মেহেরপুরে শহিদুল ইসলাম পেরেশানের গণসংযোগ

শেখ হাসিনা কে আবারো ক্ষমতায় রাখতে ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের গণসংযোগের আয়োজন করা হয়।

আজ বুধবার বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলা শ্যামপুর আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে গণসংযোগের আয়োজন করা হয়।

গণসংযোগে বক্তব্য রাখে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট মিয়াজান আলী, মেহেরপুর জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এম এ এস ইমন, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান চাদু, সদর থানা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাজেদুর রহমান সাজু সহ বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আতিক স্বপনের সঞ্চালনায় শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।




বঙ্গবন্ধুর তনয়ার আমলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আগ্রহ ও অগ্রাধিকারের জায়গা ছিল শিক্ষা খাত। স্বাধীনতার পরপরই দেশের ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে নানা উদ্যোগ নেন তিনি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষার জাতীয়করণ, সংবিধানে শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষা কমিশন গঠন ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ শিক্ষার উন্নয়নে যুগান্তকারী বেশকিছু কর্মসূচি নেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারও সবসময় শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর মতো আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও শিক্ষায় ব্যয়কে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই সরকার গঠন করেছেন তখনই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোসহ সবকটি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি—বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বাধীন সরকারের এ বছরগুলোয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। চোখ ধাধানো উন্নয়ন সাধিত হয়েছে যোগাযোগ অবকাঠমোয়।

তুলনামূলক কিছু বিশ্লেষণ দেখলে বিষয়গুলো আরো স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ২০০৯ সালে পাবলিক ও প্রাইভেট মিলে দেশে বিশ^বিদ্যালয় ছিল ৮২টি। এর মধ্যে ৩১টি পাবলিক ও ৫১টি প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয় ছিল। বর্তমানে দেশে বিশ^বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬টিতে। এরমধ্যে পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৪টি ও প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয় ১১২টি। অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৪ বছরেরও কম সময় দেশে বিশ^বিদ্যালয়ের সংখ্যা দ্বিগুন হয়েছে। এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কৃষি, চিকিৎসা, মেরিটাইম, অ্যারোস্পেস এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো বিশেষায়িত বিভিন্ন খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সাল পর্যন্ত দেশে চিকিৎসা বিষয়ক একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল মাত্র একটি। বর্তমানে দেশে মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫টি। একইভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ও বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির মতো যুগোপযোগী উচ্চশিক্ষালয় গড়ে তুলেছে শেখ হাসিনার সরকার। শুধু নতুন বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নয়; উচ্চশিক্ষার প্রসারে পুরনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নতুন বিভাগ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এসব শুভ উদ্যোগের সুফল হিসেবে গত কয়েক বছরে দেশের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থী প্রবেশের সুযোগ ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে অবিশ^াস্য হারে। ২০০৯ সালে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১৪ লাখের নিচে। যা বর্তমানে বেড়ে ৩৬ লাখ ছাড়িয়েছে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিক্ষার্থী বৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক। ২০০৯ সালে দেশের বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় খাতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ২ লাখ। বর্তমানে যা চার লাখের কাছাকাছি।

শুধু প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংখ্যা নয়; সম্প্রতি বছরগুলোয় দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানেও বেশ উন্নতি ঘটেছে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন জট প্রায় শূন্যের কোঠায়। উচ্চশিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকল্পে বর্তমান সরকার বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গড়ে তুলেছে। বিশ^বিদ্যালয়গুলোয় মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করতে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (হেকেপ) সফল বাস্তবায়ন করে সরকার। বর্তমানে হায়ার এডুকেশন অ্যাক্সেলেরেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) শীর্ষক আরো একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি সরকার ধারাবাহিকভাবে গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে।

২০০৯-২০১০ অর্থবছরে গবেষণা খাতে সরকারের বরাদ্দ ছিল মাত্র ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উচ্চশিক্ষায় গবেষণার জন্য সরকার ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়ায় বৈশি^ক র্যাংকিংয়েও দেশের বিশ^বিদ্যালয়গুলোর অবস্থান পোক্ত হচ্ছে। গবেষণা, উদ্ভাবন ও সমাজের ওপর প্রভাব—বিজ্ঞান গবেষণায় এ তিনটি বিষয়কে ভিত্তি ধরে শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে স্পেনের সিমাগো ল্যাব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস। সিমাগো ইনস্টিটিউশনস র্যাংকিংস (এসআইআর)-এ ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে জায়গা পায় মাত্র ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়। আর ২০২৩ সালে এসে সিমাগো-স্কপাসের র্যাংকিংয়ে জায়গা পাওয়াদের তালিকায় বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮-এ।

উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক ধাপের শিক্ষার বেশ প্রসার ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামোর চিত্র বদলে ফেলা হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অধ্যাধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রচলিত পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল সংস্কার আনতেই নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। এ পরিবর্তনের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে আমাদের শিক্ষার্থীরা। শত বছর ধরে আমাদের মুখস্থনির্ভর শিক্ষাপদ্ধতি চলে আসছিল। পুরনো ধারার সে পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের চিন্তার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। নির্দিষ্ট কিছু বইয়ের নির্ধারিত অধ্যায় বা অংশ পড়ে পরীক্ষার খাতায় গৎবাঁধা কিছু নিয়েমে তা উগড়ে দেয়া হতো। নম্বরমূখী ওই ব্যবস্থায় শেখার সুযোগ ছিল অনেক কম। নতুন শিক্ষাক্রমে পুরনো সে পদ্ধতি ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন ধারার পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। কর্মমুখী শিক্ষার জোর দেয়ার অংশ হিসেবে কারিগরি শিক্ষাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। দেশে কারিগরি শিক্ষায় অংশগ্রহণ এক সময় এক শতাংশেরো নিচে ছিল। এখন তা বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে নেয়া হয়েছে বিশেষ বিশেষ প্রকল্প।

বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে শিক্ষার মতোই ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে দেশের স্বাস্থ্য খাতেও। দেশে আগে তেমন কোনো স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ছিল না, এখন ২২টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের বিশেষায়িত বিভিন্ন গবেষণা পরিচালিত হয়। ২০০৯ সালের আগে মাত্র আটটি মেডিকেল কলেজ ছিল, এখন ৩৭টি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা ও অবকাঠামোর মান বাড়ায় দেশের মানুষের গড় আয়ুও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালের আগে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬০ বছর, এখন তা ৭৩ বছর। দেশে টিকাদানে ৯৮ ভাগ সফলতা এসেছে অথচ আগে ছিল মাত্র ২০ ভাগ। আগে দেশে শিশু মৃত্যুহার ছিল ১৫০ জনের বেশি আর এখন সেটি মাত্র ২৩ জন। আগে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩ শতাংশ আর এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯৮ ভাগ। আগে দেশে খর্বকায় মানুষের জন্মহার ছিল ৬০ ভাগ। কিন্তু এখন ঠিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ায় মাত্র ২৫ ভাগের নিচে খর্বকায় মানুষ জন্ম নেয়।

স্বাস্থ্যসেবায় অবদানে মিলেছে নানা আন্তর্জতিক স্বীকৃতিও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জাতিসংঘের ৬৫তম সাধারণ অধিবেশনে মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল-৪-এ এ উল্লেখযাগ্য সাফল্য অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১১ সালের জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পক্ষে নারী ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সাফল্য অর্জনের স্বীকৃতি স্বরূপ সাউথ-সাউথ পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৩ সালের জুন মাসে ল্যানসেট পত্রিকায় ভালো সাস্থ্য সেবা দেয়ার চমৎকার মডেলে হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়।
আর অবকাঠামো উন্নয়নে বলা চলে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত

স্বপ্নের পদ্মা সেতুসহ ছোট-বড় একশ ব্রিজ ও একশ সড়ক-মহাসড়ক চালুর মধ্য দিয়ে দেশে যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ঢাকাাবাসী যুক্ত হয়েছেন মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে। চট্টামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালসহ সরকার গৃহীত নানা পদক্ষেপ বদলে দিচ্ছে দেশের সার্বিক অবকাঠামো চিত্র। অবকাঠামো উন্নয়নের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি করলেও বর্তমানে পুনরায় অগ্রগতি শুরু হয়েছে। সামনের দিনে এ অগ্রযাত্রা আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে, গড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও দেশরত্নের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

লেখক: কোষাধ্যক্ষ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।




গাংনীতে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি উদ্যোগে উপকরণ বিতরণ

মেহেরপুর গাংনীর পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি (পিএসকেএস)-এর ‘প্রশিক্ষন কেন্দ্র ও খামার’- এ সংস্থার সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর কৃষি খাতের আওতায় উ”চমূল্যের ফল উৎপাদনে উদ্যোক্তা তৈরি ও অনাবাদি জমিতে সবজি চাষ প্রদর্শনীর আওতায় ৫ জন উপকারভোগীর মাঝে উপকরণ বিতরণ করা হয়।

বিতরণকৃত উপকরণ সমূহের মধ্যে ছিল- ১৮০ টি বারি-১১ আমের চারা, ৩০টি ব্যানানা ম্যাংগো আমের চারা এবং ২১টি মোজাফ্ফর জাতের লিচুর চারা, ১৬টি সিমেন্টের খুটি, ট্রাইকো-কম্পোস্ট সার, রাসায়নিক সার, কিটনাশক, বিভিন্ন সবজির বীজ। পাশাপাশি উপকারভোগীদেরকে প্রদর্শনীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসহ কিভাবে এর রক্ষণাবেক্ষন করতে হবে সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। উপকরণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন পিএসকেএস এর সমন্বিত কৃষি ইউনিটের সকল কর্মকর্তাগন ।

