থাকছে না ৩ ও ১৫ দিনের ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ

বর্তমানে মোবাইল অপারেটরদের ৯৫ ধরনের প্যাকেজ আছে। তাদেরকে প্যাকেজ সংখ্যা ৪০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গত ৩ সেপ্টেম্বর মোবাইল অপারেটরদের ১৫ অক্টোবর থেকে ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ বন্ধের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। ১৫ অক্টোবর থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীরা ৭ বা ৩০ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ কেনার সুযোগ পাবেন। অনির্দিষ্টকাল মেয়াদে ডেটা প্যাকেজ কেনার সুবিধাও থাকছে।

টেলিকমিউনিকেশন খাতের বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকার সংস্থার মতে, এর মাধ্যমে ভোক্তাদের পছন্দের স্বাধীনতা সীমিত করা হলো। এই উদ্যোগটি তৃণমূল, নিম্ন-আয়ের ও তরুণদের ওপর আর্থিক প্রভাব ফেলবে এবং এর কারণে টেলিকম পরিষেবা, বিশেষত ইন্টারনেটের ব্যবহার কমবে।

তবে বিটিআরসি বলছে, তারা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ওপর জরিপ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, গ্রাহকরাও অফার প্যাকেজ সীমিত করার পক্ষে। যদিও বিটিআরসির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে মোবাইল অপারেটররা। তাদের মতে, বিটিআরসির জরিপে এমন ধরনের প্রশ্ন ছিল, যা উত্তরদাতাদের উত্তরকে প্রভাবিত করেছে।

গত ৩০ মে বিটিআরসির জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখা অনেক গ্রাহকও বলেন, তারা আরও প্যাকেজ চান, বিশেষ করে ওটিটি ব্যবহার ও শিক্ষার্থীদের জন্য।

সূত্র: ইত্তেফাক




গাংনী পৌর বিএনপির সম্পাদক গ্রেফতার

গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেনে মেঘলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মকবুল হোসেন গাংনী বাস্ট্যান্ডপাড়া এলাকার মৃতু ওয়াজ উদ্দীনের ছেলে।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম গাংনী বাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি মামলায় মকবুল হোসেন মেঘলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মকবুল হোসেনকে মেঘলাকে আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।




ড. ইউনূসের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও নাগরিক শক্তির মৃত্যু

প্রতিবছর পৃথিবীর নানা দেশ তাদের ভালো কাজগুলোর স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার অপেক্ষা করে। সেইসব ভালো ও কার্যকর আবিস্কার ও সামাজিক কাজগুলোকে এগিয়ে নিতে নানা পৃষ্ঠপোষকতাও করে। এটি এক অনন্য সম্মান। সেই সম্মান বাংলাদেশের ঘরে আসার পরেও হোঁচট খেয়েছিলো।

হ্যাঁ, কথা হচ্ছিলো ড. ইউনুসকে নিয়ে। নোবেল পেয়ে তিনি নিজেকে তার যোগ্য করে প্রকাশ করতে না পেরে পরিচিতি পেয়েছিলেন নেতিবাচক নানা তকমায়। ২০০৭ সাল সেটাকে ত্বরান্বিত করেছিলো। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়কের সময়টা ছিলো কালো অধ্যায়। একদল মানুষ রাজনীতিতে সংস্কার আনার নামে দেশকে বিরাজনীতিকরণের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিলো প্রধান দুই দলকে নিস্ক্রিয় করার মাধ্যমে। সেই সময়টাকে স্বর্ণমুহুর্ত হিসেবে লুফে নেন ড. ইউনুস তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নিতে। ঘোষণা দেন – তার নেতৃত্বে নতুন এক রাজনৈতিক দল হবে, যার নাম হবে নাগরিক শক্তি।

বেশিদিন সময় নেননি তিনি। নোবেল পুরষ্কার লাভ করার মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই রাজনৈতিক দল গঠন করার কার্যক্রম শুরু করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন তিনি। সেসব দিন আমরা যারা ভুলে গেছি তারা আরেকবার স্মরণ করি এই মানুষটির শিখরে ওঠার আকাঙ্ক্ষাকে।

