চুয়াডাঙ্গায় শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে জেলা যুবলীগের মিলাদ ও দোয়া

জাতীয় পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যৈষ্ঠ কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের কার্যালয়ে এই মিলাদ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার।

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের দলীয় কার্যালয়ে মোনাজাতের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সদস্য সাজেদুল ইসলাম লাভলু, হাফিজুর রহমান হাপু, আজাদ আলী, আবু বক্কর সিদ্দিক আরিফ, আলমগীর আজম খোকা।

এসময় উপস্থিত আরও ছিলেন যুবলীগ নেতা পিরু মিয়া, শেখ শাহী, হাসানুল ইসলাম পলেন,কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল ইমরান শুভ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রামীম হোসেন সৈকত, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শেখ রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য খালিদ মন্ডল ও দিপু বিশ্বাস।

আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি রানা, সাধারণ সম্পাদক খান জাহান, ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আসাদুর জ্জামান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব, শংকর চন্দ্র ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক সেলিম,সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ, পদ্মবিল্লা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির বনফুল ,সাধারণ সম্পাদক জান্টু, সহ-সভাপতি বিপ্লব হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন মেম্বার, মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ফিরোজ,জাকির, আলোকদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হীরা, মুন্না,বক্কর, আরো উপস্থিত ছিলেন, তানভীর রেজার টুটুল,লোকমান, টিপু,তানজিল,রুবেল, সঞ্জু, সুশান্ত, জুয়েল, সুমন, শ্যামল, ইমরান, মিন্টু, সাহেব, শাকিল, রকি, সিকদার, ইব্রাহিম, রজব, ইসাহাক, লিখন, তুষার, জিনারুল, জনি, রতন, বাচ্চু, লিপ্ছাটন, ছাত্রলীগ নেতা ওয়াসিম, বিপুল, আহমেদ তূর্য, সাব্বির, জিতু, শাহরুখ, মেহেদী পলাশ রসূল, মহাদেব, কবির, তুষার, চঞ্চল, পজিন, জাহিদ, নয়ন মন্ডল, অন্তর, নাঈম, সোহেল,  আলী প্রমুখ।




স্নাতক পাসে নিয়োগ দেবে মানবিক সাহায্য সংস্থা

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মানবিক সাহায্য সংস্থা (এমএসএস)। প্রতিষ্ঠানটিতে লোন অ্যান্ড সেভিংস অফিসার (এলএসও) নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

লোন অ্যান্ড সেভিংস অফিসার (এলএসও)

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

প্রার্থীকে যেকোনো বিষয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমান পাস হতে হবে। বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর। পুরুষ এবং নারী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। প্রার্থীকে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র উদ্যোগ/ মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ কার্যক্রমে মাঠকর্মী পদে নূন্যতম তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ ঋণ কার্যক্রমে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

অধিকতর দক্ষ, অভিজ্ঞ ও যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স সীমা শিথিলযোগ্য। শিক্ষানবিশকাল ছয় মাস। তবে কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষানবিশকাল হ্রাস/বৃদ্ধি হতে পারে। সংস্থার যেকোনো কর্মএলাকায় কাজ করতে আগ্রহী হতে হবে। মটর সাইকেল চালানো এবং বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কম্পিউটারে ওয়ার্ড, এক্সেল, বাংলা ও ইংরেজি টাইপিং এবং ইন্টারনেট ব্যবহার জানা বাধ্যতামূলক।

যোগদানের সময় মা/বাবা/আপন ভাই/বোন/স্বামী/স্ত্রী/নিকটতম আত্মীয় দ্বারা (দুইজন) জামিনদার হিসাবে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

চাকুরীতে যোগদানের সময় সংস্থার নিয়মানুযায়ী ১৫,০০০/- টাকা জামানত হিসাবে প্রদান করতে হবে যা নির্দিষ্ট সময়ান্তে সংস্থা ত্যাগকালে সংস্থায় প্রচলিত নিয়মানুযায়ী লভ্যাংশসহ ফেরৎ প্রদান করা হবে। আবেদনপত্রে অবশ্যই সচল মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করতে হবে।

কর্মস্থল

বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে।

বেতন

স্থায়ীকরণের পর মাসিক বেতন ২৫,০০০- ২৯,৩৩০ টাকা। অধিকতর দক্ষ, অভিজ্ঞ ও যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বেতন আলোচনা সাপেক্ষে। শিক্ষানবিশকালে মাসিক বেতন প্রার্থীর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। মোবাইল ভাতা, মোটরসাইকেল জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা ইত্যাদি মাসিক বেতনের অন্তর্ভূক্ত নয়।