অপরদিকে পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির (পিএসকেএস) কর্তৃক উচ্চমূল্যের ফল উৎপাদনে উদ্যোক্তা তৈরি প্রদর্শনীর আওতায় তিনটি প্রদর্শনী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে , বারি আম-১১, ব্যানানা ম্যংগো, এবং লিচু-মোজাফ্ফর জাতের চারা বিতরন সহ অন্যান্য উপকরণ সমূহ বিতরন করা হয়। এছাড়াও অনাবাদি জমিতে সবজি চাষ প্রদর্শনীর আওতায় ২ টি প্রদর্শনী বাস্তাবয়নের লক্ষ্যে উপকারভোগিদের মাঝে উপকরণ সমূহ বিতরন করে যথাযথ পরামর্শ প্রদান করা হয়।




দর্শনার দোস্ত গ্রামে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

দর্শনার দোস্ত গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে রকিব শিকদার (২২) নামে এক যুবকের গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে নিজ বাড়ির নিজের ঘরের স্বয়ং কক্ষে বাঁশের আড়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে।

মৃত্যু রকিব সিকদার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের স্কুল পাড়ার রহিম শিকদারের ছেলে।

পারিবারিক সুত্রে জানাগেছে গত মঙ্গলবার রাতে মা বাবা রকিব সিকদারকে বকা ঝকা করে। ছেলে মান অভিমান সহ্য করতে না পেরে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। সবার অজান্তে নিজ ঘরের আড়ার সাথে গলাই রশি দিয়ে আত্নহত্যা করে।ভোরে পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।

পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।এ ঘটনায় দর্শনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।




বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন স্কুলকে সংর্বধনা দিলেন, হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের জেলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার শুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলোয়াড়দের রাজসিক সংর্বধনা দিলেন হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন।

বুধবার (২৭সেপ্টেম্বর) সকালে বিদ্যালয় মাঠে সংর্বধনার আয়োজন করা হয়। আনুষ্ঠানে বিজয়ী খেলোয়াড় , কোচ ও প্রধান শিক্ষকের হাতে ফুলের তোড়া ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নেন পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী, দলের কোঁচ সহকারী শিক্ষক আব্দুস সামাদ আজাদ দিপু, সহকারী শিক্ষক নাজিম উদ্দীনসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়াও পৌরসভার প্যানেল মেয়র সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যান্য কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলায় কালীগঞ্জ উপজেলার মথনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৩-০ গোলে হারিয়ে জেলার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।




সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে—মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ এক ‘ভয়াবহ’ অবস্থায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি। সেই অবস্থা থেকে বের হতে না পারলে গোটা জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।

আজকে এই বিপদ, এই সংকট শুধু বিএনপির নয়। এই সংকট আজকে সমগ্র জাতির। আমরা ভবিষ্যতে স্বাধীন থাকব কি না, আমার স্বাধীনতা থাকবে কি না, আমার সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না, আমার দেশ করদ রাজ্যে পরিণত হবে কি না, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে কি না, আমার প্রতিনিধি আমি নির্বাচিত করতে পারবে কি না- তার সব কিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকটা দিনের মধ্যে।
ফখরুল বলেন, আমার একটাই কথা … যারা সংগ্রাম করছেন, তাদের আরো বেশি করে শক্তিশালী হয়ে এই আন্দোলনকে, এই সংগ্রামকে রাজপথে বিস্তৃত করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে নামিয়ে আনতে হবে।

সাধারণ মানুষকে যখন রাজপথে নামিয়ে আনতে পুরোপুরিভাবে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা (ক্ষমতাসীনরা) কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে… এখন দল ভাঙার চেষ্টা করে। দল কখন ভাঙতে যায়, যখন সে বোঝে দুর্বল। আজকে তারা (সরকার) আমাদের দলছুট, বহিষ্কৃত লোকজনকে নিয়ে আবার দল তৈরি করে ঝামেলা করতে চায়।

আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। মানুষ একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় সব দলের অংশগ্রহণে। এর বিকল্প তারা কিছু চায় না।
আন্দোলন দমানো যাবে না উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমরা পালন করছি।

আমরা রাস্তায় নেমেছি, প্রায় এক বছর ধরে রাস্তায় নেমেছি, এর মধ্যে আমাদের ২২ জন তরুণ-যুবক নেতার প্রাণ গেছে রাস্তায় পুলিশের গুলিতে, আমাদের নামে অসংখ্য মামলা হয়েছে, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে গেছে। তার পরেও আমাদেরকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারছে না, পারবেও না। এখন আমাদের রোড মার্চ হচ্ছে, এতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ হচ্ছে কি না আপনারা দেখেন। আমি নিজে একটা রোড মার্চে ছিলাম বগুড়া থেকে রাজশাহীতে… রাস্তার দুই ধারে অগণিত পুরুষ-মহিলা-নারী-শিশু, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে… তারা এই রোড মার্চকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং এই সরকারের পতন চাচ্ছে।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওরা দেশকে ভয়াবহ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আলজাজিরা মিডিয়ার করেসপডেন্ট, তার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল কয়েক দিন আগে। তিনি বলছেন যে আমি তো এখানে আছি, আসছি …কোনো দিন ভাবিনি যে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাব। এখন চিন্তা করতে শুরু করেছি যে বাংলাদেশে থাকব না। কেন?

