দামুড়হুদায় জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

‘সবার আগে সুশাসন, জনসেবায় উদ্ভাবন’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দামুড়হুদায় জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে বেলুন উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস। এসময় উপজেলা চত্ত্বর হতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শুরু হয়ে শহরের চৌরাস্তার মোড় প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালিতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদা খাতুন,কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার,মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মতিন,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসেনে জাহান দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী প্রমূখ।

সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার সরকারি সেবাসমূহ মানুষের দৌড়গোড়ায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষে কাজ করে চলছে। সেজন্য সরকারি দপ্তরের প্রত্যেক প্রধানগণ মানুষকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। কোন সেবাগ্রহীতা যেন কোনভাবেই হয়রানির মুখে না পড়ে সে দিকে দপ্তর প্রধানের ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা চাই একজন নাগরিক সরকারি সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে।




বাংলাদেশ থেকে ৪২ লাখ ভিডিও সরিয়েছে টিকটক

শর্ট ভিডিওর জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম টিকটক সর্বশেষ কমিউনিটি গাইডলাইনস এনফোর্সমেন্ট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ ২০২৩) এই রিপোর্টে ভুল তথ্যের প্রচার রোধ এবং অনলাইনকে নিরাপদ করতে টিকটক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। জবাবদিহিতার মাধ্যমে আস্থা অর্জন, কমিউনিটির জন্য প্ল্যাটফর্মটিকে নিরাপদ করে তোলা এবং অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে টিকটক, এই প্রতিবেদনে সে গুরুত্বটিই উঠে এসেছে।

টিকটক ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের দায়ে ৯ কোটি ১০ লাখ ৩ হাজার ৫১০টি ভিডিও সরিয়েছে। যা প্ল্যাটফর্মটিতে আপলোড করা ভিডিওর প্রায় ০.৬ শতাংশ। এই ভিডিওগুলোর মধ্যে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯১১টি ভিডিও সরানো হয়েছে অটোমেটেড সিস্টেমের মাধ্যমে।

তবে পরে সেগুলোর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৬২ লাখ ৯ হাজার ৮৩৫টি ভিডিও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের দায়ে ৪২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৩টি ভিডিও সরিয়েছে টিকটক। ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে একই কারণে সরানো হয়েছিল ৪২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৬৭টি ভিডিও। এছাড়া স্প্যাম অ্যাকাউন্ট এবং সংশ্লিষ্ট কনটেন্টগুলোর উপরও লক্ষ্য রাখে টিকটক। সেই সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হওয়া স্প্যাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাও নেয় প্ল্যাটফর্মটি।

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ থেকে যেসব ভিডিও সরানো হয়েছে তার মধ্যে ৯২ দশমিক ২ শতাংশ ভিডিও সরানো হয়েছে কেউ দেখার আগেই। আর এক দিনের মধ্যে সরানো হয়েছে প্রায় ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ ভিডিও। সে সঙ্গে এই প্রান্তিকে সক্রিয় অপসারণ করা হয় ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভিডিও।

সূত্র: ইত্তেফাক




হারমানপ্রীতের আচরণ নিয়ে আইসিসিতে অভিযোগ করবে বিসিবি

বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে টাই হলে তিন ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে ভারতের নারী দল। আর মিরপুরের এই তৃতীয় ওয়ানডেতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের একাধিক আচরণ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, বইছে সমালোচনার ঝড়ও। খেলার মাঝে মাঠেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, ম্যাচ শেষে আম্পায়ার আর বাংলাদেশ দল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে তাদের বিরুদ্ধে ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ তুলেচহে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ভারতীয়দের এমন ঘটনায় আইসিসির কাছে অভিযোগ জানানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।

ম্যাচ চলাকালীন আউট হওয়ার পর মাঠের মাঝেই ব্যাট দিয়ে আঘাত করে স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেন ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। ম্যাচশেষে পুরষ্কার বিতরণীর মঞ্চে এসেও আপত্তিকর মন্তব্যসহ উদ্ভট সব আচরণ করতে থাকেন ভারিতের অধিনায়ক। বাংলাদেশ দলের উদ্দেশ্যেও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন হারমানপ্রীত।