কোম্পানির সুযোগ সুবিধাদি

চাকুরি স্থায়ীকরণের পর সংস্থার নিয়মানুযায়ী উৎসব ভাতা, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচ্যুইটি, কর্মী নিরাপত্তা তহবিল, মোটর সাইকেল জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা, মোবাইল ফোন ভাতা, চিকিৎসা অনুদান, মৃত্যু/দুর্ঘটনা জনিত (বীমা সুবিধার ন্যায়) আর্থিক সহায়তা ও সন্তানদের জন্য শিক্ষা বৃত্তি, বাই-সাইকেল/মোটর সাইকেল ক্রয় বাবদ সুদবিহীন ঋণ সুবিধাসহ সংস্থার বিধি মোতাবেক অন্যান্য সুবিধা প্রযোজ্য হবে।

আবেদনে প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীকে ২৫/১০/২০২৩ইং তারিখের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্তসহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয় পত্রের/ জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি, বর্তমান/ সর্বশেষ কর্মরত প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙ্গীন ছবিসহ “নির্বাহী পরিচালক, মানবিক সাহায্য সংস্থা (এমএসএস), SEL সেন্টার (৪র্থ তলা), ২৯, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫” বরাবর আবেদন করতে হবে যা সরাসরি হাতে হাতে/ ডাক/ কুরিয়ার যোগে পাঠাতে হবে। আবেদনপত্র এবং খামের উপর অবশ্যই পদের নাম উল্লেখ্য করতে হবে।

এমএসএস নিজস্ব অফিস ব্যতীত অন্যকোন মাধ্যমে (বিকাশ, রকেট ও নগদ ইত্যাদি) আর্থিক লেনদেন করেনা। নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থী থেকে কোন প্রতারক চক্র অন্যকোন মাধ্যমে টাকা দাবী করলে না দেওয়ার জন্য সংস্থা কর্তৃক অনুরোধ করা হলো। শুধুমাত্র বাছাইকৃত প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচনী পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান SMS/মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানানো হবে। চাকুরীর জন্য কোন প্রকার তদবির প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসাবে গণ্য হবে। এমএসএস কর্তৃপক্ষ এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সংশোধন/সংযোজনসহ নিয়োগ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কোন প্রকার টিএ/ডিএ প্রদান করা হবে না।

আবেদনের শেষ তারিখ

২৫ অক্টোবর ২০২৩

সূত্র : বিডিজবস।




কোটচাঁদপুরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহপরিচারিকা নারী আটক ৩

কোটচাঁদপুরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহপরিচারিকা নারী। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় পৌরসভার গাবতলা পাড়ায়। আজ বৃহস্পতিবার আটকৃতদের আদালতে পাঠিয়েছেন থানা পুলিশ।

জানা যায়,গৃহপরিচারিকা ওই নারীর কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা। সে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।গত মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে বাসে করে ঢাকা থেকে কোটচাঁদপুর আসেন।

এরপর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন গাবতলা পাড়ায় পূর্বপরিচিত এক নারীর বাসায় যান,ওই গৃহপরিচারিকা। রাতে খাবার খেয়ে ওই বাসাতেই শুয়ে ছিলেন তিনি।

পরে ওই রাতেই তাঁর পরিচিত আত্মীয় বাসস্ট্যান্ডে নিজের চায়ের দোকানে চলে যান। এ সুযোগে ওই চা দোকানির স্বামী ইসরাইল হোসেন,ঘরের তালা খুলে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর খবর দিয়ে ডেকে আনেন আরো দুই রিক্সা চালক ইসমাইল হোসেন ও আব্দুল খালেককে। পরে তারাও পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ওই নারীকে।

ওই ঘটনার পর গতকাল বুধবার ওই গৃহপরিচারিকা কোটচাঁদপুর থানায় যান। মামলা করেন, ওই তিন রিক্সা চালকের বিরুদ্ধে। এরপর পুলিশ তাদেরকে কোটচাঁদপুরের ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে আটক করেন।

আটককৃতরা হলেন, রিকশাচালক ইসরাইল হোসেন ইসমাইল হোসেন ও আব্দুল খালেক। এরা সবাই কোটচাঁদপুর পৌর শহরের বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল মামুন বলেন, ওই ঘটনায় ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। এরপর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে,তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে ওই নারীর। বৃহস্পতিবার ধর্ষণ মামলায় আটককৃতদের ঝিনাইদহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।




মারা গেলেন হ্যারি পটার অভিনেতা মাইকেল গ্যাম্বন

হ্যারি পটারের বিখ্যাত অভিনেতা স্যার মাইকেল গ্যাম্বন ৮২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি হাসপাতালে মারা গেছেন বলে তার পরিবার নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসির।

হ্যারি পটারের আটটি চলচ্চিত্রের মধ্যে ছয়টিতে প্রফেসর অ্যালবাস ডাম্বলডোরের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পান।

