বৃষ্টিদিনে চলতি পথের প্রস্তুতি

বৃষ্টিদিনে প্রকৃতির রূপ যতই ভালো লাগুক, বৃষ্টির বিড়ম্বনাও কিন্তু কম নয়। ঘর থেকে বের হতে না পারা, রাস্তাঘাটে কাদাপানি, চলতি পথে হঠাৎ বৃষ্টিতে কাদাজলে একাকার হওয়াসহ নানা ঝক্কি পোহাতে হয়। তাই বলে বৃষ্টি উপভোগ করবেন না তা কি হয়! বৃষ্টি দিনে বৃষ্টি হোক বা না হোক ঘর থেকে বের হওয়ার আগে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে বের হোন।

. বর্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হল ছাতা। হঠাৎ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে এ সময় বৃষ্টি হোক বা না হোক ছাতা ছাড়া বাইরে যাওয়া মোটেই উচিত নয়।
ছাতাতে কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটি নিরাপদে রাখা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। তাই এ আবহাওয়ার জন্য বেছে নিন ওয়াটার প্রুফ ব্যাগ।

. বৃষ্টি বাদলের এ সময়টা সুতি কাপড়ের বদলে আরামদায়ক জর্জেট, সিল্ক কাপড়ের পোশাক পরুন। বৃষ্টিতে ভিজলেও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।

.বৃষ্টির দিনে কাপড় বা চামড়ার জুতা এড়িয়ে চলুন। বৃষ্টিতে এ ধরনের জুতা যেমন নষ্ট হতে পারে তেমনি চামড়ার জুতা ভিজে পায়ে দুর্গন্ধও হতে পারে।
ফ্ল্যাট স্যান্ডেল আরামদায়ক হলেও এ সময় তা এড়িয়ে চলুন। কারণ ফ্ল্যাট স্যান্ডেল থেকে কাদা ছিটে কাপড় নষ্ট হয়। আবার কাদা লেগে পা নোংরাও হয়। তাই এ সময়টা একটু উঁচু এবং পা ঢাকা জুতা পরুন।

.বাইরে যাওয়ার সময় ছোট প্লাস্টিকের জিপার ব্যাগে মোবাইল, হেডফোনসহ বিভিন্ন গ্যাজেট রাখুন। নয়তো সঙ্গে পলিব্যাগ রাখুন গ্যাজেট রাখার জন্য।

.বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে এখন একটু বড় হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন। আর সঙ্গে থাকা ব্যাগটিতে রেখে দিন প্রয়োজনীয় কসমেটিকস, রুমাল, ছোট টাওয়াল, টিস্যু।

.বর্ষায় হাত-পায়ে ইনফেকশন, চুলকানিসহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে বাইরে থেকে ঘরে ফিরে সরাসরি গোসলে যান। গোসলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন এবং পরিধেয় পোশাক একঘণ্টা ডিটারজেন্টে ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে দিন।

সূত্র: ইত্তেফাক




এবার ফোনেই অনুবাদ করার সুযোগ দিচ্ছে জিমেইল

জনপ্রিয় টেক জায়ান্ট কোম্পানি গুগল তাদের জিমেইল অ্যাপের জন্য একটি নতুন ফিচারের ঘোষণা করেছে। জিমেইলের নতুন ফিচারের মাধ্যমে ট্রান্সলেট করা যাবে ই-মেইল। জিমেইলের এই নতুন ফিচার ইউজারদের স্থানীয় ভাষায় ই-মেইল অনুবাদ করতে দেবে। জিমেইলের এই ফিচার আগে শুধুমাত্র ওয়েবেই উপলব্ধ ছিল। এখন থেকে জিমেইলের এই ফিচার অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইসগুলিতেও চালু হচ্ছে? অর্থাত জিমেইলের ইউজাররা কম্পিউটার ছাড়াও ফোনেও ব্যবহার করতে পারবে নতুন এই ফিচার। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক জিমেইলের এই ফিচারের সমস্ত খুঁটিনাটি।

গুগলের পক্ষ থেকে একটি ব্লগ পোস্টে জানানো হয়েছে, ‘প্রায় এক বছর ধরে, আমাদের ইউজাররা সহজেই ওয়েবে জিমেইলের ই-মেইলগুলি ১০০টিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ করছেন। আজ থেকে আমরা জিমেইল মোবাইল অ্যাপের মধ্যে একটি নেটিভ ট্রান্সলেশন ইন্টিগ্রেশন ঘোষণা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। যেটি জিমেইলের ইউজারদের অনুবাদ করা ভাষার মাধ্যমে নির্বিঘ্নে যোগাযোগ করতে সক্ষম করবে।’

এই ফিচার ইমেইলের বিষয়বস্তুর ভাষা সনাক্ত করে এবং ই-মেইলের শীর্ষে একটি ব্যানার প্রদর্শন করে। যা ইউজারদের সেট করা পছন্দের ভাষায় অনুবাদ করার প্রস্তাব দেয়। যেমন, যদি একটি ই-মেইল স্প্যানিশ ভাষায় হয় এবং ইউজারদের ভাষা ইংরেজি হয়, তাহলে তাদের অনুবাদিত ই-মেইল দেখতে ‘Translate to English’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

ইউজাররা যদি ই-মেইলটি অনুবাদ করতে না চান, তাহলে ব্যানারটি খারিজও করতে পারেন। ইউজাররা চাইলে কোনও নির্দিষ্ট ভাষা থেকে আর কখনও ই-মেইল অনুবাদ না করার অপশনও বেছে নিতে পারেন। ইউজাররা সেটিংসে তাদের অনুবাদের পছন্দগুলি কাস্টমাইজ করতে পারেন। সেখানে তারা যে ভাষা সবসময় অনুবাদ করতে চান, তা নির্বাচন করতে পারেন?