ভারতের অধিনায়ক বলেন, ‘আমার মনে হয় এ খেলা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। এমনকি ক্রিকেটের বাইরে গিয়ে যে ধরনের আম্পায়ারিং ছিল, সেটা আমাদের বিস্মিত করেছে। পরবর্তীতে যখন আমরা বাংলাদেশে আসব, তখন এ ধরনের আম্পায়ারিংয়ের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রস্তুত করে আসব।’

ট্রফি নিয়ে দুই দলের একসঙ্গে ছবি তোলার সময়ও কটূক্তি করতে থাকেন হারমানপ্রীত। তার সেই কটুক্তির জবাব হিসেবে ফটোসেশন শেষ না করেই সম্পূর্ণ দল নিয়ে ড্রেসিংরুমে চলে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।

ভারতের অধিনায়কের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের ঘটনায় আইসিসির কাছে অভিযোগ জানাবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।

ম্যাচ শেষে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘যেভাবে বলেছে, সেটা নিয়ে ‍দুই বোর্ডের মধ্যে কথা হবে। নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারিরা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন, যা ঘটেছে রিপোর্টে সেগুলো তুলে ধরবেন। আমরা তাদের বোর্ডের সঙ্গে বা আইসিসির সঙ্গে কথা বলব।’

নাদেল আরও বলেন, ‘দেখুন ক্রিকেটকে আমরা কি বলি? ভদ্রলোকের খেলা। এই জায়গায় আপনাকে অবশ্যই ভালো খেলোয়াড় হওয়ার আগে আপনার ভদ্রতা সম্পর্কে এবং ক্রিকেটীয় জ্ঞানটা আগে অর্জন করতে হবে। তারপর আমরা জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ খেলব, মন্তব্য করব।’

সূত্র: ইত্তেফাক




বেতাই না মুজিবনগর; কোনটা সঠিক?

একটি ছবি। কিন্তু দুটি স্থানে ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন্ন স্থানের ক্যাপশন। দুটি ক্যাপশনই মুক্তিযুদ্ধের গৌরাবান্বিত ইতিহাস বহন করে। প্রশ্ন হচ্ছে, একই ছবি কিভাবে দুটি ইতিহাস তৈরি করে? আমাদের মত পাঠকদের মনেও হয়তো প্রশ্ন তৈরি হবে কোনটি সঠিক ? বেতাই না কী মুজিবনগর।

মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের (সাবেক মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজ) ‘ইতিহাসের পাতা থেকে মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন’ স্মারক সংখ্যা ও কলেজে অধ্যক্ষর কক্ষের ডিসপ্লে বোর্ডে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে স্মারক সংখ্যার সম্পাদক মাসুদ রেজার বিরুদ্ধে। মাসুদ রেজা মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

স্মারক সংখ্যার কোথাও মরহুম ছহিউদ্দিনকে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার বা জড়িত থাকার তথ্য না থাকলেও সাবেক জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মুনসুর আলম খানের বাণীতে মরহুম ছহিউদ্দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্মারক সংখ্যার একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভারতের বেতাই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পতাকা উত্তোলন করছেন ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম সেখানে পতাকাকে সালাম জানাচ্ছেন মরহুম ছহিউদ্দিন। ওই একই ছবি মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষর কক্ষে নোটিশ বোর্ডে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ অনুষ্ঠানের বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২২ সালের মার্চ প্রকাশিত ইতিহাসের পাতা থেকে মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত) নামের একটি স্মারক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত স্মারক সংখ্যা ও কলেজের অধ্যক্ষর কক্ষে ইতিহাস পরিক্রমায় ছহিউদ্দিন কর্ণার পর্যবেক্ষণ করলে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়টি উঠে আসে।

