দ্বিতীয় পাতা
প্রথম পাতা
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে স্বপ্নের যাত্রা শুরু
সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত শনিবার ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দিয়েছেন। কাওলা প্রান্তের টোল প্লাজায় গাড়ি প্রতি মাত্র ৮০ টাকা করে টোল দিয়ে নতুন এই পথের প্রথম যাত্রী হন সরকারপ্রধান। আর গতকাল রবিবার তা উন্মুক্ত হয়েছে সর্বসাধারণের জন্য। রাজধানীবাসীর জন্য উন্মুক্ত হয়েছে সেই নতুন এক পথ। দেশের প্রথম উড়াল সড়কপথ এটি। এই পথ ধরে নির্ঝঞ্ঝাটে, ভোগান্তিহীনভাবে, দ্রুততম সময়ে চলাচল করতে পারছেন নগরবাসী।
রবিবার সকাল ৬টা। বৃষ্টিস্নাত সেপ্টেম্বর। ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে বন্ধুদের নিয়ে কেবল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাবেন বলে এসেছেন অনেকে। সবার আগে একটা সেলফি তারপরে স্বপ্নের যাত্রা। সরেজমিনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ও কয়েকটি ছোট পিকআপ ভ্যান এর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ কোনও প্রকার বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও কিছু মোটরসাইকেল সাইকেলচালক এক্সপ্রেসওয়ে উঠতে চাইলে পুলিশ তাদের নিচের পথ দিয়ে চলাচল করার কথা জানান।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের শুরুতে বেশিরভাগই ব্যক্তিগত যানবাহন উঠছে, কোনও বাস বা ভারী যান উঠতে দেখা যায়নি। নিচে দিয়ে যাওয়া এক বাস চালককে উপর দিয়ে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনেকগুলো ব্যাপার আছে। আমরা পুরো রাস্তাতেই যাত্রী তুলে থাকি। আমাদের টোল এর টাকাটা কীভাবে উঠবে। এসব সমাধান হয়নি। ফলে এখনই সবাই উপর দিয়ে যাচ্ছে না।
তবে মোটরসাইকেলের আগ্রহ রয়েছে ষোলআনা। গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর সেতু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এই উড়ালসড়ক পথে আসতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। তবে পথচারী, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল আপাতত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর চলবে না। রবিবার সকাল থেকেই মোটরবাইক নিয়ে একাধিক চালক উঠতে চেয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে অনুমতি না থাকায় পুলিশি বাধায় তিনি যেতে পারেননি।
বিশিষ্টজনের অনেকেই এই দিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠেছেন। তারা শুরু থেকেই লাইভ করেছেন পুরোটা পথ। এবং বাংলাদেশের এই বদলে যাওয়া নিয়ে তাদের আবেগ জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন ওঠানামার স্থান:
উত্তরা থেকে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান–
১. হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা,
২. প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব।
কোথায় নামবেন?