শোনা যায়, সেই আকাঙ্ক্ষার জায়গা এতোই প্রকট ছিলো যে ফখরুদ্দিন আহমদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার আগে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। সেটিও তিনি ফিরিয়ে দেন। কোন সৎ উদ্দেশ্য থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এমন নয়। কেনো করেছিলেন এমন? হিসেব ছিলো পরিস্কার। স্বল্প মেয়াদী সরকার হওয়ায় কেয়ারটেকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হননি ড. ইউনূস। তার স্বপ্ন ছিল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা। আর এ জন্য ‘নাগরিক শক্তি’ নামে নতুন দল গঠনও করেছিলেন।

তারপর কী হলো? সেই দল কোথায় গেলো। তার উদ্দেশ্য যে সৎ ছিলো না তা নাগরিক শক্তির ঘোষণা ও সাগরিক শক্তি না করার ঘোষণা দুটো থেকেই স্পষ্ট হয়। চলুন পিছনে ফিরে যাই। ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভারত সফরে যান। সে সফরে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবার জোরালো সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। ৩১শে জানুয়ারি দিল্লীতে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশের পরিস্থিতি বাধ্য করলে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন। দেশকে উদ্ধারের প্রকল্প নিয়ে হাজির হওয়া ইউনুস বলেছিলেন, রাজনীতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার মতো ব্যক্তি আমি নই। কিন্তু পরিস্থিতি যদি বাধ্য করে তাহলে রাজনীতিতে যোগ দিতে আমি দ্বিধা করবো না।

নাগরিক শক্তির মৃত্যু ঘটেছিলো ইউনুসের হাত ধরেই। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে বাইরে রাখা কিংবা বিদেশে পাঠিয়ে দেবার নানা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অধ্যাপক ইউনূস সে পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চেয়েছিলেন মাত্র। তিনি ঘোষণা দিয়েও সামাল দিতে পারেননি। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা সম্ভব হবে না। সে পরিস্থিতিতে ডঃ ইউনুস নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে একটু দ্বিধায় পড়ে যান।

অনেকের সঙ্গে দল নিয়ে আলাপ করলেও তিনি গ্রীনসিগন্যাল পাননি। ফলে ২০০৭ সালের ৩রা মে অধ্যাপক ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন। রাজনীতিতে আসার জন্য তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে যে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন তার তিনমাসের মধ্যেই সে প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এবং তার সেই নাটকের জবনিকাপাত ঘটেছিলো আবারও একটি খোলা চিঠি দিয়েই। এজন্য তিনি জাতির উদ্দেশ্যে একটি চিঠি প্রকাশ করেন। তিনি জাতির উদ্দেশ্যে সে চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, “যাদেরকে সঙ্গে পেলে দল গঠন করে জনগণের সামনে সবল ও উজ্জ্বল বিকল্প রাখা সম্ভব হতো তাদের আমি পাচ্ছি না। আর যারা রাজনৈতিক দলে আছেন তারা দল ছেড়ে আসবেন না। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এ পথে অগ্রসর না হওয়াই সঠিক হবে মনে করে এ প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এই যে রাজনৈতিক দল করার আকাঙ্ক্ষা এবং যথেষ্ট সাড়া না পেয়ে পিছিয়ে পড়া সেখানো কোথাও ড. ইউনুস নিজেকে সমালোচনা করেননি। তার মতো একজন ব্যক্তির সেটাই করার কথা ছিলো। কেনো তিনি যথেষ্ট সাড়া পেলেন না সেখানেও তিনি কখনওই নিজের কমতি দেখতে পাননি। সবসময়েই তিনি অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলেছেন। কখনও দোষ জনগনের, যারা তার উদ্দেশ্য বুঝতে অক্ষম ছিলো, কখনও দোষ মাঠের রাজনীতিবিদদের, যারা তার ষড়যন্ত্রে যোগ দিতে রাজি হননি, কখনও দোষ সময়ের, যে সময়ে ‘ফাঁকা মাঠেও’ তিনি গোল দিতে পারেননি।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।




আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ 

আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে আফান রহমান ফারহান নামের এক ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থীর মুখে ও পিঠে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ মেটাতে এমন অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা হারদি ইউনিয়নের চর-যাদবপুর গ্রামের দারুল আকরাম নূরানি মাদরাসায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আফান রহমান ফারহান ওই মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষার্থীর বড় ভাই বাদি হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষক সজিবের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

পরিবার জানায়, আফান রহমান ফারহানকে এর আগেও বেশ কয়েকবার এভাবে মারধর করা হয়েছে। তারা ভেবেছে হয়ত শিক্ষক শাসন করেছে। কিন্তু মঙ্গলবার আফান রহমান ফারহানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার মুখে ও হাতে কালো দাগ দেখা যায়। শিক্ষকদের ভয়ে প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করেনি। পরে সত্য জানতে চাইলে আঘাতের বিষয়টি স্বীকার করে আফান রহমান ফারহান।

আফান রহমান ফারহানের বড় ভাই হাফিজ বলেন, ‘মাদ্রাসায় আমার ছোট ভায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ওর মুখে ও হাতে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। আমি আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, রাতে হোম ওয়ার্ক না করায় , তখন হুজুর আমাকে ডেকে প্রথমে গালে চড় মারে এবং পরে বেত দিয়ে মারধর করেন। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা বলে, বাড়ি থেকে হোম ওয়ার্ক না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষককে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তার সাথে এমন নির্মম ব্যবহার খুবই দুঃখ জনক।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, হোমওয়ার্ক না করায় শিক্ষক একটু বেশিই মারধর করেছে। এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।




চুয়াডাঙ্গায় জন্মাষ্টমী উপলক্ষে পূজা উদযাপন কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা

শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে আজ বেলা সাড়ে বারোটার সময় জেলার সকল পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন।

চুয়াডাঙ্গায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ এবং ভক্তবৃন্দ প্রতি বছর পৃথকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পুলিশ সুপার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে এই প্রথম সকল কমিটির সদস্যবৃন্দ নিজেদের মধ্যকার দ্বান্দ্বিকতার অবসান ঘটিয়ে সম্মিলিতভাবে একত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পালন করতে সম্মত হন।

উক্ত আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোঃ নাজিম উদ্দিন আল আজাদ পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, ডিআইও-১ ডিএসবি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহাব্বুর রহমানসহ জেলা পুলিশের সকল পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সবৃন্দ।




চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দার মাদক বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার-১

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে ০৪ (চার) কেজি গাঁজা উদ্ধার সহ এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/ সুমন্ত বিশ্বাস সঙ্গীয় অফিসার এএসআই (নিঃ)/ বিজন কুমার ভট্টাচার্য, এএসআই (নিঃ)/ মোঃ আবেদুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখা, চুয়াডাঙ্গা সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার সময় দর্শনা থানাধীন রামনগর গ্রামস্থ মোঃ পাপনের মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে দর্শনা টু কার্পাসডাঙ্গা গামী পাঁকা রাস্তার উপর হতে আসামি ১) মোঃ মমিনুর ইসলাম ওরফে মমিন (২৬), পিতা-মৃত ফরজ আলী, সাং-ঝাঝাডাঙ্গা, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গাকে গ্রেফতার পূর্বক তার হেফাজত হতে অবৈধ মাদকদ্রব্য ০৪ (চার) কেজি গাঁজা, মূল্য অনুমান-১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।




বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ, অতঃপর দুই হতভাগ্য নারীর গল্প

রেখা রানী বিশ্বাস। বয়স ৪০। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকরে খোরদো শাখা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ নেওয়ার মাস দুয়েক পরেই কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি, মাঠের ফসল পানিতে ডুবে যায়। গ্রামের অন্যদের সঙ্গে রেখা রানী স্বামী সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেন পাকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