জিমেইলের নতুন ফিচার ব্যবহার করার উপায়—

একটি ই-মেইল অনুবাদ করতে ইউজারদের জিমেলের ই-মেইলের শীর্ষে থাকা ‘Translate’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

ইউজাররা চাইলে ট্রান্সলেটের অপশন বাতিল করতে পারেন। কিন্তু, যখন জিমেইল শনাক্ত করবে যে ই-মেইলের বিষয়বস্তু সেট করা ভাষা থেকে আলাদা তা আবার দেখা যাবে।

একটি নির্দিষ্ট ভাষার জন্য ‘Translate’ ব্যানারটি বন্ধ করতে, ইউজারদের ‘Don’t translate [language] again’ অপশনটি বেছে নিতে হবে।

যদি সিস্টেমটি অন্য ভাষা শনাক্ত না করে তবে মেইলটিকে ম্যানুয়ালি অনুবাদ করার একটি বিকল্প থ্রি ডট মেনুতে পাওয়া যাবে।

সূত্র: ইত্তেফাক




ডেঙ্গু প্রতিরোধে গাংনীতে হাঙ্গারের সচেতনতা কর্মসূচি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে মাসব্যাপি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে দি হাঙ্গার প্রজেক্টের স্বেচ্ছাসেবিরা একটি সচেতনতামূলক র‌্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

দি হাঙ্গারের স্বেচ্ছাসেবি ও কর্মকর্তাবৃন্দ বিভিন্ন সচেতনতামূলক বক্তব্য সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে এ র‌্যালিতে অংশ নেন।
দি হাঙ্গার প্রজেক্টর গাংনী এরিয়া সমন্বয়কারি হেলাল উদ্দীন, ভিটিআর সিরাজুল ইসলামসহ ইউনিয়ন সমন্বয়কারী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবিরা এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

পাশাপাশি দি হাঙ্গারের উদ্যোগে এলাকার ঝোপঝাড়, ড্রেন ও খানাখন্দে জমে থাকা পানিতে ফগার এবং স্প্রের সাহায্যে মশক নিধনের ওষুধ ছিটানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার পথচারী ও বাসিন্দাদের মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন স্বেচ্ছাসেবিরা।

দি হাঙ্গার প্রজেক্টের গাংনী এরিয়া সমন্বয়কারি হেলাল উদ্দীন বলেন, বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু মানুষের মাঝে আতংক তৈরী করেছে। তাই হাঙ্গার প্রজেক্টের স্বেচ্ছাসেবি ও ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গারের ছেলে মেয়েরা প্রতিটি গ্রামে গ্রামে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছেন। বিশেষ করে উঠান বৈঠক, ঝোপ ঝাড় পরিস্কার করাসহ ডেঙ্গুবাহি মশার জিবানু ধ্বংশ করতে কাজ করছে।




মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে

মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রায় ৮ মাস পর গত ফেব্রুয়ারীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলেও সেটা এতদিন গোপন ছি। সম্মেলনের ১৪ মাস পার হওয়ার পর গত শনিবার থেকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে গঠিত ও ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী কমিটি ও ১৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণার চিঠি দেখতে পাওয়া যায়।

কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ইকবাল হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক এড. খ.ম.ইমতিয়াজ বিন হারুন (জুয়েল)। ঘোষিত নয় জন সহ-সভাপতির মধ্যে খন্দকার মনিরুল ইসলাম এখন মৃত, বাকি সহ-সভাপতিদের মধ্যে রয়েছেন মেঃ ইয়ারুল ইসলাম, কে এম বদরুল হাসান বাবু, মাহফুজ আহমেদ রিঙ্কু, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ আনারুল ইসলাম, মোঃ সাইফুল ইসলাম পল্টু,মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ খলিলুর রহমান, ৩ জন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন
মোঃ হায়দার আলী সিদ্দিকী, মোঃ সাজ্জাদুল আলম, মোঃ তানসেন আলী, ৩ জন সাংগঠনিক সম্পাদক মধ্যে রয়েছেন মোঃ সেলিম খান, মোঃ আব্দুর রফিক ও মোঃ শাহিনুল ইসলাম। আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মোঃ সরোয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোঃ শেখ সৌরাওয়ার্দী (জুয়েল),দপ্তর সম্পাদক মোঃ আরিফুল হক রনি, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোঃবনিয়াজ শেখ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম বুলু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ রাসেল হক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মমিন দীপু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোছাঃ বিলকিস আরা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মজিদ পাতান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মেঃ মিজানুর রহমান, শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক মোঃকামরুজ্জামান চঞ্চল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাসেম আলী পিয়াদা, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ শেখ, সহ দপ্তর সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম সাবান, সহ প্রচার সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, কোষাধক্ষ্য সানোয়ার উদ্দিন আহমেদ (শহীদ)। এছাড়া কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন সিরাজুল ইসলাম, ইমদাদুল হক ডাবু, এ এস এম ফরিদ উদ্দিন, বিল্লাল হোসেন, আক্কাচ আলী, সাজ্জাদুল আনাম, আরিফুল হক আরিফ, আব্দুল কুদ্দুস , বায়েজিদ হোসেন, আলামিন শেখ, রুহুল ইসলাম স্বপন, আনোয়ার হোসেন পিন্টু, ফিরোজ শেখ, মোয়াজ্জেম হোসেন, আহসান হাবি, এমদাদুল হক স্বপন, শ্রী অনন্ত কুমার হালদার, নামাজতুল্লাহ লাটু, গোলাম মোস্তফা মাস্টার, আব্দুল মান্নান, তোহিদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ, শওকত আলী, জালাল উদ্দিন খোকন, মফিজুর রহমান, আবু জাহিদ মোঃ তারিক, রিপন হক, শ্রী প্রবীর চন্দ্র অধিকারী, আসিকুজ্জামান সাগর, মিরাজুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ হিল বাকী, সাজেদুর রহমান রানা, শরিফুল ইসলাম, আবু সাঈদ মোঃ ফারুক হোসেন এবং বুরহানুল আজিম রিয়াদ।

