রতিবেদনে তিনি শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সায়মা ওয়াজেদের একটি যোগসুত্র স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কন্যার রাজনীতির শীর্ষ নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা দেখছেন না বলেও বেশ কয়েকবার জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনার রেফারেন্সে তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বারকি ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা একজন’ এর বরাত দিয়ে উল্লেখ করেন, সায়মা ওয়াজেদ বৈশ্বিক সম্মেলনে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদের জন্য, যদিও এমন কিছুই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে দেখা যায়নি।

অপর একজন আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপকের বরাত দিয়ে বলেছেন, প্রাথমিক দক্ষতা হিসেবে স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞানকে প্রাধান্য দেওয়া বোকামি।

মুলত ওই প্রতিবেদনে সায়মা ওয়াজেদ সম্পর্কে আংশিক এবং ভুল তথ্য তুলে ধরে তার মনোনয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আর সেই প্রতিবেদনেক রেফারেন্স হিসেবে ধরে কয়েকটি গণমাধ্যমও একই প্রশ্ন তুলেছে। যদিও ল্যানসেটে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে আগেও বিতর্ক আছে। ল্যানসেটের পক্ষ থেকে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে ভুল ইমেইলে যোগাযোগ করা হলেও ফিনানশিয়াল টাইমস যোগাযোগ করতে পেরেছে। জবাবে সায়মা ওয়াজেদ জানান, “স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আপত্তিকর”। আরও বলেন, তিনি জানেন না তাঁর মা রাজনীতিবিদ বলে নাকি তিনি একজন মুসলিম নারী বলে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলা হয়।

ঘটনাটি খুব বেশি দিন আগের নয়, ২০২০ সালের। হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে- ল্যানসেটে প্রকাশিত এমন একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছিল। এটির ভিত্তিতে এ ওষুধ করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার না করার পরামর্শ দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যার ফলে বেশ কয়েকটি ট্রায়ালও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু দিন পরেই গবেষণাটিতে ব্যবহৃত তথ্য-উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গবেষণা প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করে নেন তিন গবেষক। যার ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও মত বদলাতে বাধ্য হয়।

বিভিন্ন সময়ে ল্যানসেটে করোনার বিরুদ্ধে কাজ করা ভ্যাকসিন নিয়েও নানা মত প্রকাশ করেছে। ভ্যাকসিনের বুস্টার শটের পক্ষে বিপক্ষে নানা মত ছাপানো হয়েছে এই সাময়িকীতে। অর্থাৎ দ্বিধাদন্দের মধ্যে থাকা প্রতিবেদনও ল্যানসেট ছাপিয়ে থাকে।

দ্য ল্যানসেট একটি সাপ্তাহিক পিয়ার-রিভিউড মেডিকাল জার্নাল যার প্রকাশনা সংস্থার নাম ‘এলসেভিয়ার’। এলসেভিয়ার একটি ডাচ একাডেমিক প্রকাশনা সংস্থা যা সম্প্রতি নিন্দিত হয়েছে তার একটি জার্নালের সম্পূর্ণ সম্পাদকীয় বোর্ডের পদত্যাগের জন্য। ৪০ জনেরও বেশি স্বনামধন্য বিজ্ঞানী প্রকাশনা ক্ষেত্রে ‘জায়ান্ট’ এলসেভিয়ারের ‘লোভ’ এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কিংস কলেজ লন্ডন এবং কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসররা। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেন স্টিমুলেশনের প্রধান এবং পদত্যাগকারী দলের একজন প্রফেসর ক্রিস চেম্বারস বলেন, “এলসিভিয়ারের লোভের শিকার একাডেমিক কমিউনিটি। এই প্রকাশনা সংস্থার বিজ্ঞানে অবদান সামান্য, অথচ লাভের দাবি বিশাল।” তিনি বলেন, “এরা শুধু টাকাটাই চেনে”। তিনি বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের এলসেভিয়ারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে থাকার জন্য যা যা যোগ্যতা প্রয়োজন তার মধ্যে আছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে ধারণ করা ও তার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকা, নেতৃত্বদান ও পরিচালনা করার দক্ষতা, পেশাদার ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা এবং শারীরিক সুস্থতা।
সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিকাল মনস্তত্ত্বে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। তিনি ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেন। লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্কুল মনোবিজ্ঞানী হিসেবে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অরেঞ্জ কাউন্টি ও ডুভাল কাউন্টির পাবলিক স্কুল সিস্টেমে কাজ করছেন।

ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তাঁর গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্সের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বর্তমানে তিনি ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সাংগঠনিক নেতৃত্ব’ বিষয়ে পিএইচডি করছেন।

সায়মা ওয়াজেদের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছে তিনটি আন্তর্জাতিক রেজোলিউশনের খসড়া তৈরি করা, যা পরবর্তীতে জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলো দ্বারা গৃহীত হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অভিজ্ঞ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। ২০২৩ সালের আগস্টে তিনি চাথাম হাউজের গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রামে একজন সহযোগী ফেলো হিসেবে নিযুক্ত হন, যেখানে তিনি ২০২২ সাল থেকে ইউনিভার্সাল হেলথ কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

এর আগে তিনি ২০২০ সাল থেকে তিনি ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম এর ‘থিম্যাটিক এম্বাসেডর ফর ভালনারেবিলিটি’ হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসইএআরও এর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫ এর মুখ্য উপদেষ্টা। ২০১২ সাল থেকে তিনি অটিজম ও স্নায়ুবিকাশজনিত উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভিজিটিং স্পেশালিস্ট এবং ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করছেন।

সায়মা ওয়াজেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন, রুয়ান্ডায় কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সভা, জাপানে নারীদের বিশ্ব সমাবেশ, স্কটল্যান্ড ও মিশরে কপ ২৬ এবং ২৭, শ্রীলংকায় জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠক, ক্যাম্বোডিয়ায় গ্লোবাল চাইল্ড নিউট্রিশন ফোরাম, ভারতে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, পর্তুগালে ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইকিয়াট্রি সহ বিভিন্ন উচ্চ-স্তরের সম্মেলন ও ইভেন্টে বক্তৃতা করার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

তাঁর কর্মময় জীবনে তিনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, তার মধ্যে আছে ডব্লিউএইচও এসইএআরও এর ‘সাইটেশন ফর এক্সেলেন্স ইন পাবলিক হেলথ’, ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রে শেমা কোলাইনু কর্তৃক আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে একজন উদ্ভাবনী নারী নেত্রী হিসেবে তালিকাভুক্ত।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সৃষ্টিশীল নারী নেতৃত্বের ১০০ জনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ হিসেবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।




চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় গণ সমাবেশে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গায় বিশাল গণ সমাবেশ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বিকাল চারটায় চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলা চত্বরে এই গণ সমাবেশ করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় বিশেষ দোয়া এবং জামায়াত -বিএনপির নৈরাজ্য ও নির্বাচনের বানচালের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দিতে এই বিশাল গণ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এসময় গণসমাবেশটি সভাপতিত্ব করেন ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাওসার হোসেন বাবলু।

সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোওয়াত ও গীতা থেকে পাঠ করে সমাবেশটি শুরু হয়।

এরপর গণ সমাবেশের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, আজকের জনসমাবেশের মধ্যে দিয়ে বিএনপি জামায়াত যে আগামী নির্বাচনের চক্রান্ত বানচাল করতে হবে। এটাই আমাদের অঙ্গিকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত আবার শক্তিশালও করবো। তাই সবাইকে নৌকায় আবার ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাই সকলকে প্রস্তত করতে হবে। বিএনপি জামায়াতকে প্রতিহত করতে হবে। সবাই সবার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে রাজপথে। বিএনপি এ দেশের মানুষের জন্য উন্নয়ন করতে পারবে না। আমরা কেউ ঘরে বসে থাকবো না। কঠোর তৎপর ও শক্তি দিয়ে বিএনপির নৈরাজ্যকে দমন করবো। নৌকা প্রতিককে শ্রদ্ধা করতে হবে। নৌকা যার আমি তার। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে ভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। এই উন্নয়ন ধারা করে যাবেন তিনি। এই জন্য সবাইকে ঐক্যবোধ্য হয়ে ভোট দিতে হবে নৌকা মার্কায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা স্মার্ট করতে হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন ইউরোপীয় ও আমেরিকার যে প্রতিনিধি দল দেশ এসেছে, তারা সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরাও সুষ্ঠু-অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। বিএনপি বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এবং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। তারা যাদেরকে নালিশ করে ডেকে নিয়ে এসেছে তারাও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের কথাই বলেছে। তাদের কেউ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে নাই। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও কথা বলেনি

