মেহেরপুরে নামল স্বস্তির বৃষ্টি

টানা তীব্র তাপদাহের পর অবশেষে মেহেরপুরের নামল স্বস্তির বৃষ্টি। ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি মানুষের মনে এনে দিয়েছে প্রশান্তি।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৩০মিনিট থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত আকাশে ঘন ঘন দমকার সাথে সাথে জেলাজুড়ে শুরু হয় বৃষ্টি।

গত কয়েকদিন ধরেই মেহেরপুরে ছিল তাপমাত্রা। কয়েক দিনের তাপদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা সৃষ্টি হয় জনজীবনে।

গাংনী উপজেলা শহরের বাসিন্দা এসএম সেলিম রেজা ও মজনু বলেন, তাপদাহে কোথাও এতটুকু স্বস্তি ছিল না। গরমে কষ্ট পাচ্ছিলেন সবাই। বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন অনেকেই। তাই সেই দীর্ঘ প্রত্যাশার বৃষ্টি পেয়ে স্বস্তি সবার মাঝে। অনেকেই ভিজেছেন শান্তির বৃষ্টিতে।




পাটে নয়, স্বস্তি পাটকাঠিতে

মেহেরপুরে এবছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু পাটের দাম কৃষককে লোকসানের মুখে ঠেলে দিয়েছে। তবে কৃষকের মুখে কিছুটা স্বস্তির হাসি ফুটিয়েছে পাঠকাঠি। পাটের দাম খুব একটা ভালো না পেলেও পাটকাঠির দাম দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। এ কারণে এখন মেহেরপুরের অলি গলিতে, পাকা সড়ক, মাঠঘাট যেখানে চোখ যায় সেখানেই চোখে পড়ে পাটকাঠি শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণের আয়োজন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাটকাঠি আগের মতো অবহেলায় ফেলে না রেখে যত্ন করে শুকিয়ে মাচা তৈরি করে রাখছেন চাষিরা।

স্থানীয়রা জানান, পাটকাঠি কোথাও আবার পাটখড়ি নামেও পরিচিত। আগে সস্তা জ্বালানির বাইরে পাটকাঠির তেমন ব্যবহার ছিল না। আর কিছু ভালোমানের পাটকাঠি পানের বরজে আর ঘরের বেড়া তৈরিতে ব্যবহার হতো। কিন্তু এখন আর এটি মূল্যহীনভাবে পড়ে থাকে না। বাজারে পাটকাঠির চাহিদা বাড়ায় আঁশের পাশাপাশি কাঠির দামও ভালো পাওয়া যায়।

গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের পাট চাষি মজনুর রহমান বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও পাটখড়ির তেমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু এখন বেশ চাহিদা। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পাটকাঠি কিনছেন, ভালো দামও দিচ্ছেন। ১০০ মোটা পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। শুধু পাট বিক্রি করেই নয়, এবার পাটখড়িও আমাদের এলাকায় কৃষকের আশা জাগিয়েছে।’

মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, পাটকাঠি একসময় শুধু রান্না-বান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া ও ছাউনির কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন এই পাটকাঠি পানের বরজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বাইরের জেলা থেকেও ফঁড়িয়ারা পাটকাটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

সদর উপজেলার দিঘীরপাড়া গ্রামের মোস্তাকিম বলেন, এ বছর পাট চাষ করে মুনিস খরচ উঠছেনা। জাগ দেওয়ার জন্য পুকুর খরচ, জনপাটের খরচ দিতে গিয়ে চাষী গেরহস্তদের কিছু নেই। এখন পাটকাটি বিক্রিই একমাত্র ভরসা। তবে, পাটকাটির এবার দাম বেশি। কারন এলাকার মানুষ নয়, বিভিন্ন এলাকা থেকে ফঁড়িয়া ও মহাজনরা এসে পাটকাটি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা এলাকা থেকে আসা পাটকাঠি ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান, সামসুর রহমান জানান, তারা ৫-৬ বছর ধরে পাটকাঠির ব্যবসা করছেন। আগে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটকাঠি কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন তারা। এখন জেলায় প্রায় এক ডজন কার্বন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। এই অঞ্চলের পাটকাঠি দিয়ে এসব ফ্যাক্টরির চাহিদা মেটানোই কষ্টসাধ্য। তাই তারা এসেছেন মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে পাটকাটি কিনতে। তারা আরও বলেন, আর আগের মতো পাটকাঠি কিনতে পারেন না। কারণ বর্তমানে পাটকাঠির দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘জেলায় এবার মোট ২১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের রং না আসায় এবং বড় কিছু মিল বন্ধ থাকার কারণে পাটের বাজারে দাম কম। এতে কৃষকরাও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে এই পাটকাঠি।