দু’দিন পরেই আশ্রয় কেন্দ্রে রেখা রানীর কাছে কিস্তির জন্য হাজির হন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মীরা। বসে থাকেন রাত ১০টা পর্যন্ত, ভয় দেখান থানা-পুলিশের। এক পর্যায়ে গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মীর কাছ ঋণ গ্রহীতা রেখা রাণী প্রশ্ন করেন, ঋণী সদস্য মারা গেলে তার কিস্তি কে দেয়? মাঠকর্মী বলেন, তার ঋণ মাফ করে দেওয়া হয়। ঠিক পর দিনই আশ্রয় কেন্দ্রের পাশে কাঁঠাল গাছে রেখা রানীর ঝুলন্ত লাশ দেখা যায়। এই গল্পটি ২০০৮ সালে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছিলেন ওই আশ্রয় কেন্দ্রের অন্য বাসিন্দারা।

এরকম গল্প আমাদের দেশে অহরহ। ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রাম থেকে ক্ষুদ্র ঋণ ছড়ানোর পর আজ পর্যন্ত কত রেখা রানী আত্মহত্যা করেছেন তার কোন গবেষণা হয়নি। ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কেন মানুষকে আত্মহত্যা করতে হয় এই কারণ কেউ খুঁজে বের করেনি। কিন্তু ক্ষুদ্র ঋণের বাজার বড় হয়েছে । এক গ্রামীণ ব্যাংককে অনুসরণ করে সারাদেশে হাজার দুয়েকের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এখন আরও একটি গল্প বলবো। গল্পটি ২০০৭ সালের। এর আগের বছর বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য দেখিয়ে ড. ইউনূস এবং তার গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাই এই কনসেপ্টের ফলাফল সরেজমিনে দেখতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ডেনিশ ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা টম হেইনম্যান। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ফিল্ম তৈরির জন্য ঢাকার অদূরে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতা জাহানারা নামে এক নারীর সাথে দেখা করেন তিনি। হেইনম্যান যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই ওই নারী তার ঝুপড়ি বাড়িটি বিক্রি করে দেন। কারণ তিনি ঋণের কিস্তির চাপ সহ্য করতে পারছিলেন না।

সে সময় জাহানারা বর্ননা করেছিলেন কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনের ঋণ কর্মকর্তাদের দ্বারা ভয়ভীতি, হয়রানি এবং খারাপ ব্যবহারের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এরপর আরও কয়েকবার কলাকৌশলীসহ টম হেইনম্যান বাংলাদেশে এসেছিলেন জাহানারার অবস্থা জানতে। কিন্তু তাকে খুঁজে পাননি। পরে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকেদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সাংবাদিকরাও জাহানারার খোঁজ দিতে পারেননি। আমাদের প্রথম গল্পের রেখা রানী তো মরে বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু জাহানারা কোথায় তা আজও কেউ জানে না।

পরে বাংলাদেশ, ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মেক্সিকোর ওক্সাকা রাজ্যের দরিদ্র মানুষদের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়ে তৈরি হয়েছিল ফিল্ম ‘দ্যা মাইক্রো ডেবিট’। হেইনম্যানের সেই ফিল্মে জাহানারার সাথে সাক্ষাৎকার ছিল প্রথমে। এতে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারীরা বেশিরভাগেরই বিভিন্ন এনজিও এবং মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনে অসংখ্য ঋণ নিয়েছেন। অনেকে পুরানো ঋণ শোধ করতে নতুন ঋণ নেওয়ার আশঙ্কার কথা জানান। কেউ কেউ ৩০-২০০% পর্যন্ত বার্ষিক সুদ শোধ করার কথাও বলেন। তাদের বর্ণনায় উঠে আসে চরম সামাজিক চাপ এবং সাপ্তাহিক কিস্তি আদায়ের নিষ্ঠুরতার চিত্র।