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে সংবিধান মানতে হবে। আমাদেরও সাফ কথা, সংবিধানের বাইরে আমরা এক চুলও নড়ব না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগ মাঠে ঘাটে থাকা দল। রাজপথে নৈরাজ্য করলে এবার থেকে আর প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ করা হবে।

এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কালিদাস পুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনউদ্দীন পারভেজ, পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, চিৎলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা কৃষকলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন টাইগার, ডাউকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম দিপু, প্রমুখ।

গণসমাবেশের শেষ পর্বে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত আলমডাঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ইমরানের পরিবারের মাঝে এক লাখ টাকা তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। এ সময় তিনি কর্মীদের মুল্যায়ন করার জন্য সকল নেতাদের আহবান জানান।




শিশু হত্যা করছে বিএনপি, রক্ষা করছেন শেখ হাসিনা

চট্টগ্রাসের মিরসরাইয়ের আজমপুর বাজারে তাণ্ডব করছিল বিএনপি কর্মীরা। এরই ছবি তুলছিল জাহেদ। আজকাল সবাই যেমন তোলে। রুমনের মামা ইউনুস নূরী জানান, তখন ছবি তোলার অপরাধে বিএনপি নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে রুমনকে। সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। একসময় তাঁরা তাকে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে বিএনপির এক কর্মী। এতে সে পাশের পুকুরে পড়ে যায়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক খন্দকার নোমান সায়েরী্ও জানান, মাথায় আঘাতজনিত কারণে রুমনের মৃত্যু হয়েছে।

এই মৃত্যু নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। রুমন কোন দলের কর্মী। আদৌ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কী না। আরও নিশ্চই হবে। কিন্তু তাতে এখন মৃত রুমনের কিছু যায় আসে না। যায় আসে তার পরিবারের। বাবাহীন এই কিশোর মা নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখছিলেন ছেলেটি বড় হবে, তাঁর দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু সেই স্বপ আজ অতীত। যেরকম ভাবে ২০১৩-১৪ সালে অতীত হয়েছিল আরও বহু পরিবারের স্বপ্ন ।

আমরা যদি একটু পেছনে তাকাই তাহলে দেখবো, সন্ত্রাস করে এরকম রুমনের মত শিশু কিশোরদের ভবিষ্যত নষ্ট করা গল্প বিএনপির ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। পেট্রোল বোমা ও ককটেল ছোড়ার যে অপরাজনীতি তা বিগত কয়েকটি নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছি। তাদের উদ্দেশ্য যেভাবে হোক ক্ষমতা দখল করতে হবে। সেনাছাউনি থেকে উঠে আসা একটি দল। তাদের কাছ থেকে দেশের মানুষ এর চেয়ে বেশি আর কি বা আশা করতে পারে। আমরা বিএনপির রাজনীতিতে শিশু হত্যার যে নারকীয় ইতিহাস সেখানে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারি।

২০০২ সালের ৯ মে রামপুরায় বাবার কোলে থাকা ২০ মাসের শিশু নওশিন ছিনতাইকারীদের গুলিতে নিহত হবার পর শোকার্ত পরিবারের প্রতি চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছিলেন, “আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে”। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি বিএনপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বোঝা যায়, শিশু-কিশোরদের প্রতি তাদের অমানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন করায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমোতাহা গ্রামের মোর্শেদ আলীর চার মাসের বাচ্চাকে মায়ের কোল থেকে ফেলে দিয়ে থেঁতলে হত্যা করেছিল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। চার মাসের বাচ্চাকে হত্যা করার পরেও তারা মোর্শদের স্ত্রীকে সারা রাত ধর্ষণ করে।

২০০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পোয়ালগুরা দড়িপাড়া গ্রামের এতিম কিশোরীকে ধর্ষণ করে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা। রাজশাহীর বাগমারায় ২০০২ সালের ২১ মার্চ ৭ বছরের এক শিশুকে তুলে নিয়ে যায় সরকার সমর্থক পাঁচ সন্ত্রাসী। গণধর্ষণ করা হয় ৭ বছরের ওই শিশুকে। একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি স্কুল ছাত্র শিহাবকে অপহরণ করা হয়। তার বাবার কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা দেয়ার আগেই শিহাবকে ১২ টুকরো করে হত্যা করা হয়।