বাংলাদেশের অর্জন এবং শেখ হাসিনা

আজ থেকে চার দশক আগেও বাংলাদেশকে একটা তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে জানতো এবং চিনতো পুরো বিশ্ব। বিভিন্ন দেশ আর দাতা সংস্থার সাহায্য নিয়েই চলতো বাংলাদেশ। বিশ্ব দরবারে আমাদের পরিচিতি ছিলো হতদরিদ্র, গরিব রাষ্ট্র হিসেবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা ছিলো না। আর্থিক অবস্থা ছিলো একেবারেই দিনহীন। ছিলো না উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেশি কিংবা বিদেশী বিনিয়োগের পরিবেশ সে তো অনেক দূরের বিষয়। এ কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না।

সেই দরিদ্র, ভঙ্গুর অর্থনীতির রাষ্ট্র বাংলাদেশের চেহারা আমূল পাল্টে গেছে গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময়ে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে আজ বাংলাদেশের পরিচিতি একটি উন্নয়নশীল এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমের চোখে বাংলাদেশ এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই। এটি আগামী দেড় দশক পর অর্থাৎ ২০৪০ সালে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। সে লক্ষ্যে পাল্লা দিয়ে ছুটছে প্রতিদ্বন্দ্বি দেশগুলোর দিকে। এ কারণে বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোর চোখ এখন ৫৫ হাজার বর্গ মাইলের ব-দ্বীপের দিকে। চীন, ভারত, জাপান, সৌদিআরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। এসব দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে তাদের বিনিয়োগের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। আর এ দিক থেকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে চীন।

এই যে মাত্র এক দশক সময়ে বাংলাদেশের চেহারাটা পাল্টে গেলো, বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে তাদের বিনিয়োগের উত্তম স্থান হিসেবে বেছে নিচ্ছে এবং নিলো তার নেপথ্যের কারিগর কিন্তু একজন। আপনি মানেন বা না মানেন স্বীকার করেন বা না করেন- তাতে কিছু যায় আসে না। সত্যটা হচ্ছে- গত এক দশকের বেশি সময়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে টেনে নিয়েছেন যিনি তিনি শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী টানা তিনবার সহ চার বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার হাত ধরেই আজ বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ।

গত এক দশকের বেশি সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অবিস্মরণীয় উন্নতি করেছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং মানবিক উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব নেতাদের কাছে বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ।

যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ক সামিয়িকী দি ইকোনমিষ্টের সহযোগি প্রতিষ্ঠান ‘ইকোনমিষ্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআরইইউ) ‘ এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০৪০ এর মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি দেশের অর্থনীতির একটি হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাজারের আকার, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনাময় কিছু খাতের ওপর ভিত্তি করে ইআরইইউ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য পছন্দের গন্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশ।

চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় তার একটা তালিকা তৈরি করে ইআরইইউ বলেছে, তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। অথচ ২০১৩ সালেও এই অবস্থান ছিল ৫২তম। অর্থাৎ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আগের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল।

ইআরইইউ’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোগ্যপণ্য, তথ্য-প্রযুক্তিসেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং গাড়ি শিল্প। প্রতিবেদন অনুযায়ি বাজার সম্প্রসারণমূলক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যের দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশের আগে আছে ইন্দোনেশিয়া। আর পরের দিকে আছে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, মিশর, ভারত ও তানজানিয়া। আর সাপ্লাই চেইন বা সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নমূলক বিনিয়োগে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম।

তিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব দেশে ঝুঁকি কম এবং সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি সেই সূচকে সবার উপরে বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের পরে রয়েছে কম্বোডিয়া, কলম্বিয়া, মিশর, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া ও ইসরায়েল। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব গন্তব্য দেশের সুযোগ সবচেয়ে বেশি সেই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। অনেক দেশের বিনিয়োগকারীরা এখন এই বাজার ধরতে চান।  ইআরইইউ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী এক দশকে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠির আকার পাঁচ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

ইআরইইউ এর এই প্রতিবেদন বলে দিচ্ছে বাংলাদেশ কতোটা গিয়েছে এবং কতোটা সম্ভাবনার দেশে পরিণত হয়েছে।

একটা দেশের উন্নয়নে বা উন্নতীতে নেতৃত্ব যে একটা বড় বিষয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর প্রায় ৩০ বছর বাংলাদেশে পরিচালিত হয়েছিল ছিলো সামরিক শাসন আর স্বাধীনতা বিরোধীদের নেতৃত্বে। এই সময়টায় বাংলাদেশকে সব সময় দরিদ্র রাষ্ট্র হিসেবেই পরিচিত করে তোলা হয়েছিল গোটা বিশ্বে। যার ফলে বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি।

কিন্তু গত প্রায় দেড় দশক ধরে দেশের নেতৃত্বে দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার সুযোগ্য, বিচক্ষণ ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্ব মানচিত্রে নতুন   পরিচয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। একটি সমৃদ্ধ, সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ কারণে আজ বিনিয়োগকারীরা ছুটে আসছেন বাংলাদেশে।

শুধু যে বিনিয়োগকারীরাই আসছেন তা নয়। বিশ্ব নেতাদেরও আগমন ঘটছে বাংলাদেশে। তেমনি ব্রিকস-এর মত শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোটেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ পেয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের নয়া দিল্লীতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনেও বাংলাদেশ ছিল আমন্ত্রিত। শুধু আমন্ত্রিতই নয় সম্মেলনে প্রায় সব অধিবেশনেই অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকও করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে বিশ্বের প্রভাবশালী অনেক দেশের নেতারা এসছেন। সর্বশেষ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ঘুরে গেছেন। রবিবার ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এ্যামানুয়েল ম্যাক্রো দুই দিনের সফরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে একাধিক বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।

বিশ্ব নেতাদের এই সফর জিও পলিটিক্সে ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব বাড়ছে। আর ইন্দোপ্যাসিফিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। এখানে বাংলাদেশের অবস্থানও নিরপেক্ষ। বাংলাদেশ সরাসরি কোন ব্লকের সাথে সংযুক্ত নেই। এ কারণে যেমন চাপে আছে বাংলাদেশ, তেমনি সবার লক্ষ্যবস্তুতেও পরিণত হয়েছে।

ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের যোগ্য নেতৃত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে গত ২৯ আগস্ট “হিন্দুস্থান টাইমস” লিখেছে “দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় রাজনৈতিক স্থিরতা এবং আঞ্চলিক উগ্রবাদীতা প্রশমনে শেখ হাসিনার ভূমিকা অনস্বীকার্য। যারা শেখ হাসিনার উপর অনভিপ্রেত চাপ দেয়ার চেষ্টা করে আসলে তারা এই ইন্দো প্যাসিফিকের শান্তিকে বিনষ্ট করতে চায়”।

শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন থেকে পিছিয়ে আসা, আমেরিকার ভিসা স্যাংশন নীতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের চাপ, মার্কিন সিনেটরদের বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে চিঠি, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করার এতো চাপ সত্ত্বেও কোন কিছু থেকেই পিচিয়ে যায়নি বাংলাদেশ।  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ‘কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ পররাষ্ট্রনীতিতে অনড় রয়েছেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সকল বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন নিজের বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা দিয়ে।  তাঁর এই সাহসিকতার প্রশংসা  করেছেন রাশিয়ার সফররত  পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভারভ।

তিনি বলেছেন “যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশের বন্ধুরা বিদেশি শক্তিকে মোকাবিলা করে নিজেদের জাতীয় স্বার্থে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে, যা প্রশংসার দাবী রাখে”। একই কথা বলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিনপিং।