১. বনানী কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ;
২. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে ও
৩. ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশে
দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান
১. বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর এবং দক্ষিণ লেন;
২. বনানী রেলস্টেশনের সামনে।
নামার স্থান–
১. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে;
২. বনানী কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ’র সামনে বিমানবন্দর সড়ক;
৩. কুড়িল বিশ্বরোড ও
৪. বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পুরো সুফল পেতে আরও প্রায় একবছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে তৈরি হয়েছে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠানামার জন্য মোট ৩১টি র্যাম্প রয়েছে যার দৈর্ঘ্য ২৭ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।
বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ১১ কিলোমিটার র্যাম্পসহ এই অংশটির মোট দৈর্ঘ্য ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে এই অংশের ১৫টির মধ্যে ১৩টি র্যাম্প খুলে দেওয়া হয়েছে। বনানী ও মহাখালীর র্যাম্প নির্মাণ শেষ হলেই খুলে দেওয়া হবে।
দর্শনায় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ একজন আটক
দর্শনা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ১শ পিচ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ দর্শনা আশরাফুল ইসলাম ওরফে ডার্বিকে আটক করেছে।
গ্রেফতারকৃত আশরাফুল ইসলাম ডার্বি চুয়াডাঙ্গা সদর থানার দৌলৎদিয়াড়ের খোকন আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায় আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা’র নির্দেশে অভিযান চালায় দর্শনা- জীবননগর পাকা রাস্তার উপর।
এ সময় দর্শনা থানার এসআই সোহেল রানা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে আশরাফুল ইসলাম ওরফে ডার্বি (২১) কে গ্রেফতার করে। পরে তার দেহ তল্লাশী করে ১ পিচ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি মাদকদ্রব্য আইনে মামলাসহ চুয়াডাঙ্গা কোর্ট হাজতে প্রেরন করেছে।
মেহেরপুরে ২০ গ্রাম হেরোইনসহ তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক
মেহেরপুর শহরের কোর্টপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ২০ গ্রাম হেরোইনসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ।
গতকাল রবিবার সদর থানার ওসি তদন্ত সেলিম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে এস আই তাওহীদুল ইসলাম, এ এস আই শাকিল খান, এ এস আই মাহবুব আলম, এ এস আই ফেরদৌস অংশ নেন।
আটক আসামীরা হলেন- ভূমি অফিস পাড়ার আমিরুল মীরের ছেলে জনি মীর (৩৪), মীলন মীর এবং নতুন পাড়ার আনারুল ইসলামের ছেলে সাকিব (২৭)। এদের মধ্যে জনির নিকট থেকে ৮ গ্রাম, সাকিবের নিকট থেকে ৬ গ্রাম এবং মিলন মীরের নিকট থেকে ৬ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গায় মাদক মামলায় যাবজ্জীবন, ১০ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাদক সম্রাট মোঃ অহিদুল ইসলাম (৪০) নামের পলাতক এক আসামিকে ১০ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার হাপানিয়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত অহিদুল ইসলাম চিৎলা ইউনিয়নের হাপানিয়া এলাকার সিদ্দিক আলীর ছেলে। তাকে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গা থানায় একটি মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. অহিদুল ইসলাম নিজের নাম-পরিচয় গোপন করে দীর্ঘ ১০ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রবিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ২০১১ সালের উপজেলার হাপানিয়া এলাকা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সহ পুলিশের নিকট গ্রেপ্তার হন অহিদুল। ছয় মাস পর জামিনে বের হয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অহিদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযানও পরিচালনা করা হয়।