এই কমিটিতে উপদেষ্টা পরিষদের ১৭ জন সদস্য হিসেবে রয়েছেন এস এম মামুনুর রশিদ, রেহেনা আক্তার বীনা, এ জেড এম মারুফুজ্জোহা, আবুল কাশেম,আশরাফুল ইসলাম, মোঃ ফুলসুরাত শেখ, মিনারুল ইসলাম লাল মিয়া, মেজবাহ উদ্দিন খান, লিয়াকত আলী, আজিজুর রহমান, আব্দুল মজিদ, আব্দুর রাজ্জাক (দর্জি), মশিউর রহমান কচি, আবু জোহা বাচ্চু, এ জি এস সাদ্দাতুল মামুন, শফিকুর রহমান শফিক এবং নাসির উদ্দিন।




বেদনায় ভরা দিন

রোড ৩২, ধানমন্ডি
তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। দূরের মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। এমন সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ। এ গোলাগুলির আওয়াজ ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের একটি বাড়ি ঘিরে, যে বাড়িতে বসবাস করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এক বিঘা জমির উপর খুবই সাধারণ মানের ছোট্ট একটা বাড়ি। মধ্যবিত্ত মানুষের মতই সেখানে বসবাস করেন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি সবসময়ই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। এই বাড়ি থেকেই ১৯৭১ সালের ২৬-এ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যে আন্দোলন-সংগ্রাম এই বাড়িটি তার নীরব সাক্ষী। সেই – বাড়িটিই হলো আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। গোলাগুলির আওয়াজের মধ্যে আধানের ধ্বনি হারিয়ে যায়।

রাষ্ট্রপতির বাসভবনের নিরাপত্তায় সাধারণত সেনাবাহিনীর ইনফেন্ট্রি ডিভিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ১০-১২ দিন পূর্বে বেঙ্গল ল্যাঞ্চারের অফিসার ও সৈনিকদের এ দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, লক্ষ্য করলেন কালো পোশাকধারী সৈনিকেরা বাড়ির পাহারায় নিয়োজিত। তিনি প্রশ্নটা তুলেছিলেনও। কিন্তু কোন সদুত্তর পাননি।
আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছিল দেশের মানুষের প্রতি অঢেল ভালোবাসা। তিনি সকলকেই অন্ধের মত বিশ্বাস করতেন। তিনি কখনও এটা ভাবতেও পারেননি যে, কোন বাঙালি তাঁর ওপর গুলি চালাতে পারে বা তাঁকে হত্যা করতে পারে। তাঁকে বাঙালি কখনও মারবে না, ক্ষতি করবে না – এই বিশ্বাস নিয়েই তিনি চলতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, সেই বিশ্বাসের কি মূল্য তিনি পেয়েছিলেন?

চারদিকে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ। বিকট শব্দে মেশিনগান হতে গুলি করতে করতে মিলিটারি গাড়ি এসে দাঁড়ালো ৩২ নম্বর রোডের বাড়ির সামনে। গুলির আওয়াজে ততক্ষণে বাড়ির সকলেই জেগে উঠেছে। আমার ভাই শেখ কামাল দ্রুত নিচে নেমে গেল রিসেপশন রুমে – কারা আক্রমণ করলো, কী ঘটনা জানতে। বাবার ব্যক্তিগত সহকারী মহিতুল ইসলাম বিভিন্ন জায়গায় ফোন করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছিলেন না।

সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর কামাল বেরিয়ে বারান্দায় এসে দেখে বাড়ির গেট দিয়ে মেজর নূর ও ক্যাপ্টেন হুদা এগিয়ে আসছে। কামাল তাদের দেখেই বলতে শুরু করলো: আপনারা এসে গেছেন, দেখেন তো কারা বাড়ি আক্রমণ করলো?
ওর কথা শেষ হতে পারলো না। তাদের হাতের অস্ত্র গর্জে উঠলো। কামাল সেখানেই লুটিয়ে পড়লো। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় মেজর নূর আর কামাল একইসঙ্গে কর্নেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। আর সেই কারণে ওরা একে অপরকে ভালোভাবে চিনতো। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য! সে চেনা মানুষগুলি কেমন অচেনা ঘাতকের চেহারায় আবির্ভূত হলো। নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করলো সহযোদ্ধা কামালকে। কামাল তো মুক্তিযোদ্ধা। দেরাদুন থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে যায় যুদ্ধ করতে। এরপর বাংলাদেশ সরকার ক্যাপ্টেন শেখ কামালকে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান কর্নেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে।

মেজর সৈয়দ ফারুক ট্যাঙ্ক নিয়ে আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছিল। আব্বা সবার আগে ঘর থেকে সেনাবাহিনী প্রধান সফিউল্লাহ সাহেবকে ফোন করেন। তাঁকে জানান বাড়ি আক্রান্ত। তিনি জবাব দেন: আমি দেখছি। আপনি পারলে বাইরে কোথাও চলে যান।

এর মধ্যে ফোন বেজে ওঠে। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরিয়াবাত, আমার সেজ ফুফা, ফোনে জানান যে তাঁর বাড়ি কারা যেন আক্রমণ করেছে। আব্বা জবাব দেন তাঁর বাড়িও আক্রান্ত। আব্বা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে ফোন করেন। আব্দুর রাজ্জাক বলেন: লিডার দেখি কী করা যায়। আব্দুর রাজ্জাক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। তোফায়েল আহমেদ ফোনে বলেন: আমি দেখছি। রিসিভার নামিয়ে রাখতে রাখতে বলতে থাকেন: আমি কী করবো? তোফায়েল আহমেদ রক্ষী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। আব্বা নিচে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হন। মা পাঞ্জাবিটা পরিয়ে দেন। আব্বা যেতে যেতে কামাল কোথায় – জিজ্ঞেস করতে থাকেন। কথা বলতে বলতে তিনি সিঁড়ির কাছে পৌঁছান।

এ সময় সিড়ির মাঝের প্ল্যাটফর্মে যারা দাঁড়িয়েছিল তারাও দোতালায় উঠে আসছিল। এদের মধ্যে হুদাকে চিনতে পারেন আব্বা। আব্বা তার বাবার নাম ধরে বলেন: তুমি রিয়াজের ছেলে না? কী চাস তোরা? কথা শেষ করতে না করতেই গর্জে উঠে ওদের হাতের অস্ত্র। তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই যোগ দিয়েছিল রিসালদার মোসলেউদ্দিন।

ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে সিঁড়ির উপর লুকিয়ে পড়লেন আব্বা। আমার মা সিঁড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ঘাতকের দল ততক্ষণে ওপরে উঠে এসেছে। আমার মাকে তারা বাধা দিল এবং বললো যে আপনি আমাদের সঙ্গে চলেন। মা বললেন: আমি এক পা-ও নড়বো না, কোথাও যাবো না। তোমরা উনাকে মারলে কেন? আমাকেও মেরে ফেলো। ঘাতকদের হাতের অস্ত্র গর্জে উঠলো। আমার মা লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে।

কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল ও জামালের স্ত্রী রোজী জামাল মা’র ঘরে ছিল। সেখানেই তাঁদের গুলি করে হত্যা করে ঘাতকেরা। রাসেলকে রমা জড়িয়ে ধরে এক কোণে দাঁড়িয়েছিল। ছোট্ট রাসেল কিছুই বুঝতে পারছে না। একজন সৈনিক রাসেল আর রমাকে ধরে নিচের তলায় নিয়ে যায়। একইসঙ্গে বাড়িতে আরও যারা ছিল তাদেরও নিচে নিয়ে দাঁড় করায়।
গৃহকর্মী আব্দুল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। তাকেও নিয়ে যায়। বাড়ির সামনে আম গাছতলায় সকলকে দাঁড় করিয়ে একে একে পরিচয় জিজ্ঞেস করে। আমার একমাত্র চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের পঙ্গু ছিলেন। তিনি বার বার মিনতি করছিলেন: আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা; আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমাকে মেরো না। ছোট ছোট বাচ্চারা আমার, ওদের কী হবে? কিন্তু খুনিরা কোন কথাই কানে নেয় না। তাঁর পরিচয় পেয়ে তাঁকে অফিস ঘরের বাথরুমে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

রমার হাত ধরে রাসেল “মা’র কাছে যাব, মা’র কাছে যাব” বলে কান্নাকাটি করছিল। রমা বারবার ওকে বোঝাচ্ছিল: তুমি কেঁদো না ভাই। ওরা তোমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু অবুঝ শিশু মায়ের কাছে যাব বলে কেঁদেই চলছে। এ সময় একজন পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় পেয়ে বলে: চলো, তোমাকে মায়ের কাছে দিয়ে আসি।

ভাইয়ের লাশ, বাবার লাশ মাড়িয়ে রাসেলকে টানতে টানতে দোতলায় নিয়ে মায়ের লাশের পাশেই গুলি করে হত্যা করে। দশ বছরের ছোট্ট শিশুটাকে ঘাতকের দল বাঁচতে দিল না।

