বঙ্গবন্ধুর দর্শন এগিয়ে নিচ্ছেন শেখ হাসিনা

আজ ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, পাট উৎপাদনেও দ্বিতীয়। এছাড়া ধান ও সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় এবং আলু আম উৎপাদনে সপ্তম। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শষ্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কৃষি-দর্শনের আলোয় হাঁটছেন শেখ হাসিনা ।

গল্পটা শুরু বঙ্গবন্ধুর হাতে
মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম মন্ত্রিপরিষদের প্রথম বৈঠকেই সবুজ বিপ্লবের আহবান জানান বঙ্গবন্ধু। দিনটা ছিল ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে অনেকটা সামাজিক আন্দোলনের মত করে এই আহবান জানান তিনি। কৃষকদের সব বকেয়া খাজনার সুদ মাফ করে ভবিষ্যতে যে কোনো কৃষকের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফের ঘোষণা দেন।

রাষ্ট্রপতির ১৩৫ নম্বর আদেশের মাধ্যমে নদী কিংবা সাগরের মধ্যে জেগে ওঠা চরে, জমির মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে দরিদ্র কৃষকদের দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একই সাথে খাস জমি প্রান্তিক অস্বচ্ছল কৃষকদের মধ্যে বণ্টনের উদ্যোগ নেন। পাকিস্তান সরকারের সময় দায়ের করা ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের মুক্তি দেন। কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির ২৭ নম্বর অধ্যাদেশ বলে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেন ‘বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক’।

আবার শুরু করতে হলো
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৪ বছরের সামরিক শাসন এবং পাঁচ বছরের বিএনপি শাসনামলে কৃষি ব্যবস্থাপনা ছিল খুবই দুর্বল এবং বুলি সর্বস্ব প্রচার। এই খাত ভরে গিয়েছিল অপরিকল্পিত খাল খননের মত কিছু লোক দেখানো ছেলে খেলায়। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় আসতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হলো ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত। প্রথমবার সরকার গঠন করলেন শেখ হাসিনা। দেখলেন, দেশে খাদ্য ঘাটতি ৪০ লাখ মেট্রিক টন।
তিনি কাজ শুরু করলেন। প্রথমে কৃষিতে বাজেট বাড়ালেন। ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরের বাজেটে শুধু কৃষি গবেষণার বরাদ্দ ছিল ১২ কোটি টাকা। সরকার ক্ষমতায় আসার বছরেই কৃষিখাতে বাজেটের এই বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে ছিল ঐতিহাসিক। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে, অর্থাৎ সরকার গঠনের পরের বছরই কৃষিখাতের বাজেট উন্নীত হয় ১০০ কোটি টাকায়, যা সম্পূর্ণ ব্যয় করা হয় কৃষি ও কৃষি সংক্রান্ত আইসিটি খাতে।

আরেকটি কালো অধ্যায়
বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত পুনরায় দেশের কৃষিতে ধস নেমে আসে। আওয়ামী লীগ সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেখানে খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে যায়, সেখানে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয় । যে কারণে আমদানি নির্ভরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রয়োজনীয় সরকারি কর্মসূচি ও সীমাহীন দুর্নীতির জন্য কৃষকরা বিপদে পড়েন।

বিদ্যুৎক্ষেত্রে বিএনপি-জামাতের সীমাহীন দুর্নীতির জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। এতে সেচ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা থেকে লাখ লাখ বস্তা সার লুট করে তা দ্বিগুণ দামে খোলা বাজারে বিক্রি করতো বিএনপি-জামাতের কর্মীরা। যেকারণে সারের তীব্র সংকট তৈরি হয়। সারাদেশে বিদ্যুৎ ও সারের অভাবে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন কৃষকরা। আন্দোলনরত কৃষক-শ্রমিকের ওপর পুলিশি নির্যাতন নেমে আসে। কোনো কোনো জায়গায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন কৃষক।