তিনি বলেন, আমাদের বহু বুদ্ধিজীবী এখন টেলিভিশনের টক শোতে আসেন না। কারণ কী? তাদের ভয় দেখানো হয় যে আপনারা যদি গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে আপনাদের বিপদ হবে। বিপদের মধ্যে যে সবচেয়ে টাচি জায়গায় আঘাত করবে তারা। ছেলে-মেয়েরা যদি স্কুল-কলেজে পড়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, হুমকি দেওয়া হয় অদৃশ্য জায়গা থেকে… এই রাষ্ট্রে আমরা বাস করছি। আজকে দুর্ভাগ্যজনক হলো- আমরা যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে জড়িত ছিলাম আমরা এটা ভাবতেও পারি না যে আমাদেরকে এখন গার্ডেডওয়েতে কথা বলতে হবে, আমাদের ভাবতে হয়- এখন কোথায় যাব, না যাব, কার বিয়েতে যাব, অনুষ্ঠানে যাব কি যাব না… এই বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, কৃষক দলের সহসভাপতি ওমর ফারুক শাফিন, প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, স্থানীয় নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, সাংবাদিক রাশেদুল হক বক্তব্য দেন।

সূত্র: কালের কণ্ঠ অনলাইন




মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য পরিসংখ্যান

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিয়াত্তর বছর বয়স পূর্ণ করবেন। এটি কি শুধুই একটি সংখ্যা? এর মধ্যে কি কোন মহত্ব নেই? আমাদের মত সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে বয়স বাড়লেও কোন সতুন অর্জন হয় না বলেই তা একটি সংখ্যামাত্র। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মত মানুষের ক্ষেত্রে সেটি যে একটি সংখ্যা নয় তা পরিসংখ্যান। তা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, ওয়েবসাইট এবং সকল মিডিয়ার আশ্রয় নিলাম। উইকিপিডিয়া ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ওয়েবসাইটেও সকল তথ্য না থাকায় সকল তথ্য সন্নিবেশিত করতে পেরেছি কিনা জানি না। যেটুকু পেরেছি, সেই পরিসংখ্যানই বলবে তিনি কত বড় মহিরুহ বাংলাদেশের। এই এত বছরের জীবনে তিনি অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছেন।

রাজনৈতিক অনেক ভাঙ্গা গড়ার মধ্য দিয়ে তৈরী হয়েছেন একজন শক্ত মানুষে। তার প্রমাণও তিনি রেখেছেন তার বিভিন্ন পদক প্রাপ্তী ও অর্জনের মধ্য দিয়ে। সমালোচকরা বলতেই পারেন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন বলেই পেয়েছেন। কিন্তু না, সমালোচকদের মুখে ছাই দিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না তখনও পদক পেয়েছেন। কমবেশী প্রায় অর্ধশতাধিক পদকের নাম পাওয়া যায়। পদকের পরিসংখ্যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আমাদের কি ধারনা দেয়? কতটা পরিপক্ক রাজনীতিবিদ তিনি? একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে গণতন্ত, শান্তি, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মত খাতে উন্নয়নের জন্য বহু পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।

১ম মেয়াদে পদক প্রাপ্তি:

১৯৯৬সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত অনেক পুরস্কার পান। তার মধ্যে অন্যতম হল ১৯৯৮ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির জন্য ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রীকে “হোফে বোয়ানী” শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেন। এছাড়াও এই সময়ে “নেতাজি শান্তি পুরস্কার” (১৯৯৭), যুক্তরাজ্যের অ্যালবার্টা ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মান সূচক “ডক্টর অব লিবারেল আর্টস” (১৯৯৭) অন্যতম। ১৯৯৭ সালে লায়ন্স ক্লাবসমূহের আন্তর্জাতিক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক “রাষ্ট্রপ্রধান পদক” এবং রোটারী ইন্টারন্যাশনালের রোটারী ফাউন্ডেশন কর্তৃক “পল হ্যারিস ফেলো” নির্বাচিত করে। ১৯৯৮ সালে নরওয়েতে মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন উনাকে “ মহাত্মা গান্ধী” পদক প্রদান করেন। ১৯৯৯ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় উনাকে “দেশিকোত্তমা” ডিগ্রী প্রদান করেন একই বছরে তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক “ডক্টর অব ল” ডিগ্রী প্রদান করেন। ১৯৯৯ বাংলাদেশের ক্ষুদার বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরুপ জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য সংস্থা কর্তৃক “সেরেস পদক” লাভ করেন। ২০০০ সালে ব্রাসেলসের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় তাকে “ডক্টর অব তানরিস কাসিয়া” প্রদান করে। একই সময়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারে অবদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকন উইমেন্স কলেজ “পার্ল এস বাক” পদক প্রদান করে। একই সময়ে তিনি আফ্রো এশিয়ান ল’ ইয়ার্স ফেডারেশন কর্তৃক “পার্সন অব দ্য ইয়ার” নির্বাচিত হন।