স্মারক সংখ্যা থেকে জানা গেছে, সংখ্যাটি একটি গবেষণা সংকলণ। ইতিহাসের পাতা থেকে মোহাম্মদ ছহি উদ্দীন (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত)” নামকরণের সংখ্যাটি সম্পাদনা করেছেন ছহি উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এম মাসুদ রেজা। সংখ্যাটিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি’র “কিছু কথা” এবং মেহেরপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খানের বাণী ছাপানো হয়েছে। স্মারকসংখ্যায় তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে ২২টি নাম। তার মধ্যে সালাউদ্দিন দুলক, (সাবেক সরকারি কর্মকর্তা) ভূগোল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাফর ওয়াজেদ মহাপরিচালক প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, আব্দুল হামিদ রায়হান রুপান্তর কুষ্টিয়া, জীবনের জয়রথ, তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী এবং ব্যারিষ্টার আমির উল ইসলাম।

সংকলণে প্রায় পঞ্চাশটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলো দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক পূর্বদেশ, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক যুগান্তর (কলকাতা), বাংলার বাণী, জয়বাংলা মুজিবনগর, দৈনিক বাংলা, দৈনিক আযাদ ও দি পাকিস্তান অবজার্ভার পত্রিকাগুলো থেকে।

যে ছবিটি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে, সেটি হলো, “মুক্তিযুদ্ধ ক্যাম্পে বেতাইয়ে পতাকা উত্তোলন করছেন হুইফ আমির উল ইসলাম এবং সালাম দিচ্ছেন মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন ও অন্যান্য এমএনএ/ এমপিগণ” এই ক্যাপশন সংবালিত একটি ছবি। যেটি সংকলণের চব্বিশ পৃষ্ঠায় দেওয়া হয়েছে।

আবার এই ছবিটিই ক্যাপশন বদলিয়ে ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের রুমে ডিসপ্লে বোর্ডে সাটানো হয়েছে।বোর্ডের একাংশে লেখা “ইতিহাস পরিক্রমায় ছহি উদ্দিন বিশ্বাস”। তার নিচে দেওয়া রয়েছে ৬টি ছবি। বোর্ডের অপরাংশে লেখা আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সাহসী সংগঠক ও মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ছহিউদ্দিন বিশ^াস এর জীবনতরী। বোর্ডে দেওয়া ছয়টি ছবির মধ্যে (বাম থেকে) দ্বিতীয় ছবিটি ক্যাপশন বদলানো সেই ছবি। ক্যাপশনে লেখা আছে “শপথ অনুষ্ঠানে প্রথম সরকারের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময়”। একই ছবি ভারতের বেতাই ক্যাম্পের আবার প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের। এটি পরিকল্পিত বিকৃিত বলে মনে করেছেন অনেকেই। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ইতিহাস বিকৃতি সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরাও অনেকটাই অবাক হয়েছেন।

কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল আযীমকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, আমি এই সংকলণ বা আমার রুমের ডিসপ্লে বোর্ডের ছবি বা লেখা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবো না। ৫২ পৃষ্ঠার সংকলনটির কোনো একটি স্থানেও আমার কোনো নাম নেই। এটি সম্পাদনা করেছেন, কলেজের সহকারী অধ্যাপক এম মাসুদ রেজা, তাকেই জিজ্ঞাসা করেন। আপনার কলেজের অনেক শিক্ষার্থী এই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছে। তাদেরকে আপনি কোনটি ঠিক বলে উত্তর দেবেন এবং এটি ইতিহাস বিকৃতি কিনা এমন প্রশ্নে অধ্যক্ষ একরামুল আযীম কোনো কথা বলতে সম্মত হননি।

ইতিহাসের পাতা থেকে জানা গেছে, মরহুম ছহিউদ্দিন পঞ্চাশ দশকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হিসেবে মেহেরপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। ষাটের দশকে মেহেরপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৯ হতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন আমৃত্য ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। তিনি ১৯৭০, ১৯৭৩ ও ১৯৮৬ সালে মেহেরপুর-মুজিবনগর আসনের জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন অনুকরণীয় রাজনীতিককে নিয়ে এধরনের পরিকল্পিত ইতিহাস বিকৃতি কি খুব জরুরী ছিল ? ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে উনার অনুপস্থিতি কি উনার অর্জন বা রাজনৈতিক জীবনকে খাঁটো করে ? তাহলে কেনো একটি ছবির ক্যাপশন পাল্টিয়ে মরহুম ছহিউদ্দিন (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত) ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেখানো হলো ?

সংকলনটিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি স্মারকসংখ্যার কিছু কথা শিরোনামে তাঁর বাবা সম্পর্কে লিখেছেন, কিংবদন্তিতুল্য অনুকরণযোগ্য এক মহান রাজনীতিক হিসেবে। কোথাও তিনি ১৭ এপ্রিলের শপথ অনুষ্ঠানে তার বাবার উপস্থিতির কথা লেখেন নায়। অতিউৎসাহি হয়ে এ ধরনের একটি বিকৃত ইতিহাস কেনো জন্ম দেওয়া হলো এনিয়ে একটি তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু শিক্ষানুরাগী ও সংগঠক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কক্ষে বিকৃত ইতিহাস প্রকাশ করার ফলে শিক্ষার্থী ভুল ইতিহাস শিখবে। একই সঙ্গে ম্যাগাজিনে সাবেক জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলমের বাণীতে যে মিথ্যাচার করা হয়েছে তারও অনুসন্ধান করে ম্যাগাজিনের সংশোধনী সংস্করণ বের করার দাবী জানান তারা।

মুজিবনগরে ১৭ এপ্রিলের কোরআন তেলোয়াতকারী বাকের আলী বলেন, ৭১ সালের ১৭ এপ্রিলের শপথ অনুষ্ঠানে মরহুম ছহিউদ্দিন সাহেব উপস্থিত ছিলেন না। অথচ, একটি ছবির ক্যাপশন বদল করে তাকে উপস্থিত দেখানো ঠিক হয়নি। এটি ইতিহাস বিকৃতি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন আচরণ শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হবেন।

মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি তোজাম্মেল আযম বলেন, একটি স্মরণিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে একটি কমিটি থাকতে হয়। অথচ, এই স্মরণিকাটি মাত্র একজনের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে। সেকারনে, মারাত্বক একটি অপরাধও সংগঠিত হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব:) এম এ মালেক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো: নুরুল ইসলাম তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, জাতীর শ্রেষ্ট অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি একটি জঘন্য অপরাধ। সে যেই হোক ইতিহাস বিকৃতিকারির বিচার হওয়া উচিত।

তৎকালিন বৈদ্যনাথতলা সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি দোয়াজ উদ্দিন মন্ডল (যিনি ১৭ এপ্রিলের আনুষ্ঠানিকতার প্রত্যক্ষ সংগঠক ছিলেন) বলেন, আমি অনেকবার বলেছি, মেহেরপুরের কোনো নেতাই সেদিন মুজিবনগরে উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও যারা এধরনের ইতিহাসকে বিকৃত করে তাদের বিচার হওয়া উচিৎ। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত নেতা মোমিন চৌধুরীর ভিডিও রেকর্ড মেহেরপুর প্রতিদিনের সংগ্রহে আছে। তিনিও মরহুম ছহিউদ্দিন বিশ্বাসের উপস্থিতির কথা স্বীকার করেননি।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ইতিহাস বিকৃতি খুবই লজ্জাজনক, শিক্ষার্থীরা এতে বিভ্রান্তি হবে। মরহুম ছহিউদ্দিন সাহেব ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের অনুষ্ঠানে ছিলেন না (প্রিন্ট ভার্সনে ছাপাজনিত ভুলের কারণে ‘না’ শব্দটি বাদ গিয়েছে)। তাঁকে নিয়ে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করা মানে তাঁকেই খাটো করা হয়েছে।

তবে স্মারক সংখ্যার সম্পাদক ও মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজার সাথে মেহেরপুর প্রতিদিন থেকে কথা বলার জন্য বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং তিনি ফোন ব্যাকও করেননি।




