কুষ্টিয়ার মানুষ বেশ ভোজনরসিক। এছাড়াও জনপ্রিয় বেকারির তৈরি নানান খাবার সমুহ। প্রায় প্রতিটি দোকানে পাওয়া যায় কেক, হরেকরকমের বিস্কুট, চানাচুর, পাউরুটি, বাটারবন, মিষ্টি, সন্দেশ ইত্যাদি। এসব পণ্য জনপ্রিয় হলেও এর মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
অভিযোগ রয়েছে, এসব বিভিন্ন বেকারির কারখানায় এসব খাবার তৈরি হয় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াও এগুলো বাজারজাত করা হয়। সরেজমিন বেকারির কারখানাগুলোতে দেখা গেছে, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ। প্রতিটি কারখানার ভেতরে স্যাঁতসেঁতে। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, পাউরুটি, বাটারবন, মিষ্টি, সন্দেশসহ বিভিন্ন বেকারির পণ্য।
কারখানার ভেতরে যেখানে তৈরি করা খাবার রাখা আছে, সেখানেই ময়দা ও আটার গোডাউন। পাশে রাখা আছে জ্বালানির কাঠও। সঙ্গে রয়েছে মানবদেহের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল এবং পামওয়েল তেলের ড্রাম। এর পাশেই ছড়ানো ছিটানো আছে নানা প্রকার তৈরি সব খাদ্যপণ্য।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল অভিযান চালিয়ে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এসব খাদ্যদ্রব্য তৈরির জন্য আটা-ময়দা প্রক্রিয়াজাত করানো কড়াইগুলোও নোংরা। যেসব কর্মচারী এসব পণ্য তৈরি করছেন, তাঁদের শরীর থেকে ঝরছে ঘাম।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকায় বাজার তদারকি করা হয়। এসময় জগতি ৩ নং কলোনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে সুমনা বেকারি এবং আইমান বেকারিতে নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাসায়নিক রঙ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট এবং সাল্টু মিশিয়ে খাদ্যপণ্য তৈরি করা হচ্ছে। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪২ ধারা মোতাবেক সুমনা বেকারিকে ২০০০০/- এবং আইমান বেকারিকে ১০০০০/- জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
সদর উপজেলার জগতি বাজারের ৩ নং কলোনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে সুমনা বেকারি এবং আইমান বেকারিতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি করছে। রাসায়নিক রঙ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট এবং সাল্টু মিশিয়ে খাদ্যপণ্য তৈরি করা হচ্ছে। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪২ ধারা মোতাবেক সুমনা বেকারিকে ২০হাজার টাকা এবং আইমান বেকারিকে ১০ হাজার জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। সার্বিক সহযোগিতা করেন জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জনাব মোঃ আরাফাত আলী। ভেজাল খাবার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারপরও জনস্বার্থে এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই দুই বেকারির খাবার খেয়ে অনেক মানুষ আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গ থাকতে দেখা গেছে। আইন না মেনে শিশুদের দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন বেকারির খাবার। কোনো খাদ্যের প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ও বিএসটিআই অনুমোদিত স্টিকার নেই।
স্থানীয় চা দোকানীরা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ফুটপাথে চা-পান বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালাই। বেকারির তৈরি এসব খাবার উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। আর ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না।’