ক্ষমতাহীন অবস্থায় পদকপ্রাপ্ত:

২০০১ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তাঁকে সম্মানসূচক “ডক্টর অব সায়েন্স” ডিগ্রী প্রদান করা হয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শান্তির পক্ষে অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে ২০০৫ সালে পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানসূচক “ডক্টর অব লজ” ডিগ্রী প্রদান করেন।

২য় মেয়াদে পদক প্রাপ্তি:

২০১০ সালে ১২ জানুয়ারী “ইন্দ্রিরা গান্ধী শান্তি পদক” একই বছর বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুহার কমানোতে অবদান স্বরুপ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল-৪ পূরনে জাতিসংঘ কর্তৃক “মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল” পুরস্কারপ্রাপ্ত হন। একই বছর তিনি আন্তর্জাতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সেন্ট পিটার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১১ সালে বাংলা একাডেমির সম্মাননা সূচক ফেলোশিপ পান, একই বছর গণতন্ত্র সুসংহতকরনে প্রচেষ্টা ও নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখার জন্য প্যারিসের ডাউফিন ইউনিভার্সিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মর্যাদাপূর্ণ স্বর্ণপদক ও ডিপ্লোমা পুরস্কার প্রদান করে। একই বছর আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন, সাউথ, সাউথ নিউজ ও জাতিসংঘের আফ্রিকা সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কমিশন যৌথভাবে স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জনের জন্য “সাউথ সাউথ” পুরস্কার প্রদান করে। একই সালে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্বারে দূরদর্শী নেতৃত্ব, সুশাসন, মানবাধিকার রক্ষার জন্য ইংল্যান্ডের হাউজ অব কমন্স প্রধানমন্ত্রীকে “গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করেন। পরবর্তী বছরে তিনি ইউনেস্কো “কালচারাল ডাইভারসিটি পদক” প্রাপ্ত হন। একই বছরে তিনি বন ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের জন্য ইকুয়েটর পুরস্কার, ওয়াঙ্গারি মাথাই পুরস্কার এবং আর্থ কেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। টীকাদান কর্মসূচীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে গাভি (এঅঠও) পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার জন্য ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কে সম্মানসূচক “ডিলিট” ডিগ্রী প্রদান করেন। ২০১৩ সালে খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য “সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড, ২০১৩” প্রাপ্ত হন। সরকারের বিশেষ প্রকল্প “একটি বাড়ি একটি খামার” জন্য ভারত হতে “সাউথ এশিয়া ও এশিয়া প্যাসিফিক ম্যানহাটন অ্যাওয়ার্ড ২০১৩” পুরস্কার লাভ করেন।

৩য় মেয়াদে পদক প্রাপ্তি:

২০১৪ সালে খাদ্য উৎপাদন ও তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রীকে সম্মাননা সার্টিফিকেট প্রদান করেন। ২০১৪ সালে নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অবদানের জন্য ইউনেস্কো “শান্তি বৃক্ষ” পুরস্কার পান। একই সময় ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ও শিক্ষার প্রসারে অবদাননের জন্য “সাউথ সাউথ কো অপারেশন ভিশনারী অ্যাওয়ার্ড” পান। একই বছর সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য ‘সাউথ সাউথ পুরস্কার লাভ করেণ। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইসিটির ব্যবহার জন্য “আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড” পান। এ বছরই জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার “চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ” লাভ করেন। ২০১৫ সালে রাজনৈীতিতে নারী পুরুষের বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনে “উইমেন ইন পার্লামেন্ট গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড” দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে শেখ হাসিনাকে ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ পুরস্কার ও ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ প্রদান করা হয় নারি ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য, একই বছর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে দাতব্য সংগঠন ‘গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন’ এর পরিচালনা পর্ষদ শেখ হাসিনাকে ‘স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্টান্ডিং লিডারশিপ’ অ্যাওয়ার্ড পান। একই বছর রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করার ইন্টারপ্রেস সার্ভিস নিউজ এজেন্সি প্রধানমন্ত্রীকে “ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড” প্রাপ্ত হন। ঐ একইি বছরে প্রধানমন্ত্রী ভারতের কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রী লাভ করেন।

৪র্থ মেয়াদে পদক প্রাপ্তি:

২০১৯ সালে চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান রাখায় ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়া উইমেন ‘লাইফ টাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পান। একই বছরে নারী ও শিশু কল্যাণে অবদান স্বরুপ ভারতের ‘ড. কামাল স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ প্রদান করা হয়। এই-সময়ই বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক সফলতার জন্য “ভ্যাক্সিন হিরো” উপাধি পান। তরুনদের দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ‘চাম্পিয়ন ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সম্মাননায় ভূষিত হন। একই বছর আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বিশেষ অবদান রাখায় কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটি ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার-২০১৮’ প্রদান করে। ২০২১ সালে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক তাকে “এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার” প্রদান করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী প্রনয়ন ও তা বাস্তবায়নে নেতৃত্বদানে ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্ন অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ “উইটসা এমিনেন্ট পারসনস অ্যাওয়ার্ড ২০২১” এ ভূষিত হয়েছেন।