আলমডাঙ্গায় লাইসেন্স না থাকায় দু’গো-খাদ্য বিক্রেতাকে জরিমানা
আলমডাঙ্গায় লাইসেন্স বিহীন গো-খাদ্য বিক্রয়ের অভিযোগে দুই দোকান মালিককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রবিবার বিকেলে পৌরসভাধীন হাউসপুর এলাকায় উপজেলা নির্বাহি অফিসার স্নিগ্ধা দাস এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় দু’দোকান মালিককে ২২ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জানাগেছে, আলমডাঙ্গা পৌরসভা এলাকায় অসংখ্য গো-খাদ্য বিক্রেতা রয়েছে। বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নকল ভূসিসহ বিভিন্ন খাবার বিক্রয়ের অভিযোগ তোলেন ক্রেতারা। তবুও প্রাণীসম্পদ বিভাগ নিরব ভূমিকা পালন করেন। ওই দপ্তরের জনবল সংকটের জন্য অনেক ব্যবসায়ীর নেই প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের অনুমোদিত লাইসেন্স।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফির নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার স্নিগ্ধা দাস। এসময় হাউসপুর এলাকার ভূসিমাল বিক্রেতা সোহানুর রহমান বাবলুকে ১০ হাজার টাকা ও মিজানুর রহমানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ওবামা, হিলারি এবং কেরি কেনেডিকে খোলা চিঠি…
প্রিয় আমেরিকান ত্রয়ী। আমি সেরকম কেউ নই। খুব সাধারণ মানুষ। ১৬০ তো বটেই আপনারা যদি ১০৬০ জন বিশিষ্ট মানুষের তালিকা করেন তার মধ্যে আমার নাম পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। সম্প্রতি আপনাদের নোবেল জয়ী বন্ধু ড. ইউনূসের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে যে বিব্রতকর খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন তার প্রতিবাদ করেছেন আমার দেশের ১৭১ জন নাগরিক। এর মধ্যেও আমার নাম নেই। তবু আমি বিব্রত। আমি কেন, যেকোন মিথ্যাচারে বহু মানুষ বিব্রত হয়। আমি আসলে তাদের প্রতিনিধি।
কোন ভুমিকায় না গিয়ে একটি বিষয় আমি সরাসরি বলতে চাই। ইউনূস সাহেবের ব্যাপারে আপনার না জেনে, না তদন্ত করে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। আজ বলে নয়। অনেক দিন ধরেই দিচ্ছেন। যেটা আপনাদের সারা জীবনের ক্যারিয়ারের সঙ্গে সাংঘার্ষিক। ভুল বুঝবেন না দয়া করে। আমি সরকারের পক্ষ নিচ্ছি না। আমি প্রথমত বিব্রত আপনাদের জন্যে। কারণ আপনাদের জানি। আপনারা যার যার ক্ষেত্রে এভারেস্ট সমান উঁচু। নিজের দেশতো বটেই সারা পৃথিবীর মানুষের কথা আপনারা ভাবছেন। কাজ করছেন। শুধু বাংলাদেশের সামনে এসে কেন বিতর্কিত হবেন?
তবু যদি বলেন এটা আপনাদের ব্যক্তিগত আচরণ। তাহলে হয়তো এড়িয়ে যেতাম। কিন্তু মূল সমস্যাটা বর্তমান সময়ের। সামনে আমাদের জাতীয় নির্বাচন। এই সময়ে আপনাদের চিঠির মধ্যে লাভের আশা খুঁজছে একটি গোষ্ঠী। আর আপনাদের বন্ধু এক ঢিলে দুই পাখি মারছেন। নিজের অন্যায়ের পক্ষে জনমত গঠনও হচ্ছে, সরকারের ওপর ঝোপ বুঝে কোপ মারাও হচ্ছে। আর আপনারা এর ক্রীড়ানক হচ্ছেন। তার পরেও যদি এটাই আপনাদের ইচ্ছে হয় আপনারা আপনাদের বন্ধুর পক্ষে বলুন। কিন্তু তদন্ত করে বলুন। আমি নিশ্চিত আপনাদের বন্ধু সব কথা বলেননি। আমি আপনাদের জন্যে সেরকম কিছু না বলা কথা এই চিঠিতে হাজির করছি।
আমাদের একটি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ছিলো, নাম ২০০০। ওই পত্রিকায় ২০০৯ সালের মে মাসের একটি সংখ্যায় প্রকাশ হয়েছিল ‘সুফিয়ার কবর চাঁদার টাকায় / ইউনূসের হাতে নোবেল’খবরের বিষয়বস্তু, আজকের আলোচিত ইউনূস সাহেব ১৯৭৪ সালে তার ক্ষুদ্রঋণের কাজ শুরু করেছিলেন নিজের গ্রাম থেকে। প্রথম ঋণটি তিনি দিয়েছিলেন এই খবরের সুফিয়া বেগমকে। তিনি গ্রামের মানুষকে জানিয়েছিলেন ইউনূসের গ্রামীণব্যাংকের কথা। খুব অল্প দিনেই দারিদ্র্য পিড়ীত ওই গ্রামে নগদ টাকার মহোৎসব লেগেছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সুফিয়াসহ বহু ঋণ গ্রহিতা গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন।
