জীবননগরে ২ প্রতিষ্ঠানকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা

জীবননগরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযোগ দুই জ্বালানী গ্যাস বিক্রেতাকে জরিমানা করেছে। আজ শনিবার জীবননগর বাজারের মেসার্স মিনহাজ মেশিনারী কে ১৫ হাজার টাকা এবং জীবননগর গ্যাস হাউজ কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহাম্মেদ জীবননগর বাজার পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনকালে জীবননগর বাজারের উপজেলা পরিষদ রোডের পাশের্^ অবস্থিত মেসার্স মিনহাজ ট্রেডার্স ও জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের পাশের্^ অবস্থিত মেসার্স জীবননগর গ্যাস হাউজে গ্যাস বিক্রির কোন রশিদ ও তালিকা মূল্য প্রদর্শন না করার অপরাধে মেসার্স মিনাহজ ট্রোর্ডের মালিক মতিয়ার রহমানকে ১৫ হাজার টাকা ও জীবননগর গ্যাস হাউজের মালিক ইকবাল উদ্দীন একরামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সাথে বিক্রয়ের রশিদ প্রদান করা ও মূল্য তালিকা প্রদর্শনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

এছাড়াও জীবননগর কাচা বাজারে পরিদর্শন কালে আলু, পেয়াজ, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তদারকি কালে ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ ও সরকার নির্ধারিত মুল্যে মালামাল বিক্রয়ের জন্য বলা হয় ও সতর্কীকরণ মুলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।

ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে সহযোগীতা করেন জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমান ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি টিম।

এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ ও সহকারী ভূমি কমিশনার তিথি মিত্র জীবননগর বাজার পরিদর্শনে যান এবং কাচা বাজারসহ নিত্য পন্যের বিভিন্ন দোকানে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রিসহ মুল্য তালিকা প্রদর্শনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।




হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ, কে, এম আসাদুজ্জামান সংক্ষিপ্ত সফরে মেহেরপুরে

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ, কে, এম আসাদুজ্জামান ব্যক্তিগত সংক্ষিপ্ত সফরে স্বপরিবারে মেহেরপুর ঘুরে গেলেন।
শনিবার ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সোয়া এগারোটার সময় ব্যক্তিগত সফরে মেহেরপুর এসে পৌছান বিচারপতি এ, কে, এম আসাদুজ্জামান। এসময় সার্কিট হাউজে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিচার বিভাগ মেহেরপুরের বিচারকগণ, জেলা প্রশাসক শামীম হাসানের নেতৃত্বে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার রাফিউল আলম এর নেতৃত্বে মেহেরপুর জেলা পুলিশ। এছাড়াও বিচারপতি  এ, কে, এম আসাদুজ্জামানকে মেহেরপুরে স্বাগত জানাতে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বারের সভাপতি কামরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক খ ম ইমতিয়াজ বিন হারুন।
সকাল সাড়ে ১১ টায় সার্কিট হাউজে মেহেরপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিচারপতি এ, কে, এম আসাদুজ্জামান গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন।
এর পর বিচারপতি দুপুর সাড়ে বারোটার সময় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং মুজিবনগর কমপ্লেক্স ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি ঐতিহাসিক আমঝুপি নীলকুঠি পরিদর্শনে যান। এ সময় তার সাথে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ন জেলা জজ কবির হোসেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী জজ  মেহেদী মোবারক মুনিম সহ বিচারবিভাগ মেহেরপুরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। নীলকুঠি পরিদর্শন শেষে বিচারপতি এ, কে, এম আসাদুজ্জামান মেহেরপুর বিচার বিভাগের বিচারকদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করে মেহেরপুর ত্যাগ করেন।



আলমডাঙ্গায় নেতাকর্মীদের সাথে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দারের মতবিনিময়

 চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আলমডাঙ্গায় দলীয় নেতাকর্মিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি আলমডাঙ্গার বধ্যভূমিতে এসে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক নির্মাণ কাজের খোঁজ খবর নেন। পরে নেতাকর্মিদের সাথে মতবিনিময় করেন।

মত বিনিময়কালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, দলের নেতাকর্মিদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বালাদেশ আজ বিশ্বের কাছে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মাথা উচু করে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে অকার্যকর একটি রাস্ট্রে পরিনত করতে বিএনপি-জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশীদের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখছে।

তাদের সেই স্বপ্ন কোন দিনই পূরণ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। ক্ষমতায় আসতে হলে ভোটের মাধ্যমেই আসতে হবে। কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না।

তিনি বলেন, আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন। কোন অপশক্তি ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগকে পরাজিত করতে পারবে না।

মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু মুছা,সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাষ্টার,জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুজ্হামান লিটু বিশ্বাস,সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন,সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান ফারুক,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম,হারদী ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুজ্জামান ওল্টু, পৌর আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু,কালিদাসপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন,যুবলীগ নেতা আহসান উল্লাহ , সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সালমুন আহমেদ ডন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুর রহমান পলাশ, আশরাফুল হক, শাহিন মিজান, আশরাফুল, সৈকত খান প্রমুখ।




আলমডাঙ্গার মাধবপুর কলা চুরি করতে এসে ধরা; পুলিশে সোর্পদ

আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর গ্রামে ভোর রাতে কলার কাঁদি চুরি করতে এসে টিটু মন্ডল নামের এক ব্যক্তি এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে।

আজ শনিবার দিবাগত ভোর ৫ টার দিকে উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গণপিটুনির শিকার ওই ব্যাক্তি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু থানার তৈলটুপি গ্রামের বসরত মন্ডলের ছেলে টিটু মন্ডল (৩৭)। পরে আলমডাঙ্গা থানাপুলিশের নিকট তুলে দেয় এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত ভোরে কয়েকজন কৃষক মাঠে কাজ করতে যাচ্ছিল। এসময় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে বিভিন্ন জমির কলার কাঁদি কাটতে দেখতে পায়। তার পরিচয় জানতে চাইলে, প্রথমে সে পাশ্ববর্তী গ্রাম বকসিপুর গ্রামে বাড়ি বলে দাবি করেন। পূণরায় ওই ব্যাক্তি ভ্যান যোগে চুরিকৃত কলার কাঁদি নিয়ে যাবার সময় এলাকার আরো কয়েকজন কৃষক বাড়ি জানতে চাইলে সে হরিণাকুন্ডু থানার তৈলটুপি গ্রামে জানায়। এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়, পরে তাকে নিয়ে আসে মাধবপুর মক্তব প্রাঙ্গণে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে বিভিন্ন জমি থেকে কলার কাঁদি গুলো চুরি করেছে বলে স্বীকার করে। পরে উত্তেজিত জনতা ওই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের নিকট তুলে দেয়।

আলমডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারজাহান জানায়, মাধবপুর-বকসিপুর মাঠে কলা চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে আটকে রাখে এলাকাবাসী । খবর পেয়ে ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। চুরিকৃত ছোট-বড় ৩৪ টি কলার কাঁদি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে।




চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আফরোজ পারভিনের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন ও মোমিনপুর ইউনিয়নের সরিষাডাঙ্গায় যুব মহিলা লীগের উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় চুয়াডাঙ্গা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি আফরোজ পারভিন এর নেতৃত্ব মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের রুমা খাতুন ও মোমিনপুর ইউনিয়নের যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য লতা খাতুনের আয়োজনে এই উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করে যুব মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা পারভিন বলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট সাড়ে পাঁচ লক্ষ ভোটার এর ভিতরে নারী ভোটার প্রায় তিন লক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদর্শনায় ও চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃত্ব আমরা সকল নারীকে ঘরের বাইরে এনে নারী জাগরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন তুলে ধরেন ও লিফলেট বিতরণ করেন এবং আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারো শেখ হাসিনা সরকার ও নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন , সহ-সভাপতি- পূর্ণিমা হালদার,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, আওয়ামী লীগ কর্মী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সহ ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ।




চুয়াডাঙ্গায় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণ

চুয়াডাঙ্গায় ৫০তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩ এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা স্কুল মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির উদ্যোগে জেলা শিক্ষা অফিস চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়ামে আজ শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় জেলা পর্যায়ে ৫০তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীন ০৩(তিন) দিনব্যাপি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. জনাব কিসিঞ্জার চাকমা। এ সময় তিনি বলেন, খেলাধুলা শরীর মন সুস্থ রাখে। সেই সাথে মাদক থেকে দূরে থাকতে ক্রীড়া বিশেষ ভাবে ভূমিকা রাখে। পড়ালেখার পাশাপাশি আমাদের যে সকল যুবসমাজ আছে তাদের সকলের খেলাধুলা ও ক্রীড়া চর্চা করতে হবে।এ সময় তিনি অভিভাবকদের বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে বলেন, আগামী প্রজন্মকে সঠিক ভাবে গঠন করে তুলতে হলে আপনাদের সন্তানদের সঠিক ভাবে দিকনির্দেশনা দিতে হবে সেইসাথে খেলাধুলা চর্চার উপর জোর দিতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন, চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন আক্তার, চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিসার ও সম্পাদক জেলা স্কুল মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি মোঃ আতাউর রহমান সহ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী খেলোয়ার, কোচ, কলাকুশলী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী, সাংবাদিকবৃন্দ, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।