উপাধি সমূহ:

শেখ হাসিনাকে দেওয়া বিশ্ববাসীর উপাধিসমূহ যুক্তরাস্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’ উনাকে ‘লেডি অব ঢাকা’ উপাধি দেন। রোহিঙ্গা ইসুতে উনাকে ব্রিটিশ মিডিয়া “মাদার অব হিউম্যানিটি” উপাধি প্রদান করেন। মিসরের রাস্ট্রদূত উনাকে “ক্যারিশম্যাটিক লিডার” বলেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদপত্র তাকে “প্রাচের নতুন তারকা” উপাধি দেন। এছাড়াও “জোয়ান অব আর্ক”, “বিশ্ব শান্তির দূত”, “বিশ্ব মানবতার বিবেক”, “বিশ্ব মানবাতার আলোক বর্তিকা”, মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা”, কতশত উপাধি।

ক্ষমতাধর হিসাবে অবস্থান:

২০১৫ ফোর্বস এ প্রথম ১০০ জন সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নারীর দধ্যে ৫৯তম স্থান অর্জন। শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন। ২০১০ সালে নিউ ইয়ার্ক টাইমস সাময়িকী অনলাইনে জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিল। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম।

গণমাধ্যমের তথ্য, ওয়েবসাইট এবং সকল ইন্টারনেট তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায় অর্ধ শতাধিক খেতাব ও উপাধি প্রাপ্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। উনার অর্জনসমূহ যদি সারংশ করা হয় তবে দেখা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শিশু ও নারী অধিকার ও উন্নয়নে উনার কি অসামান্য অবদান। মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরনের কি বিশেষ অবদান গত টানা তিনবারের ক্ষমতায়নে। সারাবিশ্ব যার স্বীকৃতি দিয়ে আসছে টানা পনের বছর। যে উন্নয়নকে ছোট করে দেখার কত অপচেষ্টা ভেতরে ও বাইরে থেকে। মাহাথির মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিলেন মালয়েশিয়াতে তখন কাওকে বলতে শুনিনি গণতন্ত্র হত্যা হচ্ছে। সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতায় ছিলেন দীর্ঘদিন। সেই সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর দেখেছি তার প্রতি মানুষের ঘৃণা। এখন শুনি ইরাকের মানুষের নাকি সাদ্দাম হোসেনের জন্য হাহাকার। সত্য মিথ্যা জানি না। রাজনীতি সচেতন মানুষ নই। পুতিনকে কেও বলেন না স্বৈরাচার। শুধু গণতন্ত্র খুজি এই গরীবদেশে। যেখানে সামান্য অর্থের বিনিময়েও গণতন্ত্র কেনা যায়। নিরষ্কুশ গণতন্ত্রই যদি একটি দেশের উন্নয়ন এনে দিতে পারত তবে সিঙ্গাপুর এত বড় ধনী দেশ হতে পারত না। মালয়েশিয়া ধনী দেশ হত না। তবুও এদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। তাই সঠিক মূল্যয়নেই হোক বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারন। চাঁদেরও কলংক আছে। টানা পনের বছর একটি দল ক্ষমতায়। তাই ভুলত্রুটিও আছে। সেটি ধরে দেওয়ার জন্য একটি শক্ত বিরোধীদলও হয়ত এই মূহুর্তে প্রয়োজন একটি উন্নত বাংলাদেশের জন্য। তবে এখন পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিকল্প কেউ তৈরী হয় নাই যতই সমালোচকরা উনার সমালোচনা করুক না কেন।

লেখক: লেখক ও গবেষক। চেয়ারম্যান, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।




নানামুখী চ্যালেঞ্জে জয়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মুক্তিযুদ্ধের পর মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বলেছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উদীয়মান অর্থনীতির রোল মডেল। যাঁর নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশের এই বিস্ময়কর উত্থান, তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার পথচলার এ দীর্ঘ সময় কখনোই সহজ ছিল না। ২১ বার তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধীরা। তাছাড়া নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শক্ত হাতে পূর্ণ আত্মবিশ্বাসে আজও বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দেশে ফেরাই ছিল শেখ হাসিনার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তৎকালীন স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়। ফলে রাজনৈতিক আশ্রয়ে বাধ্য হয়ে ভারতে অবস্থান করেন শেখ হাসিনা। কিন্তু বাংলার মানুষের ভালোবাসায় তৈরি হয়েছে শেখ হাসিনার সাহসের পাটাতন। পরবর্তীতে সামরিক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি ফিরে আসেন স্বদেশে। মুখোমুখি হন স্বৈরাশসকের।