গ্রামীণ ব্যাংক যেখান থেকে শুরু সেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের জোবরা গ্রামে যায় হেইনম্যানের কলাকুশলীরা। স্থানীয়দের সহায়তা সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতা এবং আশপাশের মানুষজনের সাথে কথা বলেন তারা। এতে ওঠে আসে গ্রামীণ ব্যাংকের অমানবিক আচরণ এবং মিথ্যাচারের ভয়ঙ্কর সব তথ্য। তথ্য চিত্রে বলা হয়, ১৯৯৫ সালে হিলারি ক্লিনটন পরিদর্শনে গিয়ে ৬০ জনকে ঘর দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে দেওয়া হয় ৫ থেকে ৬ জনকে। জোবরা গ্রামে ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ৫০ থেকে ৮০ জন। তাদের মধ্যে সফল হন মাত্র ৪ থেকে ৫ জন। তাদের অনেকে ভিটেমাটি বিক্রি করেছে, কেউ ঘরের চালের টিন বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

এই ফিল্মে সাক্ষাৎকার দেন বাংলাদেশের নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির, বেসরকারি সংগঠন অ্যাকশন এইড ইন্টারন্যাশনালের শহিদুর রহমান এবং অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান। বক্তব্যে নিউ এজ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় ক্ষুদ্রঋণে সুদের হার ৪০-১২৫%। যেখানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে সুদের হার ১৩-১৪%। ক্ষুদ্রঋণ অনেক বড় ব্যবসা বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি। হেইনম্যানের ফিল্মে অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের শহিদুর রহমান বলেন, ক্ষুদ্রঋণে রিটার্নের পরিমান অনেক বেশি। আর খলিকুজ্জামানের মনে করেন কিস্তি দিতে গিয়ে অন্যান্য মৌলিক বিষয় যেমন- স্যানিটেশন, শিক্ষা, সুষম খাবার চাহিদা পূরণ করতে পারে না ঋণ গ্রহিতারা।

নব্বইয়ের দশক থেকে পরবর্তী দুই দশক দারিদ্র্য দূরীকরণের সমাধান হিসাবে বাংলাদেশে আসে ক্ষুদ্রঋণ। পাড়ায় পাড়ায় নারীরা জোটবদ্ধ হয়ে সমিতির সদস্য হন। এনজিওগুলোর প্রশিক্ষিত মাঠ কর্মীদের যুক্তির কাছে পরাজয় মানতে বাধ্য হন তারা। জামানত ছাড়া ঋণের বিষয়টিকে ব্রান্ডিং করা হয় ক্ষুদ্রঋণে। সমিতির সদস্যদের বলা হয় গ্রামীণ ব্যাংকে সুদের হার ২৬-৩১%। আপত দৃষ্টিতে এই সুদের হার কিস্তি অনুপাতে কম মনে হলেও চক্রবৃদ্ধির কারনে তা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

আর আমাদের গণমাধ্যমের তথ্য খবর অনুযায়ী ক্ষুদ্র ঋণব্যবস্থা বাড়ায় রেখা রাণী ও জাহানারাদের সংখ্যা। কারণ আর কিছু নয়, একসময় যখন তথ্য প্রযুক্তি সুবিধা ছিল না, তখন এসব বিষয় সহজে জানতে পারতো না তৃণমূলের মানুষ। ঋণ নেয়ার পর থেকেই শুরু হতো কিস্তি শোধের সপ্তাহ গণনা। কয়েকজনের গ্রুপ করে ঋণ দেয়ায় কখনও কখনও একজনের কিস্তি অন্যকে শোধ করতে হতো। দেখা যায় ঋণের টাকা তোলার সাথে সাথে অনেকের কাছ থেকে কেটে নেওয়া হতো গ্রুপের অন্য সদস্যদের কিস্তির টাকা। এই বিষয়গুলো উঠে আসে হেইনম্যানের ছবিতে। ‘দ্যা মাইক্রো ডেবিট’ নামে ওই তথ্যচিত্রে মূলত হেইনম্যান বলতে চান, ক্ষুদ্রঋণকে অনেক বড় এবং মহৎ সামাজিক ব্যবসা হিসেবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বহির্বিশ্বে প্রচার করা হয়। দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছ থেকে অনুদান আনা হয়। এদিয়ে বাড়ানো হয় এনজিওর পরিধি। গত ১০ বছরে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে ক্ষুদ্র ঋণের তাণ্ডব কিছুটা কমলেও এখনো এর প্রভাব কমেনি।