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মাইকেল গ্যাম্বন। তার পাঁচ দশকের কর্মজীবনে টিভি, চলচ্চিত্র, থিয়েটার এবং রেডিওতে কাজ করেছেন। চারটি বাফতা জিতেছিলেন তিনি।

তার স্ত্রী লেডি গ্যাম্বন এবং ছেলে ফার্গাস বলেছেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পরিবারের সঙ্গেই শান্তিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন গ্যাম্বন।

জে কে রাউলিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে হ্যারি পটার সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি আইটিভি সিরিজ মাইগ্রেটে ফরাসি গোয়েন্দা জুলেস মাইগ্রেটের ভূমিকায়ও অভিনয় করেছিলেন গ্যাম্বন। তিনি বিবিসিতে ডেনিস পটারের দ্য সিঙ্গিং ডিটেকটিভ-এ ফিলিপ মার্লো চরিত্রের জন্যও পরিচিত।

স্যার মাইকেল ২০০৩ সালে রিচার্ড হ্যারিসের মৃত্যুর পর জে কে রাউলিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে হিট হ্যারি পটার সিরিজে ডাম্বলডোরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

২০১০ সালে জেন অস্টেনের এমার অভিযোজনে মিস্টার উডহাউসের ভূমিকায় এবং ২০০২ সালে পাথ টু ওয়ার-এ প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তিনি এমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। এছাড়াও তিনি ডেভিড হেয়ারের নাটক স্কাইলাইটের একটি চরিত্রের জন্য ১৯৯৭ সালে টনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

‘দ্য গ্রেট গ্যাম্বন’ নামে পরিচিত এই শক্তিমান অভিনেতা সর্বশেষ ২০১২ সালে স্যামুয়েল বেকেটের নাটক অল দ্যাট ফল-এর একটি লন্ডন প্রযোজনায় মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন।

তিনি লন্ডনের রয়্যাল ন্যাশনাল থিয়েটারের মূল সদস্যদের একজন হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং শেক্সপিয়ারের বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৮ সালে বিনোদন শিল্পে অবদানের জন্য তিনি নাইট উপাধিতে ভূষিত হন।




কথা বলা যাবে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে

চ্যাটজিপিটি আর টেক্সট বেইজড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকছে না। নয় মাস আগে মুক্তি পাওয়া চ্যাটজিপিটি এখন এই খাতের সবচেয়ে সফলতম জেনারেটিভ এআই। এবার তারা চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে।

ওপেন এআই জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। চ্যাটজিপিটিকে আরও ব্যবহারযোগ্য করার জন্যই তারা নতুন এই ফিচার আনতে চলেছে। এখন যে কেউ কোনো কমান্ড দিয়ে চ্যাটজিপিটিকে বলার সুযোগ দেবে৷

চ্যাটজিপিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কয়েকজন ভয়েস অ্যাক্টরের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। পাঁচটি ভিন্ন কণ্ঠে নতুন এই টেক্সট টু স্পিচ মডেল কাজ করবে৷

শুধু তাই নয়, চ্যাটজিপিটি এখন ছবিও শনাক্ত করতে পারবে৷ কোনো ছবি আপলোড করে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানারও নতুন সুবিধা পাওয়া যাবে সামনে।

সূত্র: টেকক্রাঞ্চ




চুয়াডাঙ্গায় আবার সীমান্ত হত্যা

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপ‌জেলার ঠাকুরপুর-মু‌ন্সিপুর সীমা‌ন্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর গুলিতে রবিউল ইসলাম (৪১) নামে এক বাংলা‌দেশী নিহত হয়েছেন। ‌নিহত র‌বিউল দামুরহুদা উপ‌জেলার পীরপুরকুল্লা গ্রা‌মের মৃত ফয়জুল ইসলা‌মের ছে‌লে। এ নিয়ে ২ সপ্তাহের ব্যবধা‌নে দুইটি সীমান্ত হত্যার ঘটনা ঘটলো।

বুধবার ২৭ সে‌প্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দি‌কে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপ‌জেলার ঠাকুরপুর-মু‌ন্সিপুর সীমা‌ন্তের ৯০/৯১ পিলা‌রের মাঝামা‌ঝি স্থা‌নে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

বিজিবি’র মু‌ন্সিপুর কোম্পা‌নি কমান্ডার সু‌বেদার মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নি‌শ্চিত ক‌রে বলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দি‌কে বিএসএফের গুলিতে রবিউল‌ নিহত হন। এ বিষ‌য়ে পতাকা বৈঠ‌কের জন্য বিএসএফের কা‌ছে সকা‌লে পত্র পাঠা‌নো হয়। পত্র পে‌য়ে বিএসএফ বৃহস্প‌তিবার দুপুর একটা ২০ মি‌নি‌টের সময় ঠাকুরপুর সীমা‌ন্তে ৯১ মেইন পিলা‌রের স‌ন্নিক‌টে বি‌জি‌বি-‌বিএসএফ এক পতাকা বৈঠ‌কে মি‌লিত হয়। পতাকা বৈঠ‌কে বিএসএফ র‌বিউলের নিহতর কথা শিকার ক‌রে। মর‌দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর হাসপাতালে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। ময়নাতদন্ত শেষ হ‌লে র‌বিউলের মরদেহ ফেরত দেওয়া হ‌বে।’