২০০৪ সালের ২৩ মার্চ যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবিরাম লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষক এবং পোল্ট্রি খামারিদের মধ্যে নাভিশ্বাস ওঠে। পোল্ট্রি ব্যবসা প্রায় লাটে ওঠে। গরমে খামারের বাচ্চা-বাচ্চা মুরগিগুলো মারা যেতে থাকে। লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজে তৃণমূলের শতশত সেচপাম্প বিকল হয়ে যায়।
২০০৬ সালের ৫ মার্চ খুলনার রূপসায় বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে নামে জনতা। এসময় জোট সন্ত্রাসীদের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। ওই বছরই বিদ্যুৎ ও সার সংকটের প্রতিবাদে যশোর-মাগুরা ও যশোর-খুলনা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেন চাষিরা। নওগাঁয় বিদ্যুতের জন্য ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক ঘেরাও করেন বিদ্যুৎ অফিস।

একই বছরে বিদ্যুতের দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের কানসাটে আন্দোলনরত জনতার ওপর সরকারের পেটোয়া বাহিনীর অকস্মাৎ গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাতজন সাধারণ মানুষ। পাঁচ মাসের ওই আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান ১৭ জন। আহত হন অন্তত ৬০০ মানুষ। এ ঘটনায় সারাদেশ ফুঁসে ওঠে।

২০০৮ থেকে কৃষিখাতের পুনর্জাগরণ
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ২৬ লাখ টন। প্রথম ক্যাবিনেট সভাতেই সারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ৯০ টাকার ট্রিপল সুপার ফসফেটের দাম কেজি প্রতি ২২ টাকা ও ৭০ টাকার মিউরেট অব পটাসের দাম কেজি প্রতি ১৫ টাকায় নামিয়ে আনেন। ফলে সুষম সার ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি দেয়া, সেচ সুবিধা বাড়ানো, সার বিতরণ ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।

এর পরপরই কৃষি গবেষণায় অগ্রাধিকার দেয় সরকার। যার ফলে প্রতিটি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে ল্যাব উন্নয়নসহ নানামুখী গবেষণা পরিচালনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল কৃষি তথা ‘ই-কৃষি’র প্রবর্তন করা হয়। এখন দেশে মোট ৪৯৯টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি), কৃষি কল সেন্টার-১৬১২৩, কৃষি কমিউনিটি রেডিও, কৃষি তথ্য বাতায়ন তৈরি করা হয়েছে। ফলে দেশের প্রান্তিক কৃষকসমাজ সহজেই কৃষিখাতের আধুনিকায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারছেন।

শেখ হাসিনার সরকার কৃষককে মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেওয়ায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৮টি ব্যাংক হিসাব খোলা সম্ভব হয়েছে, যেখানে বর্তমান স্থিতি প্রায় ২৮২ কোটি টাকা। সরকার ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে প্রণোদনা চালু করেছে। অদ্যাবধি এ কর্মসূচির মাধ্যমে ৮২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার ৩১৩ কৃষক উপকৃত হয়েছেন।

আলোর পথে বাংলাদেশ
২০১৯-২০ অর্থবছরে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৮০০০ কোটি টাকা। করোনা সংকটের মুখে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে ৯৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। বিএনপি আমলে যেখানে মোট ফসল উৎপাদন ছিল মাত্র ২ কোটি ৬১ লাখ টন। সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমলে ২০২২ সালে মোট ফসল উৎপাদন হয় ৯ কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ টন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন সবার আগে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে কৃষি। কৃষকদের জীবনযাত্রার মানেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। লেখাপড়া শেষ করে বহু ছেলে মেয়ে কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। কৃষিখাত হয়ে উঠছে দেশে কর্মসংস্থানের অন্যতম আশ্রয়।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




নাইকো দুর্নীতিতে খালেদা জিয়া ও ‘হাওয়া ভবন’ সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য আসছে

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলা কার্যক্রম আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নতুন পথে হাঁটার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নাইকো দুর্নীতি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এক কর্মকর্তা ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের ২ কর্মকর্তাকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর আদালতে এ আবেদন করেন।

সামনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া এরই মধ্যে একাধিক দুর্নীতির মামলায় সাজা পেয়ে কারাবন্দি। একই সময়ে বাংলাদেশের আদালতে চলছে ‘নাইকো’ দুর্নীতি মামলার শুনানি। এবার সেটা একধাপ এগিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

খালেদা জিয়া ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক এমপি ও ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এরইমধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ কে এম মোশাররফ হোসেনের মৃত্যু হওয়ায় আসামির তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

যেভাবে দুর্নীতি হয়েছিলো

কানাডায় নিবন্ধিত তেল ও গ্যাস উৎপাদন কোম্পানি ‘নাইকো’বাংলাদেশের কয়েকটি গ্যাস ফিল্ড লিজ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলো।  পূর্ব ও পশ্চিম ছাতক গ্যাসফিল্ড নিয়েই মূলত বিতর্ক। ২০০২ সাল পর্যন্ত পূর্ব ছাতক গ্যাস ফিল্ড একটি ভার্জিন গ্যাস ফিল্ড অর্থাৎ গ্যাসে পূর্ণ ছিল বলে বাপেক্স এবং বাংলাদেশের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অভিমত দিয়েছিল। ‘নাইকো’ নানা অসৎ পন্থা অবলম্বন করে আমাদের দেশের তৎকালীন ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে এই পূর্ব ছাতক গ্যাস ফিল্ডটি লিজ নেয় এবং একটি পরিত্যক্ত গ্যাস ফিল্ড হিসেবে এটাকে তখন তাদের হাতে দেওয়া হয়। আসলে এই গ্যাস ফিল্ড কখনো পরিত্যক্ত ছিল না৷ কিন্তু তখন অস্বচ্ছ এক চুক্তিতে নাইকোকে দু’টি গ্যাসফিল্ডই পরিত্যক্ত হিসেবে কম দামে দিয়ে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে তারেক রহমানের হাওয়া ভবন সরাসরি যুক্ত ছিলো।

সেই ‘নাইকো’ দুর্নীতির ঘটনা এখন বিশ্বখ্যাত। কানাডার আদালতে এরইমধ্যে ‘নাইকো’ দুর্নীতি মামলায় কানাডিয়ান অপরাধীদের দণ্ডিত করা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের আদালতে দায়েরকৃত ‘নাইকো’ দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান।

২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর ‘নাইকো’ দুর্নীতি মামলায় রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়। এবছর ৯ সেপ্টেম্বর আবারও সেই আবেদন সামনে আনা হয়েছে। যদি আবেদনটি বাংলাদেশের আদালত আমলে নেয়, তাহলে এটিই হবে বাংলাদেশের কোনো আদালতে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক দুর্নীতির মামলায় বিদেশি নাগরিকের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্যগ্রহণের ঘটনা। এবং মামলার কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ আরেকধাপ এগিয়ে যাবে।

কানাডার তদন্ত শুরু ২০০৫ সালেই

পূর্ব ছাতকের গ্যাস ফিল্ড নেওয়ার ব্যাপারে ‘নাইকো’ যে ঘুষ প্রদান করে, তা নিয়ে কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশ ২০০৫ সালে তদন্ত শুরু করে এবং তারা তদন্তে প্রমাণ পায়, ‘নাইকো’ কোম্পানি কানাডা থেকে ঘুষের টাকা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দেশ হয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল এবং কয়েকজন ব্যক্তিকে ঘুষ দিয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে। এরপর ২০০৮ সালের ৫ মে চুক্তির সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ যে কারণে