২০০১-২০০৬ সালের বিএনপির শাসনামলে সংবাদপত্রের তথ্যানুযায়ী, শিশু-কিশোরদের ককটেল বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। ২০১৩ সালের তাদের অগ্নি-সন্ত্রাসের বড়ো হাতিয়ার ছিল এসব শিশু-কিশোররা । তাদের টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করানো হতো। ২০১৩-১৫ সাল অব্দি চলমান আগুন সন্ত্রাসে গ্রেফতার অনেকেই ছিল কিশোর। তারা পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেছে যে, টাকার বিনিময়ে বিএনপির নির্দেশে এবং তাদের সরবরাহকরা পেট্রোল বোমা দিয়ে তারা এ সন্ত্রাস করেছে।

এই শিশু-কিশোরদ সুরক্ষা দিতে কাজ শুরু করে বর্মান সরকার। শিশুদের সুরক্ষার জন্য প্রথমেই জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ প্রণয়ন করে। বাংলাদেশে শিশু অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আইনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ নীতিতে শিশু বলতে ১৮ বছরের কম বয়সী এবং কিশোর বলতে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের ধরা হয়।

সরকার কাজ করছে শিশুর নিরাপদ জন্ম ও সার্বিক বিকাশ নিশ্চিতকরণ, শিশুর দারিদ্র বিমোচন, শিশু স্বাস্থ্য, শিশুর বিকাশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, শিশু শিক্ষা, শিশুর বিনোদন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শিশুর সুরক্ষা, প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য বিশেষ কার্যক্রম, অটিস্টিক শিশুর জন্য বিশেষ কার্যক্রম, শিশুর জন্ম নিবন্ধন, অনগ্রসর ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ কার্যক্রম, দুর্যোগের সময় ও দুর্যোগের পরে শিশুর সুরক্ষা, শিশুর অংশগ্রহণ ও শিশু মতামত গ্রহণসহ শিশু অধিকার বাস্তবায়ন নিয়ে।

কন্যা শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার । ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস হিসেবে পালন করছে সরকার। এবছরও ‘বিনিয়োগে অগ্রাধিকার, কন্যাশিশুর অধিকার’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী উদযাপিত হয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩। কন্যাশিশুদের শিক্ষার জন্য অবৈতনিক শিক্ষার প্রচলন করে শেখ হাসিনা সরকার। মেয়েদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের দুটি মূল উপাদান-হিসেবে চিহ্নিত করে নারী শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়েছে এবং নারী শিক্ষার ক্রমবর্ধমান হারের ফলে বাল্যবিবাহের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলেই এদেশে প্রথমবারের মত জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করা হয়, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল, যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত ও অবহেলিত এদেশের বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়ন করা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে জেন্ডার সম্পৃক্ত বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৭ শত ৮৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং জিডিপি’র ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। বাজেটে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও ১৭টি বিভাগের জন্য পৃথক জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়। যা নারী ও কন্যাশিশুদের সার্বিক অধিকার রক্ষায় ব্যবহৃত হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রণীত উপবৃত্তি কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ২৫ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন উপবৃত্তি এবং বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। উপবৃত্তির অর্থ সরাসরি তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মা অথবা বৈধ অভিভাবকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭৪,৮২,৩১,৭০০ টাকা সরকার উপবৃত্তি দিয়েছে। নারী শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ আওয়ামী লীগের আমলেই গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় এখন শিক্ষক পদের ৬০ শতাংশ নারীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সরকারি চাকরিতে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রয়েছে।

কন্যা শিশুর অগ্রাধিকারমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধিত) আইন-২০২০ এবং যুগোপযোগী বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে বিদ্যালয়ে ছাত্রী ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাল্যবিবাহ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনেও আমাদের মেয়েরা ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে।

ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক মধ্যাহ্নভোজে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের নারী ও বালিকাদের ‘পরিবর্তনের কারিগর’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এসডিজির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি গ্লোবাল সাউথ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নারীবান্ধব শিক্ষানীতির কারণে দেশে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের তালিকাভুক্তি বেড়েছে ৯৯ শতাংশ। মেয়ে-ছেলে স্কুলে তালিকাভুক্তির অনুপাত ৫৩:৪৭-এ উন্নীত হয়েছে।