১৯৯৮ সালে এই সুফিয়া মারা যান প্রায় বিনা চিকিৎসায়। গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে তার দাফনের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর এই ক্ষুদ্র ঋণ, দেশের বেশিরভাগ এলাকায় টেকসই হয়নি। যেসব সংগঠন দরিদ্র মানুষকে টাকা দিয়ে মনিটরিং করেছিলো, তাদের ক্ষেত্রে কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ এলাকায় মানুষ হয়েছে ঋণ নির্ভর। এতে ক্ষুদ্র ঋণের বাজার বড় হয়েছে। কিন্তু মানুষের ভাগ্য ফেরেনি। ঋণের চাপে কত মানুষ আত্মহত্যা করেছে তা রীতিমত গবেষণার বিষয় । আপনারা চাইলে কাজটি করে দেখতে পারেন। গোপনে আপনাদের দূত পাঠাতে পারেন ইউনূস সাহেবের মডেল গ্রাম জোবরায়। আজও সেখানে ক্ষুদ্র ঋণের হাহাকার কাটেনি।
আসি যে মামলার সূত্র ধরে আপনারা ইউনুস সাহেবের জন্যে উদ্বিগ্ন, সেটা নিয়ে । পত্রপত্রিকার তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে গ্রামীণ টেলিকম নামে একটা কোম্পানির ১৭৬ জন কর্মকর্তা “শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল” এর প্রাপ্য হিস্যা চেয়ে ১১০টি মামলা করেন। ইউনূস আইনজীবী নিয়োগ করে আদালতের বাইরে এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করেন। সেই নিষ্পত্তিতে তিনি কর্মচারীদের ৪৩৭ কোটি টাকা শোধ করেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১০৬ টি মামলা প্রত্যাহার করেন। কিন্তু চাকরির শর্ত অনুযায়ী, কোম্পানি মুনাফার ৫ শতাংশ পাওয়ার দাবিতে শ্রম আদালত এবং হাইকোর্টে আবারও মামলা করেন তারা।
কিন্তু এই মামলা নিষ্পত্তির জন্যে ইউনূস আইনজীবীদের নিয়মের বাইরে প্রচুর টাকা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে বের হয়ে আসে, গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের তিনটি ব্যাংক হিসাব ও ইউসুফ আলীর ‘ল’ ফার্ম এটর্নিসের নামে ১৬ কোটি টাকা দেয়া হয়। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা গণমাধ্যকে জানান, ‘শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল’ কর্মীদের পাওনা সংক্রান্ত অভিযোগ ধামাচাপা দিতে ড. ইউনূস বড় অংক দিয়ে আইনজীবী ভাড়া করেন। কথা ছিল এরা মামলাকারীদের সাথে আদালতের বাইরে পুরো বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।
শুধু তাই নয় ‘শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল’এর হাজার হাজার কোটি টাকা চুরির অভিযোগ ধামাচাপা দিতে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করেন ইউনূস। দুদকের অনুসন্ধানে এসব অভিযোগেরও সত্যতা মেলে। ২০২২ সালে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে দেয়া হয়। কর ফাঁকি মামলায় দোষী হন ইউনূস। দোষী সাব্যস্ত হবার পর দিনই উনি ১২ কোটি টাকা কর দেন। কর দিয়েই তিনি প্রমাণ করেন তিনি দোষী ছিলেন।
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য উঠে আসে তার ট্রাস্ট গঠনের আড়ালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে। দেখা যায় নিজের পরিবারের ব্যয়ের টাকাও এ ট্রাস্ট থেকেই নিতেন ইউনূস। এছাড়াও নিতেন উৎসব আপ্যায়ন খরচ এবং টেলিফোন বিল। কিন্তু আইন বলে, কোন কিছু ট্রাস্ট করলে সেখান থেকে খরচ নিতে পারবেন না দাতা। কিন্তু ট্রাস্ট না করে ওই একই কাজ যদি তিনি ব্যবসা হিসাবে করেন, তাহলে পারেন। কিন্তু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর আর ট্রাস্টের কর এক নয়। কেউ সমাজসেবা করলে, তার কাছ থেকে কম কর নিয়ে উৎসাহ দিতে পারে সরকার।
মোট তিনটি ট্রাস্ট গঠন করেন ইউনূস। একটি ট্রাস্টে এমন বিধান রাখেন, যেখান থেকে তিনি নিজে এবং তার পরিবারের সদস্যরা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। অথচ ট্রাস্ট গঠনের আইনে এরধনের কোন নিয়ম নেই। এছাড়াও ইউনূসের নামে শেল কোম্পানি গঠন করে এক কোম্পানির লাভ আরেক কোম্পানিতে দান করে কর ফাঁকি দেয়ার নজির পায় দুদক। শুধু গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের জমা ৫% লভ্যাংশের হিসাবে ৩৬০০ কোটি টাকা ইউনূস অন্য কোম্পানিতে দান হিসাবে সরিয়ে দেন।