এর আগে গত ১৪ সে‌প্টেম্বর রা‌তে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বেনীপুর সীমা‌ন্তে বিএসএফের গুলিতে মিজানুর রহমান (৫০) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হন।




নবজাতক ও ডেঙ্গু রোগীদের পাশে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে শিশু ও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মাঝে খাবার ও পোশাক বিতরণ করেছে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

বৃহস্পতিবার ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্যোগে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড বর্ণিল ভাবে সাজানো হয়।

অতঃপর শিশু ওয়ার্ডে নবজাতক ও চিকিৎসাধীন শিশুদের মধ্যে পোশাক এবং খাবার বিতরণ করে নেতাকর্মীরা হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে যেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ খবর নেয় ও তাদের মধ্যে ফলমূল বিতরণ করে।

এসময় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম সোবহান, সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, সহ-সভাপতি সোয়েব রহমান, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেন সহ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য রাহিনুজ্জামান পলেন উপস্থিত ছিলেন।




৪৭টি মোবাইল ও ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে মালিকের হাতে তুলে দিলো পুলিশ

মেহেরপুরে বিভিন্নভাবে হারিয়ে যাওয়া ৪৭ টি মোবাইল ফোন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে নেওয়া ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দিলো পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার সময় মেহেরপুর পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মালিকদের কাছে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন ও টাকা হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার রাফিউল আলম।

পুলিশ সুপার রাফিউল আলম বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৪৭ টি মোবাইল ফোন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া ৯ ব্যক্তির মোট ৯৭ হাজার টাকা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্বার করে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। এসব প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উদ্ধার কৃত মোবাইলগুলোর মধ্যে সদর থানার ১৬টি, গাংনী থানার ১১টি ও মুজিবনগর থানার ২০টি ফোন রয়েছে। এ ছাড়া মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর থানার আওতায় হওয়া মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণার ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদেও মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কামরুল ইসলাম, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টেগেশন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।




মমতাময়ী মা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজ্যের সব সমস্যা মাথায় নিয়েও যিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সকল প্রকার সুখ দুঃখের খবর রাখেন; তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুধু একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী নন, সে দেশের জনগণের জন্য একজন মমতাময়ী মা-ও বটে। শিশু থেকে শুরু করে বড়, প্রাপ্তবয়স্ক -বৃদ্ধ সকলকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন তিনি। কোটি কোটি মানুষকে শিখিয়েছেন আলোকিত জগতের মানে। দারিদ্র্য নিরসন থেকে শুরু করে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, গর্ভবতী ভাতা, জেলে ভাতা-র মতো অসংখ্য অনুদানের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে তাদের দূর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছেন তিনি।

‘স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। ঘরবাড়ি হারিয়ে যেসব রোহিঙ্গা এখানে এসেছেন, তারা সাময়িক আশ্রয় পাবেন। আপনারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন,সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’- কথাগুলোর মাঝেই নিরীহ রোহিঙ্গাদের জন্য তাঁর মায়া ফুটে ওঠে। ১৯৭৭ সাল থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম অত্যাচারিত ও নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। সেনাবাহিনীর জীবনঘাতি আক্রমণ থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে উত্তাল সমুদ্র পারি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় এসব রোহিঙ্গা। তাদের অনেকেই সমুদ্রের অতলে হারিয়েছেন নিজেদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, কেউ বা একেবারে নিঃস্ব হয়ে এসেছে এ দেশে৷ তাদের না ছিলো থাকার জায়গা, না ছিলো খাবার। শুধুমাত্র কাচা কলা খেয়ে বেচে থাকার মতো মুহুর্তেরও মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে। ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরিত দেশ হিসেবে না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সবসময় তাদের পাশে ছিলো। “১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে ৭ লাখ মানুষকেও খাবার দিতে পারবো”- উক্তিটির মাঝেই রোহিঙ্গাদের জন্য শেখ হাসিনার মমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো তিনি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেননি। প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তিনি অর্জন করেন “মাদার অফ হিউম্যানিটি” উপাধি।