আয়ামী লীগ সরকারের শাসনামল মূল্যায়ন করে আজ একথা অন্তত বলা যায় যে তারা ক্ষমতায় থাকুক কিংবা না থাকুক তাদের কাছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে। কারণ আজ পর্ন্ত এই সরকারের বিরুদ্ধে শিশু কিশোর বিরোধী কোন পদক্ষপের তথ্য তাদের বিরোধী পক্ষের কাছেও নেই।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




কানাডায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন

ছাত্রলীগ কানাডা শাখার উদ্যোগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। কানাডার স্থানীয় সময় ২৮ সেপ্টেম্বর টরন্টোর ডেনফোর্থের রেড হর্ট তন্দুরি হোটেলে এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবনের জন্য দোয়া এবং কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়।

এতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কানাডা শাখার সভাপতি ওবায়দুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহ সভাপতি তাওহীদ খান আশিক, মো. সাকিব, ফয়সাল কবির নাহিদ, সাঈদ রেজাউল ইসলাম রাহুল, মো. রাইহান সরিফ, নেসার মাহমুদ হৃদয়, তৌহিদুর রহমান দুর্জয়, ফাহিম হোসেন, ইশতিয়াক আহমেদ, সোহাগ হোসেন, শেখ তামিম, জিহাদ ও ফাহাদ।

এসময় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কানাডার যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম তারেক, সদস্য সিদ্ধার্থ শাহা ও তাজুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।




যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলো ‘দাসপ্রথার বর্তমান রূপ’: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

খুব বেশি না, এক তথ্যে তোলপাড় হয়ে গেছে বিশ্ব। সন্তান প্রসবের সময়ও বন্দি কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে। আর পুরুষদের অমানবিকভাবে শ্রমে বাধ্য করা হয়। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্লোগান দিয়ে বেড়ানো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারের এই চিত্র উঠে এসেছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। রয়টার্সে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন প্রশ্ন জাগায়- যে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, সেই দেশ অন্য দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় চোখ রাঙায়?

প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কারাবন্দিদের পরিস্থিতিকে ‘মানুষের মর্যাদার প্রতি সুস্পষ্ট অবমাননা’ হিসেবে বর্ণনা করে ‘পদ্ধতিগত বর্ণবাদী’ বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের আহ্বান জানান মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। এপ্রিল ও মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি শহরের ১৩৩ জন ব্যক্তির সাক্ষ্য এবং পাঁচটি ডিটেনশন সেন্টার পরিদর্শন করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারাগারগুলোতে বন্দি কৃষ্ণাঙ্গদের মানবেতর অবস্থায় দিনযাপন করতে হয়। সন্তান প্রসবের সময়ও বন্দি নারীদের শিকলে বেঁধে রাখা হয়। এ কারণে ভূমিষ্ঠ শিশুরা অনেক সময়ই মারা যায়। কেবল কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারের অবস্থা নিয়ে গত কয়েক দশক ধরেই উদ্বেগ ছিল। যেসব কারাগারের রেকর্ড খারাপ, সেগুলো সংস্কার বা বন্ধ করে দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিল মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

জাতিসংঘ নিযুক্ত তিনজন বিশেষজ্ঞের তৈরি করা এই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কারা কর্তৃপক্ষের জন্য ৩০টি সুপারিশও করা হয়েছে। সে সঙ্গে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কারাবন্দিদের ক্ষতিপূরণের দেওয়ার জন্য একটি নতুন কমিশন গঠনের আহ্বানও রয়েছে।

চলুন দেখে আসি তারা লুইজিয়ানার এক কারাগারের বন্দিদের বিবরণ কীভাবে দিচ্ছেন। সেখানে বলা হয়েছে, হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ বন্দিকে ক্ষেতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। ঘোড়ার পিঠে বসে থাকা কোনো শ্বেতাঙ্গ তাদের নজরদারিতে রাখেন, যেমনটি দেখা যেত দেড়শ’ বছর আগে। লুইজিয়ানার ‘কুখ্যাত’ অ্যাঙ্গোলা কারাগারের এই পরিস্থিতিকে ‘দাসপ্রথার বর্তমান রূপ’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