চুয়াডাঙ্গায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আয়োজনে রজব আলী সুপার মার্কেটে বিএনপির পার্টি অফিসে এ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোঃ সফিকুল ইসলাম পিটু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সরদার নুরুজ্জামান।

এসময় প্রধান অতিথি বলেন দ্রব্য মুল্যের উর্ধগতির বাজারে যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বেরেছে তাতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। দেশের সাধারণ মানুষ আর এই ভোট চোর সরকারকে চাইনা। জনগণ এই সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই এখনো সময় আছে আপনারা সংশধন হন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে ছাড়া এই বাংলায় আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসা যাবেনা। তানাহলে এদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভোট চোরদের প্রতিহত করা হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম মনির।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক এম, আরজ আলী শান্ত,স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূর আমিন লালন, সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিম ইফতেখারুল হক।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শহিদুজ্জামান বিলাস, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, যুগ্ন সম্পাদক মঞ্জুরুল জাহিদ, যুগ্ন সম্পাদক হামিদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হাসান টুটুল। জীবননগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু তালেব, সদস্য সচিব এখলাছুর রহমান রাসেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আসরাফ হোসেন, সদস্য সচিব সুমন বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইকরামুল হক, সদস্য সচিব জাকির হোসেন, দর্শনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী, পৌর আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এস এম হাসান, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম রাজা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল হাসান, সদস্য সচিব বিদ্যুৎ হোসেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইমদাদুল হক, পৌর আহ্বায়ক কামরুল হাসান সহ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা,আলমডাঙ্গা উপজেলা, দামুড়হুদা উপজেলা ও জীবননগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গায় সাইকেল-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২

আলমডাঙ্গায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টায় উপজেলার বলেশ্বরপুর-কাথুলি সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তি হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কাথুলি গ্রামের মৃত করিম মালিথার ছেলে আলফাজ হোসেন (৫৫)। আহতরা হলেন- একই ইউনিয়নের দিগড়ী গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে আনারুল (২৩) ও হারুনের ছেলে কাউসার (২২)। আহত দুই যুবক চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেশ্বরপুর বাজার থেকে জ্বালানি তেল কিনে বাই-সাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন আলফাজ হোসেন। পথে কাথুলি-বলেশ্বরপুর সড়কের মাঠ সংলগ্নে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুত গতির মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই আলফাজ নামের বাইসাইকেল চালকের মৃত্যু হয়। এতে আনারুল ও কাউসার নামের মোটরসাইকেল চালক এবং আরোহী গুরুতর আহত হন। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় দু’যুবককে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে।

নিহতের স্ত্রী বেদেনা খাতুন বলেন, জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য বাইসাইকেলযোগে জ্বালানি তেল কিনতে বের হয়েছিলেন আমার স্বামী। কিছুক্ষন পর শুনি একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থলেই আমার স্বামী মারা গেছেন।

জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া মা-আরিজ বলেন, হাসপাতালে আসার আগেই আলফাজের মৃত্যু হয়। আহত দুজনের অবস্থা আশংকাজনক।

আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এক্সিডেন্টের খবরে ঘোলদাড়ি ফাঁড়িপুলিশ পাঠানো হয়েছে।




নতুন কোন দুরভিসন্ধি নিয়ে ঢাকায় ইউএস প্রতিনিধি?