ব্রিটিশ শাসনামলের খপ্পরে পড়ে বাংলা সব হারায়। পরিচিত হয় “দারিদ্র্য” নামক শব্দটির সাথে। স্বাভাবিক জীবনযাপন তো দূরের কথা! ভিক্ষুকের চেয়েও মানবেতর জীবন ছিলো বাঙালিদের। ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন। অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর থেকে শুরু করে নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বৃদ্ধি, ছিন্নমূল- দুঃস্থ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে নানামুখী কর্মসূচী গ্রহণ তারই স্পষ্ট প্রমাণ। এমনকি কোভিড-১৯ এর খরাও খুব দ্রুতই কাটিয়ে উঠেন তিনি। ‘খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২’ অনুযায়ী, বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ ; যেখানে ২০০০ সালের শুরুর দিকে তার পরিমাণ ছিলো ৪৮.৯ শতাংশ । জরিপটিই প্রমাণ করছে বঙ্গবন্ধু কন্যা দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে গরিব, অসহায়,দুঃস্থ মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়িয়েছেন। তিনি ২৫ বছরে মাতৃ মৃত্যুহার ৪৪৭ থেকে ১৬৩ তে আনেন। তিনি সবসময়ই গরিব, অসহায়,দুঃস্থ মানুষের কথা মাথায় রাখতেন। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১,১৩,৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন যা মোট বাজেটের ১৬.৭৫ শতাংশ এবং জিডিপির ২.৫৫ শতাংশ। এর মাঝে রয়েছে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি, বিধবা ভাতা কার্যক্রম, দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহয়তা তহবিল, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা,অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, এতিমখানার ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ট,বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচী,হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম ইত্যাদি। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর থেকে শুরু হওয়া বয়স্ক ভাতায় যেখানে প্রতি ওয়ার্ডের ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো; সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভাতাভোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭.০১ লক্ষ জন যাদের প্রত্যেকের মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা করে। বয়স হয়ে যাওয়ার পর বোঝা হিসেবে গণ্য হওয়া এসব মানুষদের পাশে দাড়িয়ে তাদেরকে সাহস যোগান শেখ হাসিনা। একইভাবে তিনি বিধবা নারীদের কষ্টও লাঘব করেন। সমাজে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের শিকার হওয়া এসব নারীদের জন্য ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে চালু হওয়া ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা’-র পরিমাণ ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় এনেছেন এবং ভাতাভোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

মাতৃত্বকালীন সময়টি প্রতিটি নারীর জীবনে এক অন্যরকম অধ্যায়। প্রায় সবসময়ই নিয়মিত একটা ডাক্তারি চেকাপের মধ্যে থাকতে হয় তাদের। পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তারা অনেকেই ডাক্তারি চেকাপ করাতে পারে না; ফলস্বরূপ অকালমৃত্যু হয় অনেক মায়ের কিংবা অনেক নবপিতা-মাতা হারায় তাদের সন্তানদের। এরই লক্ষ্যে, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রথমবারের মত মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু এত অল্প পরিমাণ ভাতায় গর্ভবতী মায়েদের তেমন কোনো উপকার হয়নি। তাই মমতাময়ী শেখ হাসিনা ২০২১-২২ অর্থবছরে পুনরায় সে ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় আনেন। এভাবে তিনি অসংখ্য গর্ভবতী নারীর ভালোবাসা জয় করে নেন। এবারে বলতে বাংলাদেশের সবচেয়ে করুণ একটি দৃশ্যের কথা! দীর্ঘ নয় মাস যাদের অক্লান্ত, নিঃস্বার্থ পরিশ্রমে আমরা আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছি, তাদেরই সমাজে কোনো সম্মান ছিলো না। অনেকে বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সন্তানেরা তাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যায় কিংবা অনেকের আবার থাকার বাসস্থান না থাকায় রাস্তায় দিনযাপন, এসব ঘটনা যেনো প্রায়ই খবরের চ্যানেলগুলোতে আমাদের নজর কাড়ে। শেখ হাসিনা তাদের পাশেও মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি ২০২১-২২ অর্থবছরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করেন। পাশাপাশি আরও কয়েকটি খাতে তাদের জন্য ভাতা নেওয়ার ব্যবস্থা রাখেন। স্বচ্ছলতা ও আলোর মুখ দেখে মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৯৭ সালেই বাংলাদেশের ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তখন গৃহায়ন ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী সংস্থা এ তহবিল হতে মাত্র ১.৫ শতাংশ সরল সুদে সর্বোচ্চ ৭ বছর মেয়াদী গৃহনির্মাণ ঋণ বিতরণ করে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তিনি ১০,০০০ টি গৃহপ্রদান করেন গৃহহীনদের মাঝে যেখানে তাঁর ঋণের পরিমাণ ১৩০ কোটি টাকা। মানবতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। শুধু গৃহপ্রদান করেই চুপ থাকেন নি তিনি, সকলের চাকরির ব্যবস্থাও করে দেন তিনি।