১৯৭৭ সালে ভারত সফরের সময় জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন তৎকালীন ভারত সরকারকে। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক ইন্ডিয়ান টাইমসে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সে সময়ে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৭৫-৮১ ছয় বছর বিদেশে নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অবশেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে সকল রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন। শুরু করেন বাংলার মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। অনেকেই আওয়ামী লীগ ছেড়ে মোশতাকের মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়েছিল সে সময়। সারাদেশে স্বৈরশাসক জিয়ার অত্যাচার নিপীড়নে ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সে অবস্থা থেকে দলের পুনর্গঠনের দিকে মনোনিবেশ করেন শেখ হাসিনা। কয়েক বছরের মধ্যেই শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। শুরু হয় আওয়ামী লীগের পুনর্জাগরণ।

সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পতনের পর শুরু হয় স্বৈরশাসক এরশাদের শাসনামল, চলে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। স্বৈরাশাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এসময় দেশের গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরে, পূর্ববর্তী সেনাশাসক জিয়ার মতই একচেটিয়া শাসনব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা করতে থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলনের মুখে পিছু হটতে শুরু করে এরশাদ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নানামুখী আন্দোলনের মুখে পতন ঘটে স্বৈরাচার এরশাদের শাসনব্যবস্থা। পুনরুদ্ধার হয় গণতন্ত্রের। এজন্যই তাঁকে বলা হয় ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’।

বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের উত্থানের আলামত প্রথম স্পষ্ট হয় ১৯৯২ সালে বিএনপি শাসনামলে। সে সময় বিএনপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদী জঙ্গিরা ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ স্লোগান তুলেছিল। শুধু তাই নয়, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়ে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গীদের দিয়ে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। সারাদেশে একযোগে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা করে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে জঙ্গীবাদের সকল আস্ফালন বন্ধ করে দেন। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জঙ্গীদের বিচারের আওতায় আনেন। গ্রেনেড হামলা, সিরিজ বোমা হামলায় জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করেন। ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে আকস্মিক হামলার পরে শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার এ পদক্ষেপে সহযোগিতা করেন। ফলাফল সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বে এক রোল মডেল ।

২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় দেশের প্রশাসনিক কাঠামো একেবারে ভেঙ্গে পড়েছিল। ২০০৮ সালে নবগঠিত আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পরিকল্পিতভাবে তৎকালীন কিছু বিপথগামী বিডিয়ার সদস্যরা বিদ্রোহ ঘটানোর সঙ্গে জড়িত ছিল। শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সে বিদ্রোহ দমন করেন। বিচক্ষণতার সাথে বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে প্রথমে শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেন, তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিদ্রোহের প্রকৃত সত্য উন্মোচন করেন এবং বিদ্রোহে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনেন। ভবিষ্যতে বিডিআর কর্তৃক এ ধরনের ঘটনা যেন দেশকে বিপদের মুখে ফেলতে না পারে এবং বিডিয়ার বাহিনী যেন কলঙ্কিত না হয়, সেজন্য নতুন আইন প্রণয়ন করেন শেখ হাসিনা সরকার। বিডিয়ারের নাম পরিবর্তন করে বিজিবিতে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) উন্নীত করেন। বিজিবি’র সার্বিক কল্যাণে বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন এবং ‘সীমান্ত ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করেন। বিজিবিতে নতুন ৪টি সেক্টর ও ১৭টি ব্যাটেলিয়ন তৈরি করেন। সর্বনিম্ন পদ থেকে সুবেদার মেজর পর্যন্ত সদস্যদের সীমান্ত ভাতা প্রদান, অগ্রিম বেতনসহ দু’মাসের ছুটি ভোগের সুবিধা, রেশন, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি করেন।

বাংলার হাজার বছরের সম্প্রীতির সংস্কৃতি ধ্বংস করতে ৭৫ সালের পর থেকেই চলছে পরিকল্পিত চক্রান্ত এবং আঘাত। নানা সময়ে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করেছে সাম্প্রদায়িক অপগোষ্ঠী। রামু, নাসিরনগর, কুমিল্লা, রংপুরের সাম্প্রদায়িক আস্ফালন এর প্রকৃত উদাহরণ। কিন্তু শেখ হাসিনা শক্তহাতে এ সাম্প্রদায়িক আস্ফালন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বস্তরের সর্বধর্মের মানুষের সহায়তায় সাম্প্রদায়িকতা বন্ধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রতিটি ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় এনে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

শুধু তাই নয়, করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধুঁকছিল, তখনও বাংলাদেশ রেকর্ড ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। প্রয়োজনীয় সময়ে লকডাউন ঘোষণা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, টিকা আমদানি ও তা সঠিকভাবে প্রয়োগ, করোনা যুদ্ধে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের জন্য পিপিই-মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করা; টেস্টিং কিট আমদানি, দেশের বিভিন্ন স্থানে ল্যাব স্থাপন, স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শের জন্য ৩টি হটলাইন (১৬২৬৩; ৩৩৩ ও ১০৬৫৫) চালুসহ প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপই সঠিক সময়ে গ্রহণ করেছিলেন শেখ হাসিনা। তাঁর গৃহীত বাস্তবসম্মত নানা পদেক্ষপের কারণেই বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় বিশ্বে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বর্তমানে ২২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৪২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ৬৬টি ত্রাণ গুদাম, ২৬৯২ কি.মি. মাটির রাস্তা এইচবিবিকরণ, ৬৪৯১টি সেতু/কালভার্ট এবং ৫৫০টি মুজিব কিল্লা সংস্কার ও নির্মাণ করা হয়েছে ।

আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ দক্ষতার সাথে সামলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশের বিরোধ ছিল। শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে কোনরকম রক্তপাত ছাড়াই সমুদ্রসীমা বিরোধ সমাধান করেন। একই সাথে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার সমুদ্রসীমার ওপর সার্বভৌম অধিকার ছিনিয়ে আনেন। যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। চীন ও ভারতের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব থাকলেও শেখ হাসিনা অত্যন্ত চমৎকারভাবে দুই দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, জাপানসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল। শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সফলতায় বাংলাদেশ এখন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব যখন নিষেধাজ্ঞাসহ দেশের সংবিধান পরিপন্থী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পাঁয়তারা করছে, শেখ হাসিনা তখন দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে যাচ্ছেন। কোন অবস্থাতেই পশ্চিমা বিশ্ব শেখ হাসিনার এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনের অবস্থান থেকে টলাতে পারছে না। ফলে ভূ-রাজনীতির সমীকরণে শেখ হাসিনাকে বিগ ফেক্টর হিসেবে গণ্য করছে বিশ্বনেতারা।




এইচএসসি পাসে নিয়োগ দেবে স্কয়ার টয়লেট্রিজ

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটিতে ‘সেলস অফিসার ’ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

সেলস অফিসার।

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

প্রার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক পাস হতে হবে। বয়স সর্বোচ্চ ৩২ বছর। বিক্রয়ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে । দেশের যেকোনো স্থানে চাকরি করা এবং ব্যাপক ভ্রমণের মানসিকতা থাকতে হবে।

কর্মস্থল

বাংলাদেশের যেকানো স্থানে।

আবেদনের নিয়ম

উপরোক্ত পদে আগ্রহী প্রার্থীদের সম্প্রতি তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার যাবতীয় সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, জীবনবৃত্তান্ত সহ আগামী ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকাল ৮:৩০ মিনিটের এর মধ্যে নিম্নোক্ত ঠিকানায় লিখিত পরীক্ষার জন্য উপস্থিত থাকতে হবে।

বগুড়া: হোটেল ৭১ ইন, শারিফা ট্রেড সেন্টার (আলতাফ আলী মার্কেট), নবাব বাড়ি রোড, ট্রাফিক পুলিশ ফাড়ির বিপরীত পাশে, বগুড়া।

চট্টগ্রাম: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস্ ডিপো অফিস, ৩৫/সি (টেক্সটাইল মোড়), বায়েজীদ, চট্টগ্রাম।

“স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড নিয়োগ সংক্রান্ত কাজের জন্য কোন ধাপেই প্রার্থীর সাথে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন করে না।”

আবেদনের শেষ তারিখ

৬ অক্টোবর ২০২৩

সূত্র : বিডিজবস




দামুড়হুদায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করে বরযাত্রীর খাবার এতিমদের দিলেন এসিল্যান্ড

দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের মজলিস পুর গ্রামে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সজল কুমার দাস এর হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী।

আজ বুধবার দুপুরে বিয়ে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিবাহটি বন্ধ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সজল কুমার দাস। সেই সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রীদের জন্য তৈরি করা খাবার স্থানীয় বিষ্ণুপুর ফুরকুনিয়া উলুম কওয়ামী লিল্লাহ বোডিং এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৬) কুতুব উদ্দিন এর মেয়ের বিয়ের আয়োজন চলছিলো তার জন্মসন ২০০৮ সন থেকে কম্পিউটার এডিডের মাধ্যমে ২০০৫ সন করে বিয়ের পায়তারা চলমান কালে গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে মেয়েটির বাড়িতে অভিযান চালান দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সজল কুমার দাস। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কনের মা ও বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

তখনো বরপক্ষ উপস্থিত না হওয়ায় উপস্থিত কনের অভিভাবককে বাল্যবিবাহ বন্ধের নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কনের মা-বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে বিবাহ দেওয়া যাবে না এ মর্মে তাঁর চাচার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বরপক্ষের জন্য রান্না করা খাবার উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর ফুরকুনিয়া উলুম কওয়ামী লিল্লাহ বোডিং এতিমখানার শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে এসিল্যান্ড সজল কুমার দাস প্রতিবেদকে বলেন, কনে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় দেশের প্রচলিত আইন মেনেই এই বাল্যবিবাহটি বন্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কনের মা ও বাবা পালিয়ে যাওয়ায় শাস্তি হিসেবে বিয়ের বরযাত্রীদের জন্য তৈরি করা সব খাবার এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। এটাই তাদের শাস্তি, এই বাল্যবিবাহ যাতে না হয়, সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হবে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযানের পরিচালনায় সহযোগিতা করেন দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশ সহ জুড়ানপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্যগন।