বিশ্বনেতারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থে একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাইলেও, তারা ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগি হিসেবে শেখ হাসিনাকেই চাইছেন। গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে একটা জরিপ পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান এসোসিয়েশন নামে একটি আমেরিকান সংস্থা। তাদের জরিপেও উঠে আসে বিষয়টি, সরকারের অনেক কর্মকান্ড বিশেষ করে দুর্নীতি আর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সমালোচনা করলেও ৯০শতাংশ জনগণ শেখ হাসিনার হাতেই নেতৃত্ব দেখতে চায়। শেখ হাসিনা শুধু নিজ দেশ বা আঞ্চলিক গন্ডিতেই না, উনি বিশ্ব পরিমণ্ডলে একজন প্রভাবশালী নেতা হয়ে উঠেছেন।

শেষ করতে চাই কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক জসিম মল্লিক এর একটা ফেসবুক স্ঠ্যাটাস দিয়ে। রবিবার তিনি একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘অন্য জাতির লোকরা কখনও বাংলাদেশ নিয়ে নাক সিঁটকায় না যতটা আমরা নিজেরা সিঁটকাই। আমরা নিজেরাই নিজেদের ছোট করি। বিদেশে এসে দেশের বদনাম করি। দল করি। মিছিল মিটিং করি, মারপিট ঝগড়া ঝাটি করি। এই যে দেশ বিদেশে এক দেড় কোটি বাঙালি ছড়িয়ে আছে, মাথা উঁচু করে টিকে আছে সেটা কিভাবে হয়েছে! বাংলাদেশে নামটা এখন সবাই চেনে। সম্মান করে। ওয়েষ্ট আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাচোর লোকেরাও জানে বাংলা নামের একটা দেশ আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে চেনে। শেখ হাসিনাকে চেনে। একজন মুজিব জন্মেছিলেন বলেই আমরা সবুজ পাসপোর্ট পেয়েছিলাম। তা না হলে আমরা থাকতাম পাকিস্তানীদের বুটের তলায়। আমাদের মতো অকৃতজ্ঞও পৃথিবীতে সম্ভবত দ্বিতীয়টি নাই। যার বা যাদের জন্যই করবেন দেখবেন তারাই চোখ উল্টে ফেলবে। যেনো এটাই নিয়ম। সেটা কি সংসারে, কি রাষ্ট্রে। আমি সারাজীবন যাদের জন্য করেছি তারা কেউই সেসব মনে রাখেনি। নূন্যতম কৃতজ্ঞতাবোধও নাই। কেউ কেউ মনে করে পাওয়াটা তাদের অধিকার। প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে চিনতেও কষ্ট হয়। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা যায়। যেমন শেখ হাসিনা যে এতো করছেন এই দেশের জন্য তারপরও কিছু লোকের সেটা চোখে পড়ে না। ভাল লাগে না। কৃতঘ্ন বলেই বঙ্গবন্ধুকে সপারিবারে হত্যা করতে পারে। আচ্ছা শেখ হাসিনার অপরাধটা কোথায় যে জন্য তাঁকে টেনে হিচরে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে!’’




চুয়াডাঙ্গায় জেলা জামায়াতের আমীর রুহুল আমিনসহ ৬ নেতাকর্মী আটক

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সংগ্রামী আমীর বিশিষ্ট কর আইনজীবি মোঃ রুহুল আমিনসহ ৬ জনকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ।

আজ  সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যাবার সময় চুয়াডাঙ্গা কাের্ট মােড় থেকে বহনকারী মাইক্রােবাসে থাকা সঙ্গীসহ আটক করা হয়।

আটকৃতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমীর মােঃ রুহুল আমিন (৪৫), জামায়াতের চুয়াডাঙ্গা পৌর আমীর অ্যাডভােকট হাসিবুর রহমান ইব্রাহিম (৩৯), জামায়াত কর্মী মোঃ মাহসিন আলী (২৬), ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক জেলা সেক্রটারী হুমায়ন কবির (২৭), দৈনিক সংগ্রামের দামুড়হুদা উপজলা প্রতিনিধি মোঃ মাসুম বিল্লাহ ও বহনকারী গাড়ীর ড্রাইভার মােঃ মিনারুল ইসলাম (২৯)। এ সময় তারা একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যাবার জন্য বের হয়েছিল বলে সংগঠন সুত্র জানা গেছে। পুলিশ তাদের আটক করে একটি পুরাতন মামলার পলাতক আসামী হিসাবে সন্ধায় কাের্ট হাজতে প্রেরন করে।

এ দিকে জেলা জামায়াতের আমীর ও তার সঙ্গীদের গ্রেফতারের তীব্র নিদা ও নি:শর্ত মুক্তি দাবী করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের নায়েব আমীর ও সাবেক উপজলা চেয়ারম্যান মাওলানা মাে: আজিজুর রহমান ও জেলা সেক্রটারী অ্যাডভােকট মােঃ আসাদুজ্জামান। তারা অবিলম্বে রাজনতিক হয়রানীমূলক এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন।




দর্শনায় পুরাতন বাজারে উন্নয়ন মুলক কাজের উদ্বোধন

দর্শনা পুরাতন বাজারে উন্নয়ন মৃলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও উদ্ধোধন অনুষ্টান অনুষ্টিত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা -২ আসনের সংসদ,সদস্য হাজী মোঃ আলী আজগার টগর উন্নয়ন কাজ উদ্বোধনকালে তিনি উপস্থিত জনসাধারণকে বলেন, বর্তমান সরকার জনবান্ধব সরকার। বিশেষ করে সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন তৃণমূল জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়ন না হলে দেশের জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়। আর সেকারণে সরকার প্রতিনিয়ত জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

দর্শনায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় দর্শনা পৌরসভার পুরাতন বাজারে কাঁচা বাজার উন্নয়ন কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গা-০২ আসনের সাংসদ হাজী মোঃ আলী আজগার টগর। আজ সোমবার( ১১ সেপ্টেম্বর) সকালে দামুড়হুদার দর্শনা বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদের চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু, দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দর্শনা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক আরিফ, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম,দামুড়হুদা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী, দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শফিকুল আলম, দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান ছোট, জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মশিউর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা নাজমৃল হক শাওন, দর্শনা পুরাতন
, বাজার কমিটির সভাপতি, আশরাফুল আলম বাবু,সাধারণ সম্পাদক সোহেল তরফদার, উপজেলা আ,লীগ, যুবলীগ ও ছাত্র লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




চুয়াডাঙ্গায় জেলা যুব মহিলা লীগের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আবারো নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী একমাত্র মহিলা নেত্রী আফরোজা পারভীন।

আজ সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি পিঞ্জিরা খাতুন বাসায় আনন্দবাস গ্রাম এই নির্বাচনী উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করে এই কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নের সরকার। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের গ্রাম থেকে শহর সকল পর্যায়ে উন্নয়ন হচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারা যদি অব্যাহত রাখতে হয় তাহলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো শেখ হাসিনা ও নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভপতি পূর্ণিমা হালদার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলিজা খাতুন ,সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি-কাজলী আক্তার , সাংগঠনিক সম্পাদক সপ্না খাতুন চিনি, দামুড়হুদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহেদা খাতুন ,আলমডাঙ্গা উপজেলার যুব মহিলা লীগের সভাপতি মনিরা খাতুন,সাধারণ সম্পাদক জাহানারা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি-আরজিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক বেবি, সাংগাঠনিক সম্পাদক মিতা রানী, ৬ নং ওয়ার্ড সভাপতি রুপালি, সাধারণ সম্পাদক ফাহিমা, ২নং ওয়ার্ড কমিটির অর্থ সম্পাদক শিউলি খাতুন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতৃবৃন্দ রাতুল, শেখ, মাহফুজ, আকাশ,কুতুব, রিপন,শাওন, সিফাত,জিরান,সেজান ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ




চুয়াডাঙ্গায় ডাকাতি মামলায় ১২ জনের ১০ বছর কারাদন্ড

চুয়াডাঙ্গায় ডাকাতি মামলায় ১২ জনের ১০ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে চারজনকে।

আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাসুদ আলী আসামীদের উপস্থিতিতে ওই রায় দেন।

কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন-জীবননগর উপজেলার নিধিকুন্ডু গ্রামের ছোট আলীর ছেলে কবির হোসেন, একই উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সোলেমান হক, একই গ্রামের মেহের আলীর ছেলে বকুল মিয়া, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খাঁ পুরন্দপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা, জীবননগর উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের মেহের আলীর ছেলে রহম আলী, একই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আরজ আলী, আখের আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, খালেক মিয়ার ছেলে বকুল মিয়া, সীর মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল হান্নান, একই উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে তবি মিয়া।

এদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন আব্দুল হান্নান নামে এক আসামী। বেকসুর খালাস পেয়েছেন-জীবননগর উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আখের আলী, একই গ্রামের মৃত হাজারী মন্ডলের ছেলে আব্দুল খালেক, মৃত রহিম মন্ডলের ছেলে হায়দার আলী ও ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে সোহেল রানা।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৭ এপ্রিল গভীর রাতে জীবননগর উপজেলার নিধিকুন্ডু গ্রামের চান মিয়া ব্যাপারীর ছেলে নুর ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন মুখোশধারী ডাকাত দল। এসময় তার ঘরে থাকা স্টিলের বাক্স থেকে নগদ ২৩ হাজার টাকা, বিছানার নিচ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা, তার স্ত্রীর কানে থাকা ১০ হাজার টাকা মূল্যের পাঁচ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের দুল এবং তার চাচাতো ভাই কবির হোসেনের বাড়ির শো-কেজ থেকে নগদ ৭ হাজার ৩০০ টাকা ডাকাতি করে তারা।
পরে নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন । মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল ১৭ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মহব্বত আলী। পরে ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ দুপুরে ওই রায় ঘোষনা করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন জানান, পলাতক আসামীকে গ্রেফতারে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আসামীপক্ষের আইনজীবী ফজলে রাব্বী বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।




চুয়াডাঙ্গায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য ও নৈতিকতা বিষয়ক আলোচনা সভা

চুয়াডাঙ্গায় ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহনে ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা ও কৃষি বিপণনে শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা বারোটায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের জগলু। এতে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। সভাটি ব্যবস্থাপনা করেন, জেলা প্রশাসন চুয়াডাঙ্গা । আর সভাটি সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেন, চুয়াডাঙ্গা দোকার মালিক সমিতি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও জেলা তথ্য অফিস চুয়াডাঙ্গা।

সভার শুরুতে আলোচনা করা হয় নিত্যপণ্যসহ সবধরনের বাজারদর ও বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে বাজারের কোনো পন্যের তালিকায় মুল্য লেখা থাকে না। দিন দিন বাজার অস্বাভাবিক কেন হয় তা নিয়েও আলোচনা করেন। বাজার তদারকি ও বাজার মনিটরিং কিভাবে আরো জোরদার করা যায় সেই লক্ষে কাজ করা হবে। এতে বাজারের পণ্যের দাম ঠিক রাখতে হলে যা করণিয় তা করতে হবে বলে আলোচনা করা হয়।

এসময় সভার প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, সব মানুষই ভোক্তা। যিনি বিক্রেতা তিনিও কখনো কখনো ক্রেতা। আমাদের নৈতিকতা ঠিক থাকলে ভোক্তা হিসেবে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা নিরাপদ খাদ্য পাবো। আর বাজারের নৈতিকতা ঠিক রেখে ব্যবস করতে হবে। অসাধু ভাবে ব্যবসা করা যাবে না। বাজার সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। বাজারের বর্জ মাতাভাঙ্গা নদীতে ফেলা যাবে না। ব্যবসায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। তাহলে ব্যবসার মর্যাদা থাকবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুল ইসলাম, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, বাজার কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকর সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহমেদ, চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার, প্রচার সম্পাদক মাফিজুর রহমান মাফি, প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের ব্যবসায়ীগণ।