এই মামলা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উভয়ের বিরুদ্ধেই ছিল, কিন্তু শেখ হাসিনার বিপক্ষে মামলা খারিজ হয়ে গেছে এবং খালেদা জিয়ার বিপক্ষে মামলা চলছে। অনেক সময় নিন্দুকেরা বলার চেষ্টা করেন যে, কেন শেখ হাসিনার মামলাটি খারিজ হলো। কারণটা স্পষ্ট। কখনো খোঁজ নিয়ে দেখলে প্রশ্নটা উত্থাপন করতো না কেউ। শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ সালে ‘নাইকো’ কোম্পানির সঙ্গে দরকষাকষি করেছে, শেষ পর্যন্ত তারা চুক্তি করেনি। কারণ ‘নাইকো’র একটি শর্ত বাংলাদেশের স্বার্থের বিপক্ষে যাচ্ছিল।

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই নাইকোর সঙ্গে তাদের সব শর্ত মেনে চুক্তি সই করে ফেলে। ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর নাইকো-বাপেক্স জেভিএ সই হয়। পরবর্তী সময়ে কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয় যে নাইকো বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার আমলে ঘুষ দিয়ে কাজ পায়। হাওয়া ভবনের গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ঘুষ নেন এবং খালেদা জিয়ার তৎকালীন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে ১ লাখ ৯০ হাজার কানাডীয় ডলার দামের একটি গাড়ি ও বিদেশ সফরের জন্য পাঁচ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নাইকোর বিরুদ্ধে।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




খালেদার অসুস্থতা ও আন্দোলন নিয়ে বিএনপির লুকোচুরি

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এতোটাই অসুস্থ যে মাসাধিকাল ধরে তিনি এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন আছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সাথে সাক্ষাতে যান এবং প্রতিবারই ফিরে এসে এমন কাতর কণ্ঠে তার মুক্তি দাবি করেন। মঙ্গলবার রাতে যখন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা এভারকেয়ারে গেলেন তখন সাংবাদিকসহ বিএনপির নেতাকর্মীরাও উৎসুক ছিলেন।

সেই রাতে যখন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা হাসপাতালে অপেক্ষা করছিলেন খালেদা জিয়ার সাক্ষাতের। তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই বলছিলেন- ‘আর বেশিক্ষণ না। অল্পক্ষণেই জানা যাবে আসলে কী পরিস্থিতি। কেনো নেতারা ছুটে গেছেন দেখা করতে।’ আশ্চর্যের বিষয় – নেতারা বেরিয়ে এলে বিভ্রান্তি কমবে ভাবছিলেন যারা, কিন্তু নেতাদের বক্তব্য শুনে তারা তারচেয়েও বেশি বিভ্র্রান্তিতে পড়েছেন। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- বাংলাদেশের সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী তাকে নিয়ে আসলে কী ঘটে চলেছে। এই বয়সে যতগুলো জটিল সমস্যা নিয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার নেতাকর্মীরা কি আদৌ সহমর্মী? নাকি রাজনীতিতে তাকে এই মুহূর্তে ব্যবহারের কথা ভেবেই তারা হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

মঙ্গলবার দিনগত রাত ১০টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান নেতারা। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। এ সময় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। রাজনৈতিক কথা বলার মতো অবস্থায় নাই। আমরা কথা বলেছি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। তাকে জানিয়েছি, আমরা এক দফার আন্দোলন করছি। সামনের মাসে আন্দোলন জোরদার করব।’ মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, ‘আপনারা যারা বাইরে আছেন, তারা সবাই মিলে আন্দোলন করেন। আমি দেখতে চাই, আপনারা আন্দোলন করছেন, আন্দোলন করতে হবে।’ আমাদের এই আন্দোলনে তাঁর সমর্থন আছে। তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, কোনো অবস্থায় এই সরকারের অধীনে নির্বাচনি ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।”

লক্ষ্য করুন মাহমুদুর রহমান মান্না বলছেন, ‘রাজনৈতিক কথা বলার মতো অবস্থায়’ নেই। তাহলে? তারপরে তিনি বলছেন, খালেদা জিয়া ‘আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন’, খালেদা জিয়া নির্বাচনের ফাঁদে পা না দিতে বলেছেন’। এই পরের কথাগুলো মাহমুদুর রহমান মান্নার কাছে অরাজনৈতিক কথা? এগুলো খালেদা জিয়া সত্যিই বলেছেন তো? বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার বলছেন, উনি ‘খুব অসুস্থ’। হাসপাতালে খুব অসুস্থ মানুষ খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে সেদির রাতে হাসপাতালের বাইরে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) বলেছেন, দেশকে বাঁচাতে হলে এই আন্দোলনটা করতে হবে, দেশকে রক্ষা করতে এই আন্দোলনে বিজয়ী হতে হবে।’