যে বাড়ি থেকে একদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেই বাড়িটি রক্তে ভেসে গেল। সেই রক্তের ধারা ওই সিঁড়ি বেয়ে বাংলার মাটিতে মিশে গেছে- যে মাটির মানুষকে তিনি গভীরভাবে ভালোবাসতেন।

৪৬ ব্রিগেডের দায়িত্বে ছিলেন সাফায়েত জামিল। সেনাপ্রধান তাঁকে ফোন করে পায়নি। সিজিএস খালেদ মোশাররফও কোন দায়িত্ব পালন করেনি। সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান কোন ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেনি বরং সে পুরো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। খুনি রশিদ ও ফারুক বিবিসি-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা বলেছে। খুনি মোস্তাক জিয়াকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়। ঢাকার তৎকালীন এসপি মাহবুবকেও ফোন করে পাওয়া যায়নি।

মেজ ফুপুর বাসা
ঘাতকেরা ধানমন্ডির মেজ ফুফুর বাড়ি আক্রমণ করে রিসালদার মোসলেউদ্দিনের নেতৃত্বে। তাদের একটি দল সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে গালি দিতে থাকে। বুটের আওয়াজ আর চিৎকার- চেঁচামেচি শুনে মুক্তিযোদ্ধা যুবনেতা এবং বাংলার বাণীর সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মনি ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। বন্দুক তাক করে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকে ঘাতকের দল। এ সময় তাঁর অন্তঃসত্তা স্ত্রী আরজু ছুটে এসে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে ঘাতকদের বুলেট থেকে বাঁচাতে। কিন্তু ঘাতকের দল তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি করে। বুলেটের আঘাতে দুজনের শরীর ঝাঝরা হয়ে যায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নিথর দেহ দুটি। ছোট দুই ছেলে, তিন বছরের তাপস আর বছর পাঁচেকের পরশ, মা-বাবার লাশের পাশে এসে চিৎকার করতে থাকে আর বলতে থাকে: মা ওঠো, বাবা ওঠো। ঐ শিশুদের কান্না মা-বাবা কি শুনতে পেয়েছিল? ততক্ষণে তাঁরা তো না-ফেরার দেশে চলে গেছে। শিশুদের চোখের পানি মা-বাবার রক্তের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে যায়।

সেজ ফুপুর বাড়ি
গুলি করতে করতে মেজর সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মেজর এ এম রাশেদ চৌধুরী মিন্টু রোডে সেজ ফুফার সরকারি বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে দোতালায় উঠে যায়। পরিবারের সকল সদস্যকে তাঁদের ঘর থেকে বের করে নিচতলায় বসার ঘরে নিয়ে আসে। এর পর তাদের উপর ব্রাশ ফায়ার করে। গুলির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন আবার ফুপু আমিনা সেরনিয়াবাত, আমার ফুফা কৃষিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সেরিয়াবাত, তাঁর মেয়ে বিউটি, বেবি, রিনা, ছেলে খোকন, আরিফ, বড় ছেলে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর স্ত্রী শাহানা, নাতি সুকান্ত, ভাইয়ের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ, ভাগ্নে রেন্টু। আট বছরের নাতনি কান্তা গুলিবিদ্ধ লাশের নিচে চাপা পড়ে যাওয়ায় বেঁচে যায়। দেড় বছরের নাতি সাদেক গুলিবিদ্ধ মায়ের বুকে পড়ে কাঁদতে থাকে। আট বছরের কান্তা নিজের ফুফু বেবির লাশের নিচে চাপা পড়েছিল। সেখান থেকে কোন মতে বের হয়ে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। সারি সারি গুলিবিদ্ধ আপনজন পড়ে আছে। কারও নিথর দেহ, কেউ বা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। ঘরের কোণায় রাখা অ্যাকুরিয়াম গুলি লেগে ভেঙে যায়। অ্যাকুরিয়ামের পানির সঙ্গে মাছগুলি মাটিতে পড়ে যায়। রক্ত ভেজা পানিতে মাছগুলিও ছটফট করে লাফাতে থাকে। কিছুক্ষণ আগে যে আপনজন মা, বাবা, দাদা-দাদি, চাচা, ফুফুসহ সকলকে নিয়ে এই শিশুরা ছিল, আর এখন গুলিবিদ্ধ রক্তে ভেজা আপনজন। লাশের নিচ থেকে নিজেকে বের করে ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে ৮ বছরের শিশুটি অবাক বিস্ময়ে ভীত-সন্ত্রস্ত চোখে তাকিয়ে থাকে।

মেজর ফারুক ট্যাঙ্ক নিয়ে লেকের ওপার থেকে ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছিল। সেই গুলি মোহাম্মদপুরে এক বাড়িতে পড়ে। সেখানে ১১ জন মানুষ নিহত হয় আরও অনেকেই আহত হয়। মেজর ডালিম রেডিও স্টেশন দখলের দায়িত্বে ছিল। সেখান থেকেই সে ঘোষণা দেয়: শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকেরা শুধু হত্যা করে তাই নয়, তারা আমাদের বাসা লুটপাট করে। আমার বাবার শোবার ঘরে এবং ড্রেসিং রুমের সকল আলমারি, লকার সবকিছু ভেঙ্গে সেখান থেকে যা কিছু মূল্যবান ছিল গহনা, ঘড়ি, টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়। বাসায় ব্যবহার করা গাড়িটাও মেজর হুদা ও নূর নিয়ে যায়।আলমারীর সব কাপড় চোপড় বিছানার ওপর পড়েছিল। সেগুলোর অনেকগুলোতে ছিল রক্তের দাগ। এই হত্যাকান্ডের পর লুটপাটের ঘটনা মনে করিয়ে দেয় ওদের চরিত্রের অন্ধকার দিকটা। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তারা এই সদ্য স্বাধীন দেশের মানুষের কত বড় সর্বনাশ করেছিল তা কি ওরা বুঝতে পেরেছিল?

