দ্বিতীয় পৃষ্ঠা
প্রথম পৃষ্ঠা
রাজনৈতিক দৌড়ে পরাজিত হয়ে আমার বিরুদ্ধ মিথ্যাচার করছে একটি মহল – এম এ খালেক
রাজনীতির দৌড়ে পরাজিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে একটি মহল। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার জনপ্রিয়তা নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে মহলটি। আমার বিরুদ্ধে কারা কারা ষড়যন্ত্র করছে আমি তা জেনে ফেলেছি। আমি ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাব, এমনটাই বলছিলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ খালেক।
গতকাল সোমবার বিকেলে তিনি তার নবনির্মিত মাছের খাবার তৈরি কারখানায় এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এমে খালেক বলেন, ফেসবুক পেইজে ফেক আইডিতে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার ছড়িয়ে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে বলানো হচ্ছে। গাংনী পৌর সভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তার নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে মাছের খামার ফ্যাক্টরি নির্মান কাজের স্থান পরিদর্শন কালে তিনি জমি নিয়ে চযালেন্জ করেন। তিনি বলেন,যদি একটুকরো জমি সরকারের বা অন্য মালিকের প্রমান করতে পারেন তবে, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।
এসময় গাংনী পৌ আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাবলু,সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জমির হোসেন,গাংনী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা মনিরুল ইসলাম মনি,জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সহ সভাপতি শাহাদুজ্জামান শিপুসহ আওয়ামীগ,ছাত্র লীগের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক তার দুই বিঘা জমির ওপর একটি মাছের খাদ্য উৎপাদন কারখানা মির্মাণ করছেন। রেজিষ্ট্রেশন সহ নানা রকম সরকারের নিয়ম মেনে বছর খানেক আগে কাজ শুরু হয়। বিম ঢালায় পর্যন্ত কাজ চলমান। এসময় তার পাশের একটি জমি মালিকের অনুমোদিত সাপেক্ষে লিজ নিয়ে সমান করছিল। এসময় গাংনী পৌরসভার ৯ মম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলে রাশিদুল ইসলাম খোকন গিয়ে এমএ খালেকের স্কেবিটর চালকে মারধর করে। পরে গাংনী পৌরসভা মেয়র আহম্মেদ আলীকে বিচার করার অমুরোধ জানালে মেয়র আহম্মেদ আলী বিচার করেনি। পরে আইনের আশ্রয় নেয় স্কেবিটর চালক।
এদিকে রাশিদুল ইসলাম খোকন এমএ খালেক কে নিয়ে ফেসবুকে ভূমিদস্যু আখ্যায়িত করে মান হানিকর মনগড়া নামা মন্তব্য লিখে এমএ খালেকের মামহানি করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্র লীগের নেতাকর্মীরা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদ জানানো হয়।
অন্যদিকে শ্রমিক মির্যাতনের বিচার চেয়ে ব্রিফিং করেন গাংমী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জমির উদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম মনি।
মেহেরপুরের নতুন দরবেশপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু
মেহেরপুর সদরের নতুন দরবেশপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এশিয়া খাতুন (৩৭) নামের এক মধ্যবয়সী নারীর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুর আনুমানিক ৩ টার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এশিয়া খাতুন মেহেরপুর সদরের কলাইডাঙ্গা গ্রামের কামরুল ইসলামের স্ত্রী।
জানা যায়, এশিয়া খাতুন নতুন দরবেশপুর থেকে মুরগি কিনে ছেলে ইয়ামিনের মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলো। পথিমধ্যে নতুন দরবেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরবর্তী সালেকীন মিয়ার বাড়ীর সামনে পৌছুলে ছাগল বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। সেখানেই রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন এশিয়া খাতুন। স্থানীয়রা মারাত্মক জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে দমকল বাহিনীর কর্মীরা তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রাজশাহীতে রেফার্ড করে। রাজশাহী নেওয়ার পথে হাসপাতালের অদুরবর্তী ওয়াপদা মোড়ে পৌছুলে এশিয়া খাতুন মৃত্যু বরণ করেন।
বারাদী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। পরে রাত সাড়ে ১০ টায় তার লাশ গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন করা হয়। এশিয়া খাতুন দুই পুত্র সন্তানের জননী ছিলেন।
প্রতিবন্ধীদের অবহেলা নয় ভালােবাসতে হবে- এমপি টগর
দর্শনায় প্রতিবন্ধিদের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে দর্শনা কলেজ মাঠের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্তিত থেকে প্রতিবন্ধিদের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণকালে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য, জনন্দদিত জননেতা হাজি আলী আজগার টগর বলেন, আ.লীগ সরকারের শাসনামলে দেশ বিধবা, প্রতিবন্ধি, মাতৃকালীন, বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। প্রতিবন্ধিরা এক সময় পরিবারের বোঝা মনে করা হলেও এখন তা নয়। কারণ অনেক প্রতিবন্ধি সরকারের সহযােগীতায় স্বাবলম্বি হয়েছে। তাছাড়া সরকার তাদের নিয়মিত ভাতা ব্যবস্থা চালু করেছে। সেক্ষত্রে প্রতিবন্ধিদের অবহেলা না করে ভালবাসতে হবে।