সেখানে এখনও আছে নির্জন কারাবাস। নির্জন কারাবাসের ব্যাপক ব্যবহার নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিন বিশেষজ্ঞ। প্রতিবেদনে তারা জানান, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কয়েদিদের নির্বিচারে নির্জন কারাবাসে রাখা হচ্ছে। মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের কাছে এক কৃষ্ণাঙ্গ বন্দি বলেন, টানা ১১ বছর তাঁকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়। তিন বিশেষজ্ঞের একজন হুয়ান মেন্দেজ বলেছেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফলগুলো অতি দ্রুত বর্তমান এই অবস্থার ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকে নির্দেশ করে। আমরা বেশকিছু সুপারিশ দিয়েছি।’

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন এই প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলো বন্দিদের পাশাপাশি কর্মচারি এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।




আলমডাঙ্গায় গ্রাম্য চিকিৎসক হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন;গ্রেফতার-২

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে গ্রাম্য চিকিৎসক তৌহিদুল ইসলামকে হত্যা মামলার মূলরহস্য উদঘাটন সহ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা থানাধীন ডম্বলপুর-মাধবপুরে সংযোগ ব্রিজের উত্তর-পূর্ব পিলারের সাথে সাদা গেঞ্জি দিয়ে মুখ বাঁধা, গলায় লাল রঙের গামছা পেঁচানো, গলায় রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় কুমার নদীতে অর্ধডুবন্ত অবস্থায় লাশের সংবাদ পেয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় গ্রাম্য চিকিৎসক চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানার ডম্বলপুর গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেনর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম(৪২) কে মৃত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ।

এ সংক্রান্তে আলমডাঙ্গা থানায় ভিকটিমের স্ত্রী মোছাঃ বিউটি খাতুন বাদী হয়ে আসামী ১) মোঃ জীবন হোসেন(২২), পিতা-মোঃ সানোয়ার হোসেন, ২) মোঃ সানোয়ার হোসেন(৫০), পিতা-মৃত খেলাফত মন্ডল, সাং-মাধবপুর, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গাসহ অজ্ঞাতনামা ৬/৭জন আসামীর বিরুদ্ধে রবিবার আলমডাঙ্গা থানার মামলার নং-০৩ ধারা-৩০২/২০১/১১৪/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম)-এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আনিসুজ্জামান -এর নেতৃত্বে আসামী গ্রেফতার ও হত্যা মামলার মূলরহস্য উদঘাটনের জন্য ডিবি ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একাধিক টিম তাৎক্ষণিকভাবে মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলা রুজুর ০৩ ঘন্টার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে রবিবার দুপুর দেড়টার বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শুক্রবারের প্রথম প্রহরে এজাহারনামীয় আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করে।

আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম তৌহিদুল ইসলামের কন্যা তামান্না খাতুনের সাথে ১নং আসামী জীবনের গত দুই মাস পূর্বে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিবাহ হয়। এ সংক্রান্তে ভিকটিম আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। বিবাহের পর থেকে ভিকটিমের মেয়েকে আসামীরা বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। ভিকটিমের মেয়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আসামীর বাড়িতে বিষ পান করে। বর্ণিত বিষয়ে ভিকটিম ও আসামীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ হয়। ১নং আসামী জীবন ও ২নং আসামী সানোয়ারকে ভিকটিম ও তার পরিবার অপমান-অপদস্থ করে। অপমানের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে আসামীদ্বয়। আসামীদ্বয়ের (পিতা ও পুত্র) পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে কৌশলে মাধবপুর এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়। ডম্বলপুর-মাধবপুর সংযোগ ব্রিজের নিকট পৌঁছালে ২নং আসামী সানোয়ার গতিরোধ করে এবং ১নং আসামী পিছন থেকে গলায় গামছা ও মুখের ভিতরে সাদা গেঞ্জি ঢুকায়ে শ্বাসরোধ করে। শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের গলায় রশি দিয়ে ব্রিজের রেলিংয়ের সাথে ঝুলিয়ে দেয়। আসামীদ্বয়কে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ১নং আসামী স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।




চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের পথসভা ও গণসংযোগ

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী আফরোজা পারভীনের নেতৃত্ব চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় রবিবার দিনব্যাপী পথসভা ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পথসভা কর্মী সমাবেশ উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভীন। এ সময় আফরোজা পারভীন শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য আবারো নৌকা মার্কায় ভোট চান। গণসংযোগ কালে আওয়ামী লীগে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি লিফটেল বিতরণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভপতি পূর্ণিমা হালদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ রাতুল, সাকিব শেখ, মাহফুজ, আকাশ,কুতুব, রিপন,শাওন, সিফাত,জিরান,সেজান ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