সমাজের উঁচু-নিচু সকল স্তরের মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর অবদানে বেদে, জেলে থেকে শুরু করে হিজড়ারা পর্যন্ত সমাজে মাথা তুলে বেচে থাকার সাহস পেয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৯.২৩ লক্ষ টাকা করা হয়। সমাজে মর্যাদা পায় বেদে জনগোষ্ঠী। নদীমাতৃক দেশে জেলেরা প্রধান কর্মজীবী মানুষ হলেও আমাদের দেশে তাদের অবস্থান সবার নিচুতে। অনেক কষ্টের জীবন তাদের। শেখ হাসিনা তাদের জন্যও নির্দিষ্ট একটি ভাতা বরাদ্দ করেন। হিজড়া শব্দটি শুনলেই আমরা কেমন নাক সিটকাই। কিন্তু তারাও তো মানুষ! শেখ হাসিনা তাদেরও নগন্য করে দেখেননি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে তাদের জন্য প্রথম ৭ টি জেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তাদের সহায়তায় ৫.৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। আলোর মুখ দেখে ৫,৭৪৫ জন হিজড়াসহ সকল হিজড়া। স্বাভাবিক মানুষের মতো তাদের অধিকারের পক্ষে অনেক আইনী লড়াইও করেছেন তিনি।

চা-শ্রমিক, পোশাক শ্রমিকদের জন্যও তিনি কাজ করে গিয়েছেন। তিনি চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেন। আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে চা শ্রমিক সমাজ শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। তিনি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্যও একইভাবে কাজ করেন। জাতীয় স্কেলে বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করেন তিনি। জানা যায়, প্রকল্পের প্রতিটি মসজিদের খতিব জাতীয় বেতন স্কেলের ৮ম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। সে হিসেবে একজন খতিবের মূল বেতন হবে ২৩ হাজার টাকা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবাসনের লক্ষ্যে তিনি ১২ তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরি করা থেকে শুরু করে কোটি টাকার ঋণ প্রকল্প হাতে নেন। তাঁর সবচেয়ে বড় মমতাময়ী অবদান প্রতিবন্ধীদের প্রতি। সমাজের সকল সুবিধাবঞ্চিত শিশু এরা। তাদের না থাকে সকলের সাথে খেলার অধিকার, না থাকে বাঁচার অধিকার। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি এ বিষয়টিকে এজেন্ডা হিসেবে নিয়েছেন। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২রা এপ্রিল অটিজম সচেতনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে প্রতিবছর পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি এদিন অটিস্টিক শিশুদের সাথে কাটান। তিনি সবসময় তাদের সকল প্রকার সৃজনশীল কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। সকল প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের জন্য ট্রাস্ট গঠন করা,বিভাগীয় পর্যায়ে তাদের বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা, বিনামূল্যে ফিজিওথেরাপি, ৬৪ জেলায় ১০৩ টি প্রতিবন্ধী সেবাকেন্দ্র স্থাপনসহ তাদের সুবিধার্থে অনেক কাজ করে গিয়েছেন শেখ হাসিনা। এমনকি শুভেচ্ছা কার্ডের ডিজাইনও বেছে নেন অটিস্টিক শিশুদের থেকেই। এ কাজের জন্য পুরো দেশ তথা বিশ্বে তিনি ও তার কন্যা সায়মা হোসেব পুতুল সকলের প্রশংসা কুড়ান।

একজন প্রশাসক হলেও সবার আগে তিনি একজন মা। নিজের ঘরেও দুইটি সন্তান রয়েছে। তাই তো তিনি প্রশাসন ও লাভ ক্ষতির কথা ভাবার পাশাপাশি দেশের অসহায় জনগণের প্রতি সমান গুরুত্বারোপ করেছেন। ঈদের সময় বিকাশের মাধ্যমে ভাতা নেওয়ার সুবিধা চালু করা থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের স্বার্থে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মমতাময়ী এ নারী। তাঁর হাত ধরেই অন্ধকার মানবেতর জীবন থেকে পা বাড়িয়ে আলোর জগৎ দেখে পুরো দেশবাসী। তাই “মাদার অফ হিউম্যানিটি” খেতাব বৃথা যায়নি বললেই চলে। এমন মমতাময়ী মা সকলের ঘরে ঘরে থাকুক।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব ও খনি বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।




শেখ হাসিনা: মৃত্যুঞ্জয়ী ধ্রুবতারার উপাখ্যান

একের পর এক আক্রমণ, গ্রেনেড হামলা। অসংখ্য বার হত্যাচেষ্টা। বিশ্বের কোন রাজনীতিবীদ এতোবার হত্যা আক্রমণের শিকার হন নি। রাজনৈতিক জীবনে ২১ বার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি হামলাতেই অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন, আহতের সংখ্যা অগণিত।