একটি বেসরকারি সংসংস্থার আয়াজনে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, জীবননগর উপজলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান গােলাম মর্তূজা, দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু, দর্শনা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক আরিফ, কেরুজ অবসরপ্রাপ্ত এডিএম শেখ শাহাব উদ্দিন, দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী, জেসিআই ঢাকা এ্যাস্ট্রালের পরিচালক মুনতাসির আজগার আকাশ, সংস্থার সভাপতি সাবির সামি মুহিত, শিকড় কল্যান সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবিদ জামাল, দর্শনা পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযাদ্ধা রুস্তম আলী, দর্শনা রেল বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান, দর্শনা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ববি, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করা হয়। পরে অতিথিদের সংস্থার পক্ষ থেক উত্তরণী পরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমপি আলী আজগার টগরকে ফুলেল শুভেচ্ছা সহ সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। সার্বিক অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ।
কৃষিতে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য
২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ কোটি ৯৭ লাখ। যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখের কিছু বেশি। অর্থাৎ পাঁচ বছরে দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। কিন্তু এই সময়ে জমি বাড়েনি। এর ওপর করোনা পরিস্থিতি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করেছিলেন, বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে। কিন্তু বর্তমান সরকারের দূরদৃষ্টি পদক্ষেপ আর কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্বের গড় কৃষি উৎপাদনকে পেছনে ফেলে উপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২২টি ফসল উৎপাদনে বিশ্বসেরা ১০ দেশের মধ্যে অবস্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
কৃষিপণ্যে বিশ্বের শীর্ষ দশে বাংলাদেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলমগ্নতা, নদী ভাঙ্গনসহ বৈরী আবহাওয়া; কৃষিজমি কমে যাওয়া; জনসংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বসেরা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এর হিসেব মতে, আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম দেশ হলেও বাংলাদেশ নিম্নোক্ত ২২ ধরনের ফসল উৎপাদনে শীর্ষ দশে অবস্থান করছে।
এফএও এর মোট ১৬২টি প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের তালিকায় বাংলাদেশের ৬৮ ধরনের কৃষিপণ্য স্থান পেয়েছে। এ তালিকায় যেমন একক পণ্য আছে, তেমনি সমজাতীয় ও মৌসুমভিত্তিক কয়েকটি পণ্যও আছে। এফএওর হিসাবে, ২০০১ সালে ১১টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ দশে ছিল বাংলাদেশ। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় এ সংখ্যা আর বাড়েনি। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে ২০১১ সালে পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ দশে স্থান পায় ১৭টি কৃষি পণ্য। এরপর বিভিন্ন বছরে যোগ হয় আরও পাঁচটি কৃষিপণ্য – পেঁয়াজ, কুমড়া, ফুলকপি ও ব্রকলি, পাখির খাদ্য (বীজ) এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত শিমের বিচি। সব মিলিয়ে ২০২১ সালে ২২টি পণ্য উৎপাদনে শীর্ষ তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
২২টি কৃষিপণ্যের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাট, সুপারি ও শুকনা মরিচ উৎপাদনে। চাল, রসুন। চিনি জাতীয় ফসলে (যেমন জোয়ার) বাংলাদেশ তৃতীয়। জাম, বরই, করমচা, লটকন ইত্যাদি বেরিজাতীয় ফল এবং অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত সুগন্ধি মসলায় চতুর্থ। মসুর ডাল ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল (কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি) উৎপাদনে বাংলাদেশ ষষ্ঠ। সপ্তম অবস্থানে রয়েছে পেঁয়াজ, আলু, আদা, বেগুন, শিমের বিচি ও নারকেলের ছোবড়া উৎপাদনে। চা ও কুমড়ায় বাংলাদেশ অষ্টম। আম, পেয়ারা ও গাবজাতীয় ফল, ফুলকপি ও ব্রকলি এবং মটরশুঁটি ও পাখির খাদ্য (বীজ) শ্রেণিতে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।