যে বুকে বাংলার মানুষের জন্য প্রচণ্ড ভালোবাসা ছিল, সেই বুকটাই ঝাঁঝরা করে দিল তাঁরই প্রিয় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কিছু দুর্বৃত্ত। আমার আব্বা কোনদিন বিশ্বাস করতেই পারতেন না যে, বাংলাদেশের কোন মানুষ তাঁকে মারতে পারে, বা কোন ক্ষতি করতে পারে। পৃথিবীর অনেক নেতাই তাঁকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, ওরা তো আমার ছেলে, আমাকে কেন মারবে? এত বড় বিশ্বাস ভঙ্গ করে ওরা বাঙালির ললাটে কলঙ্ক লেপন করল।

কী বিচিত্র এ দেশ! একদিন যে মানুষটির একটি ডাকে এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনেছিল, বীরের জাতি হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে মর্যাদা পেয়েছিল, আজ এই হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে সেই জাতি সমগ্র বিশ্বের কাছে বিশ্বাসঘাতক জাতি হিসেবে পরিচিতি পায়। খুনি ও ষড়যন্ত্রকারীদের এদেশের অগণিত জনগণ ঘৃণা করে এবং বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করে।

আমার অন্তঃসত্ত্বা চাচী ছয় জন সন্তান নিয়ে চরম বিপদের সম্মুখীন হন। খুলনায় ভাড়ার বাসায় বসবাস করতেন। সে বাসা থেকে তাঁকে বিতাড়িত করা হয়। টুঙ্গিপাড়ার বাড়িও সিল করে রাখা হয়। ঘরবাড়ি হারা সদ্য বিধবা কোথায় ঠাঁই পাবেন?

সোবহানবাগ আব্বার সামরিক সচিব কর্নেল জামিল তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে রওয়ানা হন। সোবহানবাগ মসজিদের কাছে তাঁর গাড়ি আটকে দেয় ঘাতকেরা। তিনি এগুতে চাইলে ঘাতকেরা তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। আমাদের বাড়ির নিচে পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্য এসআই সিদ্দিকুর রহমানকেও তারা গুলি করে হত্যা করে।
বেলজিয়াম

ক্রিং ক্রিং ক্রিং …। টেলিফোনটা বেজেই যাচ্ছে। আমার ঘুম ভেঙে গেল। মনে হলো টেলিফোনের আওয়াজ এত কর্কশ? আমি ঘুম থেকে উঠে সিঁড়ির কাছে দাঁড়ালাম। দেখি নিচে অ্যাম্বাসেডর সানাউল হক সাহেব ফোন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাকে দেখে বললেন, ওয়াজেদের সঙ্গে কথা বলবেন। আমি তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। অপর পারে জার্মানির অ্যাম্বাসেডর হুমায়ুন রশিদ সাহেব কথা বলছেন। তিনি জানালেন বাংলাদেশে ক্যু হয়েছে। আমার মুখ থেকে বের হল: “তাহলে তো আমাদের আর কেউ বেঁচে নাই”। রেহানা পাশে ছিল। তাঁকে জড়িয়ে ধরলাম। কিন্তু তখনও জানি না কী ঘটনা ঘটেছে।
মাত্র ১৫ দিন আগে জার্মানি এসেছি। বেলজিয়ামে বেড়াতে এসেছি। নেদারল্যান্ডেও গিয়েছিলাম। আব্বা বলেছিলেন, নেদারল্যান্ড কীভাবে সাগর থেকে ভূমি উত্তোলন করে – পারলে একবার দেখে এসো। একদিন আগেই আব্বা-মার সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন জানি মা খুব কাঁদছিলেন। বললেন “তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে, তুই আসলে আমি বলবো।” আমাদের খুব খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল তখনই দেশে ছুটে চলে যাই।

আব্বা বললেন: রোমানিয়া ও বুলগেরিয়াতে তিনি যাবেন। আর ফেরার পথে আমাদের নিয়ে আসবেন। কিন্তু আমাদের আর দেশে ফেরা হলো না। একদিন পরই সব শেষ। বেলজিয়ামের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সানাউল হক, যিনি রাজনৈতিক সদিচ্ছায় অ্যাম্বাসেডর পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন, রাতারাতি তার চেহারাটাই পাল্টে গেল। তিনি জার্মানিতে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন রশিদ সাহেবকে বলেন, যে বিপদ আমার কাঁধে পাঠিয়েছেন তাঁদের ফেরত নেন।