এদিন হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়া গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মধ্যে ছিলেন- জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সমন্বয়ক এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম। তাদের প্রত্যেকের কথায় ছিলো ‘খালেদা জিয়া আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন’।

গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বেগম খালেদা জিয়াকে। এরপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানান সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়া তার মেরুদণ্ড, ঘাড়, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে এভার কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন তথ্য দিতে চায় না। গণমাধ্যমকে নিয়মিত তথ্য জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ। মঙ্গলবার যে নেতারা রাতে হাসপাতালে সাক্ষাত করেছেন এবং গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তাদের বক্তব্য উৎসুক মানুষের মনে বিভ্রান্তি কমাতে পারেনি, বরং বেড়েছে।




দর্শনায় আইডিয়াল স্কুল এন্ড ক‌লেজে বৃক্ষরোপণ অনুষ্টানে এমপি টগর

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় দর্শনা আইডিয়াল স্কুল এন্ড ক‌লেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় দর্শনা পুরাতন বাজার জোড়া বটতলা সংলগ্ন দর্শনা আইডিয়াল স্কুল এন্ড ক‌লেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ হাজী মোঃ আলী আজগার টগর।

তিনি বলেন,বৃক্ষকে ভালো বাসুন, বৃক্ষনিধন থেকে দূরে থাকুন,বেশী বেশী বৃক্ষ রোপন করুন। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলারও চর্চা করতে হবে।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ‌স্থিত ছি‌লেন দর্শনা আইডিয়াল স্কুল এন্ড ক‌লে‌জের প‌রিচালক ও উদ্যোক্তা গোলাম ফারুক আরিফ, সভাপ‌তি উত্তম রঞ্জন দেবনাথ, আজমপুর সঃ প্রাঃ প্রধান শিক্ষক স্বরুপ কুমার দাস প্রধান শিক্ষক তনুশ্রী বসু,লি‌টিল এন‌জেলস ইন্টা স্কু‌লের প্রধান শিক্ষক বিকাশ কুমার দত্ত ও বিদ‌্যাল‌য়ের সহকা‌রি প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম, সোলাইমান হক,মোঃ রফিক উদ্দিন,প্রলয় শীল,আনন্দ কুমার, সুমি খাতুন ,বাবুল আক্তার ,প্রান্ত বিশ্বাস, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম,সহসভাপতি মাহমুদ হাসান রনি, সাধারন সম্পাদক হানিফ মন্ডল, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল, সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু,ইমতিয়াজ রয়েল ও সাংবাদিক হারুর রাজু প্রমুখ।




দর্শনায় জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে র‌্যালী ও আলোচনা সভা 

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে দর্শনা পৌরসভার আয়োজনে এ র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথমে পৌরসভা সকল কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ পৌরসভা থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী নিয়ে দর্শনা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভায় যেয়ে এক আলোচনা সভা করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে দর্শনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রবিউল হক সুমনের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন, সহকারী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত সচিব) সাজেদুল আলম, প্রধান সহকারী রুহুল আমিন খাঁন, হিসাব রক্ষক সরোয়ার হোসেন, প্যানেল মেয়র-২ রেজাউল ইসলাম, কাউন্সিলর সাবির হোসেন মিকা, হাসান খালেকুজ্জামান, মনির সর্দার, সাইফুল ইসলাম, আশুরদ্দীন আশু।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, শাহালম, জাহিদুল ইসলাম, মোমিনুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, মেহেদী হাসান সহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি গণ।