সব মিলিয়ে এফএওর হিসেবে আয়তনে ছোট (বিশ্বের ৯৪তম) হলেও প্রাথমিক কৃষিপণ্য (শুধু ফসল) উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৪তম। শীর্ষে রয়েছে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। এফএওর তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের পরিমাণ ৯ কোটি ৩৩ লাখ টন যার বাজার মূল্য ছিল ৩ হাজার ৬১১ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় চার লাখ কোটি টাকার সমান।
প্রধান কিছু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো। আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। কৃষির এ সাফল্য সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বে গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন। আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ শ্রীলংকায় প্রথমবারের মতো চাল রফতানি শুরু করে সরকার। দুই দফায় প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা হয়। এছাড়া ৬ মে ২০১৫ বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প কবলিত নেপালে ১০ হাজার টন চাল সাহায্য হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এটা দেশের চাল উৎপাদনের সামর্থ্যরেই বহিঃপ্রকাশ।
দুই দশক আগে আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ ছিল ২০তম দেশ। এরপর কানাডা, তুরস্ক, পোল্যান্ডের মতো ১৩টি দেশকে একে একে পেছনে ফেলে ৭ নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এফএওর তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে আলু উৎপাদিত হয়েছে ৯৮ লাখ টন। মরিচ (শুকনা) উৎপাদনে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এক দশকে চীন ও থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে মরিচ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে প্রায় ১১৩ কোটি মার্কিন ডলার। সবজি, শুকনা খাবার, মসলা, সুগন্ধি চাল ইত্যাদি কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১১৬ কোটি ডলারের বেশি। গেল ১৪ বছরে কৃষিতে যে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে এর অন্যতম কারণ সময়োপযোগী পদক্ষেপ। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেন।
কৃষি উপকরণ সহায়তা: বর্তমান সরকারের প্রবর্তিত কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড ১ কোটি ৮২ লাখ কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে, যা দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের অনুসরণে ভারত সরকার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।
সারের ভর্তুকি ও সরবরাহ: বর্তমান সরকার ভর্তুকি দিয়ে চার দফায় সারের দাম কমিয়েছে। গেল সাত বছরে ৪৫.৪৮ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানির বিপরীতে ৪২.৪৭ লাখ মেট্রিক টন সার সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া সার গুদামের ধারণক্ষমতা ৯৮ হাজার মেট্রিক টন থেকে ১.৫৪ লাখ মেট্রিক টন বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সেচ ভর্তুকি ও কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট: মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেচের পানির ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়।
কৃষি যন্ত্রপাতির ভর্তুকি: দেশের হাওড় ও চরাঞ্চলে ৭০ শতাংশ এবং অন্যান্য অঞ্চলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে।
কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম: কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। আউশে প্রণোদনা প্যাকেজও দিচ্ছে সরকার।
দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবন: বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনে শীর্ষে বাংলাদেশ। ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতাও বাড়ছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) বেশ কয়েকটি জাত ছাড়াও এরই মধ্যে পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীগণ মোট ১৩টি প্রতিকূল পরিবেশে সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে লবণসহিষ্ণু নয়টি, খরাসহিষ্ণু দুটি ও বন্যাসহিষ্ণু চারটি ধানের জাত। ২০১৩ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকগণ। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এতগুলো প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনের দিক থেকেও বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম জেনেটিকেলি মোডিফাইড ফসল বিটি বেগুনের চারটি জাত অবমুক্ত করে। যার মধ্যে বেগুনের প্রধান শত্রু ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধী জীন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মাধ্যমে আলুর নাবি ধসা রোগের প্রতিরোধী জিন প্রতিস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে।