যিনি আগের রাতে আমাদের জন্য ‘ক্যান্ডেল লাইট ডিনার’ এর আয়োজন করেছিলেন; কত খাতির, আদর-যত্ন, আর এখন আমরা তার কাছে আপদ হয়ে গেলাম। আমাদের বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়িটাও দিলেন না। বেলজিয়াম অ্যাম্বাসিতে কর্মরত আমার স্কুলের বান্ধবী নমি’র স্বামী জাহাঙ্গীর সাদাতের গাড়িতে করে আমদের বেলজিয়াম বর্ডারে যেতে বললেন। জাহাঙ্গীর সাদাত আমাদের জার্মানির বর্ডারে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে নোম্যান্স ল্যান্ড পার হয়ে আমরা জার্মানির মাটিতে পৌঁছলাম। জার্মানির অ্যাম্বাসেডর হুমায়ুন রশিদ সাহেব গাড়ি পাঠিয়েছেন। আর তাঁর স্ত্রী আমার বাচ্চাদের জন্য শুকনো খাবার-দাবারও গাড়িতে দিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে কয়েকদিন আশ্রয় পেলাম। তাঁদের আদর যত্ন দুঃসময়ে আমাদের জন্য অনেক মূল্যবান। আমরা কোনদিন ভুলতে পারবো না হুমায়ুন রশীদ ও তাঁর স্ত্রীর অবদান। জার্মান অ্যাম্বাসির সকল অফিসার ও কর্মচারি আমাদের অত্যন্ত যত্ন করেছিলেন। অ্যাম্বাসির গাড়িতে আমাদের কার্লস দিলেন। জার্মান সরকার, যগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা রুয়ে পৌঁছে গান্ধীসহ আরও অনেকে আমাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে চাইলেন। জার্মানিতে নিযুক্ত ভারতের অ্যাম্বাসেডর জনাব হুমায়ুন রশিদ ও ডক্টর ওয়াজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি আমাদের ভারতে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেন। আমরা জার্মানি থেকে ভারতে পৌঁছালাম।

উপসংহার
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের রক্তাক্ত বেদনার আঘাত বুকে ধারণ করে আমার পথচলা। বাবা মা ভাইদের হারিয়ে ৬ বছর পর ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে আসতে পেরেছি। একটি প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছি, যে বাংলাদেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, তা ব্যর্থ হতে পারে না। লাখো শহিদের রক্ত আর আমার বাবা-মা ভাইদের রক্ত ব্যর্থ হতে আমি দেব না।
আমার চলার পথ খুব সহজ ছিল না, বারবার আমার উপর আঘাত এসেছে। মিথ্যা অপপ্রচার, গুলি, বোমা ও গ্রেনেড হামলার শিকার হতে হয়েছে আমাকে। খুনি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময় বলেছিল, “শত বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না।” “শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও কখনও হতে পারবে না।” এর পরেই তো সেই ভয়াবহ ২০০৪ সালের ২১ এ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে সেদিন আমাকে রক্ষা করেছিলেন। উপরে আল্লাহ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আর বাংলাদেশের জনগণই আমার শক্তি। আমার চলার কন্টকাকীর্ণ পথে এরাই আমাকে সাহায্য করে চলেছেন। তাই আজকের বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জনগণের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের জনগণকে ক্ষুধার হাত থেকে মুক্তি দিতে পেরেছি। তারা এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে।

বাবা! তুমি যেখানেই থাক না কেন, তোমার আশীর্বাদের হাত আমার মাথার উপর আছে – আমি তা -অনুভব করতে পারি। তোমার স্বপ্ন বাংলাদেশের জনগণের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। তোমার দেশের মানুষ তোমার গভীর ভালোবাসা পেয়েছে আর এই ভালোবাসার শক্তিই হচ্ছে এগিয়ে যাবার প্রেরণা।

লেখক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা।




মেহেরপুরে অতিরিক্ত আইজিপি পরিচয়ে প্রতারণার দায়ে যুবক আটক

পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপির পোশাক পরে ছবি ফেসবুক প্রোফাইলে দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মাহফুজুর রহমান জয় (২৪) নামের এক প্রতারককে আটক করেছে মুজিবগনগর থানা পুলিশ।

মাহফুজুর রহমান জয় মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ডাবলুর ছেলে।

গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে মোনাখালী বাজারের ঈদগাহ মাঠে অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমান জয়কে আটক করেন পুলিশ। মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল এইতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মাহফুজুর রহমান জয় নিজেকে পুলিশেরউর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্নপ্রতারণা করে আসছিলেন । তিনি আরও বলেন, মাহফুজুর রহমান জয়ে’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করে তার মোবাইলের গ্যালারিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পোশাক ও র‌্যাংক ব্যাজ পরা বিভিন্ন ছবি পাওয়াগেছে। এছাড়া আসামীর তার ফেসবুক এ্যাপে মো: মাহফুজুর রহমান (জয়) নামে আইডি লগ-ইন করা প্রোফাইলে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপির পোশাক পরা ছবি পাওয়া যায়। তার ফেসবুক আইডিতে পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন পোস্ট পাওয়া যায়। সে নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিত। সে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে সরকারি কর্মকর্তার ছদ্মবেশধারণ করে সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যবহৃত পোশাক ও প্রতীক পরার অপরাধ সংগঠনের চেষ্টা করার অপরাধ করেছেন। এ