এই প্রতিটি ঘটনায় বাংলাদেশের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করেছে। আপনারা আজীবন সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় কথা বলেছেন । তাই নিশ্চয়ই আপনাদের বোঝানোর দরকার নেই যে, বাংলাদেশের সাংবিধানিক কোন কাজ নিয়ে কথা বলতে হলে নিশ্চয়ই তথ্য প্রমাণ নিয়ে কথা বলতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনারা কোন দায়িত্বশীলতা দেখাচ্ছেন না। আমরা জানি বেলারুশে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এলেস বিয়ালিয়াটস্কির দশ বছরের জেল হয়েছে, আপনাদের কোন আওয়াজ পাওয়া যায়নি। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা কর ফাঁকির মামলায় আদালতে ঘুরছেন। আপনাদের সেখানেও দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের সামনে নির্বাচন। এই সময় সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিয়েও আপনাদের উদ্বেগের শেষ নেই। নির্বাচনের আগে একটি দায়িত্বশীল সরকার আপনাদের এই দায়িত্বহীন কথার বলি হতে পারে, সে বিষয়টি কি আপনারা আমলে নেন না? এতে কী নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু থাকছে? আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নাম নেই। অথচ আপনাদের চিঠিতে এরকম একটি বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে বলছেন। কাজটি কী ঠিক করছেন?
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ জানে না যে আপনার দেশে ডোনেশন বলে একটা কথা বলানোর বৈধ প্রথা আছে। রাজনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চ্যারিটি সংগঠন থাকে। সেখানে সেবামূলক কাজের খরচ দিলে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে বিবৃতি পাওয়া সম্ভব। ক্রেস্ট কিম্বা সাটিফিকেটও পাওয়া সম্ভব। ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে দাওয়াতেও তারা আসতে পারেন। কিন্তু সেখানে কোন কিছুই ফ্রি করার প্রথা নেই। আনারা সেই প্রথার বাইরে শুধুই বন্ধুত্ব করছেন এরকম নিশ্চয়ই নয়? করুন, শুধু অনুরোধ জেনে বুঝে করুন।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।
দর্শনায় আন্তঃজেলা ট্রাক চোর চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার; ট্রাক ও মালামাল উদ্ধার
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশ আন্তঃজেলা ট্রাক চোর চক্রের দর্শনা থেকে ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় একটি ট্রাক ও চুরি হওয়া অন্য ট্রাকের টায়ার, ব্যাটারি, রিংসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার সকালে ফরিদপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা বাসষ্টান্ড থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানার মোবারকপাড়ার মৃত রিয়াজ উদ্দীনের ছেলে রেজওয়ান হোসেন (২২), একই থানার দর্শনা আজিমপুর আমতলা পাড়ার মৃত হারুন মিয়ার ছেলে আকাশ মিয়া (২৩),দর্শনা মোহাম্মদপুর পাড়ার শফি মিস্ত্রির ছেলে আলোচিত চোর রিয়াদ হোসেন (২৫) ও ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার যদুরদিয়া গ্রামের মৃত সুবল কর্মকারের ছেলে অপূর্ব কর্মকার অপু (২৬) কে গ্রেফতার করে কালিগন্জ থানা পুলিশ।
আজ রোববার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ১ টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে ঢাকা মেট্রো ট ১৮-৯৩৫০ নম্বরের ট্রাকটি চুরির করার সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় রেজওয়ান হোসেন। পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাক চোর চক্রের অন্যান্য তিন সদস্য আকাশ মিয়া,রিয়াদ হোসেন ও অপূর্ব কর্মকার অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ট্রাকটি উদ্ধার করাসহ অন্য ট্রাক থেকে খুলে নেওয়া টায়ার, ব্যাটারি, রিংসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ট্রাক চোর চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধের কালীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।