সমন্বিত কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদান: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দক্ষ, ফলপ্রসূ, বিকেন্দ্রীকৃত, এলাকানির্ভর, চাহিদাভিত্তিক এবং সমন্বিত কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সব শ্রেণির কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ, যাতে টেকসই ও লাভজনক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণসহ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি তথ্য সংস্থা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন রেসরকারি প্রতিষ্ঠানও দক্ষ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা দিয়ে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নকে তরান্বিত করেছে।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি: তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ই-কৃষি এর মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবা কৃষকের জীবনযাত্রা উন্নয়নে খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার জানালা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সারাদেশে ৭২৭টি কৃষক তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র (ফিয়াক) স্থাপনের মাধ্যমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দিচ্ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিস দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে ২৪৫টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) স্থাপন করেছে। এছাড়া ২৮ অক্টোবর ২০১৫ ইনফো-সরকার ২৫৪টি উপজেলার ২৫৪টি আইপিএম/ আইসিএম কৃষক ক্লাবকে এআইসিসিতে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষি তথ্যকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনলাইনে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের ১৬১২৩ নম্বরে যে কোনো মোবাইল থেকে ফোন করে নামমাত্র খরচে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিষয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে। মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট অফলাইন/অনলাইনে সার সুপারিশ নির্দেশিকা প্রদান করছে। আখ চাষিরা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে ই-পুর্জি সেবা গ্রহণ করছেন। এমনকি ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেশ-বিদেশের কৃষি তথ্য সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ‘কৃষকের জানালা’ নামক মোবাইল এপস এর মাধ্যমে কৃষকগণ ছবি দেখে ফসলের রোগ ও পোকামাকড় সনাক্তকরে প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে। টেলিভিশন, রেডিও, কমিউনিটি কৃষি রেডিও এর মাধ্যমে কৃষকগণ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা পাচ্ছে।
শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি: দুই যুগ আগেও বাংলাদেশের অর্ধেক এলাকায় একটি ও বাকি এলাকায় দুটি ফসল হতো। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে দুটি ফসল হচ্ছে। সরকারের যুগোপোযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষি বিজ্ঞানীদের স্বল্প আয়ুষ্কালসম্পন্ন জাত উদ্ভাবণ ও সম্প্রসারণবিদদের সম্প্রসারণ সেবা, ইত্যাদি যৌথ প্রয়াসে দেশে শস্যের নিবিড়তা এখন ১৯৭%, কোন কোন উপজেলায় শস্যের নিবিড়তা এখন ২৫০% এর বেশি।প্রতিবছর আবাদী জমির পরিমান কমে যাওয়া ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও বর্তমান জনগণবান্ধব সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১৩১৪ ডলার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ (এ যাবৎ কালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ)। কৃষিতে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন বিশ্বের যে কোনো উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ।
বাংলাদেশের কৃষির এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং এ দেশের কৃষি ও কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিতকাও অপরিহার্য।
লেখক: অধ্যাপক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
হরিণাকুণ্ডুতে সুদকারবরীর তকমা লাগিয়ে চাঁদাবাজীর চেষ্টা; সংবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু’র শ্রীফলতলা গ্রামের কৃষক আজিবর রহমান ওরফে আজি বক্সের নিকট থেকে অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজির খবর পাওয়া গেছে। নিরীহ এই গ্রাম্য কৃষকের গায়ে সুদ কারবারীর মিথ্যা তকমা লাগিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইদুল ইসলাম ও সাহেব আলী নামের স্থানীয় দুইজন সাবেক ইউপি সদস্যসহ ইনসান আলী, আশরাফুল আলম, সিহাব আলী নামের কথিত ৩ জন সাংবাদিক। চাঁদার টাকা না পাওয়ায় তারা নানাভাবে হয়রানি করছেন বলে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐ গ্রাম্য কৃষক অভিযোগ তুলেছেন।
গতকাল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটির কার্যালয়ে ঐ কৃষক এক সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি মোঃ আজিবর রহমান, গ্রাম- শ্রীফলতলা, উপজেলা হরিনাকুন্ডু, জেলা ঝিনাইদহ একজন সহজ-সরল চাষী। আমি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এ বাদে আমার আর কোন পেশা নেই। আমার কৃষিকাজের উপার্জন দিয়ে বহু কষ্টে আমার একটা ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছি। আমার আরেক ছেলে বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করছে। সন্তানদের চাকুরীর সুবাদে আমি বর্তমানে অর্থনৈতিক ভাবে অনেকটা সাবলম্বী।