মেহেরপুর জেলা আ’লীগের নতুন কমিটির পরিচিতি সভা

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বিকালে মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি সভায় কেন্দ্র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা নিজ নিজ নাম ও পদবী বলে পরিচিতি সভায় সকলের সাথে পরিচিত হন। পরিচিতি শেষে এক রুদ্ধ দ্বার বৈঠক হয় । তবে এই পরিচিতি সভায় ৭৫ সদস্যের জেলা আওয়ামী লীগ কমিটি ও ২২ সদস্যের উপদেষ্টা মন্ডলীর বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতা অনুপস্থিত ছিলেন। দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে অনুপস্থিত নেতাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থতা জনিত কারণে উপস্থিত হতে পারেন নাই।

পরিচিতি পর্বের শেষ পর্যায়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে তার বক্তব্যের ছন্দপতন ঘটে। পরে নবগঠিত জেলা কমিটির সদস্যদের এক রুদ্ধ দ্বার বৈঠক হয়।

তবে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে দীর্ঘদিন ধরে চলমান দলীয় কোন্দল সমাধানের অগ্রগতি নিয়ে কমিটির কোন সদস্যই বক্তব্য প্রদান করতে রাজি হয়নি।

উল্লেখ্য, সম্মেলনের ১৩ মাস পর গত ২৩ জুন জন্য মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিসহ ২২ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির অনুমোদন করা হয়েছে।




বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে কুষ্টিয়ায় গনসংযোগ ডা: আমিনুল হক রতনের

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ ও মতবিনিময় করেছেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বিএমএ কুষ্টিয়ার শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এ এফ এম আমিনুল হক রতন।

আজ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের হরিনারায়নপুর, লক্ষিপুর বাজার ও জেলেপাড়া মোড়, হাসানবাগ বাজার, রাজাপুর, পিয়ারপুর বাজার, সিরাজমোড়, মধুপুর বাজার সুগ্রীবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্তমান সরকারের নানান উন্নয়নচিত্র তুলে ধরেন এবং সুধীজনদের সাথে নৌকার পক্ষে জনসংযোগ ও মতবিনিময় করেন। এসময় কয়েকশ মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করা হয় এবং সরকারের উন্নয়ন সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়।

মতবিনিময়কালে ডা. এ এফ এম আমিনুল হক রতন বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়নমূলক অনেক কাজ ত্বরান্বিত হয়েছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে এক শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, সুখী এবং উন্নত জনপদ। সুশাসন, জনগণের সক্ষমতা ও ক্ষমতায়ন হবে এই অগ্রযাত্রার মূলমন্ত্র।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নৌকার সাথে থাকতে হবে, শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে। জঙ্গিবাদ উগ্র মৌলবাদ ও অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে একটি সুশীল ও মানবতা সম্বলিত জাতি গড়তে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও জনসেবার বার্তা জনগনের দোড়গোড়ায় পৌছে দিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন ডা: আমিনুল হক রতন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন হরিনিারায়নপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ফারুখ হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্টু মেম্বার, সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আইয়ুব আলী, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নায়েভ খা, ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি জয়নাল, জমির উদ্দিন, সাইদুর রহমান ও রোকনুজ্জামানসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।




মেহেরপুরে সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নানের হাসপাতাল পরিদর্শন

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নান মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আজিজুল ইসলামের কার্যালয়ে সৌহাদ্যপূর্ণ আলোচনা ও কুশলাদি বিনিময় করেছেন।

আজ শনিবার দুপুর দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা কুশলাদি বিনিময় এবং মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন সমসাময়িক ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

পরে সন্ধ্যায় হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ মানুষের খোঁজ খবর নেন ও ডিউটিরত ড. শোভন মল্লিক এবং ড. আশিকুজ্জামান সাথে হাসপাতালে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।

এইসময় দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।




দর্শনায় আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকালাপ ২ জন গ্রেফতার

দর্শনা হল্ট স্টেশন সংলগ্ন আমিরাত আবাসিক হোটেলে নামে একটি হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেছে দর্শনা থানা পুলিশ।