এতদিন পশুর উন্নয়নে কাজ করেছি, এবার মানব উন্নয়নে কাজ করতে চান- জাহাঙ্গীর আলম

চুয়াডাঙ্গা ২ আসেনর স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে পল্লী পশু চিকিৎসক ও বীমা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম গণসংযোগ ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন।

কথায় আছে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম এর ক্ষেত্রে ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বন্ধ থাকায় তার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ভোট করার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই এবার তিনি ১২ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসন থেকে স্বতন্ত্র এমপির প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এ যেন ঘোলের স্বাদ দুধে মেটানো।

বিগত দুই বছর তিনি নিজ উদ্যোগে পশু চিকিৎসার পাশাপাশি সমাজের তৃণমূল ও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। তাই এবার আসন্ন নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ শুরু করেছেন।

জানাগেছে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ছোট দুধপাতিলা গ্রামের মৃত মাও: জালাল উদ্দীন ছেলে পশূ চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ব্রাকের (কৃত্রিম প্রজনন) কর্মী ও ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্স কো: লি: এর জেলা জোনাল ম্যানেজার পদে নিযুক্ত আছেন।

গত দুই বছর ধরে দামুড়হুদা, হাউলী, দর্শনা, কুড়ালগাছি, জুড়ানপুর, নতিপোতা, নাটুদাহ, উথলী সহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন, সেইসাথে অসংখ্য মানুষের মধ্যে তিনি ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ, সেলাই মেশিন, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিতরণ, ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে গ্রামের বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন।




বিশ্ব মঞ্চের স্থান পুনরুদ্ধার করছে বাংলাদেশ

ফ্রান্সসহ বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফর। তারা এটাকে ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্ক দৃঢ়তার অংশ হিসেবে দেখছে।

এএফপির বরাত দিয়ে আরএফআই লিখেছে, ফ্রান্সের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে “দৃঢ়তা” আনতে এবং চীন কেন্দ্রিক রাজনীতি ও কূটনীতিকে মাথায় রেখে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার বাংলাদেশে গেছেন। গণমাধ্যমগুলো প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ছবিও প্রকাশ করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন বিস্তৃত অঞ্চলে প্রভাবের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সকে একটি বিকল্প প্রস্তাব হিসাবে হাজির হয়েছেন বলে ফ্রান্সের গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। “বাংলাদেশ ধীরে ধীরে বিশ্ব মঞ্চে তার স্থান পুনরুদ্ধার করছে” বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ। প্রতিবেশি ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর রোববার ঢাকায় আসার পর একথা বলেন ম্যাক্রোঁ। ক্রমবর্ধমানশীল অর্থনীতি ও ১৭ কোটি মানুষের সম্ভাবনাময়তার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে “অসাধারণ সাফল্য” অর্জনকারী বলেও মনে করেন তিনি।

এর আগে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ম্যাক্রোঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষকেরা। জাতিসংঘে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী ফ্রান্স এবং একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি রাষ্ট্রের একটি হচ্ছে দেশটি।

এএফপির বরাত দিয়ে ফ্রান্স২৪ একই সংবাদ প্রচার করেছে। যেখানে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের অংশীদারদের ধমক দেওয়া বা তাদের একটি অস্থিতিশীল পরিকল্পনার দিকে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতি নই। বরং গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের উপর ভিত্তি করে আমরা তৃতীয় উপায় প্রস্তাব করতে চাই।

প্রেসিডেন্টের এলিসি প্যালেস অফিস বলেছে, ঢাকা সফরে “একটি দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীর করার একটি সুযোগ যেটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথও উন্মোচন করবে।

ফ্রান্সের গণমাধ্যমে ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরকালে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে লেখা হয়েছে। প্যারিসে ফেরার আগে সোমবার ম্যাক্রোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

৩৩ বছর পরে ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্টের এটি প্রথম ঢাকা সফর। তবে ১৯৯০ সালে ফ্রাঁসোয়া মিতেরার সফরের সঙ্গে এই সফরের গুণগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। কারণ, গত ৩০ বছরে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সম্মানে দেওয়া নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারত্বে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সকলের অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।’