আমাদের উপজেলাজুড়ে জমি বন্ধক / লিজ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আমি বর্তমান অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় গ্রামের অনেকেই বিপদে পড়ে আমার কাছে জমি বন্ধক রাখতে আসে। তাদের বিপদের কথা শুনে আমি সরল মনে জমি বন্ধক/লিজ নিয়ে আসছি এটা সত্য। কিন্তু আমি আমার জীবদ্দশায় কখনো কোনদিন সুদের কারবারের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কিন্তু বর্তমানে জেলাজুড়ে সুদে কারবারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলমান থাকায় এর সুযোগ নিয়ে ২ জন জনপ্রতিনিধি ও তিনজন সাংবাদিক আমার গায়ে সুদে কারবারীর মিথ্যা তকমা লাগিয়ে সংবাদ প্রকাশের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমার নিকট থেকে মোটা অংকের চাদা দাবি করে আসছে।
আনুমানিক ৭/৮ দিন আগে হঠাৎ করেই স্থানীয় সাবেক মেম্বার সাইদুল, সাবেক মেম্বার সাহেব আলী, আজিজুল শেখ ও জামালসহ সাংবাদিক পরিচয়ে ইনসান আলী,আশরাফুল, সিহাব ও শহিদুজ্জামান বাবু নামে কয়েকজন সাংবাদিক মোটরসাইকেল যোগে এসে আমার বিনা অনুমতিতে বাড়িতে প্রবেশ করে।
এসময়য় তারা বলেন,তাদের কাছে নাকি অভিযোগ আছে আমি সুধে কারবারি করে এলাকার মানুষদের নিঃস্ব করে ফেলেছি। আমি তাদের কাছে জমি বন্ধক রাখার বিষয়ে স্বীকার করলেও সাংবাদিক শিহাব, আশরাফুল ও বাবু আমাকে জোর করে সুদের কারবার করার কথা স্বীকার করার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমাকে সুদে কারবারী বানিয়ে নিউজ করা ও থানায় মামলা করার হুমকি দেন। এ সময় স্হানীয় সাবেক দুই ইউপি সদস্য সাইদুল ও বাবু আমাকে আমাকে বলেন, সাংবাদিকদের সাথে ঝামেলা করলে তোমার ক্ষতিই হবে। তার চেয়ে কম-বেশি করে বিষয়টা মিটমাট করে নাও। অপরাধ করা বা না করো সাংবাদিক আসলে তাদের খরচাপাতি দিতে হয়। এ সময় খরচা কত টাকা জানতে চাইলে সাংবাদিক ইনসান বলেন, তুমি মিয়া জাতে সুদে কারবারি। বহু উপর পর্যন্ত তোমার নামে রিপোর্ট আছে। তোমার ছাড় দিলে সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে লাখ দুয়েক টাকা হলে সব ম্যানেজ করে নিয়ে তোমাকে বাচানো যাবে।
আমি দিতে অস্বীকার করায় তারা নিউজ করে দেবে বলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। ঘটনার পরে গত ২/৩ দিন আগে ইনসান সহ আরো ২/৩ জন এসে আবারো ঐ পরিমান চাঁদা দাবি করে।
আমি দিতে অস্বীকার করায় তারা আবারো নিউজ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। সেদিমই ইনসান ০১৯১০৮১৩৫৯৯ নম্বর থেকে কল দিয়ে বলে এই নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা পাঠাও।
আমি তাদের দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ না করায় গত শনিবার হরিণাকুন্ডুতে অভিনব কৌশলে আজি বক্সের সুদের ব্যবসা” শিরোনামে দৈনিক এই আমার দেশ, দৈনিক গড়ব বাংলাদেশ” সহ বিভিন্ন শিরোনামে লাইভ বিডি ঝিনাইদহ (Live BD jhenada) তালাশ টাইমস্ নামে বিভিন্ন আইডি থেকে অনলাইনে তারা মিথ্যা নিউজ প্রকাশ করে।
তাঁরা আমার কাছে কোন অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে, উদ্যেশ্য প্রনোদিত ভাবে এই সংবাদ প্রচার করেছে। তাদের কাজে সামাজের কাছে আমার সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে আমি মনে করছি।
এমতাবস্থায় আমি সমাজের কাছে মুখ দেখাতে না পেরে কয়েকবার আত্মহত্যার মত জঘন্যতম পাপ কাজ করার জন্য ইচ্ছে পোষণ করেছিলাম। বিষয়টি আমার পরিবার টের পাওয়ায় যদিও তা সফল হয়নি।
তবে পরিস্থিতির কারণে যদি এমন পথ বেছে নিতে হয় তবে এর জন্য দ্বায়ী থাকবে সাইদুল মেম্বার, কথিত সাংবাদিক ইনসান, শহিদুজ্জামান বাবু, আশরাফুল ও শিহাব।
আমি আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি আমি অ-শিক্ষিত মানুষ হিসেবে সুদে কারবারী বলে যা জানি তা হলো, নগদ টাকা দিয়ে তার লাভ নেওয়া।
আমি তা কখনোই করিনি বা করবোও না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তার সত্যতা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে সঠিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। এটা আপনাদের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ। আপনাদের আরো অবগত করাতে চাই-আমার নামে যে নিউজের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, সেই ভিডিওতে যাহারা সাক্ষাৎকার দিয়েছে তাদের একজনের কাছ থেকে আমার ৬ শতক জমি বন্ধক রাখা আছে। ভিডিওতে দেখানো বাকিদের সাথে আমার কোন দিন কোন লেন দেন হয় নাই।
আমি গ্রামের একজন পাট ও তামাক চাষি। আমি সারাজীবন চাষ করে আসছি। এই সাবেক মেম্বার সাইদুল ও কথিত সাংবাদিক ইনসান আমার কাছ থেকে চাঁদা নিতে না পেরে,আমি একজন সুদে কারবারি বলে অভিযোগ দিয়ে হরিনাকুন্ডু থানা থেকে পুলিশ এনে আমাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করেছিল।