এ অভিযানে আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে অসামাজিক কাজের অভিযোগে জীবননগরের এক জোড়া পরোকিয়া প্রেমিক জুটিকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার (২২জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করে পরকিয়া প্রেমিক জুটি সহ হোটেলের তত্বাবধায়ক কামরুজ্জামান কয়েলকে নেয় দর্শনা থানা পুলিশ হেবাজতে। পরে হোটেল তত্বাবধায়ককে ছেড়ে দেওয়া হলেও পরোকিয়াকে আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে কোট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের হল্ট স্টেশন সংলগ্ন আমিরাত আবাসিক হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেন দর্শনা থানা পুলিশ। এ অভিযানে আমিরাত আবাসিক হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষের মধ্যে অসামাজিক কার্যকলাপের জড়িত থাকার অভিযোগে আল আমিন (২৫) ও যমুনা খাতুন (২৫) নামের এক পরকিয়া জুটিকে গ্রেফতার করে। এ

সময় পুলিশ পরোকিয়া প্রেমিক জুটি সহ হোটেলের তত্বাবধায়ক কামরুজ্জামান কয়েলকে নেওয়া হয় দর্শনা থানা হেফাজতে। গ্রেফতারকৃত পরকিয়া প্রেমিক জুটি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বারান্দিপাড়ার আমিনুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৫) ও একই ইউনিয়নের দোহাপাড়ার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী যমুনা খাতুন (২৫)।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মামলা দায়ের সহ চুয়াডাঙ্গা আদালতের কোট হাজতে প্রেরণ করেছেন দর্শনা থানা পুলিশ।




মেহেরপুরে পেন কালচারের মাধ্যমে সমাজ ভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রমের উদ্বোধন

ভৈরদ নদে গোভীপুর অংশে পেন কালচারের মাধ্যমে সমাজ ভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

শনিবার (২২ জুলাই) সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মাছের পোনা উপমুক্ত করে পেন কালচারের মাধ্যমে সমাজ ভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

এসময় মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিউজা-উল জান্নাহ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো জাকির হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পেন কালচারের মাধ্যমে সমাজ ভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রমে ভৈরব নদের গোভীপুর থানার ঘাট ব্রিজ থেকে গোভীপুর মাদ্রাসা পযন্ত পরীক্ষামূলকভাবে সমিতির মাধ্যমে মাছ চাষ করা হবে। নেটিং পদ্ধতির এই মাছ চাষে ভৈরব নদের কচুরিপানা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে সমস্ত ব্যায়ভার সমিতি করবে। এক্ষেত্রে সরকারকে কোন রাজস্ব দিতে হবে না।পরীক্ষামূলকভাবে এই অংশে যদি সুফল বয়ে আনে তাহলে ভৈরব নদের পুরো অংশে একই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হবে বলে জানানো হয়।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগ ভৈরব নদে পেন কালচারের মাধ্যমে সমাজ ভিত্তিক মাছ চাষ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।




এখনই সময় জাফলং যাওয়ার

ভরা বর্ষায় টইটম্বুর জাফলং যাওয়ার জন্য বাইশে শ্রাবণ পর্যন্ত অপেক্ষা করার কি দরকার। সুযোগ বুঝে একটা ব্রেক নিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনীশক্তি বাড়ানোর জন্য পাহাড় আর বনে ঘুরতে যাওয়াই ভালো। দূষণে ভরা নগরজীবনের ক্ষেত্রে তাই পথ আর কোথায়? ঠিক আছে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের জন্য পাহাড়ে যাবেন। কিন্তু সেখানের একঘেয়েমি থেকে একটু সারল্যমাখা সৌন্দর্য কি আকাঙ্ক্ষিত নয়? হ্যাঁ, তা তো বটেই। সেজন্যই তো জাফলং এর কথা বলছি। এখানে বারবার গেলেও বিরক্তি আসবে না।

সিলেটের বাস পাওয়া সমস্যা নয়। গাবতলী, কল্যাণপুর, মহাখালী, সায়দাবাদ, মতিঝিল, মিরপুর এমনকি উত্তরা থেকেও সিলেটের বাস পাবেন। আর যদি মনে হয় সত্যজিৎ বা কলকাতার সাহিত্যের স্টাইলে ভ্রমণ করবেন তাহলে ট্রেনের বগিই ভরসা।

