অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদ থেকে জাল সনদে সার্ভেয়ার
মোর্শেদুর নাহার নিশির কর্মজীবন শুরু হয় আলমডাঙ্গা পৌরসভার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে। এরপর জাল সনদের মাধ্যমে তিনি সার্ভেয়ার পদে নিয়োগ পান। সার্ভেয়ার হবার পর দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা অবৈধপন্থায় উপার্জন করেছেন। তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে নিরাপত্তার স্বার্থে নাম-পরিচয় গোপন রেখে গত (৩ অক্টোবর) ঝিনাইদহের আঞ্চলিক দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সার্ভেয়ার মোর্শেদুর নাহার নিশি পৌর এলাকার বাবুপাড়ার বাসিন্দা ও আলমডাঙ্গা পৌরসভার টিকাদান কর্মী আঞ্জুমান আরা বেবীর মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গত ২০১৬ সালে মোর্শেদুর নাহার নিশি আলমডাঙ্গা পৌরসভায় মাস্টার রুলে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ৫ বছরের মাথায় সার্ভেয়ার (আমিন) সার্টিফিকেট পৌরসভার পদে বসেন। সাবেক মেয়র হাসান কাদির গনুর মাধ্যমে জাল সনদে ও অর্থবাণিজ্যের কারণে সহজে নিশি সার্ভেয়ার পদে নিয়োগ পান। তার মা আঞ্জুমান আরা বেবী পৌরসভার টিকাদান কর্মী হওয়া সত্বেও সাবেক মেয়রের সাথে ছিলো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তিনিও দীর্ঘদিন টিকাদান কার্যক্রম কিংবা অফিসেও ঠিক মত না করারও অভিযোগ রয়েছে। অফিস না করেই বছরের পর বছর বাড়িতে বসেই বেতন তুলতেন। সাবেক মেয়রের ঘনিষ্ট হওয়ায় তার সহকর্মীরাও তাকে কিছু বলতে সাহস পাননি। টিকাদান কর্মী বেবির মেয়ে নিশি ওই ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাপযোগ করার জন্য বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে লুটে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। গত জুলাই মাসে এক ভুক্তভোগী জাবর আলী বাদি হয়ে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।
এই প্রতিবেদন লেখার আগে খোঁজ নেওয়া হয় বগুড়া জেলাতে। মোর্শেদুর নাহার নিশি সার্ভেয়ার (আমিন) সার্টিফিকেট নিয়োগ পাবার আগে যে সনদ দিয়েছেন তার কোন হদিস মেলেনি। তিনি (সিট ফাউন্ডেশন, বগুড়া) নামক প্রতিষ্ঠানের একটি সনদ দিয়েছেন। ওই নামে কোন প্রতিষ্ঠান নেই বলে জানাগেছে।
এ ঘটনায় নাম না প্রকাশ শর্তে আলমডাঙ্গা পৌরসভার একাধিক কর্মচারীরা বলেন, টিকাদান কর্মী বেবী ও তার মেয়ে নিশি দুজনে ইচ্ছা মূলক ভাবে আইন অমান্য করে তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। সাবেক মেয়রের ঘনিষ্ট হওয়ায় কেউ তাদের প্রতিবাদ করতে পারেনি। উপর মহল কোন তদন্ত করতে আসলেও টাকার মাধ্যমে তাদের ম্যানেজ করা হতো।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলাম জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে একটি অভিযোগ দিয়েছে। ওই অভিযোগের কপি পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, দুদক এসে তারা তদন্ত পূর্বক যেকোন ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলে আমরা সেটিই করবো।