পরে থানা থেকে আসা পুলিশ সদস্যরা তদন্ত করে আমাকে দোষী প্রমাণিত করতে না পারাই পুলিশ আমাকে গ্রেফতার না করে চলে যায়। আমি এই সাবেক মেম্বার সাইদুল এবং কথিত সাংবাদিক ইনসানের সড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচতে চায়। সাংবাদিক ভাইদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা আমার বিরুদ্ধে করা প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করে এই কথিত সাংবাদিকদের হাত থেকে আমাকে বাঁচতে দিন।
চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ,গ্রেপ্তার শিক্ষক
চুয়াডাঙ্গায় ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীর অভিভাবক চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে পুলিশ শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান জানান, শিক্ষক শাকিল আরাফাত ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফরাশপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
তিনি তার চুয়াডাঙ্গার ভাড়া বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই বাড়িতে পড়তে গেলে শিক্ষক শাকিল আরাফাত ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে তার বেডরুমে ডেকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। এসময় শিক্ষার্থী শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে চলে আসে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
ওই মামলায় শিক্ষক শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম: ইআইইউ’র তথ্য
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম বলে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। সংস্থাটি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুর্বল অবস্থানে আছে।
সম্প্রতি ইআইইউ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এশিয়ায় আর্থিক ঝুঁকি কমে এলেও পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এখনো উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সে তুলনায় কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।
’নো রিটার্ন টু চিপ মানি’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সুদহারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এর ফলে ২০২২ সালে ছয়টি দেশ ঋণখেলাপি হয়েছে। চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরও কিছু দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ সুদহার।
বাংলাদেশ নিয়ে পূর্বাভাসে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বহির্বিশ্বের অর্থায়নের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। এর পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি হতে পারে।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ১ শতাংশের বেশি হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে, যা হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। এ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে পণ্য রপ্তানি, প্রাথমিক আয় ও রেমিট্যান্সের শতাংশ হিসাবে মোট বৈদেশিক ঋণ পরিষেবা ১০ শতাংশের কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
এর আগে ইআইইউয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াও স্থান পাবে। ফলে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।
তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারের আকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোগ্য পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও গাড়ির কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে কোন দেশগুলো চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হতে পারে, তাদের নিয়ে একটি র্যাংকিং করেছে ইআইইউ। সেই র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বাদশ। এক দশক আগে ২০১৩ সালেও এমন একটি র্যাংকিং করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫২তম। অর্থাৎ গত এক দশকে চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ১০ বছরে ৫২তম স্থান থেকে ১২তম স্থানে উঠে আসা এর প্রমাণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের পাঁচ বছর এবং সামরিক সরকারের পরবর্তী বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ মন্দার কবলে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি৷ ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা দেশকে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমরা স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে দেশ গঠনের কাজে মনোনিবেশ করি। গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারের ধারাবাহিকতা এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির একটি। জিডিপিতে আমরা বিশ্বের ৩৫তম, ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২০তম জিডিপির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আমরা আশা রাখি।