জাফলং সিলেটের গোয়াইনঘাটে, মেঘালয় ও বাংলাদেশ সীমান্তে খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। শহর থেকে এর দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। বর্ষার শুরুতে বা শেষে গেলেই এর আসল সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায়। সিলেট শহর থেকে জাফলং যেতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। পাবলিক বাস, রিজার্ভ গাড়ি বা লেগুনায় করে যাওয়া যায় জাফলংয়ে। যাওয়ার পথটাই তো মজার। যাওয়ার পথে আপনি দেখা পাবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তার মধ্যে একটির। অন্তত সেখানে যারা গিয়েছেন একবার তারা এ কথা সবসময় বলেন। এই রাস্তা ধরে জৈন্তাপুর থেকে জাফলং যেতে সব ঝরনা ভারতের দিকে। তাই এপারে দাঁড়িয়ে হতাশ পথিকের মতো শুধু তাকিয়ে থাকতে হয়। সে আক্ষেপ থাকলো। কিছু তো করার নেই। তারপরও শান্তি আছে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ের মধ্যে এই পথে যেতে যেতে আপনি দেখা পাবেন সারি সারি চা-বাগান, হজরত (রা.) শাহ পরানের মাজার, সবুজ পাহাড়, লালা খাল, জাফলং-ডাউকি ল্যান্ড বর্ডার আর বিশাল হাওর। এগুলোও তো কম নয়।

জাফলং পৌঁছে একটু উঁচু টিলায় দাঁড়িয়ে ওপারে পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে সাজানো ভারতের ডাউকি শহর দেখতে পাওয়া যাবে। ডাউকি পাহাড় থেকে ছুটে আসা পাহাড়ের পানি এপারে এসে হয়েছে খরস্রোতা নদ ‘পিয়াইন’ আর ‘ধলাই’। নদের এপাড়ের ঘাটে নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে হবে ওপাড়ে, যেখানে আছে সংগ্রামপুঞ্জি ঝরনা। সেখান থেকে দেখা যায় নয়নাভিরাম ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম প্রবহমান ডাউকি জলপ্রপাত আর ঝুলন্ত ব্রিজ। বর্ষায় পিয়াইন নদে নৌকাভ্রমণের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিন আপনার মানসপটে ভাসবে।

পিয়াইনের পাশে স্তূপে স্তূপে পাথর সাজানো। স্বচ্ছ পানি দেখলে একেবারে মন জুড়িয়ে যায়। আবার হুট করে নামা বৃষ্টি অন্য জগতে নিয়ে যায়—হিমশীতল পানি দেয় অন্য রকম আবেশ। এখানে নৌকাভ্রমণ সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়। এটা একটা অনন্য অভিজ্ঞতা।

জাফলংয়ের সৌন্দর্যের একটি বড় অংশ এখানকার পাথর। হ্যাঁ অবাক হওয়ার কিছু নেই। সারাবিশ্বেই অনেক সুন্দর জায়গার প্রাণ পাথর। এখানেও তাই। সহস্র বছর ধরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া পাহাড়ের নুড়ি থেকেই এই পাথরের স্তূপের সৃষ্টি। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বিশাল সব চা-বাগান। আশপাশেই আছে চুনাপাথরের খনি। স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংস্কৃতির মেলবন্ধনে দারুণ আবহ সৃষ্টি করে। সেই সঙ্গে এখানকার স্থানীয় বাজার ঘুরলেই পাবেন আদিবাসীদের হস্তশিল্প আর গয়না। ফিরতি পথে স্মৃতিস্বরূপ নিয়ে আসতে পারেন এসব। স্বচ্ছ পানি আর সবুজের আবহে জাফলং ভ্রমণ আপনার স্মৃতির পাতায় নিশ্চয়ই দারুণ অভিজ্ঞতা জুড়ে দেবে। আর যেমনটা বলেছি, সারল্যমাখা এই প্রকৃতির কোলে আপনি কদিন মানসিক প্রশান্তিতে থাকবেন। আবার যখন ফিরবেন দখল-দূষণের নগরীতে তখন মানসিক প্রশান্তিই আপনাকে দেবে শান্তি।

সূত্র: ইত্তেফাক