ঘটনায় মুজিবনগর থানার এসআই উত্তম কুমার বাদী হয়ে আসামীর বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মুজিবনগর থানার মামলা নং-১১,তারিখ-১৪/০৮/২০২৩, দণ্ডবিধি ধারা- ১৭০/১৭১/৪২০/৫১১ । তার বিরুদ্ধে পূর্বে অনলাইনজুয়ার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।

আজ সোমবার গ্রেফতারকৃত আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।




গাংনীতে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর বিষপানে আত্মহনন

গাংনী উপজেলার রামদেব গ্রামে উর্মিলা খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধু বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। উর্মিলা খাতুন সৌদি প্রবাসী ইদ্রিস আলীর স্ত্রী।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বামীর পরিবারের মানুষিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গতকাল রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বিষপান করে সে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে করমদী সন্ধানী হাসপাতালে নেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় পথের মধ্যে মারা যায় উর্মিলা।

এদিকে উর্মিলা মারা যাবার সাথে সাথে তার স্বামীর পরিবারের লোকজন ঘরে তালাবদ্ধ করে সবাই পালিয়ে যায়।

উর্মির্লার পিতা তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, উর্মিলার ২ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। সে স্বামীর পরিবারেই থাকে। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই শশুর শাশুড়ি তার উপর মানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেচে নিয়েছে।

এঘটনায় রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে মেয়ের শাশুড়ির পরিবালের লোকজনের নামে গাংনী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।




দামুড়হুদার জয়রামপুরে যুবকের আত্ম*হত্যা

দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামে হতাশাগ্রস্থ বেকার এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। গত শনিবার দিনগত গভীর রাতে নিজ বাড়িতে তিনি আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যা কারী হলো জয়রামপুর চৌধুরী পাড়ার হাচাদ আলীর ছেলে রিফাত আলী (২১)।

পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে রিফাত আলী তার নানার বাড়িতে বসবাস করতো। সে একজন বেকার ও হতাশাগ্রস্ত যুবক ছিল। সে নিয়মিত কোন কাজকর্ম করতো না বেকার। তার মা বিদেশ থাকে। বিদেশ থেকে যে টাকা পাঠায় সে টাকায় তার সংসার চলে, সে নিয়মিত কোন কাজকর্ম করে না। গত দুই মাস তার মা টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে তার নিজ বসতঘরের এক রুমের ঘরের টিনের চাল বাদে, বাদবাকি সব ঘড়ের টিনের চাল সহ সংসারের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রয় করে দেয়। চরম হতাশা থেকেই সে রাতের কোন এক সময় নিজ বসতঘরের আড়ায় গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যা করে বলে মর্মে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার স্ত্রী।

তার স্ত্রী আরো বলেন, আমার স্বামী নিয়মিত কোন কাজ কাম করতো না, সে মাঝে মাঝে মিস্ত্রির কাজে যেত কিন্তু নিয়মিত না। আমার শাশুড়ি বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতো ওই টাকাই সে সংসার চালাতো, টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলে সে চরম হতাশায় পড়ে যাই। যার কারনে সে আত্মহত্যা করতে পারে। আমার শ্বশুর বিয়ে করে অন্যত্র থাকে। সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পারিবারিক জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক ছিলো। তার বর্তমান বয়স আড়ায় বছর।

এবিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি অপারেশন শফিউল আলম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।




মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে বৃক্ষরোপন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সারা দেশের সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্নয় করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।

আজ রবিবার ১৩ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১১টায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে ১০০টি ভেষজ, ফলজ ও ফুলের গাছ রোপন করা হয়। এর আগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এই বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস ছাত্তার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোখলেসুর রহমান পলাশ, ডা. ওবাইদুর রহমান, ডা. আব্দুর রশিদ, নার্স সুপারভাইজার নাজমা প্রমুখ।




গাংনীতে যাত্রাশিল্প পরিষদের সভাপতি আলী আজগর আর নেই

গাংনীতে যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি ও গাংনী সীমান্ত অপেরা’র সহকারী পরিচালক এবং উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রাম আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আলী আজগর (৫৮) মারা গেছেন।(ইন্নাইলাহি…… রাজিউন)।

আজ রবিবার মধ্যরাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি । তিনি বেশ কিছুদিন যাবত টাইফয়েড জ্বরে ভুগছিলেন।

আলী আজগর উপজেলার গাঁড়াডোব (পোড়াপাড়া) গ্রামের মৃত আওলাদ হোসেনের মেজো ছেলে।
রবিবার বাদ জোহর গাঁড়াডোব কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাযা শেষে নিকটস্থ গাঁড়াডোব কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

মরহুম আলী আজগর তার স্ত্রী, ২ কন্যা -জামাইসহ অসংখ্য আত্মীয় ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন।

আজগর আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানাতে নামাজের জানাযায় উপস্থিত থেকে মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মোখলেছুর রহমান মুকুল, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন, মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সেক্রেটারী অধ্যাপক সাইদুর রহমান, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মুহিত, গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সেক্রেটারী হাজী শফি কামাল পলাশ, যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, গাংনী যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সেক্রেটারী সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম অল্ডাম প্রমুখ। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।