তৃতীয় বৃহত্তম বাজার হবে বাংলাদেশ! বিশ্বজুড়ে হৈচৈ

বাংলাদেশ হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার! জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের পরেই জায়গা হবে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই কথাটি বলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু কিসের জোরে? ১৭ কোটি জনসংখ্যার এই দেশ কোন ম্যাজিকে রাতারাতি বিশ্বের নজর কাড়বে? উত্তর রয়েছে শেখ হাসিনার কথায়। নদী ঘেরা আজকের বাংলাদেশ সাজছে উন্নত স্মার্ট রূপে। তাই আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে নিয়ে একটু বেশি হৈচৈ হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দেশ হলেও, প্রাকৃতিক সম্পদে ঠাসা বাংলাদেশ। তাই তো এখানে বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্র নেতাদের আনাগোনা একটু বেশি। তার উপর বঙ্গোপসাগরের গা ঘেঁষে থাকা ইন্দোপ্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশ হওয়ায় বিশ্ব ভূ রাজনীতিতে বাংলাদেশে কদর খানিকটা বেশি। এবার সেই দেশ হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম বাজার, কিন্তু কীভাবে?

বাংলাদেশের বাজারটা অনেকটা বড়। আর সেই বাজারকে গোটা বিশ্বের কাছে আকৃষ্ট করতে চাইছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাই তো কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই এমন কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বাজারের কেন্দ্রস্থলে। এছাড়া, আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ। যার বৃহৎ অংশ যুবসমাজ। বাংলাদেশের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে পুনঃবিনিয়োগ থেকে। এ থেকে প্রমাণ হয় বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ বিদ্যমান।’

ভৌগোলিক ভাবে বাংলাদেশ রয়েছে ৩০০ কোটি মানুষের বাজারের কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশেও প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বসবাস। স্বাভাবিকভাবেই গোটা বিশ্বর কাছে বাংলাদেশ একটা আকর্ষণীয় বাজার। এই ব্যাপারটাকেই টার্গেট করতে চাইছেন শেখ হাসিনা। তাঁর কথায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিত্তশালী ব্যক্তির জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে তিন কোটিতে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ টক্কর দেবে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যকে। হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বাজার। তাই উন্নয়নে অবদান রাখতে আগ্রহী, এমন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলার অপেক্ষা করছেন তিনি।

এব্যাপারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় এ দেশের অর্থনীতিকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। আমার বিশ্বাস, সেই কিসিঞ্জার যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনিই এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে বিস্মিত হতেন। এখন আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব করে বলতে পারি সেই তলাবিহীন ঝুড়ি আজ বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের এক রোল মডেল।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক দূর এগিয়েছে। স্বাধীনতার সময়ে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে পাকিস্তান এগিয়েছিল। প্রতিটি সূচকেই তারা বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে আছে। এটিই আমাদের স্বাধীনতার বড় অর্জন।’

বাংলাদেশে এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটা উচ্চমানের বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাঁর কথায়, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখন সব রকম খাতই খোলা। কৃষিপণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চিকিৎসা সরঞ্জাম,অটোমোবাইল থেকে শুরু করে জাহাজ নির্মাণ ও আইসিটি খাতে দুর্দান্ত বিনিয়োগ করা যাবে। বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ সহজ পদ্ধতিতে ফিরিয়ে নিতে পারবেন আপন দেশে।

আগ্রহ বাড়াতে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে প্রায় ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯ টি হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক সহ আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার। পাশাপাশি আধুনিক পরিকাঠামোতে সাজছে স্থল, রেল এবং বিমান যোগাযোগ। বাংলাদেশের অধিকাংশ মহাসড়কই চার কিংবা তার থেকেও বেশি লেনে উন্নীত করা হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলাকে ঢাকা সহ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করেছে পদ্মা সেতু। খুব শিগগিরই সেতুর মাধ্যমে সূচনা হবে ঢাকা এবং খুলনার রেল যোগাযোগ। অপরদিকে প্রস্তুত কর্ণফুলী আন্ডারওয়াটার টানেল, এই ধরনের অবকাঠামো দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম। স্বপ্নের পর্যটন নাগরিক কক্সবাজারের সঙ্গে দ্রুত সংযুক্ত হবে চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ। আপাতত লক্ষ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ভিত্তিক এবং উন্নত স্মার্ট দেশে পরিণত করা। ২১০০ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। হাঁ হয়ে দেখবে পুরো বিশ্ব।