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন কারণে আমেরিকার কাছে আগ্রহের কেন্দুবিন্দুতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ । এই আগ্রহকে সফল করতে কিছু চাপ অব্যাহত রাখলেও প্রতি মাসেই কোন না কোন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের প্রতিনিধি বা সিনেট সদস্যরা আসছেন বাংলাদেশে।

৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক-সামরিক ব্যুরোর ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটেরি মিরা রেসনিক। মিরা রেসনিক যেই ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধিত্ব করছেন সেই ব্যুরো অফ পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি এজেন্সি যা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও প্রতিরক্ষা বিভাগের সাথে সেতুবন্ধন করে। এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, নিরাপত্তা সহায়তা, সামরিক অভিযান, প্রতিরক্ষা কৌশল এবং নীতি, স্থানের সামরিক ব্যবহার এবং প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নীতি প্রদান করে। এই এজেন্সির প্রধানকে বলা রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অফ স্টেট। মিরা রেসনিক সেই এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেসিকা লুইস এর ডেপুটি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বশির আহমেদ বলেন, ইউএস এম্বাসির প্রটোকল অনুযায়ী সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন, সুশাসন, মানবাধিকার বিষয়গুলো আসবে। কিন্তু মিরা রেসনিক এর আসল এজেন্ডা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে প্রতিরক্ষা বিষয়ে বাংলাদেশের সিভিলিয়ান সোসাইটিকে জানানো বা সতর্ক করা। বিশেষ করে চীন, মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে বাংলাদেশের কি কি প্রতিরক্ষা কৌশল নেয়া উচিত সে নিয়ে আলোচনা করবেন। কারণ উনি যে ব্যুরোর প্রতিনিধিত্ব করছেন, সে ব্যুরোর কাজই হচ্ছে এই সকল প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করা, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কৌশল তৈরি করা, আর সংশ্লিষ্ট দেশকে বুঝিয়ে সেই কৌশল গ্রহণ করানো।

সাধারণত বিভিন্ন দেশের সাথে প্রতিরক্ষা সামরিক চুক্তি সমূহ করে থাকে এই ব্যুরো থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশের সাথে সামরিক অস্ত্র বিক্রয় চুক্তি করার কথা বলে আসছেন। গত বছরের ২৪শে এপ্রিল তিনি বলেছিলেন, “প্রথমত আমরা আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে পারি। আমরা অন্যান্য সমমনা পরস্পর সহযোগি দেশগুলোর সমন্বয়ে নিজেদের সম্পৃক্ততাকে আরও জোরদার করতে পারি। আমরা জিসমিয়া ও আকসা এ দুটি মৌলিক চুক্তিতেও যেতে পারি। জিসমিয়া চুক্তির মাধ্যমে সামরিক ক্রয়-সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের মূলনীতি নির্ধারিত হবে। এ রূপরেখাটি বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী অভীষ্ট ২০৩০ অর্জনে অবদান রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির সহায়তায় বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত হবে।“

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ সালাম হোসেন জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় এখনই জিসমিয়া চুক্তি স্বাক্ষরে রাজি নয়। বাংলাদেশ চাইছে ইলেকশনের পরে এই ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করবে। ধারণা করা যায় জিসমিয়া ও আকসা চুক্তি স্বাক্ষরকে তরান্বিত করতেই মিরা রেসনিক এর এই সফর।

উল্লেখ্য, রেসনিক আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং অস্ত্র স্থানান্তরের ব্যুরো অফিসের তত্ত্বাবধান করেন, যা বিদেশি সামরিক অস্ত্র বিক্রয়, তৃতীয় পক্ষের সাথে ক্রয় বিক্রয়, এবং প্রতিরক্ষা কৌশল ডিজাইন ও বিক্রয় তত্ত্বাবধান করেন। এবং জি২জি এর মাধ্যমে প্রতি বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলার এরও বেশি লেনদেন করে। বাংলাদেশের অগ্রসরমান অর্থনীতি, মিয়ানমারে চীন-রাশিয়ার যৌথ কর্মকান্ড, এই সকল কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের আঞ্চলিক গুরুত্ব অপরিসীম। যুক্তরাষ্ট্র এই কারণেই চাইছে বাংলাদেশের সাথে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কৌশল বাংলাদেশকে দিতে।