১৯৮১ থেকে ১৯৯১ সাল, এই দশ বছরে শেখ হাসিনাকে মোট তিনবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রথম সরকার গঠনের পর আরো তিনবার শেখ হাসিনার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করা হয়। এমনকি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও হত্যাচেষ্টা চলে। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও শেখ হাসিনাই মূল টার্গেট বিরোধী শক্তির।
১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের লালদীঘি দিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আক্রমণ । ১৯৮৮ সালে ২৪ই জানুয়ারি পতেঙ্গা বিমানবন্দরে নেমে একটি সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে যোগ দিতে লালদীঘিতে যাচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। পথে সসস্ত্র হামলা, নির্বিচারে গুলি, শেখ হাসিনাকে মানববর্ম তৈরি করে রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় ৯জন, নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ এ। আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। এ হত্যাকান্ডটি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম গণহত্যা নামে পরিচিতি পায়। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার ছিলো তৎকালীন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে ওই ঘটনার কিছু লাশ চট্টগ্রামের অভয়মিত্র শশ্মানে পুড়িয়ে ফেলা হয়। অথচ বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯১ সালে পদোন্নতি দিয়ে পুরষ্কৃত করা হয় ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার রায় আসে। রায়ে তৎকালীন ৫ পুলিশ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

১৯৮৯ সালের ১১ই আগস্ট রাতে কর্ণেল ফারুক রশীদ জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবীরের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল ৩২ নাম্বারের বাড়িতে অতর্কিত গুলি ,বোমা ও গ্রেনেড হামলা করে। গ্রেনেড বিস্ফোরিত না হওয়ায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এই হামলা নিয়ে ধানমন্ডি থানায় দুটি মামলা হয় । সাড়ে ৭ বছর পর ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৬ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ৫জুলাই আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর এই মামলাইয় ফ্রিডম পার্টির ১১ জনকে ২০ বছর করে কারাদন্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।তবে উচ্চদালতে এই মামলাটির মীমাংসা এখনো হয় নি।

১৯৯১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর চতুর্থ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের সময় ধানমন্ডির গ্রীণ রোডে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে বিএনপি নেতা ওয়াহীদের নেতৃত্বে ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। তার গাড়িতে গুলি লাগলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা উত্তারাঞ্চলে ট্রেনযোগে সাংগঠনিক সফরে যান। সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটের দিকে শেখ হাসিনাকে বহন করা ট্রেন রূপসা এক্সপ্রেস পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশ করছিলো । অনেকটা হঠাৎ করেই ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা হামলা চালায়। ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমাহামলা করা হয় । সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো মঞ্চে শেখ হাসিনার ভাষণকালে পুলিশ বেষ্টনীর মাঝেও বিএনপি সন্ত্রাসীরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। মূলত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার সমাবেশকে পন্ড করার জন্য একের পর এক বোমা হামলার মাধ্যমে আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিএনপি তৎকালীন পৌর মেয়রের সমর্থনপুষ্ঠ নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার জন্য তৈরি মঞ্চ্ও ভেঙ্গে দেয়। এতোসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রেস নোটে বলা হয় হামলার কোন প্রামাণ পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে এই হামলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং ২০১৯ সালের ৩ জুলাই এই মামলার রায় আসে। রায়ে নয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় ২৫ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়া ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।

১৯৯৫ সালের ৭ই মার্চ রাসেল স্কয়ার সমাবেশে ভাষণ দেয়াকালে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো হয়। সশস্ত্র এ হামলা থেকে বাঁচাতে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। ১৯৯৬ সালের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্মরণে বক্তৃতাকালে হঠাৎ করে এক মাইক্রোবাস থেকে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা হামলা করা হয় । এতে কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত এবং শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ একত্রিশ জনকে হত্যার একটি ই-মেইল ১৯৯৯ সালের ১২ জুলাই ফাঁস হয়। ইমেইলের প্রেরক ছিলেন ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক সৈয়দ চৌধুরী।

হরকাতুল জিহাদের বড় আক্রমণটি ছিল শেখ হাসিনার নিজের নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। হুজির অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দী অনুযায়ী ২০০০ সালের জুলাই মাসে হুজির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজি ও হেলিপ্যাডের কাছে ৪৩ কেজির দু’টি শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা হয়। তবে সমাবেশের আগে পুলিশ তা উদ্ধার করে ফেলে। ২০০১ সালে মুফতি হান্নানসহ আসামিদের বিরুদ্ধে সিআইডি চার্জশীট দিলেও বিএনপি আমলে এই মামলার অগ্রগতি আর হয়নি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে মামলা ঢাকার ২ নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট এই মামলার রায় আসে। এই মামলায় ১০ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। রায়ের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ, মুন্সী ইব্রাহীম, মাহমুদ আজহার, রাশেদ ড্রাইভার, শাহনেওয়াজ, মোঃ ইউসুফ, মোঃ লোকমান, শেখ এনামুল, মোঃ মিজানুর। এই মামলার অন্যতম আসামী মুফতি হান্নানের অন্য মামলায় ফাঁসি হওয়ায় তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সঙ্গে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দেয়া হয়েছে কারাদণ্ড। তবে উচ্চ আদালতে এই মামলার মীমাংসা এখনও হয়নি। ফলে এখন পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হয় নি।