এইচএসসি পাসে নিয়োগ দেবে জেন্টল পার্ক

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জেন্টল পার্ক। প্রতিষ্ঠানটিতে আউটলেট ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

আউটলেট ম্যানেজার

পদসংখ্যা

মোট ১৫ জন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

এইচএসসি পাস প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছর।

পুরুষ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

কর্মস্থল

খুলনা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ।

বেতন

২৫,০০০ – ৩০,০০০ (মাসিক )

আবেদন প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা বিডিজবস অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সূত্র : বিডিজবস




মেহেরপুরে শহিদুল ইসলাম পেরেশানের গণসংযোগ

শেখ হাসিনা কে আবারো ক্ষমতায় রাখতে ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের গণসংযোগের আয়োজন করা হয়।

আজ শনিবার বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলা বুড়িপোতা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে গণসংযোগের আয়োজন করা হয়।

মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানার সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট মিয়াজান আলী, জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান চাদু, সদর থানা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, মেহেরপুর জেলা পরিষদের সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন মিরন, মেহেরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ সহ বিভিন্ন নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।




সরকারের ধারাবাহিকতায় আলোকিত দেশ

আজ থেকে ২৫-৩০ বছর আগেও বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বিস্তৃীর্ণ জনপদ সন্ধ্যার পর ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত হতো। সন্ধ্যার পর পরই নেমে আসতো রাতের গভীরতা। মানুষজন পরের দিনের সূর্যের আলোর দেখার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পড়তেন। গ্রামেগঞ্জে কিছু কিছু বাড়িঘরে কূপি বাতি কিংবা লণ্ঠনের আলো নিভু নিভু জ্বলত। কারণ ওইসব বাড়িতে শিশুরা পড়ালেখা করতো। বিদ্যুৎ এর আলো গ্রামের গঞ্জের মানুষের একটা বিস্ময় জাগানিয়া বিষয় ছিলো। দূরের গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছবে এটা স্বপ্নেও ভাবেনি এদেশের মানুষ। তাদের কাছে বিদ্যুৎ মানে জেলা বা উপজেলা সদরের সরকারি অফিস-আদালত আর্থিকভাবে অবস্থা সম্পন্ন বাড়িতে বাতি জ্বলা। এতেই তাদের আনন্দ। দুর্গম জনপদে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলবে এটা তাদের ভাবনায় ছিলো না কখনোই। দূরের গ্রাম থেকেই শহরের লাল-নীল বাতি দেখওতেই তারা অভ্যস্ত ছিল।

স্বাধীনতার পর ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এমন অন্ধকারই ছিলো বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম, জনপদ। ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি। এই সময়ে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেমন মনোযোগ দেয়নি। তাদের ওই সময়ের শাসনামলে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে মাত্র এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দলটি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে প্রায় ২১ বছর পর জনগণের রায়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়। এই সময়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশকে এগিয়ে নিতে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এরমধ্যে অন্যতম ছিল দেশের মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোরজগতে নিয়ে আসা। সে লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়। মাত্র পাঁচ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৮০৩ মেগাওয়াট।

কিন্তু সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকায় ওই সময়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল সেই ধারাবাহিকতাতেও ছেদ পড়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই। ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে বিএনপির পাঁচ বছরের শাসনামলে বিদ্যুৎখাতে আবারও পিছনের দিকে হাঁটতে শুরু করে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের এই মেয়াদে দেশে বিদ্যুৎ এর উৎপাদন হয়েছে তিন হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকার যে তিন হাজার ৮০২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন করে গিয়েছিলো সেখান থেকে কমেছে আরও ৫৩৪ মেগাওয়াট।

অথচ, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়লে সাধারণ মানুষকে বিদ্যুৎ এর খাম্বা দেখিয়েই হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে হাওয়া ভবন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান হাওয়া ভবনে বসে বিকল্প সরকার পরিচালনা করতেন। সেখানে বসেই তিনি বন্ধু মামুনকে সঙ্গে নিয়ে খাম্বা ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। যার ফলে ওই সময়টায় মানুষ বিদ্যুৎ পায়নি। শুধু খাম্বাই দেখতে পেয়েছে। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন না হওয়ায় বাংলাদেশের জনপদের পর জনপদ আবারো অন্ধকার যুগে প্রবেশ করে। আওয়ামী লীগ আমলে বিদ্যুৎ উপাদনের ফলে যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছিল সেগুলোও অন্ধকার হয়ে যায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। আর শিল্পকারখানা তো গড়ে উঠার সুযোগই পায়নি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ এর অভাবে।

জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক উন্নয়নের গতি অনেকটাই হ্রাস পায়। সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও দাতা সংস্থাগুলো থেকে বিনিয়োগের অভাবে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয় মাত্র ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ সময় প্রতি বছর সারাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায় ৪০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াটের মতো। ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে সারাদেশের লোডশেডিং এর পরিমাণ ছিল প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট। ২০০৬ সালের মে মাসে এসে সেই লোডশেডিং এর পরিমাণ ১০০০ মেগাওয়াট অতিক্রম করে। আর এই সময় সান্ধ্যকালীন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৪২০০ মেগাওয়াট। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে এই লোডশেডিং এর পরিমাণ পরবর্তী বছর নাগাদ ১ হাজার ৬২৪ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়।

জোট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এতোটাই নাজুক হয়ে পড়ে যে, ওই সময় বিদ্যুতের দাবিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে বড় আন্দোলন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে। সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় রাজনীতিক। একই সময় রাজধানীর শনির আখড়ায় হাজার হাজার এলাকাবাসী বিদ্যুৎ ও পানির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন। আন্দোলন গড়ে তুলেন। বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলের এসব ঘটনা এখনও দেশের মানুষ ভোলেনি।

২০০৯ সালের পটপরিবর্তনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠা দিয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় গিয়েই সবার আগে বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে মনযোগ দেয়। দেশের অর্থনীতিকে সচল করতে হলে এর বিকল্পও ছিলো না সরকারের কাছে। কারণ বিদ্যুৎ না হলে যেমন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে না, তেমনি অর্থনীতির চাকাও দ্রুত ঘুরবে না। তাই সরকার শুরুতেই ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয়। কুইক রেন্টার এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত প্রথম দুই-তিন বছরে বিদ্যুৎখাতে পরিবর্তন নিয়ে আসে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এসে দাঁড়ায় ৪৯৪২ মেগাওয়াট আর প্রকৃত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩২৬৮ মেগাওয়াট। ২০১০ ও ২০১১ সালে দৈনিক সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫১৭৪ মেগাওয়াট ও ৪৬৯৮.৫ মেগাওয়াট। ২০১১ সালের জুন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪,৬০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৬০০ মেগাওয়াট। অবশিষ্ট ২০০০ মেগাওয়াট বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে উৎপাদিত। ২০১২ সালের মার্চ মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৮০০৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। ২০১২ সালের ২২ মার্চ পিডিবি রেকর্ড ৬০৬৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এসে দেশে উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ১৭৯। ২৭ মে ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ প্রকৃত সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৪৭১ মেগাওয়াট।

সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনও ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের ১৩ সেপ্টেম্বর দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২৭ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। আর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ সেপ্টেম্বর দেশে দিনের বেলা বিদ্যুৎ এর চাহিদা হচ্ছে ১২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যায় ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। ১৫ সেপ্টম্বর এই চাহিদা ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ৪৫৫ মেগাওয়াট এবং ১৩ হাজার ৯২৬ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল ২৭টি। আর বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫১টিতে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ এর উৎপাদন দ্রুত বেড়ে চলছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিতে বিদ্যুৎ কোনো বিকল্প নেই। এবিষয়টি অনুধাবন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে বিদ্যুৎ এর উৎপাদন দিনকে দিন বাড়িয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পেকুয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মহেশখালী বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, উত্তরবঙ্গ সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে ৭০০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে জি টু জি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিউবো সিএইচডিএইচকে, চায়না জয়েন্ট ভেঞ্চার এবং মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে অনেকগুলো কেন্দ্র থেকেই এরইমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট শিগগির উৎপাদনে আসবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। আর ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি গ্রামকে বিদ্যুৎ এর আলোয় আলোকিত করতে সরকার সব রকম তৎপরতা চালিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। যার ফলে ইতিমধ্যে দেশের শতভাগ গ্রাম বিদ্যুৎয়াতি হয়েছে।

এখন আর বিদ্যুৎ এর অভাবে শিল্প কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকছে না। কিংবা প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও লোডশেডিং নেই। আগে যেভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বিদ্যুৎবিহীন থাকতেন, এখন সেটি আর দেখা যায় না। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে। সরকারের ধারবাহিকতা না থাকলে দেশে যেভাবে বিদ্যুৎ এর উৎপাদন হয়েছে সেটি বন্ধ হয়ে যেতো।