চুয়াডাঙ্গা জেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সামসুন্নাহার

ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখেছেন রুদ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সামসুন্নাহার। ২০১৯ সালে উপজেলা সহকারী শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। ২০২২সালে কাব স্কাউটস এ উডব্যাজ অর্জন।

২০২১ শিক্ষকদের সবচেয়ে বড়ো প্লাটফর্ম শিক্ষক বাতায়নে চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে প্রথম মহিলা এ্যাম্বাসেডর নির্বাচিত হন।জাতীয় দিবসে তার নেতৃত্বে প্রতিবার কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লেতে পুরস্কার অর্জন করে এ বিদ্যালয়টি।

৪ টি উপজেলার সহকারীদের শিক্ষকের সাথে প্রতিযোগিতা করে জেলার মধ্য শ্রেষ্ট শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু,রুদ্রনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন,দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম,রুদ্রনগর সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষক বৃন্দ সহ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।




চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আফরোজা পারভীনের পথসভা উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ

চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে পথসভা উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ  বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নে ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি ইউপি সদস্য সাবিয়া খাতুন এর আয়োজনে এই নির্বাচনী উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশি আফরোজা পারভীন।

এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। দেশকে উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে আগামী দিনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।

আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গণসংযোগের সময় সরকারের উন্নয়ন কাজের চিত্র তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভপতি পূর্ণিমা হালদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ রাতুল, সাকিব শেখ , মাহফুজ, আকাশ,কুতুব, রিপন,শাওন, সিফাত,জিরান,সেজান ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ।




মেহেরপুরে হ্যান্ডবল ফাইনালে বাড়িবাঁকা সীমান্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

মেহেরপুর জেলা পর্যায়ে ৫০ তম জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা পর্যায়ের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মুজিবনগরের গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়কে পরাজিত করে হ্যান্ডবল ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছে বাড়িবাঁকা সীমান্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে মেহেরপুর সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন বাড়িবাঁকা সীমান্ত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ২-১ গোলে মুজিবনগর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন গোপালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়কে পরাজিত করে জেলা পর্যায়ের ফাইনালে পৌছে।




সীমান্তে নেওয়া হলো মুক্তিযোদ্ধার লাশ, তবুও দেখা হলো না স্বজনদের

সীমান্তের শূন্য রেখায় শেষ বারের মত বাবার মুখ দেখার সুযোগ করে দিবে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ। মৃত্যুর পর কাটাতাঁরের কাছে বাবার লাশ নিয়ে অপেক্ষায় স্বজনরা। অপেক্ষা বাড়লেও শেষ পর্ষন্ত বাবাকে শেষ বারের মত দেখার অনুমতি বিএসএফ এর কাছে থেকে না পাওয়ায় ভারতে বসবাসরত ছেলে ও মেয়েকে ফিরতে হয় বুকভরা কষ্ট নিয়ে।

ঘটনাটি আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়ক সীমান্তে। মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন দফাদার গতকাল বুধবার বিকেলে বার্ধক্ষ্যজনিত কারনে মৃত্যু বরণ করেন। এক মেয়ে ও দুই ছেলে বিবাহ বন্ধনের কারনে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে বসবাস করে আসছেন।

ছেলে মাইকেল দফাদার বলেছে, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ওপারে কাটাতাঁর কাছে অপেক্ষা করতে থাকেন আমার ভাই বোন ও অন্যান্য স্বজনরাা। বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফ কে চিঠি দিলে তাদের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতি না পাওয়ায় শেষ বারের মত বাবার মুখ দেখতে পারলেন না সন্তানরা। বিয়ের পর ভারতে থেকে যায় মেয়ে ও দুই ছেলে। বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তার কাটার এপারে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়ায় বসবাস শুরু করে। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন দফাদার ১৯৭১ সালে পাক বাহীনির সাথে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেন। এর পর সীমান্তে কাটাঁতারের বেড়া দিয়ে দুই দেশ ভাগ হলে পিতা ও সন্তানরা দুই দেশে বসবাস শুরু করেন। সীমান্তের তারকাটা দূরত্ব বাড়িয়ে রাখে বাবা ও ছেলে মেয়েদের মধ্যে। এর আগে বাবার জীবিত মুখটা দেখার জন্য বহু চেষ্টা করে দেখা হয়নি তাদের। মুঠোফোনে কথা বলে শান্তি খুজতো তারা।