২০০১ সালের ৩০ মে খুলনায় রূপসা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলো হুজি-বি। অনুষ্ঠানের তিন দিন আগেই ২৭ মে সেতুর কাছাকাছি রূপসা নদীতে দু’টি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ১৫ জঙ্গি ধরা পড়ে যাওয়ায় সেটিও আর সফল হয়নি। এই ১৫ জনের একজন মাসুম বিল্লাহ ওরফে মুফতি মঈন পরবর্তীতে ঢাকায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অংশ নিয়েছিল। ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভাতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় হরকাতুল জিহাদ। প্রচার অভিযানে থাকার কারণে সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয় শেখ হাসিনার। তার আগেই বোমা বিস্ফোরিত হওয়ায় ভেস্তে যায় হত্যাচেষ্টা। তবে এই হামলায় আওয়ামী লীগের দুইজন নেতা নিহত হয়।

২০০২ সালের ৪ঠা মার্চ যুবদল ক্যাডার খালিদ বিন হেদায়েত নওগাঁয় বিএনসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এর তদন্ত আর এগোয়নি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখান্ থেকে যশোর ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তৎকালীন এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়িকে ব্যারিকেড দিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১২ জন দলীয় নেতা-কর্মী আহত হন। বিএনপি আমলে এই মামলাটি খারিজ হলেও পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই বিচারক নিম্ন আদালতের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন।১৮ এপ্রিল ২০২৩ সালে এই ঘটনায় হওয়া দুই মামলার রায় আসে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার আরও ৪৪ জন আসামীকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
২০০৪ সালের ২রা এপ্রিল, বরিশালের গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলিবর্ষণ করে জামায়াত-বিএনপির ঘাতক চক্র। পরে বিএনপি আমলে ঐ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবেদনে প্রকৃত হামলাকারীদের বাঁচিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ফাঁসানো হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জনতার ঢল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। কিন্তু এই জনতার সাথে মিশে ছিলো কয়েকজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি, সঙ্গে যুদ্ধে ব্যবহৃত ভয়ংকর আর্জেস গ্রেনেড। মূল টার্গেট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।

২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা দায়ের করা হয় ২০০৪ সালে। কিন্তু ২০০৫ সালে মামলাটি নিয়ে জজ মিয়া নাটক মঞ্চস্থ করে বিএনপি -জামায়াত জোট। রাজনৈতিক্ পটপরিবর্তনের পর মামলা গতি পায় ২০০৭ সালে। ২০০৮ এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে অধিকতর তদন্তের পর ২০১১ সালে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১২ সাল থেকে আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় মামলার। যুক্তিতর্ক শুরু হয় ২০১৭ সালে, আর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। বহুল আলোচিত এই মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ১৯ জনকে। বিচারের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জনের অন্যতম বিএনপি আমলের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, ডিজিএফআই এর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও এনএসআই এর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম। তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময়ে কারাবন্দী থাকা অবস্থায় খাবারে বিষ প্রয়োগ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ঐ খাবার খেয়ে তাঁর চোখ-মুখ ফুলে গিয়েছিলো এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ২০০৯ সালের ২৭ জুন রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ উপনেতা সৈয়দ সাজেদা চৌধুরী এ তথ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন। ১১ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন মুক্তি পান বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা।

শ্রীলঙ্কার একটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্র সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করেছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার লক্ষ্যে একটি সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা পরে ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার জঙ্গি শাহানুর আলম ওরফে ডাক্তার

২০১৫ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে কারওরান বাজারে তার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা চালায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জঙ্গিগোষ্ঠী। ২০১৬ সালের জুনে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ধাতব পদার্থের উপস্থিতি থাকায় নামতে গিয়ে আবার ওপরে উঠে যায়। ধারণা করা হয়েছিল ওই বস্তুর আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হবে তার বিমান। ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর সরকারি সফরে হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে বিমানের নাট ঢিল করে রাখা হয়েছিল, যদিও বিষয়টিকে কিছুটা গোপনে রাখা হয়েছিল তখন কিন্তু তাকে হত্যার পরিকল্পনায় এমনটা হয়েছিল বলে ধারণা।

২০১৭ সালেও শোকের মাসে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। বারবার হামলার পরও বুলেট-বোমা আর কূটচালের শত বাধা ডিঙিয়ে যিনি বাংলাদেশকে টেনে তুলছেন খাদের কিনার থেকে সমৃদ্ধির পথে।