গতকাল (১৩ সেপ্টম্বর) বিকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজ বাড়ীতে বাধ্যর্কজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর খবরে শেষ বারের মত বাবার মুখটা দেখার জন্য ভেঙ্গে পড়েন তারকাটার ওপারে থাকা সন্তানরা। আত্মীয়স্বজনরা অনুরোধ করেন সীমান্তরক্ষি বাহীনি বিজিবি কে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষি বাহীনির উচ্চ মহলে চিঠি চালাচালির পর মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়কের ১০৫ নাম্বার মেইন পিলারের কাছে শেষ বারের মত বাবার মুখটা দেখোনোর জন্য মরাদেহ নিয়ে আসা হয় শূন্য রেখায়। সেখানে ওপারে অপেক্ষায় থাকা দুই ছেলে ও মেয়ের জন্য অপেক্ষায় থেকে দুপুরে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয় উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতি না পাওয়ায় বাবার লাশ দেখানো যাচ্ছে না।

বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মাইকেল দফাদার বলেন, মৃত্যুর পর বাবার মুখটা শেষ বারের মত দেখতে পেলে কিছুটা মনকে শান্তনা দিতো আমার ওপারে থাকা ভাই বোনরা। আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে বিজিবি কে অনুরোধ করেছিলাম শেষ বারের মত আমার বাবার মুখটা দেখার ব্যাবস্থা করার জন্য। শেষ পর্ষন্ত ভারতীয় সীমান্তরক্ষি বাহীনির অনুমতি না পাওয়ায় দেখানো হলোনা। লাশ নিয়ে এখন দাফনের ব্যাবস্থা করবো।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবের হোসেন বলেন, সীমান্ত গ্রাম গুলোতে বসবাসকারীরা বলছেন এমন ঘটনা এবারী প্রথম। অনেকের আপনজন বাবা মায়ের মৃত্যুর খবর পেলেও সীমান্তের শূন্য রেখায় শেষ দেখার ব্যাবস্থা করেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষি বাহীনি। এবার তারকাটার কাছে গিয়েও আকুতি জানিয়ে চোখের জলে ফিরে এসেছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ সকালে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফ কে একটি চিঠি দেওয়া হয়। শেষ বারের মত বাবার লাশ সীমান্তের শূন্যরেখায় দেখানোর জন্য। পরে দুপুরে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানায় অনুমতি না মেলায় দেখানো সম্ভব হচ্ছে না।

সাবেক ইউপি সদস্য দিলীপ মন্ডল বলেন, এখানকার বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার ভারতের হৃদয়পুর বিএসএফের সাথে সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন যোগাযোগ করার। ছেলে এবং মেয়েকে তার বাবার মরা মুখটা দেখানোর জন্য, কিন্তু সেটা হয়নি। তবে এর আগে এখানকার একটা মেয়ে মারা গেছিল সেটা দেখানো হয়েছিল।




মেহেরপুর যুব মহিলা লীগের উদ্যোগে উঠান বৈঠক

সরকারের সাফল্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা পৌছে দিতে ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মেহেরপুরে যুব মহিলা লীগের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মেহেরপুর পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড যুব মহিলা লীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিল মাঠ প্রাঙ্গণে উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

মেহেরপুর পৌর যুব মহিলা লীগের সভাপতি রোকসানা কামাল রুনুর সভাপতিত্বে উঠান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সদস্য সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম, মেহেরপুর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রুতশোভা মন্ডলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হালিম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন বুলবুল, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আশরাফ রাজীব। উঠান বৈঠকে যুব মহিলা লীগের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।